Ajker Patrika

ডেলিভারিতে বিলম্ব, আম চুরি, হারিয়ে ফেলা—নানা অভিযোগ কুরিয়ারের বিরুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
স্টেডফাস্ট কুরিয়ারে পাঠানো আম ডেলিভারিতে সময় বেশি লাগার কারণে পচে যাচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত
স্টেডফাস্ট কুরিয়ারে পাঠানো আম ডেলিভারিতে সময় বেশি লাগার কারণে পচে যাচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

বুকিংয়ের এক সপ্তাহ পরও আম ডেলিভারি দিতে পারছে না স্টেডফাস্ট কুরিয়ার সার্ভিসে। এ ছাড়া আম হারিয়ে ফেলা, ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং অতিরিক্ত চার্জ নেওয়ার মতো নানা অভিযোগ উঠেছে স্টেডফাস্টের বিরুদ্ধে। এমনকি রাইডাররা আম বের করে নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, এসব নিয়ে দফায় দফায় অভিযোগ দিলেও কোনো সুরাহা মিলছে না। এতে ক্রেতাদের অসন্তুষ্টি বাড়ছে এবং লোকসান গুনতে হচ্ছে অনলাইনভিত্তিক আম ব্যবসায়ীদের।

সেবা নিয়ে এমন দুর্ভোগের অভিযোগে ১৮ জুন রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাটে স্টেডফাস্ট কুরিয়ার সার্ভিসের শাখা অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন অনলাইন আম ব্যবসায়ীরা। ৪০-৫০ জন অনলাইন ব্যবসায়ী প্রায় ২ ঘণ্টা ওই অফিস ঘেরাও করে রাখেন। তারপরও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। এখনো সময়মতো আম ডেলিভারি দিতে পারছে না এই কুরিয়ার সার্ভিস। এ অবস্থায় অনলাইন আম ব্যবসায়ীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে অভিযোগ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতিমধ্যে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁ, রংপুর ও সাতক্ষীরার ক্ষতিগ্রস্ত ৭৯ জন অনলাইন আম ব্যবসায়ী ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করেছেন বলেও জানা গেছে। তালিকায় তাঁরা প্রত্যেকে নিজের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তুলে ধরেছেন।

জানতে চাইলে স্টেডফাস্ট কুরিয়ার সার্ভিসের রাজশাহীর বাঘা ব্রাঞ্চের ব্যবস্থাপক আব্দুল হানান জনি বলেন, ‘ঈদের কারণে আমাদের অনেক কর্মী ছুটিতে ছিলেন, গাড়িও সংকটে ছিল। রাজশাহী থেকে সময়মতো গাড়ি ছাড়লেও রাস্তার জ্যামের কারণে কিছু বিলম্ব হয়েছে। আম নষ্ট হওয়ার অভিযোগ আমরা পেয়েছি। ক্ষতিগ্রস্তদের ৪০ থেকে ৫০ পার্সেন্ট ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।’

ক্ষতিগ্রস্তদের ওই তালিকা ধরে কথা হয় কয়েকজন অনলাইন আম ব্যবসায়ীর সঙ্গে। তাজুল ইসলাম নামের একজন উদ্যোক্তা জানান, তাঁর বাড়ি সিলেটে। আমের মৌসুমে ব্যবসা করতে রাজশাহী এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আম যাওয়ার কথা থাকলেও স্টেডফাস্ট ৫ থেকে ৭ দিনের ভেতর আম ডেলিভারি করে। এতে আমার প্রায় ১০ হাজার টাকার আম নষ্ট হয়। অভিযোগ জানালেও তারা কোনো রেসপন্স করেনি।’

পার্সেল থেকে আম বের করে নেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগের কথা জানান রংপুরের তারাগঞ্জের উদ্যোক্তা সানবীর ইসলাম। তিনি বলেন, ‘তারা আম বের করে নেয়। পাশাপাশি আম ডেলিভারি না দিলেও চার্জ নেয়।’ ক্ষতিগ্রস্ত ৭৯ জনের ওই তালিকায় আম বের করার অভিযোগ তুলে ধরেন ফুড বাস্ক নামের একটি প্ল্যাটফর্মের স্বত্বাধিকারী আবদুল আলীমও। এই উদ্যোক্তা লেখেন, ‘পার্সেলগুলো থেকে বেশির ভাগ রাইডার আম চুরি করছে।’

নাহিদ সরকার নামের আরেক উদ্যোক্তা বলেন, ‘আমার ঈদের আগের ৫-৬টি পার্সেল ৫ দিন পর ডেলিভারি দেয়, যেগুলোর বেশির ভাগ আমই নষ্ট হয়ে গেছে। আবার ঈদের পর চাঁদপুরে আম দিয়েছিলাম। সেই আম বস্তা ফুটা করে চুরি করে খেয়েছে। এ ছাড়াও অনেক পার্সেলের আম পানিতে ভিজিয়েছে।’

জনি ইসলাম নামের আরেক ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তা বলেন, ‘ঢাকার ভেতরে এক দিন এবং ঢাকার বাইরে দুদিন সময় লাগবে, এটা বলা হয়। কিন্তু ঢাকার ভেতর যেতে তিন-চার দিন লাগে এবং ঢাকার বাইরে যেতে পাঁচ থেকে ছয় দিন সময় নেয়, এতে আম নষ্ট হয়ে যায়। যে কারণে আমাদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।’

তবে ক্ষয়ক্ষতি তেমন হয়নি বলে দাবি করেছেন কুরিয়ার সার্ভিসের রাজশাহীর বানেশ্বর শাখার ব্যবস্থাপক জাহিদুল ইসলাম ইমন। তিনি বলেন, ‘আমি আমার এই শাখা থেকে চার হাজার ক্যারেট পণ্য পাঠিয়েছি। আমার পুরো রাজশাহী-চাঁপাই মিলে ১৫ থেকে ২০ হাজার ক্যারেট আম পাঠিয়েছি। আম যে নষ্ট হয়েছে তা কিন্তু নয়। যদি কারও কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয় বা কোনো পার্সেলে ক্ষতি হয়, তাহলে সেটা আমাদের দিলে আমরা আগে সেটা ভেরিফাই করছি।’

সুমাইয়া ইসলাম নামের এক উদ্যোক্তা স্টেডফাস্ট কুরিয়ারের স্বত্বাধিকারী কে এম রিদওয়ানুল বারী জিয়নকে মেনশন করে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘স্টেডফাস্ট কুরিয়ারের গাফিলতির কারণে প্লাস দেরিতে ডেলিভারির কারণে এবারও বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হলাম। ২০২৪ সালে সেইমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এভাবে আমরা আর কত ক্ষতিগ্রস্ত হব?’ আরও অনেকে ফেসবুকে পচে যাওয়া আমের ছবি পোস্ট করে স্টেডফাস্ট কুরিয়ারের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

তবে আম ডেলিভারির তথ্য শেয়ার করে স্টেডফাস্ট কুরিয়ারের স্বত্বাধিকারী কে এম রিদওয়ানুল বারী জিয়ন ২০ জুন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘৪০ দিনে প্রায় ৪ হাজার ১০০ টন আম। তেমন কিছু না। জাস্ট কিছু নাম্বার।’ তাঁর এই পোস্টে অনেক উদ্যোক্তা সেবা নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন। অনেকেই এ কুরিয়ারে আমের সেবা বন্ধের অনুরোধ করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে রিদওয়ানুল বারী জিয়ন লিখেছেন, ‘অনেকেই পরামর্শ দিচ্ছেন, আম ডেলিভারি বন্ধ করতে। আমরা আম হোম ডেলিভারি শুরু করছি বলেই আম হোম ডেলিভারি হচ্ছে। ঈদের আগে তো সব স্মুথলিই ডেলিভারি হয়েছে। ঈদের পর কিছুটা ডিলে হয়েছে, যা এখন স্বাভাবিক। মাথাব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলার মতো সাজেশন দিচ্ছেন!’

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে কে এম রিদওয়ানুল বারী জিয়ন বলেন, ‘ঈদের ছুটির সময় আমের কিছু কিছু পার্সেলে সমস্যা হয়েছিল। কারণ সে সময় রাস্তায় যানজট ছিল। ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করে পণ্যের ৫০ শতাংশ টাকা ফেরত দিচ্ছি। এখন সমস্যা নেই।’

ব্যবসায়ীদের ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগের উপপরিচালক মো. ইব্রাহীম হোসেন বলেন, ‘যদি কোনো ভোক্তা বা ক্রেতা তাঁর অর্ডার করা পণ্য যথাযথভাবে না পান তাহলে এটা আমাদের কাছে অভিযোগ করতে পারবেন। সরাসরি অভিযোগ করতে পারবেন। অনলাইনেও অভিযোগ করা যায়। আমরা ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চৌদ্দগ্রামে ঘন কুয়াশায় দুই লরির সংঘর্ষ, চালক ও সহযোগী নিহত

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
দুমড়েমুচড়ে যাওয়া একটি লরি। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুমড়েমুচড়ে যাওয়া একটি লরি। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আজ ভোরে ঘন কুয়াশার কারণে দুই লরির সংঘর্ষে চালক ও তাঁর সহযোগী (হেলপার) নিহত হয়েছেন। নিহত চালক আব্দুল জব্বার (৩১) নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থানার চরকমলা গ্রামের আবুল বাশারের ছেলে এবং হেলপার শাকিল (২২) নোয়াখালীর চরজব্বার থানার চর মহিউদ্দিন গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে।

চৌদ্দগ্রাম মিয়া বাজার হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফারুক হোসেন জানান, ঘন কুয়াশার কারণে চট্টগ্রামমুখী একটি লরিকে পেছনে থাকা আরেকটি লরি ধাক্কা দেয়। এতে পেছনের লরির সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে গিয়ে মহাসড়কের পাশে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই চালক আব্দুল জব্বার মারা যান। গুরুতর আহত হেলপার শাকিলকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁরও মৃত্যু হয়।

চৌদ্দগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শাহাদাত হোসেন জানান, আহত হেলপারকে আনা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

এসআই ফারুক হোসেন জানান, লাশ উদ্ধার করে থানার ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। স্বজনদের খবর দেওয়া হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ হস্তান্তর করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঘন কুয়াশায় শাহজালাল বিমানবন্দরে ফ্লাইট বিলম্ব

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ০৯
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ঘন কুয়াশাজনিত কারণে আজ রোববার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগমন ও বহির্গমনকারী একাধিক ফ্লাইট নির্ধারিত সময়ের তুলনায় বিলম্বে অবতরণ ও উড্ডয়ন করেছে। তবে এদিন কোনো ফ্লাইট ডাইভার্ট (অন্য স্থানে অবতরণ) করা হয়নি।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালকের মুখপাত্র মো. মাসুদুল হাসান মাসুদ বলেন, আজ ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত রানওয়ের দৃশ্যমান অবস্থা কম থাকায় ফ্লাইট অপারেশনে সাময়িক বিঘ্ন ঘটে। এ কারণে কয়েকটি আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ রুটের ফ্লাইট সময়সূচি অনুযায়ী পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে সকাল গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতি হয়। বর্তমানে দৃশ্যমান অবস্থা স্বাভাবিক থাকায় ফ্লাইট পরিচালনা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিরাপত্তা বিবেচনায় সব ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে এবং পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রয়েছে।

বিলম্বিত ফ্লাইটের যাত্রীদের জন্য সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনগুলো প্রয়োজন অনুযায়ী সহায়তা প্রদান করছে বলে জানানো হয়েছে। যাত্রীদের অনাকাঙ্ক্ষিত ভোগান্তির জন্য এয়ারলাইন কর্তৃপক্ষ দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং ভ্রমণের আগে নিজ নিজ ফ্লাইটের সর্বশেষ অবস্থা জেনে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাঁদা না দেওয়ায় হাতিয়ায় ব্যবসায়ীর ওপর হামলার অভিযোগ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৩৭
আহত ব্যবসায়ী মেহরাজ উদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আহত ব্যবসায়ী মেহরাজ উদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ায় চাঁদা না দেওয়ায় মেহরাজ উদ্দিন নামের এক ব্যবসায়ীর ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করেন।

গতকাল শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতের এই ঘটনায় হাতিয়া থানায় চাঁদাবাজি ও হত্যাচেষ্টা ধারায় একটি মামলা করা হয়েছে। মামলায় স্থানীয় ইউনুছ মাঝিসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে।

মামলার সূত্রে জানা যায়, ১৮ ডিসেম্বর অভিযুক্ত ইউনুছ মাঝি ও তাঁর সহযোগীরা মেহরাজ উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে জানমালের ক্ষয়ক্ষতির হুমকি দেওয়া হয়। এরপর ২৪ ডিসেম্বর সকালে মেহরাজ উদ্দিন তাঁর চাল ভাঙার মেশিনে কাজ করার সময় সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।

হামলার সময় সন্ত্রাসীরা ধারালো কিরিচ দিয়ে মেহরাজ উদ্দিনের মাথায় এলোপাতাড়ি কোপ দেয়। এতে মাথার হাড় ও খুলি মারাত্মকভাবে জখম হয়। এ ছাড়া লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশ থেঁতলে দেওয়া হয়।

পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক জরুরি ভিত্তিতে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন।

হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এ এস এম আরিফ বলেন, মেহরাজ উদ্দিনের মাথার আঘাত খুবই গুরুতর। তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

মেহরাজ উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, কয়েক দিন ধরে ইউনুছ মাঝি, তাঁর ছেলে হাসান ও রাজু এবং পাশের এলাকার আয়াত হোসেন তাঁর কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। টাকা না দিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। এর আগেও তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছিল। এতে তিনি ও তাঁর পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিনি দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।

এ বিষয়ে হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম বলেন, মেহরাজ উদ্দিনের অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজধানীতে ট্রেনের ধাক্কায় পোশাকশ্রমিকের মৃত্যু

ঢামেক প্রতিবেদক
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৫১
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর উত্তরার হাউস বিল্ডিং এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় নাজমুল ইসলাম (৩৫) নামে এক পোশাকশ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

নাজমুল ইসলামকে হাসপাতালে নিয়ে আসা প্রতিবেশী ও ভাতিজা সাকিব আলম জানান, তাঁদের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার ওলিপুর গ্রামে। তাঁর বাবার নাম নুরনবী। বর্তমানে গাজীপুরের টঙ্গীতে থাকতেন নাজমুল। তশরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানায় কোয়ালিটি সুপারভাইজার ছিলেন তিনি।

সাকিব আলম আরও জানান, রাতে গ্রাম থেকে তাঁকে ফোনে জানানো হয়, নাজমুল উত্তরার হাউস বিল্ডিংয়ের জয়নাল মার্কেট নতুন গেট এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় আহত হয়েছেন। পরে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে গিয়ে তাঁকে দেখতে পান। আহত অবস্থায় নাজমুলকে পথচারীরা সেখানে নিয়ে এসেছিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে সেখানে মৃত্যু হয় তাঁর।

পথচারীদের বরাতে সাকিব আরও বলেন, হাউস বিল্ডিং এলাকার জয়নাল মার্কেটে নতুন গেট এলাকার রেললাইনে দুই দিক থেকে দুটি ট্রেন আসায় ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লেগে নাজমুল ইসলাম গুরুতর আহত হয়েছিলেন। তবে তিনি সেখান দিয়ে কোথায় যাচ্ছিলেন, কেউ তা বলতে পারেননি।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত