Ajker Patrika

চাকরি পুনর্বহাল ও ১০ বছরের বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবিতে শিক্ষকের সংবাদ সম্মেলন

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষক মো. আবুল মুনসুর। ছবি: আজকের পত্রিকা
সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষক মো. আবুল মুনসুর। ছবি: আজকের পত্রিকা

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার গচিহাটা কলেজে সহকারী অধ্যাপক পদে চাকরিতে পুনর্বহাল এবং ১০ বছরের প্রাপ্য বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শিক্ষক মো. আবুল মুনসুর। আজ শনিবার দুপুরে জেলা শহরের গৌরাঙ্গ বাজারে কিশোরগঞ্জ নিউজ কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলন তিনি অভিযোগ করেন, কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি মেজর (অব.) মো. আখতারুজ্জামান রঞ্জনের রোষানলে পড়ে মিথ্যা অভিযোগে চাকরিচ্যুত হয়ে তিনি মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে প্রথম শ্রেণি পেয়ে মাস্টার্স করেন মো. আবুল মুনসুর। প্রভাষক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার গচিহাটা কলেজে। ১৯৯৫ সালের ১ জুন কলেজটিতে যোগদানের পর ২০১৪ সালের ১ নভেম্বর তিনি পদোন্নতি পান সহকারী অধ্যাপক পদে।

পরবর্তীতে মিথ্যা অভিযোগে প্রথমে চাকরি থেকে অব্যাহতি এবং পরবর্তীতে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেয় কলেজ গভর্নিং বডি। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে সরকারি অংশের বেতন শিট থেকে মো. আবুল মুনসুরের নাম বাদ দেওয়া হয় এবং ব্যাংক থেকে বেতন উত্তোলন বন্ধ করে দেওয়া হয়।

কিন্তু ঢাকা বোর্ডের আপিল অ্যান্ড আরবিট্রেশন কমিটির ২০১৫ সালের ২০ এপ্রিলের সভায় মো. আবুল মুনসুরকে সমুদয় প্রাপ্য বেতন ভাতাসহ স্বপদে বহালের জন্য সিদ্ধান্ত দেওয়া হয় এবং কলেজ গভর্নিং বডিকে পত্র দিয়ে এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়।

কলেজ গভর্নিং বডি তাকে পুনর্বহাল না করে পুনরায় আপিল করলে বোর্ড পূর্বের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে। এরপরও দীর্ঘ ৯ বছর ধরে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেনি কলেজ গভর্নিং বডি।

এদিকে চাকুরিবিহীন অবস্থায় প্রায় ১০ বছর ধরে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন মো. আবুল মুনসুর। এরই মধ্যে তার স্ত্রী তাঁকে ছেড়ে গেছেন। এই সময়ে অন্যত্র চাকরি হলেও সেসব স্থানে যোগদান করার জন্য কলেজ থেকে অনুমতি পত্রও তাঁকে দেওয়া হয়নি। এমনকি আখতারুজ্জামান রঞ্জন তাঁর লোকজন দিয়ে পিটিয়ে তাঁর বাম হাত ও পা অচল করে দিয়েছেন। অসুস্থ বৃদ্ধা মা ও প্রতিবন্ধী দুই বোনের জন্যও কিছু করতে পারছেন না তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে মো. আবুল মুনসুর অভিযোগ করেন, কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা মেজর (অব.) মো. আখতারুজ্জামান রঞ্জন বিভিন্ন সময়ে নানা অজুহাতে তাকে ধমকাতেন এবং চাকুরি থেকে বহিষ্কারের হুমকি দিতেন। ২০১৪ সালের অক্টোবর মাসের শিক্ষক পরিষদের সভায় বিনা অন্যায়ে তাকে ধমকান এবং চাকরি থেকে সাতদিনের মধ্যে বহিষ্কারের জন্য অধ্যক্ষকে মৌখিক নির্দেশ দেন। এরপর মিথ্যা যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে পর পর দুটি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। তিনি নোটিশ দুটির জবাব যথাসময়ে দিলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ জবাব মেনে নেয়নি। কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি মেজর (অব.) মো. আখতারুজ্জামান রঞ্জন বিষয়টি কলেজ শিক্ষক পরিষদকে তদন্ত করার নির্দেশ দেন।

তিনি বলেন, কলেজ শিক্ষক পরিষদ তদন্ত করে রিপোর্ট দেয় যে, তাদের ধারণা হয়েছে যে যৌন হয়রানি বা অসদাচরণের মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। এজন্য আবুল মুনসুরের বিরুদ্ধে কোনো কঠিন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা বা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত হবে না।

সহকারী অধ্যাপক মো. আবুল মুনসুর অভিযোগ করে বলেন, ‘মেজর (অব.) মো. আখতারুজ্জামান রঞ্জন সরকারি কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করেন না। নিজেকে তিনি সরকার বলে দাবি করেন। তিনি অধ্যক্ষকে চাপে ফেলে জোর করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগপত্র ঢাকা বোর্ডে পাঠান। বস্তুত অভিযোগকারীর অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও চক্রান্ত। আমার বর্তমান বয়স ৫৯ বছরেরও বেশি। অতীতে আমার বিরুদ্ধে অন্যায়মূলক কোনো কাজ করার রেকর্ড নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আখতারুজ্জামান রঞ্জনের রোষানলের কারণে চাকরিতে ফিরতে পারছি না। এমনকি আমাকে অনাপত্তিপত্র না দেওয়ায় অন্য কোথাও চাকুরিও করতে পারছি না। ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে বেতন ভাতা বন্ধ রয়েছে। ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) থেকেও আমার নাম বাদ দিয়ে মাউশিতে পাঠানো হয়েছে। এ অবস্থায় চরম অর্থকষ্টে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি।’

সংবাদ সম্মেলনে মো. আবুল মুনসুরের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি (বাকশিস) কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি এএসএম আজিজুর রহমান ভূঞা, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আলম এবং কটিয়াদী উপজেলা শাখার সভাপতি মো. আবু লায়েছ ভূঞা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগের বিষয়ে মেজর (অব.) মো. আখতারুজ্জামান রঞ্জন সাংবাদিকদের বলেন, ‘নারীঘটিত বিষয়ের কারণে তাঁর বিরুদ্ধে কলেজ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিয়েছে। পরে ঢাকা বোর্ড তাঁর পক্ষে সিদ্ধান্ত দিলে এর বিরুদ্ধে আমরা হাইকোর্টে গিয়েছি। সেখানে বিষয়টি বিচারাধীন রয়েছে। যদি রায় তার পক্ষে আসে, তবে সে বেতনভাতাদি পাবে। এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পীরগাছায় দিনের বেলায় কেটে রাখা জমির ধান লুটের অভিযোগ

পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি
জমিতে বিছিয়ে রাখা এই ধানগুলোই রাতে লুট করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
জমিতে বিছিয়ে রাখা এই ধানগুলোই রাতে লুট করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

রংপুরের পীরগাছায় দিনের বেলায় কেটে রাখা এক কৃষকের ধান লুটের অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার কিসামত ঝিনিয়া ডাক্তারপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে খবর পেয়ে পীরগাছা থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে লুটকারীরা সটকে পড়ে। বৃহস্পতিবার রাতেই এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়।

ভুক্তভোগী কৃষক আব্দুল মান্নান জানান, তিনি ক্রয়সূত্রে মালিক হয়ে ৩০ বছর ধরে ৩৫ শতক জমি ভোগদখল করে আসছেন। চলতি মৌসুমে সেই জমিতে তিনি আমন ধান চাষ করেছিলেন। কিছুদিন আগে পাকা ধান কেটে খড়সহ জমিতে বিছিয়ে রেখে শুকাচ্ছিলেন। বেশ কিছুদিন ধরে তাঁর প্রতিবেশী আব্দুস সোবহান সেই জমি নিজের বলে দাবি করে তাঁর সঙ্গে অহেতুক বিরোধে জড়ান। সেই বিরোধের জেরে বৃহস্পতিবার দুপুরে আব্দুস সোবহান তাঁর ছেলেদেরকে সঙ্গে নিয়ে জমির ধান লুট করে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। ঘটনার সময় ভুক্তভোগী কৃষক আব্দুল মান্নান বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে আব্দুস সোবহান তাঁর লোকজনসহ তাঁকে ধাওয়া করেন। একপর্যায়ে দৌড়ে নিজ বাড়িতে ঢুকে রক্ষা পান। পরে তিনি জাতীয় সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুস সোবহান বলেন, ‘এই জমি আমার। তাই আমার জমির ধান আমি বাড়িতে নিয়ে গিয়েছি।’

তবে স্থানীয়রা জানান, ওই জমি আব্দুল মান্নান দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করে আসছেন। ওই জমিতে ধান আব্দুল মান্নানই চাষ করেছিলেন।

পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রোমেল বড়ুয়া জানান, এ ব্যাপারে তিনি একটি এজাহার পেয়েছেন। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাইবান্ধায় এনসিপির আহ্বায়ক হলেন জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা

আনোয়ার হোসেন শামীম, গাইবান্ধা
গাইবান্ধা জেলা এনসিপির আহ্বায়ক হিসেবে মনোনয়ন পাওয়া খাদেমুল ইসলাম খুদি। ছবি: সংগৃহীত
গাইবান্ধা জেলা এনসিপির আহ্বায়ক হিসেবে মনোনয়ন পাওয়া খাদেমুল ইসলাম খুদি। ছবি: সংগৃহীত

গাইবান্ধা জেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন কমিটিতে জাসদের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক খাদেমুল ইসলাম খুদিকে গাইবান্ধা জেলা এনসিপির আহ্বায়ক হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।

ফেসবুকে অনেকেই কমিটি নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করছেন। জেলাজুড়ে বিষয়টি এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া অতীতে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর দেওয়া বিভিন্ন বক্তব্য—বিশেষ করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে করা মন্তব্যগুলো ফের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক পোস্ট ও ভিডিওতে খাদেমুল ইসলাম খুদিকে ইনুর সঙ্গে একই মঞ্চে দেখা যায়। এর আগে গত বুধবার এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম স্বাক্ষরিত ৫২ সদস্যের এই কমিটি প্রকাশ করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, খাদেমুল ইসলাম খুদি দীর্ঘদিন ধরে হাসানুল হক ইনুর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। গত অক্টোবর মাসে সাদুল্যাপুর উপজেলায় ‘সুধী সমাবেশ’ করার নামে খাদেমুল ইসলাম খুদি একটি রাজনৈতিক বৈঠকের আয়োজন করেছিলেন। প্রশাসন বিষয়টি জানতে পারলে খুদি সমাবেশ শুরুর আগেই ব্যানার সরিয়ে সরে পড়েন। এ ছাড়া সরকার পরিবর্তন হওয়ার পরপরই তিনি বিভিন্ন কৌশলে দলবদল করতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত জুলাই আন্দোলন-নেতৃত্বকারী এ দলের জেলায় শীর্ষ পদটি পেয়ে যান। অভিযোগ উঠেছে, তাঁর ঘনিষ্ঠতার সুযোগে খুদি মোটা অঙ্কের বিনিময়ে গাইবান্ধা জেলা এনসিপিতে শীর্ষ পদটি নিশ্চিত করেছেন।

ফেসবুকে এস এম এনামুল হক নামে একজন লিখেছেন, ‘যারা সারা জীবন আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে কাজ করেছে, তারা কীভাবে এনসিপির আহ্বায়ক হন? টাকার বিনিময়ে কি শহীদদের রক্ত বিক্রি করা হচ্ছে?’ মামুন সরকার নামে আরেকজন মন্তব্য করেছেন, ‘আওয়ামী লীগের আরেক নাম এনসিপি।’ রফিক খন্দকার বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার জন্যই এ কমিটি।’

নাম না প্রকাশের শর্তে খাদেমুল ইসলাম খুদির এক বাল্যবন্ধু বলেন, খুদি ছাত্রজীবন থেকেই ক্ষমতা ও পদ-পদবির প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। যদিও তিনি জাসদের রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত ছিলেন, পরে তিনি প্রায়ই আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন।

এদিকে নতুন কমিটির বিরোধিতা করে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এনসিপির জেলা কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দেন। আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত কার্যালয় তালাবদ্ধ ছিল। নেতা-কর্মীদের কাউকে দেখা যায়নি। ঘোষিত কমিটির যুগ্ম সদস্যসচিব এস এম মনিরুজ্জামান সবুজ পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগপত্রে তিনি লেখেন, ‘নীতি-আদর্শ বিসর্জন দিয়ে স্বৈরাচারের দোসরকে আহ্বায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শহীদদের সঙ্গে বেইমানি করা হয়েছে।’

জানতে চাইলে গাইবান্ধা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব বায়োজিদ বোস্তামী জীম বলেন, ‘আওয়ামী লীগপন্থী প্রভাবশালী মহলের দোসর, সুবিধাবাদী চরিত্র ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের অযৌক্তিকভাবে পদ দেওয়া হয়েছে। এতে ত্যাগী ও প্রকৃত কর্মীরা বঞ্চিত হয়েছেন।’ তিনি দ্রুত কমিটি বাতিলের দাবি জানান।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে এনসিপির উত্তরাঞ্চলের সংগঠক সারজিস আলমের মোবাইলে বারবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মুন্সিগঞ্জ-৩: প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সেতু অবরোধ

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
আজ বিকেলে মুক্তারপুর এলাকায় সেতুর ওপর টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ বিকেলে মুক্তারপুর এলাকায় সেতুর ওপর টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপি ঘোষিত মো. কামরুজ্জামান রতনের প্রার্থিতা বাতিলের দাবিতে ঢাকা–মুন্সিগঞ্জ সড়কে ষষ্ঠ বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সেতু ব্লকেড করেছেন মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থীর সমর্থকেরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে মুক্তারপুর এলাকায় সেতুর ওপর টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা।

বিকেল ৫টার দিকেও (এই প্রতিবেদন লেখার সময়) অবরোধ চলছিল। অবরোধের কারণে ঢাকা–মুন্সিগঞ্জ সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুল হাইয়ের ছোট ভাই মো. মহিউদ্দিন-সমর্থিত নেতা-কর্মীরা।

প্রসঙ্গত, গতকাল বৃহস্পতিবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনে দলের সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক মো. কামরুজ্জামান রতনকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেন। এর প্রতিবাদে রাতেই জেলা শহরে মির্জা ফখরুল ও রতনের কুশপুত্তলিকা দাহ ও মুক্তারপুর এলাকায় মশালমিছিল করেন মহিউদ্দিনপন্থীরা। এরই ধারাবাহিকতায় আজ দিনভর এ ব্লকেড কর্মসূচি চলে।

অবরোধ চলাকালে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সাইদুর রহমান ফকির, শাহাদাত হোসেন সরকার, শহর বিএনপির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট মাহবুব-উল-আলম স্বপন, পঞ্চসার ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন, জেলা যুবদলের সাবেক সদস্যসচিব মু. মাসুদ রানা, জেলা ছাত্রদল সভাপতি মো. আবুল হাসেমসহ দলের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঋণের টাকা শোধ না করায় গুলি করে হত্যা করা হয় রফিককে, গ্রেপ্তার ১

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় হেলমেটধারী দুর্বৃত্তদের গুলিতে রফিক ইসলাম (৫৫) হত্যার ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার সকালে মামলার পর পুলিশ ফারুক হোসেন (২৮) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

পুলিশ বলছে, রফিক ছেলেকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে আল আমিন নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু একাধিকবার চাওয়ার পরও সেই টাকা পরিশোধ না করায় ক্ষিপ্ত হয়ে আল আমিন লোকজন নিয়ে রফিককে গুলি করে করেন।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার পচাভিটা এলাকায় একটি চায়ের দোকানে দুর্বৃত্তরা এলোপাতাড়ি গুলি করে। এ সময় রফিক ইসলাম গুলিতে নিহত এবং দুজন আহত হন।

রফিকুল ইসলাম উপজেলার পচাভিটা গ্রামের বাসিন্দা। আহত হয়েছেন একই গ্রামের রবজেল ফরাজি (৫২) ও ইউসুফ হোসেন (৫৫)। তাঁরা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

ঘটনার পর রাতেই দৌলতপুর থানা-পুলিশ ও র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) যৌথভাবে তদন্তে নামে। আজ সকালে নিহতের স্ত্রী রোকেয়া খাতুন অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ফারুক হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। তিনি পচাভিটা গ্রামের ফুলচাঁদ আলীর ছেলে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ছেলেকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে আল আমিন নামের স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিলেন রফিক। তবে দীর্ঘদিনেও তিনি সেই টাকা পরিশোধ করেননি। এ নিয়ে আল আমিন ক্ষুব্ধ ছিলেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার রফিক ও তাঁর স্ত্রী ব্যাংক থেকে ৫৪ হাজার টাকা তুলেছেন বলে খবর পান আল আমিন। পরে টাকা পরিশোধ করতে বলা নিয়ে কামালপুর বাজারে আল আমিনের সঙ্গে রফিকের কথা-কাটাকাটি হয়। এরই জেরে সন্ধ্যায় আল আমিন ও তাঁর সহযোগীরা তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যান। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। রফিক ওই দোকানে বসে চা পান করছিলেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মহসিন আলী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হেলমেটধারী দুর্বৃত্তদের গুলিতে রফিক নিহত হওয়ার ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পরে আসামিকে আদালতে হাজির করা হবে। এ ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত