Ajker Patrika

ফেসবুকে পুরোনো ব্যানারে ‘বঙ্গবন্ধু চত্বর’ দেখে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান পণ্ড, ইউএনও লাঞ্ছিত

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত আজ বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের মঞ্চ। ছবি: সংগৃহীত
নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত আজ বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের মঞ্চ। ছবি: সংগৃহীত

নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের মঞ্চে বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় তাঁরা মঞ্চ থেকে শিল্পদের নামিয়ে দিয়ে উপস্থাপককে মারধর ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (ইউএনও) অন্য অতিথিদের লাঞ্ছিত করেন। এতে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানটি পণ্ড হয়ে যায়।

আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলা মুক্তমঞ্চে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, দুই বছর আগে বর্ষবরণ উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু চত্বর’ লেখা একটি ব্যানার এবারের ব্যানার হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সেই ব্যানার দেখে ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীরা দল বেঁধে গিয়ে অনুষ্ঠানে হামলা চালান।

উপজেলা প্রশাসন ও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সকাল থেকে আটপাড়া উপজেলা পরিষদসংলগ্ন মুক্তমঞ্চে প্রশাসন আয়োজিত বর্ষবরণের অনুষ্ঠান চলছিল। এতে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা অংশ নেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দ্বিতীয় অধিবেশন চলাকালে ‘উপজেলা প্রশাসন বিদ্যানিকেতন’–এর শিক্ষার্থীরা নৃত্য পরিবেশন করছিলেন।

অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে হঠাৎ উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব নূর ফরিদ খান, যুগ্ম আহ্বায়ক মোদাচ্ছের হোসেন ওরফে কাইয়ুম, কামাল হোসেন তালুকদারসহ স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হন। তাঁরা ইউএনওকে তাৎক্ষণিক অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলেন। এ সময় ইউএনও কারণ জানতে চাইলে হামলাকারীরা প্রশ্ন করেন, মঞ্চের ব্যানারে স্থান হিসেবে ‘উপজেলা পরিষদ বঙ্গবন্ধু চত্বর’ লেখা হয়েছে কেন—এ কথা বলে যুগ্ম আহ্বায়ক মোদাচ্ছের হোসেনের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা মঞ্চে উঠে শিক্ষার্থীদের নামিয়ে দিয়ে মঞ্চে থাকা ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী একজন বলেন, এ সময় ইউএনওসহ কর্মকর্তারা বাধা দিলে তাঁরা অতিথি ও আয়োজকদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন। তাঁদের মধ্যে এক নেতা উপস্থাপককে মারধর করে মাইক কেড়ে নিয়ে ইউএনওকে গালমন্দসহ ফ্যাসিস্টের দোসর হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী এক কর্মকর্তা বলেন, হামলাকারীদের ইউএনও বলেন, ‘ব্যানারে তো কোনো বঙ্গবন্ধু চত্বর লেখা নেই।’ তখন নূর ফরিদ আবারও বলেন, ‘না, ব্যানারে বঙ্গবন্ধুর নাম আছে। ফেসবুকেও ব্যানারের ছবি পোস্ট আছে। আমার ফোনেও এই ছবি একজন পাঠিয়েছেন। অনুষ্ঠান এখনই বন্ধ করতে হবে।’ বিশৃঙ্খলার কারণে একপর্যায়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে অনুষ্ঠানটি পণ্ড হয়ে যায়। পরে দেখা যায়, ফেসবুকে পোস্ট করা ওই ছবিটি ১৪৩০ সালের।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া দুই বছর আগের অনুষ্ঠানের ব্যানার। ছবি: সংগৃহীত
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া দুই বছর আগের অনুষ্ঠানের ব্যানার। ছবি: সংগৃহীত

আটপাড়ার ইউএনও রুয়েল সাংমা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উপজেলার যুবদলের সদস্যসচিব নূর ফরিদের নেতৃত্বে কাইয়ুম (মোদাচ্ছের হোসেন), কামালসহ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী সংঘবদ্ধ হয়ে হঠাৎ অনুষ্ঠানের মঞ্চের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন। এ সময় আমি কারণ জানতে চাইলে আমাকে ও অন্য কর্মকর্তাদের লাঞ্ছিত করে অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দেন। উপস্থাপককে মারধর করে মাইক হাতে নিয়ে আমাকে ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে আখ্যায়িত করেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’

আটপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘যখন ঘটনাটি ঘটেছে, তখন আমি উপস্থিত ছিলাম না। অভিযোগ পেলে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলার যুবদলের সদস্যসচিব নূর ফরিদ খান বলেন, ‘আমরা একটি স্থানে বসেছিলাম। হঠাৎ একজন আমার মেসেঞ্জারে একটি ব্যানারের ছবি দেন। ওই ব্যানারে বঙ্গবন্ধু চত্বর লেখা ছিল। ফেসবুকেও একজনের এমন একটি পোস্ট দেখেছি। পরে আমরা মঞ্চে গিয়ে কারণ জানতে চাই। এ সময় যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল হোসেন, কাইয়ুম, সদস্য মাসুক, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক উজ্জ্বলসহ কয়েকজন ব্যানার নামিয়ে ফেলেন। পরে প্রশাসনের লোকজন আমাদের নিশ্চিত করেন, ব্যানারে বঙ্গবন্ধুর নাম নেই।’

নূর ফরিদ খান বলেন, ‘আমরা যে ব্যানার ফেসবুকে দেখেছি, সেটি দুই বছর আগের। বিষয়টি আমাদের ভুল হয়ে গেছে। অনুষ্ঠানের ব্যানারটি নামানোর আগে ভালোভাবে দেখার দরকার ছিল। এ জন্য আমরা ইউএনও মহোদয়ের কাছে ভুল স্বীকার করেছি। মাফ চেয়েছি। আপনারাও বিষয়টি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আর আমরা কাউকে লাঞ্ছিত করিনি। এটা মিথ্যা।’

নেত্রকোনা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী বলেন, ‘আটপাড়ায় যে ঘটনা ঘটেছে, তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা দলীয়ভাবে বিষয়টি তদন্ত করে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।’

নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস বলেন, উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইউএনওকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাংবাদিক আনিস আলমগীর ডিবি হেফাজতে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আনিস আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত
আনিস আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

সিনিয়র সাংবাদিক ও টকশোর আলোচিত মুখ আনিস আলমগীরকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তিনি বর্তমানে ডিবি কার্যালয়ে রয়েছেন।

আনিস আলমগীরকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়েছে কি না— এ বিষয়ে জানতে আজ রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মো. শফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাঁর সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে আমরা বিস্তারিত জানাব। তাঁর সঙ্গে এখনো কথা বলিনি, আমি ডিবি কার্যালয়ে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলব, তারপর বিস্তারিত বলতে পারব।’

এর আগে, রাত ৮টার আগে ধানমন্ডির একটি জিম থেকে সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে ডিবি সদস্যরা গিয়ে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তিনি (রাত ৯ টা) ডিবি কার্যালয়ে ছিলেন।

সাংবাদিক আনিস আলমগীর দৈনিক আজকের কাগজসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কাজ করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে টেলিভিশন টকশোতে নানা বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় ছিলেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফুটপাতে দোকান চালানো নিয়ে দ্বন্দ্ব, ভাড়াটে খুনি দিয়ে হকারকে হত্যা

 নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামে নগরের কোতোয়ালি থানা এলাকায় ফুটপাত থেকে হকার ইসমাইলের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় আরও দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে পুলিশ বলছে, ফুটপাতে দোকান চালানো নিয়ে বিরোধের জেরে ভাড়াটে খুনিদের দিয়ে ইসমাইলকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের দুই সপ্তাহ পর আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) উপকমিশনার (দক্ষিণ) মো. আলমগীর হোসেন নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

এর আগে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গতকাল শনিবার রাতে নগরের মেরিনার্স রোডের ইয়াকুবনগর লইট্টাঘাটা এলাকা থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-৭। পরে তাঁদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বিনু বৈদ্যর ছেলে রুবেল বৈদ্য (৩১) ও পটিয়া উপজেলার দক্ষিণ মালিয়ারার রতন নাথের ছেলে রাজু নাথ (৩৮)।

গত ২৭ নভেম্বর দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে নগরীর কোতোয়ালি থানার কাছে লালদীঘি মোড়ে সাইকেল চালিয়ে বাসায় ফেরার পথে ছুরিকাঘাতে খুন হন ইসমাইল। পুলিশ প্রথমে ঘটনাটি ছিনতাই হিসেবে ধারণা করে। পরে তদন্তে পরিকল্পিত হত্যার তথ্য পায়। পুলিশের হাতে আসা একটি সিসিটিভি ফুটেজে মোটরসাইকেলে থাকা তিন যুবককে হত্যায় অংশ নিতে দেখা গেছে।

এ ঘটনায় পরদিন কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতনামা তিনজনকে আসামি করে নিহত ইসমাইলের স্ত্রী নাহিদা আক্তারের করা মামলায় পুলিশ মনির হোসেন ওরফে নয়ন নামের একজনকে গ্রেপ্তার দেখায়।

সংবাদ সম্মেলনে সিএমপির উপকমিশনার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ফুটপাতের দোকান নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে মূলত ভাড়াটে খুনি দিয়ে মো. ইসমাইলকে হত্যা করা হয়েছে। এই খুনের সঙ্গে মোটরসাইকেলে থাকা সরাসরি যে তিনজনের জড়িত থাকার তথ্য ছিল, সবাই গ্রেপ্তার হয়েছেন। খুনে ব্যবহৃত টিপ ছুরি ও মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে।

আলমগীর হোসেন আরও বলেন, ‘ঘটনার পর ইসমাইলের খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোনটি মনির হোসেন নামের যাঁর কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়, তাঁকে আমরা প্রথমেই গ্রেপ্তার করি। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তিনজনের অন্যতম আসামি তিনি। তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।’

গ্রেপ্তার তিনজন মূলত ভাড়াটে খুনি হিসেবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে দাবি করে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, তাঁদের মধ্যে রাজুর বিরুদ্ধে তিনটি ও রুবেল বৈদ্যর বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা রয়েছে। ডাকাতি, দস্যুতা ও খুনের অভিযোগে এসব মামলা হয়েছিল।

আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ইসমাইলের সঙ্গে ফুটপাতের দোকান নিয়ে যাঁর সঙ্গে বিরোধ ছিল, মূলত তিনিই খুনিদের ভাড়া করেছিলেন। ওই ব্যক্তিসহ আরও দুজনের বিষয়ে আমরা তথ্য পেয়েছি। তদন্তের স্বার্থে আমরা এখন তাঁদের নাম প্রকাশ করছি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সুদানে হামলা: নিহত শান্তিরক্ষী শামীমের বাড়িতে কান্নার রোল

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
শামীম রেজা। ছবি: সংগৃহীত
শামীম রেজা। ছবি: সংগৃহীত

সুদানে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে সন্ত্রাসীদের ড্রোন হামলায় নিহত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী শামীম রেজার রাজবাড়ীর বাড়িতে মাতম চলছে। প্রতিবেশীরা তাঁর পরিবারকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করলেও কান্না বাঁধ মানছে না।

নিহত শামীম রেজা কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের হোগলাডাঙ্গী গ্রামের আলমগীর ফকিরের ছেলে।

শোকে আচ্ছন্ন শামীমের পরিবার। ছবি: আজকের পত্রিকা
শোকে আচ্ছন্ন শামীমের পরিবার। ছবি: আজকের পত্রিকা

শামীমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কান্না-আহাজারিতে পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। প্রতিবেশীরা শামীমের বাবা, ভাইকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। শামীমের মা ও স্ত্রী কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।

শামীমের চাচা আনিস জানান, তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে শামীম সবার বড়। ২০১৭ সালে সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে যোগ দেন তিনি। গত ৭ নভেম্বর তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিতে সুদানে গিয়েছিলেন।

শামীমের ছোট ভাই সোহান ফকির বলেন, ‘গতকাল টেলিভিশনে সুদানের ঘটনার খবর দেখার পর থেকেই আমরা ভীষণ দুশ্চিন্তায় ছিলাম। ভাইয়ের মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। রাত ১২টার পর আমরা নিশ্চিত হই ভাই আর নেই। গত শুক্রবার সে বাড়িতে ভিডিও কলে কথা বলেছিল।’

বাবা আলমগীর ফকির কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘শুক্রবারও কথা বলেছি। শামীম তখন বলল, আব্বু তুমি ভালো থেকো আমি ডিউটিতে যাব। আমার ছেলেকে এনে দাও তোমরা। ’

স্থানীয় মাসুদ, শাহজাহান, মাহবুব বিশ্বাস বলেন, ‘এই মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর শামীমের পরিবারের সদস্যরা ভেঙে পড়েছেন। শামীম ছিল তাঁর পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। তাঁর পরিবার এখন কীভাবে চলবে? আমরা এলাকাবাসী দাবি জানাই, শামীমের লাশ যেন দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনে। সেই সঙ্গে শামীমের ছোট ভাই সোহানকে যেন একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দেয় সরকার।’

কালুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘নিহত শামীমের পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে। মরদেহ আসার বিষয়ে এখন পর্যন্ত যেটা জানতে পেরেছি, আগামী ১৭ তারিখে আসবে। তবে এখনো নিশ্চিত না। আশা করি, আগামীকাল সঠিক তথ্য জানতে পারব।’

উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিক বেসে সন্ত্রাসী ড্রোন হামলায় শামীমসহ ছয় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিরাজগঞ্জে অডিটরিয়ামের ওয়াশরুম থেকে বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে শহীদ এম মনসুর আলী আধুনিক অডিটরিয়ামের ওয়াশরুম থেকে এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে অডিটরিয়ামের দ্বিতীয় তলার একটি ওয়াশরুম থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ জানায়, বিকেলে শহীদ অডিটরিয়ামের দ্বিতীয় তলা থেকে দুর্গন্ধ পেয়ে স্থানীয় কয়েকজন সেখানে যান। এ সময় ওয়াশরুমের ভেতরে এক ব্যক্তির লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে তারা ঘটনাস্থলে যায়।

পুলিশের ভাষ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট অডিটরিয়ামে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর থেকে ওই ভবনে মানুষের তেমন চলাচল ছিল না।

এদিকে লাশ উদ্ধারের পর মমতা খাতুন নামে এক নারী ঘটনাস্থলে এসে দাবি করেন, উদ্ধার হওয়া লাশটি তাঁর বাবার। তিনি জানান, তাঁর বাবা প্রায় ২০ থেকে ২৫ দিন আগে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। এরপর আর তাঁর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

কাজীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ মো. এনায়েতুর রহমান মোবাইল ফোনে বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। লাশটির পরিচয় শনাক্তে চেষ্টা চলছে। সেই সঙ্গে ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত