Ajker Patrika

করিমগঞ্জ কলেজ

অধ্যক্ষ নেই ৪ মাস, ফরম পূরণ অনিশ্চিত শিক্ষার্থীদের

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ সরকারি মহাবিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ সরকারি মহাবিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ সরকারি মহাবিদ্যালয়ে অধ্যক্ষ না থাকায় প্রায় চার মাস ধরে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তিসহ অন্যান্য অফিশিয়াল কাজকর্ম বন্ধ রয়েছে। মুখ থুবড়ে পড়েছে শিক্ষা কার্যক্রম। আগামী ৩ মার্চ থেকে শুরু হতে যাওয়া এইচএসসি শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

এ অবস্থায় অধ্যক্ষ নিয়োগের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার দুপুরে কিশোরগঞ্জ-চামটাবন্দর সড়ক ঘণ্টাব্যাপী অবরোধ করা হয়। এ সময় রাস্তার দুই পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

কলেজের শিক্ষার্থীরা এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে স্মারকলিপি দেন।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, কলেজের অধ্যক্ষ আজিজ আহমেদ হুমায়ুন ২০২৪ সালের ২৭ অক্টোবর বদলি হন। পরে কাউকে অধ্যক্ষ কিংবা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ না দেওয়ায় কলেজের কার্যক্রম থেমে গেছে।

কলেজের প্রধান সহকারী কাজী কামরুন্নেছা জানান, ৪৭ জন শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন হচ্ছে না। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ফরম পূরণে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে বোর্ড ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো যাচ্ছে না। এ অবস্থায় শিক্ষক-কর্মচারীরা ঋণ করে টাকা পরিশোধ করছেন।

এইচএসসি পরীক্ষার্থী জাইসি মুহাম্মদ বলেন, ‘আমাদের ক্লাস, ফরম ফিলআপ, উপবৃত্তিসহ সব কাজ অধ্যক্ষ না থাকায় আটকে আছে। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত।’

ছাত্রছাত্রীরা জানান, অধ্যক্ষের নেতৃত্বে একটি কমিটি উপবৃত্তির আবেদন যাচাই-বাছাই করে। কিন্তু কাজটি এখনো হয়নি। নির্ধারিত তারিখ শেষ হয়ে গেলে তাঁরা উপবৃত্তি পাবেন না।

কলেজের প্রভাষক সিরাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘কলেজের বেতনের ওপর নির্ভর করে আমাদের সংসার চলে। বেতন না পাওয়ায় ধারকর্জ করে চলতে হচ্ছে। তার ওপর কলেজের দায়দেনাও মেটাতে হচ্ছে আমাদের নিজেদের টাকায়। এভাবে তো কোনো প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না।’

এ নিয়ে কথা হলে সাবেক অধ্যক্ষ আজিজ আহমেদ বলেন, ‘আমার বদলির সময় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের ডিজির কাছে কলেজে একজন অধ্যক্ষ নিয়োগের আবেদন করেছিলাম। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেন তা করা হলো না, তা আমার বোধগম্য হচ্ছে না।’

এ বিষয়ে মাউশির ময়মনসিংহ অঞ্চলের উপপরিচালক (কলেজ) ফেরদৌস আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, ‘সাবেক অধ্যক্ষ নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য মাউশির কাছে আবেদন করেছেন। তবে তিনি যদি একজনকে দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়ে পরে আবেদনটি করতেন, তাহলে এ জটিলতা হতো না। আশা করি, সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’

যোগাযোগ করা হলে করিমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার স্মারকলিপি পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চায়ের দোকানে চলে একটি বাতি-ফ্যান, বিদ্যুৎ বিল এল সাড়ে ৫৫ হাজার টাকা

টঙ্গিবাড়ী (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি 
বিদ্যুৎ বিলের কাগজ হাতে লিটুখান বাজারের দুই দোকানদার। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিদ্যুৎ বিলের কাগজ হাতে লিটুখান বাজারের দুই দোকানদার। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাজারে ছোট একটি চায়ের দোকান চালান বাদশা ব্যাপারী। দোকানে কেবল একটি বাতি ও একটি ফ্যান চালানো হয়। সাধারণত তাঁর মাসিক বিল ২০০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে আসে। কিন্তু চলতি মাসে তাঁর হাতে এসেছে ৫৫ হাজার ৫৫০ টাকার বিদ্যুৎ বিল। বিল হাতে পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।

মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার দিঘিরপাড় ইউনিয়নের লিটুখান বাজারের দোকানদার বাদশা ব্যাপারী। বিদ্যুৎ বিলের ব্যাপারে বাদশা বলেন, ‘এটা অসম্ভব। আমার দোকানে এত বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগই নেই। বিলের নম্বরে ফোন করলে শুধু অফিসে যেতে বলে।’

এমন ‘ভুতুড়ে’ বিদ্যুৎ বিল পেয়েছেন লিটুখান বাজারের আরেক দোকানদার শহীদ খান। বাজারে খাবারের দোকান রয়েছে তাঁর। দোকানে দুটি বাতি, একটি ফ্যান ও একটি ছোট ফ্রিজ ব্যবহার করা হয়। প্রতি মাসে যেখানে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা বিল দিতেন, সেখানে এবার বিল এসেছে ২৪ হাজার ২১৬ টাকা। শহীদ বলেন, ‘বিলটা দেখে দাঁড়াতেই পারছিলাম না। এমন বিল হলে দোকান চালানোই কঠিন হয়ে যাবে।’

বাজারের অন্য ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, কয়েক মাস ধরে এলাকায় এমন অস্বাভাবিক বিল আসছে। তাঁদের ধারণা, মিটার রিডিং অথবা বিলিং পদ্ধতিতে গুরুতর ত্রুটি রয়েছে। দ্রুত তদন্ত করে সঠিক হিসাব ঠিক করার পাশাপাশি দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

বিল প্রস্তুতকারী কর্মী সুমি রানী দাস বলেন, সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের অফিসে যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘তারা অফিসে এলে আমরা সরেজমিন যাচাই করে বিল পুনরায় বিবেচনা করব।’

টঙ্গিবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. আব্দুস ছালাম বলেন, ‘মিটার রিডিং বা বিলিং সিস্টেমে ত্রুটি থাকতে পারে। আমরা সরেজমিন যাচাই করে দ্রুত সমাধানের পদক্ষেপ নেব। ভোক্তাদের অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাসার বাথরুমে পড়ে ছিল নারী প্রভাষকের লাশ, মাথায় আঘাতের চিহ্ন

বগুড়া প্রতিনিধি
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার এক বাসা থেকে ফাবিয়া তাসনিম সিধি (২৯) নামের এক প্রভাষকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

মৃত ফাবিয়া বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক। বছর দেড়েক আগে তিনি কলেজটিতে যোগদান করেন।

এই তথ্য নিশ্চিত করে বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান জানান, ফাবিয়া অবিবাহিত। তিনি বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ডা. রাশেদুল হাসানের বাড়ির তিনতলায় ভাড়া বাসায় তাঁর মায়ের সঙ্গে থাকতেন। কয়েক দিন আগে তাঁর মা গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে যান। গতকাল দুপুরের পর থেকে মেয়েকে ফোনে না পাওয়ায় তাঁর মা রাত ১০টার দিকে বগুড়া আসেন। অনেক ডাকাডাকি করে দরজা না খোলায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে বাসার বাথরুমে ফাবিয়ার লাশ দেখতে পায়।

পুলিশ জানায়, মৃত ব্যক্তির নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিল এবং মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন ছাড়াও জিবে দাঁত দিয়ে কামড় দেওয়া ছিল। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অটোরিকশাকে চাপা দিল বাস, প্রাণ গেল তিনজনের

ফরিদপুর প্রতিনিধি
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাসের চাপায় একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় শিশুসহ আরও চারজন আহত হয়। আজ শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল মিয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন নারী ও একজন পুরুষ। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালান। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।  

হাইওয়ে থানার এসআই সোহেল মিয়া বলেন, অটোরিকশাটি ভাঙ্গা থেকে টেকেরহাটের উদ্দেশে যাচ্ছিল। কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা নিউ মডার্ন পরিবহনের একটি বাস অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এই ঘটনায় বাসটি আটক করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় ৫৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চর এলাকার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছে কোস্ট গার্ড। এ সময় একটি নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আটক কয়েকজন মাঝিমাল্লার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোস্ট গার্ড হাতিয়ার একটি দল এই অভিযান চালায়। জব্দ করা জাটকাগুলোর মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকা।

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. আবুল কাশেম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোস্ট গার্ড। অভিযানে মেঘনা নদীর জাগলার চর এলাকায় একটি কাঠের নৌকায় তল্লাশি করা হয়। ওই নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। এ সময় মাঝিদের মুচলেকা নিয়ে নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ মাছগুলো মৎস্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এতিমখানা ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত