Ajker Patrika

৪৮তম বিশেষ বিসিএস (স্বাস্থ্য)

সুপারিশের তিন মাস পেরোলেও যোগদান হয়নি ৩৫০০ চিকিৎসকের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ সোমবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ৪৮ তম বিশেষ বিসিএস (স্বাস্থ্য) সুপারিশপ্রাপ্ত চিকিৎসক ফোরামের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সোমবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ৪৮ তম বিশেষ বিসিএস (স্বাস্থ্য) সুপারিশপ্রাপ্ত চিকিৎসক ফোরামের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

৪৮তম বিশেষ বিসিএসে (স্বাস্থ্য) সুপারিশপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের গেজেট দ্রুত প্রকাশ ও পদায়নের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা। তাঁদের ভাষ্য, সুপারিশের তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো গেজেট প্রকাশ না হওয়ায় দেশের তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

আজ সোমবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ৪৮তম বিশেষ বিসিএসে (স্বাস্থ্য) সুপারিশপ্রাপ্ত চিকিৎসক ফোরামের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দেবাশীষ দাস।

লিখিত বক্তব্যে দেবাশীষ বলেন, দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা জোরদারে চলতি বছরের অক্টোবরের মধ্যে ২ হাজারের বেশি চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) গত ২৯ মে ৪৮তম বিশেষ বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এরপর ১৮ জুলাই এমসিকিউ ধরনের লিখিত পরীক্ষা ও ১০ সেপ্টেম্বর মৌখিক পরীক্ষা (ভাইভা) শেষে ১১ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। তবে ফল প্রকাশের তিন মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে দেশের চিকিৎসকসংকটের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন উল্লেখ করেন আয়োজকেরা। গত ৩ জুলাই চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মাত্র একজন চিকিৎসকের ওপর শতাধিক রোগীর চাপের চিত্র উঠে আসে ওই প্রতিবেদনে। দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করেও চিকিৎসা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রোগীর স্বজনেরা। আয়োজকদের ভাষ্য, এটি শুধু একটি উপজেলার চিত্র নয়, দেশের প্রায় সব উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই একই ধরনের সংকট বিরাজ করছে।

স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে প্রায় ১২ হাজার ৯৮০টি চিকিৎসক পদ শূন্য রয়েছে। উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালে তীব্র চিকিৎসকসংকট থাকা সত্ত্বেও ৩ হাজার ৫০০–এর বেশি প্রস্তুত চিকিৎসককে পদায়ন না করে বসিয়ে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বক্তারা। এতে তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম এর আগে জানিয়েছিলেন, ৪৮তম বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে তিন হাজারের বেশি চিকিৎসক নিয়োগের কার্যক্রম নভেম্বরের মধ্যেই শেষ হবে। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান দ্রুত ও স্বচ্ছ নিয়োগ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছিলেন। তবে বাস্তবে সেই আশ্বাসের প্রতিফলন এখনো দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন চিকিৎসকেরা।

আয়োজকেরা জানান, দ্রুত নিয়োগের আশায় অনেক সুপারিশপ্রাপ্ত চিকিৎসক এফসিপিএস, এমডি–এমএসসহ চলমান উচ্চতর প্রশিক্ষণ ছেড়ে দিয়েছেন। কিন্তু গেজেট ও পদায়ন বিলম্বিত হওয়ায় তাঁরা এখন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন। এতে একদিকে তাঁদের ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ সময় নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে একাডেমিক ধারাবাহিকতাও ব্যাহত হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে অবিলম্বে ৪৮তম বিশেষ বিসিএসের (স্বাস্থ্য) সুপারিশপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের গেজেট প্রকাশ ও দ্রুত পদায়নের দাবি জানানো হয়। বক্তারা বলেন, এতে যেমন চিকিৎসকদের অনিশ্চয়তা দূর হবে, তেমনি দেশের তৃণমূল পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবায়ও স্বস্তি পাওয়া যাবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মো. রুহুল আমিন, মো. রিফাত খন্দকার, ইশরাত জাহানে ঈসা, আজাদ হোসেন ও রাতুল বালা বিশ্বাল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পটুয়াখালী-৩ আসনে নুর ও হাসান মামুনের মনোনয়নপত্র দাখিল

দশমিনা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি 
নুরুল হক নুর-হাসান মামুন। ফাইল ছবি
নুরুল হক নুর-হাসান মামুন। ফাইল ছবি

পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে হাসান মামুনসহ আরও দুজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

আজ সোমবার দশমিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

জানা গেছে, যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দল হিসেবে দলীয় প্রার্থী না দিয়ে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে আসনটি ছেড়ে দিয়েছে বিএনপি। তবে এই আসনটিতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা নিয়ে শক্ত অবস্থানে ছিল বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন।

গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে আসন সমঝোতা হলেও গলাচিপা-দশমিনা আসনটি ছাড়তে নারাজ বিএনপির নেতা-কর্মীরা। ২৪ ডিসেম্বর হাসান মামুনের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন গলাচিপা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান।

জানতে চাইলে হাসান মামুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, এখানের স্থানীয় বিএনপি ও সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। দল যে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবে। সেই সাংগঠনিক ব্যবস্থা আমি গ্রহণ করেই এসেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গণঅধিকার পরিষদ কোনো দলের সঙ্গে বিলীন হয়নি: নুর

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নুরুল হক নুর। ছবি: আজকের পত্রিকা
গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নুরুল হক নুর। ছবি: আজকের পত্রিকা

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, এনসিপি জামায়াতে বিলীন হয়ে যায়নি এবং গণঅধিকার পরিষদও কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিলীন হয়নি। গণঅধিকার পরিষদ একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বতন্ত্র অবস্থানেই রয়েছে।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

নুরুল হক নুর বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী যে সরকার গঠিত হবে, তা হবে একটি ঐতিহাসিক সরকার। এই সরকারই জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি আরও বলেন, ‘আমরা প্রকৃত অর্থেই নবীন ও তরুণ রাজনৈতিক শক্তি। অত্যন্ত প্রতিকূল সময়ের মধ্যে রাজনীতি করেছি। সে কারণে প্রত্যাশিতভাবে সারা দেশে সংগঠিত হতে পারিনি। এনসিপি আমাদের চেয়েও নবীন; তারাও সে অর্থে এখনো পূর্ণাঙ্গভাবে সংগঠিত হতে পারেনি।’

বিএনপির প্রসঙ্গ টেনে ভিপি নুর বলেন, ‘বিএনপির মতো একটি দল ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থেকেও টিকে ছিল এবং ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সময় ধরে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়েছে। দীর্ঘ এই লড়াইয়ের পর দলটি আবার ক্ষমতায় আসছে।’

রাজনীতিতে শর্টকাট কোনো পথ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা নিজেদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, দেশকে স্থিতিশীল রাখা এবং এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে বিএনপির বিকল্প কোনো রাজনৈতিক শক্তি নেই। বিএনপি ছাড়া অন্য কেউ ক্ষমতায় এলে রাষ্ট্র পরিচালনা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা কঠিন হবে। এতে দেশ আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মুখে পড়ে বিপর্যয়ের দিকে যেতে পারে।’

নুর আরও বলেন, ‘এ কারণেই আমাদের দলীয় কিছু ক্ষতি হলেও জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিএনপির সঙ্গে অ্যালায়েন্স করে তাদের ক্ষমতায় আনতে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা মাঠে কাজ করছি।’

এ সময় পটুয়াখালী জেলা যুবদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শিপলু খান, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ইখতিয়ার রহমান কবিরসহ গণঅধিকার পরিষদের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদি হত্যা মামলার প্রধান আসামি ফয়সালের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা

বাসস, ঢাকা  
হাদি হত্যা মামলায় প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত
হাদি হত্যা মামলায় প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে রাহুল ওরফে দাউদের (৩৭) বিরুদ্ধে এবার অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় এ মামলা করা হয়েছে।

আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ২৩ ডিসেম্বর ফয়সাল করিম মাসুদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা করা হয়েছে। মামলার তদন্ত চলমান।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ১২ ডিসেম্বর মামলার এজাহারনামীয় আসামি ফয়সাল করিম জুলাই যোদ্ধা ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে (৩৩) আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে মাথায় গুলি করে মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যান।

হাদি হত্যা মামলার আসামি ফয়সালের মা হাসি বেগম আদালতে স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন, ১২ ডিসেম্বর আসামি ফয়সাল একটি কালো রঙের কাঁধের ব্যাগসহ তাঁর বোন জেসমিনের ভাড়া বাসায় আসেন। এ সময় বাড়ির দারোয়ান মাসুদ মোল্লা তিন-চারজন লোক নিয়ে জেসমিনের বাসার কলিং বেল চাপ দিলে আসামি ফয়সাল দরজার ছিদ্র দিয়ে লোকজন দেখে পুলিশ মনে করেন এবং তাঁর কাঁধের ব্যাগটি রান্নাঘরের জানালা দিয়ে নিচে ফেলে দেন।

ব্যাগটি বাসার মাঝখানে লোহার গ্রিলের ওপর গিয়ে পড়ে। পরে লোকজন চলে গেলে আসামি ফয়সালের আদেশে তাঁর মা ব্যাগটি তুলে নিয়ে আসেন।

আসামি ফয়সাল কিছু না বলে বাসা থেকে বের হয়ে অজ্ঞাত স্থানে চলে যান। পরে র‍্যাব-২ ১৫ ডিসেম্বর অভিযান চালিয়ে উক্ত বাসার মাঝখানে লোহার গ্রিলের ওপর থেকে একটি কালো রঙের ম্যাগাজিন, যার ভেতরে ছয়টি তাজা বুলেট ও একটি সিলভার কালারের ম্যাগাজিন, যার ভেতরে পাঁচটি তাজা বুলেট উদ্ধার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত উঠানে পড়ে রইল লাশ, সম্পত্তি নিয়ে ছেলেমেয়েদের ঝগড়া

কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি 
বাড়ির উঠানে লাশবাহী খাটিয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাড়ির উঠানে লাশবাহী খাটিয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে সম্পত্তির ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধের জেরে রুহুল আমিন নামের এক বৃদ্ধের লাশ দাফনে বাধা দিয়েছেন তাঁর ছেলেমেয়েরা। আজ সোমবার উপজেলার চরলরেন্স ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। আজ ভোরের দিকে সত্তরোর্ধ্ব রুহুল আমিন মারা যান। শেষপর্যন্ত পুলিশি হস্তক্ষেপে বিকেলে বৃদ্ধের লাশ দাফন করা হয়।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রুহুল আমিন দুই বিয়ে করেছেন। দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে সোহেল রুহুল আমিনের জমিজমা ভোগদখল করছেন। অন্যদিকে বাবার বিষয়সম্পত্তি থেকে প্রথম পক্ষের সন্তানেরা বঞ্চিত হয়েছেন। রুহুল আমিনের মৃত্যুর খবর শুনে প্রথম পক্ষের সন্তান মোফাশ্বেরা বেগম, নাসিমা আক্তার, শরীফসহ সবাই বাবার সম্পত্তির হিসাব চাইতে আসেন। সোহেল তাঁদের হুমকি-ধমকি দিয়ে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এলাকাবাসীর ভিড় জমে গেলে একপর্যায়ে লাশ ফেলে চলে যান সোহেল। অন্যদিকে সম্পত্তির হিসাব না পেলে লাশ দাফনে বাধা দিতে অনঢ় থাকেন প্রথম পক্ষের সন্তানেরা।

এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন, সিদ্দিক উল্যা ও শরিফ জানান, রুহুল আমিনের অনেক বিষয়সম্পত্তি ছিল। আগের সৎভাই-বোনদের কোনো সম্পত্তি না দিয়ে সবকিছু সোহেল দখল করে রেখেছেন। এ ছাড়া এলাকার কিছু মানুষের কাছে জমি বিক্রির টাকা নিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে দেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আজকের পত্রিকাকে সোহেল বলেন, ‘আমার বাবার কোনো সম্পত্তি আমার কাছে নাই। তারা যদি লাশ দাফন করতে না দেয়, আমার কোনো আপত্তি নাই।’

চরলরেন্স ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল খালেক বলেন, ‘লাশ দাফনে বাধার খবর শুনে এসে দেখি, মৃত রুহুল আমিনের দুই পরিবারের মধ্যে সম্পত্তির ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ চলছে। সোহেলের কাছে রুহুলের প্রথম ঘরের ছেলেমেয়েরা সম্পত্তির হিসাব চাইলে সে বসে বিষয়টি সমাধান করতে রাজি হয়নি।’

‎এ বিষয়ে কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদুল ইসলাম জানান, পুলিশি হস্তক্ষেপে বিকেল ৫টার দিকে লাশ দাফন করা হয়েছে। ‎

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত