Ajker Patrika

বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অপারেটর নিয়োগের নথিপত্র তলব করল দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
বিএমডিএর সেচ শাখার প্রধান তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম খানের দপ্তরে দুদক কর্মকর্তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিএমডিএর সেচ শাখার প্রধান তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম খানের দপ্তরে দুদক কর্মকর্তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) গভীর নলকূপ অপারেটর নিয়োগ নিয়ে অভিযোগ ওঠার পর অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিএমডিএর সেচ শাখার প্রধান তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম খানের দপ্তরে এই অভিযান চালানো হয়।

দুদকের দলটির নেতৃত্ব দেন সংস্থাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন। অভিযানে ছিলেন উপসহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিন এবং উপসহকারী পরিচালক মাহবুবুর রহমান। তাঁরা জাহাঙ্গীর আলম খানের দপ্তরে অপারেটর নিয়োগসংক্রান্ত নথিপত্র দেখেন।

রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলায় বিএমডিএর ১৬ হাজারের বেশি গভীর নলকূপ রয়েছে। আওয়ামী সরকারের পতনের পর সব অপারেটরের নিয়োগ বাতিল করা হয়। এরপর নতুন অপারেটর নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এসব নলকূপের অপারেটর হিসেবে নিয়োগ পেতে ২৩ হাজার ৭৫২ জন আবেদন করেন। মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার পর প্রায় ৮ হাজার জনকে নিয়োগের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছিল। এই তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও তানোরে বিএমডিএর জোন কার্যালয় ঘেরাও, এমনকি কার্যালয়ে তালা দিয়ে চাবি নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে।

এর ফলে মনোনীত হওয়া প্রায় সাড়ে ৪ হাজার অপারেটরের নিয়োগপ্রক্রিয়া স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। এখন আবার পুরোনো আবেদন থেকে নতুন করে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই অনিয়ম নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর দুদক এই অভিযান পরিচালনা করে।

জানতে চাইলে বিএমডিএর সেচ শাখার প্রধান তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম খান বলেন, ‘নিয়োগপ্রক্রিয়া আটকে থাকার সংখ্যাটি সাড়ে ৪ হাজার হবে না। বড়জোর ৫ থেকে ৬ শতাংশ হতে পারে। যাদের বিষয়ে অভিযোগ এসেছে, সেগুলো আটকে আছে। দুদক এসে নথিপত্র দেখেছে। কিছু নথিপত্র চেয়েছেও। নথিপত্র সরবরাহের জন্য আমি একটু সময় নিয়েছি।’

এদিকে সেচ শাখার অভিযানের পর দুদক দল বিএমডিএর ‘ভূগর্ভস্থ সেচ নালা বর্ধিতকরণের মাধ্যমে সেচ এলাকার সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) শহীদুর রহমানের দপ্তরে যান। এই কর্মকর্তা ১৯ কোটি টাকার পাইপলাইন স্থাপনের কাজ ঠিকাদারদের কাছে ‘বিক্রি’ করেছেন বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এর ভিত্তিতেই দুদক দল সেখানেও অভিযান পরিচালনা করে। তবে এই অভিযোগের সত্যতা মেলেনি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

জানতে চাইলে পিডি শহীদুর রহমান বলেন, যে ১৯ কোটি টাকার কাজ টাকার বিনিময়ে দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা সঠিক নয়। কারণ, ওই টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষই হয়নি। কোনো ঠিকাদারকে কার্যাদেশও দেওয়া হয়নি। দুদক দলকে তিনি এ-সংক্রান্ত নথিপত্র দেখিয়েছেন।

অভিযান শেষে সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন বলেন, কর্মকর্তারা তাঁদের পক্ষে কাগজপত্র দেখিয়েছেন। অপারেটর নিয়োগসংক্রান্ত কিছু নথিপত্র চাওয়া হয়েছে। এগুলো হাতে পাওয়ার পর বিশ্লেষণ করা হবে। এরপর প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত