Ajker Patrika

৬০ কোটি ডলারের বকেয়ায় আটকে এলএনজি আমদানি, বিদ্যুতের ভোগান্তি চরমে

শাহ আলম খান, ঢাকা
আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২: ৩১
৬০ কোটি ডলারের বকেয়ায় আটকে এলএনজি আমদানি, বিদ্যুতের ভোগান্তি চরমে

বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কাছে আমদানিনির্ভর জ্বালানি খাতে সরকারের বিপুল বকেয়া জমেছে। তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি বাবদ সরকারের বকেয়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬০৭ দশমকি ৩৫ মিলিয়ন বা ৬০ কোটি ডলারের বেশি। এই বকেয়া পরিশোধ না করায় নতুন করে এলএনজি কেনা বন্ধ আছে। গ্যাস সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বড় ঘাটতিতে ব্যাপক লোডশেডিং চলছে সারা দেশে। ভ্যাপসা গরমে হাঁসফাঁস অবস্থার মধ্যে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে জনজীবনে দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। মানুষের ভোগান্তির সঙ্গে অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে জ্বালানিসংকট।

বিদ্যুৎ উৎপাদনের অন্যতম প্রধান উপকরণ ডিজেল, পেট্রল, অকটেন, ফার্নেস অয়েল ও এলএনজি। দেশে ব্যবহৃত এসব জ্বালানির শতকরা ৬০ ভাগই আমদানি করতে হয়। এখন জ্বালানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। এতে কয়েক দিন ধরেই বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে উৎপাদন কমেছে।

দেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মোট উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ২৮ হাজার মেগাওয়াট। বর্তমানে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত প্রতি ঘণ্টায় বিদ্যুতের চাহিদা ১৬ হাজার ৫০০ থেকে ১৭ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। কিন্তু উৎপাদন হচ্ছে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। ঘাটতি থাকছে কমপক্ষে ২ হাজার মেগাওয়াট। ফলে ব্যাপক মাত্রায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে।

ডলার-সংকটের কারণে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের সময় এলএনজির পরিশোধ করা যায়নি। এখন বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো উৎপাদন সচল রাখতে প্রয়োজনীয় জ্বালানির নিশ্চয়তা এবং বকেয়া অর্থ চাইছে। কিন্তু সরকারের কাছে ডলারের ঘাটতি থাকায় তা মেটানো যাচ্ছে না। এখন জ্বালানিসংকট তীব্র হওয়ার এটা বড় কারণ। আট মাস ধরেই এ পরিস্থিতি চলতে থাকায় মজুত জ্বালানিও প্রায় ফুরিয়ে এসেছে। ভারতের আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেও কম বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। আদানি গ্রুপ বকেয়া শোধের তাগিদ দিয়ে চিঠি দিয়েছে।

সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রতিবেদনে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বকেয়ার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এতে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত

এলএনজি আমদানির বকেয়া বিলের পরিমাণ ছিল ৬৩ কোটি ডলার। ১০ সেপ্টেম্বর কাতার এনার্জিকে এর একটা ছোট অংশ (আড়াই কোটি ডলার) পরিশোধ করেছে সরকার। জ্বালানি সরবরাহ অব্যাহত রাখতে বাকি ৬০ কোটি ডলার দ্রুত পরিশোধের উদ্যোগ নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ কাতার ও ওমান থেকে এলএনজি আমদানি করে থাকে। এর আগে আইটিএফসি থেকে ঋণ নিয়ে কাতার এনার্জির দুটি বিল গত মে ও জুলাই মাসে পরিশোধ করেছিল জ্বালানি বিভাগ। মে মাসে আইটিএফসির সেই ঋণের একটি কিস্তিও বকেয়া পড়ে।

বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন মতে, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত মার্কিন কোম্পানি শেভরনের মোট সাতটি বিল বকেয়া পড়েছে। শেভরনের সরবরাহ করা গ্যাসের বকেয়া জমেছে ২২৪ দশমিক ৮২ মিলিয়ন ডলার। ১০ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটিকে ৩ দশমিক ৪২ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। গত বুধবার অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাকি অর্থ পরিশোধ করার অনুরোধ করেছেন শেভরনের কর্মকর্তারা।

চুক্তির বাইরে দ্রুত সরবরাহ পেতে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভিটল এশিয়া, গানভর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড ও এক্সেলারেট এনার্জির মাধ্যমে গ্যাস কিনেছে জ্বালানি বিভাগ। এ তিনটি প্রতিষ্ঠানের কাছে গ্যাসের দামের ৮৭ দশমিক ২০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া রয়েছে।

জানা গেছে, বকেয়ার অঙ্ক বেশি থাকায় ২ ও ৯ সেপ্টেম্বর দুই কার্গো এলএনজি খালাস না করে সরবরাহকারীরা ফিরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ পর্যন্ত নিয়েছিল। পরে জ্বালানি বিভাগ জরুরিভাবে অনুরোধ করে তা খালাসের ব্যবস্থা করে।

আটকে ছিল এলএনজি আমদানির উদ্যোগ
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলন চলাকালে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠক সময়মতো হয়নি। এ কারণে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানির কয়েকটি প্রস্তাবের অনুমোদন আটকে ছিল। আন্দোলন ঠেকাতে বিগত সরকার দীর্ঘ সময় ইন্টারনেট বন্ধ রাখায় বিদেশের সঙ্গে লেনদেন করা সম্ভব হয়নি। এর ফলেও বকেয়ার পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। এ ছাড়া কয়েক মাস আগে ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে কক্সবাজারের দুটি ভাসমান স্টোরেজ অ্যান্ড রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিটের (এফএসআরইউ) মধ্যে একটি অকেজো হয়ে পড়ে। ফলে আমদানি করা এলএনজি খালাসের সক্ষমতাও অর্ধেকে নেমে আসে। গত বুধবার থেকে দুটি এফএসআরইউ সচল হয়েছে বলে জানিয়েছে জ্বালানি বিভাগ। এগুলোর মাধ্যমে ১ হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়।

আশাবাদ জানালেন উপদেষ্টা
চলমান বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসংকট মোকাবিলায় অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনা জানতে চাইলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, সংকট কাটাতে দ্রুত জ্বালানি আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর কিছু আসবে দীর্ঘমেয়াদি প্যাকেজে। আর কিছু আসবে তাৎক্ষণিক কেনার স্পট মার্কেট থেকে। উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে দেশে জ্বালানি আসা শুরু হবে। এই জ্বালানি এলেই পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হবে।

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বকেয়া পরিশোধের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ইতিমধ্যে কিছু পেমেন্ট হয়েছে। এটি চলমান থাকবে। তবে এই বকেয়া শুধু জ্বালানির ক্ষেত্রেই নয়। সারসহ আরও নানা রকম বকেয়া আছে। এর মধ্যেই আমরা যতটা পারি সমন্বয় করার চেষ্টা করছি।’

এ বিষয়ে ভোক্তা–অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অর্থনীতির চক্রাকার তৎপরতাকে সচল রাখার মূল চাবিকাঠি হচ্ছে জ্বালানি সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা। একইভাবে চাহিদামাফিক বিদ্যুতের সরবরাহ দেওয়া। তাই সরকারের এখন উচিত, সব উন্নয়ন প্রকল্পের বিনিয়োগ স্থগিত এবং সেই অর্থ প্রত্যাহার করে অবিলম্বে জ্বালানি খাতে বরাদ্দের মাধ্যমে বকেয়া পরিশোধের পথ তৈরি করা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার স্বৈরাচারী আমলে সাংবাদিক দমন-পীড়নের পুনরাবৃত্তি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সোনার দাম ভরিতে ১৪৭০ টাকা বাড়ল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা হয়েছে।

স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠক করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে ১৪ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ৩ হাজার ৪৪২ টাকা এবং ১২ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ১ হাজার ৫০ টাকা। এই দাম বাড়ানোর ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে এখন আবার দাম বাড়ানো হলো।

এখন সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৪৭০ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ৪১১ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ৭ হাজার ২১১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ২৪৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৭৭ হাজার ৬৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৬৩ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯০০ টাকা।

বিষয়:

দামসোনা
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার স্বৈরাচারী আমলে সাংবাদিক দমন-পীড়নের পুনরাবৃত্তি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শেভরনের সহায়তায় সিলেটে ৬০ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির স্বাভাবিক জীবনে ফেরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
শেভরন-এসএমআইএল প্রকল্পে ৬০ প্রতিবন্ধীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
শেভরন-এসএমআইএল প্রকল্পে ৬০ প্রতিবন্ধীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

শেভরন বাংলাদেশের সহায়তায় বাস্তবায়িত এসএমআইএল (SMILE) প্রকল্পের আওতায় ‘রিস্টোরিং মোবিলিটি: আর্টিফিশিয়াল লিম্ব সাপোর্ট’ উদ্যোগের সমাপনী অনুষ্ঠান সম্প্রতি গ্র্যান্ড সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সিলেট ও নবীগঞ্জ উপজেলার ৬০ শারীরিক প্রতিবন্ধী উপকারভোগীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ (প্রোস্থেটিক) ও অর্থোটিক ডিভাইস বিতরণ করা হয়।

দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে পুনর্বাসন ও চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত থাকা এই উপকারভোগীরা কৃত্রিম অঙ্গ পেয়ে নতুন জীবন ফিরে পেলেন। জালালাবাদ ডিজেবল্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালের (জেডিআরসিএইচ) সহযোগিতায় এই উদ্যোগ পরিচালিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সমন্বয় ও মনিটরিং উইংয়ের সচিব মো. আবদুল মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন শেভরন বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও প্রেসিডেন্ট এরিক এম ওয়াকার, করপোরেট অ্যাফেয়ার্স পরিচালক মুহাম্মদ ইমরুল কবির, সোশ্যাল ইনভেস্টমেন্ট প্রধান এ কে এম আরিফ আক্তার, সুইসকন্টাক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর হেলাল হোসেন এবং জেডিআরসিএইচ বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান রোটারিয়ান পিপি ইঞ্জিনিয়ার শোয়াইব আহমেদ মতিন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘কৃত্রিম অঙ্গ সহায়তা শুধু চিকিৎসা নয়, এটি প্রতিবন্ধী মানুষের জীবনযাত্রায় মৌলিক পরিবর্তন আনে। শেভরন বাংলাদেশ, সুইসকন্টাক্ট ও জেডিআরসিএইচের যৌথ উদ্যোগ চলাচল সক্ষমতা ফিরিয়ে এনে উপকারভোগীদের জীবনে নতুন আশার দ্বার খুলে দিয়েছে।’

শেভরন বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও প্রেসিডেন্ট এরিক এম ওয়াকার বলেন, ‘বিশ্বের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ এ ধরনের বিশেষায়িত পুনর্বাসন সেবার পর্যাপ্ত সুযোগ পায় না। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ব্যক্তিকেন্দ্রিক সেবা পৌঁছে দিতে পারা আমাদের জন্য গর্বের। উপকারভোগীদের প্রতিটি অগ্রযাত্রাই একটি সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের দিকে দৃঢ় পদক্ষেপ।’

সুইসকন্টাক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর হেলাল হোসেন বলেন, ‘এই প্রকল্প কেবল চলাচল সক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়নি; এটি উপকারভোগীদের কর্মজীবনে ফেরা, শিক্ষা চালিয়ে যাওয়া এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করেছে—যা সমাজে অন্তর্ভুক্তি আরও সুদৃঢ় করেছে।’

করপোরেট অ্যাফেয়ার্স পরিচালক মুহাম্মদ ইমরুল কবির বলেন, ‘শেভরন তিন দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের বিশ্বস্ত জ্বালানি অংশীদার। আমাদের অঙ্গীকার কেবল জ্বালানি সরবরাহেই সীমাবদ্ধ নয়। এসএমআইএল প্রকল্পের মতো উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা চলাচল সক্ষমতা ও মানবিক মর্যাদা পুনরুদ্ধারে কাজ করছি। বাংলাদেশে আমাদের সামাজিক বিনিয়োগ কার্যক্রম জাতিসংঘ ঘোষিত ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের মধ্যে ৯টির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’

অনুষ্ঠানে উপকারভোগীরা তাঁদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, কৃত্রিম অঙ্গ পাওয়ার ফলে তাঁরা আবার স্বাভাবিক চলাচল, আত্মনির্ভরতা ও আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছেন। এই ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রভাব পরিবার ও সমাজেও ছড়িয়ে পড়ছে।

গৃহস্থালি আয় স্থিতিশীল হওয়া ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির ফলে এর ইতিবাচক প্রভাব পরিবার ও সমাজে ছড়িয়ে পড়ছে—যা কমিউনিটির স্থিতিশীলতা ও সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছে। এ সাফল্যের ধারাবাহিকতায় শেভরন বাংলাদেশ ও সুইসকন্টাক্ট এসএমআইএল প্রকল্পের মাধ্যমে টেকসই ও প্রভাবশালী উন্নয়ন উদ্যোগ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে তারা অর্থোটিক ও প্রোস্থেটিক সহায়তা প্রয়োজন, এমন মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বাস্তব ও পরিমাপযোগ্য পরিবর্তন নিশ্চিত করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার স্বৈরাচারী আমলে সাংবাদিক দমন-পীড়নের পুনরাবৃত্তি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আরও ১৪ কোটি ১৫ লাখ ডলার কিনল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলো থেকে অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করেছে। আজ সোমবার ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার (১৪১.৫ মিলিয়ন) কেনা হয়েছে। ডলারের বিনিময়হার ছিল ১২২ দশমিক ২৯ থেকে ১২২ দশমিক ৩০ টাকা আর কাট-অফ রেট ছিল ১২২ দশমিক ৩০ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে, ১১ ডিসেম্বর ১৬টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৫ কোটি ডলার (১৪৯ মিলিয়ন) কেনা হয়েছিল। এ সময় প্রতি ডলারের বিনিময়হার ছিল ১২২ টাকা ২৫ পয়সা থেকে ১২২ টাকা ২৯ পয়সা। আর কাট-অফ রেট ছিল ১২২ টাকা ৯ পয়সা। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত নিলামপদ্ধতিতে মোট ২৮০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার (২.৮০ বিলিয়ন) সংগ্রহ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র জানান, আজ ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার কেনা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার স্বৈরাচারী আমলে সাংবাদিক দমন-পীড়নের পুনরাবৃত্তি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দিনে ১৭২৫০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিল সরকার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বাজার সহনীয় করতে পেঁয়াজের আমদানি আরও বাড়িয়েছে সরকার। আজ সোমবার থেকে দৈনিক ১৭ হাজার ২৫০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে; যা আগে ছিল ৬ হাজার টন করে।

আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে কৃষি মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

জানা যায়, চলতি মাসের শুরু থেকে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে। তিন দিনের ব্যবধানে ১২০ টাকার পেঁয়াজের দাম বেড়ে ১৫০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৭ ডিসেম্বর থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া শুরু করে কৃষি মন্ত্রণালয়। শুরুতে প্রতিদিন ৫০ জন আমদানিকারককে ৩০ টন করে মোট ১ হাজার ৫০০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। দীর্ঘ তিন মাস পর এই অনুমোদন দেওয়া হয়।

তবে এরপরও বাজারে দাম না কমলে আমদানির অনুমতির পরিমাণ বাড়ানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমদানি আরও বাড়ানো হয়। ১৩ ডিসেম্বর থেকে প্রতিদিন ২০০ জনকে ৩০ টন করে ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়, যা আজ থেকে আরও বাড়িয়ে ১৭ হাজার ২৫০ টন করা হয়।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আজ বলা হয়, পেঁয়াজের বাজার সহনীয় রাখতে ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর দুই দিনের জন্য প্রতিদিন ৫৭৫টি করে আইপি (আমদানি অনুমতি) ইস্যু করা হবে। প্রতিটি আইপিতে আগের ন্যায় সর্বোচ্চ ৩০ টন পেঁয়াজের অনুমোদন দেওয়া হবে। আবেদনের বিষয় আগের ন্যায় বলবৎ থাকবে। অর্থাৎ গত ১ আগস্ট থেকে যেসব আমদানিকারক আমদানি অনুমতির জন্য আবেদন করেছেন, তাঁরাই কেবল এই দুই দিন আবেদন পুনরায় দাখিল করতে পারবেন। একজন আমদানিকারক একবারের জন্য আবেদনের সুযোগ পাবেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ উইংয়ের অতিরিক্ত উপপরিচালক (আমদানি) বনি আমিন খান বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের পর আজ আমরা ৫৭৫ জনকে আমদানির অনুমোদন দিয়েছি। অনুমোদন নিয়ে এ দিন আমদানিকারকেরা ঋণপত্র খুলতে পেরেছেন। যদিও দুই দিনের কথা বলা হয়েছে, তবে সরকার প্রয়োজন মনে করলে সময় আরও বাড়বে। এর আগে গত শনিবার থেকে প্রতিদিন ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দিয়ে আসছিলাম আমরা।’

দেশে সাধারণত প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেন ব্যবসায়ীরা। সে হিসাবে যেদিন ঋণপত্র খোলেন, সেদিনই আমদানি করতে পারেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার স্বৈরাচারী আমলে সাংবাদিক দমন-পীড়নের পুনরাবৃত্তি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত