Ajker Patrika

বিমানে ওঠার স্বপ্ন পূরণে ১৫০ টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে যাত্রা শিশুর

শিপুল ইসলাম, রংপুর ও জসিম উদ্দিন, নীলফামারী
আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২৩, ০১: ৫৪
বিমানে ওঠার স্বপ্ন পূরণে ১৫০ টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে যাত্রা শিশুর

বিমান আকাশে ওড়ে, মানুষ বিমানে চড়ে। মানুষও আকাশে ওড়ে। এমন চিন্তা ১০ বছর বয়সী এক শিশুর মনে। তাই সে বিমানে উঠে আকাশে ওড়ার স্বপ্ন দেখে। স্বপ্নপূরণের জন্য জমায় ১৫০ টাকা। সেই টাকা খরচ করে রংপুর থেকে নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দরে যায়। নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে ঢুকে পড়ে ভিআইপি লাউঞ্জে। কিন্তু বিমানে আর ওঠা হয়নি তার। ভিআইপি লাউঞ্জে আটকে দেয় সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। গতকাল রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে এ ঘটনা ঘটে।

ওই শিশুর বাড়ি রংপুর সিটি করপোরেশনের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের দেওডোবা এলাকায়। সে নগরীর হাজি তমিজ উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়ের পাশের একটি ফার্নিচার দোকানে বিদ্যালয় ছুটির পর কাজ করে সে। গতকাল স্কুল বন্ধ থাকায় বাড়িতে ছিল। এরপর সে বিকেল ৪টার দিকে সৈয়দপুর বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হয়।

আজ সোমবার ওই শিশুর বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, তিন শতক জমির ওপর একটি টিনের ঘর। ঘরের সামনের চুলায় রান্না বসিয়েছেন তার দাদি। সেখানে বসে আছে ওই শিশু। তাকে ঘিরে প্রতিবেশীদের জটলা। সে তাদের শোনাচ্ছিল বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জে পৌঁছানোর গল্প।

ওই শিশু জানায়, গতকাল আসরের আজানের পর বাড়ি থেকে বের হয় সে। ১০ টাকা অটো ভাড়া দিয়ে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে আসে। এরপর সেখানে বাস না পাওয়ায় আরও ১০ টাকা দিয়ে মেডিকেল মোড়ে পৌঁছায়। সেখানে ৫০ টাকা ভাড়া দিয়ে বাসে করে সৈয়দপুর বাস টার্মিনালে যায়। সেখান থেকে ৫০ টাকায় একটি রিকশা ভাড়া করে বিমানবন্দরে যায়। সেখানে দুজন যাত্রীর পেছন নিয়ে ভিআইপি লাউঞ্জে পৌঁছায় সে।

শিশুটি আজকের পত্রিকাকে বলে, ‘আমার অনেক দিনের শখ বিমানে ওঠার। মানুষ নিয়ে বিমান কীভাবে আকাশে উড়ে তা দেখার। সে জন্য বিমানবন্দরে গেছি। বাইর থেকে ঘুরে দেখছি ভেতরে ঢোকা যাবে না। এরপর ভিআইপি গেট দিয়া ভেতরে ঢুকছি। আমাকে কোনো সিকিউরিটি গার্ড আনসার কেউ বাধা দেয়নি। ভেতরে ঢুকে বসেছিলাম। এরপর একজন অফিসার আমাকে জিজ্ঞাসাবা করে। আমি ঠিকানা বলি, তাঁরা কাউন্সিলরকে ফোন দেন, কাউন্সিলর মা-বাবাকে বললে আমাকে নিয়ে আসে। আমি বিমানে উঠতে পারিনি। আমার স্বপ্ন আমি বিমানের পাইলট হব।’

প্রতিবেশী ও পরিবারের লোকজন জানান, তিন ভাইবোনের মধ্যে বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে যাওয়া শিশুটি ছোট। পাঁচ মাস বয়সে তাকে রেখে মা অন্যত্র চলে যায়। বাবা মিঠু মিয়া পেশায় অটোরিকশার চালক। বাবার আয়ে পাঁচ সদস্যের সংসার চালাতে হিমশিম খাওয়ায় সে শহরের একটি ফার্নিচারের দোকানে কাজ করে। সেই দোকানমালিক তাকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছেন। শিশুটি ছোটবেলা থেকেই চঞ্চলপ্রকৃতির।

শিশুটির বাবা মিঠু মিয়া জানান, আকাশে বিমান উড়লে তা দেখতে ছোটবেলা থেকেই ঘর থেকে বাইরে ছুটে যায় সে। তার খুব ইচ্ছে বিমানে চড়ার। সে প্রায় রাতে বাবাকে বলে একদিন বিমানে উঠবে। বিমান চালাবে।

মিঠু মিয়া বলেন, ‘অভাবের তকনে ছাওয়াটাক মাইনসের দোকানোত থুছু। তায় স্কুলোত ভর্তি করি দিছে। কাল সেই মহাজনের সঙ্গে ঢাকা যাওয়ার কথা কয় বাড়ি থাকি বের হয়। রাইতোত শুনি ঢাকা নোয়ায় বিমান ওঠার জন্যে সৈয়দপুর গেইছে। পরে রাত ১১টার সময় বাড়ি নিয়া আসি।’

শিশুটির মহাজন স্থানীয় এ অ্যান্ড জেড ডোরস সিস্টেমের মালিক জিয়াউর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শিশুটি অত্যন্ত ভালো ছেলে। তার মা নেই। আমিও নিজে এতিম। তাই তাকে আমার কাছে রেখে লেখাপড়া করাচ্ছি। সে বিদ্যালয় ছুটির পর আমার ফার্নিচারের দোকান দেখাশোনা করে। প্রায় আমাকে বিমানে ওঠার কথা বলত সে।’

হাজি তমিজ উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহানারা বেগম বলেন, ‘শিশুটি আমার বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। স্কুলে আসার পর বিমানবন্দরে যাওয়ার ঘটনাটি শুনেছি। তার মা নেই, কেয়ার করার মতো কেউ নেই। তাকে অনুকূল পরিবেশ ও আর্থিক সহায়তা করলেও সে ভালো কিছু করবে।’

সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গতকাল স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে প্রটোকলে এয়ারপোর্ট পৌঁছে দিতে নিরাপত্তা বেষ্টনীভেদ করে ভিআইপি লাউঞ্জে ওই শিশুর অনুপ্রবেশের বিষয়টি জেনেছি। এটা সিভিল অ্যাভিয়েশনের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এ বিষয়ে তারা যে সিদ্ধান্ত নেবে তাই হবে।’ 

এর আগে ১১ সেপ্টেম্বর রাতে ১২ বছরের এক শিশু ভিসা-পাসপোর্ট ছাড়াই হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একটি বিমানের ফ্লাইটে উঠে পড়ে। পরে তাকে জিম্মায় নিয়ে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে কর্তৃপক্ষ। সারা দেশে ব্যাপক আলোচিত ছিল ওই ঘটনা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজবাড়ীতে চাঁদাবাজির সময় গণপিটুনিতে সম্রাট বাহিনীর প্রধান নিহত

রাজবাড়ী প্রতি‌নি‌ধি
সম্রাট বাহিনীর প্রধান অমৃত মন্ডল ওর‌ফে সম্রাট। ছবি: সংগৃহীত
সম্রাট বাহিনীর প্রধান অমৃত মন্ডল ওর‌ফে সম্রাট। ছবি: সংগৃহীত

রাজবাড়ীর পাংশায় চাঁদাবা‌জি করার সময় জনগ‌ণের পিটুনিতে সম্রাট বাহিনীর প্রধান অমৃত মন্ডল ওর‌ফে সম্রাট নিহত হ‌য়েছেন। এ সময় দু‌টি অস্ত্রসহ তাঁর সহ‌যো‌গী সে‌লিম শেখ‌কে আটক ক‌রে পু‌লি‌শে দি‌য়েছে জনতা। বুধবার দিবাগত রাত পৌ‌নে ১১টার দি‌কে উপ‌জেলার ক‌লিমহর ইউনিয়‌নের হো‌সেনডাঙ্গা গ্রা‌মে এই ঘটনা ঘ‌টে। নিহত সম্রাট উপ‌জেলার ক‌লিমহর ইউনিয়‌নের হো‌সেনডাঙ্গার অক্ষয় মন্ড‌লের ছে‌লে। আটক সে‌লিম একই ইউনিয়‌নের বসাকু‌ষ্টিয়া গ্রা‌মের ইসলাম শে‌খের ছে‌লে।

সম্রা‌টের সহ‌যো‌গী‌ সেলিমের কাছ থে‌কে এক‌টি পিস্তল ও এক‌টি ওয়ান শুটারগান জব্দ করে‌ছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সম্রা‌টের সহ‌যো‌গী‌ সেলিমের কাছ থে‌কে এক‌টি পিস্তল ও এক‌টি ওয়ান শুটারগান জব্দ করে‌ছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্থানীয় বাসিন্দাদের বরা‌ত দিয়ে পাংশা ম‌ডেল থানার ওসি শেখ মঈনুল ইসলাম জানান, সম্রাট নিজের না‌মেই এক‌টি বা‌হিনী গড়ে তু‌লে মানুষ‌কে ভয়ভী‌তি দে‌খি‌য়ে চাঁদাবা‌জি কর‌তেন। দীর্ঘদিন ভার‌তে পা‌লি‌য়ে থাকার পর সম্প্রতি এলাকায়‌ ফি‌রে এসে এক‌টি বাড়িতে চাঁদা দা‌বি ক‌রেন। কিন্তু তারা চাঁদার টাকা দি‌তে অস্বীকৃতি জানা‌য়। গত রা‌তে সম্রাট তাঁর বা‌হিনীর সদস‌্যদের নি‌য়ে ওই বাড়িতে চাঁদার টাকা আন‌তে যান। এ সময় ওই বাড়ির লোকজন ডাকাত ডাকাত ব‌লে চিৎকার দি‌লে আশপা‌শের লোকজন এসে ধ‌রে তাঁকে গণ‌পিটু‌নি দেয়। এতে ঘটনাস্থ‌লেই তাঁর মৃত‌্যু হয়। এ সময় তাঁর অন‌্য সহ‌যো‌গীরা পালি‌য়ে গে‌লেও অস্ত্রসহ ধরা প‌ড়েন সে‌লিম না‌মের একজন।

ওসি শেখ মঈনুল ইসলাম আরও জানান, সম্রা‌টের সহ‌যো‌গী‌ সে‌লিম‌ের কাছ থে‌কে এক‌টি পিস্তল ও এক‌টি ওয়ান শুটারগান জব্দ করা হয়ে‌ছে। নিহত সম্রা‌টের না‌মে হত‌্যা, চাঁদাবা‌জিসহ একা‌ধিক মামলা র‌য়ে‌ছে। সম্রা‌টের মর‌দেহ ময়ন‌াতদন্তের জন‌্য ম‌র্গে পাঠা‌নোর প্রস্তু‌তি চল‌ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎টঙ্গীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে জুলাই যোদ্ধা তাহরিমা গ্রেপ্তার

টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৬
টঙ্গীর মরকুন পূর্বপাড়া চৌরঙ্গীর পাড় এলাকায় নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার তাহরিমা জান্নাত সুরভী। ছবি: আজকের পত্রিকা
টঙ্গীর মরকুন পূর্বপাড়া চৌরঙ্গীর পাড় এলাকায় নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার তাহরিমা জান্নাত সুরভী। ছবি: আজকের পত্রিকা

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকার, সরকারের একাধিক উপদেষ্টা ও সেনাবাহিনীর প্রধানকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় মামলা দায়েরের পর গ্রেপ্তার করা হয়েছে জুলাই যোদ্ধা তাহরিমা জান্নাত সুরভীকে (২৫)। ‎বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত ১টার দিকে টঙ্গীর মরকুন পূর্বপাড়া চৌরঙ্গীর পাড় এলাকায় তাঁর নিজ বাসায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনী। পরে তাঁকে টঙ্গী পূর্ব থানায় হস্তান্তর করা হয়।

‎জানা যায়, গ্রেপ্তার তাহরিমা জান্নাত সুরভী দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বর্তমান সরকার, সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা এবং সেনাবাহিনীর প্রধানকে নিয়ে অশালীন, কুরুচিপূর্ণ ও রাষ্ট্রবিরোধী মন্তব্য করে আসছিলেন। তাঁর এসব বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

‎আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, তাহরিমা জান্নাত সুরভীর বিরুদ্ধে আগে থেকেই ওয়ারেন্ট জারি ছিল। একই সঙ্গে তাঁর অনলাইন কর্মকাণ্ড দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হতে পারে, এমন আশঙ্কায় গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাতে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।‎

‎টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মেহেদী হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘গ্রেপ্তার তাহরিমা জান্নাত সুরভীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানায় একটি চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে। ওই মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার সকালে কালিয়াকৈর থানা-পুলিশের কাছে তাহরিমাকে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পঞ্চগড়ে চার দিন ধরে ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীত

পঞ্চগড় প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০৪
ঘন কুয়াশার কারণে ভোরে হেডলাইট জ্বালিয়ে বাস চলছে। পঞ্চগড়ের তেলিপাড়া এলাকা থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘন কুয়াশার কারণে ভোরে হেডলাইট জ্বালিয়ে বাস চলছে। পঞ্চগড়ের তেলিপাড়া এলাকা থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

টানা চার দিন ধরে ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। ভোর থেকেই জেলার সড়ক ও জনপথ ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকছে। কনকনে ঠান্ডা আর কুয়াশার কারণে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। এর প্রভাব পড়েছে কর্মজীবী মানুষ থেকে শুরু করে হাসপাতালগুলোতে।

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১০০ শতাংশ। ঘন কুয়াশার কারণে ভোর থেকেই যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।

ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষেরা। ভোরে অনেকেই কাজে যেতে পারছেন না। শীত নিবারণের জন্য বিভিন্ন এলাকায় মানুষকে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা গেছে।

নাইট কোচের চালকেরা জানান, ঘন কুয়াশার কারণে রাস্তায় কিছুই দেখা যায় না। রফিকুল আলী নামের এক চালক বলেন, ‘এত কুয়াশায় সাবধানে গাড়ি চালিয়ে আসতে হয়েছে। শীত এলেই আমাদের এই সমস্যায় পড়তে হয়। কুয়াশায় সামনে কিছুই বোঝা যায় না।’

আরেকজন চালক জানান, কুয়াশার কারণে গতি কমিয়ে গাড়ি চালাতে হয়। একটু অসতর্ক হলেই দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।

শীতের প্রভাবে জেলার হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে রোগীর ভিড়। সর্দি-কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। সদর হাসপাতালের একজন চিকিৎসক জানান, তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। তিনি এ সময় গরম কাপড় ব্যবহার, উষ্ণ খাবার গ্রহণ এবং প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দেন।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, ১১ থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত তেঁতুলিয়ায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। গত শনিবার তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও পরবর্তী দিনগুলোতে তা আবার কমে গেছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক কাজী সাইমুজ্জামান জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে প্রায় ১৫ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। আরও শীতবস্ত্রের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। প্রাপ্ত শীতবস্ত্রগুলো প্রতিটি উপজেলায় সমানভাবে ভাগ করে শীতার্ত মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পিরোজপুর-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক ভিপি মাহমুদ হোসেন

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি 
মাহমুদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
মাহমুদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

পিরোজপুর-২ (কাউখালী, ভান্ডারিয়া ও নেছারাবাদ) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক ভিপি মাহমুদ হোসেন। মোবাইলে আলাপকালে মাহমুদ হোসেন নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মাহমুদ হোসেন ভান্ডারিয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি এবং প্রখ্যাত সাংবাদিক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার ভাতিজা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পিরোজপুর-২ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে এই আসনে বিএনপির একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক বলয় গড়ে উঠেছে বলে স্থানীয়ভাবে জানা যায়।

উল্লেখ্য, পিরোজপুর-২ আসনে বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন আহমদ সোহেল মঞ্জুর সুমন। গত মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পরপরই মাহমুদ হোসেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

এ বিষয়ে মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘আমি ২০২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেও ছাত্রজীবন থেকেই বিএনপির আদর্শে বিশ্বাসী। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের চেতনাকে ধারণ করে সব সময় দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি।’

মাহমুদ হোসেন আরও বলেন, ‘পিরোজপুর-২ আসনের সাধারণ মানুষ আমাকে এই আসনে নেতৃত্বে দেখতে চান। জনগণের সেই প্রত্যাশাকে প্রাধান্য দিয়েই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিএনপি একটি গণমানুষের দল। সেই গণমানুষের চাওয়াকেই গুরুত্ব দিয়ে সামনে এগোতে চাই।’

মাহমুদ হোসেন জানান, শিগগির তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করবেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত