Ajker Patrika

কার্ডিকন চট্টগ্রাম-২০২৫: দেশীয় চিকিৎসার ওপর আস্থা তৈরির তাগিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
৯টি দেশের ৫৫০ জনের বেশি হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞের অংশগ্রহণে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কার্ডিওভাসকুলার সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
৯টি দেশের ৫৫০ জনের বেশি হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞের অংশগ্রহণে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কার্ডিওভাসকুলার সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইউরোপ, আমেরিকা ও এশিয়ার ৯টি দেশের ৫৫০ জনের বেশি হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞের অংশগ্রহণে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কার্ডিওভাসকুলার সম্মেলন ‘কার্ডিকন চট্টগ্রাম-২০২৫’। চট্টগ্রাম সোসাইটি অব ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজির (সিএসআইসি) উদ্যোগে ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর নগরের রেডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে ভিউ হোটেলে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে হৃদ্‌রোগ চিকিৎসার আধুনিক প্রযুক্তি, গবেষণা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের পাশাপাশি দেশীয় চিকিৎসাব্যবস্থার ওপর আস্থা রাখার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।

‘শ্রেষ্ঠত্বের দিকে পদক্ষেপ’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত সম্মেলনে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা ১০০টির বেশি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন। কর্মসূচিতে ছিল স্টেট অব দ্য আর্ট লেকচার, প্লেনারি সেশন, হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ, ইকোকার্ডিওগ্রাফি ওয়ার্কশপ, ফেলোস কোর্স, ইসিজি সিম্পোজিয়াম, পোস্টার ও কেস ডিসকাশন (সিডি) উপস্থাপন।

সম্মেলনের সমাপনী ও গালা সেশনে সভাপতিত্ব করেন সিএসআইসি সভাপতি ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম চৌধুরী। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ওমর ফারুক ইউসুফ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাহাদাত হোসেন বলেন, দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার ওপর আস্থা না থাকায় প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক রোগী চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাচ্ছে। ফলে দেশের অর্থনীতি বড় অঙ্কের ক্ষতির মুখে পড়ছে। তিনি বলেন, ‘দেশে এখন এনজিওগ্রাম, এনজিওপ্লাস্টি, স্টেন্টিং, পেসমেকারসহ জটিল হৃদ্‌রোগ চিকিৎসা সফলভাবে হচ্ছে। মৃত্যুর হারও উল্লেখযোগ্য নয়। তারপরও রোগীরা ভারতসহ পার্শ্ববর্তী দেশে যাচ্ছেন, যা আমাদের জন্য উদ্বেগজনক।’

শাহাদাত হোসেন বলেন, রোগীর বিদেশমুখী প্রবণতা বন্ধ করা গেলে দেশে আধুনিক যন্ত্রপাতি, এমআরআই, কালার ডপলার, ক্যাথল্যাবসহ আরও উন্নত চিকিৎসা অবকাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব।

সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাড়াও পর্তুগাল, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান, নেপাল ও ভারত—এই ৯টি দেশের খ্যাতনামা হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। আন্তর্জাতিক বক্তাদের মধ্যে ছিলেন পর্তুগালের অধ্যাপক ফুয়াস্তু জে পিন্টো, ইতালির অধ্যাপক অ্যান্থোনিও কলোম্বো, যুক্তরাষ্ট্রের ডা. রফিক আহমেদ ও অধ্যাপক চৌধুরী এইচ আহসান, মালয়েশিয়ার অধ্যাপক সাজলি সাহলান বিন কাসিম, ভিয়েতনামের ডা. ফেম নাত মিনহ, পাকিস্তানের ডা. গোলাম হুসাইন সোমরু, নেপালের ডা. অরুণ মাসকেই এবং ভারতের অধ্যাপক অশোক শেঠসহ আরও অনেকে।

পাশাপাশি দেশের শীর্ষ হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞদের মধ্যে গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন ইউনাইটেড হাসপাতালের চিফ কনসালট্যান্ট এন এ এম মোমেনুজ্জামান, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের অধ্যাপক ফজিলা-তুন-নেছা মালিক, ইউনাইটেড হাসপাতালের অধ্যাপক মো. আফজালুর রহমান, এভারকেয়ার হাসপাতালের অধ্যাপক আতাহার আলী, এনআইসিভিডির সাবেক পরিচালক মীর জামাল উদ্দিন ও বর্তমান পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী।

এ ছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নাজমুল হোসাইন, বাংলাদেশ কার্ডিয়াক সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ শফিউদ্দিন, মেম্বার সেক্রেটারি অধ্যাপক এ এফ খবির উদ্দিন আহমেদ এবং বাংলাদেশ সোসাইটি অব কার্ডিওভাসকুলার ইন্টারভেনশনের সভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আসাদুজ্জামানসহ দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রতিনিধিরা সম্মেলনে অংশ নেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ