Ajker Patrika

গড়াই নদের ওপর নির্মাণাধীন সেতুর নিচ থেকে বালু তুলে বিক্রি

পাংশা (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
গড়াই নদের ওপর নির্মাণাধীন সেতুর নিচ থেকে বালু তুলে বিক্রি

রাজবাড়ীর পাংশায় গড়াই নদে নির্মাণাধীন সেতুর সংযোগ সড়কের কাজে ব্যবহারের জন্য সেতুর নিচ থেকেই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার অভিযোগ উঠেছে। আরও অভিযোগ রয়েছে, অতিরিক্ত বালু তুলে এখন অন্য জায়গায় বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। নির্মাণাধীন সেতুর নিচ থেকে এভাবে বালু উত্তোলন করায় ভবিষ্যতে সেতুটি ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ড্রেজার দিয়ে সেতুর নিচ থেকে বালু উত্তোলন করে স্তূপ করে রাখা হয়। তাঁরা জানতেন, সেতুর নির্মাণকাজে ব্যবহারের জন্য এই বালু তোলা হয়েছে। এখন তুলে রাখা বালু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রজেক্ট ম্যানেজার বিজন কৃষ্ণবর্মণ ও স্থানীয় কসবামাজাইল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য মো. বাদশা মণ্ডল মিলে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে দিচ্ছেন। 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে পল্লি সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় পাংশা হেডকোয়ার্টার থেকে লাঙ্গলবাঁধ জিসি সড়কে গড়াই নদের ওপর ৬৫০ মিটার দীর্ঘ পিএসসি গার্ডার সেতুটির নির্মাণ শুরু হয়। কাজটি করছে এমএম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৩ কোটি ৯১ লাখ টাকা। ২০২৩ সালে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও দুই দফা মেয়াদ বাড়িয়েও এখনো ৭০ শতাংশ শেষ হয়নি। 

সরেজমিনে নাদুরিয়া ঘাট এলাকায় দেখা গেছে, বালুর স্তূপ থেকে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত ট্রলিতে (বাটাহাম্বা) বেলচা দিয়ে বালু তুলছেন শ্রমিকেরা। এ সময় ছবি ধারণ করতে দেখে কয়েকজন পালিয়ে যান। 

তখন এক ট্রলির চালক বাবুল বলেন, ‘বালু ও বাটাহাম্বা গাড়ি বাদশা মেম্বরের। আমরা শুধু দিনমজুর হিসেবে কাজ করি। বালু যেখানে দিয়ে আসতে বলে আমরা সেখানে দিয়ে আসি। এর বেশি কিছু আমি জানি না।’ 

এ নিয়ে যোগাযোগ করা হলে বালু বিক্রির বিষয়টি স্বীকার করেন বাদশা। তিনি বলেন, ‘ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে কিছু বালু তুলছিলাম, সেগুলো বিক্রি করা হচ্ছে। আমি অসুস্থ, বাসায় আছি। এ বিষয়ে পরে কথা হবে।’ 

জানতে চাইলে ঠিকাদারিপ্রতিষ্ঠানের প্রজেক্ট ম্যানেজার বিজন বলেন, ‘আমাদের মালিকের সঙ্গে কথা বলে স্থানীয় সাবেক মেম্বার বাদশা মণ্ডল বালু উত্তোলন করে আমাদের লিজ নেওয়া জমিতে রেখেছেন। আমাদের এখানে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার ফুট বালু প্রয়োজন হতে পারে। আমি এখানে চাকরি করতে আসছি, বালু বিক্রি করতে আসিনি। বালু বিক্রির সঙ্গে আমি জড়িত কি না, তা তদন্ত করে দেখেন। এ বিষয়ে আমাদের মালিক এবং বাদশা মেম্বার ভালো বলতে পারবেন।’ বাদশা বিভিন্নভাবে তাঁদের কাজে সহযোগিতা করেন বলে জানান তিনি। 

সেতুর নিচ থেকে বালু তুলে বিক্রি করা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকানির্মাণাধীন সেতুর কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা এলজিইডির উপজেলা কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. সাইফুর রহমান বলেন, ‘অ্যাপ্রোচের (সংযোগ সড়ক) কাজের জন্য স্থানীয়ভাবে মাটির ব্যবস্থা করার কথা উল্লেখ রয়েছে। ঠিকাদার এটা যেকোনো স্থান থেকে ব্যবস্থা করতে পারে।’ 

নদ থেকে বালু তুলে সেতুর কাজে ব্যবহার করতে পারে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নদের আইনকানুন আমি বুঝি না। তবে নদ থেকে উত্তোলন করা বালু বিক্রির বিষয়টি আমার জানা নেই।’ 

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাকির হাসান বলেন, ‘বালু উত্তোলন ও বিক্রির বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। বিষয়টি জানার চেষ্টা করছি। সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চবির বিবৃতিতে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও শেরে বাংলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
চবিতে বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা। ছবি: আজকের পত্রিকা
চবিতে বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক বিবৃতিতে এবার মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী হিসেবে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অবশ্য সেই সঙ্গে নেতৃত্বদানকারী হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমান, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এম. এ. জি ওসমানীর নামও উল্লেখ করা হয়েছে।

গত ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় চবি উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খানের দেওয়া বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। সেই বক্তব্যের ব্যাখ্যাসহ বিবৃতিতে এসব বলা হয়েছে। বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, তাঁর বক্তব্যের খণ্ডিত অংশ গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ায় জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।

রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান তাঁর বক্তব্যে শহীদ বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডকে শুধু পাকিস্তানি বাহিনীর কাজ নয়, বরং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মনে করেছেন। এই নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করতে এবং জাতিকে সঠিক ইতিহাস জানাতে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন।

গত রোববার (১৪ ডিসেম্বর ২০২৫) বেলা ১১টায় চবি উপাচার্য দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ‘মুক্তচিন্তা, মুক্তিযুদ্ধ এবং একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। সভাপতিত্ব করেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ও অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চবি জাদুঘরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এই আলোচনা সভায় সহ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন, ‘যে সময় আমি (পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী) দেশ থেকে পালানোর জন্য চেষ্টা করছি, আমি জীবিত থাকব না মৃত থাকব, সে বিষয়ে কোনো ফয়সালা হয়নি; সে সময় পাকিস্তানি যোদ্ধারা বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করবে, এটি আমি মনে করি রীতিমতো অবান্তর।’ এ ছাড়া তিনি মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন।

অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খানের এ বক্তব্য ছড়িয়ে পড়ার পরই সমালোচনা হতে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলসহ ছয়টি সংগঠন তাঁর পদত্যাগের দাবি করে। এ দাবিতে তাঁরা গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টায় প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে রাখেন। ফলে রাত প্রায় পৌনে ৯টা পর্যন্ত ভবনটিতে আটকা ছিলেন সহ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, সহ-উপাচার্য (প্রশাসনিক) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল দেওয়া বিবৃতিতে আরও বলা হয়, উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৭১’র স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং ২৪’র জুলাই আন্দোলনে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক, শেখ মুজিবুর রহমান, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এম. এ. জি ওসমানীসহ সকল শহীদকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।

ড. শামীম উদ্দিন খান একাডেমিক আলোচনার অংশ হিসেবে তাঁর বক্তব্যের সপক্ষে বেশ কয়েকটি রেফারেন্স টেনে আনেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল কাদিরের লেখা ‘দুশো ছেষট্টি দিনে স্বাধীন’ বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘৬ ডিসেম্বর থেকে দৌঁড়ের উপর থাকা পাকিস্তানি বাহিনী ১৪ তারিখ এতগুলো লোকের বাসায় গিয়ে গিয়ে বুদ্ধিজীবী হত্যা করেছেন, এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়।’ এ ছাড়া শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনির চৌধুরীর ছেলে আসিফ মুনিরের দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারের উল্লেখ করে বলেছেন, ‘পাকিস্তানিরা আমার বাবাকে হত্যা করেনি।’

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁর বক্তব্যের ব্যাখ্যায় জানিয়েছে, বক্তব্য পেশ করার সময় অনিচ্ছাকৃতভাবে উপ-উপাচার্য ‘পাকিস্তানি বাহিনী’র পরিবর্তে ‘পাকিস্তানি যোদ্ধা’ এবং ‘বিশ্বাসযোগ্য নয়’ বলতে গিয়ে ‘অবান্তর’ শব্দ ব্যবহার করেন, যা বিভ্রান্তি তৈরি করেছে। এটি ছিল অনিচ্ছাকৃত এবং তাৎক্ষণিক আলোচনার অংশ।

উল্লেখ্য, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী গণতন্ত্রের মানসপুত্র খ্যাত উপমহাদেশের বরেণ্য রাজনৈতিক নেতা। ১৯৬৩ সালের ৫ ডিসেম্বর লেবাননের বৈরুতের এক হোটেলকক্ষে নিঃসঙ্গ অবস্থায় মারা যান তিনি। অন্যদিকে জাতীয় নেতা শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক প্রথিতযশা বাঙালি রাজনীতিবিদ। তিনি ১৮৭৩ সালের ২৬ অক্টোবর বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। রাজনৈতিক মহল ও সাধারণ মানুষের কাছে শেরেবাংলা (বাংলার বাঘ) এবং ‘হক সাহেব’ নামে সমধিক পরিচিত ছিলেন। ১৯৬২ সালের ২৭ এপ্রিল তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

মহান এ দুই নেতার একজনের মৃত্যুর নয় বছর ও অন্যজনের আট বছর পর মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়। ফলে কীভাবে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিলেন এ প্রশ্ন তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই সমালোচনা করছেন। তাঁরা বলছেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতিহাস বিকৃতি করছে। এক বিকৃতির ব্যাখ্যায় আরেক বিকৃতি করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পরিবেশ সৃষ্টি হলে নির্বাচনে যাব, পাতানো নির্বাচনে যাব না: কাদের সিদ্দিকী

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী
সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম বলেছেন, ‘স্বাধীনতা যার জন্য, সেই মর্যাদা এখনো হয় নাই। এ দেশের মানুষ নির্বাচন চায়। ভালো নির্বাচন হয়নি বলেই শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। ভালো নির্বাচন হলে শেখ হাসিনা সরকারের এইভাবে নির্মম পতন হতো না।’

আজ মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী এসব কথা বলেন।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘অধ্যাপক ইউনূসের সরকারের যে কর্মকাণ্ড, যাদের নিয়ে উনি ওঠেন বসেন, তারাই বাংলাদেশ না। তারা বাংলাদেশের হয়তো ২৫ ভাগও না। সেই জন্য সার্বিকভাবে নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হলে আমরা অবশ্যই নির্বাচন করব। কিন্তু কোনো পাতানো নির্বাচনে আমরা যাব না।’ এ সময় দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা তাঁর সঙ্গে ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যা বললেন মুফতি আমির হামজা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৪৭
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মুফতি আমির হামজা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মুফতি আমির হামজা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী মুফতি আমির হামজা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ১৯৭১ সালের যে ভূমিকা, এত দিন পর্যন্ত যে মিথ্যা রচনা, আপনারা বদরুদ্দীন উমরের ইতিহাস পড়বেন। তাঁর লিখিত বইতে আমরা পড়েছি, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যে সমস্ত কল্পকাহিনি লেখা, এগুলো ১০০ ভাগের ৯০ ভাগ মিথ্যা। সুতরাং জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ওই সময় যুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল না, তারা ছিল ভারতের বিরুদ্ধে। এখন আমরা এটা জেনেছি। এত দিন আমাদের এই সত্য জানতে দেওয়া হয়নি।’

আজ মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে বিজয় দিবস উপলক্ষে কুষ্টিয়ায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত বিজয় র‍্যালিতে আমির হামজা এসব কথা বলেন।

আমির হামজা বলেন, ‘আজকের এই বিজয়ের র‍্যালি এই কারণে যে আমরা ১৯৭১ সালে এই দেশের স্বাধীনতার পক্ষে ছিলাম। ভারতের যে আগ্রাসন, এর বিরুদ্ধে ছিলাম এ কারণে আমাদের এরা বিরোধী বানিয়ে রেখেছিল। আগামীর বাংলাদেশকে আমরা ভারতের তাঁবেদারমুক্ত করব। আজকের এই র‍্যালির এটাই উদ্দেশ্য। আগামীতে দেশ ঐক্যবদ্ধ থাকবে, ইনশা আল্লাহ।’

জামায়াতের প্রার্থী আরও বলেন, ‘আমার মনে হয়, দল মত জাতি বর্ণ ধর্ম নির্বিশেষে এ দেশে যারাই জন্ম নেবে, তারাই যেহেতু সম্মানিত নাগরিক, সুতরাং সবাইকে নিয়ে আমরা আবার এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। আমার মনে হয়, পেছনের ইতিহাস পেছন দিকে টানা ঠিক না। পেছনের সব ইতিহাস ভুলে আমরা নতুন ইতিহাস তৈরি করব। এখানে কোনো দল-মত না থাকাই ভালো, সবাই আমরা এক।’

এ সময় বিজয় র‍্যালিতে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সুজা উদ্দীন জোয়ার্দ্দার, সহকারী সেক্রেটারি মাজহারুল হক, শহর জামায়াতের আমির এনামুল হকসহ দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

এদিকে আমির হামজার এমন মন্তব‌্যের বিষ‌য়ে কুষ্টিয়া জেলা ইউনিট কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার র‌ফিকুল ইসলাম টুকু আজ‌কের প‌ত্রিকা‌কে ব‌লেন, ‘রাজ‌নৈ‌তিক বক্তব‌্য আমরা আম‌লে নিই না, আর এগু‌লো নি‌য়ে আমা‌দের সমা‌লোচনা করারও প্রয়োজন প‌ড়ে না। মু‌ক্তিযু‌দ্ধের ইতিহাস চিরসত‌্য, সেটা সবাই জানে। উনি নির্বাচ‌নে জেতার জন‌্য অনেক কিছু ব‌লেন, আবার ক্ষমাও চান।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জুলাই রেভেলস সদস্যকে হত্যাচেষ্টা: প্রধান আসামি ঠোঁটকাটা আলতাফ গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
‎জুলাই রেভেলসের এক সদস্যকে হত্যাচেষ্টার মামলার প্রধান আসামি আলতাফসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। ছবি: র‍্যাব-১
‎জুলাই রেভেলসের এক সদস্যকে হত্যাচেষ্টার মামলার প্রধান আসামি আলতাফসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। ছবি: র‍্যাব-১

‎জুলাই রেভেলস সংগঠনের এক সদস্যকে হত্যাচেষ্টা মামলায় প্রধান আসামি আলতাফ ওরফে ঠোঁটকাটা আলতাফসহ (৪৬) তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১। গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে গাজীপুরের টঙ্গী পূর্ব থানা এলাকার বিসিক শিল্পনগরী এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

‎গ্রেপ্তার হওয়া অন্য দু’জন হলেন—সাইফুল ইসলাম (৩৭) ও মো. আমির হোসেন ফিরোজ (৪৭)।

‎র‍্যাব-১ এর মিডিয়া অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাকিব হাসান জানান, শনিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর উত্তরা ৮ নম্বর সেক্টরের পাবলিক কলেজ-সংলগ্ন জুলাই রেভেলসের অফিসে সংগঠনটির প্রস্তাবিত সহসংগঠক ইউসুফ আলী রেদওয়ান ও সদস্য মো. ইয়াসিনকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটে। ওই দিন রাত সাড়ে ৭টার দিকে উত্তরা পূর্ব থানাধীন ৬ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটে সংগঠনটির প্রধান কার্যালয়ের সামনে দেশীয় অস্ত্রসহ সংঘবদ্ধ হয়ে হামলা চালায় আসামিরা। একপর্যায়ে আলতাফ জুলাই রেভেলসের সদস্য ইউসুফ আলী রেদোয়ানের মাথায় আঘাত করে গুরুতর জখম করেন। এ সময় কার্যালয়ে ভাঙচুর ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের পর হামলাকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে আহত ইউসুফ আলী রেদোয়ান বাদী হয়ে উত্তরা পূর্ব থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন। এর ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার দিবাগত রাতে র‍্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।

‎র‍্যাব আরও জানায়, গ্রেপ্তারকৃত আলতাফ ওরফে ঠোঁটকাটা আলতাফ একজন তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে দক্ষিণখান, বিমানবন্দর, উত্তরা পূর্ব ও পশ্চিম থানাসহ বিভিন্ন থানায় হত্যা, হত্যাচেষ্টা, অস্ত্র, মাদক, ডাকাতি, অগ্নিসংযোগসহ অন্তত ১৬টি মামলা রয়েছে। ‎গ্রেপ্তারকৃত তিনজনকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এর আগে গত ১৪ ডিসেম্বর মো. মাসুম ও ফাহিম খান নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। দক্ষিণখান ফায়দাবাদ এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। ‎

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত