
প্রিয় মানুষটির জন্য বিশাল দূরত্ব পাড়ি দেওয়ার, এমনকি এক দেশ থেকে আরেক দেশে চলে যাওয়ার অনেক নজির পাওয়া যায়। তবে তাই বলে বন্যপ্রাণীর রাজ্যে এমন কাণ্ড নিশ্চয় আপনি আশা করবেন না। তবে এমনই এক কাণ্ড করেছে সাইবেরিয়ার এক বাঘ। সঙ্গীর খোঁজে সে জঙ্গলের মধ্য দিয়ে পাড়ি দেয় ২০০ কিলোমিটার পথ।
২০১৪ সালে রাশিয়ার পুব সীমানার দুর্গম এক অরণ্যে দুই অনাথ আমুর বাঘশাবককে মুক্ত করে দিয়েছিলেন রুশ বিজ্ঞানীরা। উদ্দেশ্য ছিল একটি বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতিকে বাঁচানো। আমুর টাইগার, যাকে সাইবেরিয়ান টাইগারও বলা হয়, এখনো বিপন্ন। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় আকারের বাঘ। কিন্তু সেই দিন বিজ্ঞানীরা নিজেদের অজান্তেই আশ্চর্য একটি কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন, অসাধারণ এক প্রেমের গল্পের সূচনা।
শাবক দুটি বরিস ও স্ভেতলায়া, তাদের জন্মের কয়েক মাসের মধ্যেই মা-বাবাকে হারায়। তখন তাদের বয়স মাত্র তিন থেকে পাঁচ মাস। আমুর বাঘদের প্রধান ঘাঁটি শাখোতে-অ্যালিন পর্বতমালা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয় । বন্দী অবস্থায় বেড়ে ওঠার পর ১৮ মাস বয়সে তাদের মুক্ত করে দেওয়া হয়। বিজ্ঞানীরা ইচ্ছা করেই তাদের আলাদা করে দিয়েছিলেন। বরিস ও স্ভেতলায়াকে পরস্পর থেকে ১০০ মাইলেরও বেশি দূরে ছেড়ে দেওয়া হয়, যাতে আমুর অঞ্চলে বাঘের বিস্তৃতি আরও বাড়ানো যায়।
কিন্তু মুক্তির এক বছরেরও বেশি সময় পর আশ্চর্য এক ঘটনা ঘটল। বরিস প্রায় ১২০ মাইল (১৯৩ কিলোমিটার) পথ পাড়ি দিয়ে একদম সোজাসুজি স্ভেতলায়ার কাছে হাজির হয়ে যায়। যেন প্রকৃতি নিজেই তার জন্য এ পথের দিশা দেখিয়েছিল।
আর বাঘ দুটির এই দেখা হওয়ার ছয় মাস পর কয়েকটি শাবকের জন্ম দেয় স্ভেতলায়া।
এসব তথ্য জানা যায় মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদন থেকে।
এটি ছিল বড় বিড়াল অর্থাৎ, বিগ ক্যাট প্রকৃতিতে পুনঃস্থাপনে এক ঐতিহাসিক সফলতা। স্পেনের আইবেরিয়ান লিংকস পুনর্বাসন প্রকল্প সফল হলেও এত দিন বড় বিড়ালদের ক্ষেত্রে এটি প্রায় অসম্ভব মনে করা হতো। কিন্তু জার্নাল অব ওয়াইল্ডলাইফে গত মাসে অর্থাৎ, নভেম্বরে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বিজ্ঞানীরা বলছেন, বরিস ও স্ভেতলায়ার এই গল্পটি বাঘ প্রকৃতিতে পুনঃস্থাপনে নতুন আশার দ্বার খুলে দিয়েছে।
রাশিয়ায় বর্তমানে আনুমানিক ৪৮৫ থেকে ৭৫০টি সাইবেরিয়ান বা আমুর বাঘ রয়েছে। কিন্তু গবেষকদের মতে, রাশিয়া-চীন সীমান্তের প্রি-আমুর অঞ্চলসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে আরও কয়েক শ বাঘের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।
বরিস ও স্ভেতলায়ার মিলনই এই প্রকল্পের একমাত্র সফলতা তা নয়। এর আগে এক শিকারি বরফের ঢিবিতে একটি মেয়ে বাঘ শাবককে খুঁজে পান। তার নাম রাখা হয়েছিল জোলুশকা—রুশ ভাষায় যার অর্থ ‘সিনড্রেলা’। পরবর্তীতে সংরক্ষণবাদীরা জোলুশকাকে অরণ্যে ফিরিয়ে দেন।
কিছুদিন পর ক্যামেরা ট্র্যাপে একটি পুরুষ বাঘের দেখা মেলে ঠিক সেই এলাকাতেই, যেখানে জোলুশকাকে ছাড়া হয়েছিল। বিশাল সেই এলাকায় এমন মিলন ছিল প্রায় অলৌকিক। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংস্থার প্রধান বাঘ বিশেষজ্ঞ ডেল মিকুয়েল মজা করে বলেন, ‘সিনড্রেলার রাজকুমার ঠিক সময়ে হাজির হয়েছিল, আর তারা সুখে-শান্তিতে জীবন কাটাতে লাগল।’ জোলুশকা ও সেই পুরুষ বাঘের সংসারেও জন্ম নিয়েছিল শাবক, যেগুলো ছিল ১৯৭০-এর দশকের পর সেই অঞ্চলে জন্ম নেওয়া প্রথম বাঘশাবক।
এটি শুধু একটি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ প্রকল্পের নয়, বরং প্রকৃতির অসাধারণ শক্তি আর ভালোবাসার অনন্য রূপেরও গল্প। সাইবেরিয়ার হিমশীতল পাহাড়ের বুকে বরিস, স্ভেতলায়া আর জোলুশকার কাহিনি যেন বলে যায়—প্রকৃতিতে সবকিছুরই জায়গা আছে, শুধু দরকার একটু যত্ন আর সময়।
রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা যখন ১৩টি অনাথ সাইবেরিয়ান বাঘশাবককে বন্দী অবস্থায় লালন-পালন করছিলেন, তখন তাদের সামনে ছিল এক কঠিন চ্যালেঞ্জ। বন্য প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়ার আগে নিশ্চিত করতে হবে, এই শাবকেরা মানুষের কোনো ছোঁয়া পায়নি। কারণ তাদের শিখতে হবে বন্যজীবনের কঠিন বাস্তবতা—শিকার করা, টিকে থাকা।

তাই বিজ্ঞানীরা শাবকদের ক্রমশ পরিচয় করিয়ে দিলেন জীবন্ত শিকারের সঙ্গে। ছোট শাবকগুলো শিখতে শুরু করল শিকার করার কৌশল। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, বন্য প্রকৃতিতে ছাড়ার সময়টাও ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বসন্তকাল বেছে নেওয়া হয়েছিল, কারণ এ সময় খাদ্যের প্রাচুর্য থাকে।
তবে একটি পুরুষ বাঘ এই স্বাধীনতার পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছিল। সে চীনে গিয়ে গৃহপালিত পশুর ওপর আক্রমণ চালায়—এক রাতে একটি খোঁয়াড়ে ঢুকে ১৩টি ছাগল মেরে ফেলে। শেষ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা তাকে আবার ধরে এনে একটি চিড়িয়াখানার প্রজনন কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করেন।
কিন্তু বাকি ১২টি বাঘশাবক সফলতার সঙ্গে বন্যজীবনে ফিরে যেতে পেরেছিল। তারা প্রমাণ করল, বন্দী অবস্থায় বেড়ে ওঠা সত্ত্বেও তারা বন্য শিকারের দক্ষতা অর্জন করতে পারে এবং প্রকৃত বন্য বাঘের মতোই টিকে থাকতে পারে।
প্রি-আমুর অঞ্চলে যখন বাঘের সংখ্যা বাড়ছে, তখন রাশিয়ান-আমেরিকান বিজ্ঞানীদের দলটির বড় স্বপ্ন—এই অঞ্চলের বাঘগুলো একদিন সীমান্ত পেরিয়ে চীনের বাঘদের সঙ্গেও মিলিত হবে। ‘আমাদের মহাপরিকল্পনা হলো পুরো এলাকাটি সংযুক্ত করা।’ বলেন বিগ কেট প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক লুক হান্টার, ‘এখানে অনেক এলাকা রয়েছে, যেগুলো বাঘের জন্য পুনরায় উপযোগী করে তোলা যেতে পারে।’
এশিয়াজুড়ে সম্ভাব্য বাঘের আবাসস্থলের এলাকা বিশাল। ২০২৩ সালের একটি গবেষণায় উঠে এসেছে, প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার বর্গমাইল এলাকা বাঘের বসবাসের জন্য উপযুক্ত হলেও সেখান থেকে বাঘ হারিয়ে গেছে।
এই সফল প্রকল্প তাই বড় সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়। ‘এই ফলাফল প্রমাণ করে, তরুণ শাবকদের একটি আধাবন্দী পরিবেশে লালন-পালন করে তাদের শিকার শেখানো এবং পরে বন্য প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়া সম্ভব।’ বললেন রাশিয়ান একাডেমি অব সায়েন্সের অধীনে পরিচালিত সেভার্তসভ ইনস্টিটিউট অব ইকোলজি অ্যান্ড ইভোলিউশনের প্রাক্তন পরিচালক ভিয়াচেস্লাভ ভি রোজনোভ। তিনি প্রকৃতিতে বাঘ পুনঃস্থাপন প্রকল্পের নেতৃত্ব দেন।
তিনি বলেন, ‘এই গবেষণার ফলাফল এশিয়ার বিশাল অংশে বাঘ ফিরিয়ে আনার একটি নতুন পথ দেখায়। এসব অঞ্চলে এখনো উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে, কিন্তু বাঘ হারিয়ে গেছে।’
বরিস ও স্ভেতলায়া প্রায় অসম্ভব প্রেমের মতোই, রাশিয়ান ও আমেরিকান বিজ্ঞানীদের এই যৌথ প্রচেষ্টা প্রমাণ করেছে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার শক্তি।
‘জাতীয়তা আর রাজনীতি পেরিয়ে একসঙ্গে কাজ করলে সত্যিই ভালো কিছু অর্জন করা সম্ভব।’ বলেন প্রকল্পের প্রধান বাঘ বিজ্ঞানী ডেল মিকুয়েল, ‘কীভাবে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রকৃতিকে পুনরুজ্জীবিত করা যায়, এটি তার একটি অনন্য উদাহরণ।’
এই গল্প শুধু বাঘ পুনর্বাসনের সাফল্যের নয়, বরং প্রকৃতি আর মানুষের একসঙ্গে পথ চলার গল্পও।

প্রিয় মানুষটির জন্য বিশাল দূরত্ব পাড়ি দেওয়ার, এমনকি এক দেশ থেকে আরেক দেশে চলে যাওয়ার অনেক নজির পাওয়া যায়। তবে তাই বলে বন্যপ্রাণীর রাজ্যে এমন কাণ্ড নিশ্চয় আপনি আশা করবেন না। তবে এমনই এক কাণ্ড করেছে সাইবেরিয়ার এক বাঘ। সঙ্গীর খোঁজে সে জঙ্গলের মধ্য দিয়ে পাড়ি দেয় ২০০ কিলোমিটার পথ।
২০১৪ সালে রাশিয়ার পুব সীমানার দুর্গম এক অরণ্যে দুই অনাথ আমুর বাঘশাবককে মুক্ত করে দিয়েছিলেন রুশ বিজ্ঞানীরা। উদ্দেশ্য ছিল একটি বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতিকে বাঁচানো। আমুর টাইগার, যাকে সাইবেরিয়ান টাইগারও বলা হয়, এখনো বিপন্ন। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় আকারের বাঘ। কিন্তু সেই দিন বিজ্ঞানীরা নিজেদের অজান্তেই আশ্চর্য একটি কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন, অসাধারণ এক প্রেমের গল্পের সূচনা।
শাবক দুটি বরিস ও স্ভেতলায়া, তাদের জন্মের কয়েক মাসের মধ্যেই মা-বাবাকে হারায়। তখন তাদের বয়স মাত্র তিন থেকে পাঁচ মাস। আমুর বাঘদের প্রধান ঘাঁটি শাখোতে-অ্যালিন পর্বতমালা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয় । বন্দী অবস্থায় বেড়ে ওঠার পর ১৮ মাস বয়সে তাদের মুক্ত করে দেওয়া হয়। বিজ্ঞানীরা ইচ্ছা করেই তাদের আলাদা করে দিয়েছিলেন। বরিস ও স্ভেতলায়াকে পরস্পর থেকে ১০০ মাইলেরও বেশি দূরে ছেড়ে দেওয়া হয়, যাতে আমুর অঞ্চলে বাঘের বিস্তৃতি আরও বাড়ানো যায়।
কিন্তু মুক্তির এক বছরেরও বেশি সময় পর আশ্চর্য এক ঘটনা ঘটল। বরিস প্রায় ১২০ মাইল (১৯৩ কিলোমিটার) পথ পাড়ি দিয়ে একদম সোজাসুজি স্ভেতলায়ার কাছে হাজির হয়ে যায়। যেন প্রকৃতি নিজেই তার জন্য এ পথের দিশা দেখিয়েছিল।
আর বাঘ দুটির এই দেখা হওয়ার ছয় মাস পর কয়েকটি শাবকের জন্ম দেয় স্ভেতলায়া।
এসব তথ্য জানা যায় মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদন থেকে।
এটি ছিল বড় বিড়াল অর্থাৎ, বিগ ক্যাট প্রকৃতিতে পুনঃস্থাপনে এক ঐতিহাসিক সফলতা। স্পেনের আইবেরিয়ান লিংকস পুনর্বাসন প্রকল্প সফল হলেও এত দিন বড় বিড়ালদের ক্ষেত্রে এটি প্রায় অসম্ভব মনে করা হতো। কিন্তু জার্নাল অব ওয়াইল্ডলাইফে গত মাসে অর্থাৎ, নভেম্বরে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বিজ্ঞানীরা বলছেন, বরিস ও স্ভেতলায়ার এই গল্পটি বাঘ প্রকৃতিতে পুনঃস্থাপনে নতুন আশার দ্বার খুলে দিয়েছে।
রাশিয়ায় বর্তমানে আনুমানিক ৪৮৫ থেকে ৭৫০টি সাইবেরিয়ান বা আমুর বাঘ রয়েছে। কিন্তু গবেষকদের মতে, রাশিয়া-চীন সীমান্তের প্রি-আমুর অঞ্চলসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে আরও কয়েক শ বাঘের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।
বরিস ও স্ভেতলায়ার মিলনই এই প্রকল্পের একমাত্র সফলতা তা নয়। এর আগে এক শিকারি বরফের ঢিবিতে একটি মেয়ে বাঘ শাবককে খুঁজে পান। তার নাম রাখা হয়েছিল জোলুশকা—রুশ ভাষায় যার অর্থ ‘সিনড্রেলা’। পরবর্তীতে সংরক্ষণবাদীরা জোলুশকাকে অরণ্যে ফিরিয়ে দেন।
কিছুদিন পর ক্যামেরা ট্র্যাপে একটি পুরুষ বাঘের দেখা মেলে ঠিক সেই এলাকাতেই, যেখানে জোলুশকাকে ছাড়া হয়েছিল। বিশাল সেই এলাকায় এমন মিলন ছিল প্রায় অলৌকিক। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংস্থার প্রধান বাঘ বিশেষজ্ঞ ডেল মিকুয়েল মজা করে বলেন, ‘সিনড্রেলার রাজকুমার ঠিক সময়ে হাজির হয়েছিল, আর তারা সুখে-শান্তিতে জীবন কাটাতে লাগল।’ জোলুশকা ও সেই পুরুষ বাঘের সংসারেও জন্ম নিয়েছিল শাবক, যেগুলো ছিল ১৯৭০-এর দশকের পর সেই অঞ্চলে জন্ম নেওয়া প্রথম বাঘশাবক।
এটি শুধু একটি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ প্রকল্পের নয়, বরং প্রকৃতির অসাধারণ শক্তি আর ভালোবাসার অনন্য রূপেরও গল্প। সাইবেরিয়ার হিমশীতল পাহাড়ের বুকে বরিস, স্ভেতলায়া আর জোলুশকার কাহিনি যেন বলে যায়—প্রকৃতিতে সবকিছুরই জায়গা আছে, শুধু দরকার একটু যত্ন আর সময়।
রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা যখন ১৩টি অনাথ সাইবেরিয়ান বাঘশাবককে বন্দী অবস্থায় লালন-পালন করছিলেন, তখন তাদের সামনে ছিল এক কঠিন চ্যালেঞ্জ। বন্য প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়ার আগে নিশ্চিত করতে হবে, এই শাবকেরা মানুষের কোনো ছোঁয়া পায়নি। কারণ তাদের শিখতে হবে বন্যজীবনের কঠিন বাস্তবতা—শিকার করা, টিকে থাকা।

তাই বিজ্ঞানীরা শাবকদের ক্রমশ পরিচয় করিয়ে দিলেন জীবন্ত শিকারের সঙ্গে। ছোট শাবকগুলো শিখতে শুরু করল শিকার করার কৌশল। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, বন্য প্রকৃতিতে ছাড়ার সময়টাও ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বসন্তকাল বেছে নেওয়া হয়েছিল, কারণ এ সময় খাদ্যের প্রাচুর্য থাকে।
তবে একটি পুরুষ বাঘ এই স্বাধীনতার পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছিল। সে চীনে গিয়ে গৃহপালিত পশুর ওপর আক্রমণ চালায়—এক রাতে একটি খোঁয়াড়ে ঢুকে ১৩টি ছাগল মেরে ফেলে। শেষ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা তাকে আবার ধরে এনে একটি চিড়িয়াখানার প্রজনন কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করেন।
কিন্তু বাকি ১২টি বাঘশাবক সফলতার সঙ্গে বন্যজীবনে ফিরে যেতে পেরেছিল। তারা প্রমাণ করল, বন্দী অবস্থায় বেড়ে ওঠা সত্ত্বেও তারা বন্য শিকারের দক্ষতা অর্জন করতে পারে এবং প্রকৃত বন্য বাঘের মতোই টিকে থাকতে পারে।
প্রি-আমুর অঞ্চলে যখন বাঘের সংখ্যা বাড়ছে, তখন রাশিয়ান-আমেরিকান বিজ্ঞানীদের দলটির বড় স্বপ্ন—এই অঞ্চলের বাঘগুলো একদিন সীমান্ত পেরিয়ে চীনের বাঘদের সঙ্গেও মিলিত হবে। ‘আমাদের মহাপরিকল্পনা হলো পুরো এলাকাটি সংযুক্ত করা।’ বলেন বিগ কেট প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক লুক হান্টার, ‘এখানে অনেক এলাকা রয়েছে, যেগুলো বাঘের জন্য পুনরায় উপযোগী করে তোলা যেতে পারে।’
এশিয়াজুড়ে সম্ভাব্য বাঘের আবাসস্থলের এলাকা বিশাল। ২০২৩ সালের একটি গবেষণায় উঠে এসেছে, প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার বর্গমাইল এলাকা বাঘের বসবাসের জন্য উপযুক্ত হলেও সেখান থেকে বাঘ হারিয়ে গেছে।
এই সফল প্রকল্প তাই বড় সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়। ‘এই ফলাফল প্রমাণ করে, তরুণ শাবকদের একটি আধাবন্দী পরিবেশে লালন-পালন করে তাদের শিকার শেখানো এবং পরে বন্য প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়া সম্ভব।’ বললেন রাশিয়ান একাডেমি অব সায়েন্সের অধীনে পরিচালিত সেভার্তসভ ইনস্টিটিউট অব ইকোলজি অ্যান্ড ইভোলিউশনের প্রাক্তন পরিচালক ভিয়াচেস্লাভ ভি রোজনোভ। তিনি প্রকৃতিতে বাঘ পুনঃস্থাপন প্রকল্পের নেতৃত্ব দেন।
তিনি বলেন, ‘এই গবেষণার ফলাফল এশিয়ার বিশাল অংশে বাঘ ফিরিয়ে আনার একটি নতুন পথ দেখায়। এসব অঞ্চলে এখনো উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে, কিন্তু বাঘ হারিয়ে গেছে।’
বরিস ও স্ভেতলায়া প্রায় অসম্ভব প্রেমের মতোই, রাশিয়ান ও আমেরিকান বিজ্ঞানীদের এই যৌথ প্রচেষ্টা প্রমাণ করেছে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার শক্তি।
‘জাতীয়তা আর রাজনীতি পেরিয়ে একসঙ্গে কাজ করলে সত্যিই ভালো কিছু অর্জন করা সম্ভব।’ বলেন প্রকল্পের প্রধান বাঘ বিজ্ঞানী ডেল মিকুয়েল, ‘কীভাবে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রকৃতিকে পুনরুজ্জীবিত করা যায়, এটি তার একটি অনন্য উদাহরণ।’
এই গল্প শুধু বাঘ পুনর্বাসনের সাফল্যের নয়, বরং প্রকৃতি আর মানুষের একসঙ্গে পথ চলার গল্পও।

প্রিয় মানুষটির জন্য বিশাল দূরত্ব পাড়ি দেওয়ার, এমনকি এক দেশ থেকে আরেক দেশে চলে যাওয়ার অনেক নজির পাওয়া যায়। তবে তাই বলে বন্যপ্রাণীর রাজ্যে এমন কাণ্ড নিশ্চয় আপনি আশা করবেন না। তবে এমনই এক কাণ্ড করেছে সাইবেরিয়ার এক বাঘ। সঙ্গীর খোঁজে সে জঙ্গলের মধ্য দিয়ে পাড়ি দেয় ২০০ কিলোমিটার পথ।
২০১৪ সালে রাশিয়ার পুব সীমানার দুর্গম এক অরণ্যে দুই অনাথ আমুর বাঘশাবককে মুক্ত করে দিয়েছিলেন রুশ বিজ্ঞানীরা। উদ্দেশ্য ছিল একটি বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতিকে বাঁচানো। আমুর টাইগার, যাকে সাইবেরিয়ান টাইগারও বলা হয়, এখনো বিপন্ন। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় আকারের বাঘ। কিন্তু সেই দিন বিজ্ঞানীরা নিজেদের অজান্তেই আশ্চর্য একটি কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন, অসাধারণ এক প্রেমের গল্পের সূচনা।
শাবক দুটি বরিস ও স্ভেতলায়া, তাদের জন্মের কয়েক মাসের মধ্যেই মা-বাবাকে হারায়। তখন তাদের বয়স মাত্র তিন থেকে পাঁচ মাস। আমুর বাঘদের প্রধান ঘাঁটি শাখোতে-অ্যালিন পর্বতমালা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয় । বন্দী অবস্থায় বেড়ে ওঠার পর ১৮ মাস বয়সে তাদের মুক্ত করে দেওয়া হয়। বিজ্ঞানীরা ইচ্ছা করেই তাদের আলাদা করে দিয়েছিলেন। বরিস ও স্ভেতলায়াকে পরস্পর থেকে ১০০ মাইলেরও বেশি দূরে ছেড়ে দেওয়া হয়, যাতে আমুর অঞ্চলে বাঘের বিস্তৃতি আরও বাড়ানো যায়।
কিন্তু মুক্তির এক বছরেরও বেশি সময় পর আশ্চর্য এক ঘটনা ঘটল। বরিস প্রায় ১২০ মাইল (১৯৩ কিলোমিটার) পথ পাড়ি দিয়ে একদম সোজাসুজি স্ভেতলায়ার কাছে হাজির হয়ে যায়। যেন প্রকৃতি নিজেই তার জন্য এ পথের দিশা দেখিয়েছিল।
আর বাঘ দুটির এই দেখা হওয়ার ছয় মাস পর কয়েকটি শাবকের জন্ম দেয় স্ভেতলায়া।
এসব তথ্য জানা যায় মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদন থেকে।
এটি ছিল বড় বিড়াল অর্থাৎ, বিগ ক্যাট প্রকৃতিতে পুনঃস্থাপনে এক ঐতিহাসিক সফলতা। স্পেনের আইবেরিয়ান লিংকস পুনর্বাসন প্রকল্প সফল হলেও এত দিন বড় বিড়ালদের ক্ষেত্রে এটি প্রায় অসম্ভব মনে করা হতো। কিন্তু জার্নাল অব ওয়াইল্ডলাইফে গত মাসে অর্থাৎ, নভেম্বরে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বিজ্ঞানীরা বলছেন, বরিস ও স্ভেতলায়ার এই গল্পটি বাঘ প্রকৃতিতে পুনঃস্থাপনে নতুন আশার দ্বার খুলে দিয়েছে।
রাশিয়ায় বর্তমানে আনুমানিক ৪৮৫ থেকে ৭৫০টি সাইবেরিয়ান বা আমুর বাঘ রয়েছে। কিন্তু গবেষকদের মতে, রাশিয়া-চীন সীমান্তের প্রি-আমুর অঞ্চলসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে আরও কয়েক শ বাঘের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।
বরিস ও স্ভেতলায়ার মিলনই এই প্রকল্পের একমাত্র সফলতা তা নয়। এর আগে এক শিকারি বরফের ঢিবিতে একটি মেয়ে বাঘ শাবককে খুঁজে পান। তার নাম রাখা হয়েছিল জোলুশকা—রুশ ভাষায় যার অর্থ ‘সিনড্রেলা’। পরবর্তীতে সংরক্ষণবাদীরা জোলুশকাকে অরণ্যে ফিরিয়ে দেন।
কিছুদিন পর ক্যামেরা ট্র্যাপে একটি পুরুষ বাঘের দেখা মেলে ঠিক সেই এলাকাতেই, যেখানে জোলুশকাকে ছাড়া হয়েছিল। বিশাল সেই এলাকায় এমন মিলন ছিল প্রায় অলৌকিক। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংস্থার প্রধান বাঘ বিশেষজ্ঞ ডেল মিকুয়েল মজা করে বলেন, ‘সিনড্রেলার রাজকুমার ঠিক সময়ে হাজির হয়েছিল, আর তারা সুখে-শান্তিতে জীবন কাটাতে লাগল।’ জোলুশকা ও সেই পুরুষ বাঘের সংসারেও জন্ম নিয়েছিল শাবক, যেগুলো ছিল ১৯৭০-এর দশকের পর সেই অঞ্চলে জন্ম নেওয়া প্রথম বাঘশাবক।
এটি শুধু একটি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ প্রকল্পের নয়, বরং প্রকৃতির অসাধারণ শক্তি আর ভালোবাসার অনন্য রূপেরও গল্প। সাইবেরিয়ার হিমশীতল পাহাড়ের বুকে বরিস, স্ভেতলায়া আর জোলুশকার কাহিনি যেন বলে যায়—প্রকৃতিতে সবকিছুরই জায়গা আছে, শুধু দরকার একটু যত্ন আর সময়।
রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা যখন ১৩টি অনাথ সাইবেরিয়ান বাঘশাবককে বন্দী অবস্থায় লালন-পালন করছিলেন, তখন তাদের সামনে ছিল এক কঠিন চ্যালেঞ্জ। বন্য প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়ার আগে নিশ্চিত করতে হবে, এই শাবকেরা মানুষের কোনো ছোঁয়া পায়নি। কারণ তাদের শিখতে হবে বন্যজীবনের কঠিন বাস্তবতা—শিকার করা, টিকে থাকা।

তাই বিজ্ঞানীরা শাবকদের ক্রমশ পরিচয় করিয়ে দিলেন জীবন্ত শিকারের সঙ্গে। ছোট শাবকগুলো শিখতে শুরু করল শিকার করার কৌশল। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, বন্য প্রকৃতিতে ছাড়ার সময়টাও ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বসন্তকাল বেছে নেওয়া হয়েছিল, কারণ এ সময় খাদ্যের প্রাচুর্য থাকে।
তবে একটি পুরুষ বাঘ এই স্বাধীনতার পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছিল। সে চীনে গিয়ে গৃহপালিত পশুর ওপর আক্রমণ চালায়—এক রাতে একটি খোঁয়াড়ে ঢুকে ১৩টি ছাগল মেরে ফেলে। শেষ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা তাকে আবার ধরে এনে একটি চিড়িয়াখানার প্রজনন কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করেন।
কিন্তু বাকি ১২টি বাঘশাবক সফলতার সঙ্গে বন্যজীবনে ফিরে যেতে পেরেছিল। তারা প্রমাণ করল, বন্দী অবস্থায় বেড়ে ওঠা সত্ত্বেও তারা বন্য শিকারের দক্ষতা অর্জন করতে পারে এবং প্রকৃত বন্য বাঘের মতোই টিকে থাকতে পারে।
প্রি-আমুর অঞ্চলে যখন বাঘের সংখ্যা বাড়ছে, তখন রাশিয়ান-আমেরিকান বিজ্ঞানীদের দলটির বড় স্বপ্ন—এই অঞ্চলের বাঘগুলো একদিন সীমান্ত পেরিয়ে চীনের বাঘদের সঙ্গেও মিলিত হবে। ‘আমাদের মহাপরিকল্পনা হলো পুরো এলাকাটি সংযুক্ত করা।’ বলেন বিগ কেট প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক লুক হান্টার, ‘এখানে অনেক এলাকা রয়েছে, যেগুলো বাঘের জন্য পুনরায় উপযোগী করে তোলা যেতে পারে।’
এশিয়াজুড়ে সম্ভাব্য বাঘের আবাসস্থলের এলাকা বিশাল। ২০২৩ সালের একটি গবেষণায় উঠে এসেছে, প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার বর্গমাইল এলাকা বাঘের বসবাসের জন্য উপযুক্ত হলেও সেখান থেকে বাঘ হারিয়ে গেছে।
এই সফল প্রকল্প তাই বড় সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়। ‘এই ফলাফল প্রমাণ করে, তরুণ শাবকদের একটি আধাবন্দী পরিবেশে লালন-পালন করে তাদের শিকার শেখানো এবং পরে বন্য প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়া সম্ভব।’ বললেন রাশিয়ান একাডেমি অব সায়েন্সের অধীনে পরিচালিত সেভার্তসভ ইনস্টিটিউট অব ইকোলজি অ্যান্ড ইভোলিউশনের প্রাক্তন পরিচালক ভিয়াচেস্লাভ ভি রোজনোভ। তিনি প্রকৃতিতে বাঘ পুনঃস্থাপন প্রকল্পের নেতৃত্ব দেন।
তিনি বলেন, ‘এই গবেষণার ফলাফল এশিয়ার বিশাল অংশে বাঘ ফিরিয়ে আনার একটি নতুন পথ দেখায়। এসব অঞ্চলে এখনো উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে, কিন্তু বাঘ হারিয়ে গেছে।’
বরিস ও স্ভেতলায়া প্রায় অসম্ভব প্রেমের মতোই, রাশিয়ান ও আমেরিকান বিজ্ঞানীদের এই যৌথ প্রচেষ্টা প্রমাণ করেছে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার শক্তি।
‘জাতীয়তা আর রাজনীতি পেরিয়ে একসঙ্গে কাজ করলে সত্যিই ভালো কিছু অর্জন করা সম্ভব।’ বলেন প্রকল্পের প্রধান বাঘ বিজ্ঞানী ডেল মিকুয়েল, ‘কীভাবে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রকৃতিকে পুনরুজ্জীবিত করা যায়, এটি তার একটি অনন্য উদাহরণ।’
এই গল্প শুধু বাঘ পুনর্বাসনের সাফল্যের নয়, বরং প্রকৃতি আর মানুষের একসঙ্গে পথ চলার গল্পও।

প্রিয় মানুষটির জন্য বিশাল দূরত্ব পাড়ি দেওয়ার, এমনকি এক দেশ থেকে আরেক দেশে চলে যাওয়ার অনেক নজির পাওয়া যায়। তবে তাই বলে বন্যপ্রাণীর রাজ্যে এমন কাণ্ড নিশ্চয় আপনি আশা করবেন না। তবে এমনই এক কাণ্ড করেছে সাইবেরিয়ার এক বাঘ। সঙ্গীর খোঁজে সে জঙ্গলের মধ্য দিয়ে পাড়ি দেয় ২০০ কিলোমিটার পথ।
২০১৪ সালে রাশিয়ার পুব সীমানার দুর্গম এক অরণ্যে দুই অনাথ আমুর বাঘশাবককে মুক্ত করে দিয়েছিলেন রুশ বিজ্ঞানীরা। উদ্দেশ্য ছিল একটি বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতিকে বাঁচানো। আমুর টাইগার, যাকে সাইবেরিয়ান টাইগারও বলা হয়, এখনো বিপন্ন। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় আকারের বাঘ। কিন্তু সেই দিন বিজ্ঞানীরা নিজেদের অজান্তেই আশ্চর্য একটি কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন, অসাধারণ এক প্রেমের গল্পের সূচনা।
শাবক দুটি বরিস ও স্ভেতলায়া, তাদের জন্মের কয়েক মাসের মধ্যেই মা-বাবাকে হারায়। তখন তাদের বয়স মাত্র তিন থেকে পাঁচ মাস। আমুর বাঘদের প্রধান ঘাঁটি শাখোতে-অ্যালিন পর্বতমালা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয় । বন্দী অবস্থায় বেড়ে ওঠার পর ১৮ মাস বয়সে তাদের মুক্ত করে দেওয়া হয়। বিজ্ঞানীরা ইচ্ছা করেই তাদের আলাদা করে দিয়েছিলেন। বরিস ও স্ভেতলায়াকে পরস্পর থেকে ১০০ মাইলেরও বেশি দূরে ছেড়ে দেওয়া হয়, যাতে আমুর অঞ্চলে বাঘের বিস্তৃতি আরও বাড়ানো যায়।
কিন্তু মুক্তির এক বছরেরও বেশি সময় পর আশ্চর্য এক ঘটনা ঘটল। বরিস প্রায় ১২০ মাইল (১৯৩ কিলোমিটার) পথ পাড়ি দিয়ে একদম সোজাসুজি স্ভেতলায়ার কাছে হাজির হয়ে যায়। যেন প্রকৃতি নিজেই তার জন্য এ পথের দিশা দেখিয়েছিল।
আর বাঘ দুটির এই দেখা হওয়ার ছয় মাস পর কয়েকটি শাবকের জন্ম দেয় স্ভেতলায়া।
এসব তথ্য জানা যায় মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদন থেকে।
এটি ছিল বড় বিড়াল অর্থাৎ, বিগ ক্যাট প্রকৃতিতে পুনঃস্থাপনে এক ঐতিহাসিক সফলতা। স্পেনের আইবেরিয়ান লিংকস পুনর্বাসন প্রকল্প সফল হলেও এত দিন বড় বিড়ালদের ক্ষেত্রে এটি প্রায় অসম্ভব মনে করা হতো। কিন্তু জার্নাল অব ওয়াইল্ডলাইফে গত মাসে অর্থাৎ, নভেম্বরে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বিজ্ঞানীরা বলছেন, বরিস ও স্ভেতলায়ার এই গল্পটি বাঘ প্রকৃতিতে পুনঃস্থাপনে নতুন আশার দ্বার খুলে দিয়েছে।
রাশিয়ায় বর্তমানে আনুমানিক ৪৮৫ থেকে ৭৫০টি সাইবেরিয়ান বা আমুর বাঘ রয়েছে। কিন্তু গবেষকদের মতে, রাশিয়া-চীন সীমান্তের প্রি-আমুর অঞ্চলসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে আরও কয়েক শ বাঘের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।
বরিস ও স্ভেতলায়ার মিলনই এই প্রকল্পের একমাত্র সফলতা তা নয়। এর আগে এক শিকারি বরফের ঢিবিতে একটি মেয়ে বাঘ শাবককে খুঁজে পান। তার নাম রাখা হয়েছিল জোলুশকা—রুশ ভাষায় যার অর্থ ‘সিনড্রেলা’। পরবর্তীতে সংরক্ষণবাদীরা জোলুশকাকে অরণ্যে ফিরিয়ে দেন।
কিছুদিন পর ক্যামেরা ট্র্যাপে একটি পুরুষ বাঘের দেখা মেলে ঠিক সেই এলাকাতেই, যেখানে জোলুশকাকে ছাড়া হয়েছিল। বিশাল সেই এলাকায় এমন মিলন ছিল প্রায় অলৌকিক। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংস্থার প্রধান বাঘ বিশেষজ্ঞ ডেল মিকুয়েল মজা করে বলেন, ‘সিনড্রেলার রাজকুমার ঠিক সময়ে হাজির হয়েছিল, আর তারা সুখে-শান্তিতে জীবন কাটাতে লাগল।’ জোলুশকা ও সেই পুরুষ বাঘের সংসারেও জন্ম নিয়েছিল শাবক, যেগুলো ছিল ১৯৭০-এর দশকের পর সেই অঞ্চলে জন্ম নেওয়া প্রথম বাঘশাবক।
এটি শুধু একটি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ প্রকল্পের নয়, বরং প্রকৃতির অসাধারণ শক্তি আর ভালোবাসার অনন্য রূপেরও গল্প। সাইবেরিয়ার হিমশীতল পাহাড়ের বুকে বরিস, স্ভেতলায়া আর জোলুশকার কাহিনি যেন বলে যায়—প্রকৃতিতে সবকিছুরই জায়গা আছে, শুধু দরকার একটু যত্ন আর সময়।
রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা যখন ১৩টি অনাথ সাইবেরিয়ান বাঘশাবককে বন্দী অবস্থায় লালন-পালন করছিলেন, তখন তাদের সামনে ছিল এক কঠিন চ্যালেঞ্জ। বন্য প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়ার আগে নিশ্চিত করতে হবে, এই শাবকেরা মানুষের কোনো ছোঁয়া পায়নি। কারণ তাদের শিখতে হবে বন্যজীবনের কঠিন বাস্তবতা—শিকার করা, টিকে থাকা।

তাই বিজ্ঞানীরা শাবকদের ক্রমশ পরিচয় করিয়ে দিলেন জীবন্ত শিকারের সঙ্গে। ছোট শাবকগুলো শিখতে শুরু করল শিকার করার কৌশল। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, বন্য প্রকৃতিতে ছাড়ার সময়টাও ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বসন্তকাল বেছে নেওয়া হয়েছিল, কারণ এ সময় খাদ্যের প্রাচুর্য থাকে।
তবে একটি পুরুষ বাঘ এই স্বাধীনতার পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছিল। সে চীনে গিয়ে গৃহপালিত পশুর ওপর আক্রমণ চালায়—এক রাতে একটি খোঁয়াড়ে ঢুকে ১৩টি ছাগল মেরে ফেলে। শেষ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা তাকে আবার ধরে এনে একটি চিড়িয়াখানার প্রজনন কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করেন।
কিন্তু বাকি ১২টি বাঘশাবক সফলতার সঙ্গে বন্যজীবনে ফিরে যেতে পেরেছিল। তারা প্রমাণ করল, বন্দী অবস্থায় বেড়ে ওঠা সত্ত্বেও তারা বন্য শিকারের দক্ষতা অর্জন করতে পারে এবং প্রকৃত বন্য বাঘের মতোই টিকে থাকতে পারে।
প্রি-আমুর অঞ্চলে যখন বাঘের সংখ্যা বাড়ছে, তখন রাশিয়ান-আমেরিকান বিজ্ঞানীদের দলটির বড় স্বপ্ন—এই অঞ্চলের বাঘগুলো একদিন সীমান্ত পেরিয়ে চীনের বাঘদের সঙ্গেও মিলিত হবে। ‘আমাদের মহাপরিকল্পনা হলো পুরো এলাকাটি সংযুক্ত করা।’ বলেন বিগ কেট প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক লুক হান্টার, ‘এখানে অনেক এলাকা রয়েছে, যেগুলো বাঘের জন্য পুনরায় উপযোগী করে তোলা যেতে পারে।’
এশিয়াজুড়ে সম্ভাব্য বাঘের আবাসস্থলের এলাকা বিশাল। ২০২৩ সালের একটি গবেষণায় উঠে এসেছে, প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার বর্গমাইল এলাকা বাঘের বসবাসের জন্য উপযুক্ত হলেও সেখান থেকে বাঘ হারিয়ে গেছে।
এই সফল প্রকল্প তাই বড় সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়। ‘এই ফলাফল প্রমাণ করে, তরুণ শাবকদের একটি আধাবন্দী পরিবেশে লালন-পালন করে তাদের শিকার শেখানো এবং পরে বন্য প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়া সম্ভব।’ বললেন রাশিয়ান একাডেমি অব সায়েন্সের অধীনে পরিচালিত সেভার্তসভ ইনস্টিটিউট অব ইকোলজি অ্যান্ড ইভোলিউশনের প্রাক্তন পরিচালক ভিয়াচেস্লাভ ভি রোজনোভ। তিনি প্রকৃতিতে বাঘ পুনঃস্থাপন প্রকল্পের নেতৃত্ব দেন।
তিনি বলেন, ‘এই গবেষণার ফলাফল এশিয়ার বিশাল অংশে বাঘ ফিরিয়ে আনার একটি নতুন পথ দেখায়। এসব অঞ্চলে এখনো উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে, কিন্তু বাঘ হারিয়ে গেছে।’
বরিস ও স্ভেতলায়া প্রায় অসম্ভব প্রেমের মতোই, রাশিয়ান ও আমেরিকান বিজ্ঞানীদের এই যৌথ প্রচেষ্টা প্রমাণ করেছে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার শক্তি।
‘জাতীয়তা আর রাজনীতি পেরিয়ে একসঙ্গে কাজ করলে সত্যিই ভালো কিছু অর্জন করা সম্ভব।’ বলেন প্রকল্পের প্রধান বাঘ বিজ্ঞানী ডেল মিকুয়েল, ‘কীভাবে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রকৃতিকে পুনরুজ্জীবিত করা যায়, এটি তার একটি অনন্য উদাহরণ।’
এই গল্প শুধু বাঘ পুনর্বাসনের সাফল্যের নয়, বরং প্রকৃতি আর মানুষের একসঙ্গে পথ চলার গল্পও।

রৌদ্রোজ্জ্বল ঢাকায় আজ শুক্রবার ছুটির দিনে সকালে হালকা কুয়াশার দেখা মিলেছে। তবে হাড়কাঁপানো শীত না পড়লেও বইছে মিষ্টি হিমেল বাতাস। আজ সারা দিন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে আকাশ পরিষ্কার থাকবে, আবহাওয়াও থাকবে শুষ্ক।
৩ ঘণ্টা আগে
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টা। সূর্যের আলো যখন পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি, ঠিক তখনই ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল। রিখটার স্কেলে এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার পাটুয়ারপাড় এলাকা।
১ দিন আগে
শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এ তালিকায় শীর্ষে ছিল ভারতের দিল্লি।
১ দিন আগে
রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল ছিল ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের বেলা আজকের এই তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রৌদ্রোজ্জ্বল ঢাকায় আজ শুক্রবার সকালে হালকা কুয়াশার দেখা মিলেছে। তবে হাড়কাঁপানো শীত না পড়লেও বইছে মিষ্টি হিমেল বাতাস। আজ সারা দিন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে আকাশ পরিষ্কার থাকবে, আবহাওয়াও থাকবে শুষ্ক।
আজ সকাল ৭টায় ঢাকা ও আশপাশ এলাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৯ শতাংশ। এদিন দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।
আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১১ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যাস্ত ৬টা ২৮ মিনিটে।

রৌদ্রোজ্জ্বল ঢাকায় আজ শুক্রবার সকালে হালকা কুয়াশার দেখা মিলেছে। তবে হাড়কাঁপানো শীত না পড়লেও বইছে মিষ্টি হিমেল বাতাস। আজ সারা দিন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে আকাশ পরিষ্কার থাকবে, আবহাওয়াও থাকবে শুষ্ক।
আজ সকাল ৭টায় ঢাকা ও আশপাশ এলাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৯ শতাংশ। এদিন দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।
আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১১ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যাস্ত ৬টা ২৮ মিনিটে।

প্রিয় মানুষটির জন্য বিশাল দূরত্ব পাড়ি দেওয়ার এমনকি এক দেশ থেকে আরেক দেশে চলে যাওয়ার অনেক নজির পাওয়া যায়। তবে তাই বলে বন্যপ্রাণী রাজ্যে এমন কাণ্ড নিশ্চয় আপনি আশা করবেন না। তবে এমনই এক কাণ্ড করেছে সাইবেরিয়ার এক বাঘ। সঙ্গীর খোঁজে সে জঙ্গলের মধ্য দিয়ে পাড়ি দেয় ২০০ কিলোমিটার পথ।
১৭ ডিসেম্বর ২০২৪
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টা। সূর্যের আলো যখন পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি, ঠিক তখনই ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল। রিখটার স্কেলে এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার পাটুয়ারপাড় এলাকা।
১ দিন আগে
শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এ তালিকায় শীর্ষে ছিল ভারতের দিল্লি।
১ দিন আগে
রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল ছিল ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের বেলা আজকের এই তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টা। সূর্যের আলো যখন পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি, ঠিক তখনই ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল। রিখটার স্কেলে এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার পাটুয়ারপাড় এলাকা।
আর এই ভূকম্পনেই আতঙ্কিত হয়ে ওঠে ঢাকার নগরজীবন থেকে শুরু করে সারা দেশের মানুষ। আতঙ্কিত হয়ে ওঠাই স্বাভাবিক। কারণ, এক-দুবার নয়, মাত্র ১৪ দিনে বাংলাদেশে একাধিকবার ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে চারটি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদী, গাজীপুরের মতো ঢাকার আশপাশের অঞ্চল ছিল বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পটি হয় গত ২১ নভেম্বর। ওই দিন ৫ দশমিক ৭ মাত্রার এক ভূমিকম্পে ঢাকাসহ সারা দেশ কেঁপে উঠেছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর বাংলাদেশেই উৎপত্তিস্থল ছিল পাঁচটি ভূমিকম্পের। এর প্রথমটি ছিল ২১ নভেম্বরের ঠিক দুই মাস আগে ২১ সেপ্টেম্বর। এদিন ৪ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এর উৎপত্তি হয় সিলেটের ছাতকে।
এরপরের ভূমিকম্প ছিল ২১ নভেম্বর, মাত্রা ৫ দশমিক ৭। পরদিন ২২ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিটে ৪ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদী জেলার কালীগঞ্জ। এর ৫ দিন পর, ২৭ নভেম্বর বিকেল সোয়া ৪টায় ৪ মাত্রার ভূমিকম্প হয়, উৎপত্তিস্থল ঢাকার পাশের জেলা গাজীপুরের টঙ্গীর ঢালাদিয়া এলাকা।
কতবার ভূকম্পন হলো
তবে বারবার ভূমিকম্প কেবল বাংলাদেশেই নয়, সীমান্তঘেঁষা মিয়ানমার, ভারত, নেপাল, এমনকি চীনের তিব্বত সীমান্তেও ঘন ঘন ভূমিকম্প হচ্ছে। চলতি বছরের ১১ মাসে এই অঞ্চলে ২৮৫ বার ভূমিকম্প হয়েছে। এর কোনোটিই ৪ মাত্রার নিচে ছিল না।
গত সোমবার ১ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে মিয়ানমারের ফালামে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হয়। ফলে চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকেও এটি অনুভূত হয়েছে। ঢাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ছিল ৪৩১ কিলোমিটার। ওই ভূমিকম্প বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা ৫৫ মিনিট ১৬ সেকেন্ডে অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৯।
বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, টেকটোনিক প্লেটে বাংলাদেশের যে অবস্থান, তাতে দুটো প্লেটের সংযোগস্থল রয়েছে, পশ্চিমে ইন্ডিয়ান প্লেট আর পূর্ব দিকে বার্মা প্লেট। আর বাংলাদেশের উত্তর দিকে আছে ইউরেশিয়ান প্লেট।

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বিবিসি বাংলাকে বলেন, ভারতীয় প্লেটটি ধীরে ধীরে পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বার্মা প্লেটের নিচে, অর্থাৎ চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রামের নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। আর এই তলিয়ে যাওয়ার কারণে একটা সাবডাকশন জোনের তৈরি হয়েছে।
হুমায়ুন আখতার আরও বলেন, ‘এই জোনের ব্যাপ্তি সিলেট থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত। পুরো চট্টগ্রাম অঞ্চল এর মধ্যে পড়েছে। এখানে বিভিন্ন সেগমেন্ট আছে। আমাদের এই সেগমেন্টে ৮.২ থেকে ৯ মাত্রার শক্তি জমা হয়ে আছে। এটা বের হতেই হবে।’ তাঁর মতে, ‘এখানে প্লেট লকড হয়ে ছিল। এর অতি সামান্য ক্ষুদ্রাংশ খুলল বলেই শুক্রবারের ভূমিকম্প হয়েছে। এটিই ধারণা দেয় যে সামনে বড় ভূমিকম্প আমাদের দ্বারপ্রান্তে আছে।’
আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ
তবে ভূমিকম্প নিয়ে উৎকণ্ঠিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ভূতত্ত্ববিদ ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. মমিনুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন যেসব ভূকম্পন, সেগুলো হলো ২১ নভেম্বর ভূমিকম্পের ‘আফটার শক’।
২০১১ সালের ১১ মার্চ জাপানের হনশু দ্বীপের টোহুকু অঞ্চলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প এবং এর জেরে সৃষ্ট সুনামির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই ঘটনার পর কেবল ৬ মাত্রারই ৪৫০ বার আফটার শক হয়েছিল জাপানে। আরও অসংখ্যবার ছোট ছোট আফটার শক হয়েছিল তখন।
ভূকম্পনবিদ্যার গবেষক মমিনুল ইসলাম আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে ২১ নভেম্বরের পর একাধিকবার আফটার শক হচ্ছে। এই আফটার শক বহুদিন ধরে হতে পারে, কমপক্ষে আরও তিন মাস হতে পারে। ২ মাত্রার নিচের ভূকম্পনগুলো আমাদের (বাংলাদেশে) সিস্টেমে ধরা পড়ে না।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টা। সূর্যের আলো যখন পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি, ঠিক তখনই ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল। রিখটার স্কেলে এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার পাটুয়ারপাড় এলাকা।
আর এই ভূকম্পনেই আতঙ্কিত হয়ে ওঠে ঢাকার নগরজীবন থেকে শুরু করে সারা দেশের মানুষ। আতঙ্কিত হয়ে ওঠাই স্বাভাবিক। কারণ, এক-দুবার নয়, মাত্র ১৪ দিনে বাংলাদেশে একাধিকবার ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে চারটি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদী, গাজীপুরের মতো ঢাকার আশপাশের অঞ্চল ছিল বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পটি হয় গত ২১ নভেম্বর। ওই দিন ৫ দশমিক ৭ মাত্রার এক ভূমিকম্পে ঢাকাসহ সারা দেশ কেঁপে উঠেছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর বাংলাদেশেই উৎপত্তিস্থল ছিল পাঁচটি ভূমিকম্পের। এর প্রথমটি ছিল ২১ নভেম্বরের ঠিক দুই মাস আগে ২১ সেপ্টেম্বর। এদিন ৪ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এর উৎপত্তি হয় সিলেটের ছাতকে।
এরপরের ভূমিকম্প ছিল ২১ নভেম্বর, মাত্রা ৫ দশমিক ৭। পরদিন ২২ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিটে ৪ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদী জেলার কালীগঞ্জ। এর ৫ দিন পর, ২৭ নভেম্বর বিকেল সোয়া ৪টায় ৪ মাত্রার ভূমিকম্প হয়, উৎপত্তিস্থল ঢাকার পাশের জেলা গাজীপুরের টঙ্গীর ঢালাদিয়া এলাকা।
কতবার ভূকম্পন হলো
তবে বারবার ভূমিকম্প কেবল বাংলাদেশেই নয়, সীমান্তঘেঁষা মিয়ানমার, ভারত, নেপাল, এমনকি চীনের তিব্বত সীমান্তেও ঘন ঘন ভূমিকম্প হচ্ছে। চলতি বছরের ১১ মাসে এই অঞ্চলে ২৮৫ বার ভূমিকম্প হয়েছে। এর কোনোটিই ৪ মাত্রার নিচে ছিল না।
গত সোমবার ১ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে মিয়ানমারের ফালামে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হয়। ফলে চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকেও এটি অনুভূত হয়েছে। ঢাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ছিল ৪৩১ কিলোমিটার। ওই ভূমিকম্প বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা ৫৫ মিনিট ১৬ সেকেন্ডে অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৯।
বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, টেকটোনিক প্লেটে বাংলাদেশের যে অবস্থান, তাতে দুটো প্লেটের সংযোগস্থল রয়েছে, পশ্চিমে ইন্ডিয়ান প্লেট আর পূর্ব দিকে বার্মা প্লেট। আর বাংলাদেশের উত্তর দিকে আছে ইউরেশিয়ান প্লেট।

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বিবিসি বাংলাকে বলেন, ভারতীয় প্লেটটি ধীরে ধীরে পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বার্মা প্লেটের নিচে, অর্থাৎ চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রামের নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। আর এই তলিয়ে যাওয়ার কারণে একটা সাবডাকশন জোনের তৈরি হয়েছে।
হুমায়ুন আখতার আরও বলেন, ‘এই জোনের ব্যাপ্তি সিলেট থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত। পুরো চট্টগ্রাম অঞ্চল এর মধ্যে পড়েছে। এখানে বিভিন্ন সেগমেন্ট আছে। আমাদের এই সেগমেন্টে ৮.২ থেকে ৯ মাত্রার শক্তি জমা হয়ে আছে। এটা বের হতেই হবে।’ তাঁর মতে, ‘এখানে প্লেট লকড হয়ে ছিল। এর অতি সামান্য ক্ষুদ্রাংশ খুলল বলেই শুক্রবারের ভূমিকম্প হয়েছে। এটিই ধারণা দেয় যে সামনে বড় ভূমিকম্প আমাদের দ্বারপ্রান্তে আছে।’
আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ
তবে ভূমিকম্প নিয়ে উৎকণ্ঠিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ভূতত্ত্ববিদ ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. মমিনুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন যেসব ভূকম্পন, সেগুলো হলো ২১ নভেম্বর ভূমিকম্পের ‘আফটার শক’।
২০১১ সালের ১১ মার্চ জাপানের হনশু দ্বীপের টোহুকু অঞ্চলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প এবং এর জেরে সৃষ্ট সুনামির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই ঘটনার পর কেবল ৬ মাত্রারই ৪৫০ বার আফটার শক হয়েছিল জাপানে। আরও অসংখ্যবার ছোট ছোট আফটার শক হয়েছিল তখন।
ভূকম্পনবিদ্যার গবেষক মমিনুল ইসলাম আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে ২১ নভেম্বরের পর একাধিকবার আফটার শক হচ্ছে। এই আফটার শক বহুদিন ধরে হতে পারে, কমপক্ষে আরও তিন মাস হতে পারে। ২ মাত্রার নিচের ভূকম্পনগুলো আমাদের (বাংলাদেশে) সিস্টেমে ধরা পড়ে না।

প্রিয় মানুষটির জন্য বিশাল দূরত্ব পাড়ি দেওয়ার এমনকি এক দেশ থেকে আরেক দেশে চলে যাওয়ার অনেক নজির পাওয়া যায়। তবে তাই বলে বন্যপ্রাণী রাজ্যে এমন কাণ্ড নিশ্চয় আপনি আশা করবেন না। তবে এমনই এক কাণ্ড করেছে সাইবেরিয়ার এক বাঘ। সঙ্গীর খোঁজে সে জঙ্গলের মধ্য দিয়ে পাড়ি দেয় ২০০ কিলোমিটার পথ।
১৭ ডিসেম্বর ২০২৪
রৌদ্রোজ্জ্বল ঢাকায় আজ শুক্রবার ছুটির দিনে সকালে হালকা কুয়াশার দেখা মিলেছে। তবে হাড়কাঁপানো শীত না পড়লেও বইছে মিষ্টি হিমেল বাতাস। আজ সারা দিন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে আকাশ পরিষ্কার থাকবে, আবহাওয়াও থাকবে শুষ্ক।
৩ ঘণ্টা আগে
শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এ তালিকায় শীর্ষে ছিল ভারতের দিল্লি।
১ দিন আগে
রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল ছিল ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের বেলা আজকের এই তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এ তালিকায় শীর্ষে ছিল ভারতের দিল্লি। আজ বৃহস্পতিবার দিল্লিকে পেছনে ফেলে এ শীর্ষ দূষিত শহর হলো ঢাকা।
বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ ঢাকার অবস্থান ১ম। আজ সকাল ১০টার রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান আজ ২৯৬, যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।
ঢাকার যেসব এলাকায় বায়ু দূষণ সবচেয়ে বেশি— পল্লবী দক্ষিণ, কল্যাণপুর, বেজ এজওয়াটার আউটডোর, ইস্টার্ন হাউজিং ও গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল।
ঢাকার নিম্নমানের বাতাসের প্রধান কারণ হলো পিএম ২.৫ বা সূক্ষ্ম কণা। এই অতিক্ষুদ্র কণাগুলো, যাদের ব্যাস ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়েও কম, ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে রক্তপ্রবাহে মিশে যেতে পারে। এর ফলে হাঁপানি (অ্যাজমা) বৃদ্ধি, ব্রঙ্কাইটিস এবং হৃদ্রোগের মতো শ্বাসযন্ত্র ও হৃদ্যন্ত্রের গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।
বাতাসের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে করণীয়
অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।
সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।
যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।
ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।
দূষিত বায়ুর শহর তালিকায় শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো— ভারতের দিল্লি ও কলকাতা, পাকিস্তানের লাহোর ও কাতারের দোহা। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২৭৮, ২৩৩, ১৯৯ ও ১৮৯।
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এ তালিকায় শীর্ষে ছিল ভারতের দিল্লি। আজ বৃহস্পতিবার দিল্লিকে পেছনে ফেলে এ শীর্ষ দূষিত শহর হলো ঢাকা।
বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ ঢাকার অবস্থান ১ম। আজ সকাল ১০টার রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান আজ ২৯৬, যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।
ঢাকার যেসব এলাকায় বায়ু দূষণ সবচেয়ে বেশি— পল্লবী দক্ষিণ, কল্যাণপুর, বেজ এজওয়াটার আউটডোর, ইস্টার্ন হাউজিং ও গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল।
ঢাকার নিম্নমানের বাতাসের প্রধান কারণ হলো পিএম ২.৫ বা সূক্ষ্ম কণা। এই অতিক্ষুদ্র কণাগুলো, যাদের ব্যাস ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়েও কম, ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে রক্তপ্রবাহে মিশে যেতে পারে। এর ফলে হাঁপানি (অ্যাজমা) বৃদ্ধি, ব্রঙ্কাইটিস এবং হৃদ্রোগের মতো শ্বাসযন্ত্র ও হৃদ্যন্ত্রের গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।
বাতাসের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে করণীয়
অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।
সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।
যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।
ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।
দূষিত বায়ুর শহর তালিকায় শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো— ভারতের দিল্লি ও কলকাতা, পাকিস্তানের লাহোর ও কাতারের দোহা। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২৭৮, ২৩৩, ১৯৯ ও ১৮৯।
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

প্রিয় মানুষটির জন্য বিশাল দূরত্ব পাড়ি দেওয়ার এমনকি এক দেশ থেকে আরেক দেশে চলে যাওয়ার অনেক নজির পাওয়া যায়। তবে তাই বলে বন্যপ্রাণী রাজ্যে এমন কাণ্ড নিশ্চয় আপনি আশা করবেন না। তবে এমনই এক কাণ্ড করেছে সাইবেরিয়ার এক বাঘ। সঙ্গীর খোঁজে সে জঙ্গলের মধ্য দিয়ে পাড়ি দেয় ২০০ কিলোমিটার পথ।
১৭ ডিসেম্বর ২০২৪
রৌদ্রোজ্জ্বল ঢাকায় আজ শুক্রবার ছুটির দিনে সকালে হালকা কুয়াশার দেখা মিলেছে। তবে হাড়কাঁপানো শীত না পড়লেও বইছে মিষ্টি হিমেল বাতাস। আজ সারা দিন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে আকাশ পরিষ্কার থাকবে, আবহাওয়াও থাকবে শুষ্ক।
৩ ঘণ্টা আগে
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টা। সূর্যের আলো যখন পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি, ঠিক তখনই ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল। রিখটার স্কেলে এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার পাটুয়ারপাড় এলাকা।
১ দিন আগে
রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল ছিল ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের বেলা আজকের এই তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল ছিল ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের বেলা এই তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আজ সকাল ৭টায় পরবর্তী ছয় ঘণ্টার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে এসব কথা বলা হয়েছে।
পূর্বাভাসের তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮১ শতাংশ।
এ ছাড়া আজ দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। আবহাওয়া প্রায় শুষ্ক থাকবে। দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।
আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১১ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যাস্ত ৬টা ২৭ মিনিটে।

রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল ছিল ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের বেলা এই তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আজ সকাল ৭টায় পরবর্তী ছয় ঘণ্টার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে এসব কথা বলা হয়েছে।
পূর্বাভাসের তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮১ শতাংশ।
এ ছাড়া আজ দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। আবহাওয়া প্রায় শুষ্ক থাকবে। দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।
আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১১ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যাস্ত ৬টা ২৭ মিনিটে।

প্রিয় মানুষটির জন্য বিশাল দূরত্ব পাড়ি দেওয়ার এমনকি এক দেশ থেকে আরেক দেশে চলে যাওয়ার অনেক নজির পাওয়া যায়। তবে তাই বলে বন্যপ্রাণী রাজ্যে এমন কাণ্ড নিশ্চয় আপনি আশা করবেন না। তবে এমনই এক কাণ্ড করেছে সাইবেরিয়ার এক বাঘ। সঙ্গীর খোঁজে সে জঙ্গলের মধ্য দিয়ে পাড়ি দেয় ২০০ কিলোমিটার পথ।
১৭ ডিসেম্বর ২০২৪
রৌদ্রোজ্জ্বল ঢাকায় আজ শুক্রবার ছুটির দিনে সকালে হালকা কুয়াশার দেখা মিলেছে। তবে হাড়কাঁপানো শীত না পড়লেও বইছে মিষ্টি হিমেল বাতাস। আজ সারা দিন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে আকাশ পরিষ্কার থাকবে, আবহাওয়াও থাকবে শুষ্ক।
৩ ঘণ্টা আগে
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টা। সূর্যের আলো যখন পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি, ঠিক তখনই ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল। রিখটার স্কেলে এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার পাটুয়ারপাড় এলাকা।
১ দিন আগে
শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এ তালিকায় শীর্ষে ছিল ভারতের দিল্লি।
১ দিন আগে