Ajker Patrika

ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে ইতালি যাওয়া হলো না ছাত্রলীগ নেতাসহ দুই যুবকের

রায়পুরা (নরসিংদী) প্রতিনিধি
ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে ইতালি যাওয়া হলো না ছাত্রলীগ নেতাসহ দুই যুবকের

নরসিংদীর রায়পুরার দুই যুবক স্বপ্নের দেশ ইতালি যাত্রায় লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে নৌকাডুবিতে মারা গেছেন। নিহতরা হলেন—রায়পুরা উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের বীর শ্রেষ্ঠ মতিউর নগর গ্রামের ইদ্রিস মিয়ার ছেলে ইসতিয়াক হাসান ইমরান (৩২)। নিহত ইমরান ওই ইউনিয়নের সাবেক ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। অপরদিকে উপজেলার চান্দেরকান্দি পশ্চিমপাড়া এলাকার বাসিন্দা সৌদিপ্রবাসী ওসমান মিয়ার ছেলে ফয়সাল আবেদিন (২৩)। 

আজ বৃহস্পতিবার উপজেলার মুছাপুর ও চান্দেরকান্দি ইউনিয়নে নিহতের বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, গত মঙ্গলবার (১৮ জুন) ইতালির দক্ষিণ উপকূলে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহনকারী দুটি নৌকা ডুবে যায়। এর একটিতে ছিলেন ইমরান। এতে তিনিসহ ১১ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় শিশুসহ আরও ৬০ জন নিখোঁজ আছেন। গত ১৮ দিন আগে সাগর পথে ইতালি রওনা দেন ফয়সাল আবেদিন। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছে বলে জানান তার পরিবার। 

নিহত ইসতিয়াক হাসান ইমরানের মৃত্যুর সংবাদটি তাঁর ভাই আরমান আহমেদকে মোবাইল ফোনে জানান দালাল রাজিব মিয়া। দালালের বরাত দিয়ে আরমান বলেন, ‘ডুবে যাওয়া নৌকার পাটাতনের নিচে ইমরানসহ ১২ জন ছিলেন। ইতালির উপকূলে প্রবেশের পর তেলের ট্যাংক বিস্ফোরণ হলে নৌকার ভেতরে পানি ঢুকে যায়। ওই সময় বাইরে থেকে পাটাতন আটকানো ছিল। সেখানে স্ট্রোক করে ইমরানের মৃত্যু হয়। নৌকাটিতে তখন ৬২ অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিলেন।’

আরমান আরও জানান, লিবিয়া প্রবাসী দালাল রাজিব মিয়ার সঙ্গে ইমরানের ১৫ লাখ টাকায় ইতালি যাওয়ার চুক্তি হয়েছিল। সাগর পথে বিদেশ যাত্রায় বিরোধী ছিল তার পরিবার। কিন্তু ইমরানের জেদ ছিল সে ইতালি যাবে। লিবিয়ায় একটি ‘গেমঘরে’ দুই মাস বন্দী ছিল। সেখানে পর্যাপ্ত খাবার ও পানি দেওয়া হয়নি। শেষ গত ১৬ জুন তাঁর ভাইকে পাঠানো একটি খুদে বার্তায় ইমরান বলেন, ‘আজকে গেম দেওয়া হবে। বাবা-মাকে দোয়া করতে বলিস।’ 

অপরদিকে চান্দেরকান্দি ফয়সাল আবেদিনের বাড়িতে গিয়ে স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, তিনি রায়পুরা সরকারি কলেজে পড়াশোনা করতেন। স্বপ্ন ছিল ইতালি যাবেন। গত বছর পরিবারের কাউকে না জানিয়ে উপজেলার বেগমাবাদ এলাকার লিবিয়া প্রবাসী রাকিব মিয়া নামে এক দালালের মাধ্যমে লিবিয়া পাড়ি জমান তিনি। চুক্তি অনুযায়ী লিবিয়া পৌঁছে দালালকে ছয় লাখ টাকা দেন ফয়সালের পরিবার। বাকি চার লাখ টাকা ইতালি পৌঁছানোর পর দেওয়ার কথা ছিল। 

ফয়সাল আবেদিনের নিহতের খবরে বাড়িতে স্থানীয়রা ভিড় জমান। ছবি: আজকের পত্রিকা এদিকে গতকাল বুধবার ফয়সাল আবেদিনের মৃত্যুর সংবাদটি ফোনে পরিবারকে জানান সৌদিপ্রবাসী তার এক নিকটাত্মীয়। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে ভাইরাল হয়। সেই পোস্ট থেকে জানা যায়, লিবিয়ার বেনগাজী শহরের তলময়দা সাগর তীরে দুটি লাশ ভেসে আসে। এর মধ্যে একজনরে পাসপোর্ট উদ্ধার করে স্থানীয় কোস্টগার্ড। উদ্ধার হওয়া ওই পাসপোর্টটি ছিল ফয়সাল আবেদিনের। তাঁর লাশ বর্তমানে স্থানীয় আল মারজা হাসপাতাল মর্গে আছে।

ফয়সাল আবেদিনের মা শিল্পী বেগম বলেন, ‘ঢাকা যাওয়ার কথা বলে দালালের মাধ্যমে দুবাই গিয়ে আমাকে ফোন দেয় ফয়সাল। ইতালি নেওয়ার ব্যাপারে দালাল রাকিব আমাদের সঙ্গে কোনো আলাপ করেননি। গত ১৮ দিন আগে ফয়সাল ফোনে জানায়, সে ইতালি রওয়া দিচ্ছে। এরপর থেকে ছেলের মোবাইল বন্ধ।’

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ফয়সালের মৃত্যুর সংবাদটি মিথ্যা বলে দাবি করেন লিবিয়া প্রবাসী সিফাত নামে এক ব্যক্তি। বুধবার দুপুরে ফয়সালের চাচা মুজিবর রহমানের সঙ্গে ফোনে আলাপের সময় এ কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি বলেন, ‘আপনার ভাতিজা গ্রিসে আছে। পরে যোগাযোগ করবে।’ ভাতিজার সঙ্গে ফোনে কথা বলিয়ে দিতে ওই ব্যক্তিকে অনুরোধ করেন মুজিবর। সিফাত বলেন, ‘বিকেলে যোগাযোগ করিয়ে দেবেন। এরপর থেকে তাঁর মোবাইল ফোনটি বন্ধ রয়েছে।’ 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজিব মিয়া ও রাকিব মিয়া নামে দুই দালাল দীর্ঘ দিন ধরে লিবিয়া বসবাস করছেন। সাগর পথে ইতালি পাঠাতে অভিবাসনপ্রত্যাশী ব্যক্তিদের কাছ থেকে ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা নিতেন দালাল চক্রটি। অভিবাসন প্রত্যাশীদের ইতালি পাঠানো আগে লিবিয়ার গেম করে বন্দী করে রাখা হয়। সেখানে তাদের দেওয়া হতো না পর্যাপ্ত খাবার ও পানি। টাকা আদায় শেষ হলে নৌকায় করে সাগর পথে পাঠানো হতো ইতালি। অনিরাপদ যাত্রায় সাগরে ডুবে অনেক মারা গেলেও থামেনি তাদের কার্যক্রম। রায়পুরা উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের রামনগরের বাসিন্দা রাজিব মিয়া। দেশে তার বৃদ্ধ বাবা-মা থাকলেও তাদের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ নেই রাজিবের। একই উপজেলার মহেশপুর ইউনিয়নের বেগমাবাদ এলাকার বাসিন্দা রাকিব মিয়া। তিনিও ইতালি লোক পাঠান। তাদের কথা মতো দেশে থাকা পরিবার ও প্রতিনিধিদের কাছে টাকা পৌঁছে দিতেন ইতালিতে গমনেচ্ছু ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা। 

মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘ইসতিয়াক হাসান ইমরান মুছাপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। এমন মৃত্যু কাম্য নয়। অবৈধ পথে ইতালি যাওয়ার ব্যাপারে সকলকে আরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।’

নিহত ইমরান খবরে উপজেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে শোকবার্তা। ছবি: সংগৃহীতরায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাফায়েত হোসেন পলাশ জানান, এ ব্যাপারে নিহত দুজনের পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি।

রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইকবাল হাসান জানান, সাগরপথে ইতালি যাওয়ার পথে মৃত্যু হয়েছে— এমন তথ্য জানা নেই। তবে তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিহত ইসতিয়াক হাসান ইমরান ও ফয়সাল আবেদিনের লাশ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানান দুই ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য ও স্বজনসহ স্থানীয়রা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি ভারত: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

রংপুর প্রতিনিধি
রংপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেয়ার ব্যাপারে ভারত এখনও ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। রংপুর অঞ্চলে চার দিনের সফরে এসেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো চেয়েছি যে তাকে (শেখ হাসিনাকে) ফেরত পাঠানো হোক। যেহেতু উনি একজন কনভিক্টেড, যেহেতু সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা তাকে একটি শাস্তি দিয়েছে। কিন্তু আমরা ইতিবাচক কোনো সাড়া এখন পর্যন্ত পাইনি। এটা নিয়ে আমার মনে হয় স্পেকুলেট না করাই ভালো। দেখা যাক কী হয়। আমরা তো চেয়েছি খুব, এ ধরনের ঘটনায় তো ঝট করে একদিনে সাত দিনে কোনো পরিবর্তন ঘটে না। আমরা অপেক্ষা করব, দেখি, ভারতের পক্ষ থেকে কি আসছে রিঅ্যাকশন।’

তৌহিদ হোসেন বলেন, একটা রিঅ্যাকশন আমরা দেখেছি যেটা, সেটা হলো তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে, এরকম একটা কথা আসছে আমাদের। দেখুক তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরে কোনো তথ্য নেই বলে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, "তারেক সাহেব কখন আসবেন এই সম্বন্ধে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। উনার স্ত্রী সম্ভবত আসছেন বা পৌঁছে গেছেন হয়তো ইতিমধ্যে। আজকে সকালে পৌঁছার কথা ছিল। বেগম জিয়াকে আজকে নেওয়া হচ্ছে না, আমি ঢাকা থেকে আজকে সকালে জানলাম যে, আজকে নেওয়া হচ্ছে না। একটু টেকনিক্যাল প্রবলেম দেখা দিয়েছে ওই এয়ারক্রাফট নিয়ে। সেক্ষেত্রে হয়তো এক-আধ দিন দেরি হতে পারে। "

আরাকান আর্মি বাংলাদেশিদের ধরে নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "আরাকান আর্মির সাথে আমাদের দ্বিপাক্ষিক আলোচনা সম্ভব নয়। তারা একটা নন-স্টেট অ্যাক্টর। আমরা স্টেট হিসেবে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা যেমন মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ, থাইল্যান্ড বা ভারতের সাথে করতে পারি সেটা তাদের সাথে করতে পারি না। তবে আমাদের স্বার্থ যেহেতু আছে, আমাদের দেখতে হবে। এই ঘটনা যাতে কমে বা আদৌ না ঘটে, এটার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। "

এছাড়াও নীলফামারীতে প্রস্তাবিত চীনা হাসপাতালের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত শুরু করে যেতে চায় বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। একই সঙ্গে নির্বাচিত সরকার এলে এই কাজ সমাপ্ত করবে বলেও আশা তার। এ সময় পিছিয়ে পড়া রংপুরের প্রত্নতাত্ত্বিকসহ সবক্ষেত্রে নেয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সরকারের সদিচ্ছার কথা জানান তৌহিদ হোসেন।

এরপর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সপরিবারে রংপুর জমিদার বাড়ি তাজহাটে পরিদর্শনে যান। এছাড়াও বিকেলে রংপুর সার্কিট হাউসে চা-চক্রের কথা রয়েছে তৌহিদ হোসেনের। আগামীকাল রংপুরের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং রংপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জিলা স্কুল পরিদর্শন করার কথাও রয়েছে তার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় ৫৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চর এলাকার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছে কোস্ট গার্ড। এ সময় একটি নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আটক কয়েকজন মাঝিমাল্লার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোস্ট গার্ড হাতিয়ার একটি দল এই অভিযান চালায়। জব্দ করা জাটকাগুলোর মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকা।

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. আবুল কাশেম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোস্ট গার্ড। অভিযানে মেঘনা নদীর জাগলার চর এলাকায় একটি কাঠের নৌকায় তল্লাশি করা হয়। ওই নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। এ সময় মাঝিদের মুচলেকা নিয়ে নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ মাছগুলো মৎস্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এতিমখানা ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাঠে পড়ে ছিল মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মাঠ-সংলগ্ন সেতু থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকা ফিরোজ মোল্যা নামের এক ভ্যানচালককে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।

নিহত উৎপল ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল গ্রামের অজয় সরকারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে।

থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে সড়কের পাশে ফাঁকা মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পাশেই একটি সেতুর সঙ্গে একই গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।

ভ্যানচালকের বরাত দিয়ে রনকাইল গ্রামের বাসিন্দা ও প্রতিবেশী কাজী শাহীন বলেন, উৎপল সরকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে ফেলে। তারা উৎপলের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা লুট করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম মারুফ হাসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই থেকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এটাকে ডাকাতি বলা যায় না। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে মূল কারণ বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাসার দরজা ভেঙে চবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

চবি প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ওমর ফারুক সুমন নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকার একটি বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

ওমর ফারুক বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

স্থানীয় ও পরিবারের সদস্যরা জানান, সুমন খুলশীতে তাঁর মামার বাসায় থাকতেন। তাঁর বড় ভাইও সেখানে থাকেন। দুই দিন আগে সুমনের মামা পুরো পরিবার নিয়ে তুরস্কে বেড়াতে যান। বাসায় সুমন ও তাঁর বড় ভাই ছিলেন। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে ভাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন সুমন। ফোনে তাঁর বড় ভাই কখন বাসায় ফিরবেন জানতে চান সুমন। বড় ভাই জানান যে তাঁর আসতে একটু দেরি হবে। এর কিছুক্ষণ পর বড় ভাই সুমনকে ফোন করলে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি। পরে বাড়ি থেকে সুমনের মা ফোন দিয়ে যোগাযোগ করতে না পেরে বিষয়টি বড় ভাইকে জানান। এতে উদ্বেগ দেখা দিলে বড় ভাই বিল্ডিংয়ের দারোয়ানকে দিয়ে বাসা চেক করান।

দারোয়ান কলিংবেল বাজিয়েও কোনো সাড়া না পেয়ে বড় ভাইকে জানালে তিনি দ্রুত বাসায় এসে সুমনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে চিরকুট মিলেছে। এতে লেখা রয়েছে, ‘আমি সুমন, ওমর ফারুক সুমন। আমার কোনো আশা-আকাঙ্ক্ষা নেই। আর আমার কারও প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। সবাই ভালো থাকবেন।’ এর আগে ১ ডিসেম্বর লেখা আরেকটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে লেখা ছিল—‘আশাই জীবন, আশাই মরণ, ব্যর্থতা হতাশা-অন্ধকারে নিয়ে যায়।’

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর জামান বলেন, ‘সুমন ও তাঁর বড় ভাই একসঙ্গে মামার বাসায় থাকতেন। মামা ও মামি বর্তমানে বিদেশে আছেন। বড় ভাই সন্ধ্যায় বাইরে যান। সে সময় সুমন বাসায় একা ছিলেন। বড় ভাই বাসায় ফিরে এসে বারবার ডাকলেও ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে কোনো সাড়া পাননি। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকলে সুমনের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তে এটি আত্মহত্যা মনে হলেও আমরা সব সম্ভাব্য কারণ খতিয়ে দেখছি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত