Ajker Patrika

ভিজিএফের কার্ড ভাগাভাগি নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, নেতা নিহত

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি­
রফিকুল ইসলাম রফিক। ছবি: সংগৃহীত
রফিকুল ইসলাম রফিক। ছবি: সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গা সদরে সরকারি খাদ্য সহায়তার ভিজিএফের কার্ড ভাগাভাগি নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক নেতা নিহত হয়েছেন। সেই সঙ্গে আহত হয়েছেন কয়েকজন।

আজ শনিবার দুপুরে তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে এ সংঘর্ষ ঘটে। নিহত রফিকুল ইসলাম রফিক (৫০) তিতুদহ গ্রামের মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে। তিনি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়নে ভিজিএফের ১ হাজার ৬৫০টি কার্ড বরাদ্দ এসেছে। এসব কার্ড ভাগাভাগি করতে আজ ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক আব্দুল আওয়াল বৈঠকের ব্যবস্থা করেন। এতে আমন্ত্রণ জানানো হয় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন, জামায়াত ও বিএনপির নেতাদের। তবে বৈঠকের আগে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মিলন ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকের পক্ষের মধ্যে বিরোধ বাধে।

বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন ধারালো অস্ত্র নিয়ে রফিকসহ তাঁর সমর্থকদের ওপর হামলা চালান। এরপর উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় এলোপাতাড়ি কোপে ঘটনাস্থলে রফিক নিহত হন। আহত হন রফিকের ভাই শফিকসহ ৭-৮ জন। আহতদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনার জন্য প্রশাসনকে দায়ী করে জেলা বিএনপির এক নেতা বলেন, সম্পূর্ণ দোষ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ইউনিয়ন প্রশাসকের। তাঁরা স্থানীয় রাজনীতি বোঝেন না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই নেতা বলেন, ‘যেখানে একরকম অসন্তোষ রয়েছে, সেখানে কেন কার্ড ভাগাভাগি নিয়ে বসা হবে? আর যদি সেটাই হয়, তাহলে কেন জেলাপর্যায়ের নেতাদের জানানো হয়নি এই সমস্যার বিষয়ে? শৃঙ্খলা রাখতে জেলার নেতা বসে এটি সমাধান করত। ইউএনও ও প্রশাসকের মাতব্বরির কারণে আজ এই মার্ডার হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদরের ইউএনও এম সাইফুল্লাহ বলেন, ‘আমার সঙ্গে বসার বিষয়ে জানা নেই। বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক বলতে পারবেন। ওই ইউনিয়নে ভিজিএফের ১ হাজার ৬৫০টি কার্ড এসেছে। এটা নিয়ে হয়তো অসন্তোষ ছিল। তাঁরা স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য বসতে পারেন।’

চুয়াডাঙ্গা সদরের তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে পড়ে থাকা রফিকুল ইসলাম রফিকের লাশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
চুয়াডাঙ্গা সদরের তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে পড়ে থাকা রফিকুল ইসলাম রফিকের লাশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

অন্যদিকে তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক আওয়াল বলেন, ‘তাঁদের কথামতো আমি আজকে বসতে চেয়েছিলাম। সেখানে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন, বিএনপি, জামায়াত সবার বসার কথা ছিল। কেউ কেউ উপস্থিত হয়েছিলেন। তবে বসার আগে এই ঘটনা ঘটেছে। আমি বসার আগে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টি জানিয়েছিলাম।’

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) কনক কুমার দাস বলেন, দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে সংঘর্ষের মূল কারণ উদ্‌ঘাটনে থানা-পুলিশ ও ডিবির টিম কাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

এদিকে সদর উপজেলার দর্শনা থানা বিএনপির সভাপতি খাজা আবুল হাসনাত বলেছেন, বিএনপি একটা বড় দল। এখানে নেতৃত্বের লড়াই থাকবে, মতভেদ থাকবে। তাই বলে কাউকে মেরে ফেলতে হবে, এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেবে দল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত