এ কে এম শামসুদ্দিন

১৫ অক্টোবর ঢাকায় প্রকাশিত পত্রিকার একটি সংবাদ সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সংবাদটি হলো, কুমিল্লার লালমাইয়ে জুমার নামাজ পড়ার আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফোরকানকে একটু সরে নামাজের কাতারে দাঁড়ানোর অনুরোধ করার জন্য মসজিদের ইমামকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে! ঘটনাটি ঘটে লালমাই উপজেলার পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নের ভাটারা কাচারি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে। খুতবা পড়ানো শেষে মসজিদের ইমাম নামাজ শুরুর আগে অভ্যাসমতো সবাইকে লাইন সোজা করে দাঁড়াতে অনুরোধ করেন। একই সঙ্গে তিনি সেখানে উপস্থিত ইউএনওকেও নামাজের লাইনে দাঁড়াতে বলেন। সবার সামনে ইউএনওকে ইমাম এভাবে বলবেন, এটা সম্ভবত ইউএনও ভাবেননি। সে কারণেই হয়তো তিনি অপমান বোধ করেছেন। অতঃপর যা হওয়ার কথা নয়, তা-ই হলো।
নামাজ শেষে তিনি ইমাম ও মুয়াজ্জিনকে ডেকে নিয়ে তাঁকে তাঁরা চেনেন কি না, জিজ্ঞেস করেন। তখন মসজিদের ইমাম মো. আবুল বাশার তাঁকে চিনতে পারেননি বলে দুঃখ প্রকাশ করেন। তার পরও ইউএনও তাঁদের ওপর ক্ষিপ্ত হন এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে ডেকে এনে ইমামকে মসজিদের ইমামতি থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেন। চেয়ারম্যান যথাবিহিত মসজিদ কমিটিতে বলে মো. আবুল বাশারকে আর নামাজ পড়াতে নিষেধ করে দেন। ইউএনওর এরূপ আচরণের ঘটনাটি জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ জাতীয় গণমাধ্যমে এ নিয়ে খবর প্রচারিত হয়। তাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। শেষ পর্যন্ত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ডিসি তাঁর অফিসে সব পক্ষকে ডেকে এনে বিষয়টি মিটমাট করে দিলে মানুষের ক্ষোভ প্রশমিত হয়।
ইদানীং প্রশাসনিক ক্যাডারের কর্মকর্তাদের বেশ কয়েকটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও চরিত্র স্খলনজনিত ঘটনা জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
বিশেষ করে দেশের কয়েকটি উপজেলার ইউএনও জাতীয় গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছেন। স্থানীয় পর্যায়ে সাধারণ মানুষের প্রতি তাঁদের অধৈর্য ও অসহনশীল আচরণ প্রশাসনিক ক্যাডারের সুনামের প্রতি সুবিচার করতে ব্যর্থ হয়েছে। গত কয়েক বছর যাবৎ প্রশাসনের নিম্ন পর্যায়ের এসব কর্মকর্তা (সবাই নন) কেবল বদনামই কুড়িয়ে এনেছেন। এ নিয়ে পত্রপত্রিকায় প্রচুর লেখালেখি হয়েছে। আজকের পত্রিকায় আমার নিজের লেখা এ সংক্রান্ত একটি নিবন্ধও প্রকাশিত হয়েছে। প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের অনেক ভালো ভালো কর্মকাণ্ড জনসমক্ষে যতটা না প্রচার পায়, সেই তুলনায় তাঁদের সৃষ্ট যেকোনো অসদাচরণ খুব দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আমার বিশ্বাস, এসব কর্মকর্তাকে প্রারম্ভিক প্রশিক্ষণে স্থানীয় বা সাধারণ মানুষের সঙ্গে আচরণের বিষয়ে বিশেষ প্রেষণামূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে।
চাকরির শুরুতেই প্রশাসন ক্যাডারের এসব কর্মকর্তার এমন কোনো ধারণা পোষণ করা উচিত হবে না—তাঁরা যেহেতু প্রশাসনের ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তা, কাজেই তাঁরা জনগণের শাসক। এটা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না যে রাষ্ট্রের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তাই জনগণের সেবক। জনগণের দেওয়া ট্যাক্সের পয়সায় নিজের সংসার চলে। সন্তানের শিক্ষালাভের সুযোগ হয়। কিন্তু ইদানীং লক্ষ করা গেছে, সরকারি কর্মকর্তা, বিশেষ করে প্রশাসন ও পুলিশ সার্ভিসের অনেক কর্মকর্তা সাধারণ মানুষের সঙ্গে এমন আচরণ করেন যে, তাঁদের আচরণ দেখে মনে হয়, জনগণই তাদের প্রজা এবং তাঁরা জনগণের শাসক। এটা মোটেও কাম্য নয়।
প্রশাসন ক্যাডারের বিভিন্ন পর্যায়ের পদ ও পদবির নামের বিষয়টিও কর্মকর্তাদের মন ও মানসিকতার ওপর প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে জেলা পর্যায়ের প্রশাসনিক পদ, আমরা যাকে ‘জেলা প্রশাসক’ বলে থাকি, তার শাব্দিক অর্থ কী দাঁড়ায়? ‘জেলা প্রশাসক’ কথাটির কি এই অর্থ দাঁড়ায় না—যিনি এই পদে কাজ করেন, তিনি সেই জেলার প্রশাসক? অর্থাৎ তিনি সেই জেলার শাসনকর্তা? আগে এই পদটিকে বলা হতো ‘ডেপুটি কালেক্টর’ বা ‘ডেপুটি কমিশনার’। এই ডেপুটি কালেক্টর বা কমিশনারকে বাংলা করতে গিয়ে করা হয়েছে ‘জেলা প্রশাসক’।
‘প্রশাসক’ শব্দটির ভেতরে কেমন ‘শাসক’-এর গন্ধ পাওয়া যায়! জেলার প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড চালাতে গিয়ে তাঁরা এমন কিছু অগ্রহণযোগ্য আচরণ করেছেন, যা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে উচ্চ আদালতের একটি মন্তব্যের কথা মনে পড়ে গেল। ২০১৯ সালে ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান হত্যাকাণ্ড মামলার এক শুনানি চলাকালে বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বলেছিলেন, ‘কিছু কিছু ওসি, ডিসি আছেন, যাঁরা নিজেদের জমিদার মনে করেন। এমন ভাব দেখান যে তাঁরাই সব।’ জেলা প্রশাসককে আমরা সাধারণত ডিসি বলি। এখন বুঝতে হবে ডিসি মানে কী? ডিসি মানে হলো ডেপুটি কমিশনার। এখন প্রশ্ন আসবে, উনি কার ডেপুটি? আমরা সাধারণত যাঁকে বিভাগীয় কমিশনার বলি, ডেপুটি কমিশনার হলেন তাঁরই ডেপুটি, যাকে বাংলায় করা হয়েছে ‘জেলা প্রশাসক’।
আরও একটি মজার বিষয় উল্লেখ করতে চাই। আমাদের দেশে একটি ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়’ আছে। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী জনগণ যেখানে রাষ্ট্রের মালিক, সেখানে ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়’ থাকা কতটুকু যুক্তিসংগত? আমলারা হলেন জনগণের সেবক। তাঁরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। অথচ তাঁদের হাতে সীমাহীন ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এই ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের উপযুক্ত কাঠামো তৈরি হয়নি। ফলে ক্ষমতার ব্যবহার করে তাঁরা যে অপকর্ম করেন, সেই অপকর্মের জন্য জনগণের কাছে জবাবদিহির কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি।
সিআরপিসি ১৯৭ ধারায় সরকারি কর্মকর্তারা সরকারি দায়িত্ব পালনকালে কোনো অভিযোগে অভিযুক্ত হলে সরকারের অনুমোদন ছাড়া কোনো আদালত সেই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আমলে নিতে পারেন না। কোন আদালতে এই মামলার বিচার হবে, তা সরকার নির্ধারণ করে দেয়। তার পরও বর্তমানে সরকারি কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের আগে সরকারের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। ফলে আমলাদের একধরনের দায়মুক্তি পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। ক্ষমতাসীনদের দেওয়া এই আনুকূল্য আমলাদের কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেপরোয়া করে তুলেছে বলে অনেকেরই ধারণা। সরকার রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য তাঁদের রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে বলে তাঁরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ক্ষমতাবানও হয়েছেন। নির্বাহী বিভাগের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে তাঁদের প্রতি বিশেষ নজর থাকায় তাঁরা ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নেতাদের তুলনায়ও বেশি গুরুত্ব লাভ করছেন বলে অভিযোগও আছে। এই সরকারের আমলেই সাধারণ মানুষ ও জনপ্রতিনিধির স্বার্থ বিবেচনা করে দেশে আইন হয়েছে এবং সরকারি প্রজ্ঞাপনও জারি হয়েছে যে উপজেলার ১৭টি প্রশাসনিক বডির প্রধান হবেন উপজেলা চেয়ারম্যান। তার পরও ডিসিদের সহযোগিতায় ইউএনওরা তা ছাড়ছেন না। তাঁরা এই সবকিছুই কুক্ষিগত করে রেখেছেন। ক্ষমতার শীর্ষ পর্যায়ে বিষয়টি উত্থাপন করার পরও আমলারা এ বিষয়ে আনুকূল্য পেয়ে যাচ্ছেন।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার দুর্বলতার সুযোগেই আমলাতন্ত্রনির্ভরতা বেড়েছে। এ কারণেই বর্তমানে দেশে যে বিধিব্যবস্থা চালু আছে, তাতে জনগণের সার্বভৌমত্ব পুরো নিশ্চিত করে না। দেশের শাসনব্যবস্থা এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, তাতে ডিসি-ইউএনওসহ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা নিজেদের প্রভু এবং জনগণকে প্রজা মনে করেন। একটা কথা মনে রাখতে হবে, গণতান্ত্রিক দুর্বলতা ও জনবিচ্ছিন্নতা বাড়লে একচেটিয়া ব্যবস্থা কায়েম হয়। আর একচেটিয়া ব্যবস্থা যখন চালু হয়, তখন ক্ষমতার অপপ্রয়োগও বেশি হয়। ফলে প্রশাসনের শৃঙ্খলায়ও ঘাটতি দেখা দেয়। আমলাতন্ত্রের ওপর প্রখ্যাত লেখক ম্যাক্স ওয়েবারের দৃষ্টিতে ‘আমলা হলেন সেই ব্যক্তি, যিনি নির্দিষ্ট নিয়মকানুন ও নীতির অধীনে নিরপেক্ষতার সঙ্গে কাজ করেন।’ আমলারা কখনো ব্যক্তিগতভাবে আবেগতাড়িত হন না। তাঁর নিজস্ব কোনো পছন্দ-অপছন্দ থাকে না, তিনি নিয়মের কাছে বাধ্যগত।
এখন সিনিয়র থেকে শুরু করে সহকারী সচিব পর্যন্ত প্রশাসন ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আছেন ৫ হাজার ৯৭৩ জন। দেশে মোট উপজেলা ৪৯২টি। প্রতিটি উপজেলায় একজন করে ইউএনও নিয়োগ করা আছে। এই ইউএনওসহ প্রশাসনের মাঠপর্যায়ের কিছু কিছু কর্মকর্তার এরূপ অসভ্য আচরণে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন। সরকারি আচরণ বিধিমালায় ৩৪টি নির্দেশনা রয়েছে। এসব নির্দেশনায় আচরণসহ বিভিন্ন বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কার্যক্রম কেমন হবে, তা উল্লেখ থাকলেও নাগরিকদের সঙ্গে আচরণ বিষয়ে আলাদা কোনো বিধান নেই। অবশ্য ২০১৮ সালের সরকারি কর্মচারী বিধিমালায়, নাগরিকদের সঙ্গে যেকোনো অসদাচরণ শাস্তিযোগ্য হবে—এমন একটি বিধির উল্লেখ আছে। এখানে অসদাচরণ বলতে ‘অসংগত আচরণ, চাকরি শৃঙ্খলাহানিকর আচরণ বা শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণকে বোঝানো হয়েছে। গত প্রায় ১৫ বছরে প্রশাসনের প্রায় ৩ হাজার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি, নারীঘটিত সমস্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে জমা আছে।
বিভিন্ন অভিযোগে শত শত বিভাগীয় মামলা হলেও এর মধ্যে মাত্র ১০০-এর কিছু বেশি কর্মকর্তাকে লঘু ও গুরুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে সর্বোচ্চ শাস্তি চাকরিচ্যুতির নজির নেই বললেই চলে। আগেই উল্লেখ করেছি, শাস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রেও রাজনৈতিক বিবেচনা কাজ করে বলে প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তাকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। এমন ঘটনাও ঘটেছে, শাস্তি দেওয়ার পরও শাস্তি মওকুফ করে নেওয়ার উদাহরণ আছে। সরকারের অতিমাত্রায় আমলানির্ভরতা এর জন্য দায়ী। আগে আরও দু-একটি লেখায় উল্লেখ করেছি, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর সরকারের এই আমলানির্ভরতা বেড়েছে। এ দুটি নির্বাচনে বর্তমান সরকারের ক্ষমতাসীন হওয়ার পেছনে ইউএনওদের কী ভূমিকা ছিল, তা নতুন করে উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই। আগামী নির্বাচনেও সরকার আমলাদের এরূপ সহায়তা চাইবে—এটাই স্বাভাবিক। এখানেই সবার আপত্তি। জনগণ নিজেদের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য সর্বজন গৃহীত একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরে পেতে চায়। লেখাটি শেষ করার আগে আবারও উল্লেখ করতে চাই; এ দেশের মানুষ প্রজা নয়, নাগরিক। নাগরিকের সঙ্গে আমলাদের যেকোনো অসদাচারণ শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই অপরাধের শাস্তি নিশ্চিত করতেই হবে। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধ করে তাদের কৃতকর্মের জবাবদিহির যথাযথ কাঠামো গড়ে তুলতে হবে, তা না হলে প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাবে—আমলারা আসলেই জনগণের সেবক, নাকি শাসক?

১৫ অক্টোবর ঢাকায় প্রকাশিত পত্রিকার একটি সংবাদ সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সংবাদটি হলো, কুমিল্লার লালমাইয়ে জুমার নামাজ পড়ার আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফোরকানকে একটু সরে নামাজের কাতারে দাঁড়ানোর অনুরোধ করার জন্য মসজিদের ইমামকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে! ঘটনাটি ঘটে লালমাই উপজেলার পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নের ভাটারা কাচারি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে। খুতবা পড়ানো শেষে মসজিদের ইমাম নামাজ শুরুর আগে অভ্যাসমতো সবাইকে লাইন সোজা করে দাঁড়াতে অনুরোধ করেন। একই সঙ্গে তিনি সেখানে উপস্থিত ইউএনওকেও নামাজের লাইনে দাঁড়াতে বলেন। সবার সামনে ইউএনওকে ইমাম এভাবে বলবেন, এটা সম্ভবত ইউএনও ভাবেননি। সে কারণেই হয়তো তিনি অপমান বোধ করেছেন। অতঃপর যা হওয়ার কথা নয়, তা-ই হলো।
নামাজ শেষে তিনি ইমাম ও মুয়াজ্জিনকে ডেকে নিয়ে তাঁকে তাঁরা চেনেন কি না, জিজ্ঞেস করেন। তখন মসজিদের ইমাম মো. আবুল বাশার তাঁকে চিনতে পারেননি বলে দুঃখ প্রকাশ করেন। তার পরও ইউএনও তাঁদের ওপর ক্ষিপ্ত হন এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে ডেকে এনে ইমামকে মসজিদের ইমামতি থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেন। চেয়ারম্যান যথাবিহিত মসজিদ কমিটিতে বলে মো. আবুল বাশারকে আর নামাজ পড়াতে নিষেধ করে দেন। ইউএনওর এরূপ আচরণের ঘটনাটি জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ জাতীয় গণমাধ্যমে এ নিয়ে খবর প্রচারিত হয়। তাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। শেষ পর্যন্ত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ডিসি তাঁর অফিসে সব পক্ষকে ডেকে এনে বিষয়টি মিটমাট করে দিলে মানুষের ক্ষোভ প্রশমিত হয়।
ইদানীং প্রশাসনিক ক্যাডারের কর্মকর্তাদের বেশ কয়েকটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও চরিত্র স্খলনজনিত ঘটনা জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
বিশেষ করে দেশের কয়েকটি উপজেলার ইউএনও জাতীয় গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছেন। স্থানীয় পর্যায়ে সাধারণ মানুষের প্রতি তাঁদের অধৈর্য ও অসহনশীল আচরণ প্রশাসনিক ক্যাডারের সুনামের প্রতি সুবিচার করতে ব্যর্থ হয়েছে। গত কয়েক বছর যাবৎ প্রশাসনের নিম্ন পর্যায়ের এসব কর্মকর্তা (সবাই নন) কেবল বদনামই কুড়িয়ে এনেছেন। এ নিয়ে পত্রপত্রিকায় প্রচুর লেখালেখি হয়েছে। আজকের পত্রিকায় আমার নিজের লেখা এ সংক্রান্ত একটি নিবন্ধও প্রকাশিত হয়েছে। প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের অনেক ভালো ভালো কর্মকাণ্ড জনসমক্ষে যতটা না প্রচার পায়, সেই তুলনায় তাঁদের সৃষ্ট যেকোনো অসদাচরণ খুব দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আমার বিশ্বাস, এসব কর্মকর্তাকে প্রারম্ভিক প্রশিক্ষণে স্থানীয় বা সাধারণ মানুষের সঙ্গে আচরণের বিষয়ে বিশেষ প্রেষণামূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে।
চাকরির শুরুতেই প্রশাসন ক্যাডারের এসব কর্মকর্তার এমন কোনো ধারণা পোষণ করা উচিত হবে না—তাঁরা যেহেতু প্রশাসনের ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তা, কাজেই তাঁরা জনগণের শাসক। এটা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না যে রাষ্ট্রের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তাই জনগণের সেবক। জনগণের দেওয়া ট্যাক্সের পয়সায় নিজের সংসার চলে। সন্তানের শিক্ষালাভের সুযোগ হয়। কিন্তু ইদানীং লক্ষ করা গেছে, সরকারি কর্মকর্তা, বিশেষ করে প্রশাসন ও পুলিশ সার্ভিসের অনেক কর্মকর্তা সাধারণ মানুষের সঙ্গে এমন আচরণ করেন যে, তাঁদের আচরণ দেখে মনে হয়, জনগণই তাদের প্রজা এবং তাঁরা জনগণের শাসক। এটা মোটেও কাম্য নয়।
প্রশাসন ক্যাডারের বিভিন্ন পর্যায়ের পদ ও পদবির নামের বিষয়টিও কর্মকর্তাদের মন ও মানসিকতার ওপর প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে জেলা পর্যায়ের প্রশাসনিক পদ, আমরা যাকে ‘জেলা প্রশাসক’ বলে থাকি, তার শাব্দিক অর্থ কী দাঁড়ায়? ‘জেলা প্রশাসক’ কথাটির কি এই অর্থ দাঁড়ায় না—যিনি এই পদে কাজ করেন, তিনি সেই জেলার প্রশাসক? অর্থাৎ তিনি সেই জেলার শাসনকর্তা? আগে এই পদটিকে বলা হতো ‘ডেপুটি কালেক্টর’ বা ‘ডেপুটি কমিশনার’। এই ডেপুটি কালেক্টর বা কমিশনারকে বাংলা করতে গিয়ে করা হয়েছে ‘জেলা প্রশাসক’।
‘প্রশাসক’ শব্দটির ভেতরে কেমন ‘শাসক’-এর গন্ধ পাওয়া যায়! জেলার প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড চালাতে গিয়ে তাঁরা এমন কিছু অগ্রহণযোগ্য আচরণ করেছেন, যা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে উচ্চ আদালতের একটি মন্তব্যের কথা মনে পড়ে গেল। ২০১৯ সালে ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান হত্যাকাণ্ড মামলার এক শুনানি চলাকালে বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বলেছিলেন, ‘কিছু কিছু ওসি, ডিসি আছেন, যাঁরা নিজেদের জমিদার মনে করেন। এমন ভাব দেখান যে তাঁরাই সব।’ জেলা প্রশাসককে আমরা সাধারণত ডিসি বলি। এখন বুঝতে হবে ডিসি মানে কী? ডিসি মানে হলো ডেপুটি কমিশনার। এখন প্রশ্ন আসবে, উনি কার ডেপুটি? আমরা সাধারণত যাঁকে বিভাগীয় কমিশনার বলি, ডেপুটি কমিশনার হলেন তাঁরই ডেপুটি, যাকে বাংলায় করা হয়েছে ‘জেলা প্রশাসক’।
আরও একটি মজার বিষয় উল্লেখ করতে চাই। আমাদের দেশে একটি ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়’ আছে। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী জনগণ যেখানে রাষ্ট্রের মালিক, সেখানে ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়’ থাকা কতটুকু যুক্তিসংগত? আমলারা হলেন জনগণের সেবক। তাঁরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। অথচ তাঁদের হাতে সীমাহীন ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এই ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের উপযুক্ত কাঠামো তৈরি হয়নি। ফলে ক্ষমতার ব্যবহার করে তাঁরা যে অপকর্ম করেন, সেই অপকর্মের জন্য জনগণের কাছে জবাবদিহির কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি।
সিআরপিসি ১৯৭ ধারায় সরকারি কর্মকর্তারা সরকারি দায়িত্ব পালনকালে কোনো অভিযোগে অভিযুক্ত হলে সরকারের অনুমোদন ছাড়া কোনো আদালত সেই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আমলে নিতে পারেন না। কোন আদালতে এই মামলার বিচার হবে, তা সরকার নির্ধারণ করে দেয়। তার পরও বর্তমানে সরকারি কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের আগে সরকারের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। ফলে আমলাদের একধরনের দায়মুক্তি পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। ক্ষমতাসীনদের দেওয়া এই আনুকূল্য আমলাদের কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেপরোয়া করে তুলেছে বলে অনেকেরই ধারণা। সরকার রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য তাঁদের রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে বলে তাঁরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ক্ষমতাবানও হয়েছেন। নির্বাহী বিভাগের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে তাঁদের প্রতি বিশেষ নজর থাকায় তাঁরা ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নেতাদের তুলনায়ও বেশি গুরুত্ব লাভ করছেন বলে অভিযোগও আছে। এই সরকারের আমলেই সাধারণ মানুষ ও জনপ্রতিনিধির স্বার্থ বিবেচনা করে দেশে আইন হয়েছে এবং সরকারি প্রজ্ঞাপনও জারি হয়েছে যে উপজেলার ১৭টি প্রশাসনিক বডির প্রধান হবেন উপজেলা চেয়ারম্যান। তার পরও ডিসিদের সহযোগিতায় ইউএনওরা তা ছাড়ছেন না। তাঁরা এই সবকিছুই কুক্ষিগত করে রেখেছেন। ক্ষমতার শীর্ষ পর্যায়ে বিষয়টি উত্থাপন করার পরও আমলারা এ বিষয়ে আনুকূল্য পেয়ে যাচ্ছেন।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার দুর্বলতার সুযোগেই আমলাতন্ত্রনির্ভরতা বেড়েছে। এ কারণেই বর্তমানে দেশে যে বিধিব্যবস্থা চালু আছে, তাতে জনগণের সার্বভৌমত্ব পুরো নিশ্চিত করে না। দেশের শাসনব্যবস্থা এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, তাতে ডিসি-ইউএনওসহ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা নিজেদের প্রভু এবং জনগণকে প্রজা মনে করেন। একটা কথা মনে রাখতে হবে, গণতান্ত্রিক দুর্বলতা ও জনবিচ্ছিন্নতা বাড়লে একচেটিয়া ব্যবস্থা কায়েম হয়। আর একচেটিয়া ব্যবস্থা যখন চালু হয়, তখন ক্ষমতার অপপ্রয়োগও বেশি হয়। ফলে প্রশাসনের শৃঙ্খলায়ও ঘাটতি দেখা দেয়। আমলাতন্ত্রের ওপর প্রখ্যাত লেখক ম্যাক্স ওয়েবারের দৃষ্টিতে ‘আমলা হলেন সেই ব্যক্তি, যিনি নির্দিষ্ট নিয়মকানুন ও নীতির অধীনে নিরপেক্ষতার সঙ্গে কাজ করেন।’ আমলারা কখনো ব্যক্তিগতভাবে আবেগতাড়িত হন না। তাঁর নিজস্ব কোনো পছন্দ-অপছন্দ থাকে না, তিনি নিয়মের কাছে বাধ্যগত।
এখন সিনিয়র থেকে শুরু করে সহকারী সচিব পর্যন্ত প্রশাসন ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আছেন ৫ হাজার ৯৭৩ জন। দেশে মোট উপজেলা ৪৯২টি। প্রতিটি উপজেলায় একজন করে ইউএনও নিয়োগ করা আছে। এই ইউএনওসহ প্রশাসনের মাঠপর্যায়ের কিছু কিছু কর্মকর্তার এরূপ অসভ্য আচরণে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন। সরকারি আচরণ বিধিমালায় ৩৪টি নির্দেশনা রয়েছে। এসব নির্দেশনায় আচরণসহ বিভিন্ন বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কার্যক্রম কেমন হবে, তা উল্লেখ থাকলেও নাগরিকদের সঙ্গে আচরণ বিষয়ে আলাদা কোনো বিধান নেই। অবশ্য ২০১৮ সালের সরকারি কর্মচারী বিধিমালায়, নাগরিকদের সঙ্গে যেকোনো অসদাচরণ শাস্তিযোগ্য হবে—এমন একটি বিধির উল্লেখ আছে। এখানে অসদাচরণ বলতে ‘অসংগত আচরণ, চাকরি শৃঙ্খলাহানিকর আচরণ বা শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণকে বোঝানো হয়েছে। গত প্রায় ১৫ বছরে প্রশাসনের প্রায় ৩ হাজার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি, নারীঘটিত সমস্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে জমা আছে।
বিভিন্ন অভিযোগে শত শত বিভাগীয় মামলা হলেও এর মধ্যে মাত্র ১০০-এর কিছু বেশি কর্মকর্তাকে লঘু ও গুরুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে সর্বোচ্চ শাস্তি চাকরিচ্যুতির নজির নেই বললেই চলে। আগেই উল্লেখ করেছি, শাস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রেও রাজনৈতিক বিবেচনা কাজ করে বলে প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তাকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। এমন ঘটনাও ঘটেছে, শাস্তি দেওয়ার পরও শাস্তি মওকুফ করে নেওয়ার উদাহরণ আছে। সরকারের অতিমাত্রায় আমলানির্ভরতা এর জন্য দায়ী। আগে আরও দু-একটি লেখায় উল্লেখ করেছি, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর সরকারের এই আমলানির্ভরতা বেড়েছে। এ দুটি নির্বাচনে বর্তমান সরকারের ক্ষমতাসীন হওয়ার পেছনে ইউএনওদের কী ভূমিকা ছিল, তা নতুন করে উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই। আগামী নির্বাচনেও সরকার আমলাদের এরূপ সহায়তা চাইবে—এটাই স্বাভাবিক। এখানেই সবার আপত্তি। জনগণ নিজেদের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য সর্বজন গৃহীত একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরে পেতে চায়। লেখাটি শেষ করার আগে আবারও উল্লেখ করতে চাই; এ দেশের মানুষ প্রজা নয়, নাগরিক। নাগরিকের সঙ্গে আমলাদের যেকোনো অসদাচারণ শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই অপরাধের শাস্তি নিশ্চিত করতেই হবে। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধ করে তাদের কৃতকর্মের জবাবদিহির যথাযথ কাঠামো গড়ে তুলতে হবে, তা না হলে প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাবে—আমলারা আসলেই জনগণের সেবক, নাকি শাসক?

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

১৫ অক্টোবর ঢাকায় প্রকাশিত পত্রিকার একটি সংবাদ সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সংবাদটি হলো, কুমিল্লার লালমাইয়ে জুমার নামাজ পড়ার আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফোরকানকে একটু সরে নামাজের কাতারে দাঁড়ানোর অনুরোধ করার জন্য মসজিদের ইমামকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে!
২৮ অক্টোবর ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

১৫ অক্টোবর ঢাকায় প্রকাশিত পত্রিকার একটি সংবাদ সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সংবাদটি হলো, কুমিল্লার লালমাইয়ে জুমার নামাজ পড়ার আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফোরকানকে একটু সরে নামাজের কাতারে দাঁড়ানোর অনুরোধ করার জন্য মসজিদের ইমামকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে!
২৮ অক্টোবর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

১৫ অক্টোবর ঢাকায় প্রকাশিত পত্রিকার একটি সংবাদ সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সংবাদটি হলো, কুমিল্লার লালমাইয়ে জুমার নামাজ পড়ার আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফোরকানকে একটু সরে নামাজের কাতারে দাঁড়ানোর অনুরোধ করার জন্য মসজিদের ইমামকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে!
২৮ অক্টোবর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

১৫ অক্টোবর ঢাকায় প্রকাশিত পত্রিকার একটি সংবাদ সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সংবাদটি হলো, কুমিল্লার লালমাইয়ে জুমার নামাজ পড়ার আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফোরকানকে একটু সরে নামাজের কাতারে দাঁড়ানোর অনুরোধ করার জন্য মসজিদের ইমামকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে!
২৮ অক্টোবর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫