Ajker Patrika

অপহরণ করে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে: পিবিআইকে রহিমা বেগম

খুলনা প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৬: ১৭
অপহরণ করে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে: পিবিআইকে রহিমা বেগম

নিজ বাসার নিচ থেকে চার-পাঁচজন তাঁর মুখে কাপড় বেঁধে অপহরণ করে বলে দাবি করেছেন খুলনার রহিমা বেগম (৫২)। স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন তিনি। জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানান পুলিশ ইনভেস্টিগেশন অব বাংলাদেশ (পিবিআই) খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান। 

নিখোঁজের প্রায় এক মাস পর গতকাল শনিবার রাতে ফরিদপুরের বোয়ালমারী থেকে রহিমা বেগমকে উদ্ধার করে খুলনা মহানগর পুলিশ। আজ রোববার তাঁকে পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। 

বেলা ১টার দিকে সন্তানের মুখোমুখি করা হয় রহিমা বেগমকে। পুলিশ সুপার বলেন, ‘শনিবার ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রাম থেকে উদ্ধারের পর থেকে কোনো কথাই বলছিলেন না রহিমা বেগম। বেলা ১টার দিকে তাঁর সন্তানের মুখোমুখি আনা হয়। পরে তিনি অপহৃত হয়েছিলেন বলে দাবি করেন।’ 
 
জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সৈয়দ মোশফিকুর রহমান বলেন, ‘রহিমা বেগমকে অপহরণের পর অজ্ঞাত স্থানে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে দাবি করেন। জমিজমার বিরোধ থাকা কিবরিয়া, মহিউদ্দিনসহ কয়েক ব্যক্তি তাঁর কাছ থেকে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন ও বাড়াবাড়ি না করার হুমকি দেন। একপর্যায়ে তাঁকে ১ হাজার টাকা দিয়ে ছেড়ে দেন।’ 

 ‘রহিমা বেগমের দাবি, ছেড়ে দেওয়ার পর তিনি কিছুই চিনতে পারছিলেন না। একপর্যায়ে গোপালগঞ্জের মুকসেদপুর হয়ে পূর্বপরিচিত ভাড়াটিয়ার ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামে যান। কিন্তু তাঁর কাছে কোনো মোবাইল নম্বর না থাকায় কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি।’ 

পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা রহিমা বেগমের বক্তব্য যাচাই-বাছাই করছি। তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আইন অনুযায়ী সবকিছু করা হবে।’ এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাঁকে আদালতের এজলাসে তোলা হয়নি। 

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের বলেন, ‘খুলনা মহানগর পুলিশ গতকাল রাতে ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানাধীন সৈয়দপুর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে। উদ্ধারের পর তাঁকে খুলনায় আনা হয়। আমরা রহিমা বেগমকে আজ সকাল ১১টার দিকে রিসিভ করি। আমরা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। কিন্তু তিনি উদ্ধারের পর থেকে এখন পর্যন্ত কোনো কথা বলছেন না। তাঁকে একটু নার্ভাস মনে হচ্ছে। তবে রহিমা বেগম সুস্থ আছেন। আমরা আশা করছি, যে কোনো একটা পর্যায়ে তাঁর থেকে সম্পূর্ণ ঘটনা এবং রহস্য উদ্‌ঘাটন করতে সক্ষম হব।’ 

তিনি এত দিন কোথায় ছিলেন—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পিবিআই এসপি বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি নিখোঁজ হওয়ার পরে তিনি প্রথমে কয়েক দিন বান্দরবান ছিলেন। তারপর চট্টগ্রামে ছিলেন। এরপর মুকসুদপুর হয়ে তিনি ফরিদপুর আব্দুল কুদ্দুসের বাড়িতে যান। ওই বাড়িতে কীভাবে গেলেন এমন প্রশ্ন আসতে পারে। রহিমা বেগম মহেশ্বরপাশার যে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন, ওখানে ২৮ বছর আগে আব্দুল কুদ্দুস ভাড়া থাকতেন। তিনি সোনালি জুট মিলে চাকরি করতেন, সেই সুবাদে তার সঙ্গে রহিমা বেগমের পরিচয় ছিল। সেই সুবাদে তিনি কুদ্দুসের বাড়ি খুঁজে বের করেন এবং ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে উদ্ধার করার আগ পর্যন্ত তিনি সেখানে অবস্থান করেন।’ 

পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা এখনো তদন্ত করছি। প্রাথমিকভাবে ওনার (রহিমা) কাছ থেকে সাদা রঙের একটি শপিং ব্যাগ উদ্ধার হয়েছে। যার মধ্যে ওড়না, হিজাব, আয়না, শাড়ি, ওষুধ, সালোয়ার-কামিজসহ পরিধেয় জিনিস ছিল। স্বাভাবিকভাবে একজনকে অপহরণ করে নিয়ে গেলে এগুলো থাকার কথা নয়। তারপরও আমরা মামলার তদন্ত করছি। তদন্ত শেষে আপনাদের বিস্তারিত তথ্য দিতে পারব। তবে আপাতত দৃষ্টিতে অপহরণ নাও হতে পারে।’ 

এসপি বলেন, ‘এর আগে ওনার প্রতিবেশীদের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত একটি মামলায় বিরোধ আছে। সেই বিরোধকে ঘিরে এ ঘটনা ঘটছে কি না সেটা আমরা এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। তদন্ত করছি, তদন্ত শেষে প্রতিবেদন যখন আদালতে দাখিল করব তখন বিস্তারিত আপনাদের জানাতে পারব।’ 

রহিমা বেগমকে অপহরণের অভিযোগে আগে গ্রেপ্তার ছয়জনের ব্যাপারে এসপি বলেন, ‘আমরা তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করেছি। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করব, তাঁরা এই মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত আছে নাকি সকলে নিরপরাধ এটা তদন্ত শেষে বলা যাবে।’ 

রহিমা বেগমের সঙ্গে ফরিদপুর থেকে আনা তিনজন দৌলতপুর থানা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। পিবিআই তাঁদের এখনো রিসিভ করেনি। রিসিভ করার পর তাঁদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানান পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান। 

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নরসিংদীতে তিন চোখ ও দুই মুখের বাছুরের জন্ম, এলাকায় চাঞ্চল্য

নরসিংদী প্রতিনিধি
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীতে অদ্ভুত আকৃতির বাছুরের জন্ম হয়েছে। বাছুরটির রয়েছে দুটি মুখ, দুটি জিহ্বা, দুটি কান ও তিনটি চোখ। এর মধ্যে একটি চোখ বাছুরের কপালের মাঝখানে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

২৩ ডিসেম্বর রাতে শিবপুর উপজেলার চক্রধা ইউনিয়নের পুবেরগাঁও গ্রামে স্থানীয় ইউপি সদস্য কাশেম খানের খামারে বাছুরটির জন্ম।

খামারমালিক কাশেম খান বলেন, বাছুরটি জন্মের পর থেকেই অসুস্থ। স্বাভাবিকভাবে দুধ পান করতে না পারায় ফিডারের মাধ্যমে দুধ খাওয়াতে হচ্ছে।

তিনি জানান, তাঁর খামারের একটি গাভি বাছুরটির জন্ম দিয়েছে। তিনি বলেন, এর আগেও গাভিটির বাছুর হয়েছে। কিন্তু এবারের মতো এমন অদ্ভুদ বাছুর আগে কখনো হয়নি।

ঘটনাটি জানাজানির পর থেকেই বাছুরটিকে একনজর দেখতে আশপাশের কৌতূহলী মানুষ খামারে আসছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল জলিল বলেন, ‘আমরা ছোটবেলা থেকে গরু-ছাগল দেখছি। কিন্তু তিন চোখ আর দুই মুখের বাছুর এই প্রথম দেখলাম। খবর পেয়ে দূর থেকে এসেছি।’

আরেক স্থানীয় নারী জরিনা বেগম বলেন, ‘বাছুরটা দেখতে অদ্ভুত লাগলেও মায়া হচ্ছে। বাছুরটির স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। অনেকেই দ্রুত প্রাণিসম্পদ বিভাগের চিকিৎসকের পরামর্শ ও চিকিৎসা নিশ্চিত করার পরামর্শ দিচ্ছেন।’

এর আগে এ ধরনের বাছুর জন্মের বিষয়ে প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সাধারণত জেনেটিকস ডিফেক্টের কারণে গাভির এমন ত্রুটিপূর্ণ বাচ্চার জন্ম হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজীপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে নানি-নাতনিসহ নিহত ৩

গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গাজীপুরের কালীগঞ্জে রেললাইন দিয়ে হাঁটার সময় ট্রেনে কাটা পড়ে নানি-নাতনিসহ তিন নারী নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে টঙ্গী-ভৈরব রেলপথের আড়িখোলা রেলস্টেশনসংলগ্ন টেকপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত নারীরা হলেন কালীগঞ্জ পৌরসভার দেওয়ালেরটেক গ্রামের মোবারক হোসেনের স্ত্রী সাদিয়া বেগম (২৪), একই এলাকার বাবু মিয়ার মেয়ে অনাদি আক্তার (১৩) এবং নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার মরজাল এলাকার বাসিন্দা কমলা বেগম (৫৫)। নিহত কমলা বেগম ও অনাদি আক্তার সম্পর্কে নানি-নাতনি এবং সাদিয়া বেগম তাঁদের প্রতিবেশী ছিলেন।

স্থানীয়রা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আড়িখোলা রেলব্রিজ এলাকায় রেললাইনের ওপর দিয়ে তিনজন হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নোয়াখালীগামী ‘উপকূল এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি চলে আসে। এ সময় তাঁরা রেলব্রিজের ওপর থাকায় সেখান থেকে দ্রুত সরে যাওয়ার সুযোগ পাননি। পরে ট্রেনটি তাঁদের ওপর দিয়ে চলে যায়। এতে ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই কমলা বেগম ও সাদিয়া বেগমের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় অনাদি আক্তারকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জিয়াউর রহমান জানান, অনাদি আক্তারকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওবায়দুল হক জানান, এটি রেলওয়ের আওতাধীন দুর্ঘটনা হওয়ায় রেলওয়ে পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।

রেলওয়ে নরসিংদী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) দিলীপ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল সম্পন্ন করেছি। নিহত নারীদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বিনা ময়নাতদন্তে লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আরাকান আর্মিদের জন্য নেওয়া হচ্ছিল ১৫০০ মশারি, আটক ৫

থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি  
মশারিসহ জব্দ করা মালপত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা
মশারিসহ জব্দ করা মালপত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা

বান্দরবানের থানচি উপজেলায় দুটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা তল্লাশি করে ১ হাজার ৫০০টি মশারি, ১২০টি নৌকার ইঞ্জিনের পাখা উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে তিন্দুমুখ বিজিবি চেকপোস্ট পার হওয়ার সময় নৌকাগুলো তল্লাশি করে এসব জিনিস জব্দ করে বিজিবি। এসব মশারি ও ইঞ্জিনের পাখা বান্দরবানের থানচির বড় মদক সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির জন্য নেওয়া হচ্ছিল বলে জানিয়েছে বিজিবি। এ ঘটনায় নৌকা দুটি থেকে পাঁচজনকে আটক করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার তাঁদের থানচি থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় আটক ব্যক্তিরা হলেন থোয়াই হ্লা চিং মারমা, উমং সাইং মারমা, হ্লাচিংথোয়াই মারমা, উক্যছাইন মারমা ও মো. ইউনুস।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে বিজিবি বলিপাড়া ৩৮ ব্যাটালিয়ানের সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেনের জানান, নিজস্ব গোয়েন্দা সূত্রে তাঁরা জেনেছেন, দীর্ঘদিন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ওষুধ, কাপড়, জুতা, মোজা, মশারি, নৌকা ইঞ্জিনের পাখা ও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ মিয়ানমারের আরাকান আর্মির কাছে সরবরাহ করছে একটি সিন্ডিকেট চক্র। পাচারকারীদের ধরতে সীমান্তের বিজিবি চৌকিগুলোতে বিজিবি সদস্যরা সতর্ক রয়েছেন।

জাকির হোসেন বলেন, গতকাল বুধবার তিন্দুমুখ বিজিবি চেকপোস্ট অতিক্রম করার সময় মালবাহী তিনটি ইঞ্জিন নৌকা দেখে বিজিবির সদস্যদের সন্দেহ হয়। এ সময় নৌকা থামাতে বললে একটি নৌকা দ্রুত চলে যায়। বাকি দুটি নৌকা তল্লাশি করে ১ হাজার ৫০০টি মশারি, ১২০টি ইঞ্জিন বোটসহ অন্যান্য পণ্য পাওয়া যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নলছিটি লঞ্চঘাট ওসমান হাদির নামে নামকরণ

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
নলছিটি লঞ্চঘাট ।  ছবি: আজকের পত্রিকা
নলছিটি লঞ্চঘাট । ছবি: আজকের পত্রিকা

নলছিটি উপজেলার লঞ্চঘাট এখন থেকে শহীদ শরিফ ওসমান হাদির নামে পরিচিত হবে। জন্মস্থান ও শৈশবের স্মৃতিতে গাথা এই লঞ্চঘাট তাঁর নামের সঙ্গে চিরস্থায়ীভাবে যুক্ত হলো।

বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় (২৫ ডিসেম্বর) জানান, শহীদ ওসমান হাদির জন্মস্থান নলছিটি। শৈশব, বেড়ে ওঠা এবং জীবনসংগ্রামের সঙ্গে লঞ্চঘাট এলাকার নিবিড় সম্পর্ক থাকার কারণে এটি তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছে। বর্তমানে টার্মিনালের সংস্কার ও রঙের কাজ চলমান রয়েছে।

আগামী শনিবার নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন ঘাটটি পরিদর্শন করবেন বলেও জানান তিনি।

নলছিটি লঞ্চঘাট শহীদ ওসমান হাদির জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। ঘাট থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে তার পৈতৃক বাড়ি। নদীর ধারে দাঁড়িয়ে মানুষের আসা-যাওয়া দেখা এবং লঞ্চের ভিড়ে সময় কাটানো—এই ঘাট ছিল তার বেড়ে ওঠার নীরব সাক্ষী।

ঘাট এলাকার ব্যবসায়ী রব হাওলাদার বলেন, ‘আমরা চাইছিলাম হাদির স্মরণে এমন কিছু হোক, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম মনে রাখবে। তার শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত লঞ্চঘাটের নাম তার নামে হওয়া নিঃসন্দেহে স্মরণীয় সিদ্ধান্ত।’

ব্যবসায়ী শাহাদত আলম ফকির যোগ করেন, ‘এই ঘাটে আমরা হাদিকে ছোটবেলা থেকে দেখেছি। সে এখানকারই ছেলে ছিল। আজ তার নামে ঘাটের নামকরণ হওয়ায় আমরা গর্বিত।’

ওসমান হাদির প্রতিবেশী বেলায়েত হোসেন নান্নু বলেন, ‘হাদি এই এলাকার সন্তান। এই ঘাট, এই নদী, এই মানুষ—সবকিছুতেই তার স্মৃতি ছড়িয়ে আছে। লঞ্চঘাটের নাম তার নামে হওয়া মানে, সে এখানেই চিরদিন বেঁচে থাকবে।’

উল্লেখ্য, ১২ ডিসেম্বর হত্যার উদ্দেশ্যে ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। তাঁকে প্রথমে ঢাকায় ভর্তি করা হয় এবং পরে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর মারা যান ওসমান হাদি। পরবর্তীকালে তাঁর মরদেহ দেশে আনা হয় এবং সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে (জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে) সমাহিত করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত