Ajker Patrika

কেন এখনই সরানো হচ্ছে না এভারেস্টের বেস ক্যাম্প

কেন এখনই সরানো হচ্ছে না এভারেস্টের বেস ক্যাম্প

আজ এভারেস্ট জয়ের ৭০ বছর পূর্তি। ১৯৫৩ সালের এই দিনে এডমন্ড হিলারি এবং তেনজিং নোরগে প্রথম মানুষ হিসেবে পৃথিবীর সর্বোচ্চ চূড়াটিতে পা রাখেন। আর পর্বতারোহীদের এভারেস্ট জয়ের অভিযান শুরু হয় বেস ক্যাম্প থেকে। এভারেস্টের বেস ক্যাম্প এখনই কেন সরানো হচ্ছে না তাই জানাব আজ পাঠকদের। 

নেপালের পর্যটন বিষয়ক মন্ত্রণালয় গত বছরের জুনে পৃথিবীর সর্বোচ্চ চূড়াটির বেস ক্যাম্প আরও নিচের দিকে সরিয়ে আনার পরিকল্পনার কথা জানায়। কারণ জলবায়ু পরিবর্তন ও মানুষের নানা কর্মকাণ্ড একে অনিরাপদ করে তুলেছে। 

ক্যাম্পটির অবস্থান খুম্বু হিমবাহ এলাকায় যেটি ক্রমেই পাতলা হয়ে যাচ্ছে। এটা প্রতি বছর এটি অতিক্রম করা শত শত পর্বতারোহীর জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। 

তবে শেরপা ও পর্বতারোহণ নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংস্থার বিরোধিতায় এটি আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। এদিকে শেরপা নেতারা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানিয়েছেন, সরানোর সিদ্ধান্তটি বাস্তবসম্মত নয় এবং এর ভালো কোনো বিকল্প জায়গাও নেই। 

পর্বতারোহণ শিল্পের মেরুদণ্ড হিসেবে পরিচিত শেরপাদের চিন্তা–ভাবনাটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। পর্বতারোহণের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সাম্প্রতিক আলোচনায় ৯৫ শতাংশই বেস ক্যাম্পে সরানোর ব্যাপারে আপত্তির কথা জানিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে, নেপালের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা ও নেপাল মাউন্টেনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশন। 

অর্থাৎ আপাতত বেস ক্যাম্প সরানোর পরিকল্পনা স্থগিত করা হয়েছে, বিবিসিকে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে একই সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে পর্যবেক্ষণ চলমান আছে বলেও জানানো হয়। 

মাউন্ট এভারেস্ট, বেস ক্যাম্প ও খুম্বু হিমবাহবেস ক্যাম্প সরানোর পরিকল্পনা সমর্থন করেন না শেরপারা
‘আমাদের সম্প্রদায়ের এমন একজনকেও পাইনি যে এভারেস্টের বেস ক্যাম্প সরানোয় পরিকল্পনাকে সমর্থন করে,’ বলেন বেস ক্যাম্পসহ এভারেস্টের বেশির ভাগ অংশ খুম্বু পাসাংলহামু নামের যে অঞ্চলের অংশ তার প্রধান মিনগামা শেরপা, ‘নিকট ভবিষ্যতে বেস ক্যাম্প সরানোর কোনো কারণ আমরা দেখি না।’ 

নেপাল ন্যাশনাল মাউন্টেন গাইডস অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান আং নরবু শেরপার কণ্ঠেও একই সুর। তিনি বলেন, ‘গত ৭০ বছর ধরে এখানে আছে এটি। তারা কেন এখন এটা সরাবে? আর যদি এটা করতে চায়ও বিকল্প কোনো জায়গার ব্যাপারে কি কোনো সমীক্ষা হয়েছে?’ 

নেপালের নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যটন মন্ত্রী সুদান কিরাতি জানান, এটা এখনই করার মতো কিছু নয়। ‘বেস ক্যাম্প সরানোর ব্যাপারে কোনো দিক থেকেই কারও আগ্রহ দেখছি না।’ বলেন তিনি। 

পাতলা হচ্ছে হিমবাহ, তৈরি হচ্ছে ঝুঁকি
যখন গত বছর সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা পরিকল্পনার কথা জানান, তখন বলেছিলেন নতুন বেস ক্যাম্প বর্তমান বেস ক্যাম্প থেকে ২০০ থেকে ৪০০ মিটার (৬৫৬ থেকে ১৩১২ ফুট) নিচে হবে। বর্তমান বেস ক্যাম্পের উচ্চতা ৫৩৬৪ মিটার (১৭,৫৯৮ ফুট)। 

পরিকল্পনা ছিল এটাকে এমন এক জায়গায় সরানো যেখানে কোনো হিমবাহ নেই। তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে হিমবাহ গলার কারণে তৈরি হওয়া ঝুঁকি এড়ানোই ছিল এর উদ্দেশ্য। 

বিজ্ঞানীদের গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে হিমালয়ের আরও অনেক হিমবাহের মতো খুম্বু হিমবাহও ক্রমেই গলছে। লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের ২০১৮ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে হিমবাহের বেস ক্যাম্পের কাছের অংশটি প্রতি বছর এক মিটার করে পাতলা হচ্ছে। 

ক্যাম্পটির অবস্থান খুম্বু হিমবাহের কাছেইমাঠপর্যায়ের পরীক্ষায় আরও দেখা গেছে পৃথিবীর সর্বোচ্চ হিমবাহের পুকুর ও হ্রদগুলো একত্র হচ্ছে এবং ছড়িয়ে পড়ছে। যা পর্বতারোহীদের জন্য নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে। 

পর্বতারোহী ও কর্মকর্তারা জানান, বেস ক্যাম্পের পাশ দিয়েই এখন ঝরনাগুলো প্রবাহিত হচ্ছে, আর হিমবাহের ফাটলগুলো দ্রুত ও বিপজ্জনকভাবে চওড়া হচ্ছে। 

বিজ্ঞানীরা বলছেন হ্রদ ও পুকুরগুলো একটি আরেকটির সঙ্গে জোড়া লাগছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে। 

নেপাল মাউন্টেনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নিমা নুরু শেরপা জানান বৈশ্বিক উষ্ণ বৃদ্ধির কারণে যে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে সে সম্পর্কে তিনি সচেতন। ‘তবে সরিয়ে কোথায় আমরা বেস ক্যাম্পটা নেব সে সম্পর্কে পরিষ্কার কোনো ধারণা দেওয়া হয়নি, আর তাই এর পক্ষে সে রকম সারা পাওয়া যাচ্ছে না।’ বলেন তিনি। 

খুম্বু হিমবাহ ফ্যাক্টর
শেরপা সম্প্রদায়ের অনেক পর্বতারোহীই বলছেন সকালে যাত্রা শুরুর জন্য হিমবাহের বর্তমান অবস্থানটাই আদর্শ। কারণ এর পাশেই খুম্বু হিমবাহ, এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছানোর অভিযানে যেটি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর একটি। 

শেরপা পর্বতারোহীরা বলেন খুম্বু হিমবাহ সকালের দিকে পেরোনোটা জরুরি, কারণ দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সূর্য উত্তাপ ছড়ানোয় হিমবাহ ধস ও পাথর পতনের পরিমাণ বাড়ে। 

‘ক্যাম্পটাকে নিচের দিকে নামিয়ে আনা মানে, তার মানে পর্বতারোহীদের আরও তিন ঘণ্টা বাড়তি যাত্রা, অর্থাৎ এটা বিপজ্জনক খুম্বুর দিকে তাদের যাত্রা দেরি করিয়ে দেবে।’ বলেন মিনগামা শেরপা। 

এভারেস্টের নর্থ ফেইস থেকে দক্ষিণের অংশগত ১২ এপ্রিল হিমবাহ পতনের কারণে খুম্বু হিমবাহে তিনজন শেরপা মারা যান। 

মিনগামা শেরপা বলেন, এমনকি যদি বেস ক্যাম্প নিচে নামানোও হয় বেশিরভাগ অভিযাত্রী দল আগের জায়গাটিকে অ্যাডভান্স ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করবে খুম্বুর দিকে সকালে যাত্রা শুরুর জন্য। 

প্রতি বছর এভারেস্টে পর্বতারোহী নিয়ে আসা অস্ট্রিয়ান ট্যুর অপারেটর লুকাস ফার্টেনব্যাচ মন্তব্য করেন, বেস ক্যাম্প সরিয়ে আনাটা যাত্রার প্রথম অংশটি অনেক দীর্ঘ করে ফেলবে। 

বেস ক্যাম্পে ভিড়
তবে পর্বতারোহণের সঙ্গে জড়িত সবাই একটি বিষয়ে একমত, তা হলো বেস ক্যাম্পে অতিরিক্ত ভিড় তৈরি হচ্ছে। 

এ মৌসুমে নেপাল পৃথিবীর সর্বোচ্চ চূড়ায় আরোহণের জন্য রেকর্ড ৪৭৮টি পারমিট দেয়। তার মানে সাহায্যকারীরাসহ পর্বতের ১৫০০–র বেশি মানুষ থাকবেন। পর্যটন বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন অনুমতি দেওয়ার আগের রেকর্ড ছিল ৪০৩, সেটা ২০২১ সালে। নেপালের সরকার এভারেস্টের চূড়ায় আরোহণের জন্য প্রত্যেক পর্বতারোহী থেকে ১১ হাজার ডলার নেয়। আর এভারেস্টের অভিযান শেরপা সম্প্রদায়ের লোকজন ও পর্বত পর্যটনের সঙ্গে জড়িত অন্যদের আয়ের বড় উৎস। 

‘বিগত বছরগুলোতে বেস ক্যাম্পের আকার দ্বিগুণ হয়ে গেছে বলে জানান এক্সপিডিশন অপারেটর’স অ্যাসোসিয়েশন নেপালের প্রেসিডেন্ট দাম্বার পারাজুলি। এটি ইতিমধ্যে নাজুক হয়ে পড়া পরিবেশের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে বলে মনে করেন তিনি। 

‘এখানে আধুনিক সব সার্ভিস দেখতে পাবেন এখন, যেমন ম্যাসেজ পার্লারসহ বিনোদনের আরও নানা ব্যবস্থা। এ জন্য বিশাল তাঁবুসহ আরও নানা কাঠামো তৈরি হয়। কিন্তু এটা বিলাসিতার জায়গা নয়। আমরা সরকারকে বলব বেস ক্যাম্পে কোনটা বৈধ আর কোনটা করা যাবে না তার কঠোর গাইড লাইন তৈরি করতে।’ বলেন তিনি। 

পর্যটন মন্ত্রী কিরাতি বলেন এ বিষয়গুলো সম্পর্কে তিনি ওয়াকিবহাল। বলেন ‘কাঠমান্ডুতে যেমন দেখি তেমন একটি টুরিস্ট মার্কেটের মতো হয়ে গেছে বেস ক্যাম্প। এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা দ্রুতই যাচাই করে এগুলো বন্ধ করে দেব। এ মুহূর্তে এ বিষয়টিই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বায়ু দূষণে তৃতীয় স্থানে ঢাকা, শীর্ষে দিল্লি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

শীতের মৌসুমে বাতাস থাকে শুষ্ক। বেড়ে যায় ধূলিকণার পরিমাণ। আর এ কারণে বায়ুদূষণও বাড়তে থাকে। আজ সোমবার ঢাকার বায়ুমানের অবনতি হয়ে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ অবস্থায় আছে।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তালিকায় দেখা যায়, বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ ঢাকা তৃতীয় স্থানে রয়েছে। আর শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লি।

আইকিউএয়ারের সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী, ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ২৩২, যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক। আর শীর্ষে থাকা দিল্লির এয়ার কোয়ালিটি ইনডেস্ক স্কোর ২৭৪, যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।

শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো মিশরের কায়রো (২৩৫), ভারতের কলকাতা (২১০) ও ভিয়েতনামের হ্যানয় (১৯১)।

আজ ঢাকার যেসব এলাকায় বায়ুদূষণ সবচেয়ে বেশি— গোড়ান, দক্ষিণ পল্লবী, ইস্টার্ন হাউজিং, কল্যাণপুর, বেজ এজওয়াটার আউটডোর, গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, শান্তা ফোরাম, পেয়ারাবাগ রেল লাইন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোকাররম বিল্ডিং।

ঢাকার নিম্নমানের বাতাসের প্রধান কারণ হলো পিএম ২.৫ বা সূক্ষ্ম কণা। এই অতিক্ষুদ্র কণাগুলো, যাদের ব্যাস ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়েও কম, ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে রক্তপ্রবাহে মিশে যেতে পারে। এর ফলে হাঁপানি (অ্যাজমা) বৃদ্ধি, ব্রঙ্কাইটিস এবং হৃদ্‌রোগের মতো শ্বাসযন্ত্র ও হৃদ্‌যন্ত্রের গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।

শীতকালীন আবহাওয়ার ধরন, যানবাহন ও শিল্প থেকে অনিয়ন্ত্রিত নির্গমন, চলমান নির্মাণকাজ থেকে সৃষ্ট ধুলো এবং আশপাশের ইটভাটাগুলো এই দূষণ সংকটের জন্য দায়ী।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১ থেকে ২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

বাতাসের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে করণীয়

অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্‌রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।

সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।

যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।

ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকায় সকালে তাপমাত্রা আবারও ১৬ ডিগ্রির ঘরে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ভোরবেলা কিছুটা কুয়াশা পড়লেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আজ সোমবার সকালে রাজধানী ঢাকায় রোদের দেখা মিলেছে। তবে গতকালের চেয়ে কিছুটা বেশি শীত পড়ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকালে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।

আজ সকাল ৭টায় ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৭ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৮ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সকালে সূর্যের দেখা নেই, কুয়াশাচ্ছন্ন ঢাকার আকাশ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৫২
তাপমাত্রা খুব বেশি কমলেও আজ রোববার সকাল থেকে রাজধানী ঢাকার আকাশ কুয়াশাচ্ছন্ন। দেখা মেলেনি সূর্যের আলো। ছবি: আজকের পত্রিকা
তাপমাত্রা খুব বেশি কমলেও আজ রোববার সকাল থেকে রাজধানী ঢাকার আকাশ কুয়াশাচ্ছন্ন। দেখা মেলেনি সূর্যের আলো। ছবি: আজকের পত্রিকা

তাপমাত্রা খুব বেশি কমলেও আজ রোববার সকাল থেকে রাজধানী ঢাকার আকাশ কুয়াশাচ্ছন্ন। দেখা মেলেনি সূর্যের আলো। পাশাপাশি বইছিল হালকা হিমেল বাতাস।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকালে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।

আজ সকাল ৭টায় ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৩ শতাংশ।

পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। আকাশ পরিষ্কার থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা কমতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৬ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৭ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকায় বেড়েছে বায়ুদূষণ, দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় কাবুল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

শীতের মৌসুমে বাতাস থাকে শুষ্ক। বেড়ে যায় ধূলিকণার পরিমাণ। আর এ কারণে বায়ুদূষণও বাড়তে থাকে। আজ শনিবার ঢাকার বায়ুমানের অবনতি হয়ে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ অবস্থায় আছে।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তালিকায় দেখা যায়, বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ ঢাকা ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে। আর শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে আফগানিস্তানের রাজধানী শহর কাবুল।

আইকিউএয়ারের সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী, ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ২০২, খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক। আর শীর্ষে থাকা কাবুলের এয়ার কোয়ালিটি ইনডেস্ক স্কোর ৪৯৫, যা দুর্যোগপূর্ণ বাতাসের নির্দেশক।

শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো ভারতের দিল্লি (৩৯৩), বাহরাইনের মানামা (২৬৪), ভারতের কলকাতা (২২৬) ও পাকিস্তানের করাচি (২০৩)।

আজ ঢাকার যেসব এলাকায় বায়ুদূষণ সবচেয়ে বেশি— দক্ষিণ পল্লবী, কল্যাণপুর, পেয়ারাবাগ রেল লাইন, বেজ এজওয়াটার আউটডোর, গোড়ান, শান্তা ফোরাম, গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোকাররম বিল্ডিং।

ঢাকার নিম্নমানের বাতাসের প্রধান কারণ হলো পিএম ২.৫ বা সূক্ষ্ম কণা। এই অতিক্ষুদ্র কণাগুলো, যাদের ব্যাস ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়েও কম, ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে রক্তপ্রবাহে মিশে যেতে পারে। এর ফলে হাঁপানি (অ্যাজমা) বৃদ্ধি, ব্রঙ্কাইটিস এবং হৃদ্‌রোগের মতো শ্বাসযন্ত্র ও হৃদ্‌যন্ত্রের গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।

শীতকালীন আবহাওয়ার ধরন, যানবাহন ও শিল্প থেকে অনিয়ন্ত্রিত নির্গমন, চলমান নির্মাণকাজ থেকে সৃষ্ট ধুলো এবং আশপাশের ইটভাটাগুলো এই দূষণ সংকটের জন্য দায়ী।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১ থেকে ২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

বাতাসের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে করণীয়

অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্‌রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।

সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।

যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।

ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত