Ajker Patrika

আমাদের কর্মীরা বিশৃঙ্খল নয়, দেশ গড়ার ক্ষেত্রেও তারা দায়িত্বশীল: জামায়াতের আমির

নীলফামারী প্রতিনিধি
ডোমারে জামায়াতের সমাবেশে ডা. শফিকুর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডোমারে জামায়াতের সমাবেশে ডা. শফিকুর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘৫ তারিখের (আগস্ট) পর আমাদের কর্মীরা বেপরোয়া হয়ে সমাজে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেনি। অথচ সবচেয়ে মজলুম দল হচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আমরা এখানে ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছি। ইনশা আল্লাহ, দেশ গড়ার ক্ষেত্রেও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেব।’

গতকাল বুধবার বিকেলে নীলফামারীর ডোমার উপজেলা পরিষদের মাঠে উপজেলা জামায়াত আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান এ কথা বলেন।

জামায়াতের আমির বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদগুলো আওয়ামী লীগের ছিল। জোর করে ভাই-ভাতিজা, শালা-সম্বন্ধী মিলে দখল করেছিল। এরা এখন পালিয়ে গেছে। মেম্বাররা পালিয়ে গেছে। চেয়ারম্যান নাই, মেম্বার নাই, মানুষ যাবে কেন? এতগুলো মানুষের দায়িত্ব প্রশাসক নেবে? যাদের জনগণ নিজেদের প্রতিনিধি মনে করে না। পৌরসভা ভেঙে দেওয়া হয়েছে, সিটি করপোরেশন ভেঙে দেওয়া হয়েছে, সেখানে কোনো জনপ্রতিনিধি নেই। জেলা ও উপজেলা পরিষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে, সেখানে কোনো জনপ্রতিনিধি নেই। প্রতিদিন মানুষের দুর্ভোগ হচ্ছে। আমাদের রাজনীতি জনগণের দুর্ভোগ বাড়ানোর জন্য নয়, আমাদের রাজনীতি দুর্ভোগ কমানোর জন্য।’

জামায়াতের আমির ডা. শফিক বলেন, “এ অবস্থায় যদি বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হয়, আমার কাছে সাংবাদিক বন্ধুরা জানতে চেয়েছিলেন, ‘আপনি কী মনে করেন?’ আমি বলেছিলাম, ইট উইল বি দ্য জেনোসাইড অব ইলেকশন। একটা ইলেকশনকে একদম খতম করে দেবে। চরম বিশৃঙ্খলা হবে, রক্তের বন্যায় বাংলাদেশ ভেসে যাবে। আমরা এটা চাই না, আমরা চাই সকল ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধন করে, দেশে আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে জনগণকে স্বস্তির সঙ্গে তার ভোট প্রয়োগের সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে।”

আমিরে জামায়াত বলেন, ‘গত সাড়ে ১৫ বছরে যারা নতুন ভোটার হয়েছে, তাদের প্রত্যেককে ভোটার লিস্টে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আওয়ামী লীগ যে পৌনে ২ কোটি ফলস ভোটার তৈরি করে গিয়েছিল, তাদের কেটে সাফ করতে হবে। যারা দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন, তাঁদের বাদ দিতে হবে। এবারকার এই আন্দোলনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা সারা দুনিয়ায় আমাদের সঙ্গে আন্দোলন করেছেন, তাঁদের প্রত্যেকের ভোট নিশ্চিত করতে হবে। এ কাজগুলো করেই একটা সুষ্ঠু নির্বাচনে যেতে হবে। তবে দৈনন্দিন জীবনে মানুষকে কিছু আইনগত কিছু প্রশাসনিক সহায়তা দিতে হবে।’

নির্বাচনে পেশিশক্তি ও কালো টাকার কথা উল্লেখ করে ডা. শফিক বলেন, “বিভিন্ন আসনে যখন মনোনয়ন দেওয়া হয়, তখন পেশিশক্তি আর কালো টাকার বলে ভোটকে প্রভাবিত করে অযোগ্য সন্ত্রাসীরা অনেক টাকায় নির্বাচিত হয়ে আসে। সংসদে একজন মহিলা গিয়েছেন। তিনি কিছুই পড়তে পারেন না, বলতে পারেন না। তাঁর মেয়ে এক পৃষ্ঠা কাগজ লিখে দিয়ে বলেছে, ‘আম্মা, তুমি এইটা বলিও-এইটা বলিও, এইটা বললে হবে।’ তিনি দাঁড়িয়ে কাঁপছেন, ১৭ মিনিটে এক পৃষ্ঠা পড়েছেন, এক পৃষ্ঠার মধ্যে ২৮টা ভুল পড়েছেন। একজন সংসদ সদস্যের কাজ দেশের আইন রচনা করা। এখন বলেন, এ রকম লোকেরা যদি সংসদ সদস্য হন, তাঁরা কি দেশের ভালো আইন তৈরি করার যোগ্যতা রাখেন? রাখেন না বলেই তো কালো আইনের কবলে পড়ে আমরা শেষ হয়ে যাচ্ছি।”

সমাজের ৪০ ভাগ হচ্ছে যুবক এবং যুবকদের ৬০ ভাগ বেকার উল্লেখ করে এই জামায়াত নেতা বলেন, ‘কেন তারা বেকার থাকে, তার অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটা হলো সুশিক্ষার পরিবর্তে কুশিক্ষা। এ শিক্ষা মানুষকে মানুষ বানায় না, এই শিক্ষা যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে না। এ জন্য সার্টিফিকেটের বস্তা নিয়ে এক অফিস থেকে আরেক অফিসে দৌড়াতে হয়। আমরা যুব সমাজকে কথা দিচ্ছি, আল্লাহ যদি এই দেশ পরিচালনার দায়িত্ব আমাদের দেন, ইনশা আল্লাহ নৈতিক শিক্ষার পাশাপাশি পেশাগত দক্ষ শিক্ষা তোমাদের হাতে এমনভাবে তুলে দেওয়া হবে, যেদিন তোমাদের শিক্ষার পাঠ শেষ হবে, সেই দিন তোমাদের হাতে যেমন সার্টিফিকেট আসবে, তেমনি চাকরির অফার লেটারও চলে আসবে। আমরা একটা বেকারের হাত থাকতে দেব না।’

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা ১৮ কোটি মানুষের মাথা সোজা করে দাঁড়াবার একটা স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে চাই। সেই বাংলাদেশ গড়ার একটু ভালোবাসা আমরা আপনাদের কাছ থেকে চাই। একটু ভালোবাসা আপনারা দিলে আপনাদের সাহায্য চাইব, সমর্থন চাইব, দোয়া চাইব, সঙ্গে চাইব, পাশে চাইব। আমাদের লড়াই আপনাদের জন্য, নিজের জন্য, ১৮ কোটি মানুষের জন্য। ৫ তারিখের (আগস্ট) পর আমাদের কর্মীরা বেপরোয়া হয়ে সমাজে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেনি। অথচ সবচেয়ে মজলুম, বড় মজলুম দল হচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আমরা এখানে ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছি, ইনশা আল্লাহ দেশ গড়ার ক্ষেত্রেও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেব’।

জামায়াত প্রধান বলেন, ‘আপনারা গর্বিত উত্তরবঙ্গের মানুষ। এখন সন্তানেরা যে স্লোগান দেয় প্রথম নামটি আপনাদের আবু সাঈদের। আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ। আবু সাঈদের নামটাই আগে আসে। অনেকে আবার শহিদদের নিজের দলের দাবি করেন। শহিদেরা জাতীয় সম্পদ, আমরা দলের ভিত্তিতে তাদের ভাগ করতে চাই না। এদের আমরা মাথার ওপর উঠিয়ে রাখতে চাই। আমরাই একমাত্র দল, আল্লাহর শুকরিয়া, প্রত্যেকটি শহীদ পরিবারে আমরা গিয়ে পৌঁছেছি এবং তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। আমরা শহীদদের নিয়ে রাজনীতি করতে চাই না। শহীদদের আমরা মাথার তাজ বানিয়ে রাখতে চাই। লড়াইয়ের ময়দানে আবারও দেখা হবে ইনশা আল্লাহ। সেই সব লড়াই হবে মানুষের মুক্তির লড়াই, মানবিক বাংলাদেশ গড়ার লড়াই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

ভোটের মাঠে: টাঙ্গাইলে নির্বাচনী উত্তাপ

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

খালেদা জিয়াকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রওনা হবে শুক্রবার দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমনের বাম্পার ফলনেও মুখে হাসি নেই কৃষকের, বাজারে ধানের দাম কমায় হতাশা

মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।

কৃষকেরা জানান, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গত বছর বাজারে যেখানে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে, এই বছর মাঝারি শুকনা ধান ৯০০ ও শুকনা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত অনেক শ্রম ও টাকা খরচ করতে হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০ টন ধান উৎপাদন হবে। আর এই ধান থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।

বাজারে আমন ধানের দাম কম হলেও সরকারিভাবে ভালো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে প্রতি কেজি আমন ধান ৩৪ টাকা মূল্যে ৭৯০ টন, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা কেজি মূল্যে ২ হাজার ৬৭৭ টন ও আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি মূল্যে ৫ হাজার ৬৪৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। অনেক এলাকায় দ্রুত সময়ে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ একসঙ্গে সেরে নিচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সময়, খরচ ও কষ্ট কম করতে হচ্ছে। আবার কেউ কাজের লোক এনে ধান কেটে ফসলের মাঠেই মাড়াই করে সেদ্ধ দিচ্ছেন। অনেক কৃষক মাঠের মধ্যে রাত জেগে ধান সেদ্ধ করছেন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও ধানের দাম কম থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়ন কৃষক আনোয়ার খান বলেন, ‘গত বছর আমাদের ধান একেবারেই হয়নি। এ বছর অনেক ভালো ধান হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। প্রতি মণ ধান মাত্র ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মিলন কান্তি চাকমা বলেন, ‘আমাদের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে; চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারিভাবে ধানের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটা সময় আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতাম না; তবে এখন ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়। আশা করি, চলতি মৌসুমে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘জেলায় এ বছর খুব ভালো আমন ধান হয়েছে। কৃষকেরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও দিনের বেলা কুয়াশা না থাকায় সহজে কৃষকেরা ধান কাটা, মাড়াই ও সেদ্ধ করতে পারছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

ভোটের মাঠে: টাঙ্গাইলে নির্বাচনী উত্তাপ

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

খালেদা জিয়াকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রওনা হবে শুক্রবার দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ে ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে তাপমাত্রার পারদ। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।

গত কয়েক দিন পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৩ ডিগ্রির ঘরে থাকছে। ফলে বাড়ছে শীতের প্রকোপ। আজ শুক্রবার সকালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। সুনসান নীরবতায় গরম কাপড় পরে প্রয়োজনীয় কাজে বের হয়েছে লোকজন। কেউ কেউ মাঠে করছেন হালচাষ। এরই মধ্যে পূর্ব আকাশে সূর্য দেখা দিলেও নেই প্রখর রোদ।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার তালমা এলাকার গৃহবধূ নাজমা বেগম বলেন, ‘সকাল-বিকেল খুব ঠান্ডা পড়ে। ঘর থেকে বের হলেই যেন বাতাসে শরীর কেঁপে ওঠে। বাচ্চাদের নিয়ে সবচেয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। ঠান্ডা লাগলে হাসপাতালে যেতে হয় বারবার।’

একই এলাকার দিনমজুর মিজানুর রহমান বলেন, ‘শীতে কাজ পাওয়া কষ্ট হয়ে গেছে। সকালে কুয়াশায় কিছু দেখা যায় না, হাত-পা জমে থাকে। ঠান্ডায় শরীর ঠিকমতো সাড়া না দেওয়ায় কাজের গতি কমে গেছে।’

স্কুলছাত্রী তানজিলা আক্তার বলে, ‘সকালে কলেজ ও প্রাইভেটে যেতে খুব সমস্যা হয়। ঠান্ডা এমন যে হাতে গ্লাভস ছাড়া সাইকেল চালানো যায় না। শীত যেমন বাড়ছে, তেমনি অসুস্থ হওয়ার ভয়ও বাড়ছে।’

জেলার আশপাশ এলাকায় বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগী। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তনজনিত অ্যালার্জিতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, দিন-রাতের তাপমাত্রার এই বড় পার্থক্য শরীরের ওপর চাপ ফেলে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষ বেশি ঝুঁকিতে থাকে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকের।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, শীত ধীরে ধীরে নামছে। আজ ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। সামনে শীত আরও তীব্র হতে পারে। শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

ভোটের মাঠে: টাঙ্গাইলে নির্বাচনী উত্তাপ

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

খালেদা জিয়াকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রওনা হবে শুক্রবার দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গলায় রশি পেঁচানো নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ওমর আলী শেখ (৫০) নামের এক নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে মোবারকগঞ্জ চিনিকল ফার্মের সড়কের ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণ, নছিমনচালককে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত ওমর আলী কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার হাটবেলাটপুর গ্রামের ছাত্তার শেখের ছেলে।

বারোবাজারের ইসমাইল নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে বারোবাজারে শ্রমিকের কাজ করতাম। কিছুদিন আগে ওমর আলী নছিমন কিনেছে। সে বারোবাজারের মাছের ভাড়া টানে। সকালে তার মোবাইলে ফোন দিলে রিসিভ হচ্ছিল না। পরে জানতে পারি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।’

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির গলায় ধারালো অস্ত্রের কাটা দাগ রয়েছে। এ ছাড়া রশি দিয়ে তাঁর গলা পেঁচানো। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

ভোটের মাঠে: টাঙ্গাইলে নির্বাচনী উত্তাপ

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

খালেদা জিয়াকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রওনা হবে শুক্রবার দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাহাড়ে ভুট্টা চাষে ভালো ফলন পেলেন কৃষক জয়নাল

ঝুলন দত্ত, কাপ্তাই ( রাঙামাটি)
৩৩ শতক জমিতে ভুট্টা চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন কৃষক জয়নাল আবেদীন। ছবি: আজকের পত্রিকা
৩৩ শতক জমিতে ভুট্টা চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন কৃষক জয়নাল আবেদীন। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায় কৃষক জয়নাল আবেদীন এ বছর ৩৩ শতক জমিতে হাইব্রিড জাতের ভুট্টা চাষ করেছেন। ভালো ফলন পাওয়ায় তিনি লাভের আশা করছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতাধীন ‘কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে পুষ্টি ও খাদ্যনিরাপত্তা জোরদারকরণ’ প্রকল্পের আওতায় রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলা কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানে ভুট্টা চাষ করেছেন তিনি।

উপজেলার ১ নম্বর চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের রেশম বাগান ব্লকের বারঘোনিয়া তঞ্চঙ্গাপাড়ায় জমিতে ভুট্টা লাগিয়েছেন কৃষক জয়নাল। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, ৩৩ শতক কৃষি জমিতে ভুট্টার চাষ করেছেন। চলতি বছরের বোরো মৌসুমে কাপ্তাই উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে ভুট্টার বীজ, সার ও সাইনবোর্ড পেয়েছেন। এ ছাড়াও একই জমিতে সাথি ফসল হিসেবে লালশাক, ফরাস শিম ও টমেটো চাষ করেছেন। বর্তমানে জমিতে ভুট্টার ভালো ফলন হয়েছে। আগামী সপ্তাহে ভুট্টা বিক্রির আশা করছেন তিনি।

এদিন কাপ্তাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আহসান হাবীব রেশমবাগান তঞ্চঙ্গাপাড়ায় কৃষক জয়নাল আবেদীনের ভুট্টা চাষ প্রকল্প পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘পাহাড়ে ভুট্টা চাষ কম হলেও রেশম বাগান তঞ্চঙ্গাপাড়ায় এলাকায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রকল্পের আওতায় কাপ্তাই উপজেলায় চারটি ভুট্টা প্রদর্শনীর মধ্যে একটি কৃষক জয়নাল আবেদীনকে দিয়েছিলাম। ভুট্টা চাষে উনার ভালো অভিজ্ঞতা রয়েছে। আশা করছি, উনি ভালো লাভ করতে পারবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

ভোটের মাঠে: টাঙ্গাইলে নির্বাচনী উত্তাপ

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

খালেদা জিয়াকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রওনা হবে শুক্রবার দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত