Ajker Patrika

সরকারি ঘর ও জমি পেয়ে জীবন বদলে যাচ্ছে তাঁদের

সৌগত বসু, ঢাকা
আপডেট : ১১ জুন ২০২৪, ০১: ৩২
সরকারি ঘর ও জমি পেয়ে জীবন বদলে যাচ্ছে তাঁদের

দিনে এখন ১০০ থেকে ১২০ কাপ চা বিক্রি করেন মো. বাহার আলী। লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের সব দল কুঠিরপাড়া গ্রামের বাহার আলী এর আগে রিকশা চালাতেন। শহুরে ব্যস্ততা না থাকা, আর অসুস্থতার কারণে রিকশা চালিয়ে আর্থিক অবস্থা পরিবর্তনের আশা ছিল না তাঁর। তবে তিন বছর আগে থেকে জীবনের পরিবর্তন শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে ঘর পেয়েছেন তিনি। সেখানে খুলেছেন ছোট টং দোকান। আর তাতেই সংসারের চাকা ঘুরতে শুরু করেছে। 

লালমনিরহাটে বাহার আলীর মতো প্রায় ২০০ গৃহহীন পরিবার সচ্ছলতার মুখ দেখেছে। কিছুদিন আগেও যারা পরের জমিতে বাস করতেন, তাঁরা এখন নিজের ঘর, ছোট ফসলের খেত, সেলাই মেশিনে আয়ের চাকা ঘুরিয়েছেন। আজ সোমবার এই জেলার চারটি প্রকল্প ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। 

আগামীকাল মঙ্গলবার লালমনিরহাটের জেলার চার উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর হস্তান্তর হবে মোট ১ হাজার ২৮২টি। এর মধ্যে রয়েছে কালীগঞ্জ উপজেলায় ৮৭৫ টি, পাটগ্রাম ৯৯টি হাতীবান্ধা ১৬৬টি ও আদিতমারী ১৪২। সকাল ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ প্রকল্প উদ্বোধন করবেন। লালমনিরহাটের সঙ্গে আরও উদ্বোধন হবে ভোলা ও কক্সবাজারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর। 

বাহার আলীর স্ত্রী মমতাজ বেগম বলেন, এখন দোকান থেকে মাসে ১৫ হাজার টাকা আয় হয়। সংসারের সঙ্গে ছেলের পড়াশোনার খরচও চালাতে পারছেন তাঁরা। দোকানে চা, বিস্কুট, চিপস, কোমলপানীয় বিক্রি হয়। 

তবে বাহার আলী স্বাবলম্বী হলেও অনেকের অভিযোগও রয়েছে। ঘর পেলেও কাজ পাচ্ছেন না তাঁরা। স্থানীয় প্রশাসন বলছে, গৃহহীনদের স্বাবলম্বী করে তোলার জন্য তাঁরা সব ভাবেই চেষ্টা করছেন। কিন্তু অনেকেই সরকারি বিভিন্ন প্রশিক্ষণ না নিয়েই সুবিধা নিতে চাচ্ছেন। 

বাহার আলী যে আশ্রয়ণ প্রকল্পে থাকেন সেখানে নারীদের অভিযোগ, তাঁরা সেলাই মেশিন পাননি। এমন দুজন নারী আমেনা ও সামিনা খাতুন। 

রোববারের বৃষ্টিতে পানি জমে গেছে আশ্রয়ণ প্রকল্পে। ছবি: আজকের পত্রিকাআমেনা ও সামিনা আজকের পত্রিকাকে বলেন, এর আগে সারা দিন মানুষের কাছে হাত পেতে যা পেতেন তাতেই কোনোরকমে পেট চলত। তবুও একবেলা কম-বেশি কিংবা ভালো-মন্দ খাবারে জুটত। সারা দিন যেমন-তেমন কাটলেও রাত হতেই ভর করত নতুন দুশ্চিন্তা। কখনো রেলস্টেশন, কখনো মানুষের বাড়ির বারান্দা আবার কখনো রাস্তায় কেটেছে দিনরাত্রি। 

এখন তাঁরা ঘর পেয়েছেন। কিন্তু পেটে দায় মেটেনি। এই প্রকল্পে ৬৫টি পরিবার থাকলেও আমেনা–সামিনার মতো কিছু পরিবার স্বাবলম্বী হতে পারছে না। 

আমেনা খাতুন বলেন, তাঁরা দুই বোন সেলাই মেশিন পাননি। সেলাই মেশিন পেলে একটু আয় করা যেত। 

এ বিষয়ে আদিতমারী উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, তাঁরা এসব মানুষকে স্বাবলম্বী করে তুলতে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছেন। তবে অনেকেই সেলাই মেশিন কার্যক্রমে প্রশিক্ষণ নিতে চান না। এ জন্য হয়তো তাঁরা সেলাই মেশিন পাননি। 

এদিকে এই উপজেলার সাপ্টিবাড়ি ইউনিয়নে ৩৪টি পরিবার আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর পেয়েছে। তবে সেখানে এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়নি। গতকাল রোববার রাতের বৃষ্টিতে পানি জমেছে প্রকল্প এলাকায়। 

এ বিষয়ে ইউএনও বলেন, খুব শিগগিরই এসব বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে। পানি যাতে না জমে এর জন্য মাটি ফেলা হলেও ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা হয়নি। এটাও করা হবে শিগগির। 

আশ্রয়ণ ঘর পেয়ে অনেকেই সংসারে সচ্ছলতা ফিরিয়েছেন। ছবি: আজকের পত্রিকাকিছু পরিবারের স্বাবলম্বী না হওয়ার চিত্র দেখা গেছে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়িয়াতেও। ছিটমহল হিসেবে পরিচিত দশিয়ারছড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে অনেকে কাজ খুঁজে পেয়েছে। অনেকে এখনো কিছুই করতে পারছেন না। বাড়ির পুরুষদের শহরে রিকশা চালিয়ে উপার্জন করতে হচ্ছে। 

এই প্রকল্পে ঘর পেয়েছেন মর্জিনা বেগম। তিনি বলেন, তাঁর দুই ছেলে ও স্বামী ঢাকায় রিকশা চালান। তবে স্বামীর হাঁপানির সমস্যা। এই বয়সে যদি এখানে একটা কিছু করা যেত তাহলে আরও ভালো হতো। 

মর্জিনা বলেন, ঘর পেয়ে অনেক খুশি। তবে আগের মতই বাড়ির সব পুরুষ বাড়ি থাকতে পারছে না। 

লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা ইউনিয়নে ৬৫টি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পেয়েছেন গৃহহীনেরা। এর আগে পাশেই রেলের জমিতে উদ্বাস্তুর মতো থাকতেন তাঁরা। এখন নিজের ঘর পেয়ে শুরু করেছেন চাষাবাদ। তিস্তা নদীর সঙ্গে গড়ে ওঠা এই আশ্রয়ণ প্রকল্পে শাকসবজি ও বাদাম চাষ এবং গরু–ছাগল পালন করে আয় বাড়িয়েছেন তাঁরা। 

তবে অভিযোগ আছে, এখানে ঘর পেলেও ২৫টি পরিবার এখনো থাকে রেলের জমিতে গড়ে তোলা আগের ঘরে। রাতে চৌকিদার এলে কেউ কেউ বাড়ি ফেরেন। 

এ বিষয়ে ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পের সেক্রেটারি মো. রছু মিয়া বলেন, কয়েকটি পরিবার এখনো আগের জায়গাতেই আছে। এ বিষয়ে প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। এটার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এদিকে সারা দেশে আরও ১৮ হাজার ৫৬৬টি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর হস্তান্তর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে দেশের আরও ৭০টি উপজেলা সম্পূর্ণ গৃহহীন মুক্ত হবে। আগামীকাল মঙ্গলবার গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এই ঘর এবং দুই শতাংশ করে জমির দলিল হস্তান্তর করবেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি 
নিহত শিশু শামীম। ছবি: সংগৃহীত
নিহত শিশু শামীম। ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া শিশু শামীম (১০) মারা গেছে। উদ্ধারের তিন দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। আজ শুক্রবার সকালে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

নিহত ব্যক্তির মামা সাব্বির হোসেন ও সখীপুর থানা-পুলিশ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত শামীম উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের শাহিন আলমের ছেলে ও স্থানীয় কীর্তনখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

নিহত শিশুর পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার দুপুর ১২টার দিকে শামীম বাড়ি থেকে বের হয়। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। একপর্যায়ে তাঁরা বাড়ির আশপাশের বনাঞ্চলে অনুসন্ধান চালান। পরে রাত ৮টার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে একটি বন থেকে শামীমকে রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। রাত ৯টার দিকে তাকে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার ধানমন্ডিতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।

নিহত শামীমের মামা সাব্বির হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছিলাম শিয়ালের আক্রমণে এমন হয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা জানান, এটি শেয়াল-কুকুরের আক্রমণের চিহ্ন নয়, শিশুটির মাথা ও শরীরের আঘাত করা হয়েছে।’

সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, নিহত শামীমের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুমকীতে অটো-টমটম সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ২

দুমকী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
দুমড়েমুচড়ে যাওয়া গাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুমড়েমুচড়ে যাওয়া গাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা

পটুয়াখালীর দুমকীতে অটোরিকশা ও সিমেন্টবাহী টমটমের সংঘর্ষে দুজন নিহত ও দুজন আহত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে লেবুখালী-বাউফল মহাসড়কের রাজাখালী (স্থানীয় নাম পিছাখালী ব্রিজ) এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বগা থেকে আসা যাত্রীবাহী অটোরিকশা বিপরীত দিক থেকে আসা সিমেন্টবাহী টমটমের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে ছয় বছরের রবিউল নিহত হন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে ৬০ বছর বয়সী ইব্রাহিম খানকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত সুমন সরদার (২৫) ও আব্দুল কাদেরকে (৫০) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আহত আব্দুল কাদেরের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সুমনের একটি হাত সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে। নিহত ও আহত ব্যক্তিদের বাড়ি বাউফল উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।

দুমকী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম উদ্দীন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দুর্ঘটনাকবলিত অটোরিকশা ও টমটমটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিবার অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দৌলতপুর সীমান্তে ভারতীয় নাগরিক পুশ ইনের চেষ্টা: ব্যর্থ হয়ে ১৪ জনকে ফেরত নিল বিএসএফ

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি 
১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুশ ইনের চেষ্টা করে বিএসএফ। শূন্য লাইন থেকে গতকাল দুপুরে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুশ ইনের চেষ্টা করে বিএসএফ। শূন্য লাইন থেকে গতকাল দুপুরে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সারা দেশে যখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি চলছে, ঠিক সেই সময় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্ত দিয়ে ১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুশ ইনের চেষ্টা চালিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) তৎপরতায় ওই চেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ১৪ ভারতীয় নাগরিককে জিরো লাইন থেকে ফেরত নিয়ে যায় বিএসএফ।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দিবাগত গভীর রাতে দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর বিওপির সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে প্রবেশ করানোর চেষ্টা করা হয়।

বিজিবি সূত্র জানায়, বিএসএফের আহ্বানে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে একটি পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের (৪৭ বিজিবি) অধীন মহিষকুন্ডি বিওপিতে কর্মরত সুবেদার আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের বিজিবি প্রতিনিধিদল এবং ১৪৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের নিউ উদয় কোম্পানি কমান্ডার এসি অনিল কুমারের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের বিএসএফ প্রতিনিধিদল বৈঠকে অংশ নেয়।

বৃহস্পতিবার বেলা ১টা ৪০ মিনিট থেকে ২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত সীমান্তের মেইন পিলার ১৫৪/০৭ এস-সংলগ্ন ভারতের অভ্যন্তরে চাইডোবা মাঠে এই পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিবির পক্ষ থেকে বাংলাদেশে ভারতীয় নাগরিক পুশ ইনের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয় এবং অবিলম্বে তাদের ফেরত নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

পরে শূন্য লাইনে অবস্থানরত ব্যক্তিদের পরিচয় ও ঠিকানা যাচাই করে তারা সবাই ভারতের ওডিশা প্রদেশের জগতসিংপুর সদর উপজেলার তারিকুন্ডা এলাকার বাসিন্দা বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। যাচাই শেষে বিএসএফ তাদেরকে ভারতের অভ্যন্তরে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।

পুশ ইনের চেষ্টা করা ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন মৃত হারুন শেখের ছেলে শেখ জব্বার (৭০), তাঁর চার ছেলে শেখ হাকিম (৪৫), শেখ ওকিল (৪০), শেখ রাজা (৩০) ও শেখ বান্টি (২৮); শেখ ওকিলের স্ত্রী শাবেরা বিবি (৩০); শেখ হাকিমের স্ত্রী শমশেরি বিবি (৪০); শেখ রাজার স্ত্রী মাইনু বিবি (২৫); শেখ জব্বারের স্ত্রী আলকনি বিবি (৬০); মৃত শেখ হোসেনের স্ত্রী গুলশান বিবি (৯০); শিশুদের মধ্যে রয়েছে শাকিলা খাতুন (১১), নাছরিন আক্তার (১২), শেখ তাওহিদ (১১) ও আড়াই বছর বয়সী শেখ রহিত।

এই ঘটনায় সীমান্তবাসীর মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। নির্বাচনকালীন স্পর্শকাতর সময়ে ভারতের এমন পুশ ইন চেষ্টাকে কেন্দ্র করে সীমান্ত এলাকায় নানা আলোচনা ও প্রশ্ন উঠেছে।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাশেদ কামাল রনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে কোনোভাবেই অবৈধ অনুপ্রবেশ বা পুশ ইন মেনে নেওয়া হবে না। সীমান্ত নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিজিবি সব সময় কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিরাজগঞ্জে দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ, আহত ২

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা তালতলা এলাকায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা তালতলা এলাকায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় মালবাহী দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক ট্রাকের চালক ও হেলপার গুরুতর আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

শুক্রবার সকালে উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা তালতলা এলাকায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন আজকের পত্রিকাকে জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা গবাদিপশুর খাবার (ভুসি) বহনকারী একটি ট্রাকের সঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা পাথরবোঝাই আরেকটি ট্রাকের সংঘর্ষ হয়। এতে একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে এবং অপরটি মহাসড়কের ওপর দাঁড়িয়ে যায়।

দুর্ঘটনার পর রেকার দিয়ে ট্রাক সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আহত চালক ও হেলপারের পরিচয় এখনো জানা যায়নি বলে জানান ওসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত