সোহেল মারমা, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী এলাকায় সাত দিন আগে নিখোঁজ হওয়া এক শিশুর (১১) বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় তাকে। ওই শিশুর বাসার কাছেই এসব ঘটনা ঘটলেও জানত না কেউ। এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের পর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্যের জানতে পারে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
আজ বুধবার ভোরে নগরীর পাহাড়তলী থানা এলাকার একটি পুকুরের পাড় থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় ওই শিশুর গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
শিশু হত্যার গ্রেপ্তার প্রধান অভিযুক্তের নাম রুবেল। তিনি ওই এলাকায় ভ্যান গাড়িতে করে সবজি বিক্রি করতেন। তিনি দুই সন্তানের জনক।
এর আগে ২১ মার্চ (মঙ্গলবার) বিকেলে বাসা থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয় ওই শিশু। ওই দিন পাহাড়তলী থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়।
শিশুর মরদেহ উদ্ধারের পর বুধবার পিবিআই চট্টমেট্রো কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা। এ সময় তিনি ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরেন।
যেভাবে অপহরণের পর ধর্ষণ চেষ্টা ও পরে হত্যা
নিখোঁজের পর গত ২৩ মার্চ ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করে পিবিআই। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ, ভুক্তভোগী শিশুটির পরিবারের তথ্য সবকিছু বিশ্লেষণ করে রুবেলকে শনাক্ত করা হয়। কয়েক দফা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের পর সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) তিনি শিশুটিকে অপহরণের পর হত্যার বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেন পিবিআইয়ের কাছে। পরে তাঁর দেখানো মতো পুকুর পাড় থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় শিশুর অর্ধগলিত বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার করে।
একই দিন সকালে পাহাড়তলী থানাধীন পোর্ট কানেকটিং রোডের একটি সিএনজি স্টেশনের সামনে নালা থেকে নিহত শিশুটির পরিধান করা স্যান্ডেল, কালো পায়জামা ও হিজাব উদ্ধার করা হয়।
পিবিআই সুপার জানান, তিন মাস আগে একটি বিড়াল ছানা ধরতে গিয়ে ওই শিশুকে রিকশার সঙ্গে ধাক্কা লাগার সময় আসামি রুবেল তাঁকে সাহায্য করেন। পরে মেয়েটির সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। এ সময় মেয়েটি রুবেলের কাছে একটি বিড়াল ছানা আবদার করে। রুবেলও তাঁর বোনের বাসা থেকে বিড়াল এনে দেবে বলে ওই শিশুকে জানান।
অপহরণের একদিন আগে ২০ মার্চ আবারও রুবেলের সঙ্গে ওই শিশুর দেখা হয়। তখন সে বিড়াল ছানার আবদার করে। রুবেল তাকে বিকেলে আসতে বলে। তাঁর কথামতো বিকেলে রুবেলের দেখানো জায়গায় যায় ওই শিশু। কিন্তু ওই দিন রুবেল যাননি সেখানে।
পরের দিন ২১ মার্চ স্কুলে যাওয়ার সময় আবার তাঁদের দেখা হলে রুবেল আবারও বিকেলে আগের জায়গায় তাঁকে আসতে বলে। এ সময় মেয়েটিকে বোরকা পরে আসার কথা বলেন রুবেল। কথামতো মেয়েটি রুবেলের দেখানো জায়গায় যায়। পরে রুবেল একই এলাকার একটি ভবনের চতুর্থ তলার একটি বাসায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন। এ সময় শিশুটি চিৎকার করলে তাকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে লাশটি ওই বাসায় রেখে রুবেল বেরিয়ে আসেন।
পরে এশার নামাজের সময় সুযোগ বুঝে ওই শিশুর লাশ বস্তাবন্দী করে তাঁর ভ্যানগাড়িতে করে নিয়ে ময়লা-আবর্জনায় ভরা ডোবায় ফেলে আসেন। আর একটি লাল ব্যাগে করে শিশুটির পরিহিত বোরকা ও স্যান্ডেল অন্য জায়গায় ফেলেন। এরপর প্রতিদিনই তিনি ওই দুই জায়গায় গিয়ে দেখে আসতেন। বস্তা যাতে দেখা না যায় এ জন্য উপড়ে খড় ছিটিয়ে রেখেছিলেন।
পুলিশ সুপার জানান, শিশুটি প্রতিদিন বিকেল ৪টায় স্থানীয় মাদ্রাসায় কোরআন শরিফ পড়তে যায়। সন্ধ্যা ৬টার আগেই বাসায় চলে আসে। ঘটনার দিন তাঁর পরিবারের লোকেরা জানত সে মাদ্রাসায় পড়তে গিয়েছে। ওই দিন শিশুটি বাসা থেকে বেরিয়ে অপহরণের ৪৫ মিনিটের মধ্যে সবকিছু ঘটেছিল।
অভিযুক্ত আসামি নিজেই খোঁজেন নিখোঁজ শিশুকে
নির্ধারিত সময়ে বাসায় না ফেরায় শিশুটির দাদি রুবেলকে ফোন করে বিষয়টি জানান। রুবেলকে আগে থেকেই চিনতেন তিনি। আর তাঁরা জানত বিড়াল ছানার জন্য ওই শিশু বিভিন্ন সময় রুবেলের কাছে আবদার করেছিল। এ ছাড়া বিকেল মাদ্রাসায় যাওয়ার সময় স্থানীয় একটি সিসিটিভি ফুটেজে ওই শিশুর সঙ্গে রুবেলের কথা বলতে দেখার পর তাঁরা রুবেলের ওপর সন্দেহ করেন।
এ সময় রুবেল নিজের অপরাধ আড়াল করতে নিজেই ওই শিশুর বাসায় যান। সেখানে তিনি তাঁদের পরিবারের সঙ্গে ওই শিশুকে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজতে থাকেন।
পুলিশ সুপার বলেন, সিসিটিভি ফুটেজে রুবেলের সঙ্গে ওই শিশুর কথা বলতে দেখা গেলেও এরপর থেকে সে একা কোথায় চলে গিয়েছিল এটার কোনো ফুটেজ পাওয়া যায়নি। এই কারণে রুবেলকে সন্দেহ করা যাচ্ছিল না। রুবেল এমন একটি কৌশলের আশ্রয় নিয়েছিল যে, যেখানে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা নেই, সেখানে মেয়েটিকে আসতে বলেন।
ব্যস্ততম সড়কের পাশে সাত দিন ধরে পড়েছিল শিশুর নিথর মরদেহ
পুকুর পার থেকে নিহত শিশুর বাড়ি আনুমানিক ৪০০ গজ দূরে। বস্তাবন্দী অবস্থায় শিশুটির মরদেহ সাত দিন ধরে পড়ে থাকলেও স্থানীয়রা কেউ জানত না।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, যে পুকুর পাড় থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয় সেটা একটি ছোট সড়কের পাশে। সেখানে স্থানীয়রা ময়লা আবর্জনা ফেলে থাকে। সড়কের পাশে এমন ময়লা স্তূপ দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এটার পাশ দিয়েই পথচারীদের চলাচল সব সময় রয়েছে।
স্থানীয় মাহফুজ নামে একজন বলেছেন, ‘ময়লা আবর্জনার স্তূপ হওয়ায় গন্ধ তো থাকবে। কে জানত এখানেই কোনো শিশুর লাশ থাকবে! সবাই এখানে এসে ময়লা ফেলে থাকে।’
শিশুটির বাসা থেকে আনুমানিক ৩০০ গজ দূরে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়
যে ভবনে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয় সেটি শিশুটির বাসা থেকে আনুমানিক ৩০০ গজ দূরে। পায়ে হেঁটে ওই ভবনটিতে যেতে এক থেকে দুই মিনিট লাগে। ওই বাসায় এক দম্পতি থাকেন। তাঁদের সঙ্গে রুবেলের দীর্ঘদিনের পরিচয় রয়েছে। বাসাটির ভাড়াটিয়া নাদিয়া দাবি করেন, ‘কয়েক দিনের জন্য আমরা ঢাকায় গিয়েছিলাম। যাওয়ার আগে বাসার চাবি রুবেলকে দিয়ে যায়। গত ২২ মার্চ আমরা ঢাকা থেকে বাসায় ফিরি।’
নাদিয়ার স্বামী বলেন, ‘রুবেল আমাদের বাসার বিভিন্ন কাজ কর্ম করত। আমি বাসার ভেতর কবুতর পালন করি। ঢাকায় যাওয়ার আগে রুবেলকে ৫০০ টাকা দিয়ে বাসায় থেকে কবুতর দেখাশোনা করে রাখার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু কে জানতে এই ধরনের ঘটনা ঘটাবে।’
ঘটনার দিন পিবিআইয়ের একটি দল ওই বাসায় গিয়ে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। এ সময় পিবিআই বাসা তল্লাশি করে বিছানায় রক্তের কিছু আলামত পায়।
নিখোঁজের দিনই রুবেলকে শনাক্ত করে থানায় জানালে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি
নিহত শিশুর ফুপু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওকে (নিহত শিশু) না পেয়ে আমরা পাহাড়তলী থানায় যাই। সেখানে থানার এসআই মনির ও এসআই দুলাল আমাদেরকে বলেন, ‘‘দেখেন মেয়েটি প্রেমে পড়ে কার সঙ্গে ভেগে গেছে।’ ’ এ সময় তাঁরা আরও নানান খারাপ কথা বলেন। পরে মামলা না নিয়ে জিডি নেওয়া হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ যদি তখনই বিষয়টি গুরুত্ব দিত তাহলে এই ধরনের ঘটনা ঘটতো না।’ এ সময় তিনি রুবেলের পাশাপাশি অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যেরও শাস্তি দাবি করেন।
নিহত শিশুর বাবা বলেন, ‘ঘটনাস্থলে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে রুবেলকে শনাক্ত করার পর আমরা থানায় বিষয়টি জানাই। কিন্তু থানা-পুলিশ দায়সারা আচরণ করেছে। তাঁরা রুবেলকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে পরে ছেড়ে দেয়। এভাবে কী কোনো তদন্ত হয়েছে? এখানে থানা-পুলিশের গাফিলতি রয়েছে।’
একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে শোকে পাথর মা
নিহতের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, বাসাটির ভেতরে ও সামনে শত শত মানুষের ভিড়। বাসার ভেতর শিশুটির মায়ের কান্নায় আশপাশের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন প্রতিবেশীরা। পরিবারের একমাত্র মেয়ের কথা বলতে বলতে একটু পর পর জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন তিনি।
এদিকে বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম জুয়েল দেবের আদালতে গ্রেপ্তার রুবেল ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি শেষে পরে তাঁকে আদালত কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক ইখতিয়ার উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী এলাকায় সাত দিন আগে নিখোঁজ হওয়া এক শিশুর (১১) বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় তাকে। ওই শিশুর বাসার কাছেই এসব ঘটনা ঘটলেও জানত না কেউ। এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের পর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্যের জানতে পারে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
আজ বুধবার ভোরে নগরীর পাহাড়তলী থানা এলাকার একটি পুকুরের পাড় থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় ওই শিশুর গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
শিশু হত্যার গ্রেপ্তার প্রধান অভিযুক্তের নাম রুবেল। তিনি ওই এলাকায় ভ্যান গাড়িতে করে সবজি বিক্রি করতেন। তিনি দুই সন্তানের জনক।
এর আগে ২১ মার্চ (মঙ্গলবার) বিকেলে বাসা থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয় ওই শিশু। ওই দিন পাহাড়তলী থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়।
শিশুর মরদেহ উদ্ধারের পর বুধবার পিবিআই চট্টমেট্রো কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা। এ সময় তিনি ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরেন।
যেভাবে অপহরণের পর ধর্ষণ চেষ্টা ও পরে হত্যা
নিখোঁজের পর গত ২৩ মার্চ ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করে পিবিআই। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ, ভুক্তভোগী শিশুটির পরিবারের তথ্য সবকিছু বিশ্লেষণ করে রুবেলকে শনাক্ত করা হয়। কয়েক দফা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের পর সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) তিনি শিশুটিকে অপহরণের পর হত্যার বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেন পিবিআইয়ের কাছে। পরে তাঁর দেখানো মতো পুকুর পাড় থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় শিশুর অর্ধগলিত বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার করে।
একই দিন সকালে পাহাড়তলী থানাধীন পোর্ট কানেকটিং রোডের একটি সিএনজি স্টেশনের সামনে নালা থেকে নিহত শিশুটির পরিধান করা স্যান্ডেল, কালো পায়জামা ও হিজাব উদ্ধার করা হয়।
পিবিআই সুপার জানান, তিন মাস আগে একটি বিড়াল ছানা ধরতে গিয়ে ওই শিশুকে রিকশার সঙ্গে ধাক্কা লাগার সময় আসামি রুবেল তাঁকে সাহায্য করেন। পরে মেয়েটির সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। এ সময় মেয়েটি রুবেলের কাছে একটি বিড়াল ছানা আবদার করে। রুবেলও তাঁর বোনের বাসা থেকে বিড়াল এনে দেবে বলে ওই শিশুকে জানান।
অপহরণের একদিন আগে ২০ মার্চ আবারও রুবেলের সঙ্গে ওই শিশুর দেখা হয়। তখন সে বিড়াল ছানার আবদার করে। রুবেল তাকে বিকেলে আসতে বলে। তাঁর কথামতো বিকেলে রুবেলের দেখানো জায়গায় যায় ওই শিশু। কিন্তু ওই দিন রুবেল যাননি সেখানে।
পরের দিন ২১ মার্চ স্কুলে যাওয়ার সময় আবার তাঁদের দেখা হলে রুবেল আবারও বিকেলে আগের জায়গায় তাঁকে আসতে বলে। এ সময় মেয়েটিকে বোরকা পরে আসার কথা বলেন রুবেল। কথামতো মেয়েটি রুবেলের দেখানো জায়গায় যায়। পরে রুবেল একই এলাকার একটি ভবনের চতুর্থ তলার একটি বাসায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন। এ সময় শিশুটি চিৎকার করলে তাকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে লাশটি ওই বাসায় রেখে রুবেল বেরিয়ে আসেন।
পরে এশার নামাজের সময় সুযোগ বুঝে ওই শিশুর লাশ বস্তাবন্দী করে তাঁর ভ্যানগাড়িতে করে নিয়ে ময়লা-আবর্জনায় ভরা ডোবায় ফেলে আসেন। আর একটি লাল ব্যাগে করে শিশুটির পরিহিত বোরকা ও স্যান্ডেল অন্য জায়গায় ফেলেন। এরপর প্রতিদিনই তিনি ওই দুই জায়গায় গিয়ে দেখে আসতেন। বস্তা যাতে দেখা না যায় এ জন্য উপড়ে খড় ছিটিয়ে রেখেছিলেন।
পুলিশ সুপার জানান, শিশুটি প্রতিদিন বিকেল ৪টায় স্থানীয় মাদ্রাসায় কোরআন শরিফ পড়তে যায়। সন্ধ্যা ৬টার আগেই বাসায় চলে আসে। ঘটনার দিন তাঁর পরিবারের লোকেরা জানত সে মাদ্রাসায় পড়তে গিয়েছে। ওই দিন শিশুটি বাসা থেকে বেরিয়ে অপহরণের ৪৫ মিনিটের মধ্যে সবকিছু ঘটেছিল।
অভিযুক্ত আসামি নিজেই খোঁজেন নিখোঁজ শিশুকে
নির্ধারিত সময়ে বাসায় না ফেরায় শিশুটির দাদি রুবেলকে ফোন করে বিষয়টি জানান। রুবেলকে আগে থেকেই চিনতেন তিনি। আর তাঁরা জানত বিড়াল ছানার জন্য ওই শিশু বিভিন্ন সময় রুবেলের কাছে আবদার করেছিল। এ ছাড়া বিকেল মাদ্রাসায় যাওয়ার সময় স্থানীয় একটি সিসিটিভি ফুটেজে ওই শিশুর সঙ্গে রুবেলের কথা বলতে দেখার পর তাঁরা রুবেলের ওপর সন্দেহ করেন।
এ সময় রুবেল নিজের অপরাধ আড়াল করতে নিজেই ওই শিশুর বাসায় যান। সেখানে তিনি তাঁদের পরিবারের সঙ্গে ওই শিশুকে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজতে থাকেন।
পুলিশ সুপার বলেন, সিসিটিভি ফুটেজে রুবেলের সঙ্গে ওই শিশুর কথা বলতে দেখা গেলেও এরপর থেকে সে একা কোথায় চলে গিয়েছিল এটার কোনো ফুটেজ পাওয়া যায়নি। এই কারণে রুবেলকে সন্দেহ করা যাচ্ছিল না। রুবেল এমন একটি কৌশলের আশ্রয় নিয়েছিল যে, যেখানে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা নেই, সেখানে মেয়েটিকে আসতে বলেন।
ব্যস্ততম সড়কের পাশে সাত দিন ধরে পড়েছিল শিশুর নিথর মরদেহ
পুকুর পার থেকে নিহত শিশুর বাড়ি আনুমানিক ৪০০ গজ দূরে। বস্তাবন্দী অবস্থায় শিশুটির মরদেহ সাত দিন ধরে পড়ে থাকলেও স্থানীয়রা কেউ জানত না।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, যে পুকুর পাড় থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয় সেটা একটি ছোট সড়কের পাশে। সেখানে স্থানীয়রা ময়লা আবর্জনা ফেলে থাকে। সড়কের পাশে এমন ময়লা স্তূপ দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এটার পাশ দিয়েই পথচারীদের চলাচল সব সময় রয়েছে।
স্থানীয় মাহফুজ নামে একজন বলেছেন, ‘ময়লা আবর্জনার স্তূপ হওয়ায় গন্ধ তো থাকবে। কে জানত এখানেই কোনো শিশুর লাশ থাকবে! সবাই এখানে এসে ময়লা ফেলে থাকে।’
শিশুটির বাসা থেকে আনুমানিক ৩০০ গজ দূরে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়
যে ভবনে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয় সেটি শিশুটির বাসা থেকে আনুমানিক ৩০০ গজ দূরে। পায়ে হেঁটে ওই ভবনটিতে যেতে এক থেকে দুই মিনিট লাগে। ওই বাসায় এক দম্পতি থাকেন। তাঁদের সঙ্গে রুবেলের দীর্ঘদিনের পরিচয় রয়েছে। বাসাটির ভাড়াটিয়া নাদিয়া দাবি করেন, ‘কয়েক দিনের জন্য আমরা ঢাকায় গিয়েছিলাম। যাওয়ার আগে বাসার চাবি রুবেলকে দিয়ে যায়। গত ২২ মার্চ আমরা ঢাকা থেকে বাসায় ফিরি।’
নাদিয়ার স্বামী বলেন, ‘রুবেল আমাদের বাসার বিভিন্ন কাজ কর্ম করত। আমি বাসার ভেতর কবুতর পালন করি। ঢাকায় যাওয়ার আগে রুবেলকে ৫০০ টাকা দিয়ে বাসায় থেকে কবুতর দেখাশোনা করে রাখার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু কে জানতে এই ধরনের ঘটনা ঘটাবে।’
ঘটনার দিন পিবিআইয়ের একটি দল ওই বাসায় গিয়ে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। এ সময় পিবিআই বাসা তল্লাশি করে বিছানায় রক্তের কিছু আলামত পায়।
নিখোঁজের দিনই রুবেলকে শনাক্ত করে থানায় জানালে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি
নিহত শিশুর ফুপু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওকে (নিহত শিশু) না পেয়ে আমরা পাহাড়তলী থানায় যাই। সেখানে থানার এসআই মনির ও এসআই দুলাল আমাদেরকে বলেন, ‘‘দেখেন মেয়েটি প্রেমে পড়ে কার সঙ্গে ভেগে গেছে।’ ’ এ সময় তাঁরা আরও নানান খারাপ কথা বলেন। পরে মামলা না নিয়ে জিডি নেওয়া হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ যদি তখনই বিষয়টি গুরুত্ব দিত তাহলে এই ধরনের ঘটনা ঘটতো না।’ এ সময় তিনি রুবেলের পাশাপাশি অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যেরও শাস্তি দাবি করেন।
নিহত শিশুর বাবা বলেন, ‘ঘটনাস্থলে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে রুবেলকে শনাক্ত করার পর আমরা থানায় বিষয়টি জানাই। কিন্তু থানা-পুলিশ দায়সারা আচরণ করেছে। তাঁরা রুবেলকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে পরে ছেড়ে দেয়। এভাবে কী কোনো তদন্ত হয়েছে? এখানে থানা-পুলিশের গাফিলতি রয়েছে।’
একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে শোকে পাথর মা
নিহতের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, বাসাটির ভেতরে ও সামনে শত শত মানুষের ভিড়। বাসার ভেতর শিশুটির মায়ের কান্নায় আশপাশের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন প্রতিবেশীরা। পরিবারের একমাত্র মেয়ের কথা বলতে বলতে একটু পর পর জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন তিনি।
এদিকে বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম জুয়েল দেবের আদালতে গ্রেপ্তার রুবেল ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি শেষে পরে তাঁকে আদালত কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক ইখতিয়ার উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
১৭ ঘণ্টা আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৪ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৬ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সাতটি মামলা রয়েছে। পুলিশ বলছে, ভবনটি বিস্ফোরক তৈরিতে ব্যবহৃত হতো।
আজ শনিবার দুপুরে সরেজমিন দেখা গেছে, হাসনাবাদ বাজারের ফলপট্টি গলিতে উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসা। মাদ্রাসায় শিশুদের পাঠদান করা হয়। বিস্ফোরণে চার কক্ষের একতলা ভবনটির পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষ সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে, সিঁড়ির পাশের ছাদের একাংশ উড়ে গেছে এবং সব কটি কক্ষের পিলার ও দেয়ালে ফাটল ধরেছে। ঘটনাস্থলে ককটেল, রাসায়নিক দ্রব্য ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগের ক্রাইম সিন ইউনিটের কর্মীরা আলামত সংগ্রহ করছেন। তাঁরা পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছেন। ভবনের পাশের একটি ভবনের দোতলার দেয়ালে বিস্ফোরণে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া বিস্ফোরণে পাশের একটি অটোরিকশার গ্যারেজের টিনের ছাউনি উড়ে গেছে। টিনের নিচে চাপা পড়েছিলেন গ্যারেজের ম্যানেজার আবুল কালাম।
আবুল কালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এত বিকট শব্দ হয়েছে যে আমার কানে তব্দা লেগে যায়। আমি টিনের নিচে চাপা পড়ি। পরে হামাগুড়ি দিয়ে বের হই। এরপর দেখি মাদ্রাসার মধ্যে আগুন জ্বলছে। যারা ভেতরে ছিল, তারা দ্রুত বাচ্চাদের নিয়ে বের হয়ে চলে যায়।’
গ্যারেজের মালিক মোশাররফ হোসেন ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘বিস্ফোরণের পর পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। আমিও বাসা থেকে দৌড়ে আসি। আমার গ্যারেজের দুজন অটোচালক দুই শিশুকে ওই ভবন থেকে বের করেন। এক নারী আর এক শিশুকে নিয়ে চলে যায়। এ সময় আল আমিনও দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। আধা ঘণ্টার মধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের লোকজন এসে পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়।’
মাদ্রাসার পাশের ৫ তলা বাড়ির বাসিন্দা মনোয়ার বলেন, ‘হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। মনে হয়েছিল ভূমিকম্প। কারণ, বিস্ফোরণে সব ভবনে কাঁপুনি লাগে। সবাই চিৎকার করেছিল।’
ওই বাসিন্দা আরও বলেন, ‘মাদ্রাসাটিতে ৩০-৩৫ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করত। তবে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় মাদ্রাসা বন্ধ ছিল। এ কারণে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।’
ভবনটির পশ্চিম পাশের এক পাশে তিনটি কক্ষে মাদ্রাসার কার্যক্রম পরিচালিত হতো। অপর পাশের একটি কক্ষে পরিচালক শেখ আল আমিন (৩২), তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম (২৮) এবং তাঁদের তিন সন্তান নিয়ে সেখানেই থাকতেন। বিস্ফোরণে দুই ছেলে উমায়েত (১০) ও আবদুল্লাহ (৭) আহত হয়। এর মধ্যে আছিয়া ও তাঁর দুই সন্তানকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
পাশের ভবনের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিস্ফোরণে আমাদের ভবনের কিছু অংশ ফেটে গেছে। ঘরের ভেতরের আসবাবও ভেঙে পড়েছে।’
ঘটনাস্থলেই পুলিশ হেফাজতে বসে ছিলেন ভবনমালিক পারভীন বেগম। ভবনের জমি তাঁর পৈতৃক সম্পত্তি। সেখানে লিবিয়ায় থাকা তাঁর দুই ছেলে এই ভবন ২০২২ সালে তৈরি করেন। এরপর হারুন অর রশীদ নামের এক ব্যক্তি এটি মাদ্রাসা করবেন বলে ১০ হাজার টাকায় ভাড়া নেন। পারভীন বেগম বলেন, ‘তিন বছর ধরে আমার বাড়ি ভাড়া নিয়ে মুফতি হারুন অর রশীদ মাদ্রাসা পরিচালনা করতেন। হারুন তাঁর শ্যালক আল আমিন ও শ্যালকের স্ত্রী আছিয়াকে মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব দেন। তিনি মাঝেমধ্যে মাদ্রাসায় আসতেন। আমি নিয়মিত খোঁজখবর নিতাম। কিন্তু মাদ্রাসার আড়ালে কী কার্যক্রম চলছিল, তা বুঝতে পারিনি। আজ এসে দেখি, ভবনের চারপাশ উড়ে গেছে।’
পারভীন বেগমের পাশেই ছিলেন তাঁর ছোট মেয়ে সোহানা। তিনি বলেন, ‘ভাড়া নেওয়ার সময় শুধু হারুন অর রশীদ একাই এসেছিলেন। এরপর তাঁরা মাদ্রাসা পরিচালনা শুরু করেন। তবে তাঁরা আশপাশের কারও সঙ্গে তেমন মিশতেন না।’
পুলিশ ভবনের ভেতর থেকে কেমিক্যাল, ককটেল, ভেস্ট ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস, কম্পিউটার ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, কোনো বিস্ফোরক তৈরি করতে গিয়ে বিস্ফোরিত হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে গতকাল বিকেলে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট শেখ আল আমিন পলাতক রয়েছেন। তবে কেরানীগঞ্জ থেকে তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম, আছিয়ার ভাই হারুনের স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার এবং ঢাকার বাসাবো থেকে আসমানী খাতুন নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, আল আমিনের গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটে। তাঁর বিরুদ্ধে এর আগে ২০১৭ ও ২০২০ সালে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন জেএমবির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকা এবং আশপাশের বিভিন্ন থানায় অন্তত সাতটি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার আসমানী খাতুনের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সাতটি মামলা রয়েছে। পুলিশ বলছে, ভবনটি বিস্ফোরক তৈরিতে ব্যবহৃত হতো।
আজ শনিবার দুপুরে সরেজমিন দেখা গেছে, হাসনাবাদ বাজারের ফলপট্টি গলিতে উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসা। মাদ্রাসায় শিশুদের পাঠদান করা হয়। বিস্ফোরণে চার কক্ষের একতলা ভবনটির পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষ সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে, সিঁড়ির পাশের ছাদের একাংশ উড়ে গেছে এবং সব কটি কক্ষের পিলার ও দেয়ালে ফাটল ধরেছে। ঘটনাস্থলে ককটেল, রাসায়নিক দ্রব্য ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগের ক্রাইম সিন ইউনিটের কর্মীরা আলামত সংগ্রহ করছেন। তাঁরা পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছেন। ভবনের পাশের একটি ভবনের দোতলার দেয়ালে বিস্ফোরণে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া বিস্ফোরণে পাশের একটি অটোরিকশার গ্যারেজের টিনের ছাউনি উড়ে গেছে। টিনের নিচে চাপা পড়েছিলেন গ্যারেজের ম্যানেজার আবুল কালাম।
আবুল কালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এত বিকট শব্দ হয়েছে যে আমার কানে তব্দা লেগে যায়। আমি টিনের নিচে চাপা পড়ি। পরে হামাগুড়ি দিয়ে বের হই। এরপর দেখি মাদ্রাসার মধ্যে আগুন জ্বলছে। যারা ভেতরে ছিল, তারা দ্রুত বাচ্চাদের নিয়ে বের হয়ে চলে যায়।’
গ্যারেজের মালিক মোশাররফ হোসেন ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘বিস্ফোরণের পর পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। আমিও বাসা থেকে দৌড়ে আসি। আমার গ্যারেজের দুজন অটোচালক দুই শিশুকে ওই ভবন থেকে বের করেন। এক নারী আর এক শিশুকে নিয়ে চলে যায়। এ সময় আল আমিনও দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। আধা ঘণ্টার মধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের লোকজন এসে পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়।’
মাদ্রাসার পাশের ৫ তলা বাড়ির বাসিন্দা মনোয়ার বলেন, ‘হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। মনে হয়েছিল ভূমিকম্প। কারণ, বিস্ফোরণে সব ভবনে কাঁপুনি লাগে। সবাই চিৎকার করেছিল।’
ওই বাসিন্দা আরও বলেন, ‘মাদ্রাসাটিতে ৩০-৩৫ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করত। তবে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় মাদ্রাসা বন্ধ ছিল। এ কারণে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।’
ভবনটির পশ্চিম পাশের এক পাশে তিনটি কক্ষে মাদ্রাসার কার্যক্রম পরিচালিত হতো। অপর পাশের একটি কক্ষে পরিচালক শেখ আল আমিন (৩২), তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম (২৮) এবং তাঁদের তিন সন্তান নিয়ে সেখানেই থাকতেন। বিস্ফোরণে দুই ছেলে উমায়েত (১০) ও আবদুল্লাহ (৭) আহত হয়। এর মধ্যে আছিয়া ও তাঁর দুই সন্তানকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
পাশের ভবনের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিস্ফোরণে আমাদের ভবনের কিছু অংশ ফেটে গেছে। ঘরের ভেতরের আসবাবও ভেঙে পড়েছে।’
ঘটনাস্থলেই পুলিশ হেফাজতে বসে ছিলেন ভবনমালিক পারভীন বেগম। ভবনের জমি তাঁর পৈতৃক সম্পত্তি। সেখানে লিবিয়ায় থাকা তাঁর দুই ছেলে এই ভবন ২০২২ সালে তৈরি করেন। এরপর হারুন অর রশীদ নামের এক ব্যক্তি এটি মাদ্রাসা করবেন বলে ১০ হাজার টাকায় ভাড়া নেন। পারভীন বেগম বলেন, ‘তিন বছর ধরে আমার বাড়ি ভাড়া নিয়ে মুফতি হারুন অর রশীদ মাদ্রাসা পরিচালনা করতেন। হারুন তাঁর শ্যালক আল আমিন ও শ্যালকের স্ত্রী আছিয়াকে মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব দেন। তিনি মাঝেমধ্যে মাদ্রাসায় আসতেন। আমি নিয়মিত খোঁজখবর নিতাম। কিন্তু মাদ্রাসার আড়ালে কী কার্যক্রম চলছিল, তা বুঝতে পারিনি। আজ এসে দেখি, ভবনের চারপাশ উড়ে গেছে।’
পারভীন বেগমের পাশেই ছিলেন তাঁর ছোট মেয়ে সোহানা। তিনি বলেন, ‘ভাড়া নেওয়ার সময় শুধু হারুন অর রশীদ একাই এসেছিলেন। এরপর তাঁরা মাদ্রাসা পরিচালনা শুরু করেন। তবে তাঁরা আশপাশের কারও সঙ্গে তেমন মিশতেন না।’
পুলিশ ভবনের ভেতর থেকে কেমিক্যাল, ককটেল, ভেস্ট ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস, কম্পিউটার ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, কোনো বিস্ফোরক তৈরি করতে গিয়ে বিস্ফোরিত হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে গতকাল বিকেলে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট শেখ আল আমিন পলাতক রয়েছেন। তবে কেরানীগঞ্জ থেকে তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম, আছিয়ার ভাই হারুনের স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার এবং ঢাকার বাসাবো থেকে আসমানী খাতুন নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, আল আমিনের গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটে। তাঁর বিরুদ্ধে এর আগে ২০১৭ ও ২০২০ সালে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন জেএমবির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকা এবং আশপাশের বিভিন্ন থানায় অন্তত সাতটি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার আসমানী খাতুনের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী এলাকায় সাত দিন আগে নিখোঁজ হওয়া এক শিশুর (১১) বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় তাকে। ওই শিশুর বাসার কাছেই এসব ঘটনা ঘটলেও জানত না কেউ। এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের পর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্যের জানতে পারে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশ
২৯ মার্চ ২০২৩
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৪ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৬ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এ সারা দেশে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৮টি মোটরসাইকেল ও ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ৩ হাজার ৩৯৪টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এ সারা দেশে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৮টি মোটরসাইকেল ও ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ৩ হাজার ৩৯৪টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী এলাকায় সাত দিন আগে নিখোঁজ হওয়া এক শিশুর (১১) বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় তাকে। ওই শিশুর বাসার কাছেই এসব ঘটনা ঘটলেও জানত না কেউ। এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের পর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্যের জানতে পারে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশ
২৯ মার্চ ২০২৩
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
১৭ ঘণ্টা আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৬ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী এলাকায় সাত দিন আগে নিখোঁজ হওয়া এক শিশুর (১১) বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় তাকে। ওই শিশুর বাসার কাছেই এসব ঘটনা ঘটলেও জানত না কেউ। এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের পর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্যের জানতে পারে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশ
২৯ মার্চ ২০২৩
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
১৭ ঘণ্টা আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৪ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী এলাকায় সাত দিন আগে নিখোঁজ হওয়া এক শিশুর (১১) বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় তাকে। ওই শিশুর বাসার কাছেই এসব ঘটনা ঘটলেও জানত না কেউ। এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের পর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্যের জানতে পারে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশ
২৯ মার্চ ২০২৩
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
১৭ ঘণ্টা আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৪ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৬ দিন আগে