Ajker Patrika

বাঘায় বাস-মোটরসাইকেল সংঘর্ষ: হাসপাতালে স্ত্রী-মেয়ে, শান্তর দাফন সম্পন্ন

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি      নাটোর (লালপুর) প্রতিনিধি
জাহিদ হাসান শান্তর সঙ্গে তুরাইফা। ছবি: সংগৃহীত
জাহিদ হাসান শান্তর সঙ্গে তুরাইফা। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীর বাঘায় যাত্রীবাহী বাস-মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত জাহেদুল ইসলাম শান্তর (২৭) দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২০ মে) সকাল ১০টায় বেড়িলাবাড়ি ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে তাঁকে নিজ গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। অন্যদিকে তাঁর সন্তানসম্ভবা স্ত্রী (২৪) জেসমিন আক্তার ও মেয়ে উম্মে তুরাইফা খাতুন (৫) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দুর্ঘটনায় পা হারিয়েছে তুরাইফা। তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী গুরুতর আহত হয়েছেন।

নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার বেড়িলাবাড়ি (জামতলা) এলাকায় পরিবার নিয়ে থাকতেন হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী শান্ত। রাজশাহীর বাঘা উপজেলার গ্রিন হ্যাভেন স্কুলের শিশু শ্রেণিতে পড়ে তাঁর মেয়ে তুরাইফা। গতকাল সোমবার সকালে এই দম্পতি মেয়েকে নিয়ে মোটরসাইকেলে স্কুলে যাচ্ছিল। আনুমানিক সকাল পৌনে ৯টায় ঈশ্বরদী-বানেশ্বর আঞ্চলিক মহাসড়কের বানিয়াপাড়ায় পৌঁছালে বাঘা থেকে ছুটে আসা ঢাকাগামী দ্রুতগতির সুপার সনি এক্সপ্রেস তাঁদের মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে বাবা ও মেয়ে উভয়ের ডান পা হাঁটু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সঙ্গে থাকা অন্তঃসত্ত্বা মা জেসমিন গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার করে তাঁদের প্রথমে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে রামেকে নিয়ে যান। ওই দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল সাড়ে ৫টায় নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে মারা যান শান্ত। মোবাইল ফোনে কথা হলে শান্তর শ্যালক আবিদ হাসানের সঙ্গে। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, সন্তানসম্ভবা জেসমিন আক্তার রামেকের অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে ও উম্মে তুরাইফা খাতুন শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে রামেকের শিশু বিভাগের এক চিকিৎসক বলেন, শিশু তুরাইফাকে তার মায়ের পাশাপাশি অর্থোপেডিক বিভাগের এক নম্বর ওয়ার্ডে বেডে স্থানান্তর করা হয়েছে। সে কথা বলতে পারছে। তার মা জেসমিনের কোমরের হাড় (পেলভিস), পিঠের হাড় যা হাতের সঙ্গে যুক্ত থাকে (স্কাপুলা) ভেঙে গেছে। মাথায় আঘাত আছে। পরবর্তী উন্নত চিকিৎসার স্বার্থে নিউরো সার্জারি ও গাইনি বিভাগে যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে রোগী এখন স্থিতিশীল আছে। বাচ্চাও স্থিতিশীল আছে।

বাঘা থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ ফ ম আছাদুজ্জামান বলেন, দুর্ঘটনার বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানে হয়। ঘটনাস্থল থেকে বাসটি জব্দ করে থানায় আনা হয়েছে। বাবা, মেয়ে ও স্ত্রীর মধ্যে বাবা সোমবার বিকেলে মারা গেছে, নিজ গ্রামে আজ তাঁর দাফন হয়েছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

এদিকে ছেলে হারানোর খবরে শান্তর বাবা মালয়েশিয়াপ্রবাসী এজাহার আলী পাগলপ্রায়। দূরদেশে সান্ত্বনা দেওয়ার মতো পাশে কেউ নেই তাঁর। অন্যদিকে ছেলের মৃত্যু, নাতনির পা হারানো ও ছেলের বউয়ের মুমূর্ষু অবস্থায় শান্তর মা জামিরন বেগম শোকে পাথর হয়ে গেছেন। বাক্‌প্রতিবন্ধী বোন জোবাইদার (২২) চোখ দিয়ে অনবরত পানি ঝরছে। ভাই হারানোর ব্যথায় সে শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে দেখছে আত্মীয়দের শোকের মাতম।

২০১৬ সালে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে উচ্চশিক্ষার জন্য চীনে গিয়েছিলেন শান্ত। তবে স্নাতক শেষ না করেই দেশে ফিরে এসে বাড়ির পাশে জামতলা বাজারে দিয়েছিলেন হার্ডওয়্যারের দোকান। স্ত্রী, সন্তান, বাবা ও মাকে নিয়ে গড়েছিলেন এক সুখের সংসার। কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনা নিমিষেই সব এলোমেলো করে দিয়েছে। অনিশ্চিত মেয়ে তুরাইফা, স্ত্রী জেসমিন ও অনাগত সন্তানের ভবিষ্যৎ। পরিবারের এমন অবস্থায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সড়ক দুর্ঘটনায় আর কোনো পরিবারকে যেন এমন করুণ পরিণতি ভোগ করতে না হয়। সড়ক হোক নিরাপদ। এমনটাই চাওয়া এলাকাবাসীর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সুদান হামলা: মিশন যাত্রার ১ মাস ৮ দিনের মাথায় প্রাণ গেল শান্তিরক্ষী মাসুদের, পরিবারে মাতম

নাটোর ও লালপুর প্রতিনিধি 
মাসুদ রানার মৃত্যুর খবরে পরিবারে কান্নার রোল উঠেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাসুদ রানার মৃত্যুর খবরে পরিবারে কান্নার রোল উঠেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশন যাত্রার মাত্র এক মাস আট দিনের মাথায় সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন করপোরাল মাসুদ রানা। তাঁর মৃত্যুর খবরে নাটোরের লালপুরের বাড়িতে এখন কান্নার রোল উঠেছে।

গতকাল শনিবার সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিক বেসে সন্ত্রাসী ড্রোন হামলায় ছয় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হন। নিহত শান্তিরক্ষীদের মধ্যে মাসুদ রানাও রয়েছেন।

মাসুদ রানা নাটোরের লালপুর উপজেলার আড়বাব ইউনিয়নের বোয়ালিয়াপাড়া গ্রামের মৃত সাহার উদ্দিনের ছেলে। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। তাঁর ছোট দুই ভাই মনিরুল ইসলাম জনি ও রনি আহমেদও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত।

মাসুদের শোকে তাঁর স্ত্রী আসমাউল হুসনা আঁখি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এই দম্পতির আট বছরের মেয়ে আছে। আঁখি বলেন, ‘আমার মেয়েকে এতিম করে সে চলে গেল। বাকি জীবন আমরা কীভাবে কাটাব? গতকালও (শনিবার) আমাদের সঙ্গে সে কথা বলেছিল। আজ সে নেই, ভাবতে পারছি না।’

ছেলের মৃত্যুর খবরে মা মর্জিনা খাতুন (৫৫) বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার তিন সন্তান সেনাবাহিনীতে। এক সন্তান দেশের জন্য প্রাণ দিল। আমার পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না। সরকার যেন আমার সন্তানের বিধবা স্ত্রী ও এতিম মেয়ের কথা ভাবে। আমাদের আর কেউ নাই।’

প্রতিবেশীরা জানান, মাসুদ রানা ছিলেন শান্ত ও মিশুক স্বভাবের মানুষ। পরিবারের সুখের স্বপ্ন নিয়ে তিনি শান্তিরক্ষা মিশনে গিয়েছিলেন।

লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জুলহাস হোসেন সৌরভ বলেন, নিহত মাসুদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। দ্রুত এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

এদিকে আজ রোববার বিকেলে নাটোর আর্মি স্টেডিয়ামের সেনাক্যাম্পের কমান্ডার মেজর মো. নাজমুল আলম আবীর নিহত শান্তিরক্ষী মাসুদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি বলেন, শহীদের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রয়োজনীয় সব কার্যক্রম চলমান রয়েছে। একই সঙ্গে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে শহীদ পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমিল্লায় শিশুখাদ্যে নিষিদ্ধ রং ব্যবহার, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লায় শিশুখাদ্যে নিষিদ্ধ রং ব্যবহার, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

কুমিল্লা নগরীর পাথুরিয়া এলাকায় বেকারি পণ্য ও শিশুখাদ্য প্রস্তুতকারী একটি কারখানায় অভিযান চালিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত পরিচালিত অভিযানে ওজনে কম দেওয়া, শিশুখাদ্যে নিষিদ্ধ রং ব্যবহার, পোড়া তেল দিয়ে শিশুখাদ্য ভাজা এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য সংরক্ষণ ও প্রস্তুতের অভিযোগে ‘আরব বেকারি’কে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯-এর বিভিন্ন ধারায় এ জরিমানা করা হয়।

অভিযানকালে দেখা গেছে, পার্টি কেকের ক্ষেত্রে প্রতি দুই পাউন্ডে প্রায় ৭০ গ্রাম কম দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া শিশুখাদ্য প্রস্তুতে নিষিদ্ধ রং ব্যবহারসহ স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের একাধিক প্রমাণ পাওয়া যায়।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুমিল্লার সহকারী পরিচালক মো. কাউছার মিয়া। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের নমুনা সংগ্রহকারী মো. সাকিব। অভিযানে কুমিল্লা জেলা পুলিশের একটি দল সহযোগিতা করে।

ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুমিল্লার সহকারী পরিচালক মো. কাউছার মিয়া বলেন, অভিযানে জরিমানার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটিকে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করা হয়। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাড্ডায় যাত্রীবাহী বাসে আগুন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। ছবি: সংগৃহীত
বাসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বাড্ডায় একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট কাজ করছে।

আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাত ৮টা ৩৫ মিনিটের দিকে অছিম পরিবহনের মিরপুরগামী একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেওয়ার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।

ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার মো. শাজাহান শিকদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে।

প্রত্যক্ষদর্শী শামীম জানান, উত্তর বাড্ডার এএমজেড হাসপাতালের সামনের সড়কে বাসটিতে আগুন দেওয়া হয়।

বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিরুল ইসলাম বলেন, কারা বাসে আগুন দিয়েছে তা এখনো স্পষ্ট নয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে যাচ্ছে এবং বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

এর আগে, গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ৮টার দিকে বাড্ডার গুদারাঘাট এলাকায় একটি চলন্ত যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। সে সময় ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘চিকিৎসা না পেয়ে’ গর্ভের সন্তানের মৃত্যু: চট্টগ্রামে ৪ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৫৭
চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের । ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের । ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা অবহেলায় এক নারীর গর্ভের সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগে চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা সাত্তারের আদালতে ভুক্তভোগী নারী নাসরিন আক্তার মামলার আরজি করেন।

মামলার আসামিরা হলেন চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সিরাজুন নূর, হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন) মো. নুরুল হক, পরিচালক (মেডিকেল অ্যাফেয়ার্স) এ এফ এম আশরাফুল করিম এবং ডেপুটি ডিরেক্টর (অ্যাডমিন-আইসিইউ) মো. আবু সাইদ চৌধুরী।

বাদীপক্ষের আইনজীবী রিগ্যান আচার্য্য জানান, মামলার আবেদনের পর আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন এবং মামলাটি তদন্তের জন্য ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আদেশ দেন। আদালত আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন।

মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সকালে প্রসবব্যথা নিয়ে নাসরিন আক্তারকে চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তখন তাঁর গর্ভকাল ছিল ৩৭ সপ্তাহ। আলট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্ট অনুযায়ী গর্ভস্থ সন্তান সম্পূর্ণ সুস্থ ছিল। ভর্তির পর রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলেও কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সরা তাৎক্ষণিক জরুরি চিকিৎসা দেননি বলে অভিযোগ করা হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোগীকে চিকিৎসা না দিয়ে রেখে দেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা। রোগীর স্বজনদের ভাষ্য অনুযায়ী, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলেও আলট্রাসনোগ্রাফির রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয়, এমন অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করা হয়।

অভিযোগে আরও বলা হয়, দীর্ঘ সময় লেবার রুমে ফেলে রাখার কারণে রোগীর রক্তক্ষরণ বেড়ে যায় এবং অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটে। পরে একজন সিনিয়র কনসালট্যান্ট পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে জরুরি অস্ত্রোপচারের নির্দেশ দেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওই নারী মৃত সন্তান প্রসব করেন। পরে রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে মায়ের প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হয়।

বাদীপক্ষের দাবি, সময়মতো সঠিক ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হলে গর্ভস্থ শিশুটিকে বাঁচানো যেত। ঘটনার পর দিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি; বরং বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয় এবং ভুক্তভোগী পরিবারকে দীর্ঘদিন অপেক্ষায় রাখা হয়।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক মো. নুরুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মামলার বিষয়টি জানলাম। তবে ওই রোগীর কাগজপত্র না দেখে কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত