Ajker Patrika

রাজশাহী-২: ওয়ার্কার্স পার্টির বাদশার সব প্রতিশ্রুতি অপূর্ণ, দলীয় প্রার্থী চান আ.লীগ নেতারা

রিমন রহমান, রাজশাহী
আপডেট : ২৫ নভেম্বর ২০২৩, ১৮: ৪৫
রাজশাহী-২: ওয়ার্কার্স পার্টির বাদশার সব প্রতিশ্রুতি অপূর্ণ, দলীয় প্রার্থী চান আ.লীগ নেতারা

পুরো শহর নিয়ে সংসদীয় আসন রাজশাহী-২। এ আসনের সংসদ সদস্য বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। ২০০৮ সাল থেকেই পর পর তিন মেয়াদে ১৪ দলের মনোনয়নে তিনি এখানে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। এ জন্য নিজ দলের হাতুড়ি প্রতীক বাদ দিয়ে ভোট করেছেন আওয়ামী লীগের নৌকা নিয়ে। এবারও নির্বাচনে অংশ নিতে তিনি ওয়ার্কার্স পার্টির দলীয় মনোনয়ন ফরম উত্তোলন করেছেন। তাঁর দলের নেতারা আশা করছেন, এবারও বাদশাকে ১৪ দলের প্রার্থী করবে আওয়ামী লীগ। 

তবে বিভাগীয় এই শহরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ আসনটি শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টিকে দিতে চান না স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা। তাঁরা বলছেন, উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফজলে হোসেন বাদশা রাজশাহীর মানুষকে বারবার ধোঁকা দিয়েছেন। শহরের যা উন্নয়ন করার তা করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। বাদশার তেমন অবদানই নেই। নিজ দলের এমপি থাকলে ত্বরান্বিত হতো উন্নয়ন। তাই তাঁরা এবার এ আসনে নিজেদের দল থেকে এমপি প্রার্থী চান। 

এবার ফজলে হোসেন বাদশাকে ১৪ দলের প্রার্থী করা হলেও আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশ আলাদা প্রার্থী নিয়ে ভোটের মাঠে নামবে—এমন ইঙ্গিতও পাওয়া গেছে। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে দলীয় মনোনয়ন ফরম তুলেছেন দলটির রাজশাহী মহানগরের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, যুগ্ম সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু, সহসভাপতি শফিকুর রহমান বাদশা ও নগর যুবলীগের সদ্য সাবেক সভাপতি রমজান আলী। তাঁরা এবার নৌকার মাঝি বদলের দাবি তুলেছেন। 

কেন এ দাবি
আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা বলছেন, রাজশাহী শহরে ওয়ার্কার্স পার্টির তিন-চার হাজারের বেশি ভোট নেই। ফজলে হোসেন বাদশা আওয়ামী লীগের ভোটে এমপি হলেও এই দলের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেন না। বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগের রাজশাহীর শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বেফাঁস মন্তব্যও করেন তিনি। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে ফজলে হোসেন বাদশা তাঁর ৪৪ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছিলেন। সেই ইশতেহারের কিছুই পূরণ করতে পারেননি। সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে ভূমিকা রাখেননি উন্নয়নে। 

গত নির্বাচনের আগে বাদশার প্রতিশ্রুতিগুলোর মধ্যে ছিল ব্যাপক হারে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও ডেন্টাল কলেজ স্থাপন, রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন, শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা, পূর্ণাঙ্গ সংগীত, আয়ুর্বেদিক ও ইউনানি মহাবিদ্যালয় স্থাপন, বিশ্বমানের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা, ভাষা ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা, রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক কলেজ ও হাসপাতালের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ, পানি শোধনাগার প্রকল্প বাস্তবায়ন, বস্তিবাসীদের জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানির সরবরাহ নিশ্চিত, বস্তি উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় তাঁদের সুলভে আবাসন সৃষ্টি, পদ্মা নদীকে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের আওতায় নিয়ে আসা, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে তোলা, মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক এবং সাংবাদিকদের জন্য বিশেষ আবাসিক এলাকা গড়ে তোলা, পূর্ণাঙ্গ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার স্থাপন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু স্থাপন এবং আধুনিক মানের একটি আর্কাইভ ও জাদুঘর স্থাপন করা। 

এর পাশাপাশি বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরকে বিশ্বপরিসরে তুলে ধরা, রাজশাহী বিমানবন্দরটিকে কার্গো ও রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ সুবিধাসহ আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দরে উন্নীত করা, রাজশাহী থেকে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন বন্দরে বিশেষ ট্রেন সার্ভিস চালু, রাজশাহী-কলকাতা ট্রেন ও বিমান সার্ভিস চালু, ঢাকা-রাজশাহী একাধিক বিরতিহীন ট্রেন চালু, রাজশাহীর সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি জাতীয় মহাসড়ককে ৪ ও ৬ লেনে উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। প্রতিশ্রুতি ছিল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে দুই হাজার শয্যায় উন্নীত করার। তিনি হাসপাতাল পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হিসেবে থাকলেও তা পারেননি। অন্যান্য প্রতিশ্রুতিগুলোরও কিছুই তিনি পূরণ করতে পারেননি পাঁচ বছরে। তিনি তাঁর ঐচ্ছিক তহবিলের অর্থ স্বজনপ্রীতি করে বরাদ্দ দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। 

মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শফিকুর রহমান বাদশা বলেন, ‘ভোটের সময় ফজলে হোসেন বাদশা নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কিন্তু তা বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ নেননি। এগুলো বাস্তবায়ন করতে হলেও আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা দরকার ছিল। তিনি সেটা রাখেননি। এখন তিনি ভোট চাইতে গেলে মানুষ তাঁর কাছে প্রশ্ন করবে গতবারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের খবর কি? তিনি জবাব দিতে পারবেন না। তাই এবার আমরা কোনো ভাড়াটে এমপি চাই না। আমরা এবার আমাদের দল থেকেই এমপি প্রার্থী চাই।’ 

মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল বলেন, ‘রাজশাহী শহরে ওয়ার্কার্স পার্টির তিন-চার হাজারের বেশি ভোট নেই। আমরা ভোট দিয়ে তাঁকে এমপি বানাই। কিন্তু তিনি আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেন না। এই যে এখন হরতাল-অবরোধের বিরুদ্ধে আমরা মাঠে আছি, তিনি নেই। আমাদের সঙ্গে না থাকুক, তিনি তাঁর দলের সঙ্গে তো রাজশাহীর মাঠে থাকতে পারতেন। সেটাও আমরা দেখিনি।’ 

নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু বলেন, ‘রাজশাহী একটা বিভাগীয় শহর। এখানকার উন্নয়ন করতে হলে সিটি মেয়র ও এমপির সমন্বয় থাকা দরকার। সেই সমন্বয়টা এমপি ফজলে হোসেন বাদশা করেন না। তাই আমরা নিজ দলেরই এমপি চাই। তাহলে মেয়রের সঙ্গে হাতে হাত রেখে শহরটাকে দ্রুত এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।’ 

আসন চায় জাসদও
জোটের কারণে আওয়ামী লীগ আবারও ওয়ার্কার্স পার্টিকে এ আসন ছেড়ে দিচ্ছে কি না তা ভেবে অস্বস্তিতে আছেন দলটির স্থানীয় নেতারা। এর মধ্যে আসনটি দাবি করছে আরেক শরিক দল জাসদ। দলটি তাঁদের মহানগরের সভাপতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ শিবলীকে মনোনয়ন দিয়েছে। 

শিবলী বলেন, ‘১৫ বছর ধরে আসনটা তো ওয়ার্কার্স পার্টিকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁদের এমপি ১৪ দলের এমপি হতে পারেননি। ফজলে হোসেন বাদশা শুধু ওয়ার্কার্স পার্টিরই এমপি হয়ে থেকেছেন। ১৫ বছরের মধ্যে তিনি ১২ বছরই শরিক দলগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন। ভোটের সময় ছাড়া অন্য সময় কোনোরকম যোগাযোগ রাখেননি। জনগণ থেকেও তিনি বিচ্ছিন্ন। বর্তমানে তিনি অসুস্থও। তাই চাই, এ আসনটা এবার জাসদকে দেওয়া হোক।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে যদি ১৪ দলের প্রার্থী করা নাও হয়, তবুও আমাদের নিজ দলের মশাল প্রতীক নিয়ে আমার নির্বাচন করার সুযোগ আছে। সারা দেশেই কিছু আসন এ রকম ওপেন থাকবে। রাজশাহী সদর আসনটিও ওপেন সিট হিসেবে থাকবে। আমি নির্বাচন করতে চাই।’ 

ওয়ার্কার্স পার্টিতেও প্রস্তুতি
সদর আসনে ১৪ দলের প্রার্থী আসলেই কে হচ্ছেন তা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে কিছুদিন ধরে ভোটের প্রস্তুতি শুরু করেছে ওয়ার্কার্স পার্টি। এই দলের সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার হাতেই নৌকা তুলে দেওয়া হবে ধরে নিয়ে কাজ শুরু করেছেন স্থানীয় নেতারা। নির্বাচনের জন্য বিভিন্ন কমিটিও করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের নিজ দলের ভেতর থেকে প্রার্থী করার দাবির বিষয়ে কথা বলতে ফজলে হোসেন বাদশাকে ফোন করা হয়। তবে তিনি ধরেননি। 

ওয়ার্কার্স পার্টির রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ প্রামাণিক দেবু বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের আগে আগে স্থানীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ রকম দাবি তোলা হয়। তবে এ অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান ঠেকাতে ১৪ দলের ঐক্যের বিকল্প নেই। আমরা মনে করি, এবারও আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদককেই এখানে ১৪ দলের প্রার্থী করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনা-৩ আসনে তিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল, বৈধ ৯টি

খুলনা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

খুলনা-৩ (খালিশপুর-দৌলতপুর-খানজাহান আলী-আড়ংঘাটা) আসনে তিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এই আসনে ১২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। যাচাই-বাছাই শেষে ৯ জনের মনোনয়ন বৈধ এবং ৩ জনের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করা হয়। আজ বুধবার দুপুরে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সাল কাদের এই তথ্য জানান।

ফয়সাল কাদের জানান, ঋণখেলাপিসহ বিভিন্ন কারণে যাঁদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে, তাঁরা হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রউফ মোল্যা, আবুল হাসান সিদ্দিক ও আরিফুর রহমান মিঠু। তবে তাঁরা চাইলে বিধি অনুযায়ী আপিল করতে পারবেন।

এই আসনে যাঁদের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে, তাঁরা হলেন ইসলামী আন্দোলনের মো. আউয়াল, বিএনপির রকিবুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর মাহফুজুর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী মুরাদ খান লিটন ও মইন মোহাম্মদ মায়াজ, বাসদের জনার্দন দত্ত, খেলাফত মজলিসের এফ এম হারুন অর রশিদ, এনডিএমের শেখ আরমান হোসেন এবং জাতীয় পার্টির আব্দুল্লাহ আল মামুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কক্সবাজারে পর্যটকের ভিড়, থার্টি ফার্স্ট নাইটে ৭ দফা বিধিনিষেধ পুলিশের

মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ০৩
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

পুরোনো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রতিবছর থার্টি ফার্স্ট নাইটে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে লাখো পর্যটকের সমাগম ঘটে। এ বছরও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমণপিপাসুরা কক্সবাজারে এসেছেন। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সারা দেশে শোকের আবহ বিরাজ করায় অনেকেই ভ্রমণ বাতিল করেছেন বলে জানিয়েছেন পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

এদিকে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামীকাল ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সমুদ্রসৈকতসহ উন্মুক্ত স্থানে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ও জনসমাগম না করতে ৭ দফা বিধিনিষেধ জারি করেছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার জেলা পুলিশের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব, অপপ্রচার ও উসকানিমূলক বক্তব্য ছড়ানো, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট, নাশকতা কিংবা সহিংস কর্মকাণ্ড থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে। এ ছাড়া উচ্চ শব্দে হর্ন বাজানো, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালানো নিষিদ্ধ থাকবে।

জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) অলক বিশ্বাস বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইটে কক্সবাজার শহর ও সমুদ্রসৈকতে আতশবাজি ও পটকা বিক্রি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে। একই সময়ে উন্মুক্ত স্থান ও রাস্তায় কোনো কনসার্ট কিংবা নাচগানের আয়োজন করা যাবে না। পাশাপাশি ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বার ও মদের দোকানে বেচাকেনা বন্ধ থাকবে।

অলক বিশ্বাস জানান, বিধিনিষেধ কার্যকরের পাশাপাশি শহরের প্রবেশমুখসহ গুরুত্বপূর্ণ ১০টি স্থানে তল্লাশিচৌকি বসিয়ে নজরদারি জোরদার করা হবে।

পর্যটকের উপস্থিতি

বছরের শেষ দিন ও নতুন বছরের শুরুতে কক্সবাজারে সাধারণত পর্যটকের ঢল নামে। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারাও সৈকতে ভিড় জমান। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে ৮-৯ বছর ধরে সৈকতে বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণের উন্মুক্ত কোনো আয়োজন হচ্ছে না। শহরের কয়েকটি মানসম্মত হোটেল ও রিসোর্টে সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠান হলেও এবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সেসব আয়োজনও বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হোটেলের মালিকেরা।

হোটেল ও রিসোর্টের মালিকেরা বলেন, ‘শোকাবহ পরিস্থিতির কারণে অনেক পর্যটক বুধবারের কক্ষ বুকিং বাতিল করেছেন। আবার যাঁরা মঙ্গল বা বুধবার কক্সবাজারে আসার পরিকল্পনা করেছিলেন, তাঁদের বড় অংশই সফর স্থগিত করেছেন।’

কক্সবাজার শহরের পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, গেস্টহাউস ও কটেজে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার পর্যটকের রাতযাপনের ব্যবস্থা রয়েছে। কক্সবাজার হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, সব মিলিয়ে প্রায় ৯০ শতাংশ কক্ষ বুকিং রয়েছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান ও অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খানসামায় গ্রাম সমিতির অফিসের বারান্দা থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার

খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি 
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ১৭
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার ২ নম্বর ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের টংগুয়া চেয়ারম্যানপাড়া গ্রাম সমিতির অফিসের বারান্দা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গভীর রাতে গ্রাম সমিতির অফিসের বারান্দায় একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে ভ্যানযোগে খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাছেত সরদার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, লাশটির পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। মৃত্যুর কারণ ও পরিচয় উদ্‌ঘাটনে আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বগুড়ায় গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু, সিসিটিভির হার্ডডিস্ক নিয়ে আত্মগোপনে স্বামী

বগুড়া প্রতিনিধি
নিহত রিফাত জাহান রিংকি। ছবি: সংগৃহীত
নিহত রিফাত জাহান রিংকি। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ায় রিফাত জাহান রিংকি (১৯) নামের এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১১টার দিকে সদর উপজেলার নুনগোলা দক্ষিণ পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। মৃত্যুর পরপরই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাড়ির সিসিটিভির হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় এই ঘটনায় সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে।

নিহত রিংকি শাজাহানপুর উপজেলার নন্দকুল উত্তর পাড়া গ্রামের রাশেদুল ইসলামের মেয়ে। পাঁচ বছর আগে নুনগোলা এলাকার নুরু মিয়ার ছেলে নুরুন্নবীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের চার বছর বয়সী একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে প্রতিবেশীরা রিংকিকে বাড়ির উঠানে স্বাভাবিকভাবে ব্যাডমিন্টন খেলতে দেখেন। যদিও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মাঝেমধ্যে পারিবারিক কলহের কথা শোনা যেত। রাতের দিকে হঠাৎ তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

নিহত রিংকির বোন আশা খাতুন জানান, বিকেলে রিংকির মোবাইল থেকে তাঁর ফোনে একটি মিসকল আসে। পরে একাধিকবার ফোন করলেও রিংকি ফোন ধরেননি। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাতে নুরুন্নবী ফোন করে জানায়, রিংকির ওপর জিনের আছর পড়েছে। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে রিংকির নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। তখন তাঁর গলায় আঘাতের চিহ্ন লক্ষ করা যায়।

রিংকির মামি আয়না খাতুন বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে রিংকিকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পরপরই আলামত নষ্ট করতে বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পালিয়ে যায়। আমরা এর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত চাই।’

সরেজমিনে দেখা যায়, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত স্বামী নুরুন্নবী ও তাঁর পরিবারের কোনো সদস্য বাড়িতে নেই। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঘটনার পরপরই তাঁরা বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু রায়হান বলেন, ‘এর আগে তাঁদের মধ্যে কোনো ঝগড়াবিবাদের কথা আমার জানা ছিল না। হঠাৎ রাতে মৃত্যুর খবর পাই। ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক।’

বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান বলেন, পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। প্রাথমিক সুরতহালে আত্মহত্যার কোনো সুস্পষ্ট আলামত পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত