রাশেদ নিজাম ও শাহীন শাহ টেকনাফ (কক্সবাজার) থেকে

কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ ধরে গেলে টেকনাফের শামলাপুর চেকপোস্ট, যেখানে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে। বাঁয়ে ঢুকলেই বাহারছড়া ইউনিয়ন, সেখানেই জাহাজপুরা পাহাড়। ওই পাহাড় পেরিয়ে পূর্ব দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং পাহাড়। এ দুই পাহাড়ের মাঝে ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার গহিন এলাকা।
গত চার মাসে ওই এলাকায় অপহরণ হয়েছে ২১ জন। এর বাইরে টেকনাফে দুটি ঘটনায় অপহৃত হয়েছে ১৭ রোহিঙ্গা। এই ৩৮ জনের মধ্যে ১১ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ২৬ জন ছাড়া পেয়েছেন মুক্তিপণ দিয়ে। টাকা না পাওয়ায় খুন হয়েছেন একজন। তবে মুক্তিপণের বিষয়টি স্বীকার করে না পুলিশ।
ধারাবাহিক অপহরণের ঘটনায় ওই পাহাড়ি এলাকা এখন স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে আতঙ্ক। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র বলছে, কয়েকটি গ্রুপ অপহরণের ঘটনা ঘটাচ্ছে। সশস্ত্র এসব দলে স্থানীয় লোকজনের পাশাপাশি রোহিঙ্গারাও রয়েছে। বেশির ভাগ ঘটনা ঘটছে টাকা আদায়ের জন্য। বেশির ভাগ ঘটনাতেই মামলা হয়নি।
গত ১৮ ডিসেম্বর টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজপুরার একটি পাহাড়ের পাদদেশ থেকে অপহৃত হন আটজন। তাঁদের বাড়ি জাহাজপুরা গ্রামে। ২৬ জানুয়ারি শিলখালী বনসংলগ্ন ওই গ্রামে আজকের পত্রিকার প্রতিবেদক গেলে তাঁদের ছয়জনের সঙ্গে কথা হয়। তাঁদের বাড়ি আধা কিলোমিটারের মধ্যে। জড়ো হন উৎসুক অনেকে।
অপহৃত ব্যক্তিরা জানান, একজন কলেজছাত্রসহ তাঁরা আটজন পাহাড়ের পাদদেশে খালে মাছ ধরতে গিয়ে অপহৃত হন। তিন দিন পর ৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিলে মুক্তি পান তাঁরা। এই আটজন হলেন রশিদ আহমদের ছেলে নুরুল আফসার, মমতাজ মিয়ার ছেলে মো. রেদোয়ান, রশিদ আহমদের ছেলে মোহাম্মদ উল্লাহ, কাদের হোসেনের ছেলে নুরুল হক, নুরুল হকের ছেলে নুর মোহাম্মদ, ছৈয়দ আমিরের ছেলে মোস্তফা কামাল ও করিম উল্লাহ এবং রুস্তম আলীর ছেলে সলিম উল্লাহ।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নুরুল আফসার বলেন, সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দেয় তাঁর পরিবার। সলিমউল্লাহ ১ লাখ ৯০ হাজার, মোহাম্মদউল্লাহ ৮০, নুরুল হক, রেদোয়ান ও মোস্তফা কামাল ৫০ হাজার করে এবং নুর মোহাম্মদ ২০ হাজার টাকায় ছাড়া পান। করিম উল্লাহর কাছে মোবাইল ফোন না থাকায় তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় মুক্তিপণ আদায় করতে পারেনি অপহরণকারীরা।
অপহৃত ব্যক্তিরা জানান, ভারী অস্ত্রধারী অপহরণকারীদের দলটিতে ২২ জন ছিল। তাদের তিনজন রোহিঙ্গা। তারা কালো ফুলহাতা টি-শার্ট, হ্যাট পরত। মুখে ছিল মাস্ক। সরদারকে মামা ডাকত। একবেলা খাবার দিত। টাকার জন্য সকাল-বিকেল দুই বেলা পেটানো হতো। প্রতিদিন এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে নিয়ে যেত। চারজনের পায়ে শিকল বেঁধে তালা মেরে ফেলে রাখা হতো। অপহরণ নিয়ে কোথায় কী সংবাদ এল, কী লাইভ হচ্ছে—পাহাড়ে বসেই দেখত অপহরণকারীরা। অপহৃত ব্যক্তিদের পরিবারের কেউ কড়া বক্তব্য দিলে তাঁকে বেশি পেটানো হতো।
ভুক্তভোগীরা জানান, তাঁরা মুক্তি পাওয়ার আগেই পুলিশের একটি দল পাহাড়ে অভিযান চালিয়েছিল। তবে যে উঁচু জায়গায় তাঁদের রাখা হয়েছিল, পুলিশ সেখানে পৌঁছাতে পারেনি। যে রাতে তাঁরা ফিরে আসেন, পরের দিন সকালে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ তাঁদের নিয়ে অপহরণের স্থানে গিয়েছিল।
তিনজন ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, মুক্তিপণ দিয়ে নয়, পুলিশ উদ্ধার করেছে না বলায় পুলিশ তাঁদের মারধর করে। তবে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক মো. মশিউর রহমান দাবি করেন, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।
৯ জানুয়ারি হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং গ্রাম থেকে অপহৃত চারজনের একজন ফজলুল করিমের ছেলে আবদুল হাকিম। তিনি জানান, চোখ বেঁধে পাহাড়ের আঁকাবাঁকা উঁচু-নিচু পথে দেড়-দুই ঘণ্টা হাঁটিয়ে তাঁকে নেওয়া হয় গহিনে। পরে হাত-পা বেঁধে চালানো হয় নির্যাতন। মুক্তিপণ দিয়ে পরদিন রাতে তিনি বাড়ি ফেরেন। সশস্ত্র ওই দলটিতে রোহিঙ্গাসহ ৩০ জন ছিল।
একই সময়ে অপহরণের শিকার আবদুর রহমানও জানান, পুলিশের তৎপরতা বাড়লে এবং গণমাধ্যমে বেশি সংবাদ প্রকাশ হলে নির্যাতনের মাত্রা বাড়ত। খাবারের ব্যবস্থা করার ধরন দেখে মনে হয়েছে, অপহরণকারীদের পরিচিতরা ওই সব পাহাড়ের আশপাশের।
১৩ জানুয়ারি কাজ দেওয়ার কথা বলে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চাকমারকুলের ২১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ছয় রোহিঙ্গাকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে জিম্মি করা হয়। পরে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পায় তারা। এ ঘটনায় চাকমারকুলের বাসিন্দা মো. বিল্লাল নামে এক অপহরণকারীকে আটকের তথ্য দিয়েছেন ১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মঞ্জুরুল ইসলাম।
একের পর এক অপহরণের ঘটনায় স্থানীয় লোকজন আতঙ্কে ভুগছেন বলে জানান হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী। তিনি বলেন, দুপাশ থেকে একসঙ্গে সাঁড়াশি অভিযান চালালে অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব। গহিন পাহাড়ে পুলিশ ভয়ে যেতে চায় না। অপহরণের ঘটনার সময় ছাড়া ওই সব এলাকায় পুলিশের নজরদারিও নেই। স্থানীয় ও রোহিঙ্গারা মিলে শক্তিশালী অপহরণ চক্র তৈরি করেছে। কয়েকটি গ্রুপে ভাগ হয়ে পাহাড়ের পূর্ব পাশের হ্নীলা, পশ্চিম পাশের বাহারছড়া ইউনিয়নে অপহরণ করছে।
কক্সবাজারের দুটি গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য বলছে, আগে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইয়াবা ও স্বর্ণ চোরাচালানে জড়িত রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে নিয়মিত মাসোহারা পেত ১০-১৪টি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীগোষ্ঠী। প্রায় দেড় বছর আগে রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানের মুখে তারা পাহাড়ে অবস্থান নেয়। অর্থ জোগাতে তারা স্থানীয় লোকজনের ঘরবাড়িতে লুটপাট ও অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ে নেমেছে। তবে এর নেতৃত্বে আছে স্থানীয় লোকজনই।
১২ জানুয়ারি নিখোঁজের পর ২১ জানুয়ারি টেকনাফে মোহাম্মদ নামে এক রাজমিস্ত্রির লাশ উদ্ধার হয়। তাঁর বাড়িও লেচুয়াপ্রাং গ্রামে। তাঁর বাবা বাদশা মিয়া জানান, দুই হাজার ইয়াবার জন্য তাঁর ছেলেকে খুন করেছে একটি চক্র। কয়েকজনকে চিহ্নিত করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। এ ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানায় বাহাড়ছড়া তদন্ত কেন্দ্র।
এদিকে ২৯ জানুয়ারি দুপুরে বাহারছড়ার শিলখালী পাহাড়ি এলাকায় কাঠ আনতে গিয়ে অপহৃত হন দক্ষিণ শিলখালী চৌকিদারপাড়ার নুরুল আমিনের ছেলে রহমত উল্লাহ (২৫) ও আলী আকবরের ছেলে আব্দুল হাফিজ (২০)। খবর পেয়ে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ স্থানীয় ইউপি সদস্য, কমিউনিটি পুলিশ, চৌকিদার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালিয়ে দুই ঘণ্টা পর তাঁদের উদ্ধার করে। তবে অপহরণকারীরা গহিন জঙ্গলে পালিয়ে যায়।
পুলিশ বলছে, অপহরণের বেশির ভাগ ঘটনাই লেনদেনের কারণে হচ্ছে। হয় মাদক, নয়তো চোরাচালান; দেনা-পাওনার ঘটনায় আটকে রেখে টাকা আদায়ের কৌশল বের করেছে স্থানীয় লোকজন। কম টাকায় কাজে লাগানো যায় বলে রোহিঙ্গাদের সম্পৃক্ত করা হচ্ছে।
জেলার শুধু একটি অংশে অপহরণের ঘটনা কেন–এমন প্রশ্নে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সহজে লুকানো যায় বলে সন্ত্রাসীরা পাহাড় বেছে নিয়েছে। ড্রোন দিয়েও সেখানে অনুসন্ধান করেছি। কিন্তু অবস্থান শনাক্ত করা দুরূহ। কয়েকটি গ্রুপের দলনেতার বিষয়ে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। তবে পাহাড়ে স্থানীয় মানুষের সহায়তা এবং সচেতনতা ছাড়া পুলিশের একার পক্ষে সফল হওয়া কষ্টকর।’ তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধে বেশি গুরুত্ব দিতে চাই। স্থানীয়দের নিয়ে বিট পুলিশিং এবং কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে অপহরণ রোধে কাজ করছি। সবাই যদি বিস্তারিত তথ্য দিয়ে সহায়তা করেন, তবে সন্ত্রাসীদের সহজেই আইনের আওতায় আনা যাবে।’

কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ ধরে গেলে টেকনাফের শামলাপুর চেকপোস্ট, যেখানে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে। বাঁয়ে ঢুকলেই বাহারছড়া ইউনিয়ন, সেখানেই জাহাজপুরা পাহাড়। ওই পাহাড় পেরিয়ে পূর্ব দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং পাহাড়। এ দুই পাহাড়ের মাঝে ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার গহিন এলাকা।
গত চার মাসে ওই এলাকায় অপহরণ হয়েছে ২১ জন। এর বাইরে টেকনাফে দুটি ঘটনায় অপহৃত হয়েছে ১৭ রোহিঙ্গা। এই ৩৮ জনের মধ্যে ১১ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ২৬ জন ছাড়া পেয়েছেন মুক্তিপণ দিয়ে। টাকা না পাওয়ায় খুন হয়েছেন একজন। তবে মুক্তিপণের বিষয়টি স্বীকার করে না পুলিশ।
ধারাবাহিক অপহরণের ঘটনায় ওই পাহাড়ি এলাকা এখন স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে আতঙ্ক। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র বলছে, কয়েকটি গ্রুপ অপহরণের ঘটনা ঘটাচ্ছে। সশস্ত্র এসব দলে স্থানীয় লোকজনের পাশাপাশি রোহিঙ্গারাও রয়েছে। বেশির ভাগ ঘটনা ঘটছে টাকা আদায়ের জন্য। বেশির ভাগ ঘটনাতেই মামলা হয়নি।
গত ১৮ ডিসেম্বর টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজপুরার একটি পাহাড়ের পাদদেশ থেকে অপহৃত হন আটজন। তাঁদের বাড়ি জাহাজপুরা গ্রামে। ২৬ জানুয়ারি শিলখালী বনসংলগ্ন ওই গ্রামে আজকের পত্রিকার প্রতিবেদক গেলে তাঁদের ছয়জনের সঙ্গে কথা হয়। তাঁদের বাড়ি আধা কিলোমিটারের মধ্যে। জড়ো হন উৎসুক অনেকে।
অপহৃত ব্যক্তিরা জানান, একজন কলেজছাত্রসহ তাঁরা আটজন পাহাড়ের পাদদেশে খালে মাছ ধরতে গিয়ে অপহৃত হন। তিন দিন পর ৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিলে মুক্তি পান তাঁরা। এই আটজন হলেন রশিদ আহমদের ছেলে নুরুল আফসার, মমতাজ মিয়ার ছেলে মো. রেদোয়ান, রশিদ আহমদের ছেলে মোহাম্মদ উল্লাহ, কাদের হোসেনের ছেলে নুরুল হক, নুরুল হকের ছেলে নুর মোহাম্মদ, ছৈয়দ আমিরের ছেলে মোস্তফা কামাল ও করিম উল্লাহ এবং রুস্তম আলীর ছেলে সলিম উল্লাহ।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নুরুল আফসার বলেন, সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দেয় তাঁর পরিবার। সলিমউল্লাহ ১ লাখ ৯০ হাজার, মোহাম্মদউল্লাহ ৮০, নুরুল হক, রেদোয়ান ও মোস্তফা কামাল ৫০ হাজার করে এবং নুর মোহাম্মদ ২০ হাজার টাকায় ছাড়া পান। করিম উল্লাহর কাছে মোবাইল ফোন না থাকায় তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় মুক্তিপণ আদায় করতে পারেনি অপহরণকারীরা।
অপহৃত ব্যক্তিরা জানান, ভারী অস্ত্রধারী অপহরণকারীদের দলটিতে ২২ জন ছিল। তাদের তিনজন রোহিঙ্গা। তারা কালো ফুলহাতা টি-শার্ট, হ্যাট পরত। মুখে ছিল মাস্ক। সরদারকে মামা ডাকত। একবেলা খাবার দিত। টাকার জন্য সকাল-বিকেল দুই বেলা পেটানো হতো। প্রতিদিন এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে নিয়ে যেত। চারজনের পায়ে শিকল বেঁধে তালা মেরে ফেলে রাখা হতো। অপহরণ নিয়ে কোথায় কী সংবাদ এল, কী লাইভ হচ্ছে—পাহাড়ে বসেই দেখত অপহরণকারীরা। অপহৃত ব্যক্তিদের পরিবারের কেউ কড়া বক্তব্য দিলে তাঁকে বেশি পেটানো হতো।
ভুক্তভোগীরা জানান, তাঁরা মুক্তি পাওয়ার আগেই পুলিশের একটি দল পাহাড়ে অভিযান চালিয়েছিল। তবে যে উঁচু জায়গায় তাঁদের রাখা হয়েছিল, পুলিশ সেখানে পৌঁছাতে পারেনি। যে রাতে তাঁরা ফিরে আসেন, পরের দিন সকালে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ তাঁদের নিয়ে অপহরণের স্থানে গিয়েছিল।
তিনজন ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, মুক্তিপণ দিয়ে নয়, পুলিশ উদ্ধার করেছে না বলায় পুলিশ তাঁদের মারধর করে। তবে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক মো. মশিউর রহমান দাবি করেন, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।
৯ জানুয়ারি হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং গ্রাম থেকে অপহৃত চারজনের একজন ফজলুল করিমের ছেলে আবদুল হাকিম। তিনি জানান, চোখ বেঁধে পাহাড়ের আঁকাবাঁকা উঁচু-নিচু পথে দেড়-দুই ঘণ্টা হাঁটিয়ে তাঁকে নেওয়া হয় গহিনে। পরে হাত-পা বেঁধে চালানো হয় নির্যাতন। মুক্তিপণ দিয়ে পরদিন রাতে তিনি বাড়ি ফেরেন। সশস্ত্র ওই দলটিতে রোহিঙ্গাসহ ৩০ জন ছিল।
একই সময়ে অপহরণের শিকার আবদুর রহমানও জানান, পুলিশের তৎপরতা বাড়লে এবং গণমাধ্যমে বেশি সংবাদ প্রকাশ হলে নির্যাতনের মাত্রা বাড়ত। খাবারের ব্যবস্থা করার ধরন দেখে মনে হয়েছে, অপহরণকারীদের পরিচিতরা ওই সব পাহাড়ের আশপাশের।
১৩ জানুয়ারি কাজ দেওয়ার কথা বলে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চাকমারকুলের ২১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ছয় রোহিঙ্গাকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে জিম্মি করা হয়। পরে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পায় তারা। এ ঘটনায় চাকমারকুলের বাসিন্দা মো. বিল্লাল নামে এক অপহরণকারীকে আটকের তথ্য দিয়েছেন ১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মঞ্জুরুল ইসলাম।
একের পর এক অপহরণের ঘটনায় স্থানীয় লোকজন আতঙ্কে ভুগছেন বলে জানান হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী। তিনি বলেন, দুপাশ থেকে একসঙ্গে সাঁড়াশি অভিযান চালালে অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব। গহিন পাহাড়ে পুলিশ ভয়ে যেতে চায় না। অপহরণের ঘটনার সময় ছাড়া ওই সব এলাকায় পুলিশের নজরদারিও নেই। স্থানীয় ও রোহিঙ্গারা মিলে শক্তিশালী অপহরণ চক্র তৈরি করেছে। কয়েকটি গ্রুপে ভাগ হয়ে পাহাড়ের পূর্ব পাশের হ্নীলা, পশ্চিম পাশের বাহারছড়া ইউনিয়নে অপহরণ করছে।
কক্সবাজারের দুটি গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য বলছে, আগে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইয়াবা ও স্বর্ণ চোরাচালানে জড়িত রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে নিয়মিত মাসোহারা পেত ১০-১৪টি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীগোষ্ঠী। প্রায় দেড় বছর আগে রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানের মুখে তারা পাহাড়ে অবস্থান নেয়। অর্থ জোগাতে তারা স্থানীয় লোকজনের ঘরবাড়িতে লুটপাট ও অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ে নেমেছে। তবে এর নেতৃত্বে আছে স্থানীয় লোকজনই।
১২ জানুয়ারি নিখোঁজের পর ২১ জানুয়ারি টেকনাফে মোহাম্মদ নামে এক রাজমিস্ত্রির লাশ উদ্ধার হয়। তাঁর বাড়িও লেচুয়াপ্রাং গ্রামে। তাঁর বাবা বাদশা মিয়া জানান, দুই হাজার ইয়াবার জন্য তাঁর ছেলেকে খুন করেছে একটি চক্র। কয়েকজনকে চিহ্নিত করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। এ ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানায় বাহাড়ছড়া তদন্ত কেন্দ্র।
এদিকে ২৯ জানুয়ারি দুপুরে বাহারছড়ার শিলখালী পাহাড়ি এলাকায় কাঠ আনতে গিয়ে অপহৃত হন দক্ষিণ শিলখালী চৌকিদারপাড়ার নুরুল আমিনের ছেলে রহমত উল্লাহ (২৫) ও আলী আকবরের ছেলে আব্দুল হাফিজ (২০)। খবর পেয়ে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ স্থানীয় ইউপি সদস্য, কমিউনিটি পুলিশ, চৌকিদার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালিয়ে দুই ঘণ্টা পর তাঁদের উদ্ধার করে। তবে অপহরণকারীরা গহিন জঙ্গলে পালিয়ে যায়।
পুলিশ বলছে, অপহরণের বেশির ভাগ ঘটনাই লেনদেনের কারণে হচ্ছে। হয় মাদক, নয়তো চোরাচালান; দেনা-পাওনার ঘটনায় আটকে রেখে টাকা আদায়ের কৌশল বের করেছে স্থানীয় লোকজন। কম টাকায় কাজে লাগানো যায় বলে রোহিঙ্গাদের সম্পৃক্ত করা হচ্ছে।
জেলার শুধু একটি অংশে অপহরণের ঘটনা কেন–এমন প্রশ্নে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সহজে লুকানো যায় বলে সন্ত্রাসীরা পাহাড় বেছে নিয়েছে। ড্রোন দিয়েও সেখানে অনুসন্ধান করেছি। কিন্তু অবস্থান শনাক্ত করা দুরূহ। কয়েকটি গ্রুপের দলনেতার বিষয়ে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। তবে পাহাড়ে স্থানীয় মানুষের সহায়তা এবং সচেতনতা ছাড়া পুলিশের একার পক্ষে সফল হওয়া কষ্টকর।’ তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধে বেশি গুরুত্ব দিতে চাই। স্থানীয়দের নিয়ে বিট পুলিশিং এবং কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে অপহরণ রোধে কাজ করছি। সবাই যদি বিস্তারিত তথ্য দিয়ে সহায়তা করেন, তবে সন্ত্রাসীদের সহজেই আইনের আওতায় আনা যাবে।’

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
১ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৪ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৬ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সাতটি মামলা রয়েছে। পুলিশ বলছে, ভবনটি বিস্ফোরক তৈরিতে ব্যবহৃত হতো।
আজ শনিবার দুপুরে সরেজমিন দেখা গেছে, হাসনাবাদ বাজারের ফলপট্টি গলিতে উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসা। মাদ্রাসায় শিশুদের পাঠদান করা হয়। বিস্ফোরণে চার কক্ষের একতলা ভবনটির পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষ সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে, সিঁড়ির পাশের ছাদের একাংশ উড়ে গেছে এবং সব কটি কক্ষের পিলার ও দেয়ালে ফাটল ধরেছে। ঘটনাস্থলে ককটেল, রাসায়নিক দ্রব্য ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগের ক্রাইম সিন ইউনিটের কর্মীরা আলামত সংগ্রহ করছেন। তাঁরা পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছেন। ভবনের পাশের একটি ভবনের দোতলার দেয়ালে বিস্ফোরণে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া বিস্ফোরণে পাশের একটি অটোরিকশার গ্যারেজের টিনের ছাউনি উড়ে গেছে। টিনের নিচে চাপা পড়েছিলেন গ্যারেজের ম্যানেজার আবুল কালাম।
আবুল কালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এত বিকট শব্দ হয়েছে যে আমার কানে তব্দা লেগে যায়। আমি টিনের নিচে চাপা পড়ি। পরে হামাগুড়ি দিয়ে বের হই। এরপর দেখি মাদ্রাসার মধ্যে আগুন জ্বলছে। যারা ভেতরে ছিল, তারা দ্রুত বাচ্চাদের নিয়ে বের হয়ে চলে যায়।’
গ্যারেজের মালিক মোশাররফ হোসেন ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘বিস্ফোরণের পর পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। আমিও বাসা থেকে দৌড়ে আসি। আমার গ্যারেজের দুজন অটোচালক দুই শিশুকে ওই ভবন থেকে বের করেন। এক নারী আর এক শিশুকে নিয়ে চলে যায়। এ সময় আল আমিনও দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। আধা ঘণ্টার মধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের লোকজন এসে পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়।’
মাদ্রাসার পাশের ৫ তলা বাড়ির বাসিন্দা মনোয়ার বলেন, ‘হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। মনে হয়েছিল ভূমিকম্প। কারণ, বিস্ফোরণে সব ভবনে কাঁপুনি লাগে। সবাই চিৎকার করেছিল।’
ওই বাসিন্দা আরও বলেন, ‘মাদ্রাসাটিতে ৩০-৩৫ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করত। তবে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় মাদ্রাসা বন্ধ ছিল। এ কারণে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।’
ভবনটির পশ্চিম পাশের এক পাশে তিনটি কক্ষে মাদ্রাসার কার্যক্রম পরিচালিত হতো। অপর পাশের একটি কক্ষে পরিচালক শেখ আল আমিন (৩২), তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম (২৮) এবং তাঁদের তিন সন্তান নিয়ে সেখানেই থাকতেন। বিস্ফোরণে দুই ছেলে উমায়েত (১০) ও আবদুল্লাহ (৭) আহত হয়। এর মধ্যে আছিয়া ও তাঁর দুই সন্তানকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
পাশের ভবনের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিস্ফোরণে আমাদের ভবনের কিছু অংশ ফেটে গেছে। ঘরের ভেতরের আসবাবও ভেঙে পড়েছে।’
ঘটনাস্থলেই পুলিশ হেফাজতে বসে ছিলেন ভবনমালিক পারভীন বেগম। ভবনের জমি তাঁর পৈতৃক সম্পত্তি। সেখানে লিবিয়ায় থাকা তাঁর দুই ছেলে এই ভবন ২০২২ সালে তৈরি করেন। এরপর হারুন অর রশীদ নামের এক ব্যক্তি এটি মাদ্রাসা করবেন বলে ১০ হাজার টাকায় ভাড়া নেন। পারভীন বেগম বলেন, ‘তিন বছর ধরে আমার বাড়ি ভাড়া নিয়ে মুফতি হারুন অর রশীদ মাদ্রাসা পরিচালনা করতেন। হারুন তাঁর শ্যালক আল আমিন ও শ্যালকের স্ত্রী আছিয়াকে মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব দেন। তিনি মাঝেমধ্যে মাদ্রাসায় আসতেন। আমি নিয়মিত খোঁজখবর নিতাম। কিন্তু মাদ্রাসার আড়ালে কী কার্যক্রম চলছিল, তা বুঝতে পারিনি। আজ এসে দেখি, ভবনের চারপাশ উড়ে গেছে।’
পারভীন বেগমের পাশেই ছিলেন তাঁর ছোট মেয়ে সোহানা। তিনি বলেন, ‘ভাড়া নেওয়ার সময় শুধু হারুন অর রশীদ একাই এসেছিলেন। এরপর তাঁরা মাদ্রাসা পরিচালনা শুরু করেন। তবে তাঁরা আশপাশের কারও সঙ্গে তেমন মিশতেন না।’
পুলিশ ভবনের ভেতর থেকে কেমিক্যাল, ককটেল, ভেস্ট ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস, কম্পিউটার ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, কোনো বিস্ফোরক তৈরি করতে গিয়ে বিস্ফোরিত হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে গতকাল বিকেলে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট শেখ আল আমিন পলাতক রয়েছেন। তবে কেরানীগঞ্জ থেকে তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম, আছিয়ার ভাই হারুনের স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার এবং ঢাকার বাসাবো থেকে আসমানী খাতুন নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, আল আমিনের গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটে। তাঁর বিরুদ্ধে এর আগে ২০১৭ ও ২০২০ সালে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন জেএমবির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকা এবং আশপাশের বিভিন্ন থানায় অন্তত সাতটি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার আসমানী খাতুনের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সাতটি মামলা রয়েছে। পুলিশ বলছে, ভবনটি বিস্ফোরক তৈরিতে ব্যবহৃত হতো।
আজ শনিবার দুপুরে সরেজমিন দেখা গেছে, হাসনাবাদ বাজারের ফলপট্টি গলিতে উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসা। মাদ্রাসায় শিশুদের পাঠদান করা হয়। বিস্ফোরণে চার কক্ষের একতলা ভবনটির পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষ সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে, সিঁড়ির পাশের ছাদের একাংশ উড়ে গেছে এবং সব কটি কক্ষের পিলার ও দেয়ালে ফাটল ধরেছে। ঘটনাস্থলে ককটেল, রাসায়নিক দ্রব্য ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগের ক্রাইম সিন ইউনিটের কর্মীরা আলামত সংগ্রহ করছেন। তাঁরা পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছেন। ভবনের পাশের একটি ভবনের দোতলার দেয়ালে বিস্ফোরণে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া বিস্ফোরণে পাশের একটি অটোরিকশার গ্যারেজের টিনের ছাউনি উড়ে গেছে। টিনের নিচে চাপা পড়েছিলেন গ্যারেজের ম্যানেজার আবুল কালাম।
আবুল কালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এত বিকট শব্দ হয়েছে যে আমার কানে তব্দা লেগে যায়। আমি টিনের নিচে চাপা পড়ি। পরে হামাগুড়ি দিয়ে বের হই। এরপর দেখি মাদ্রাসার মধ্যে আগুন জ্বলছে। যারা ভেতরে ছিল, তারা দ্রুত বাচ্চাদের নিয়ে বের হয়ে চলে যায়।’
গ্যারেজের মালিক মোশাররফ হোসেন ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘বিস্ফোরণের পর পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। আমিও বাসা থেকে দৌড়ে আসি। আমার গ্যারেজের দুজন অটোচালক দুই শিশুকে ওই ভবন থেকে বের করেন। এক নারী আর এক শিশুকে নিয়ে চলে যায়। এ সময় আল আমিনও দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। আধা ঘণ্টার মধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের লোকজন এসে পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়।’
মাদ্রাসার পাশের ৫ তলা বাড়ির বাসিন্দা মনোয়ার বলেন, ‘হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। মনে হয়েছিল ভূমিকম্প। কারণ, বিস্ফোরণে সব ভবনে কাঁপুনি লাগে। সবাই চিৎকার করেছিল।’
ওই বাসিন্দা আরও বলেন, ‘মাদ্রাসাটিতে ৩০-৩৫ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করত। তবে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় মাদ্রাসা বন্ধ ছিল। এ কারণে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।’
ভবনটির পশ্চিম পাশের এক পাশে তিনটি কক্ষে মাদ্রাসার কার্যক্রম পরিচালিত হতো। অপর পাশের একটি কক্ষে পরিচালক শেখ আল আমিন (৩২), তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম (২৮) এবং তাঁদের তিন সন্তান নিয়ে সেখানেই থাকতেন। বিস্ফোরণে দুই ছেলে উমায়েত (১০) ও আবদুল্লাহ (৭) আহত হয়। এর মধ্যে আছিয়া ও তাঁর দুই সন্তানকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
পাশের ভবনের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিস্ফোরণে আমাদের ভবনের কিছু অংশ ফেটে গেছে। ঘরের ভেতরের আসবাবও ভেঙে পড়েছে।’
ঘটনাস্থলেই পুলিশ হেফাজতে বসে ছিলেন ভবনমালিক পারভীন বেগম। ভবনের জমি তাঁর পৈতৃক সম্পত্তি। সেখানে লিবিয়ায় থাকা তাঁর দুই ছেলে এই ভবন ২০২২ সালে তৈরি করেন। এরপর হারুন অর রশীদ নামের এক ব্যক্তি এটি মাদ্রাসা করবেন বলে ১০ হাজার টাকায় ভাড়া নেন। পারভীন বেগম বলেন, ‘তিন বছর ধরে আমার বাড়ি ভাড়া নিয়ে মুফতি হারুন অর রশীদ মাদ্রাসা পরিচালনা করতেন। হারুন তাঁর শ্যালক আল আমিন ও শ্যালকের স্ত্রী আছিয়াকে মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব দেন। তিনি মাঝেমধ্যে মাদ্রাসায় আসতেন। আমি নিয়মিত খোঁজখবর নিতাম। কিন্তু মাদ্রাসার আড়ালে কী কার্যক্রম চলছিল, তা বুঝতে পারিনি। আজ এসে দেখি, ভবনের চারপাশ উড়ে গেছে।’
পারভীন বেগমের পাশেই ছিলেন তাঁর ছোট মেয়ে সোহানা। তিনি বলেন, ‘ভাড়া নেওয়ার সময় শুধু হারুন অর রশীদ একাই এসেছিলেন। এরপর তাঁরা মাদ্রাসা পরিচালনা শুরু করেন। তবে তাঁরা আশপাশের কারও সঙ্গে তেমন মিশতেন না।’
পুলিশ ভবনের ভেতর থেকে কেমিক্যাল, ককটেল, ভেস্ট ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস, কম্পিউটার ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, কোনো বিস্ফোরক তৈরি করতে গিয়ে বিস্ফোরিত হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে গতকাল বিকেলে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট শেখ আল আমিন পলাতক রয়েছেন। তবে কেরানীগঞ্জ থেকে তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম, আছিয়ার ভাই হারুনের স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার এবং ঢাকার বাসাবো থেকে আসমানী খাতুন নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, আল আমিনের গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটে। তাঁর বিরুদ্ধে এর আগে ২০১৭ ও ২০২০ সালে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন জেএমবির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকা এবং আশপাশের বিভিন্ন থানায় অন্তত সাতটি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার আসমানী খাতুনের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ ধরে গেলে টেকনাফের শামলাপুর চেকপোস্ট, যেখানে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে। বাঁয়ে ঢুকলেই বাহারছড়া ইউনিয়ন, সেখানেই জাহাজপুরা পাহাড়। ওই পাহাড় পেরিয়ে পূর্ব দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং পাহাড়। এ দুই পাহাড়ের
৩১ জানুয়ারি ২০২৩
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৪ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৬ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এ সারা দেশে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৮টি মোটরসাইকেল ও ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ৩ হাজার ৩৯৪টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এ সারা দেশে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৮টি মোটরসাইকেল ও ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ৩ হাজার ৩৯৪টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ ধরে গেলে টেকনাফের শামলাপুর চেকপোস্ট, যেখানে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে। বাঁয়ে ঢুকলেই বাহারছড়া ইউনিয়ন, সেখানেই জাহাজপুরা পাহাড়। ওই পাহাড় পেরিয়ে পূর্ব দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং পাহাড়। এ দুই পাহাড়ের
৩১ জানুয়ারি ২০২৩
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
১ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৬ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ ধরে গেলে টেকনাফের শামলাপুর চেকপোস্ট, যেখানে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে। বাঁয়ে ঢুকলেই বাহারছড়া ইউনিয়ন, সেখানেই জাহাজপুরা পাহাড়। ওই পাহাড় পেরিয়ে পূর্ব দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং পাহাড়। এ দুই পাহাড়ের
৩১ জানুয়ারি ২০২৩
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
১ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৪ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ ধরে গেলে টেকনাফের শামলাপুর চেকপোস্ট, যেখানে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে। বাঁয়ে ঢুকলেই বাহারছড়া ইউনিয়ন, সেখানেই জাহাজপুরা পাহাড়। ওই পাহাড় পেরিয়ে পূর্ব দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং পাহাড়। এ দুই পাহাড়ের
৩১ জানুয়ারি ২০২৩
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
১ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৪ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৬ দিন আগে