Ajker Patrika

মর্যাদা ফিরে পেয়ে যশোর এমএম কলেজ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জনতার ঢল

­যশোর প্রতিনিধি
একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজে অবস্থিত শহীদ মিনারকে জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের স্বীকৃতি দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন। ছবি: আজকের পত্রিকা
একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজে অবস্থিত শহীদ মিনারকে জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের স্বীকৃতি দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন। ছবি: আজকের পত্রিকা

অবশেষে কেন্দ্রেই ফিরে গেল যশোরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। ছয় বছর পর একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজে অবস্থিত শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্যে দিয়ে কেন্দ্রীয় মিনারের স্বীকৃতি ফিরে পেল।

দিবসটির প্রথম প্রহর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ১ মিনিটে জেলা প্রশাসনের পক্ষে জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলাম শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার নূর ই আলম সিদ্দিকীসহ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, যশোর শিক্ষাবোর্ড, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জেলা বিএনপিসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনীতিক, সাংবাদিক সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতারা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এদিন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ সমবেত হন এমএম কলেজ প্রাঙ্গণে।

কলেজ ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, যশোরের স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয়, যেটি এমএম কলেজ নামেই পরিচিত। ১৯৪১ সালে ‘যশোর কলেজ’ নামে প্রতিষ্ঠিত এবং ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ হয় ‘মাইকেল মধুসূদন কলেজ’। ১৯৬৮ সালের ১ মে প্রতিষ্ঠানটি সরকারি হয়। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পর প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারি এমএম কলেজে স্থাপিত শহীদ মিনারে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করে আসছিলেন।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় যশোর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়। ২০১৮ সালে দুই কোটি টাকা ব্যয়ে পৌরসভার তৎকালীন মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু শহরের শহীদ মসিয়ূর রহমান সড়কের পাশে (ফাতেমা হাসপাতালের সামনে) নতুন একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করেন। এর নাম দেন ‘কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার’। সেটি অপ্রশস্ত একটি স্থানে হওয়ায় এবং দীর্ঘ দিনের শহীদ মিনারকে একা করে দেওয়ায় স্থানীয় সামাজিক ও সংস্কৃতিপ্রেমী ও সচেতন মহলের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। পৌরসভার মেয়র ও তৎকালীন প্রভাবশালী নেতা হওয়াতে সেই সময় কেউ এ বিষয়ে মুখ খুলতে পারেননি। বিএনপি ও কয়েকটি বাম দল ছাড়া অন্যরা নতুন শহীদ মিনারে যেতে বাধ্য হয়।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পুরোনো কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি ওঠে। এমন প্রেক্ষাপটে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্‌যাপন প্রস্তুতি কমিটির’ সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে এই সভায় সিদ্ধান্ত হয়, যশোরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার বলতে এমএম কলেজের শহীদ মিনারকে বোঝাবে। এই শহীদ মিনারেই এবার ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। একই সঙ্গে পৌরসভার অর্থায়নে নির্মিত শহীদ মিনারটি সাদা কাপড়ে ঘিরে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজে অবস্থিত শহীদ মিনারকে জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের স্বীকৃতি দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন। ছবি: আজকের পত্রিকা
একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজে অবস্থিত শহীদ মিনারকে জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের স্বীকৃতি দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন। ছবি: আজকের পত্রিকা

দীর্ঘ ছয় বছর পর যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজে অবস্থিত শহীদ মিনার কেন্দ্রীয় স্বীকৃতি ফিরে পাওয়াতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে কলেজটির শিক্ষক শিক্ষার্থী ও যশোরবাসী। তাঁরা বলছেন, শহরের শহীদ মসিয়ূর রহমান সড়কের পাশে অপ্রশস্ত একটি স্থানে শহীদ মিনার নির্মাণ হওয়াতে স্বাচ্ছন্দ্যভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করা যেতেন না। এখন বৃহৎ ক্যাম্পাসে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ফিরে আসায় স্বস্তিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারছেন।

একুশের প্রথম প্রহরে সরেজমিনে এমএম কলেজে দেখা গেছে, ভাষাশহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাতে হাতে ফুল, কালো ব্যাজ ধারণ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ঢল নামে আপামর জনতা। একুশের প্রথম প্রহর থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন শুরু হয়। হাজারো মানুষকে শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনার অভিমুখে যেতে দেখা গেছে।

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজে অবস্থিত শহীদ মিনারকে জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের স্বীকৃতি দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন। ছবি: আজকের পত্রিকা
একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজে অবস্থিত শহীদ মিনারকে জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের স্বীকৃতি দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন। ছবি: আজকের পত্রিকা

জিলা স্কুল মোড় থেকে এমএম কলেজের দক্ষিণ গেট পর্যন্ত দীর্ঘ সারি। সেখান থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পর্যন্ত পুরো এলাকা লোকে লোকারণ্য। হাতে ফুল নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে ধীর গতিতে এগিয়ে চলেছেন। খালি পায়ে একে একে তাঁরা শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের প্রাঙ্গণে বেজে চলেছে একুশের গান। মহান একুশ উপলক্ষে এমএম কলেজ ক্যাম্পাসে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, ‘শহীদ মসিয়ূর রহমান সড়কে নির্মিত শহীদ মিনারে আমরা কোনো দিনই যাইনি। এমএম কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থিত শহীদ মিনারকেই আমরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার মানি। আমাদের দল বরাবরই দাবি করে আসছিল, এই শহীদ মিনারেই যেন শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করা হয়। সেখানে এখন পর্যন্ত আমাদের পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট, বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী, বিপ্লবী যুবমৈত্রীসহ বিভিন্ন সংগঠন ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আসছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দুই ধান ব্যবসায়ীর ১০ লাখ টাকা ও কৃষকের তিনটি গরু চুরি

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
দুই ধান ব্যবসায়ীর ১০ লাখ টাকা ও কৃষকের তিনটি গরু চুরি

নওগাঁর রাণীনগরে পৃথক তিনটি চুরির ঘটনায় দুই ধান ব্যবসায়ীর ১০ লাখের বেশি টাকা এবং এক কৃষকের গোয়ালঘর থেকে তিনটি গরু চুরি হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত থেকে আজ রোববার সকাল পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে।

উপজেলার একডালা গ্রামের মসলিম উদ্দীনের ছেলে এবং আবাদপুকুর হাট এলাকার হক ট্রেডার্সের মালিক মোজাম্মেল হকের ছোট ভাই খাইরুল ইসলাম জানান, সপ্তাহের প্রতি রবি ও বুধবার আবাদপুকুর হাট বসে। রোববার সকাল আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে হাটসংলগ্ন রাস্তায় দাঁড়িয়ে ধান কেনাবেচা করছিলেন তাঁরা। এ সময় ধান বিক্রেতাদের ভিড়ের সুযোগ নিয়ে চোরেরা অফিসের ক্যাশ ড্রয়ার ভেঙে নগদ ৫ লাখ ৩৪ হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

অন্যদিকে উপজেলার বড়িয়াপাড়া গ্রামের ভোলা সরদারের ছেলে এবং বড়িয়াপাড়া ট্রেডার্সের মালিক ধান ব্যবসায়ী ফরিদ সরদার জানান, রোববার ভোরে মোটরসাইকেলে করে আবাদপুকুর বাজারে নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে যান তিনি। ধান কেনার টাকাভর্তি একটি ব্যাগ মোটরসাইকেলে রেখে ঘরের তালা খুলতে যান। তবে তালার ভেতরে কে বা কারা কিছু ঢুকিয়ে রাখায় তালা খুলছিল না। পরে হাতুড়ি দিয়ে তালা ভেঙে মোটরসাইকেলের কাছে ফিরে দেখেন, ব্যাগসহ ৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকা চুরি হয়ে গেছে। তিনি দাবি করেন, ঘটনাটি পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে।

এ ছাড়া গতকাল রাতে উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রামের কৃষক মারুফ হোসেনের গোয়ালঘরের তালা কেটে তিনটি গরু চুরি করা হয়েছে। মারুফ হোসেন ওই গ্রামের আজিজার রহমান ফুলবরের ছেলে। তিনি জানান, গতকাল রাতে গোয়ালঘরে চারটি গরু রেখে ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে উঠে দেখেন, চারটির মধ্যে তিনটি গরু নেই। চুরি হওয়া গরুগুলোর আনুমানিক মূল্য প্রায় দুই লাখ টাকা।

এ বিষয়ে রাণীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ বলেন, চুরির ঘটনাগুলোর খবর পাওয়া গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাবিতে ৬ ডিনের চেম্বারে তালা, দায়িত্ব ছাড়তে রাজি হয়েছেন বলে জানালেন জিএস আম্মার

রাবি প্রতিনিধি  
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ০৫
রাবিতে আওয়ামীপন্থী ডিনদের চেম্বারে তালা মেরে দেয় শিক্ষার্থীদের একাংশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাবিতে আওয়ামীপন্থী ডিনদের চেম্বারে তালা মেরে দেয় শিক্ষার্থীদের একাংশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগের দাবিতে তাঁদের চেম্বারে তালা ঝুলিয়েছে শিক্ষার্থীদের একাংশ। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ভবনে এই ডিনদের চেম্বারে তালা দেন তাঁরা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সময়সীমা অনুযায়ী ১৭ ডিসেম্বর ডিনদের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবে নির্বাচন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার ড. ইফতেখারুল আলম মাসুদ ও উপাচার্য ড. সালেহ হাসান নকীবের সিদ্ধান্তে তাঁদের মেয়ার বাড়ানো হয়। তবে তাঁদের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) জিএস সালাউদ্দিন আম্মার।

আম্মার বলেন, ‘জুলাইয়ের সময় শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে দাঁড়ানো শিক্ষকদের ডকুমেন্টসসহ আমরা তালিকা করেছি। আওয়ামীপন্থী যে ডিনরা আছেন, সেই ডিনদের পদত্যাগ প্রসঙ্গে তাঁদের সবাইকে কল দেওয়া হয়, তবে তাঁদের কেউই ক্যাম্পাসে নাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘ছুটি ও ক্লাস ব্যবস্থাপনায় শিক্ষকদের স্বেচ্ছাচারিতা এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। বিতর্কিত শিক্ষক নিয়োগ এবং হত্যা মামলার আসামি হয়েও শিক্ষক হিসেবে বহাল থাকা আমরা মেনে নিতে পারি না। রাজনৈতিক পরিচয় নয়, ন্যায়বিচারই আমাদের দাবি। আমরা অন্যদের সাথে মিলিয়ে চূড়ান্ত এই তালিকা প্রকাশ করব এবং সেই অনুযায়ী তাদের পদত্যাগে বাধ্য করাব।’

পরে আম্মার ফেসবুক পোস্টে বলেন, আওয়ামীপন্থী ৬ জন ডিনের সঙ্গে তাঁর ফোনে কথা হয়েছে। তাঁরা দায়িত্বে থাকবেন না বলে ভিসিকে জানিয়েছেন। সাবেক ভিসি, প্রো-ভিসি ক্লাস নেওয়ার খবর পেয়ে তিনি গিয়েছিলেন, তাঁরাও একপ্রকার পলাতক। জুলাইয়ে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান করা শিক্ষকদের তালিকা করছেন বলেও জানান আম্মার।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি আকিল বিন তালেব বলেন, ‘আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে শহীদ হাদি ভাই আমাদের যে পথ দেখিয়েছেন, আমাদের সেই পথ অনুসরণ করতে হবে। বিপ্লবের এক বছর পেরিয়ে গেলেও আওয়ামী ফ্যাসিস্টের দোসরেরা আজও ক্যাম্পাসে নিরাপদ, অথচ আমাদের বিপ্লবের নেতৃত্ব দেওয়া মানুষেরা রাস্তায় গুলি খেয়ে জীবন দিচ্ছে। তাই আমরা চাই, কোনো ফ্যাসিবাদের দোসর যেন বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিতে না পারে। রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে রাবি প্রশাসন আসলেও বিপ্লবের স্পিরিট তারা ধারণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।’

আকিল বিন তালেব আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার জন্য ব্যানার ধরা ফ্যাসিস্টের দোসরদের তারা এখনো বিচার করতে পারেনি। আমরা প্রশাসনকে সময় দিয়েছিলাম, কিন্তু তারা এই ফ্যাসিস্টদের পদত্যাগ করাইতে পারেনি, তাই আমরা অভ্যুত্থানের শক্তিরা আজ এই ফ্যাসিস্টদের পদত্যাগ করাইতে বাধ্য হচ্ছি।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ডিনদের মেয়াদ শেষ হলেও সমাবর্তন, সামনে ভর্তি পরীক্ষাসহ নানা কারণে তাঁদের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। সামনে পরীক্ষা রেখে একজন তাঁদের অব্যাহতি দেওয়াটা অনেক জটিলতা তৈরি করবে। তবে উপাচার্য স্যার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে পারবেন।’

এর আগে গতকাল শনিবার রাতে জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে আওয়ামীপন্থী ডিনদের পদত্যাগ ও ফ্যাসিজমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের অপসারণের দাবিতে ‘অপারেশন জিরো টলারেন্স ফর ফ্যাসিজম’ কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতার ঘরে আগুন: মামলা হয়নি, নাশকতার ‘বিশ্বাসযোগ্য’ প্রমাণ মেলেনি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আগুনে জ্বলছে ঘর। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগুনে জ্বলছে ঘর। ছবি: আজকের পত্রিকা

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নে বিএনপি নেতা বেলাল হোসেনের ঘরে আগুন লাগার ঘটনায় নাশকতার কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পায়নি পুলিশ। আজ রোববার দুপুর পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলাও হয়নি।

আগুনে পুড়ে সাত বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু এবং পরিবারের তিন সদস্য দগ্ধ হলেও ঘটনাটি নাশকতা কিনা সে ব্যাপারে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি।

গতকাল শনিবার রাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) হোসাইন মোহাম্মদ রায়হান কাজেমীর সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মিডিয়ায় দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে ঘর পোড়ার যে তথ্য ছড়িয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে তার কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কোনো ‘মব’ বা সংগঠিত দুর্বৃত্তের সংযোগের আলামতও পুলিশ পায়নি।

লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রণজিৎ কুমার দাস সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল থেকে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছি। তবে বাইরে থেকে দরজায় তালা লাগিয়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়ার কোনো আলামত আমরা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি।’

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেলাল হোসেন দাবি করেছেন, ‘ঘরের দুই দরজাই বাইরে থেকে তালাবদ্ধ ছিল। আগুনের তীব্রতায় আমি টিনের বেড়া ফাঁকা করে স্ত্রী ও বড় দুই মেয়েকে নিয়ে বের হতে পারলেও ছোট মেয়ে আয়েশাকে বাঁচাতে পারিনি। ধোঁয়ায় কিছুই দেখা যাচ্ছিল না।’

গত শুক্রবার গভীর রাতে চরমনসা গ্রামের সূতারগোপ্তা এলাকায় এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে সাত বছরের আয়েশা আক্তার পুড়ে মারা যায়। দগ্ধ বেলাল হোসেন সদর হাসপাতালে এবং তাঁর দুই মেয়ে বীথি আক্তার (১৭) ও স্মৃতি আক্তার (১৪) জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওয়াহিদ পারভেজ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। বাইরে থেকে দরজায় তালা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হতে পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং সাধারণ মানুষের কাছে কোনো তথ্য বা প্রমাণ থাকলে তা সরবরাহের অনুরোধ জানিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অনুপ্রবেশের অভিযোগে বিএসএফ সদস্যকে আটক করল বিজিবি

পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) এক সদস্যকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। রোববার (২১ ডিসেম্বর) ভোর ৫টার দিকে সীমানা বেড়ার ১০০ গজ বাংলাদেশের ভেতর থেকে তাঁকে আটক করা হয়। পরে ওই বিএসএফ সদস্যকে দহগ্রাম আঙ্গোরপোতা বিজিবি ক্যাম্পে হেফাজতে রাখা হয়। এ ঘটনায় বিজিবি পতাকা বৈঠকের জন্য বিএসএফকে আহ্বান জানিয়েছে।

বিজিবি ও স্থানীয়রা জানান, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ডিএএমপি প্রধান পিলার ১ নম্বরের উপপিলার ৭ নম্বর-সংলগ্ন দহগ্রাম ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া এলাকা। অপর পাশে রয়েছে ভারতের কোচবিহার রাজ্যের কচুলিবাড়ী থানার কারেঙ্গাতলি এলাকা। রোববার ভোরে ভারতের ১৭৪ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের অর্জুন ক্যাম্পের টহল দলের সদস্য বেদ প্রকাশ ভারতীয় শূন্যরেখা অতিক্রম করে বাংলাদেশের প্রায় ১০০ গজ ভেতরে ডাঙ্গাপাড়া এলাকায় প্রবেশ করেন। এ সময় ৫১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের দহগ্রাম আঙ্গোরপোতা ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যরা তাঁকে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যান। এ সময় বিএসএফ সদস্যের ব্যবহৃত একটি অস্ত্র (শটগান), দুটি গুলি, একটি ওয়্যারলেস সেট ও একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

আঙ্গোরপোতা বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার নায়েব সুবেদার রফিকুজ্জামানের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

এ ব্যাপারে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) রংপুর ৫১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল সেলিম আল দীন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে বিএসএফ সদস্য কনস্টেবল বেদ প্রকাশ বলেছে কুয়াশায় গরু পাচারকারীদের পিছু ধাওয়া করতে গিয়ে ভুল করে বাংলাদেশে ঢুকেছে। আটককৃত বিএসএফ সদস্যের অস্ত্র-গোলাবারুদ ও অন্য সরঞ্জামাদিসহ আঙ্গোরপোতা ক্যাম্পে বিজিবির হেফাজতে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় বিজিবি-বিএসএফ ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠক করার কথা রয়েছে। বিএসএফ দুঃখ প্রকাশ করে ওই বিএসএফ সদস্যের পরিচয় নিশ্চিত করেছে এবং তাঁকে ফেরতের অনুরোধ করেছে। বাংলাদেশ-ভারত যৌথ সীমান্ত চুক্তি ১৯৭৫ এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ওই বিএসএফ সদস্যের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত