Ajker Patrika

সেতুতে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার, ৬ মাস না পেরোতেই পাটাতনে ধস

আনোয়ার হোসেন, মনিরামপুর (যশোর) 
আপডেট : ১১ অক্টোবর ২০২৪, ১২: ৩৯
সেতুতে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার, ৬ মাস না পেরোতেই পাটাতনে ধস

যশোরের মনিরামপুর উপজেলার চিনাটোলা বাজারে হরিহর নদের ওপর নির্মিত সেতুতে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। মানুষের চলাচলের জন্য সেতু খুলে দেওয়ার ছয় মাস না পেরোতেই পাটাতনের বিভিন্ন স্থানে ধসে পড়েছে। কর্তৃপক্ষ পাটাতন সংস্কারের কাজ শুরু করলে স্থানীয়রা বাধা দিয়েছেন। এলাকাবাসী নতুন করে সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন। 

উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, চিনাটোলা বাজার থেকে মনোহরপুর বাজার সড়কের হরিহর নদের ওপর ৪২ মিটার লম্বা একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ১২ লাখ ৯৩ হাজার ২১১ টাকা। গত বছরের ১২ নভেম্বর সেতু উদ্বোধনের কথা থাকলেও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে তা হয়নি। পরে চলতি বছরের মার্চে জনসাধারণের চলাচলের জন্য সেতু উন্মুক্ত করা হয়। গত আগস্টের প্রথম দিকে সেতুর পাটাতনের পলেস্তারা ধসে পড়তে শুরু করে। ধীরে ধীরে বড় একটি অংশ ধসে রড বেরিয়ে পড়ে। দুই মাস ধরে সেতু পারাপারে ভোগান্তিতে পড়েছে পথচারীরা। এই সেতুর সড়ক দিয়ে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) শাহীন চাকলাদারের ভাই শামীম চাকলাদার সেতু নির্মাণের ঠিকাদার ছিলেন। যশোর-৫ আসনের (মনিরামপুর) এমপি ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যের অনুসারী শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনের সহযোগিতায় দায়সারাভাবে সেতুর কাজ শেষ করেছেন ঠিকাদার। বরাদ্দের সিংহভাগ টাকা লোপাট হওয়ায় উদ্বোধনের পরপরই সেতুতে ধস নেমেছে। 

দায়সারাভাবে সেতুর কাজ করার সময় স্থানীয়রা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তখন শাহীন চাকলাদার ও আলম চেয়ারম্যানের ভয় দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। 

গতকাল বৃহস্পতিবার সেতুর দুপাশের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে চিনাটোলা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ২০২২ সালের ৬ অক্টোবর সেতুর কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। ঠিকাদার নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে নির্ধারিত মেয়াদের এক বছরের বেশি সময় পর দায়সারাভাবে সেতুর কাজ শেষ করেছেন। 

সেতুর পূর্ব পাশের বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, ‘সেতু খুলে দেওয়ার চার-পাঁচ মাসের মাথায় পাটাতনের পলেস্তারা ফেটে নদীতে পড়ে কয়েকটি গর্ত সৃষ্টি হয়। পরে উপজেলায় খবর দিলে ইঞ্জিনিয়ার অফিসের লোক এসে গর্তগুলো বন্ধ করে দিতে চান। আমরা বাধা দিয়েছি। বলেছি, সেতু ভেঙে নতুন করে করতে হবে। তখন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে আরও লোকজন আসে। আমাদের বাধার মুখে তাঁরা সেতুর পাটাতন ভাঙা শুরু করেন। এখন কাজ বন্ধ করে রেখেছে ইঞ্জিনিয়ার অফিস। এতে করে সেতু দিয়ে চলাচলে আমাদের কষ্ট হচ্ছে।’ 

আমির হোসেন আরও বলেন, ‘সেতুর জন্য আনা রড অনেক দিন ফেলে রেখেছিল। এতে রডে মরিচা পড়েছিল। পরে কিছু রড তুলে নিয়ে যান ঠিকাদার। বাকি রড দিয়ে কোনো রকমে সেতুর কাজ করেছেন। যে মাপের রড ব্যবহার করার কথা, সেটা এখানে করা হয়নি।’ 

স্থানীয় জিয়ারুল গাজী বলেন, ‘সেতু তৈরির সময় ঠিকাদারের লোকজন দায়সারাভাবে কাজ চালাচ্ছিলেন। তাঁরা অন্য এলাকা থেকে সিমেন্ট ও বালু মিশিয়ে ট্রাকে করে এনে ঢালাই দিয়েছেন। যতটুকু মোটা করে পাটাতন ঢালাই দেওয়ার কথা ছিল, সেই নিয়মে ঢালাই দেওয়া হয়নি। এখন সেতুর পাটাতন ভাঙার সময় হাতুড়ির আঘাতে ধুলো উড়ছে। পায়ের আঙুল দিয়ে খোঁচা দিতেই খণ্ড খণ্ড ইট-বালু উঠে আসছে। এ ছাড়া সেতুর মাঝের অংশ নিচের দিকে চাপা। একটু বৃষ্টি হলেই সেখানে পানি জমে।’ 

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলমের লোকজন সেতুর কাজ চলার সময় উপস্থিত থাকতেন বলে জানান জিয়ারুল গাজী। তিনি বলেন, ‘কাজে অনিয়ম দেখে বাধা দিতে গেলে শাহীন চাকলাদার ও আলম চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলতে বলা হতো। তখন ভয়ে আমরা চুপ হয়ে যাই।’ 

মনিরামপুর উপজেলার চিনাটোলা বাজারে হরিহর নদের ওপর নির্মিত সেতুর পাটাতনের বিভিন্ন স্থানে ধস দেখা দেয়। সংস্কার শুরু করলে স্থানীয়দের বাধায় কাজ ফেলে রেখেছে কর্তৃপক্ষসেতুপাড়ের চা দোকানদার আব্দুর রহমান বলেন, ‘সেতুর পূর্ব পাশে উদ্বোধনের একটি নামফলক স্থাপন করা আছে। সাবেক প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য সেতু উদ্বোধন করার কথা ছিল। কিন্তু তিনি উদ্বোধন করতে আসেননি। নামফলকে উদ্বোধনের যে তারিখ দেওয়া আছে, তারও ২০-২২ দিন পরে এসে নামফলক লাগানো হয়েছে।’ 

স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি লুৎফর গাজী বলেন, ‘কাজের অনিয়ম দেখে বাধা দিতে গেলে চেয়ারম্যান আলমগীর আমাকে পাত্তা দেননি। “বিএনপি-জামায়াতের কথা চলবে না” বলে আমাকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। আমরা চাই জোড়াতালি দিয়ে নয়, নতুন করে সেতুর কাজ করতে হবে, যাতে আমরা অনেক বছর সেতু ব্যবহার করতে পারি।’ 

এ বিষয়ে শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বলেন, ‘স্থানীয়দের অভিযোগ সত্যি না। ক্ষোভ থেকে এখন তাঁরা অনেক কথা বলছেন।’ 

সেতু নির্মাণের ঠিকাদার শামীম চাকলাদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার লাইসেন্সে অন্য একজন ঠিকাদার কাজ করেছেন। পাটাতন ঢালাইয়ের সময় অন্য জায়গায় সিমেন্ট-বালু মিশিয়ে এনে কাজ করা হয়েছে। এতে উপাদানের স্থায়িত্ব কমে যাওয়ায় এমনটি হতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু আমার লাইসেন্সে কাজ করা হয়েছে। পাটাতন ধসে পড়ার দায় আমার ওপর বর্তায়। পাটাতনের কাজ নতুনভাবে করা হবে।’ 

সেতুর কাজ দেখভালের দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ের সাবেক উপসহকারী প্রকৌশলী গাউসুল আজম বলেন, ‘শুনেছি, ৫ আগস্ট সরকােরর পতনের দিন স্থানীয় লোকজন পিটিয়ে সেতুর মেঝে ভেঙে ফেলেছে। ঠিকাদার ও স্থানীয় আলমগীর চেয়ারম্যান একই দাবি করেছেন।’ 

মনিরামপুর উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুৎ দাস বলেন, ‘সেতুর পাটাতন ধসে পড়ার খবর পেয়ে আমরা সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। প্রথম দিকে স্থানীয়রা বাধা দিয়েছিলেন। এখন সবার সঙ্গে কথা হয়েছে। দ্রুত সেতুর সংস্কারকাজ শুরু করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

জাবি প্রতিনিধি 
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ০৯
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখার সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখার সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

‘আগামীকাল বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে। তাহলেই বাংলাদেশের প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন হবে’ এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখার সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) শরীফ ওসমান হাদীর মৃত্যুতে শোক ও প্রতিবাদ মিছিল করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। প্রতিবাদ মিছিল শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন জাকসু, শাখা ছাত্রশিবির, শাখা ছাত্রশক্তি, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) নেতা-কর্মীরা। সমাবেশে ‘আগামীকালকে (শুক্রবার) বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে’ বলে মন্তব্য করেন মোস্তাফিজুর রহমান।

সমাবেশে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক লড়াই করে বাংলাদেশের প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব নয়। আমাদের লড়াই শুরু হবে শহীদ ওসমান হাদির ইনকিলাব মঞ্চের সাংস্কৃতিক লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে। আগামীকালকে বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে। তাহলেই বাংলাদেশের প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর ধরে আমরা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। এই খুনি হাসিনার দল হাজার হাজার নিষ্পাপ বাংলাদেশের দামাল ছেলেদেরকে হত্যা করেও ওর রক্ত পিপাসা মেটেনি। বিদেশে বসে এখনো বিপ্লবীদের হত্যা করার ছক করছে। আমরা আজ এই বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে স্পষ্ট করে বলতে চাই শহীদ ওসমান হাদির রক্তের ওপর দিয়ে, শহীদের রক্তের ওপর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আর কোনো সম্পর্ক থাকবে না। যে সমস্ত ভারতীয়রা বাংলাদেশে বৈধভাবে অবৈধভাবে বাংলাদেশে চাকরি করছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের ভারতে পুশব্যাক করতে হবে। ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত না হাসিনাকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করে, যতক্ষণ পর্যন্ত না ওরা ওসমান হাদির খুনিকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করবে ততক্ষণ পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না।’

মোস্তাফিজুর রহমানের দেওয়া বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় সমালোচনা।

এরপর আজ শুক্রবার দুপুরেও মোস্তাফিজুর রহমান তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুকে অ্যাকাউন্টে একই ধরনের বক্তব্য লিখে পোস্ট করেন। পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, শুধু রাজনৈতিক লড়াইয়ে প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জিত হয় না। শহীদ ওসমান হাদি ভাই ইনকিলাব মঞ্চের মাধ্যমে ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও আওয়ামী প্রক্সি উদীচী, ছায়ানটের কালচারাল হেজেমনির বিরুদ্ধে যে লড়াই শুরু করেছিল সেই লড়াই জারি রাখতে হবে। তাদের সকল আধিপত্যবাদী বয়ানকে তছনছ করে দিতে হবে। ইট, পাথরের দেয়াল ভেঙে আধিপত্যবাদকে মোকাবিলা করা যায় না, সেটা হাদি আমাদের শিখিয়েছে।’

অন্য আরেকটি ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘গতকাল শহীদ শরিফ ওসমান হাদি ভাইয়ের মৃত্যু পরবর্তী প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশে প্রদত্ত আমার বক্তব্যের কিছু শব্দ নিয়ে এই স্পষ্টিকরণ প্রদান করছি। বক্তব্যে ব্যবহৃত “তছনছ” শব্দটির মাধ্যমে ভাঙচুরকে বোঝানো হয়নি। বরং এর অর্থ ছিল শহীদ হাদির যে স্বপ্ন নিয়মতান্ত্রিক ও প্রাতিষ্ঠানিক উপায়ে বিকল্প কাঠামো গড়ে তুলে, সর্বদা সচেতন থেকে ফ্যাসিবাদী বয়ানকে মোকাবিলা করা।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘এ প্রসঙ্গে আরও যুক্ত করা প্রয়োজন যে, উদীচীসহ উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানসমূহ বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের তল্পিবাহক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে ভূমিকা রেখে আসছে। তারা বাংলাদেশের শত্রু, জনগণের শত্রু। তবে ফ্যাসিবাদের আদর্শিক ভিত্তিকে আমরা প্রাতিষ্ঠানিক ও নিয়মতান্ত্রিকভাবেই মোকাবিলা করব, ইনশা আল্লাহ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসে আগুন, পুড়েছে নথিপত্র

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
জানালা দিয়ে অফিসের ভেতর আগুন লাগানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
জানালা দিয়ে অফিসের ভেতর আগুন লাগানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসের স্টোররুমে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে নিচতলার স্টোররুমে সংরক্ষিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি পুড়ে গেছে।

আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে এই অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, সকালে ধোঁয়া দেখে আগুন লাগার বিষয়টি স্থানীয় বাসিন্দাদের নজরে আসে। পরে নির্বাচন অফিসের প্রহরী ও স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন নেভান।

সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান ও সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবু দাউদ জানান, আগুনে কিছু নথি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। স্টোররুমের পেছনের জানালার পাশ থেকে আগুন লাগানো হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

খবর পেয়ে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক ইকবাল হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোকনুজ জামানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন মাতুব্বর বলেন, এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করা হয়েছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দৌলতপুরে গ্রাম আদালতে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
হোগলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের হিসাবরক্ষক আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সংগৃহীত
হোগলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের হিসাবরক্ষক আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে গ্রাম আদালতে সরকারি নামমাত্র ফি থাকলেও ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের দাবি, উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে বিচার চাইতে বাড়তি অর্থ গুনতে হচ্ছে তাঁদের। ইতিমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদটির হিসাবরক্ষক কাম কম্পিউটার অপারেটর আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নান্টু আলী নামের এক ব্যক্তি। অভিযোগের সপক্ষে ভিডিও প্রমাণও দাখিল করা হয়েছে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী, গ্রাম আদালতে দেওয়ানি মামলার ফি ২০ টাকা এবং ফৌজদারি মামলার ফি ১০ টাকা। অথচ ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের দাবি, এখানে মামলা দায়ের থেকে শুরু করে হাজিরা পর্যন্ত ৩০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হচ্ছে।

ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা জানান, স্বল্প সময়ে ও কম খরচে বিচার পাওয়ার আশায় তাঁরা গ্রাম আদালতে আসেন। কিন্তু এখানে এসেও তাঁদের অনেক টাকা খরচ হচ্ছে।

আল্লাহর দরগা বাজার এলাকার এক ঝালমুড়ি ও ফুচকা বিক্রেতা জানান, পারিবারিক কলহ-সংক্রান্ত মামলায় তাঁর কাছ থেকে ধাপে ধাপে ১ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। মুন্না নামের অন্য এক ভুক্তভোগী জানান, একটি সাধারণ অভিযোগ দায়ের করতে তাঁকে ৪০০ টাকা দিতে হয়েছে।

অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করে হিসাবরক্ষক আবু সুফিয়ান জানান, যোগদানের পর থেকেই তিনি এমনভাবে টাকা নিয়ে আসছেন।

এদিকে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও চেয়ারম্যান উভয়ে অতিরিক্ত ফি আদায়ের ব্যাপারে অবগত নন বলে দাবি করেছেন।

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনিন্দ্য গুহ বলেন, অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে এবং সত্যতা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ০৭
ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির জানাজা আজ শনিবার বেলা ২টায় অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজিত এই জানাজাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জানাজার সময় আধা ঘণ্টা এগিয়ে আনা হয়েছে। এর আগে বেলা আড়াইটায় জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তা আজ বেলা ২টায় নির্ধারিত হয়েছে।

জানাজা উপলক্ষে সংসদ ভবন ও আশপাশ এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ডিএমপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তার স্বার্থে জানাজায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা ১ হাজার বডি ওর্ন ক্যামেরা ব্যবহার করবেন। পুরো এলাকা সিসিটিভি ও গোয়েন্দা নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে।

জানাজায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ কিছু নির্দেশনা জারি করা হয়েছে:

ব্যাগ বহন নিষেধ: জানাজায় আসা মুসল্লিদের কোনো প্রকার ব্যাগ বা ভারী বস্তু বহন না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ড্রোন ওড়ানো নিষিদ্ধ: নিরাপত্তাঝুঁকি এড়াতে সংসদ ভবন ও এর সংলগ্ন এলাকায় যেকোনো ধরনের ড্রোন ওড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ওসমান হাদির জানাজায় বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগম হতে পারে বিবেচনা করে ট্রাফিক বিভাগ থেকেও যাতায়াতের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত