Ajker Patrika

বিএমডিএতে অস্থিরতা, সেচ কার্যক্রম ব্যাহতের আশঙ্কা

  • রাসিকের সাবেক মেয়র ও আ.লীগ নেতা খায়রুজ্জামান লিটনের সহকারী ছিলেন ইডি শফিকুল
  • বদলির আদেশের পরও ২৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বদলি করেন তিনি
  • মামলা, বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো, সাময়িক বরখাস্ত ও শোকজের ঘটনাও ঘটে
  • বিষয়টা মন্ত্রণালয় দেখছে বলে জানান বিএমডিএর ভারপ্রাপ্ত সচিব এনামুল কাদির
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ১১ এপ্রিল ২০২৫, ০৮: ৫৬
বিএমডিএতে অস্থিরতা, সেচ কার্যক্রম ব্যাহতের আশঙ্কা

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) সদ্য সাবেক নির্বাহী পরিচালক (ইডি) শফিকুল ইসলামকে তাঁর দপ্তর থেকে বের করে দেওয়াকে কেন্দ্র করে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে সংস্থাটিতে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শফিকুলের মামলা, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো, দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত ও আটজনকে শোকজের মতো পদক্ষেপের ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। তাঁরাও পাল্টা কর্মসূচি দিতে যাচ্ছেন। এসব কারণে ভরা মৌসুমে যেকোনো সময় বন্ধ হতে পারে সেচ কার্যক্রম।

এদিকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তোপের মুখে শফিকুল অফিস ছাড়ার পর গত সোমবার নতুন ইডি নিয়োগ দেয় সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে অতিরিক্ত সচিব তরিকুল আলমকে ইডি নিয়োগ করা হয়। এ নিয়েও সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তাঁরা বলছেন, বিএমডিএর কাজ প্রকৌশলবিদ্যার। প্রশাসনের কর্মকর্তারা এ পদে অযোগ্য।

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে উত্তেজনা

গত ১৪ জুলাই বিএমডিএর ইডি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলাম। সূত্র বলছে, তিনি একসময় রাজশাহীর সাবেক সিটি মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের সহকারী ছিলেন। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তাঁকে বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক হিসেবে বদলি করা হয়। কিন্তু এক মাস পেরিয়ে গেলেও তিনি বিএমডিএ ছাড়ছিলেন না।

ফলে ২৩ মার্চ একদল কর্মকর্তা-কর্মচারী গিয়ে তাঁকে দপ্তর ছাড়তে বাধ্য করেন। এরপরই হেনস্তার অভিযোগে মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেন শফিকুল। ১৩ কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম উল্লেখ করে তিনি মামলাও করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় ৫০ থেকে ৬০ জনকে। ঘটনার পরপরই তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম খানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। একজন নির্বাহী প্রকৌশলী ও একজন সহকারী প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। শোকজ করা হয়েছে আটজনকে। ২৫ মার্চ স্বাক্ষর করা শোকজের এই চিঠি তাঁরা পেয়েছেন গত মঙ্গলবার। একের পর এক এই পদক্ষেপের ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এসবের বিরুদ্ধে তাঁরাও পাল্টা কর্মসূচি গ্রহণের পরিকল্পনা করছেন। গত ২৬ মার্চ রাজশাহী এবং ২৭ মার্চ রংপুর ও ঠাকুরগাঁওয়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বিএমডিএর একজন পদস্থ কর্মকর্তা বলেন, ইডি শফিকুল ছিলেন প্রশাসনের কর্মকর্তা। তাই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনি নিজের ক্ষমতা দেখিয়ে অর্ধশত কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। প্রভাব খাটিয়ে একজনকে বাধ্যতামূলক অবসর এবং দুজনকে সাময়িক বরখাস্ত করিয়েছেন। তদন্তের আগেই এভাবে অব্যাহতি ও সাময়িক বরখাস্ত করা একেবারেই নজিরবিহীন। ফলে বিএমডিএর সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্ষুব্ধ। তাঁরাও আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে সেচ কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে।

বিরোধ কেন ইডির সঙ্গে খায়রুজ্জামান লিটনের সুপারিশে শফিকুল বিএমডিএর ইডি হয়েছিলেন বলে জানান কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ফলে আওয়ামী সরকারের পতনের পরই তাঁর সঙ্গে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দূরত্ব বাড়তে থাকে। পরিস্থিতি আরও প্রকট হয় যখন আওয়ামী সরকারের পতনের পরও সেই দলের সমর্থক ও সুবিধাভোগী কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পদায়ন করতে থাকেন তিনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মাহফুজুর রহমান নামের এক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ছাড়া কাউকেই পাত্তা দিতেন না শফিকুল। মাহফুজুর বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের রাজশাহী অঞ্চলের চাকরিবিষয়ক সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ মনোনীত আইইবি রাজশাহী কেন্দ্রের সদস্য। তাঁর পরামর্শ মোতাবেক ইডি ১৭ বছর ধরে বঞ্চিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজশাহীতে বদলি করে না এনে বিগত সরকারের সুবিধাভোগীদেরই একের পর এক নানা সুবিধা দিতে থাকেন। নিজের বদলির আদেশের পরও ইডি শফিকুল ইসলাম বিএমডিএর নাজিরুল ইসলাম নামের এক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীকে রাজশাহী সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে বদলির আদেশ জারি করেন। অথচ নাজিরুল বিগত সরকারের আমলে অনুমোদিত ২৫০ কোটি টাকার প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) হিসেবে কাজ করছেন। নাজিরুল গত সরকারের আমলে মোট তিনটি প্রকল্পের পিডি হিসেবে কাজ করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, বদলির আদেশের পরও ইডি শফিকুল গত ১৩ মার্চ দুটি আদেশে ২৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বদলি করেন। এর আগে ১৮ ফেব্রুয়ারি আরও দুই আদেশে ২৭ জনকে বদলি করা হয়। আর যেসব কর্মচারী জুলাই আন্দোলন দমনে সরাসরি লাঠি হাতে মাঠে নামেন, তাঁদের বহাল রাখা হয়। ইডির বদলির আদেশের পর মাহফুজুর রহমান কর্মচারী ইউনিয়নের নেতাদের ডেকে মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদনপত্র পাঠানোর নির্দেশনা দেন। এতে শফিকুল ইসলামকে বিএমডিএতেই রাখার দাবি জানাতে বলা হয়।

এসব বিষয়ে কথা বলতে সদ্য সাবেক ইডি শফিকুলকে কয়েক দফা ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।

বিএমডিএর ভারপ্রাপ্ত সচিব এনামুল কাদির বলেন, ‘উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিএমডিএতে একটা অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, তা ঠিক। তবে এটা নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। বিষয়টা এখন মন্ত্রণালয় দেখছে।’

মনগড়া তদন্ত কমিটির অভিযোগ

এদিকে শফিকুলকে তাঁর দপ্তর থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনায় সংস্থার চেয়ারম্যান মনগড়া তদন্ত কমিটি করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি কৃষি উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নির্দেশনা অমান্য করে নিজের ইচ্ছেমতো তদন্ত কমিটি করেছেন বলে অভিযোগ।

বিএমডিএ পরিচালনা বোর্ডের সদস্য সাইফুল ইসলাম হীরকের দাবি, কৃষি উপদেষ্টা তাঁকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি করতে বলেছিলেন। কিন্তু বিএমডিএ চেয়ারম্যান ড. এম আসাদুজ্জামান উপদেষ্টার নির্দেশনা আমলে না নিয়ে ইচ্ছেমতো তদন্ত কমিটি করেছেন। এই কমিটি ভেঙে দিতে তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার বিএমডিএ চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছেন। চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত সহকারী চিঠিটি গ্রহণ করেছেন।

সার্বিক বিষয়ে জানতে ফোন করা হয় বিএমডিএ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামানকে। তিনি পরিচয় পেয়েই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে আর ফোন ধরেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তাসনিম জারাকে দেওয়া টাকা ফেরত চান? উপায় বলে দিলেন জারা নিজেই

এনসিপি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা তাসনিম জারার

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চট্টগ্রামে কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিল জিপিএইচ ইস্পাত

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় আজ শনিবার এইচএসসি ও আলিম পরীক্ষায় জিপিএ-৫প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও সম্মাননা দেয় জিপিএইচ ইস্পাত। ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় আজ শনিবার এইচএসসি ও আলিম পরীক্ষায় জিপিএ-৫প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও সম্মাননা দেয় জিপিএইচ ইস্পাত। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার এইচএসসি ও আলিম পরীক্ষায় জিপিএ-৫প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও সম্মাননা দিয়েছে শীর্ষস্থানীয় ইস্পাত উৎপাদনকারী কোম্পানি জিপিএইচ ইস্পাত। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সীতাকুণ্ডের কুমিরায় জিপিএইচ ইস্পাত প্ল্যান্টে আয়োজিত ‘জিপিএইচ শাইনিং স্টারস রিকগনিশন-২০২৫’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তাঁদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জিপিএইচ ইস্পাতের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলমাস শিমুল। তিনি বলেন, ‘নিজের মেধা কাজে লাগিয়ে বিদেশে পাড়ি না জমিয়ে বরং এই সম্ভাবনাময় দেশের ঋণ শোধ করতে হবে।’

আলমাস শিমুল আরও বলেন, ‘ভূমিকম্প প্রতিরোধী ও উচ্চ শক্তিসম্পন্ন ৬০০ গ্রেড ইস্পাত উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জিপিএইচ ইস্পাত বর্তমানে গবেষণাধর্মী শিক্ষাব্যবস্থায় বিনিয়োগ করছে।’ তিনি শিক্ষার্থীদের গুণমানসম্পন্ন শিক্ষা অর্জন ও সামগ্রিক জীবনচর্চায় উদ্বুদ্ধ হতে আহ্বান জানিয়ে সীতাকুণ্ডের মেধাবী ও দুস্থ শিক্ষার্থীদের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জিপিএইচের ফিউচার লিডার সায়হাম সাদিক পিয়াল কৃতী শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্মাননা স্মারক হিসেবে সনদ, প্রাইজ বন্ড ও গিফট বক্স বিতরণ করেন।

অনুষ্ঠানে অভিভাবকদের পক্ষে মো. নাছির উদ্দিন, শিক্ষকদের পক্ষে বগাচতর নূরিয়া গনিউল উলুম ফাজিল মাদ্রাসার মো. জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া, বাড়বকুণ্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের রাজীব সাহা এবং মাদ্রাসা-এ-মোহাম্মদীয়া আহমদীয়া সুন্নীয়ার (ফাজিল) আবু বকর বক্তব্য দেন। শিক্ষার্থীদের পক্ষে অনুভূতি ব্যক্ত করেন বাড়বকুণ্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রীতি রানী শীল এবং মাদ্রাসা-এ-মোহাম্মদীয়া আহমদীয়া সুন্নীয়ার (ফাজিল) সানজিদুল ইসলাম তানিশা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তাসনিম জারাকে দেওয়া টাকা ফেরত চান? উপায় বলে দিলেন জারা নিজেই

এনসিপি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা তাসনিম জারার

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের ওপর আঘাত: ক্র্যাব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ শনিবার দুপুরে সেগুনবাগিচায় ক্র্যাব কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ শনিবার দুপুরে সেগুনবাগিচায় ক্র্যাব কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকায় হামলার মধ্য দিয়ে মতপ্রকাশ, বাক্‌স্বাধীনতা ও সমালোচনামূলক কণ্ঠস্বরকে (ভয়েস অব ডিসেন্স) দমনের চেষ্টা করা হয়েছে। এই আক্রমণ সরাসরি গণতন্ত্রকে আঘাত করেছে এবং মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত বাংলাদেশের ধারণার ওপর আঘাত হানা হয়েছে। তবে দুর্বৃত্তদের ঠেকাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। হামলার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

আজ শনিবার দুপুরে সেগুনবাগিচায় ক্র্যাব কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন।

মানববন্ধনে প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ বলেন, ‘এই হামলা এমন এক সময়ে ঘটেছে, যখন দেশ একটি গণতান্ত্রিক উত্তরণের দিকে এগোচ্ছে। এটি সেই উত্তরণকে বাধাগ্রস্ত করার একটি প্রচেষ্টা। যদিও ঘটনার সব কারণ এখনো জানা যায়নি এবং অনেক অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হননি, তবুও গণমাধ্যমের ওপর যে আঘাত হানা হয়েছে, তা স্পষ্ট। গণমাধ্যমের মূল কাজই হলো তর্ক ও মতপার্থক্য প্রকাশ করা; গণতন্ত্র মানেই ভিন্নমতকে সম্মান করা।’

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেন, ‘দেশের শীর্ষস্থানীয় দুটি দৈনিকের কার্যালয়ে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ শুধু দুটি গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ নয়; এটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, বাক্‌স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি আঘাত। গত ১৬ বছরে দেড় হাজারের বেশি মানুষ শহীদ হয়েছে, হাজার হাজার আহত হয়েছে। সেই রক্তের বিনিময়ে অর্জিত পরিবর্তনের পরও আজ সাংবাদিকদের রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করতে হচ্ছে। পুলিশকে জানানো হলেও তারা কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। অতীতের ফ্যাসিবাদী আমলে সাংবাদিক হত্যা, নির্যাতন ও গণমাধ্যম বন্ধের বহু ঘটনার বিচার হয়নি। সাগর-রুনি হত্যাসহ অন্তত ৬৫ সাংবাদিক হত্যার বিচার আজও অধরা। অতীতে গণমাধ্যম বন্ধ এবং সাংবাদিকদের নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারার খেসারত আজ দিতে হচ্ছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। যতক্ষণ না দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত হচ্ছে, ততক্ষণ প্রতিবাদ চালিয়ে যেতে হবে।’

ডিআরইউর সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা বলেন, ‘সংকটময় পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের ওপর হামলা এবং সংবাদপত্রে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে কর্মরত সাংবাদিকদের পুড়িয়ে মারার লক্ষ্যেই এই হামলা চালানো হয়েছিল। শুধু এই দুটি পত্রিকায় নয়, যখন নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীর সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করতে যান, তাঁর ওপরও হামলা করা হয়। দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’

ক্র্যাবের সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল বলেন, দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগ গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত। এর আগেও গণমাধ্যমের ওপর হামলা হয়েছে, কিন্তু বারবার গণমাধ্যম ঘুরে দাঁড়িয়েছে; এবারও দাঁড়াবে। শুধু হামলাকারী নয়, নেপথ্যের উসকানিদাতা ও পরিকল্পনাকারীদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে। অবিলম্বে দায়ীদের গ্রেপ্তার না করলে এর দায় প্রশাসনকেই নিতে হবে।

মানববন্ধনে ক্র্যাবের সাধারণ সম্পাদক এম এম বাদশাহর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে আরও বক্তব্য দেন প্রথম আলোর উপসম্পাদক লাজ্জাত এনাব মহছি, হেড অব ক্রাইম অ্যান্ড পলিটিকস টিপু সুলতান, ক্র্যাবের সাবেক সভাপতি মধুসূদন মণ্ডল, খায়রুজ্জামান কামাল, কামরুজ্জামান খান, ডিআরইউর সাবেক সহসভাপতি ওসমান গণি বাবুল, ক্র্যাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার আলম, আলাউদ্দিন আরিফ, আসাদুজ্জামান বিকু, ক্র্যাবের সহসভাপতি উমর ফারুক আলহাদী, প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক নজরুল ইসলাম, ডিআরইউর সাবেক যুগ্ম সম্পাদক নাদিয়া শারমিন, রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশনের (র‍্যাক) সভাপতি শাফি উদ্দিন আহমদ, ক্র্যাবের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নেহাল হাসনাইন, কার্যনির্বাহী সদস্য জিয়া খান, ক্র্যাবের সাবেক দপ্তর সম্পাদক ইসমাঈল হুসাইন ইমু, ক্র্যাবের সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য আমানুর রহমান রনি প্রমুখ।

বক্তারা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং হামলায় দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার ওপর জোর দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তাসনিম জারাকে দেওয়া টাকা ফেরত চান? উপায় বলে দিলেন জারা নিজেই

এনসিপি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা তাসনিম জারার

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার মিলল পৌনে ১২ কোটি টাকা

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জে আজ শনিবার ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স খোলার পর টাকা গোনায় সহায়তা করছে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
কিশোরগঞ্জে আজ শনিবার ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স খোলার পর টাকা গোনায় সহায়তা করছে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার ১১ কোটি ৭৮ লাখ ৪৮ হাজার ৫৩৮ টাকা মিলেছে। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল ৭টায় ১৩টি সিন্দুক খুলে ৩৫ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। সেগুলো গণনা শেষে সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটের দিকে মোট টাকার পরিমাণ জানান কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক মো. এরশাদুল আহমেদ।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জানান, এবার সিন্দুক খোলা হয়েছে ৩ মাস ২৭ দিন পর। এর আগে চলতি বছরের ৩০ আগস্ট মসজিদের ১৩টি দানবাক্স খুলে পাওয়া যায় ৩২ বস্তা টাকা। তখন ৪ মাস ১৮ দিনে এই পরিমাণ টাকা জমা পড়েছিল দানবাক্সগুলোতে। পাওয়া গিয়েছিল ১২ কোটি ৯ লাখ ৩৭ হাজার ২২০ টাকা। এ ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা, সোনা ও রুপা পাওয়া যায়।

শনিবার সকাল ৭টায় এরশাদুল আহমেদের তত্ত্বাবধানে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আসলাম মোল্লা ও পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম ফরহাদ হোসেনের উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজাবে রহমত, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খানসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট ও প্রশাসনের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

পাগলা মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানায়, টাকা গণনায় অংশ নেয় পাগলা মসজিদসংলগ্ন মাদ্রাসার ১১০ জন ও আল-জামিয়াতুল ইমদাদিয়া মাদ্রাসার ২৫০ জন ছাত্র, পাগলা মসজিদের ৩৩ জন স্টাফ, রূপালী ব্যাংকের ১০০ জন কর্মকর্তা, এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রায় অর্ধশতাধিক সদস্য গণনায় অংশ নিয়েছেন। টাকা গোনা শেষ করতে সময় ১২ ঘণ্টা ২০ মিনিট।

মসজিদ কমিটি জানিয়েছে, গত ৩০ আগস্ট দানবাক্স খুলে ১২ কোটি ৯ লাখ ৩৭ হাজার ২২০ টাকা পাওয়া যায়; মসজিদটির ইতিহাসের সর্বোচ্চ দান। এর আগে ১২ এপ্রিল পাওয়া যায় ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা। আর গত বছরের ৩০ নভেম্বর পাওয়া গিয়েছিল ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা।

রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মোহাম্মদ আলী হারিছি জানান, ‘দানবাক্সে এবারও বিদেশি মুদ্রা, সোনা ও রুপার অলংকার পাওয়া গেছে। অনেকে চিঠিও দিয়েছেন। কেউ চাকরির জন্য দোয়া চেয়েছে। কেউ সুস্থতার জন্য। কেউ আবার সন্তানের সাফল্যের জন্য লিখেছেন।’

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আসলাম মোল্লা বলেন, পাগলা মসজিদকেন্দ্রিক একটি ইসলামি কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হবে। ভবনটি হবে ১০ তলাবিশিষ্ট এবং এখানে বহুমুখী কাজ করা হবে। এখানে অনাথ-এতিমদের জন্য লেখাপড়ার ব্যবস্থা, ধর্মীয় শিক্ষা, মাদ্রাসাশিক্ষা, একটি সমৃদ্ধ পাঠাগার, ক্যাফেটেরিয়া ও আইটি সেকশনও থাকবে।

আসলাম মোল্লা আরও বলেন, এই মসজিদের বর্তমান আয়তন ৫ দশমিক ৫ একর। ১০ তলাবিশিষ্ট আধুনিক ভবনের জন্য আরও কিছু জায়গা কেনা হবে। এই মুহূর্তে পাগলা মসজিদের অ্যাকাউন্টে মানুষের দানের ১০৪ কোটি টাকা জমা আছে। ইতিমধ্যে মসজিদ কমপ্লেক্সের জন্য নকশা জমা দিয়েছে ১২টি প্রতিষ্ঠান। রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ দল পরীক্ষা করে একটি প্রতিষ্ঠানকে মনোনয়ন দিয়েছে। জেলা প্রশাসন ও মসজিদ কমিটি দ্রুত কার্যাদেশ দেবে এবং কাজ শুরু হয়ে যাবে।

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার এস এম ফরহাদ হোসেন জানান, দানবাক্স খোলা থেকে শুরু করে বস্তায় ভরা এবং গণনা শেষে ব্যাংক পর্যন্ত সব টাকা নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া পর্যন্ত সার্বিক নিরাপত্তার কাজে তিনিসহ তাঁর পুলিশ সদস্যরা যথাযথ দায়িত্ব পালন করেছেন। সারা বছরই পাগলা মসজিদে পুলিশের নিরাপত্তা থাকে।

দানবাক্স খোলার পর গণনা দেখতে মসজিদের আশপাশে ভিড় করে উৎসুক মানুষ। তাদের মধ্যে অনেকে আসে দূরদূরান্ত থেকে। তবে বেশি লোকজন আসে প্রতি শুক্রবারে। মসজিদটিতে নিয়মিত হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগলের পাশাপাশি নানা ধরনের জিনিসপত্র দান করে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মানুষ। ইটনা উপজেলা থেকে আরিফ রহমান এসেছেন টাকা গণনা দেখতে। তিনি বলেন, এ যেন টাকার পাহাড়। লাইনে বসে টাকা গুনছে মাদ্রাসার শত শত শিক্ষার্থী।

মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানায়, আধুনিক তুরস্কের বসফরাস প্রণালির পাশের মাল্টিপারপাস মসজিদগুলোর আদলে পাগলা মসজিদকে কেন্দ্র করে একটি বৃহৎ ইসলামি কমপ্লেক্স গড়ে তোলার পরিকল্পনা আছে। প্রায় ১০ তলাবিশিষ্ট এ ভবনে একসঙ্গে ৪০ থেকে ৫০ হাজার মুসল্লির নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা থাকবে। পাশাপাশি নারী মুসল্লিদের জন্য আলাদা জায়গা, এতিমদের শিক্ষাব্যবস্থা, মাদ্রাসা, লাইব্রেরি, ক্যাফেটেরিয়া, আইটি সেকশনসহ বিভিন্ন সুবিধা থাকবে। জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম। শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মসজিদটি গড়ে ওঠে। কথিত আছে, খাস নিয়তে এ মসজিদে দান করলে মানুষের মনের আশা পূরণ হয়। সে জন্য দূরদূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ এখানে এসে দান করে থাকে। মানুষ টাকাপয়সা ছাড়া স্বর্ণালংকারও দান করে। এ ছাড়া গবাদিপশু, হাঁস-মুরগিসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্রও মসজিদটিতে দান করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তাসনিম জারাকে দেওয়া টাকা ফেরত চান? উপায় বলে দিলেন জারা নিজেই

এনসিপি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা তাসনিম জারার

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হবিগঞ্জে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে জামায়াতের প্রার্থীকে শোকজ

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
শেখ মো. জিল্লুর রহমান আজমী। ছবি: সংগৃহীত
শেখ মো. জিল্লুর রহমান আজমী। ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী শেখ মো. জিল্লুর রহমান আজমীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ব্যাখ্যা তলব করেছে নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনী অনুসন্ধান ও বিচারিক কমিটি।

শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) এই আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান ও বিচারিক কমিটির চেয়ারম্যান মো. মেহেদী হাসান সুমন ব্যাখ্যা তলব করেছেন।

আগামী ৫ জানুয়ারি সকাল ১০টায় হবিগঞ্জ সার্কিট হাউসের কনফারেন্স কক্ষে কমিটির সামনে সশরীরে হাজির হয়ে লিখিত ও মৌখিক ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আজমিরীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) স্থায়ী ঠিকানায় নোটিশ জারি করে বিষয়টি নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নোটিশে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বানিয়াচং উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের কাদিরগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয়ে প্রার্থী শেখ জিল্লুর রহমান আজমীর অনুদানে ফ্রি চক্ষু চিকিৎসাসেবার আয়োজন করা হয়। এতে বিপুলসংখ্যক মানুষের উপস্থিতি ছিল এবং সেখানে তিনি নিজে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নামীয় ব্যানারসহ উপস্থিত ছিলেন।

নোটিশে উল্লেখ করা হয়, এ কার্যক্রম সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০২৫-এর বিধি ৪(১) লঙ্ঘনের শামিল। পাশাপাশি ভিডিও পর্যালোচনায় আরও দেখা যায়, অনুষ্ঠানে উপস্থিত নেতা-কর্মীরা তাঁর জন্য ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জন্য দোয়া চান এবং একজন ব্যক্তি দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের উল্লেখ করেন, যা প্রকারান্তরে নির্বাচনী প্রচারণার অন্তর্ভুক্ত। এটি আচরণ বিধিমালার বিধি ১৮ লঙ্ঘন করেছে বলে মনে করে কমিটি।

নির্বাচনী অনুসন্ধান ও বিচারিক কমিটি জানিয়েছে, অভিযোগসংক্রান্ত ভিডিও তাদের কার্যালয়ে সংরক্ষিত রয়েছে। এ অবস্থায় শেখ মো. জিল্লুর রহমান আজমীকে আগামী ৫ জানুয়ারি সকাল ১০টায় হবিগঞ্জ সার্কিট হাউসের কনফারেন্স রুমে কমিটির সামনে সশরীরে হাজির হয়ে লিখিত ও মৌখিক ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত তারিখে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা প্রদানে ব্যর্থ হলে বিধি অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তাসনিম জারাকে দেওয়া টাকা ফেরত চান? উপায় বলে দিলেন জারা নিজেই

এনসিপি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা তাসনিম জারার

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত