Ajker Patrika

বইয়ের চেয়ে তাস কেনায় বরাদ্দ বেশি

  • ইউএসএইড থেকে পুরোনো আসবাব ক্রয়
  • ভাড়া করা খেলোয়াড়ে টুর্নামেন্টে অংশ নেয় টাউন ক্লাব
  • তাস খেলায় বছরে লক্ষাধিক টাকা ব্যয়, বই কেনায় বরাদ্দ অপ্রতুল
  • ঠিক সময়ে বেতন পাচ্ছেন না কর্মচারীরা
জাহিদ হাসান, যশোর 
আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১: ১৪
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও খ্যাতি ছড়িয়েছিল অবিভক্ত ব্রিটিশ-ভারতে প্রতিষ্ঠিত শতবর্ষী যশোর ইনস্টিটিউট। একটা সময় যশোরের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া জগৎ উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখে মাতৃস্থানীয় এ সংগঠন। এটির ছায়াতলে বিকশিত হয় নাট্যাঙ্গন, ক্রীড়াঙ্গন। কিন্তু কালের আবর্তে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে যশোর ইনস্টিটিউটের প্রতিটি বিভাগ এখন কাঠামোসর্বস্ব। এমনকি বই কেনার চেয়ে তাস কেনায় বরাদ্দ বেশি দেওয়া হচ্ছে এখন।

বিভিন্ন সম্পত্তি থেকে যশোর ইনস্টিটিউটের বার্ষিক আয়ের পরিমাণও একেবারে কম নয়। অথচ কয়েক বছর আগে বিদেশি একটি সংস্থা ইউএসএইড (ইউনাইটেড স্টেট এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট) থেকে লক্ষাধিক টাকার পুরোনো আসবাবপত্র কেনা হয়। আর পুরোনো এসব জিনিস কেনা নিয়ে সে সময়কার সদস্যদের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।

যশোর ইনস্টিটিউটের সাবেক সহসভাপতি বিশিষ্ট ক্রীড়াব্যক্তিত্ব এ জেড এম সালেক স্বপন বলেন, তাঁর সময়কালে ও অতীতে প্রতিষ্ঠানটির জন্য কখনো কোনো পুরোনো আসবাব কেনা হয়েছে বলে মনে পড়ে না। পুরোনো আসবাব কেনার বিষয়টি যশোর ইনস্টিটিউটের মতো একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য বেমানান।

খেলোয়াড় ভাড়া টাউন ক্লাবের

যশোর ইনস্টিটিউটের অন্যতম শাখা টাউন ক্লাব। প্রতিষ্ঠানটির এ বিভাগের অন্যতম লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য শহর, উপশহর ও গ্রামবাংলা থেকে নবীন ও অপরিচিত খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ দিয়ে যশোরসহ বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে পরিচিত করানো। কিন্তু এই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণ করতে পারছে না বিভাগটি। ইনস্টিটিউট ঘনিষ্ঠ অনেকের এমন অভিযোগ। তাঁদের দাবি, টাউন ক্লাব থেকে এখন আর কোনো খেলোয়াড় সৃষ্টি হচ্ছে না। বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও টুর্নামেন্টে ক্লাবটি অংশ নিচ্ছে ঠিকই; তবে ওই সব খেলায় অংশগ্রহণকারী একজনও ক্লাবটির নিজস্ব খেলোয়াড় নয়। মোটা অঙ্কের টাকা ব্যয়ে ভাড়া করা।

খ্যাতিমান ফুটবলার ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুজ্জামান বলেন, ‘পাকিস্তান আমলে খুব নামকরা ছিল টাউন ক্লাব। দেশ স্বাধীনের পর সেই সুনাম ধরে রেখেছিল ক্লাবটি। যশোরের সেরা খেলোয়াড়েরা ক্লাবটিতে খেলত। কিন্তু ধীরে ধীরে এখন সেই জায়গা থেকে অনেক দূরে সরে গেছে ক্লাবটি। একটা সময় শিশু চিত্তবিনোদনকেন্দ্র বাচ্চাদের জন্য খেলার আয়োজন করত; কিন্তু সে ধারাবাহিকতা এখন আর নেই।’

বেতনে অনিয়ম

এদিকে দীর্ঘদিন ধরে সময়মতো বেতন পাচ্ছেন না ২৬ কর্মচারী। আগে মাসের প্রথম সপ্তাহে দেওয়া হলেও এখন মাসের অর্ধেক পেরিয়ে যাচ্ছে। এতে সমস্যায় পড়ছেন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত স্বল্প আয়ের মানুষেরা। সাম্প্রতিক কয়েক মাস ধরে ২০ তারিখ পেরিয়ে গেলেও তাঁরা বেতন পাচ্ছেন না।

তাসে বরাদ্দ, বই কেনায় খরচ কম

১৮৫৪ সালে যশোর পাবলিক লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠিত হয়। তার বহু পরে ১৯২৮ সালে গঠন হয় করা যশোর ইনস্টিটিউট। প্রতিষ্ঠানঘনিষ্ঠ সবার মধ্যে একটি কথার প্রচলন রয়েছে, যশোর পাবলিক লাইব্রেরিকে ঘিরেই মূলত ইনস্টিটিউটের জন্মলাভ ও বিকাশ। অথচ সেই লাইব্রেরিটি আজ অবহেলিত। প্রতিবছর টাউন ক্লাবে তাস কেনার জন্য নিয়মিত অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু বই কেনায় তার চেয়ে অনেক কম টাকা বরাদ্দ দেয় ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, টাউন ক্লাবে প্রতি মাসে ৩৬ প্যাকেট তাস কেনার জন্য ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়, বছরে যার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা।

উপেক্ষিত জড়িত ব্যক্তিরা

যশোর ইনস্টিটিউট গঠনে যাঁর ভূমিকা সবচেয়ে বেশি; তিনি হলেন রায়বাহাদুর যদুনাথ মজুমদার। তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ও উদ্যোগে সংগঠনটির গোড়াপত্তন হয়। এমনকি প্রতিষ্ঠানটির অবস্থানও তাঁর ভূসম্পত্তিজুড়ে। অথচ ইনস্টিটিউটে তিনিই সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত। জানা যায়, বহু ভাষাবিদ, ধর্মশাস্ত্রবিদ, শিক্ষক, আইনজীবী ও রায়বাহাদুর যদুনাথ মজুমদার উদ্যোগী হয়ে পাবলিক লাইব্রেরি, নিউ আর্য থিয়েটার ও টাউন ক্লাবের সমন্বয়ে ১৯২৭ সালে পরিপূর্ণ একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গড়ে তোলেন। এই উদ্যোগের ফলস্বরূপ ১৯২৮ সালে শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির একটি মাতৃস্থানীয় সংগঠন যশোর ইনস্টিটিউট আত্মপ্রকাশ করে। ছাত্র মৈত্রীর সাবেক নেতা আহাদ আলী মুন্না বলেন, ইনস্টিটিউটের উন্নয়ন ও বিকাশে অবদান রাখা ব্যক্তিদের কারও কারও নামে পাবলিক লাইব্রেরিতে পাঠকক্ষ ও কর্নার রয়েছে। কিন্তু যিনি প্রতিষ্ঠানটি গড়লেন; তাঁর একটি আবক্ষ মূর্তি ও জিএসের (জেনারেল সেক্রেটারি) কক্ষে ফ্রেমে বাঁধানো ছবি ছাড়া কোনো স্মৃতিচিহ্ন চোখে পড়ে না। এমনকি তাঁর আবক্ষ মূর্তিটিও এমন এককোণে নির্মাণ করা হয়েছে যে; সেটি সচরাচর সেভাবে চোখে পড়ে না।’

ইনস্টিটিউটের যৌবন ফেরাতে কমিটি কাজ করছে বলে জানান সাধারণ সম্পাদক ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু। তিনি বলেন, ‘আমার সময়ে ইউএসএইড থেকে কোনো জিনিসপত্র কেনা হয়নি। টাউন ক্লাবে অনেক দিন খেলা হচ্ছে না। আন্তবিভাগ খেলাগুলোই চলমান। তাসখেলা হলেও বিগত ৩ বছরে প্রচুর বই কেনা হয়েছে। বিভিন্ন ভাড়াটে ভাড়া ঠিকমতো দেন না। তখন হয়তো ১৫-২০ তারিখ হয়ে যায়। আগে খরচ কম ছিল, এখন দ্বিগুণ বেড়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অফিস দখল নিয়ে জুলাই রেভেলসের দুজনকে জখম

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
জুলাই রেভেলস সংগঠনের সদস্যের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার মো. মাসুম ও মো. ফাহিম খান। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
জুলাই রেভেলস সংগঠনের সদস্যের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার মো. মাসুম ও মো. ফাহিম খান। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

রাজধানীর উত্তরায় ‘অফিস দখল’কে কেন্দ্র করে জুলাই রেভেলসের দুই সদস্যকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ ঘটনায় মো. মাসুম ও ফাহিম খান নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দক্ষিণখান ফায়দাবাদ এলাকা থেকে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে শনিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর উত্তরা ৮ নম্বর সেক্টরের পাবলিক কলেজ-সংলগ্ন জুলাই রেভেলসের অফিসে সংগঠনটির প্রস্তাবিত সহসংগঠক ইউসুফ আলী রেদওয়ান ও সদস্য মো. ইয়াসিনকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শনিবার রাতেই ইউসুফ আলী রেদওয়ান বাদী হয়ে উত্তরা পূর্ব থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেন।

এ বিষয়ে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, জুলাই রেভেলসের সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় দক্ষিণখান থেকে মাসুম ও ফাহিম নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, মামলার সুষ্ঠু তদন্ত এবং এজাহারের অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জুলাই রেভেলসের সদস্যদের ওপর হামলার ‘মূল হোতা’ উত্তরা পূর্ব থানা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও শীর্ষ সন্ত্রাসী আলতাফ হোসেন ওরফে ঠোঁটকাটা আলতাফ। নেপথ্যে রয়েছে, জুলাই রেভেলস অফিসটি দখল। জানা গেছে, উত্তরা ৮ নম্বর সেক্টরের জুলাই রেভেলসের বর্তমান অফিসটি ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে উত্তরা পূর্ব থানা শ্রমিক লীগের অফিস ছিল। সেটি নিয়ন্ত্রণ করত সন্ত্রাসী আলতাফ ওরফে ঠোঁটকাটা আলতাফ। তিনি দক্ষিণখানের ফায়দাবাদ এলাকার বাসিন্দা। তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগসহ অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে।

৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আলতাফ ও তাঁর নেতা-কর্মীরা পালিয়ে যান। এই সুযোগে শ্রমিক লীগের অফিসটি দখল করে ইউসুফ আলী রেদওয়ান ও তাঁর সংগঠনের লোকজন। পরে ওই অফিসে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি টাঙিয়ে জুলাই রেভেলস নামের একটি সংগঠন করা হয়।

জানা যায়, সম্প্রতি আলতাফ ওরফে ঠোঁটকাটা আলতাফ উত্তরা বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আঁতাত করে প্রকাশ্যে আসেন। সেই সঙ্গে শ্রমিক লীগের অফিসটি দখল করে গড়া জুলাই রেভেলসের অফিসটি খালি করে দিতে বলেন। কিন্তু রেদওয়ান ও তাঁর সংগঠনের লোকজন এতে নারাজ ছিল; যা নিয়ে আলতাফ ও রেদওয়ানের মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরে উত্তেজনা চলছিল। এর জের ধরেই আলতাফ ও তাঁর সহযোগীরা রেদওয়ানকে কুপিয়ে জখম করেন বলে অভিযোগ ওঠে।

উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোর্শেদ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত বছরের ৫ আগস্টের আগে এক কক্ষের অফিসটি ছিল শ্রমিক লীগের। শ্রমিক লীগের সেই অফিস দখল করে জুলাই রেভেলসের কার্যালয় করা হয়েছে। এদিকে শ্রমিক লীগের আলতাফ বিএনপির লোকজনের সঙ্গে মিল দিয়ে প্রকাশ্যে এসে ওই অফিস ফেরত চেয়েছিল। কিন্তু জুলাই রেভেলসের সদস্যরা সেটি না দেওয়ায় হামলার ঘটনা ঘটেছে।’

ওসি আরও জানান, আহত রেদওয়ান বাদী হয়ে আলতাফকে প্রধান আসামি করে ১১ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া মাসুম ও ফাহিমও এজাহারভুক্ত আসামি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সরকারি সার অবৈধভাবে বিক্রি, চুয়াডাঙ্গায় ডিলারকে জরিমানা

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি­
জব্দ করা সার। ছবি: আজকের পত্রিকা
জব্দ করা সার। ছবি: আজকের পত্রিকা

সরকারি সার অবৈধভাবে বিক্রির অপরাধে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় এক ডিলারকে ৫০ হাজার টাকা ও ক্রেতাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আমিনুল ইসলাম।

জানা গেছে, সদর উপজেলার পাঁচমাইল এলাকার এক বিএডিসির সারের ডিলার অবৈধ উপায়ে আলমডাঙ্গার বলেশ্বরপুর এলাকার তাওহীদ হোসেন নামের এক ব্যক্তির কাছে ডিএপি ১১ বস্তা ও এমওপি ৯ বস্তা সার বিক্রি করেন।

বিষয়টি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পেরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আমিনুল ইসলাম দ্রুত অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাঁদের জরিমানা করেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় বিএডিসি সার ডিলার মডার্ন অ্যাগ্রোর স্বত্বাধিকারী ইকবাল বিশ্বাসকে নগদ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে অবৈধ উপায়ে সার কেনার অপরাধে ক্রেতা তাওহীদ হোসেনকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় সহযোগিতা করেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনিছুর রহমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বরিশালে বিএনপির ২ শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
বিএনপি নেত্রী নাসরিনের ওপর সরোয়ার অনুসারীদের হামলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিএনপি নেত্রী নাসরিনের ওপর সরোয়ার অনুসারীদের হামলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরিশালে শহীদ বেদিতে ফুল দেওয়া নিয়ে হামলার ঘটনায় ২ শতাধিক বিএনপি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে তিনি কোতোয়ালি মডেল থানায় অভিযোগ দেন। এর আগে দুপুরে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে হামলার শিকার হন নাসরিন।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন উল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ফুল দেওয়া নিয়ে ঝামেলা হয়েছে। সেই ইস্যুতে বিএনপির নেত্রী নাসরিন থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

জানা গেছে, অভিযোগে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০০ জনের কথা বলা হয়েছে। এদের অধিকাংশই ছাত্রদল, যুবদল ও বিএনপির নেতা-কর্মী।

জানতে চাইলে বিএনপির নেত্রী আফরোজা খানম নাসরিন জানান, তাঁর ওপর যারা হামলা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে তিনি রোববার রাত ৯টার দিকে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। ইতিমধ্যে তাদের নাম তিনি প্রকাশও করেছেন।

নাসরিনের অভিযোগ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বরিশাল-৫ (মহানগর-সদর) আসনের মনোনীত প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ারের অনুসারীরা তাঁর ওপর হামলা করেছে।

এ ব্যাপারে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক জানান, রোববার দুপুরে ফুল দিয়ে তাঁরা যখন যাচ্ছেন, তখন বাইরে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নাসরিনের ঝামেলা হয়েছে। তবে কী হয়েছে জানেন না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ৩২
ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানের শ্যালক শিপু, স্ত্রী সামিয়া ও বান্ধবী মারিয়া। ছবি: সংগৃহীত
ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানের শ্যালক শিপু, স্ত্রী সামিয়া ও বান্ধবী মারিয়া। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রীসহ আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে এক বার্তায় জানিয়েছে পুলিশের বিশেষ এই ইউনিট।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন ফয়সালের স্ত্রী সামিয়া, তাঁর শ্যালক শিপু ও বান্ধবী মারিয়া।

র‍্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক ইন্তেখাব চৌধুরী জানান, সামিয়া ও শিপুকে নারায়ণগঞ্জ থেকে এবং মারিয়াকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, গত শুক্রবার হাদিকে গুলির ঘটনার আগে ও পরে ফয়সালের সঙ্গে তাঁদের ফোনে ঘন ঘন যোগাযোগের তথ্য পাওয়া গেছে।

এ নিয়ে এ ঘটনায় র‍্যাব মোট চারজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছে। এর আগে গুলির সময় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আব্দুল হান্নানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পুলিশ তিন দিনের রিমান্ডে নেয়।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকার বিজয়নগর এলাকায় চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে করা গুলিতে গুরুতর আহত হন রিকশায় থাকা ওসমান হাদি। তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা গেছে, হাদির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ও অপরিবর্তিত রয়েছে। আগামীকাল সোমবার দুপুরে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হবে।

আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান, এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জাফর, ওসমান হাদির ভাই ওমর বিন হাদির মধ্যে এক জরুরি কল কনফারেন্সে এ সিদ্ধান্ত নেন। পরে প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত দুদিন ধরে ওসমান হাদির চিকিৎসার জন্য সরকার সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার কয়েকটি হাসপাতালে যোগাযোগ করেছে। আজ এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের পরামর্শে ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার পর প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়।

প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, বর্তমানে ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ও অপরিবর্তিত রয়েছে।

আগামীকাল দুপুরে ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক দল ও ভ্রমণসংক্রান্ত সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের অ্যাকসিডেন্ট ইমার্জেন্সি বিভাগে তাঁর চিকিৎসার সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ওসমান হাদির চিকিৎসাসংক্রান্ত সব ব্যয় রাষ্ট্রীয়ভাবে বহন করা হবে। তাঁর চিকিৎসাপ্রক্রিয়া সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন ড. ইউনূস।

ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতা কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া ও প্রার্থনা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত