Ajker Patrika

পঞ্চগড়ে সংঘর্ষ: ট্রাফিক অফিসে ফাইলের আলমারি থেকে এখনো ধোঁয়া উঠছে 

আল মামুন জীবন ও শিপুল ইসলাম, পঞ্চগড় থেকে
পঞ্চগড়ে সংঘর্ষ: ট্রাফিক অফিসে ফাইলের আলমারি থেকে এখনো ধোঁয়া উঠছে 

পঞ্চগড়ে আহমদিয়া জামাতের ‘সালানা জলসা’ বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার ১ দিন পেরিয়ে গেলেও পঞ্চগড় ট্রাফিক অফিসে এখন পর্যন্ত আগুন জ্বলছে। সেই আগুনে অফিসের ফাইলপত্র জ্বলছে, উঠছে ধোঁয়া। 

আজ শনিবার বিকেল ৫টায় জেলা শহরের প্রবেশদ্বার করতোয়া বীজ সংলগ্ন পঞ্চগড় ট্রাফিক অফিসে সরেজমিনে এ চিত্র দেখা গেছে। এ দিকে আহমাদিয়া সম্প্রদায়ের (কাদিয়ানি) বেশ কিছু ব্যক্তির বাড়িতে এখন পর্যন্ত কয়লা থেকে ধোয়া উড়তে দেখা গেছে। 

দেখা যায়, রাস্তার পশ্চিম পাশে পঞ্চগড় ট্রাফিক অফিসের পুলিশ বক্স পুড়ে গেছে। ট্রাফিক অফিস ভাঙচুর করা জানালার কাচ বাইরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। অফিসের ভেতরে থাকা মোটরসাইকেল, আলমারি ও অন্যান্য আসবাবপত্র এবং ফাইল পুড়ে গেছে। 

ট্রাফিক অফিসে পুড়ে যাওয়া মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য জিনিসপত্রট্রাফিক অফিসে এসব ভাঙচুর ও পুড়ে যাওয়া কয়লা দেখছিলেন নিমনগর গ্রামের শাওন আলী নামে এক যুবক। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গতকাল দুপুরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এরপরে আমরা কেউ ঘর থেকে বের হয়নি ভয়ে। সকাল থেকেও আতঙ্কে ছিলাম। বিকেলের পর পুলিশ, বিজিবিকে রাস্তায় দেখে বের হয়েছি। শুনেছিলাম ট্রাফিক পুলিশের অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। এখন এসে দেখলাম আগুন এখনো জ্বলছে, ফাইলপত্র পুড়ছে। কিছু ফাইলপত্র এখনো রক্ষা করা সম্ভব। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের লোকজন কেউ আসেনি।’

ট্রাফিক অফিস দেখতে আসা রহিমুল্লাহ নামের অপর এক যুবক বলেন, ‘আমি এখানে আসার আধা ঘণ্টা হলো। অফিসের কাউকে দেখিনি। অফিসের সব পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। দেয়াল আর টিন ছাড়া কিছুই বাদ যায়নি।’

পঞ্চগড় ট্রাফিক অফিসের দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর কাজী কামরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের ৭টি মোটরসাইকেল,১টি কম্পিউটারসহ ৬টি কক্ষে থাকা যাবতীয় আসবাবপত্র, সরকারি ফাইল এবং কাপড়চোপড় পুড়ে গেছে। গতকাল থেকে সকলেই অফিসের বাইরে। আমি এখন অফিসের দিকে যাচ্ছি। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’ 

অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘরপঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক শেখ মো. মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে আমরা পুরো টিম সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। কোনো স্থানে আগুনের খবর দিলে আমরা যাব, যদি পুলিশের নিরাপত্তা পাই।’ 

এ দিকে পঞ্চগড় শহর থেকে ‍দুই কিলোমিটার দুরে আহমাদিয়া গ্রাম, শালসিড়ি ও ফুলতলা গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ বাড়ির সব আসবাবপত্র পুড়ে গেছে। অনেক বাড়ির আংশিক জ্বললেও ভেঙে ফেলা হয়েছে টিনের বেড়া, দরজা ও জানালা। কিছু বাড়ির পোড়া কয়লা থেকে এখনো ধোঁয়া বের হচ্ছে। 

ফুলতলা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হানিফের সঙ্গে কথা হলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যখন আগুন লাগিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা, তখন আমরা সবাই সালানা জলসার মাঠে ছিলাম। ভয়ে বের হয়নি। সকাল ১০টার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন এলাকায় আসার পর আমরা নিজ বাড়িতে ফিরেছি। যে কাপড় পড়ে সালানা জলসায় গিয়েছিলাম। সেটা ছাড়া সবই পুড়ে গেছে। আমার প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।’ 
 
তাঁর মতো ওই এলাকার প্রত্যেকটি বাড়ি সবকিছু পুড়ে গেছে। অনেকের গরু-ছাগল, নগদ টাকা পয়সা এবং স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। যেসব নিতে পারেনি সেগুলো জ্বালিয়ে অথবা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। 

এদিকে শনিবার বিকেল ৪টায় পঞ্চগড়ের সালানা জলসার মাঠে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ আহমদিয়া মুসলিম জমা’ত এর গণযোগাযোগ, প্রেস ও মিডিয়া বিভাগের বহিঃসম্পর্ক সম্পাদক আহমদ তবশির চৌধুরী বলেন, ‘তিনটি গ্রামে প্রায় দেড় শতাধিক বাড়ি পুড়ে গেছে। এর মধ্যে অধিকাংশ বাড়ির কোনো কিছুই রক্ষা করা যায়নি। ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা হবে। সেটা আমরা লোক পাঠিয়ে নিরূপণ করছি। পরে আপনাদের বিস্তারিত জানাতে পারব।’ 

অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘরশনিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও শহরের চৌরঙ্গীর মোড়, ধাক্কামারার মোড়, গোল চত্বরসহ শহরের বিভিন্ন এলাকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা গেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও যান চলাচলসহ লোকজনের উপস্থিতি কম দেখা গেছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া শহরে বেরোচ্ছেন না কেউ। আর কঠোর টহলে রয়েছে পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। শহরে মানুষের আনাগোনা কমে যাওয়ায় ক্রেতা ও যাত্রীসংকটে অলস সময় পার করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ রিকশা ও ইজিবাইকের চালকেরা। 

উল্লেখ্য, পঞ্চগড়ের আহমদিয়া জামাতের ‘সালানা জলসা’ বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যে প্রায় ছয় ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষে আরিফুর রহমান (২৮) ও জাহিদ হাসান (২৩) নামের দুই তরুণ নিহত হয়। সংঘর্ষে পুলিশের ৯ সদস্য ও ২ সাংবাদিকসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। 

নিহত আরিফুর রহমান পঞ্চগড় পৌরসভার মসজিদপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি শহরের একটি ছাপাখানার ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। জুমার নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরার সময় তিনি সংঘর্ষের মধ্যে পড়লে তাঁর মাথায় গুলি লাগে। স্থানীয় লোকজন আরিফুরকে উদ্ধার করে প্রথমে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। শনিবার বিকেলে তাঁর নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে। 

অপর দিকে নিহত জাহিদ হাসান নাটোর জেলার বনপাড়া উপজেলার চিরোইল নোটাবাড়ীয়া গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। তাঁকে করতোয়া নদীর ধারে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা বলে অভিযোগ করেছেন আহমদিয়া জামাতের সালানা। 

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভৈরবে গ্যাসের লিকেজ থেকে আগুন, ১০ শিশুসহ দগ্ধ ১৫

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি ও ভৈরব সংবাদদাতা
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে ১০ শিশুসহ ১৫ জন দগ্ধ হয়েছে। এর মধ্যে ১২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের লুন্দিয়া চরপাড়া বাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্বজন ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, দগ্ধদের উদ্ধার করে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ১২ জনকে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠান। বাকি তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দোকান মালিক, লুন্দিয়া টুকচানপুর গ্রামের বাসিন্দা জহির মিয়া পুরি ও রুটি ভাজি বিক্রি শেষে সকালে ১০টার দিকে প্রতিদিনের মতো দোকান বন্ধ করে বাড়ি যান। তিনি ভুলে গ্যাস সিলিন্ডারের রেগুলেটরের সুইচ বন্ধ করেননি। দীর্ঘ সময় ধরে দোকানের ভেতর গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। পরে এক পর্যায়ে গ্যাসের বিস্ফোরণে দোকানে আগুন ধরে যায়। এসময় দোকানের সামনে থাকা পথচারী এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দগ্ধ হন।

আহতরা হলেন—হারুন মিয়া (৪০), সোহাগ মিয়া (১০), ওয়াসিবুল (১০), সামিউল (৯), আল আমিন (৮), শুভ (৮), নিরব (১৫), রাহাত (১২), ফাহিম (১০), আমিন (১০), হেকিম মিয়া (৫৫), সেরাজুল (১০), ছিদ্দিক মিয়া (৫৮), মোর্শিদ মিয়া (৫০) ও নাছির মিয়া (৪০)।

চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে স্বজনেরা জানান, আহতদের মধ্যে হারুন মিয়ার শরীরের প্রায় ৮০ শতাংশ দগ্ধ হওয়ায় তাঁর অবস্থা সংকটজনক।

প্রত্যক্ষদর্শী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘হঠাৎ রাস্তার ওপর আগুন ছড়িয়ে পড়ে। চোখের সামনে কয়েকজন মানুষ আগুনে পুড়তে দেখি। পরে জানতে পারি গ্যাস সিলিন্ডার থেকেই আগুন ছড়িয়েছে।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কিশোর কুমার ধর বলেন, ১৫ জন অগ্নিদগ্ধ রোগী হাসপাতালে আসে। একজনের শরীরের ৮০ শতাংশ এবং অন্যদের ২০–৩০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। ১২ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা, আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি যুবকের

নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি 
দুলাল মিয়া। ছবি: সংগৃহীত
দুলাল মিয়া। ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার একটি গ্রামে তৃতীয় শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

গ্রেপ্তার আসামির নাম দুলাল মিয়া (২৮)। তিনি ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করে গতকাল বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। বিচারক আশরাফুল আলম আসামির জবানবন্দি নথিভুক্ত করেন। পরে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়।

নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাকছুদ আহাম্মদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আসামির জবানবন্দির বরাতে ওসি মাকছুদ আহাম্মদ জানান, গত মঙ্গলবার রাতে দুলাল মিয়া আট বছরের ওই শিশুকে ঘর থেকে ডেকে নেন। এরপর তাকে বাড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এ সময় শিশুটি চিৎকার করলে শ্বাস রোধ করে তাকে হত্যা করেন দুলাল।

মাকছুদ আহাম্মদ জানান, এদিকে ওই রাতেই শিশুকে না পেয়ে তার পরিবার খোঁজাখুঁজি শুরু করে। সে সময় সন্ধান চেয়ে মাইকে প্রচারও করা হয়। তখন দুলাল মিয়াও শিশুটির বাবার সঙ্গে খোঁজাখুঁজিতে যোগ দেন। পরদিন গত বুধবার সকালে বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত একটি ঘর থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় দুলাল মিয়া ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দিয়ে পুলিশ সদস্যদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন।

জবানবন্দির বরাতে ওসি মাকছুদ আহাম্মদ বলেন, ‘লাশ উদ্ধারের সময় দুলাল মিয়ার আচরণে আমাদের সন্দেহ হয়। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সুপার মো. আব্দুর রউফ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আল সরকারের সঙ্গে কথা হয়। পরে বুধবার রাতে শিশুটির বাবা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে ধর্ষণ ও হত্যা মামলা করেন। মামলার পরই দ্রুত তদন্ত শুরু করে ঘটনাস্থলসংলগ্ন বিভিন্ন আলামত পর্যালোচনা শেষে ওই রাতেই দুলাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শিশুটির লাশের ময়নাতদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মামলা ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি 
পাবনার চাটমোহরে অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনের একটি মামলাকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাবনার চাটমোহরে অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনের একটি মামলাকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাবনার চাটমোহর উপজেলায় অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনের একটি মামলাকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, মামলায় নির্দোষ ব্যক্তিদের ফাঁসানো হয়েছে। পুনঃতদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদ্‌ঘাটন ও অভিযুক্তদের খালাস দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

আজ শুক্রবার সকালে চাটমোহর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের পক্ষে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন মামলার ১ নম্বর বিবাদী, ছাইকোলা ইউনিয়নের কুবড়াগাড়ি গ্রামের শফিকুল ইসলামের স্ত্রী সুমাইয়া খাতুন।

জানা গেছে, গত ৪ জুলাই রাত আড়াইটার দিকে কুবড়াগাড়ি গ্রামের আব্দুর রহিম (৬৫) নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। ওই সময় দুর্বৃত্তরা তাঁকে ঘর থেকে বাইরে ডেকে শরীরে দাহ্য পদার্থ ঢেলে দেয়। এতে তিনি দগ্ধ হন। প্রথমে তাঁকে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। এ ঘটনায় আব্দুর রহিমের ভাই আব্দুল আজিজ বাদী হয়ে প্রতিবেশী সাতজনকে বিবাদী করে অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনে মামলা করেন। মামলার ছয়জন জামিন পেলেও ১ নম্বর বিবাদী শফিকুল ইসলাম এখনো কারাগারে।

সংবাদ সম্মেলনে সুমাইয়া খাতুন দাবি করেন, ঘটনার দিন ওই সময়ে তাঁর স্বামী চাটমোহরে ছিলেন না। তাঁরা দুজনই সেদিন চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ছিলেন, যেখানে তাঁরা ফুটপাতে বিরিয়ানি বিক্রি করেন। তা সত্ত্বেও তাঁর স্বামীকে মামলার ১ নম্বর বিবাদী করা হয়েছে। এ ছাড়া শফিকুলের পিতা শহিদ সরদারসহ আরও দুই ভাইকে মামলায় জড়ানো হয়েছে।

সুমাইয়ার ভাষ্য, ‘আমার স্বামী গ্রামে থাকেন না। আমরা তিন সন্তান নিয়ে হাটহাজারীতেই থাকি। প্রতিপক্ষ আমাদের ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে মিথ্যা মামলা করেছে। প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করা হয়নি। আমরা অন্যায়ের শিকার।’ তিনি অভিযোগ করেন, মামলার তদন্তে গাফিলতি থাকায় তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে হয়রানির শিকার। তিন সন্তানসহ মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে মামলাটি পুনঃতদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করা এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান পরিবারের সদস্যরা। সেখানে শফিকুল ইসলামের পিতা শহিদ সরদার, তাঁর মা ও অন্যান্য স্বজন উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গুলশানে ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ জব্দ, গ্রেপ্তার ১

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
র‍্যাবের হাতে জব্দ হওয়া ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ। ছবি: র‍্যাব
র‍্যাবের হাতে জব্দ হওয়া ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ। ছবি: র‍্যাব

রাজধানীর গুলশানে মদের চালানসহ এক মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ ও মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত একটি পিকআপ ভ্যান জব্দ করা হয়।

আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে।

গ্রেপ্তার রবিউল ইসলাম (২১) নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার ভিটি গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে।

এ বিষয়ে র‍্যাব-১-এর কর্মকর্তা মো. রাকিব হাসান বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গুলশানে অভিযান চালিয়ে ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ, মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত পিকআপ ভ্যানসহ রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে গুলশান থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত