কামরুল হাসান

পোস্তগোলা এলাকার ভূস্বামী ছিলেন মনু মিয়া। মূল সড়কের পাশে তাঁর বিশাল বাড়ি। লোকে বলত মনু জমিদারের বাড়ি। মনু মিয়ার ছয় ছেলে। তাঁদের বউয়েরা এবং ছেলে-মেয়েরা থাকেন এ বাড়িতে। বাড়িতে ঢোকার পথ অনেকটা দুর্গের ফটকের মতো।
একদিন গভীর রাতে সেই বাড়িতে শুরু হলো গোলাগুলি। একটি-দুটি নয়, শত শত, হাজার হাজার। বৃষ্টির মতো গুলির শব্দে কেঁপে উঠল পুরো এলাকা। ঘণ্টা দুয়েক ধরে চলল।
এত গোলাগুলির শব্দে এলাকার মানুষের ঘুম উবে গেল। স্বাভাবিকভাবে ক্রাইম রিপোর্টারদের মোবাইল ফোনও গরম হয়ে উঠল। কী হচ্ছে তা বুঝে উঠতে উঠতে ভোর হয়ে গেল।
মোটরবাইক নিয়ে ছুটলাম পোস্তগোলার দিকে। স্বামীবাগ-দয়াগঞ্জ বিশাল সড়কটি তখনো হয়নি। পোস্তগোলায় যেতে হতো লক্ষ্মীবাজার হয়ে অথবা সায়েদাবাদ পার হয়ে পোস্তগোলা ব্রিজ বাঁ হাতে রেখে।
২০০০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বুধবারের ভোর। যখন পৌঁছালাম, লোকজন তখন ফজরের নামাজ শেষে বের হয়েছেন। মনু জমিদারের বাড়ির সামনে উৎসুক মানুষের ভিড় বাড়ছে। ভিড় ঠেলে সামনে গিয়ে দেখি গোটা দশেক পুলিশের গাড়ি, সবই গোয়েন্দা পুলিশের। ‘ডিবি’ লেখা জ্যাকেটের প্রচলন তখনো শুরু হয়নি, ডিবির পুলিশ সদস্যরা সাদাপোশাকে অপারেশনে যেতেন। সেখানে দেখি অনেকে আবার বুলেটপ্রুফ জ্যাকেটও পরে আছেন। এটা কোন টিম? প্রশ্ন করতেই মুখচেনা এক পুলিশ সদস্য বললেন, এসি তানভীর স্যারের। দূরে দাঁড়িয়ে ডিবির তৎকালীন এসি তানভীর হায়দার চৌধুরী (বর্তমানে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি) নির্দেশনা দিচ্ছেন। তাঁর কাছে গিয়ে জানতে চাইলাম কী হয়েছে। তিনি বললেন, যা বলার, ডিসি স্যার বলবেন। ডিবিতে তখন একজনই ডিসি–মুক্তিযোদ্ধা ব্যাচের মুহাম্মদ আবদুল হান্নান।
ঘটনাস্থলের একটু দূরে দেখি, রাস্তার এক পাশে ওয়াকিটকি হাতে দাঁড়িয়ে শ্যামপুর থানার ওসি আবদুর রাজ্জাক। তিনি বললেন, রাতভর এ বাড়ি থেকে পুলিশের সঙ্গেই গোলাগুলি হয়েছে। বাড়ির ভেতরে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে, একজন মারাও গেছে। যিনি মারা গেছেন তাঁর নাম সুমন, মনু জমিদারের ছোট ছেলে। গোলাগুলি থামার পর পুরো বাড়ি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। এখন ঘরে ঘরে তল্লাশি চলছে।
ওসিকে বললাম, বাড়ির ভেতরে যেতে চাই। তিনি আমাকে নিয়ে ভেতরে গেলেন। দেখি পুরো বাড়ি পুলিশে ভরা। একটি কক্ষে পুলিশের সঙ্গে সুদর্শন এক যুবক তর্ক করছেন। সাংবাদিক পরিচয় দিতে সেই যুবক এগিয়ে এসে বললেন, তাঁর নাম মোহাম্মদ শাহাদত, এ বাড়ির মালিকের তৃতীয় ছেলে। ঘরভর্তি পুলিশের সামনেই তিনি অভিযোগ করলেন, বিনা কারণে পুলিশ তাঁর বাড়ি লক্ষ্য করে রাতভর গুলি ছুড়েছে। সেই গুলিতে তাঁর ছোট ভাই সুমন মারা গেছে, আরেক ভাই শামিম ও ভাতিজা তুলি আহত হয়েছে। দেখলাম পুলিশ সদস্যদের কেউ তাঁর কথা গ্রাহ্য করছেন না। কিন্তু তিনি বারবার অভিযোগ করেই যাচ্ছেন।
বাড়ির ভেতরটা ভালো করে দেখলাম, এত যে গুলি হয়েছে, তার তেমন কোনো চিহ্ন নেই। মনে হলো পুলিশ সদস্যদের বেশির ভাগ শূন্যে গুলি ছুড়েছেন। শাহাদত বললেন, তিনি জানালা দিয়ে দেখেছেন, রাতে পুলিশের সঙ্গে আবুল, ইবন ও জাকির নামের তিনজন সন্ত্রাসীও ছিল। তারাও গুলি করেছে। সেই তিনজন কারা? প্রশ্ন করতেই তিনি বললেন, এরা কালা জাহাঙ্গীরের সহযোগী। শাহাদতের মুখে কালা জাহাঙ্গীরের নাম শুনে মনে হলো, পেছনে বড় ঘটনা আছে। কালা জাহাঙ্গীর তখন ঢাকা আন্ডারওয়ার্ল্ডের ‘অদৃশ্য ডন’। একের পর এক খুন করে যাচ্ছেন, কিন্তু পুলিশ তাঁকে ধরতে পারছে না।
সকাল নয়টার দিকে ঘটনাস্থলে এলেন ডিবির তখনকার ডিসি মুহাম্মদ আবদুল হান্নান। তিনি এসে সব খোলাসা করলেন। বললেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী আসিফ তাঁর দলবল নিয়ে মনু জমিদারের বাড়িতে অবস্থান করছেন জেনেই তাঁরা অভিযান করেছেন, কিন্তু আসিফকে তাঁরা ধরতে পারেননি। ডিসি জোর দিয়ে বললেন, দুদিন ধরে তাঁরা বাড়িটি রেকি করেছিলেন। ৮ ফেব্রুয়ারি (২০০০ সাল) রাত নয়টার দিকে আসিফ তাঁর দলবল নিয়ে এ বাড়িতে আসেন। এ খবর নিশ্চিত হওয়ার পর রাত তিনটার দিকে তাঁরা অভিযান শুরু করেন। তাঁরা নিশ্চিত ছিলেন, এ বাড়িতে শীর্ষ সন্ত্রাসী আসিফ ছিলেন। কিন্তু অভিযানের সময় সুযোগ বুঝে পেছনের দরজা দিয়ে দলবল নিয়ে পালিয়ে গেছেন। তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমও সাংবাদিকদের একই কথা বলেছিলেন।
মনু জমিদারের পরিবার এলাকায় অনেক প্রভাবশালী। পুলিশের গুলিতে সুমন নিহত হওয়ার পর এলাকায় বেশ উত্তেজনা দেখা দেয়। পরের দিন লোকজন বিক্ষোভ মিছিল করে। পুরো পোস্তগোলায় দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়। আমাদেরও কাজ বেড়ে গেল। পোস্তগোলায় এসে লোকজনের সঙ্গে কথা বলতেই বেরিয়ে এল অনেক তথ্য।
মনু মিয়ার যে সুদর্শন সন্তানের কথা বললাম, সেই শাহাদত সেবার ওয়ার্ড কমিশনার পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। এতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সেখানকার প্রভাবশালী ওয়ার্ড কমিশনার সাইদুর রহমান ওরফে শহীদ কমিশনার নিজের আধিপত্য ধরে রাখতে চান। স্বাভাবিকভাবেই শাহাদত নির্বাচনে আসুন, তা তিনি চান না। শাহাদত যেখানে যান, সেখানেই তিনি লোক পাঠিয়ে গোলযোগ করার চেষ্টা করেন। এ রকম গোলযোগের সময় বাবু নামের এক যুবক নিহত হন। সেই মামলায় শাহাদতকে প্রধান আসামি করা হয়। শাহাদত আদালত থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় অবস্থান করছেন।
লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, জামিনে এসে শাহাদত শীর্ষ সন্ত্রাসী আসিফের সঙ্গে সমঝোতায় এসেছেন। আসিফের লোকজন দিনরাত তাঁকে চোখে চোখে রাখছে, যাতে শহীদ কমিশনারের সন্ত্রাসীরা ছুঁতে না পারে। শহীদ কমিশনারও কম নন, তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গীরকে আশ্রয় দিয়েছেন। কালা জাহাঙ্গীর এখন তাঁর হয়ে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
শাহাদতের বাড়িতে পুলিশি অভিযানের পর কালা জাহাঙ্গীরের সুবিধা হয়েছে। আসিফ তাঁর দলবল নিয়ে পোস্তগোলা ছেড়ে খিলগাঁওয়ে আস্তানা গেড়েছে। এতে করে কালা জাহাঙ্গীরের পুরান ঢাকায় আশ্রয় আরও নিরাপদ হয়েছে। আসিফ অনেকবার পুরান ঢাকায় ঢোকার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। আন্ডারওয়ার্ল্ডে এ নিয়ে অনেক দেনদরবার হয়েছে, কিন্তু লাভ হয়নি। একপর্যায়ে আসিফের আস্তানার খোঁজে মরিয়া হয়ে ওঠেন কালা জাহাঙ্গীর।
এ জন্য তাঁকে বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয়নি। ছয় মাসের মাথায় আসিফের এক বান্ধবীকে খুঁজে বের করেন কালা জাহাঙ্গীর। তাঁর সাহায্য নিয়ে একদিন আসিফের বাসায় হানা দেয় কালা জাহাঙ্গীরের দলবল। তারা আসিফ, তাঁর বডিগার্ড টিপু ও রিপনকে খুন করে দরজায় তালা দিয়ে সটকে পড়ে। ২০০০ সালের ২৯ আগস্ট সেই বাসা থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ার পর পুলিশ লাশের সন্ধান পায়। কিন্তু তারপরও কালা জাহাঙ্গীর শান্ত থাকতে পারেননি। আসিফ খুনের এক মাসের মাথায় ২০০০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আদালত চত্বরে প্রকাশ্যে খুন করেন হুমায়ুন কবির মিলন ওরফে মুরগি মিলনকে।
এসব ঘটনার পরে শাহাদত খুব সতর্ক হয়ে চলাফেরা করতে শুরু করেন। তিনি কালা জাহাঙ্গীরের সব তৎপরতা নজরে রাখেন। বিএনপির তৎকালীন মেয়র সাদেক হোসেন খোকা বিভিন্নভাবে শাহাদতকে সহায়তা করেন। একসময় বিপুল ভোটে ওয়ার্ড কমিশনার হিসেবে শাহাদত নির্বাচিত হন। তারপরও কালা জাহাঙ্গীর তাঁর পিছু ছাড়েননি। ২০০২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর উত্তরার একটি স্কুলে ছেলেকে দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বিমানবন্দর সড়কে গাড়িতে গুলি করে শাহাদতকে খুন করেন কালা জাহাঙ্গীর। এরপর জনকণ্ঠ অফিসে ফোন করে সেই খুনের কথা স্বীকার করেন। কিন্তু প্রতিপক্ষদের এভাবে হত্যা করেও বাঁচতে পারেননি ভয়ংকর কালা জাহাঙ্গীর। ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁর মা পেয়ারা বেগম র্যাব সদর দপ্তরে হাজির হয়ে বলেন, তাঁর ছেলে কালা জাহাঙ্গীর ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। এর পর থেকেই আন্ডারওয়ার্ল্ডে কালা জাহাঙ্গীরের তৎপরতা থেমে যায়। এরপর তাঁর আশ্রয়দাতা সেই শহীদ কমিশনারও একটি মামলায় ফাঁসির দণ্ডাদেশ নিয়ে পলাতক হন।
শাহাদত খুনের মামলার শেষ পর্যন্ত কোনো বিচার হয়নি। কালা জাহাঙ্গীরের ভয়ে কেউ আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাননি। আদালত একপর্যায়ে আসামিদের অব্যাহতি দেন।
শাহাদতের তিন ছেলে লেখাপড়া শেষ করে পরিবারের হাল ধরেছেন। তাঁরা এখন ব্যস্ত নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে। আজকের ‘আষাঢ়ে নয়’ লেখার আগে ফোন করেছিলাম শাহাদতের আইনজীবী ও স্বজন রফিকুল ইসলামকে। তিনি বললেন, অন্ধকার জগতের সব আঁধার কেটে গেছে। শাহাদতের পরিবার এখন আলোতে, তাঁরা ভালোই আছেন।
আরও পড়ুন:

পোস্তগোলা এলাকার ভূস্বামী ছিলেন মনু মিয়া। মূল সড়কের পাশে তাঁর বিশাল বাড়ি। লোকে বলত মনু জমিদারের বাড়ি। মনু মিয়ার ছয় ছেলে। তাঁদের বউয়েরা এবং ছেলে-মেয়েরা থাকেন এ বাড়িতে। বাড়িতে ঢোকার পথ অনেকটা দুর্গের ফটকের মতো।
একদিন গভীর রাতে সেই বাড়িতে শুরু হলো গোলাগুলি। একটি-দুটি নয়, শত শত, হাজার হাজার। বৃষ্টির মতো গুলির শব্দে কেঁপে উঠল পুরো এলাকা। ঘণ্টা দুয়েক ধরে চলল।
এত গোলাগুলির শব্দে এলাকার মানুষের ঘুম উবে গেল। স্বাভাবিকভাবে ক্রাইম রিপোর্টারদের মোবাইল ফোনও গরম হয়ে উঠল। কী হচ্ছে তা বুঝে উঠতে উঠতে ভোর হয়ে গেল।
মোটরবাইক নিয়ে ছুটলাম পোস্তগোলার দিকে। স্বামীবাগ-দয়াগঞ্জ বিশাল সড়কটি তখনো হয়নি। পোস্তগোলায় যেতে হতো লক্ষ্মীবাজার হয়ে অথবা সায়েদাবাদ পার হয়ে পোস্তগোলা ব্রিজ বাঁ হাতে রেখে।
২০০০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বুধবারের ভোর। যখন পৌঁছালাম, লোকজন তখন ফজরের নামাজ শেষে বের হয়েছেন। মনু জমিদারের বাড়ির সামনে উৎসুক মানুষের ভিড় বাড়ছে। ভিড় ঠেলে সামনে গিয়ে দেখি গোটা দশেক পুলিশের গাড়ি, সবই গোয়েন্দা পুলিশের। ‘ডিবি’ লেখা জ্যাকেটের প্রচলন তখনো শুরু হয়নি, ডিবির পুলিশ সদস্যরা সাদাপোশাকে অপারেশনে যেতেন। সেখানে দেখি অনেকে আবার বুলেটপ্রুফ জ্যাকেটও পরে আছেন। এটা কোন টিম? প্রশ্ন করতেই মুখচেনা এক পুলিশ সদস্য বললেন, এসি তানভীর স্যারের। দূরে দাঁড়িয়ে ডিবির তৎকালীন এসি তানভীর হায়দার চৌধুরী (বর্তমানে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি) নির্দেশনা দিচ্ছেন। তাঁর কাছে গিয়ে জানতে চাইলাম কী হয়েছে। তিনি বললেন, যা বলার, ডিসি স্যার বলবেন। ডিবিতে তখন একজনই ডিসি–মুক্তিযোদ্ধা ব্যাচের মুহাম্মদ আবদুল হান্নান।
ঘটনাস্থলের একটু দূরে দেখি, রাস্তার এক পাশে ওয়াকিটকি হাতে দাঁড়িয়ে শ্যামপুর থানার ওসি আবদুর রাজ্জাক। তিনি বললেন, রাতভর এ বাড়ি থেকে পুলিশের সঙ্গেই গোলাগুলি হয়েছে। বাড়ির ভেতরে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে, একজন মারাও গেছে। যিনি মারা গেছেন তাঁর নাম সুমন, মনু জমিদারের ছোট ছেলে। গোলাগুলি থামার পর পুরো বাড়ি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। এখন ঘরে ঘরে তল্লাশি চলছে।
ওসিকে বললাম, বাড়ির ভেতরে যেতে চাই। তিনি আমাকে নিয়ে ভেতরে গেলেন। দেখি পুরো বাড়ি পুলিশে ভরা। একটি কক্ষে পুলিশের সঙ্গে সুদর্শন এক যুবক তর্ক করছেন। সাংবাদিক পরিচয় দিতে সেই যুবক এগিয়ে এসে বললেন, তাঁর নাম মোহাম্মদ শাহাদত, এ বাড়ির মালিকের তৃতীয় ছেলে। ঘরভর্তি পুলিশের সামনেই তিনি অভিযোগ করলেন, বিনা কারণে পুলিশ তাঁর বাড়ি লক্ষ্য করে রাতভর গুলি ছুড়েছে। সেই গুলিতে তাঁর ছোট ভাই সুমন মারা গেছে, আরেক ভাই শামিম ও ভাতিজা তুলি আহত হয়েছে। দেখলাম পুলিশ সদস্যদের কেউ তাঁর কথা গ্রাহ্য করছেন না। কিন্তু তিনি বারবার অভিযোগ করেই যাচ্ছেন।
বাড়ির ভেতরটা ভালো করে দেখলাম, এত যে গুলি হয়েছে, তার তেমন কোনো চিহ্ন নেই। মনে হলো পুলিশ সদস্যদের বেশির ভাগ শূন্যে গুলি ছুড়েছেন। শাহাদত বললেন, তিনি জানালা দিয়ে দেখেছেন, রাতে পুলিশের সঙ্গে আবুল, ইবন ও জাকির নামের তিনজন সন্ত্রাসীও ছিল। তারাও গুলি করেছে। সেই তিনজন কারা? প্রশ্ন করতেই তিনি বললেন, এরা কালা জাহাঙ্গীরের সহযোগী। শাহাদতের মুখে কালা জাহাঙ্গীরের নাম শুনে মনে হলো, পেছনে বড় ঘটনা আছে। কালা জাহাঙ্গীর তখন ঢাকা আন্ডারওয়ার্ল্ডের ‘অদৃশ্য ডন’। একের পর এক খুন করে যাচ্ছেন, কিন্তু পুলিশ তাঁকে ধরতে পারছে না।
সকাল নয়টার দিকে ঘটনাস্থলে এলেন ডিবির তখনকার ডিসি মুহাম্মদ আবদুল হান্নান। তিনি এসে সব খোলাসা করলেন। বললেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী আসিফ তাঁর দলবল নিয়ে মনু জমিদারের বাড়িতে অবস্থান করছেন জেনেই তাঁরা অভিযান করেছেন, কিন্তু আসিফকে তাঁরা ধরতে পারেননি। ডিসি জোর দিয়ে বললেন, দুদিন ধরে তাঁরা বাড়িটি রেকি করেছিলেন। ৮ ফেব্রুয়ারি (২০০০ সাল) রাত নয়টার দিকে আসিফ তাঁর দলবল নিয়ে এ বাড়িতে আসেন। এ খবর নিশ্চিত হওয়ার পর রাত তিনটার দিকে তাঁরা অভিযান শুরু করেন। তাঁরা নিশ্চিত ছিলেন, এ বাড়িতে শীর্ষ সন্ত্রাসী আসিফ ছিলেন। কিন্তু অভিযানের সময় সুযোগ বুঝে পেছনের দরজা দিয়ে দলবল নিয়ে পালিয়ে গেছেন। তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমও সাংবাদিকদের একই কথা বলেছিলেন।
মনু জমিদারের পরিবার এলাকায় অনেক প্রভাবশালী। পুলিশের গুলিতে সুমন নিহত হওয়ার পর এলাকায় বেশ উত্তেজনা দেখা দেয়। পরের দিন লোকজন বিক্ষোভ মিছিল করে। পুরো পোস্তগোলায় দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়। আমাদেরও কাজ বেড়ে গেল। পোস্তগোলায় এসে লোকজনের সঙ্গে কথা বলতেই বেরিয়ে এল অনেক তথ্য।
মনু মিয়ার যে সুদর্শন সন্তানের কথা বললাম, সেই শাহাদত সেবার ওয়ার্ড কমিশনার পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। এতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সেখানকার প্রভাবশালী ওয়ার্ড কমিশনার সাইদুর রহমান ওরফে শহীদ কমিশনার নিজের আধিপত্য ধরে রাখতে চান। স্বাভাবিকভাবেই শাহাদত নির্বাচনে আসুন, তা তিনি চান না। শাহাদত যেখানে যান, সেখানেই তিনি লোক পাঠিয়ে গোলযোগ করার চেষ্টা করেন। এ রকম গোলযোগের সময় বাবু নামের এক যুবক নিহত হন। সেই মামলায় শাহাদতকে প্রধান আসামি করা হয়। শাহাদত আদালত থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় অবস্থান করছেন।
লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, জামিনে এসে শাহাদত শীর্ষ সন্ত্রাসী আসিফের সঙ্গে সমঝোতায় এসেছেন। আসিফের লোকজন দিনরাত তাঁকে চোখে চোখে রাখছে, যাতে শহীদ কমিশনারের সন্ত্রাসীরা ছুঁতে না পারে। শহীদ কমিশনারও কম নন, তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গীরকে আশ্রয় দিয়েছেন। কালা জাহাঙ্গীর এখন তাঁর হয়ে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
শাহাদতের বাড়িতে পুলিশি অভিযানের পর কালা জাহাঙ্গীরের সুবিধা হয়েছে। আসিফ তাঁর দলবল নিয়ে পোস্তগোলা ছেড়ে খিলগাঁওয়ে আস্তানা গেড়েছে। এতে করে কালা জাহাঙ্গীরের পুরান ঢাকায় আশ্রয় আরও নিরাপদ হয়েছে। আসিফ অনেকবার পুরান ঢাকায় ঢোকার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। আন্ডারওয়ার্ল্ডে এ নিয়ে অনেক দেনদরবার হয়েছে, কিন্তু লাভ হয়নি। একপর্যায়ে আসিফের আস্তানার খোঁজে মরিয়া হয়ে ওঠেন কালা জাহাঙ্গীর।
এ জন্য তাঁকে বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয়নি। ছয় মাসের মাথায় আসিফের এক বান্ধবীকে খুঁজে বের করেন কালা জাহাঙ্গীর। তাঁর সাহায্য নিয়ে একদিন আসিফের বাসায় হানা দেয় কালা জাহাঙ্গীরের দলবল। তারা আসিফ, তাঁর বডিগার্ড টিপু ও রিপনকে খুন করে দরজায় তালা দিয়ে সটকে পড়ে। ২০০০ সালের ২৯ আগস্ট সেই বাসা থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ার পর পুলিশ লাশের সন্ধান পায়। কিন্তু তারপরও কালা জাহাঙ্গীর শান্ত থাকতে পারেননি। আসিফ খুনের এক মাসের মাথায় ২০০০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আদালত চত্বরে প্রকাশ্যে খুন করেন হুমায়ুন কবির মিলন ওরফে মুরগি মিলনকে।
এসব ঘটনার পরে শাহাদত খুব সতর্ক হয়ে চলাফেরা করতে শুরু করেন। তিনি কালা জাহাঙ্গীরের সব তৎপরতা নজরে রাখেন। বিএনপির তৎকালীন মেয়র সাদেক হোসেন খোকা বিভিন্নভাবে শাহাদতকে সহায়তা করেন। একসময় বিপুল ভোটে ওয়ার্ড কমিশনার হিসেবে শাহাদত নির্বাচিত হন। তারপরও কালা জাহাঙ্গীর তাঁর পিছু ছাড়েননি। ২০০২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর উত্তরার একটি স্কুলে ছেলেকে দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বিমানবন্দর সড়কে গাড়িতে গুলি করে শাহাদতকে খুন করেন কালা জাহাঙ্গীর। এরপর জনকণ্ঠ অফিসে ফোন করে সেই খুনের কথা স্বীকার করেন। কিন্তু প্রতিপক্ষদের এভাবে হত্যা করেও বাঁচতে পারেননি ভয়ংকর কালা জাহাঙ্গীর। ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁর মা পেয়ারা বেগম র্যাব সদর দপ্তরে হাজির হয়ে বলেন, তাঁর ছেলে কালা জাহাঙ্গীর ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। এর পর থেকেই আন্ডারওয়ার্ল্ডে কালা জাহাঙ্গীরের তৎপরতা থেমে যায়। এরপর তাঁর আশ্রয়দাতা সেই শহীদ কমিশনারও একটি মামলায় ফাঁসির দণ্ডাদেশ নিয়ে পলাতক হন।
শাহাদত খুনের মামলার শেষ পর্যন্ত কোনো বিচার হয়নি। কালা জাহাঙ্গীরের ভয়ে কেউ আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাননি। আদালত একপর্যায়ে আসামিদের অব্যাহতি দেন।
শাহাদতের তিন ছেলে লেখাপড়া শেষ করে পরিবারের হাল ধরেছেন। তাঁরা এখন ব্যস্ত নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে। আজকের ‘আষাঢ়ে নয়’ লেখার আগে ফোন করেছিলাম শাহাদতের আইনজীবী ও স্বজন রফিকুল ইসলামকে। তিনি বললেন, অন্ধকার জগতের সব আঁধার কেটে গেছে। শাহাদতের পরিবার এখন আলোতে, তাঁরা ভালোই আছেন।
আরও পড়ুন:

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
২ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৩ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৩ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এ সারা দেশে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৮টি মোটরসাইকেল ও ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ৩ হাজার ৩৯৪টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এ সারা দেশে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৮টি মোটরসাইকেল ও ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ৩ হাজার ৩৯৪টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

পোস্তগোলা এলাকার ভূস্বামী ছিলেন মনু মিয়া। মূল সড়কের পাশে তাঁর বিশাল বাড়ি। লোকে বলত মনু জমিদারের বাড়ি। মনু মিয়ার ছয় ছেলে। তাঁদের বউয়েরা এবং ছেলে-মেয়েরা থাকেন এ বাড়িতে। বাড়িতে ঢোকার পথ অনেকটা দুর্গের ফটকের মতো।
০২ জুলাই ২০২২
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৩ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৩ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

পোস্তগোলা এলাকার ভূস্বামী ছিলেন মনু মিয়া। মূল সড়কের পাশে তাঁর বিশাল বাড়ি। লোকে বলত মনু জমিদারের বাড়ি। মনু মিয়ার ছয় ছেলে। তাঁদের বউয়েরা এবং ছেলে-মেয়েরা থাকেন এ বাড়িতে। বাড়িতে ঢোকার পথ অনেকটা দুর্গের ফটকের মতো।
০২ জুলাই ২০২২
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
২ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৩ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

পোস্তগোলা এলাকার ভূস্বামী ছিলেন মনু মিয়া। মূল সড়কের পাশে তাঁর বিশাল বাড়ি। লোকে বলত মনু জমিদারের বাড়ি। মনু মিয়ার ছয় ছেলে। তাঁদের বউয়েরা এবং ছেলে-মেয়েরা থাকেন এ বাড়িতে। বাড়িতে ঢোকার পথ অনেকটা দুর্গের ফটকের মতো।
০২ জুলাই ২০২২
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
২ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৩ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

পোস্তগোলা এলাকার ভূস্বামী ছিলেন মনু মিয়া। মূল সড়কের পাশে তাঁর বিশাল বাড়ি। লোকে বলত মনু জমিদারের বাড়ি। মনু মিয়ার ছয় ছেলে। তাঁদের বউয়েরা এবং ছেলে-মেয়েরা থাকেন এ বাড়িতে। বাড়িতে ঢোকার পথ অনেকটা দুর্গের ফটকের মতো।
০২ জুলাই ২০২২
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
২ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৩ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৩ দিন আগে