Ajker Patrika

আশা দিল না ড. ইউনূসের বৈঠক, আবার পতন পুঁজিবাজারে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৫ মে ২০২৫, ০০: ২৮
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

লাগাতার দরপতনে ধসে পড়া পুঁজিবাজার নিয়ে গত রোববার বৈঠক ডেকেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আশায় বুক বেঁধেছিলেন বিনিয়োগকারীরা; তবে বৈঠক শেষে আশাহত হয়েছেন তাঁরা।

বিশ্লেষক ও পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার গত ৯ মাসে পুঁজিবাজার স্থিতিশীল করার ক্ষেত্রে কার্যকর কিছু দেখাতে পারেনি। এরপরও প্রধান উপদষ্টো যখন পুঁজিবাজার নিয়ে বৈঠকের উদ্যোগ নিলেন, তখন সবার ভেতরে আশা জেগেছিল, ভালো কিছু হবে। কিন্তু যেভাবে, যাঁদের নিয়ে তিনি বৈঠক করলেন এবং যেসব নির্দেশনা দিলেন, তাতে সবাই হতাশ হয়েছেন। বিনিয়োগকারীদের মনে আস্থাহীনতার মেঘ আরও গাঢ় হয়েছে, যার প্রভাব দেখা গেছে গতকাল মঙ্গলবারের লেনদেনে।

এদিন প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক কমেছে প্রায় ১ শতাংশ। প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪৬ দশমিক ৯৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৯৫ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৮৭৪ পয়েন্টে। লেনদেন হয়েছে সাড়ে তিন শ কোটি টাকার কম।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেরও (সিএসই) হাল একই। সার্বিক সূচক কমেছে প্রায় ৩৭ পয়েন্ট। আর লেনদেন ছিল সাত কোটি টাকার ঘরে।

এর আগে রোববার পুঁজিবাজার নিয়ে বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে ৫টি নির্দেশনা আসে। এগুলো হলো—সরকারি কোম্পানি তালিকাভুক্ত করা, দেশি-বিদেশি বড় কোম্পানি তালিকাভুক্ত করা, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, ব্যাংকনির্ভরতা কমিয়ে বন্ডের মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে পুঁজির জোগান এবং বিদেশি বিশেষজ্ঞ (ফরেন এক্সপার্ট) এনে ৩ মাসে পুঁজিবাজার সংস্কার করা।

পুঁজিবাজারের চলমান সংকটের প্রেক্ষাপটে এসব নির্দেশনা কী কাজে দেবে, তা নিয়ে অংশীজনদের মাঝে বিস্তৃতভাবে সংশয় দেখা গেছে। কেউ কেউ এসব সিদ্ধান্তকে হাস্যকর বলেছেন। পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে যেসব নির্দেশনা এসেছে, তার কোনোটিই নতুন নয়। আর বিদেশি থেকে বিশেষজ্ঞ আনার সিদ্ধান্তের কোনো যৌক্তিকতা নেই; বরং দেশের পুঁজিবাজারের অংশীজনদের সঙ্গে নিয়ে সুপরিকল্পিত ও অংশগ্রহণমূলক সংস্কার প্রক্রিয়ায় সব সমস্যার সমাধান সম্ভব। কিন্তু সে বিষয়ে কোনো নির্দেশনা এল না।

একটি ব্রোকারেজ হাউসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘১৯৯৫ সালে একটি আধুনিক স্টক এক্সচেঞ্জ হিসেবে সিএসই প্রতিষ্ঠা করা গিয়েছিল। এখন পুঁজিবাজার সংস্কারে বিদেশি লাগবে কেন? আমাদের কি মেধা নেই? সেই মেধার চর্চা কি আমরা করেছি?’

বিনিয়োগকারী, বিশ্লেষক, বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানসহ পুঁজিবাজারের সব অংশীজনের মতে, পুঁজিবাজার সংস্কারের ক্ষেত্রে ভুল পথে হাঁটছে সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ আনার প্রয়োজন নেই। দরকার কৌশল পরিবর্তনের।

একটি ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অংশীজনদের বাদ দিয়েই সংস্কার কর্মপরিচালনা করছেন বিএসইসি চেয়ারম্যান। তাঁর কথাতেই সরকার প্রেসক্রিপশন দিচ্ছে। ফলে কোনো কাজই হচ্ছে না। এর প্রতিফলন হচ্ছে, পুঁজিবাজারে ভয়াবহ পরিস্থিতি। অংশীজনদের বাদ দিয়ে যে বাজারের কোনো উন্নতি করা যাবে না, সেটার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে বাজারে।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি মার্চেন্ট ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ড. ইউনূসের পুঁজিবাজার-সংক্রান্ত সভার পরও যখন বাজার নেতিবাচক, বিনিয়োগকারীদের আস্থা নেতিবাচক, তখন বুঝতে হবে যে এটা পুঁজিবাজারের জন্য দীর্ঘমেয়াদি খারাপ বার্তা বহন করে।’

বিনিয়োগকারী সানী মাহমুদ আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর ১৫ বছরের অপশাসন থেকে রক্ষা পেয়ে আশায় বুক বেঁধেছিলাম আমরা বিনিয়োগকারীরা। ভেবেছিলাম, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি প্রভাবমুক্ত, এবার পুঁজিবাজার ভালো হবে; কিন্তু কিছুই হয়নি। নিয়ন্ত্রক সংস্থা অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলাই ফেরাতে পারেনি। তাহলে পুঁজিবাজার ভালো হওয়া তো দূরে থাক, এই কমিশনের দ্বারা কিছুই সম্ভব নয়।’

বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশনের ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না অংশীজনেরা। তাঁরা বলছেন, অংশীজন, বিনিয়োগকারী, সাংবাদিক—কারও সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই কমিশনের। তাঁরা সবার থেকে বিচ্ছিন্ন। সবার থেকে দূরত্ব তৈরি করে রেখেছেন। এভাবে পুঁজিবাজারে উন্নয়ন সম্ভব নয়।

এ বিষয়ে বিনিয়োগকারী মুক্তাদির আহমেদ বলেন, ‘আগে লুটপাট হলেও আমরা অন্তত নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছ থেকে তাদের কার্যক্রমগুলো জানতে পারতাম। এখন সেটাও জানতে পারি না। একদম অন্ধকারে থাকি। এই কমিশন পদত্যাগ করলেই পুঁজিবাজার ঠিক হয়ে যাবে। তাঁদের ওপর কারোরই আস্থা নেই। তাঁরা পুঁজিবাজারও বোঝেন না। এমন অবস্থায় কোনো ভালো কোম্পানিই পুঁজিবাজারে আসতে চাইবে না।’

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যু

বন্ধ সব পোশাক কারখানা, ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর শোক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বন্ধ সব পোশাক কারখানা, ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর শোক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আগামীকাল বুধবার দেশের সব পোশাক কারখানা বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়েছে পোশাকমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। আজ মঙ্গলবার পোশাকমালিকদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এই অনুরোধ জানানো হয়। একই সঙ্গে জানাজার আগপর্যন্ত দেশের বিপণিবিতানগুলো বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি।

চিঠিতে বিজিএমইএ বলে, ‘দেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সরকার তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ও এক দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। সরকারের এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করে বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত সব পোশাকশিল্প কারখানায় আগামীকাল বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) এক দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।’

পৃথক বিবৃতিতে বিজিএমইএ বলেছে, বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত সব পোশাকশিল্প প্রতিষ্ঠানে আগামীকাল এক দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দীনের স্বাক্ষর করা এক চিঠিতে খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে সারা দেশের বিপণিবিতান ও দোকানপাট বন্ধ রাখার অনুরোধ জানানো হয়।

ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর শোক

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বিজিএমইএ ছাড়াও শোক জানিয়েছে দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই), ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), টেক্সটাইল মিলের মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)।

এ ছাড়া শোক জানিয়েছে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ), ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ), রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব), কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসসহ (বেসিস) আরও অনেক সংগঠন।

সংগঠনগুলো পৃথক বার্তায় বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে। তারা খালেদা জিয়ার রুহের মাগফিরাত চেয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারকে ধৈর্য ধারণ করতে বলেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল: আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪২
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি করেন।

মামলার আসামিরা হলেন এসএওসিএলের কর্মকর্তা (এইচআর) আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩৭), উপব্যবস্থাপক (হিসাব) ও ডিপো ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহমুদুল হক (৪৫), গোল্ডেন সিফাত এন্টারপ্রাইজের মালিক মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন গিয়াস (৪৬), আজহার টেলিকমের স্বত্বাধিকারী মো. সোহেল রানা (৪৪) এবং মেসার্স মদিনা কোয়ালিটির স্বত্বাধিকারী মো. মাসুদ মিয়া (৫১)।

দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ বলেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের হিসাব থেকে প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বিভিন্নভাবে স্থানান্তর ও আত্মসাৎ করেন।

এজাহার থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এসএওসিএলের এলসি-সংক্রান্ত লেনদেনের নামে প্রকৃত সরবরাহকারীর পরিবর্তে ভুয়া ও সম্পর্কহীন প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে চেক ইস্যু করার বিষয় দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে। পরে এসব চেকের অর্থ বিভিন্ন ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর কিংবা নগদে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনো এলসি খোলা হয়নি এবং লেনদেনগুলো কোম্পানির জেভি-০৮ ও জেনারেল লেজারে অন্তর্ভুক্তও করা হয়নি।

অনুসন্ধান প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পাঁচটি চেকের মধ্যে তিনটির অর্থ গোল্ডেন সিফাত এন্টারপ্রাইজ, আজহার টেলিকম ও মদিনা কোয়ালিটির অ্যাকাউন্টে জমা হয় এবং বাকি দুটি চেকের অর্থ নগদে উত্তোলন করা হয়। চেক জমাদানকারী হিসেবে বারবার আব্দুল্লাহ আল মামুনের নাম পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট পেমেন্ট ভাউচারে নিরীক্ষা বিভাগের স্বাক্ষর না থাকাও অনিয়মের প্রমাণ হিসেবে উঠে এসেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইসলামী ব্যাংকের শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইসলামী ব্যাংকের শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
ইসলামী ব্যাংকের শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।

সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন এবং শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ। এ ছাড়া কাউন্সিলের অন্য সদস্যবৃন্দ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যশোরের খেজুর রস: লক্ষ্য ১২০ কোটি টাকার গুড় উৎপাদন

জাহিদ হাসান, যশোর
রসের জন্য খেজুরগাছ কেটে প্রস্তুত করছেন গাছি। গতকাল যশোরের চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রসের জন্য খেজুরগাছ কেটে প্রস্তুত করছেন গাছি। গতকাল যশোরের চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস। ভোরে সেই রস নামিয়ে শুরু হয় আরেক কর্মযজ্ঞ; চুলায় জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির কাজ। বাড়ির নারীরাই মূলত এই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেন। কয়েক ঘণ্টা জ্বালানোর পর তৈরি হয় সুস্বাদু খেজুর গুড় ও পাটালি।

শীত মৌসুম এলেই এমন দৃশ্য দেখা যায় খেজুর গুড়ের জেলা খ্যাত যশোরের প্রায় প্রতিটি গ্রামে। সম্প্রতি যশোরের খেজুর গুড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় এর ঐতিহ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও নতুন করে সামনে এসেছে।

উৎপাদন ও বাজারের চিত্র

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে যশোরে প্রায় ১২০ কোটি টাকার খেজুর রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই উৎপাদন গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল করবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।

বর্তমানে খেজুরের কাঁচা রস প্রতি মাটির হাঁড়ি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, দানা গুড় প্রতি কেজি ৩৫০-৪০০ টাকা এবং পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারদর বাড়লেও গাছিরা বলছেন, শ্রম ও ঝুঁকির তুলনায় লাভ সীমিত।

গাছির সংকট বড় চ্যালেঞ্জ

যশোর সদর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের গাছি আজিবর প্রায় ৩৫ বছর ধরে খেজুর গাছ কাটছেন। তিনি বলেন, ‘আগে দেড় শ গাছ কাটতাম, এখন বয়সের কারণে ৩৫-৪০টার বেশি পারি না। রস ও গুড়ের দাম বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কাটার মতো গাছ কমে গেছে। আবার গাছ থাকলেও দক্ষ গাছির অভাব। এবার বেশি শীত পড়ায় রসও ভালো নামছে, গুড়ের উৎপাদনও বেশি।’

গাছ থেকে নামিয়ে আনা খেজুরের রস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি করছেন এক নারী। গতকাল যশোরের চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাছ থেকে নামিয়ে আনা খেজুরের রস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি করছেন এক নারী। গতকাল যশোরের চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মনিরামপুর উপজেলার সরসকাটি গ্রামের গাছি অতিয়ারও প্রায় ৪০ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত। তিনি বলেন, এবার ৫০টা গাছ কাটছি। প্রতিদিন ৮-১০ কেজি গুড় তৈরি হয়। কাজটা খুব কষ্টের। তবে শীত মৌসুমে এই আয়েই পুরো বছরের সংসার চলে।

ই-কমার্সে বাড়ছে চাহিদা

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যশোর জেলায় মোট খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫। এগুলোর মধ্যে চলতি মৌসুমে রস আহরণের উপযোগী গাছ রয়েছে ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি।

উৎপাদিত গুড় প্রথমে স্থানীয় হাটে বিক্রি হয়, পরে পাইকারদের মাধ্যমে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। যশোরের খেজুর গুড় এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। পাশাপাশি ই-কমার্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক উদ্যোক্তাদের হাত ধরে গুড় ও পাটালি সরাসরি ভোক্তার ঘরে পৌঁছানো হচ্ছে। এতে বাজার যেমন সম্প্রসারিত হচ্ছে, তেমনি তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।

কৃষি বিভাগের উদ্যোগ

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, যশোরের খেজুর গুড়ের স্বাদ ও মানের কারণে চাহিদা সব সময় বেশি। এবার শীত বেশি হওয়ায় রসের পরিমাণ ও মান—দুটোই ভালো। চলতি মৌসুমে প্রায় ১২০ কোটি টাকার রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নিরাপদ খেজুর রস এবং গুড় উৎপাদনে কৃষকদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গাছিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত