Ajker Patrika

বালুঘাট থেকে প্রতিদিন বাড়তি তোলা হয় ৬০ হাজার টাকা

রিমন রহমান, রাজশাহী
বালুঘাট থেকে প্রতিদিন বাড়তি তোলা হয় ৬০ হাজার টাকা

রাজশাহীর শ্যামপুর বালুঘাটে ট্রাক চালকদের কাছ থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে ৬০ হাজার টাকা বাড়তি আদায় করা হচ্ছে। বালু ব্যবসায়ী সমিতির নামে ট্রাকগুলো থেকে ১০০ টাকা করে আদায় করা হয়। এ ছাড়া পৌরসভার সড়ক ব্যবহারের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত টোলের চেয়ে ৫০ টাকা করে বেশি নেওয়া হয়। এভাবে প্রতিটি ট্রাক থেকে ১৫০ টাকা বাড়তি তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 

ঘাটটি থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে ৪০০ ট্রাক বালু ওঠে। এই হিসেবে প্রতিদিন প্রায় ৬০ হাজার টাকা বাড়তি তোলা হচ্ছে। ট্রাক চালকেরা এই টাকা বালুর ক্রেতাদের কাছ থেকেই আদায় করে নিচ্ছেন। সম্প্রতি সিটি করপোরেশনের সড়ক ব্যবহারের জন্যও ট্রাক থেকে ১০০ টাকা করে তুলতে শুরু করেছিলেন ঘাট ইজারাদার। এই টাকা অবশ্য সিটি করপোরেশনকে দেওয়া হতো না। সিটি করপোরেশন তাদের সড়ক ব্যবহারের অনুমতিও দেয়নি। 

এরপরও টাকা তোলার বিষয়টি জানতে পেরে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সড়কটিতে প্রতিবন্ধক দেওয়া হয়েছে। এখন ওই রাস্তা দিয়ে ট্রাক চলাচল করতে পারে না। তাই এই ১০০ টাকা করে তোলা বন্ধ হয়েছে। তবে বালু সমিতির নামে ১০০ টাকা এবং অতিরিক্ত ৫০ টাকা করে টোল দিতে হচ্ছে ট্রাক চালকদের। সমিতির টাকা ভাগ বাঁটোয়ারা করে নিচ্ছেন বালু ব্যবসায়ীরা। আর সড়কের টোলের বাড়তি ৫০ টাকা পাচ্ছেন আদায়কারী ইজারাদার। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শ্যামপুর বালুঘাটটি এবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ইজারা পেয়েছেন কাটাখালী পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক জনি ইসলাম। সবকিছু তিনি দেখলেও মূলত নেপথ্যে রয়েছেন একজন জনপ্রতিনিধি। এই ঘাট থেকে বালু কিনে নেন ব্যবসায়ীরা। এসব বালু সেখানেই মজুত করে রাখা হয়। তারপর ব্যবসায়ীরা তা বিক্রি করেন। বালুবাহী ট্রাকগুলো চলাচল করে কাটাখালী পৌর এলাকার একটি সড়ক দিয়ে। এই সড়কটি সংস্কারের কথা বলে ইজারাদারের মাধ্যমে টোল আদায় করে পৌর কর্তৃপক্ষ। এবার পৌরসভার টোল আদায়কারী হিসেবে ইজারা পেয়েছে সাইফ ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এর মালিক শাহিনুর রহমান সিহাব। তাঁর সঙ্গে নজরুল ইসলাম নামের আরেক ব্যবসায়ী রয়েছেন। 

পৌর কর্তৃপক্ষ জানায়, এবার প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকায় সড়কের টোল আদায়ের ইজারা দেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত আছে ইজারাদার ট্রাকপ্রতি সর্বোচ্চ ২৫০ টাকা আদায় করতে পারবেন। তবে সরেজমিনে গিয়ে ট্রাকপ্রতি ৩০০ টাকা আদায় করতে দেখা গেছে। গত বুধবার সকালে ঘাটে দেখা গেছে, মকবুল হোসেন ও আবদুর রহিম নামের দুজন বসে টোল আদায় করছেন। প্রতিটি ট্রাক থেকে নেওয়া হচ্ছে ৩০০ টাকা। আর ট্রলি থেকে নেওয়া হচ্ছে ১০০ টাকা। মকবুল বলেন, ‘শুরু থেকেই এই হারে টোল আদায় করা হচ্ছে।’ 

মকবুল ও রহিমের পাশেই আরেকটি ঘরে বসে ট্রাকপ্রতি ১০০ টাকা করে আদায় করছিলেন শরিফুল ইসলাম। এ জন্য কোনো রসিদ দিতে দেখা যায়নি। শরিফুল ইসলাম জানান, কোনো বালু ব্যবসায়ীর কত ট্রাক বালু বের হচ্ছে হিসাব তাঁরা রাখেন। এ জন্য বালু ব্যবসায়ী সমিতির নামে ১০০ টাকা করে নেওয়া হয়। এই টাকা থেকে তাঁদের পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। বাকি টাকা ঘাটের ২০-২২ জন বালু ব্যবসায়ী সমানভাবে ভাগ করে নেন। 

নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে একজন ট্রাকচালক বলেন, ‘ট্রাকপ্রতি এভাবে বাড়তি ১০০ টাকা করে আদায় করার কোনো নিয়ম নেই। ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন খরচের কথা বলে এই টাকা আদায় করেন। সড়কের টোলও নেওয়া হয় ৫০ টাকা করে বেশি। এসব দেখার কেউ নেই। ভয়ে কেউ প্রতিবাদও করতে পারে না। কথা বললেই বিভিন্ন সমস্যা আছে।’ 

ঘাটের বালু ব্যবসায়ীদের একজন সাইরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এই ঘাটে ব্যবসা করতে হলে বিভিন্নজনকে টাকা দিতে হয়। সেই টাকা তো ব্যবসায়ীরা নিজের পকেট থেকে দেবে না। সে জন্যই ট্রাকপ্রতি ১০০ টাকা করে তোলে সমিতি। এখান থেকে কর্মচারীদের বেতনও হয়।’ 

সড়কে বাড়তি টোল আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে ইজারাদার শাহিনুর রহমান সিহাব বলেন, ‘এবার ইজারা নিতে হয়েছে বেশি টাকায়। তাই ট্রাকের জন্য ৩০০ এবং ট্রলির জন্য ১০০ টাকা করে আদায় করা হয়। ট্রাকের জন্য ২৫০ টাকার বেশি আদায় করা যাবে না, এটা জানা নেই।’ 

কাটাখালী পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিরাজুম মুনীর বলেন, ‘ট্রাকপ্রতি ২৫০ টাকার বেশি আদায় হয় কি না এটা আমার জানা নেই। আমরা এটা খোঁজ নিয়ে দেখব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনা-৩ আসনে তিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল, বৈধ ৯টি

খুলনা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

খুলনা-৩ (খালিশপুর-দৌলতপুর-খানজাহান আলী-আড়ংঘাটা) আসনে তিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এই আসনে ১২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। যাচাই-বাছাই শেষে ৯ জনের মনোনয়ন বৈধ এবং ৩ জনের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করা হয়। আজ বুধবার দুপুরে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সাল কাদের এই তথ্য জানান।

ফয়সাল কাদের জানান, ঋণখেলাপিসহ বিভিন্ন কারণে যাঁদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে, তাঁরা হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রউফ মোল্যা, আবুল হাসান সিদ্দিক ও আরিফুর রহমান মিঠু। তবে তাঁরা চাইলে বিধি অনুযায়ী আপিল করতে পারবেন।

এই আসনে যাঁদের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে, তাঁরা হলেন ইসলামী আন্দোলনের মো. আউয়াল, বিএনপির রকিবুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর মাহফুজুর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী মুরাদ খান লিটন ও মইন মোহাম্মদ মায়াজ, বাসদের জনার্দন দত্ত, খেলাফত মজলিসের এফ এম হারুন অর রশিদ, এনডিএমের শেখ আরমান হোসেন এবং জাতীয় পার্টির আব্দুল্লাহ আল মামুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কক্সবাজারে পর্যটকের ভিড়, থার্টি ফার্স্ট নাইটে ৭ দফা বিধিনিষেধ পুলিশের

মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ০৩
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

পুরোনো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রতিবছর থার্টি ফার্স্ট নাইটে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে লাখো পর্যটকের সমাগম ঘটে। এ বছরও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমণপিপাসুরা কক্সবাজারে এসেছেন। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সারা দেশে শোকের আবহ বিরাজ করায় অনেকেই ভ্রমণ বাতিল করেছেন বলে জানিয়েছেন পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

এদিকে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামীকাল ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সমুদ্রসৈকতসহ উন্মুক্ত স্থানে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ও জনসমাগম না করতে ৭ দফা বিধিনিষেধ জারি করেছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার জেলা পুলিশের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব, অপপ্রচার ও উসকানিমূলক বক্তব্য ছড়ানো, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট, নাশকতা কিংবা সহিংস কর্মকাণ্ড থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে। এ ছাড়া উচ্চ শব্দে হর্ন বাজানো, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালানো নিষিদ্ধ থাকবে।

জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) অলক বিশ্বাস বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইটে কক্সবাজার শহর ও সমুদ্রসৈকতে আতশবাজি ও পটকা বিক্রি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে। একই সময়ে উন্মুক্ত স্থান ও রাস্তায় কোনো কনসার্ট কিংবা নাচগানের আয়োজন করা যাবে না। পাশাপাশি ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বার ও মদের দোকানে বেচাকেনা বন্ধ থাকবে।

অলক বিশ্বাস জানান, বিধিনিষেধ কার্যকরের পাশাপাশি শহরের প্রবেশমুখসহ গুরুত্বপূর্ণ ১০টি স্থানে তল্লাশিচৌকি বসিয়ে নজরদারি জোরদার করা হবে।

পর্যটকের উপস্থিতি

বছরের শেষ দিন ও নতুন বছরের শুরুতে কক্সবাজারে সাধারণত পর্যটকের ঢল নামে। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারাও সৈকতে ভিড় জমান। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে ৮-৯ বছর ধরে সৈকতে বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণের উন্মুক্ত কোনো আয়োজন হচ্ছে না। শহরের কয়েকটি মানসম্মত হোটেল ও রিসোর্টে সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠান হলেও এবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সেসব আয়োজনও বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হোটেলের মালিকেরা।

হোটেল ও রিসোর্টের মালিকেরা বলেন, ‘শোকাবহ পরিস্থিতির কারণে অনেক পর্যটক বুধবারের কক্ষ বুকিং বাতিল করেছেন। আবার যাঁরা মঙ্গল বা বুধবার কক্সবাজারে আসার পরিকল্পনা করেছিলেন, তাঁদের বড় অংশই সফর স্থগিত করেছেন।’

কক্সবাজার শহরের পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, গেস্টহাউস ও কটেজে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার পর্যটকের রাতযাপনের ব্যবস্থা রয়েছে। কক্সবাজার হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, সব মিলিয়ে প্রায় ৯০ শতাংশ কক্ষ বুকিং রয়েছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান ও অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খানসামায় গ্রাম সমিতির অফিসের বারান্দা থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার

খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি 
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ১৭
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার ২ নম্বর ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের টংগুয়া চেয়ারম্যানপাড়া গ্রাম সমিতির অফিসের বারান্দা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গভীর রাতে গ্রাম সমিতির অফিসের বারান্দায় একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে ভ্যানযোগে খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাছেত সরদার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, লাশটির পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। মৃত্যুর কারণ ও পরিচয় উদ্‌ঘাটনে আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বগুড়ায় গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু, সিসিটিভির হার্ডডিস্ক নিয়ে আত্মগোপনে স্বামী

বগুড়া প্রতিনিধি
নিহত রিফাত জাহান রিংকি। ছবি: সংগৃহীত
নিহত রিফাত জাহান রিংকি। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ায় রিফাত জাহান রিংকি (১৯) নামের এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১১টার দিকে সদর উপজেলার নুনগোলা দক্ষিণ পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। মৃত্যুর পরপরই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাড়ির সিসিটিভির হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় এই ঘটনায় সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে।

নিহত রিংকি শাজাহানপুর উপজেলার নন্দকুল উত্তর পাড়া গ্রামের রাশেদুল ইসলামের মেয়ে। পাঁচ বছর আগে নুনগোলা এলাকার নুরু মিয়ার ছেলে নুরুন্নবীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের চার বছর বয়সী একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে প্রতিবেশীরা রিংকিকে বাড়ির উঠানে স্বাভাবিকভাবে ব্যাডমিন্টন খেলতে দেখেন। যদিও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মাঝেমধ্যে পারিবারিক কলহের কথা শোনা যেত। রাতের দিকে হঠাৎ তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

নিহত রিংকির বোন আশা খাতুন জানান, বিকেলে রিংকির মোবাইল থেকে তাঁর ফোনে একটি মিসকল আসে। পরে একাধিকবার ফোন করলেও রিংকি ফোন ধরেননি। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাতে নুরুন্নবী ফোন করে জানায়, রিংকির ওপর জিনের আছর পড়েছে। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে রিংকির নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। তখন তাঁর গলায় আঘাতের চিহ্ন লক্ষ করা যায়।

রিংকির মামি আয়না খাতুন বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে রিংকিকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পরপরই আলামত নষ্ট করতে বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পালিয়ে যায়। আমরা এর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত চাই।’

সরেজমিনে দেখা যায়, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত স্বামী নুরুন্নবী ও তাঁর পরিবারের কোনো সদস্য বাড়িতে নেই। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঘটনার পরপরই তাঁরা বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু রায়হান বলেন, ‘এর আগে তাঁদের মধ্যে কোনো ঝগড়াবিবাদের কথা আমার জানা ছিল না। হঠাৎ রাতে মৃত্যুর খবর পাই। ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক।’

বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান বলেন, পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। প্রাথমিক সুরতহালে আত্মহত্যার কোনো সুস্পষ্ট আলামত পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত