মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী

১৯৭১ সালের ডিসেম্বর আমাদের জাতীয় ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অধ্যায়ের সূচনা করেছিল। একাত্তরের মার্চ মাসে পাকিস্তানি বাহিনীর অপারেশন সার্চলাইট শুরু হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, তা ছিল এই অধ্যায়ের অনিশ্চিত সূচনাপর্ব। পাকিস্তানের আক্রমণের মুখে বঙ্গবন্ধু, রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং নিরস্ত্র নিরীহ জনসাধারণের স্বাধীনতার জন্য প্রাণপণ লড়াই করা ছাড়া আর কোনো দ্বিতীয় পথ ছিল না। পাকিস্তানের সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খান উত্তাল মার্চ মাসের সেই দিনগুলোতে অপারেশন সার্চলাইটকে বাঙালি নিধনে ভেতরে-ভেতরে প্রস্তুত করার জন্য সময় নিয়েছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর ডাকে অসহযোগ আন্দোলন, সাতই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক গতিপথকে অনিবার্যভাবে পাকিস্তানের শৃঙ্খল ভাঙার পথেই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। এই অসহযোগ আন্দোলন ছিল অহিংস। এর বিরুদ্ধে শুরুতে পাকিস্তানিদের নেওয়ার মতো কোনো সশস্ত্র কিংবা পুলিশি ব্যবস্থা ছিল না। বঙ্গবন্ধু সে কারণেই সাতই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে দৃঢ়কণ্ঠে বলেছিলেন ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম...’। তিনি স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছিলেন অসহযোগ আন্দোলন যে গতিময়তা নিয়ে অগ্রসর হবে, তা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় পাকিস্তানের থাকবে না। ফলে এই সংগ্রামের অভিযাত্রার চূড়ান্ত লক্ষ্য স্বাধীনতা অর্জনেই ধাবিত হবে।
একটু গভীরভাবে চিন্তা করলে দেখা যাবে যে, মার্চ মাসের সেই অসহযোগ আন্দোলনের ফলে পূর্ব বাংলায় পাকিস্তানের প্রশাসন, আদেশ-নির্দেশ, রাষ্ট্রযন্ত্রের ক্রিয়া ক্রমেই দুর্বল হতে থাকে, সেই জায়গায় বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদেশ-নির্দেশ প্রশাসনের ওপর আপনাআপনি কার্যকর করার গ্রহণযোগ্যতা পেতে থাকে। ফলে কার্যত পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পূর্ব বাংলায় অচল হয়ে পড়ে। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ধারণা প্রশাসনসহ সর্বত্র প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে। এই অবস্থা যত চলতে থাকে, তত অসহযোগ আন্দোলন বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অনিবার্য করে তোলে।
পাকিস্তানের সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খান তাঁর পরামর্শক ভুট্টো, সামরিক বাহিনী ও অন্যান্য রাষ্ট্রীয় শক্তি পরিস্থিতি আগে থেকেই বুঝতে পেরে ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৭১ ১৪তম ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল খাদিম হুসাইন রাজা এবং মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীকে অপারেশন সার্চলাইটের মূল পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জিওসি লে জেনারেল সাহেবজাদা ইয়াকুব খান এবং পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ভাইস অ্যাডমিরাল এস এম আহসানকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এই দুই পদের দায়িত্ব দেওয়া হয় লে জেনারেল টিক্কা খানকে।
১৬ মার্চ তারিখে ইয়াহিয়া খান বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনার নামে লোকদেখানো নাটক মঞ্চস্থ করেছিলেন। ১৮ তারিখ গোপনে খাদেম হুসাইন রাজা এবং রাও ফরমান আলী অপারেশন সার্চলাইটের পরিকল্পনা তৈরি সম্পন্ন করেন। এই পরিকল্পনার লক্ষ্য ছিল অসহযোগ আন্দোলনের গতিপথ রুদ্ধ করে দেওয়া, পোড়ামাটি নীতি অনুসরণের মাধ্যমে বাঙালির স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা চিরকালের জন্য ধূলিসাৎ করে দেওয়া। ইয়াহিয়া খান সেই প্রস্তুতির সবকিছু চূড়ান্ত করেই ২৫ মার্চ রাতে ঢাকা ছাড়েন এবং অপারেশন সার্চলাইটের আক্রমণ শুরুর নির্দেশনা দিয়ে যান। রাতে সেই আক্রমণই ট্যাংক, কামান, গোলাবারুদ ও সশস্ত্র বাহিনীর পরিকল্পনা মোতাবেক ঢাকা, খুলনা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, যশোর, রাজশাহী, রংপুর, সৈয়দপুর এবং সিলেটে একসঙ্গে শুরু হয়। বাঙালিনিধন ও গণহত্যার এক বর্বরোচিত শক্তি প্রয়োগের অধ্যায় পাকিস্তান রাষ্ট্র, শাসকশ্রেণি ও সেনাবাহিনী যুক্তভাবে পূর্ব বাংলার সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে ২৫ মার্চ রাতে শুরু করলে বঙ্গবন্ধু সূচিত অসহযোগ আন্দোলনের পর্ব রুদ্ধ হয়ে পড়ে, সেই পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু সশস্ত্র পন্থায় স্বাধীনতা অর্জনের জন্য পাকিস্তানি বাহিনীর হামলাকে প্রতিহত করার ডাক দেন। শুরু হয় স্বাধীনতার সশস্ত্র যুদ্ধের অধ্যায়। ২৬ মার্চ থেকে প্রতিরোধ যুদ্ধ এবং ১০ এপ্রিল থেকে সরকার গঠনের মাধ্যমে বৈধ সরকারের নেতৃত্বে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত করার সব প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে শুরু হয়। এর সঙ্গে যুক্ত হতে থাকে স্বাধীনতাকামী সব শ্রেণি-পেশার নিরস্ত্র মানুষ। এরা সশস্ত্র হওয়ার সব উপায় উদ্ভাবন করে। পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে একসময়ের নিরস্ত্র সাধারণ মানুষ সশস্ত্র গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়ে হামলা প্রতিহত, আক্রমণ-প্রতি আক্রমণ ঘটাতে থাকে। স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু নির্দেশিত পথে তাঁর দল সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের সব প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। জনগণকে এর সঙ্গে একাত্ম হওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়।
বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানিরা গ্রেপ্তার করে কারাগারে বন্দী করে রাখলেও তাঁকে রাষ্ট্রপতি করেই মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত করার সরকার গঠিত হয়। সেই সরকারই তাঁর শারীরিক অনুপস্থিতিতেই মুক্তিযুদ্ধের গেরিলা তৎপরতা, কূটনীতি, আন্তর্জাতিকভাবে জনসমর্থন সৃষ্টি, দেশের অভ্যন্তরে জনগণকে সুসংগঠিত করা, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে ব্যর্থ করে দেওয়ার এক নিরন্তর সশস্ত্র যুদ্ধে সুসজ্জিত করতে থাকে। ২৬ মার্চ শুরু হওয়া সশস্ত্র স্বাধীনতালাভের যুদ্ধ ক্রমেই বেগবান হয়ে ওঠে। স্বাধীনতাকামী মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া পূর্ব বাংলার জনগণ ১৯৭১ সালের বিশ্ব রাজনীতিকে গভীরভাবে নাড়া দিতে সক্ষম হয়। গোটা বিশ্বের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে তখন সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের লড়াইরত বাংলাদেশ নামক একটি রাষ্ট্রের লক্ষ্য অর্জনের কণ্টকাকীর্ণ পথ। বিশ্বের শক্তিধররা তখন দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। এক ভাগে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধরত মানুষের স্বাধীন রাষ্ট্রলাভের আকাঙ্ক্ষার প্রতি সমর্থন দান, অন্য ভাগে কয়েকটি সরকার পাকিস্তানিদের পক্ষাবলম্বন করে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ তখন আর কেবল বাংলাদেশের একার হয়ে থাকেনি। এর পক্ষে-বিপক্ষে বিশ্বের গণতান্ত্রিক শক্তি ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির অবস্থান সুনির্দিষ্ট হয়ে যায়। বিষয়টি আন্তর্জাতিক কূটনীতিরও বিষয়ে পরিণত হয়ে যায়। পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী মার্কিন, চীন এবং আরও কিছু সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থনে পূর্ব বাংলার মুক্তিযুদ্ধকে চূড়ান্তভাবে প্রতিহত করার জন্য ৩ ডিসেম্বর ভারতের বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরুর মাধ্যমে একটি বড় ধরনের বহুপক্ষীয় যুদ্ধের ক্ষেত্র তৈরি করেছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের সপ্তম নৌবহর ভারত মহাসাগরে প্রেরণ করলে সোভিয়েতরা ২০তম নৌবহর নিয়ে এগোতে থাকে। এরই মধ্যে ৬ ডিসেম্বর ভারত ও ভুটান বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
বাংলাদেশের তৎকালীন সরকার আগেই ভারতের সঙ্গে যৌথ বাহিনী গঠনের চুক্তি করে রাখে। ফলে পাকিস্তানের আক্রমণ ভারতের পশ্চিম সীমান্তে সীমিত হয়ে যায়। বাংলাদেশে তখন মুক্তিবাহিনী ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে পাকিস্তানিদের সব আক্রমণ প্রতিহত করতে থাকে। পাকিস্তানিদের সব বাংকার তাসের ঘরের মতো ভেঙে যেতে থাকে। সামরিক পরিকল্পনাতেই শুধু নয়, কূটনীতিতেও পাকিস্তানি শাসকেরা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে গঠিত মুক্তিযুদ্ধের সরকারের রণনীতি এবং রণকৌশলের সঙ্গে এঁটে উঠতে পারেননি। দ্রুতই এই সরকারের সবকিছু ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ তখন এতটাই দেশের অভ্যন্তরে ও আন্তর্জাতিকভাবে শক্তি ও সমর্থন নিয়ে দ্রুত এগিয়ে যেতে থাকে যে, অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই পাকিস্তানিরা সব সেনানিবাস ত্যাগ করে ঢাকায় আত্মসমর্পণের জন্য জড়ো হতে বাধ্য হয়। চারদিক থেকে যৌথ বাহিনী এবং স্বাধীনতাকামী মানুষ ঢাকা সেনানিবাসকে অবরুদ্ধ করে ফেলে।
১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় সেনা কমান্ডার জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজী ৯৩ হাজার স্বদেশীয় সেনাসদস্য নিয়ে বিকেল ৪টা ৩১ মিনিটে রমনার রেসকোর্স ময়দানে যৌথ বাহিনীর কাছে মাথা নত করে আত্মসমর্পণ দলিলে স্বাক্ষর করেন। অবশেষে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় ডিসেম্বরের ১৬ তারিখে প্রতিষ্ঠিত হয়। সারা পৃথিবীতে একটি খবরই তখন প্রচারিত হয়, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিজয় লাভ করেছে।’ বাংলাদেশের নাম পৃথিবীর নতুন রাষ্ট্রের তালিকায় যুক্ত হয়ে যায়। এ হচ্ছে ১৯৭১-এর ডিসেম্বরের রাষ্ট্র অর্জনের বিজয়। এর পেছনে ছিল সুদীর্ঘ ইতিহাস এবং ৯ মাসের আত্মোৎসর্গকৃত জাতির অনন্য শৌর্য-বীর্যের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার ইতিহাস।
ডিসেম্বর মাসে সেই ইতিহাস সারা পৃথিবীকেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে একাত্ম করে ফেলেছিল। আমাদের শক্তির কাছে পাকিস্তান তখন ধূলিসাৎ হয়ে যায়, সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো মহাপরাক্রমশালীর রাষ্ট্রের সমর্থনও। একাত্তরের ডিসেম্বরের গৌরব-সৌরভ, আত্মমর্যাদা, ত্যাগ, স্বীকৃতি এবং স্বাধীন রাষ্ট্রলাভের বিজয় আনন্দের দৃশ্য অতুলনীয়। গোটা জাতি তখন জয় বাংলা স্লোগানে শুধু বাংলাদেশের আকাশ-বাতাসই নয়, সারা পৃথিবীকেও মুখরিত করে তুলেছিল।
একাত্তরের ডিসেম্বর ছিল আমাদের জাতীয় ইতিহাসের শৌর্য-বীর্য ও বিজয়ের অনন্য উচ্চতায় আরোহণের কাল। এবার ২০২১ সালের ডিসেম্বরে আমরা বিজয়ের ৫০ বছর পূরণ করেছি। ৫০ বছরে সাফল্য ও ব্যর্থতা আমাদের দুই-ই ছিল। তবে পাকিস্তানকে আর্থসামাজিক, রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন সূচকে আমরা অনেক আগেই অতিক্রম করেছি। একাত্তরে দেশটিকে পরাজিত করেছি। এখন যেসব সূচকে অতিক্রম করেছি তাকে আরও বেগবান করতে হবে। সাম্প্রদায়িকতা, দুর্নীতি, গণতন্ত্রের শত্রুসহ সব অপশক্তিকে পরাজিত করেই আমাদের সম্মুখে অগ্রসর হতে হবে। ২০২১-এর ডিসেম্বরে আমাদের সেই শপথে বলীয়ান হতেই হবে।
মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী
অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট

১৯৭১ সালের ডিসেম্বর আমাদের জাতীয় ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অধ্যায়ের সূচনা করেছিল। একাত্তরের মার্চ মাসে পাকিস্তানি বাহিনীর অপারেশন সার্চলাইট শুরু হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, তা ছিল এই অধ্যায়ের অনিশ্চিত সূচনাপর্ব। পাকিস্তানের আক্রমণের মুখে বঙ্গবন্ধু, রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং নিরস্ত্র নিরীহ জনসাধারণের স্বাধীনতার জন্য প্রাণপণ লড়াই করা ছাড়া আর কোনো দ্বিতীয় পথ ছিল না। পাকিস্তানের সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খান উত্তাল মার্চ মাসের সেই দিনগুলোতে অপারেশন সার্চলাইটকে বাঙালি নিধনে ভেতরে-ভেতরে প্রস্তুত করার জন্য সময় নিয়েছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর ডাকে অসহযোগ আন্দোলন, সাতই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক গতিপথকে অনিবার্যভাবে পাকিস্তানের শৃঙ্খল ভাঙার পথেই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। এই অসহযোগ আন্দোলন ছিল অহিংস। এর বিরুদ্ধে শুরুতে পাকিস্তানিদের নেওয়ার মতো কোনো সশস্ত্র কিংবা পুলিশি ব্যবস্থা ছিল না। বঙ্গবন্ধু সে কারণেই সাতই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে দৃঢ়কণ্ঠে বলেছিলেন ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম...’। তিনি স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছিলেন অসহযোগ আন্দোলন যে গতিময়তা নিয়ে অগ্রসর হবে, তা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় পাকিস্তানের থাকবে না। ফলে এই সংগ্রামের অভিযাত্রার চূড়ান্ত লক্ষ্য স্বাধীনতা অর্জনেই ধাবিত হবে।
একটু গভীরভাবে চিন্তা করলে দেখা যাবে যে, মার্চ মাসের সেই অসহযোগ আন্দোলনের ফলে পূর্ব বাংলায় পাকিস্তানের প্রশাসন, আদেশ-নির্দেশ, রাষ্ট্রযন্ত্রের ক্রিয়া ক্রমেই দুর্বল হতে থাকে, সেই জায়গায় বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদেশ-নির্দেশ প্রশাসনের ওপর আপনাআপনি কার্যকর করার গ্রহণযোগ্যতা পেতে থাকে। ফলে কার্যত পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পূর্ব বাংলায় অচল হয়ে পড়ে। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ধারণা প্রশাসনসহ সর্বত্র প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে। এই অবস্থা যত চলতে থাকে, তত অসহযোগ আন্দোলন বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অনিবার্য করে তোলে।
পাকিস্তানের সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খান তাঁর পরামর্শক ভুট্টো, সামরিক বাহিনী ও অন্যান্য রাষ্ট্রীয় শক্তি পরিস্থিতি আগে থেকেই বুঝতে পেরে ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৭১ ১৪তম ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল খাদিম হুসাইন রাজা এবং মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীকে অপারেশন সার্চলাইটের মূল পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জিওসি লে জেনারেল সাহেবজাদা ইয়াকুব খান এবং পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ভাইস অ্যাডমিরাল এস এম আহসানকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এই দুই পদের দায়িত্ব দেওয়া হয় লে জেনারেল টিক্কা খানকে।
১৬ মার্চ তারিখে ইয়াহিয়া খান বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনার নামে লোকদেখানো নাটক মঞ্চস্থ করেছিলেন। ১৮ তারিখ গোপনে খাদেম হুসাইন রাজা এবং রাও ফরমান আলী অপারেশন সার্চলাইটের পরিকল্পনা তৈরি সম্পন্ন করেন। এই পরিকল্পনার লক্ষ্য ছিল অসহযোগ আন্দোলনের গতিপথ রুদ্ধ করে দেওয়া, পোড়ামাটি নীতি অনুসরণের মাধ্যমে বাঙালির স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা চিরকালের জন্য ধূলিসাৎ করে দেওয়া। ইয়াহিয়া খান সেই প্রস্তুতির সবকিছু চূড়ান্ত করেই ২৫ মার্চ রাতে ঢাকা ছাড়েন এবং অপারেশন সার্চলাইটের আক্রমণ শুরুর নির্দেশনা দিয়ে যান। রাতে সেই আক্রমণই ট্যাংক, কামান, গোলাবারুদ ও সশস্ত্র বাহিনীর পরিকল্পনা মোতাবেক ঢাকা, খুলনা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, যশোর, রাজশাহী, রংপুর, সৈয়দপুর এবং সিলেটে একসঙ্গে শুরু হয়। বাঙালিনিধন ও গণহত্যার এক বর্বরোচিত শক্তি প্রয়োগের অধ্যায় পাকিস্তান রাষ্ট্র, শাসকশ্রেণি ও সেনাবাহিনী যুক্তভাবে পূর্ব বাংলার সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে ২৫ মার্চ রাতে শুরু করলে বঙ্গবন্ধু সূচিত অসহযোগ আন্দোলনের পর্ব রুদ্ধ হয়ে পড়ে, সেই পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু সশস্ত্র পন্থায় স্বাধীনতা অর্জনের জন্য পাকিস্তানি বাহিনীর হামলাকে প্রতিহত করার ডাক দেন। শুরু হয় স্বাধীনতার সশস্ত্র যুদ্ধের অধ্যায়। ২৬ মার্চ থেকে প্রতিরোধ যুদ্ধ এবং ১০ এপ্রিল থেকে সরকার গঠনের মাধ্যমে বৈধ সরকারের নেতৃত্বে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত করার সব প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে শুরু হয়। এর সঙ্গে যুক্ত হতে থাকে স্বাধীনতাকামী সব শ্রেণি-পেশার নিরস্ত্র মানুষ। এরা সশস্ত্র হওয়ার সব উপায় উদ্ভাবন করে। পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে একসময়ের নিরস্ত্র সাধারণ মানুষ সশস্ত্র গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়ে হামলা প্রতিহত, আক্রমণ-প্রতি আক্রমণ ঘটাতে থাকে। স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু নির্দেশিত পথে তাঁর দল সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের সব প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। জনগণকে এর সঙ্গে একাত্ম হওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়।
বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানিরা গ্রেপ্তার করে কারাগারে বন্দী করে রাখলেও তাঁকে রাষ্ট্রপতি করেই মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত করার সরকার গঠিত হয়। সেই সরকারই তাঁর শারীরিক অনুপস্থিতিতেই মুক্তিযুদ্ধের গেরিলা তৎপরতা, কূটনীতি, আন্তর্জাতিকভাবে জনসমর্থন সৃষ্টি, দেশের অভ্যন্তরে জনগণকে সুসংগঠিত করা, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে ব্যর্থ করে দেওয়ার এক নিরন্তর সশস্ত্র যুদ্ধে সুসজ্জিত করতে থাকে। ২৬ মার্চ শুরু হওয়া সশস্ত্র স্বাধীনতালাভের যুদ্ধ ক্রমেই বেগবান হয়ে ওঠে। স্বাধীনতাকামী মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া পূর্ব বাংলার জনগণ ১৯৭১ সালের বিশ্ব রাজনীতিকে গভীরভাবে নাড়া দিতে সক্ষম হয়। গোটা বিশ্বের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে তখন সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের লড়াইরত বাংলাদেশ নামক একটি রাষ্ট্রের লক্ষ্য অর্জনের কণ্টকাকীর্ণ পথ। বিশ্বের শক্তিধররা তখন দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। এক ভাগে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধরত মানুষের স্বাধীন রাষ্ট্রলাভের আকাঙ্ক্ষার প্রতি সমর্থন দান, অন্য ভাগে কয়েকটি সরকার পাকিস্তানিদের পক্ষাবলম্বন করে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ তখন আর কেবল বাংলাদেশের একার হয়ে থাকেনি। এর পক্ষে-বিপক্ষে বিশ্বের গণতান্ত্রিক শক্তি ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির অবস্থান সুনির্দিষ্ট হয়ে যায়। বিষয়টি আন্তর্জাতিক কূটনীতিরও বিষয়ে পরিণত হয়ে যায়। পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী মার্কিন, চীন এবং আরও কিছু সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থনে পূর্ব বাংলার মুক্তিযুদ্ধকে চূড়ান্তভাবে প্রতিহত করার জন্য ৩ ডিসেম্বর ভারতের বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরুর মাধ্যমে একটি বড় ধরনের বহুপক্ষীয় যুদ্ধের ক্ষেত্র তৈরি করেছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের সপ্তম নৌবহর ভারত মহাসাগরে প্রেরণ করলে সোভিয়েতরা ২০তম নৌবহর নিয়ে এগোতে থাকে। এরই মধ্যে ৬ ডিসেম্বর ভারত ও ভুটান বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
বাংলাদেশের তৎকালীন সরকার আগেই ভারতের সঙ্গে যৌথ বাহিনী গঠনের চুক্তি করে রাখে। ফলে পাকিস্তানের আক্রমণ ভারতের পশ্চিম সীমান্তে সীমিত হয়ে যায়। বাংলাদেশে তখন মুক্তিবাহিনী ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে পাকিস্তানিদের সব আক্রমণ প্রতিহত করতে থাকে। পাকিস্তানিদের সব বাংকার তাসের ঘরের মতো ভেঙে যেতে থাকে। সামরিক পরিকল্পনাতেই শুধু নয়, কূটনীতিতেও পাকিস্তানি শাসকেরা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে গঠিত মুক্তিযুদ্ধের সরকারের রণনীতি এবং রণকৌশলের সঙ্গে এঁটে উঠতে পারেননি। দ্রুতই এই সরকারের সবকিছু ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ তখন এতটাই দেশের অভ্যন্তরে ও আন্তর্জাতিকভাবে শক্তি ও সমর্থন নিয়ে দ্রুত এগিয়ে যেতে থাকে যে, অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই পাকিস্তানিরা সব সেনানিবাস ত্যাগ করে ঢাকায় আত্মসমর্পণের জন্য জড়ো হতে বাধ্য হয়। চারদিক থেকে যৌথ বাহিনী এবং স্বাধীনতাকামী মানুষ ঢাকা সেনানিবাসকে অবরুদ্ধ করে ফেলে।
১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় সেনা কমান্ডার জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজী ৯৩ হাজার স্বদেশীয় সেনাসদস্য নিয়ে বিকেল ৪টা ৩১ মিনিটে রমনার রেসকোর্স ময়দানে যৌথ বাহিনীর কাছে মাথা নত করে আত্মসমর্পণ দলিলে স্বাক্ষর করেন। অবশেষে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় ডিসেম্বরের ১৬ তারিখে প্রতিষ্ঠিত হয়। সারা পৃথিবীতে একটি খবরই তখন প্রচারিত হয়, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিজয় লাভ করেছে।’ বাংলাদেশের নাম পৃথিবীর নতুন রাষ্ট্রের তালিকায় যুক্ত হয়ে যায়। এ হচ্ছে ১৯৭১-এর ডিসেম্বরের রাষ্ট্র অর্জনের বিজয়। এর পেছনে ছিল সুদীর্ঘ ইতিহাস এবং ৯ মাসের আত্মোৎসর্গকৃত জাতির অনন্য শৌর্য-বীর্যের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার ইতিহাস।
ডিসেম্বর মাসে সেই ইতিহাস সারা পৃথিবীকেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে একাত্ম করে ফেলেছিল। আমাদের শক্তির কাছে পাকিস্তান তখন ধূলিসাৎ হয়ে যায়, সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো মহাপরাক্রমশালীর রাষ্ট্রের সমর্থনও। একাত্তরের ডিসেম্বরের গৌরব-সৌরভ, আত্মমর্যাদা, ত্যাগ, স্বীকৃতি এবং স্বাধীন রাষ্ট্রলাভের বিজয় আনন্দের দৃশ্য অতুলনীয়। গোটা জাতি তখন জয় বাংলা স্লোগানে শুধু বাংলাদেশের আকাশ-বাতাসই নয়, সারা পৃথিবীকেও মুখরিত করে তুলেছিল।
একাত্তরের ডিসেম্বর ছিল আমাদের জাতীয় ইতিহাসের শৌর্য-বীর্য ও বিজয়ের অনন্য উচ্চতায় আরোহণের কাল। এবার ২০২১ সালের ডিসেম্বরে আমরা বিজয়ের ৫০ বছর পূরণ করেছি। ৫০ বছরে সাফল্য ও ব্যর্থতা আমাদের দুই-ই ছিল। তবে পাকিস্তানকে আর্থসামাজিক, রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন সূচকে আমরা অনেক আগেই অতিক্রম করেছি। একাত্তরে দেশটিকে পরাজিত করেছি। এখন যেসব সূচকে অতিক্রম করেছি তাকে আরও বেগবান করতে হবে। সাম্প্রদায়িকতা, দুর্নীতি, গণতন্ত্রের শত্রুসহ সব অপশক্তিকে পরাজিত করেই আমাদের সম্মুখে অগ্রসর হতে হবে। ২০২১-এর ডিসেম্বরে আমাদের সেই শপথে বলীয়ান হতেই হবে।
মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী
অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

১৯৭১ সালের ডিসেম্বর আমাদের জাতীয় ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অধ্যায়ের সূচনা করেছিল। একাত্তরের মার্চ মাসে পাকিস্তানি বাহিনীর অপারেশন সার্চলাইট শুরু হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, তা ছিল এই অধ্যায়ের অনিশ্চিত সূচনাপর্ব।
০৩ ডিসেম্বর ২০২১
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

১৯৭১ সালের ডিসেম্বর আমাদের জাতীয় ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অধ্যায়ের সূচনা করেছিল। একাত্তরের মার্চ মাসে পাকিস্তানি বাহিনীর অপারেশন সার্চলাইট শুরু হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, তা ছিল এই অধ্যায়ের অনিশ্চিত সূচনাপর্ব।
০৩ ডিসেম্বর ২০২১
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

১৯৭১ সালের ডিসেম্বর আমাদের জাতীয় ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অধ্যায়ের সূচনা করেছিল। একাত্তরের মার্চ মাসে পাকিস্তানি বাহিনীর অপারেশন সার্চলাইট শুরু হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, তা ছিল এই অধ্যায়ের অনিশ্চিত সূচনাপর্ব।
০৩ ডিসেম্বর ২০২১
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

১৯৭১ সালের ডিসেম্বর আমাদের জাতীয় ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অধ্যায়ের সূচনা করেছিল। একাত্তরের মার্চ মাসে পাকিস্তানি বাহিনীর অপারেশন সার্চলাইট শুরু হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, তা ছিল এই অধ্যায়ের অনিশ্চিত সূচনাপর্ব।
০৩ ডিসেম্বর ২০২১
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫