Ajker Patrika

ভারতের পেঁয়াজ শুল্কমুক্ত, শঙ্কায় দেশি কৃষকেরা

  • রপ্তানি ১ এপ্রিল থেকে বিনা শুল্কে কার্যকর।
  • আরও সহজ হবে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি।
  • এরই মধ্যে বাজারে দেশি পেঁয়াজের দরপতন।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৪: ০৬
আকারভেদে পেঁয়াজ বাছাই করছেন এক ব্যবসায়ী। সম্প্রতি রাজধানীর কারওয়ান বাজারে। ছবি: আজকের পত্রিকা
আকারভেদে পেঁয়াজ বাছাই করছেন এক ব্যবসায়ী। সম্প্রতি রাজধানীর কারওয়ান বাজারে। ছবি: আজকের পত্রিকা

পেঁয়াজ বাংলাদেশে শুধু একটি নিত্যপ্রয়োজনীয় মসলা নয়, বরং অর্থনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। প্রতিবছর এ নিয়ে দেশে একধরনের সংকট সৃষ্টি হয়। কখনো কৃষক ন্যায্যমূল্য না পেয়ে হতাশ হন, আবার কখনো ভোক্তারা চড়া দামে কিনতে বাধ্য হন। এর পেছনে মূলত আমদানিনির্ভরতা এবং বাজার ব্যবস্থাপনার সীমাবদ্ধতাই দায়ী। এ অবস্থায় ভারত সরকার হঠাৎ পেঁয়াজ রপ্তানিতে থাকা ২০ শতাংশ শুল্ক তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, যা কার্যকর হবে আগামী ১ এপ্রিল থেকে। এতে একদিকে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি আরও সহজ হবে, অন্যদিকে বাংলাদেশি কৃষকের ন্যায্যমূল্য পাওয়া কঠিন হয়ে উঠতে পারে। এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের বাজারে কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে এবং কৃষক কেমন পরিস্থিতির মুখে পড়বেন, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।

বাংলাদেশের কৃষকের অবস্থা

বর্তমানে বাংলাদেশে পেঁয়াজের ভরা মৌসুম চলছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কৃষক মাঠ থেকে নতুন পেঁয়াজ উত্তোলন করছেন। কিন্তু বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি হওয়ায় দাম অনেক কমে গেছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজি ৩৫-৪০ টাকায় নেমে এসেছে, যা এক বছর আগেও ছিল ৬০-৭০ টাকা।

হাটবাজারে প্রতি মণ পেঁয়াজের দাম বর্তমানে ৫০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করছে, যেখানে উৎপাদন খরচ তুলতে কৃষকের অন্তত ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা দরকার। ফরিদপুরের কৃষক ইমরান হোসেন বলেন, ‘আমরা পেঁয়াজ চাষ করতে গিয়ে অনেক টাকা খরচ করেছি। এখন মাঠ থেকে তুলতে গিয়ে দেখি, দাম আমাদের প্রত্যাশার তুলনায় অর্ধেকের কম। এর মধ্যে যদি ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে ঢুকে পড়ে, তাহলে তো পুরোপুরি পথে বসে যাব।’

ভারতের নীতি পরিবর্তন: এখন কেন

ভারত কয়েক বছর ধরে অভ্যন্তরীণ বাজার স্থিতিশীল রাখতে পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নানা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে দেশটি পেঁয়াজ রপ্তানি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করে এবং ন্যূনতম রপ্তানিমূল্য নির্ধারণ করে দেয়। পরে ২০২৪ সালের মে মাসে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে এবং প্রতি টনের ন্যূনতম রপ্তানিমূল্য ৫৫০ ডলার নির্ধারণ করে। এরপর গত সেপ্টেম্বরে ভারত শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশ করে, যা এবার পুরোপুরি তুলে নেওয়া হলো।

ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, দেশটিতে পেঁয়াজের উৎপাদন ভালো হয়েছে এবং বাজারে সরবরাহ বাড়ায় দাম কমে গেছে। তাই রপ্তানির পথ খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে এটি কেবল অভ্যন্তরীণ কারণ নয়, বরং আন্তর্জাতিক বাজারেও ভারত নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে চায়। ভারতীয় পেঁয়াজের বড় ক্রেতা বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া ও সৌদি আরবের মতো দেশগুলো। এ কারণে বিশ্ববাজারে নিজেদের অবস্থান সুসংহত রাখার কৌশল হিসেবেও ভারত এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বাংলাদেশের বাজারে সম্ভাব্য প্রভাব

ভারতীয় পেঁয়াজ বিনা শুল্কে বাংলাদেশে প্রবেশ করলে স্থানীয় কৃষকের জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন হবে। বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকায় দাম এমনিতেই কম। এর মধ্যে ভারতীয় পেঁয়াজ আসতে থাকলে প্রতিযোগিতা আরও বাড়বে, যা স্থানীয় কৃষককে লোকসানের মুখে ফেলবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের বাজার ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘদিন ধরেই পরিকল্পনার অভাব রয়েছে। পেঁয়াজের সংকট হলে ভারত থেকে আমদানি করা হয়, কিন্তু কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় তেমন কোনো সুরক্ষা ব্যবস্থা নেই। বাজার বিশ্লেষক মাহমুদুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রতিবছরই আমরা একই ভুলের পুনরাবৃত্তি দেখি। কৃষক লোকসান গুনতে গুনতে একসময় চাষ কমিয়ে দেন, তখন আবার সংকট তৈরি হয় এবং ভারতীয় পেঁয়াজের ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ে। এর সমাধানে সরকারকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে।’

সরকারের করণীয় ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধান

সরকার ইতিমধ্যে আমদানি নিয়ন্ত্রণের কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। বর্তমানে আমদানি অনুমোদন (আইপি) সীমিত রাখা হয়েছে, যাতে স্থানীয় কৃষক বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) জানিয়েছে, বিপুলসংখ্যক আমদানির আবেদন জমা পড়লেও মাত্র ১০০-২০০ টনের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। তবে ৩১ মার্চের পর নতুন অনুমোদন দেওয়া হবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়।

এদিকে, দেশীয় কৃষক ন্যায্যমূল্য না পেয়ে ক্ষতির মুখে পড়ছেন। বিশেষজ্ঞরা সংকট সমাধানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করেছেন। প্রথমত, সংরক্ষণ সুবিধা বাড়ানো জরুরি, যাতে কৃষক কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করতে বাধ্য না হন। দ্বিতীয়ত, সরকারি ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ ও সরাসরি ক্রয়ব্যবস্থা চালু করা প্রয়োজন। তৃতীয়ত, আমদানি নীতিতে স্বচ্ছতা আনা দরকার, যাতে হঠাৎ রপ্তানি বন্ধের ফলে বাজারে অস্থিরতা না হয়। চতুর্থত, সাপ্লাই চেইন উন্নয়ন করতে হবে, যেখানে মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রভাব কমিয়ে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে পেঁয়াজ সংগ্রহ করা হবে। এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলে কৃষকের লোকসান কমবে এবং বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সেরা ফিল্ড ফোর্সদের বিশেষ সম্মাননা দিল নগদ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সেরা ফিল্ড ফোর্সদের বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে নগদ। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
সেরা ফিল্ড ফোর্সদের বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে নগদ। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

সারা দেশের সাত হাজার ডিস্ট্রিবিউটর ফিল্ড ফোর্সের মধ্য থেকে সেরা পারফরম্যান্সের জন্য ৭০ জনকে বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে ডাক বিভাগের ডিজিটাল আর্থিক লেনদেন সেবা নগদ।

রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ‘নগদ ফিল্ড চ্যাম্পিয়ন ২০২৫’ নামের এই সম্মাননা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠান চলাকালে ডিস্ট্রিবিউটর ফিল্ড ফোর্সদের পারফরম্যান্সের জন্য বিশেষ বোনাসের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ ব্যাংকনিযুক্ত নগদের প্রশাসক মো. মোতাছিম বিল্লাহ। ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ৭০ জনের নগদ অ্যাকাউন্টে চলে যায় এই অর্থ।

দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে ঢাকায় আসা-যাওয়া, খাওয়া, হোটেলে অবস্থানসহ অন্য সব খরচ নগদের পক্ষ থেকে বহন করা হয়।

সেরা পারফর্মারদের অভিনন্দন জানিয়ে নগদের প্রশাসক মো. মোতাছিম বিল্লাহ বলেন, অনেক চ্যালেঞ্জের মাঝেও বাজারে নগদ একটা ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছে। বাংলাদেশে ক্যাশলেস লেনদেনের আরও প্রসার ঘটাতে নগদ ভূমিকা রাখবে বলে সরকারের নীতিনির্ধারকদের প্রত্যাশা রয়েছে। সুতরাং, যত অপপ্রচারই নগদকে নিয়ে হোক না কেন, সেসবে কান না দিয়ে নগদের সাফল্যের জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।

নগদের সেবার প্রসার ঘটাতে এ সময় মোতাছিম বিল্লাহ ডিস্ট্রিবিউটর ফিল্ড ফোর্সদের কাছ থেকে নগদ বিষয়ে পরামর্শ ও সুপারিশ জানতে চান। তাঁদের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে নগদ প্রশাসক বলেন, অল্প সময়ের ভেতরই সেবার কলেবর আরও বাড়বে নগদে। ফলে লেনদেনের অঙ্ক যেমন অনেক গুণ বাড়বে, একই সঙ্গে গ্রাহকেরাও অনেক বেশি উপকৃত হবেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকনিযুক্ত নগদের জ্যেষ্ঠ সহযোগী প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান, ডাক বিভাগনিযুক্ত নগদের জ্যেষ্ঠ সহযোগী প্রশাসক মো. আবু তালেব, নগদের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার মোহাম্মদ শাহীন সারওয়ার ভূঁইয়া বক্তব্য দেন।

বক্তারা বলেন, আগামী বছরে বিদেশ থেকে আসা রেমিট্যান্স, বাংলা কিউআর, সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লেনদেনের জন্য আন্তসংযোগ গেম চেঞ্জারের ভূমিকা পালন করবে নগদ। ফলে ২০২৬ সাল নগদের সেরা সাফল্যের বছর হবে বলেও মনে করেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক চালু করল ডিএসই

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক চালু করেছে ডিএসই। ছবি: সংগৃহীত
ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক চালু করেছে ডিএসই। ছবি: সংগৃহীত

তথ্যসেবা আরও সহজ ও কার্যকর করার লক্ষ্যে ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক স্থাপন করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আসাদুর রহমান এই ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিএসইর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা ড. আসিফুর রহমান, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা মো. ছামিউল ইসলাম, প্রধান রেগুলেটরি কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়াসহ ডিএসইর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় মোহাম্মদ আসাদুর রহমান বলেন, ইনফরমেশন হেল্প ডেস্কের মাধ্যমে পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট তথ্য প্রদান আরও সহজ হবে এবং বিনিয়োগকারী ও অন্য অংশীজনদের বিভিন্ন জিজ্ঞাসার দ্রুত ও কার্যকর সমাধান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এর ফলে ডিএসইর সেবার মান আরও গ্রাহকবান্ধব ও স্বচ্ছ হবে।

ডিএসইর এমডি আশা প্রকাশ করেন, এই হেল্প ডেস্ক ডিএসইর বাজার অংশগ্রহণকারীদের আস্থা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

পুঁজিবাজারসংক্রান্ত সব ধরনের তথ্যের জন্য +৮৮-০২-৪১০৪০১৮৯, ০৯৬৬৬৭০২০৭০ নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ট্রাভেল ও ট্যুরিজম অ্যাওয়ার্ড: লিড স্পনসর ‘গ্যালাক্সি’, হসপিটালিটি পার্টনার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
ট্রাভেল ও ট্যুরিজম অ্যাওয়ার্ড: লিড স্পনসর ‘গ্যালাক্সি’, হসপিটালিটি পার্টনার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা

দেশের অন্যতম ভ্রমণ ও পর্যটনবিষয়ক প্রকাশনা বাংলাদেশ মনিটর আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ট্রাভেল, ট্যুরিজম ও হসপিটালিটি অ্যাওয়ার্ড (BTTHA) ২০২৫’-এর লিড স্পনসর হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে দেশের ভ্রমণশিল্পের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান গ্যালাক্সি গ্রুপ।

একই সঙ্গে পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা এই আয়োজনের হসপিটালিটি পার্টনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।

দেশের ভ্রমণ, পর্যটন ও আতিথেয়তা শিল্পে একমাত্র স্বীকৃত এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানটি এবার দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

গতকাল বুধবার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট চুক্তিসমূহ স্বাক্ষরিত হয়।

বাংলাদেশ মনিটরের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম। গ্যালাক্সি গ্রুপের পক্ষে লিড স্পনসর চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ। অন্যদিকে ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার পক্ষে হসপিটালিটি পার্টনার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন হোটেলটির জেনারেল ম্যানেজার ডেভিড ও’ হ্যানলন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মনিটরের সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, গ্যালাক্সি ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার সম্পৃক্ততায় অ্যাওয়ার্ড প্রোগ্রামের মর্যাদা ও পরিসর আরও বৃদ্ধি পাবে। এর মাধ্যমে দেশের ভ্রমণ ও আতিথেয়তা শিল্পে উৎকর্ষতা অর্জন এবং উত্তম চর্চা উৎসাহিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

গ্যালাক্সি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ বলেন, পর্যটন ও আতিথেয়তা খাতে উদ্ভাবন, সেবার মান এবং টেকসই উন্নয়নকে স্বীকৃতি প্রদানকারী একটি মহতী উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে তারা গর্বিত।

ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার জেনারেল ম্যানেজার ডেভিড ও’ হ্যানলন বিশ্বমানের আতিথেয়তা প্রদানের পাশাপাশি অসাধারণ অর্জনকে স্বীকৃতি দেওয়ার লক্ষ্যে এমন একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

চলতি বছর ২৫টি ক্যাটাগরিতে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। শুধু আবেদনকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানই পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবে। সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিত্বকারী অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বিচারক প্যানেল বিশেষজ্ঞদের মূল্যায়ন এবং পাবলিক ভোটিংয়ের ভিত্তিতে বিজয়ীদের চূড়ান্ত করবেন।

এবার নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে দুটি বিশেষ ক্যাটাগরি—সর্বাধিক পর্যটনবান্ধব বিদেশি গন্তব্য, বাংলাদেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় পর্যটন স্পট। এই দুটি ক্যাটাগরির বিজয়ী সরাসরি পাবলিক ভোটিংয়ের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।

বাংলাদেশের পর্যটন ইকোসিস্টেমের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা জানানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ মনিটর ২০২৪ সালে প্রথমবারের মতো এই পুরস্কারের প্রবর্তন করে।

প্রথম আসরের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এ বছর আরও বৃহৎ পরিসরে এই আয়োজন করা হচ্ছে, যেখানে অংশগ্রহণের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দৃশ্যমানতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারত থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাকের চলাচল নজরদারি করবে এনবিআর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ৪৩
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যবাহী ট্রাকের চলাচল আরও স্বচ্ছ ও প্রযুক্তিনির্ভর করতে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে ‘ট্রাক মুভমেন্ট’ নামে নতুন একটি সাব-মডিউল চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর মাধ্যমে প্রতিটি ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাকের প্রবেশ, অবস্থানকাল এবং খালি ট্রাকের ফেরত-সংক্রান্ত তথ্য ইলেকট্রনিকভাবে সংরক্ষণ করা হবে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় এনবিআর।

এনবিআর জানায়, প্রাথমিকভাবে যশোরের বেনাপোল কাস্টম হাউসে ১৫ ডিসেম্বর থেকে এই সাব-মডিউলের পাইলট কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর আগে ট্রাক প্রবেশ ও বহির্গমনের তথ্য ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা হতো, যা সময়সাপেক্ষ ও ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার ঝুঁকি ছিল।

নতুন মডিউল চালুর ফলে ভারতীয় প্রতিটি ট্রাকের আগমন ও বহির্গমনের প্রকৃত তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংরক্ষিত থাকবে। এতে ট্রাকের অবস্থানকাল নির্ধারণ, সীমান্ত এলাকায় ট্রাক চলাচল কার্যকরভাবে মনিটরিং এবং রিয়েল-টাইম রিপোর্ট তৈরি করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি তথ্য ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বাড়বে, রাজস্বহানি রোধে সহায়ক হবে এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে বলে জানিয়েছে এনবিআর।

এনবিআরের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সীমান্ত বাণিজ্য ব্যবস্থাপনায় এই ডিজিটাল উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ট্রাক চলাচলের নির্ভুল তথ্য থাকায় শুল্ক ও কর ব্যবস্থাপনায় নজরদারি জোরদার হবে, একই সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষাও বাড়বে।

খুব শিগগির দেশের সব স্থলবন্দরে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমের ‘ট্রাক মুভমেন্ট’ সাব-মডিউলটি লাইভ অপারেশনে আনার পরিকল্পনা রয়েছে এনবিআরের। এতে স্থলবন্দরভিত্তিক আমদানি কার্যক্রম আরও গতিশীল ও আধুনিক হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত