Ajker Patrika

ময়মনসিংহের খড়িয়া

নদীর জমি দখল, হচ্ছে বিক্রিও

  • ১৫ বছর আগেও স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ ছিল।
  • ফুলপুর পৌরশহরের সেতুর দুই পাশে দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে বাড়ি, দোকানপাট।
  • দখল করা জমি আবার অন্যের কাছে বিক্রিও করা হচ্ছে, এমনকি প্লট আকারেও।
  • সিএস রেকর্ড অনুযায়ী খনন করা হবে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
ইলিয়াস আহমেদ, ময়মনসিংহ
আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮: ২৯
১৫ বছর আগেও স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ ছিল খড়িয়া নদীতে। কিন্তু ক্রমাগত দখল-দূষণে সেই চিত্র আর নেই। নদীর জায়গায় গড়ে তোলা হচ্ছে বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা। প্রতিনিয়ত ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। এতে বেহাল হয়ে পড়েছে নদীটি। ছবিটি সম্প্রতি ময়মনসিংহের ফুলপুর পৌর শহরের সেতুসংলগ্ন এলাকা থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
১৫ বছর আগেও স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ ছিল খড়িয়া নদীতে। কিন্তু ক্রমাগত দখল-দূষণে সেই চিত্র আর নেই। নদীর জায়গায় গড়ে তোলা হচ্ছে বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা। প্রতিনিয়ত ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। এতে বেহাল হয়ে পড়েছে নদীটি। ছবিটি সম্প্রতি ময়মনসিংহের ফুলপুর পৌর শহরের সেতুসংলগ্ন এলাকা থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

একসময়ের উত্তাল খড়িয়া নদী এখন স্রোতহীন। দখল-দূষণে গতিহারা ময়মনসিংহের ফুলপুরের এই নদী। এর দুই পাশে এখন ফসল এবং মাঝখানে কচুরিপানায় ভরা। প্রতিনিয়ত ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। নদীর জায়গায় গড়ে তোলা হচ্ছে দোকানপাট, ঘরবাড়িসহ বহুতল ভবন। বছরের পর বছর ধরে চলা এই ‘নির্যাতনে’ নিজস্বতা হারিয়েছে নদীটি।

৩৭ কিলোমিটার খড়িয়া নদী ময়মনসিংহ সদর উপজেলার রাংসা থেকে ফুলপুর উপজেলা অতিক্রম করে হালুয়াঘাটের ভোগাই কংস নদে গিয়ে মিশেছে। নদীটির বেশির ভাগ অংশ ফুলপুরে হওয়ায় এটি ফুলপুর খড়িয়া নদী হিসেবে পরিচিত।

নদীতীরের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৫ বছর আগেও খড়িয়ায় স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ ছিল। অথচ ফুলপুর পৌরশহরের সেতুর দুই পাশে নদী দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে বাসাবাড়ি, করা হয়েছে ফসলের আবাদ। সিএস রেকর্ডে নদীর জায়গা থাকলেও আরওআর এবং বিআরএস খতিয়ান রেকর্ডে দখলসূত্রে নিজেদের নামে দলিল করে নিয়েছেন অনেকে। সেই জমি আবার অন্যের কাছে বিক্রিও করা হচ্ছে।

তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, নদী খননের সময় তারা সিএস রেকর্ড অনুযায়ী খনন করবে।

প্রায় ৩০ বছর আগে ফুলপুর সরকারি কলেজ রোডে খড়িয়া নদীর পাড়ে বহুতল ভবন নির্মাণ করেন ব্যবসায়ী মোফাজ্জল হোসেন। এ নিয়ে স্থানীয়রা প্রশাসনকে বারবার জানালেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

সেখানকার বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘চারতলা ওই বাড়িটি যে কেউ দেখলে বলবে সেটি নদীর মধ্যে পড়েছে, কিন্তু তিনি (মোফাজ্জল) কোন ক্ষমতাবলে তা করেছেন, সেটি আমরা জানি না। তাঁকে প্রশ্ন করা হলে নদীর মধ্যে তাঁর জায়গা রয়েছে বলে দাবি করেন। তাঁর মতো আরও অনেকে নদীর জায়গা দখল সূত্রে কাগজপত্র করে নিজেদের নামে নিয়ে যা ইচ্ছে তাই করছেন, এসবের একটি বিহিত হওয়া প্রয়োজন।’

এ বিষয়ে মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘ক্রয়সূত্রে আড়াই শতাংশ জমি কিনে প্রায় ৩০ বছর আগে চারতলা বাসাটি নির্মাণ করেছি। নির্মাণের পর থেকেই মানুষ বলছে সেটি নদীর মধ্যে পড়েছে, কিন্তু এ নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। জায়গাটির মালিক প্রকৃতপক্ষে আমিই।’

স্থানীয় বিল্লাল হোসেন জানান, সেতুর নিচে খড়িয়া নদীর অংশটুকু মেন্দুমিয়ার চর নামে পরিচিত। সরকারের কাছ থেকে ১০০ বছরের জন্য এ অংশ লিজ নিয়েছেন চৌকিদার কদ্দুস। পরে তিনি বিআরএস খতিয়ানে নিজের নামে লিখে নেন। এখন প্লট করে বিক্রি করছেন। কিছুদিন আগেও শাহজাহান নামে এক ব্যবসায়ী এখানে জমি কিনেছেন।

মাওলানা রফিকুল ইসলাম নামে একজন বলেন, ১৫-২০ বছর আগেও নদীতে প্রবল স্রোত ছিল। অনেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ধীরে ধীরে নদীটি যেমন দখল হয়ে সংকীর্ণ হয়েছে; তেমনি বেশ কয়েক জায়গায় বাঁধের কারণে স্রোত না থাকায় কচুরিপানায় ভরে গেছে।

সেই সঙ্গে পৌরসভা ও আশপাশের কলকারখানার বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে পানি।

গোদারিয়া গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রত্যেকে তাঁর বাড়ির সামনের নদীর অংশ দখল করে আবাদ করার পাশাপাশি জমি বিক্রিও করছেন। তাঁরা কীভাবে কাগজপত্র করে এসব করছেন, তাঁরাই তা ভালো জানেন। নদী তো এখন সবুজ মাঠ, বহুতল ভবন ও দোকানপাটের জায়গা।’

নদীর পাড় ঘেঁষে বাসা নির্মাণ করা আব্দুল খালেকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কাগজপত্র দেখেই আমি জমি কিনে বাসা করেছি। আমার বাসার অনেক দূরে নদীর অবস্থান। এ পাড়ে নয়, ওই পাড়ে আমুয়াকান্দা মসজিদের আশপাশে খড়িয়া নদী দখল হচ্ছে।’

সেতুর পাশে নদীর ওপর কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বেশ কয়েকটি চায়ের দোকান। ওই সব দোকান থেকে প্রতিদিন ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে নদীতে।

দোকানি মো. রাজু বলেন, ‘সেতুর পাশে বাপ-দাদা ব্যবসা করেছে। আমিও দোকান করছি। কিছুদিন আগে আমরাই কাঠ দিয়ে কয়েকটি দোকান তুলেছি।’ তবে কোনো ময়লা নদীতে ফেলা হচ্ছে না বলে তিনি দাবি করেন।

ফুলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া ইসলাম সীমা বলেন, নদী সুরক্ষায় আইন রয়েছে। কেউ আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে দখল-দূষণে জড়িত থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ময়মনসিংহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী আবু রায়হান বলেন, ‘আমরা নিয়মিত নদী খনন করছি। আর সকল নদী সিএস রেকর্ড অনুযায়ী খনন করা হয়। সেখানে অনেকের জায়গা-জমি থাকলেও আমাদের কিছু করার থাকে না। তাই নদীর জায়গা দখল করে অন্যত্র বিক্রি এবং বহুতল ভবন, দোকানপাট নির্মাণ করা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’

ময়মনসিংহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.আখলাক উল জামিল বলেন, জেলায় ৫৯টি নদনদী রয়েছে। এর মধ্যে এলাকার মানুষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে খননকাজও অব্যাহত আছে। বিগত পাঁচ বছরে বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় জেলায় ছোট-বড় ২১টি নদী ও খাল খনন করা হয়েছে। বর্তমানে মুক্তাগাছার আয়মন নদীর খননকাজ অব্যাহত রয়েছে। নান্দাইলের কাঁচামাটিয়া নদীর খননকাজ অচিরেই শুরু হবে। জনগণের দাবি বিবেচনা করে ফুলপুরের খড়িয়া নদী দখলমুক্ত করে খননের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি ভারত: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

রংপুর প্রতিনিধি
রংপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেয়ার ব্যাপারে ভারত এখনও ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। রংপুর অঞ্চলে চার দিনের সফরে এসেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো চেয়েছি যে তাকে (শেখ হাসিনাকে) ফেরত পাঠানো হোক। যেহেতু উনি একজন কনভিক্টেড, যেহেতু সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা তাকে একটি শাস্তি দিয়েছে। কিন্তু আমরা ইতিবাচক কোনো সাড়া এখন পর্যন্ত পাইনি। এটা নিয়ে আমার মনে হয় স্পেকুলেট না করাই ভালো। দেখা যাক কী হয়। আমরা তো চেয়েছি খুব, এ ধরনের ঘটনায় তো ঝট করে একদিনে সাত দিনে কোনো পরিবর্তন ঘটে না। আমরা অপেক্ষা করব, দেখি, ভারতের পক্ষ থেকে কি আসছে রিঅ্যাকশন।’

তৌহিদ হোসেন বলেন, একটা রিঅ্যাকশন আমরা দেখেছি যেটা, সেটা হলো তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে, এরকম একটা কথা আসছে আমাদের। দেখুক তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরে কোনো তথ্য নেই বলে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, "তারেক সাহেব কখন আসবেন এই সম্বন্ধে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। উনার স্ত্রী সম্ভবত আসছেন বা পৌঁছে গেছেন হয়তো ইতিমধ্যে। আজকে সকালে পৌঁছার কথা ছিল। বেগম জিয়াকে আজকে নেওয়া হচ্ছে না, আমি ঢাকা থেকে আজকে সকালে জানলাম যে, আজকে নেওয়া হচ্ছে না। একটু টেকনিক্যাল প্রবলেম দেখা দিয়েছে ওই এয়ারক্রাফট নিয়ে। সেক্ষেত্রে হয়তো এক-আধ দিন দেরি হতে পারে। "

আরাকান আর্মি বাংলাদেশিদের ধরে নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "আরাকান আর্মির সাথে আমাদের দ্বিপাক্ষিক আলোচনা সম্ভব নয়। তারা একটা নন-স্টেট অ্যাক্টর। আমরা স্টেট হিসেবে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা যেমন মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ, থাইল্যান্ড বা ভারতের সাথে করতে পারি সেটা তাদের সাথে করতে পারি না। তবে আমাদের স্বার্থ যেহেতু আছে, আমাদের দেখতে হবে। এই ঘটনা যাতে কমে বা আদৌ না ঘটে, এটার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। "

এছাড়াও নীলফামারীতে প্রস্তাবিত চীনা হাসপাতালের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত শুরু করে যেতে চায় বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। একই সঙ্গে নির্বাচিত সরকার এলে এই কাজ সমাপ্ত করবে বলেও আশা তার। এ সময় পিছিয়ে পড়া রংপুরের প্রত্নতাত্ত্বিকসহ সবক্ষেত্রে নেয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সরকারের সদিচ্ছার কথা জানান তৌহিদ হোসেন।

এরপর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সপরিবারে রংপুর জমিদার বাড়ি তাজহাটে পরিদর্শনে যান। এছাড়াও বিকেলে রংপুর সার্কিট হাউসে চা-চক্রের কথা রয়েছে তৌহিদ হোসেনের। আগামীকাল রংপুরের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং রংপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জিলা স্কুল পরিদর্শন করার কথাও রয়েছে তার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় ৫৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চর এলাকার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছে কোস্ট গার্ড। এ সময় একটি নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আটক কয়েকজন মাঝিমাল্লার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোস্ট গার্ড হাতিয়ার একটি দল এই অভিযান চালায়। জব্দ করা জাটকাগুলোর মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকা।

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. আবুল কাশেম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোস্ট গার্ড। অভিযানে মেঘনা নদীর জাগলার চর এলাকায় একটি কাঠের নৌকায় তল্লাশি করা হয়। ওই নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। এ সময় মাঝিদের মুচলেকা নিয়ে নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ মাছগুলো মৎস্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এতিমখানা ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাঠে পড়ে ছিল মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মাঠ-সংলগ্ন সেতু থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকা ফিরোজ মোল্যা নামের এক ভ্যানচালককে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।

নিহত উৎপল ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল গ্রামের অজয় সরকারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে।

থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে সড়কের পাশে ফাঁকা মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পাশেই একটি সেতুর সঙ্গে একই গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।

ভ্যানচালকের বরাত দিয়ে রনকাইল গ্রামের বাসিন্দা ও প্রতিবেশী কাজী শাহীন বলেন, উৎপল সরকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে ফেলে। তারা উৎপলের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা লুট করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম মারুফ হাসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই থেকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এটাকে ডাকাতি বলা যায় না। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে মূল কারণ বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাসার দরজা ভেঙে চবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

চবি প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ওমর ফারুক সুমন নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকার একটি বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

ওমর ফারুক বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

স্থানীয় ও পরিবারের সদস্যরা জানান, সুমন খুলশীতে তাঁর মামার বাসায় থাকতেন। তাঁর বড় ভাইও সেখানে থাকেন। দুই দিন আগে সুমনের মামা পুরো পরিবার নিয়ে তুরস্কে বেড়াতে যান। বাসায় সুমন ও তাঁর বড় ভাই ছিলেন। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে ভাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন সুমন। ফোনে তাঁর বড় ভাই কখন বাসায় ফিরবেন জানতে চান সুমন। বড় ভাই জানান যে তাঁর আসতে একটু দেরি হবে। এর কিছুক্ষণ পর বড় ভাই সুমনকে ফোন করলে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি। পরে বাড়ি থেকে সুমনের মা ফোন দিয়ে যোগাযোগ করতে না পেরে বিষয়টি বড় ভাইকে জানান। এতে উদ্বেগ দেখা দিলে বড় ভাই বিল্ডিংয়ের দারোয়ানকে দিয়ে বাসা চেক করান।

দারোয়ান কলিংবেল বাজিয়েও কোনো সাড়া না পেয়ে বড় ভাইকে জানালে তিনি দ্রুত বাসায় এসে সুমনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে চিরকুট মিলেছে। এতে লেখা রয়েছে, ‘আমি সুমন, ওমর ফারুক সুমন। আমার কোনো আশা-আকাঙ্ক্ষা নেই। আর আমার কারও প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। সবাই ভালো থাকবেন।’ এর আগে ১ ডিসেম্বর লেখা আরেকটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে লেখা ছিল—‘আশাই জীবন, আশাই মরণ, ব্যর্থতা হতাশা-অন্ধকারে নিয়ে যায়।’

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর জামান বলেন, ‘সুমন ও তাঁর বড় ভাই একসঙ্গে মামার বাসায় থাকতেন। মামা ও মামি বর্তমানে বিদেশে আছেন। বড় ভাই সন্ধ্যায় বাইরে যান। সে সময় সুমন বাসায় একা ছিলেন। বড় ভাই বাসায় ফিরে এসে বারবার ডাকলেও ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে কোনো সাড়া পাননি। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকলে সুমনের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তে এটি আত্মহত্যা মনে হলেও আমরা সব সম্ভাব্য কারণ খতিয়ে দেখছি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত