Ajker Patrika

মেরে প্রায় ১২ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ ব্যবসায়ীর, পুলিশ বলছে ‘নাটক’ 

কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ মে ২০২৩, ২১: ২৬
মেরে প্রায় ১২ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ ব্যবসায়ীর, পুলিশ বলছে ‘নাটক’ 

মুখে স্প্রে ছিটিয়ে ও মারধর করে টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা এমন অভিযোগ ব্যবসায়ী রুহুল আমীনের। তবে পুলিশ বলছে, সাজানো ঘটনা, নাটক করছেন তিনি। গতকাল সোমবার রাতে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর-সাবদারপুর সড়কের পুলিশ বক্সের সামনে এ ঘটনা ঘটে। রুহুল কোটচাঁদপুর উপজেলার সাবদারপুর ইউনিয়নের ছয়খাদা গ্রামের আশাদুল বিশ্বাসের ছেলে।

ভুক্তভোগী রুহুল আমীন বলেন, ‘‘সোমবার সন্ধ্যা ৭টা ৪০-৪৫ মিনিট বাজে। কোটচাঁদপুর বাজারে ব্যবসায়ী অংশীদারদের থেকে ১১ লাখ ৯০ হাজার টাকা তুলে সাবদারপুরের দিকে যাচ্ছিলাম। এ সময় লাল একটা এ্যাপাচি মোটরসাইকেল আমার পিছু নেয়। কিছু দূর যাওয়ার পর জিজ্ঞেস করেন, এ রাস্তা দিয়ে খালিশপুর যাওয়া যায় কি না। আমি তাদের বলি, এ রাস্তা দিয়ে যেতে অনেক ঘুরতে হবে। আপনারা কোটচাঁদপুর দিয়ে যান।

‘সে কথা না শুনে সামনে দিয়ে যাওয়ার রাস্তা দেখিয়ে দিতে বলেন আমাকে। কিছু দূর যাওয়ার পর পুলিশ বক্সের পাশে কয়েকটি মোটরসাইকেল দেখতে পাই। আমি মনে করি, তারা প্রশাসনের লোক। এই মনে করে ওখানে মোটরসাইকেলের গতি কমাই। এরপর রাস্তার পাশ থেকে কয়েকজন বের হয়ে আসে। তাদের মধ্যে একজন আমার মুখে কী জানি স্প্রে করে দেয়। পরে আমি আর কিছু দেখতে পাই না।’

‘এরপর তারা আমাকে পুলিশ বক্সের পাশ দিয়ে মাঠের মধ্যে নিয়ে যায়। ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে টাকার ব্যাগটি। আমি দিতে না চাইলে তারা আমার হাতে কোপ দেয়। এ ছাড়া ধারালো ছুরি দিয়ে তারা আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কোপ দেয়। তারপর আর আমি কিছু জানি না। এরপর যখন জ্ঞান ফিরল তখন রাত ১০টা বাজে। ওই সময় পাশে পড়ে থাকা মোবাইল বাজছিল। আমি মোবাইল ধরে বলি আমাকে তোরা বাঁচা। কিছুক্ষণ পর পুলিশ নিয়ে রাজু হোসেন, বাবলু রহমান ও সজিব হোসেন ঘটনাস্থলে আসে। এরপর উদ্ধার করে কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।’ 

রহুল আমিন আরও বলেন, ‘আমার বাজারে দেড় কোটি টাকা ছড়িয়ে রয়েছে। আর আমি মাত্র ১০-১২ লাখ টাকার জন্য নিজের শরীর কেটে নাটক করব। বিপদে পড়লে অনেকে অনেক কিছুই বলেন। আমি একটু সুস্থ হয়ে থানায় অভিযোগ করব অবশ্যই।’ বর্তমানে তিনি কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। তিনি ভুট্টা ব্যবসায়ী বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে রুহুল আমিনের গ্রামের বাসিন্দা রাজু হোসেন, বাবলু রহমান ও সজিব হোসেন বলেন, ‘রুহুল আমিনের সার, ওষুধ ও ভুট্টা ছাড়াও আরও ব্যবসা আছে। এ বছর তিনি গ্রাম থেকে দেড় কোটি টাকার ভুট্টা কিনেছেন। আমরা তাঁর সঙ্গে থাকি। এলাকার মানুষকে আজ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। সেটা আমরা জানতাম। সোমবার বিকেল পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। এরপর থেকে যোগাযোগ পাচ্ছিলাম না। এ কারণে রুহুল আমীন যেসব জায়গায় বসেন, আমরা সেখানে গিয়ে খুঁজতে থাকি। পরে কোনো যোগাযোগ না পেয়ে আমরা বাড়ি যাচ্ছিলাম। এ সময় হঠাৎ তার ফোন আসে। সে ফোনে কাঁদতে থাকে। এরপর ঘটনার কথা বললে আমরা পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করি।’

রুহুল আমীন নাটক করছে কি না জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, ‘তাঁর টাকা আছে। তিনি অনেক টাকা মানুষকে দিয়েছেন। এখন অল্প টাকার জন্য নাটক করার কথা না। নাটক করে মানুষ একটা কোপ মারতে পারে শরীরে, অতগুলো কোপ মারা সম্ভব না।’

এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক রমিজ উদ্দিন (তপু) বলেন, ‘রোগীর সারা শরীরে ক্ষতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁকে দেখে চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি করা হয়েছে। তবে অবস্থা আশঙ্কাজনক নয়।’

বিষয়টি নিয়ে কোটচাঁদপুরের সাবদারপুর পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ফিরোজ আলম বলেন, ‘আমরা ওই সময় সড়কে নিয়মিত টহলে ছিলাম। রুহুলের ম্যানেজারসহ কয়েকজন এসে বলেন, ‘‘আমাদের মোটরসাইকেল ছিনতাই হয়ে গেছে।’ এ কথা শোনার পর আমরা সবাই মিলে ঘটনাস্থলে যাই। গিয়ে দেখতে পাই মোটরসাইকেলটির ঘাড়ে তালা দেওয়া আর চাবি রুহুলের পকেটে।’

‘আর কিছুটা নিচু ভূমিতে পড়ে আছে রুহুল। পরে তাঁকে উদ্ধার করে কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয় তাঁর সহযোগীদের মাধ্যমে।’ ঘটনা দেখে আপনার কী মনে হয়েছে—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটা একটা সাজানো ঘটনা বলে মনে হচ্ছে। নাটক করছেন উনি।’ কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি এলাকায় রুহুলের অনেক টাকা ধার-দেনা রয়েছে। আর তা থেকে বাঁচতে এটা করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’

এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা বা অভিযোগ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন কোটচাঁদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুজ্জামান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খামারে ডাকাতের হানা, অস্ত্র ঠেকিয়ে ১২ গরু লুট

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ০২
অস্ত্রের মুখে খামারমালিককে বেঁধে রেখে ডাকাত দল এই খামার থেকে ১২টি গরু লুট করে নিয়ে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
অস্ত্রের মুখে খামারমালিককে বেঁধে রেখে ডাকাত দল এই খামার থেকে ১২টি গরু লুট করে নিয়ে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে একটি গরুর খামারে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। অস্ত্রের মুখে খামারমালিককে বেঁধে রেখে ডাকাত দল ১২টি গরু লুট করে নিয়ে গেছে।

গতকাল সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া উচ্চবিদ্যালয়সংলগ্ন উত্তর বাঁশবাড়িয়া এলাকায় ইসমাইল হোসেনের মালিকানাধীন ‘এন আই এগ্রো ফার্মে’ এ ঘটনা ঘটে।

খামারমালিক ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘গভীর রাতে ১২–১৫ জন মুখোশধারী ডাকাত খামারের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকে। এ সময় আমি খামারের পাশের একটি কক্ষে ঘুমিয়ে ছিলাম। দরজা ভাঙার শব্দ পেয়ে ছুটে গেলে ডাকাতরা আমাকে অস্ত্র ঠেকিয়ে খামারের ভেতর রশি দিয়ে বেঁধে রাখে। পরে খামারে থাকা ১২টি গরু লুট করে নিয়ে যায়।’

ইসমাইল হোসেন জানান, তাঁর ভাতিজা নজরুলকে সঙ্গে নিয়ে খামারটি চালু করেন তিনি। গরু কেনার জন্য স্থানীয় একটি এনজিও থেকে বড় অঙ্কের ঋণও নেওয়া হয়েছে। গরু বিক্রি করে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন ছিল তাঁদের। কিন্তু ডাকাতির ঘটনায় তাঁরা সর্বস্বান্ত হয়েছেন। এখন পুঁজি তো নেইই, ঋণ কীভাবে পরিশোধ করবেন—তা ভেবেই দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার সকালে অজ্ঞাতনামা ডাকাতদের বিরুদ্ধে সীতাকুণ্ড থানায় মামলা করেছেন ইসমাইল হোসেন।

ডাকাতদের হামলায় আহত হয়েছেন খামারের পাশের একটি চায়ের দোকানের মালিক আমিন হোসেন। তিনি বলেন, ‘গভীর রাতে চিৎকার ও দরজা ভাঙার শব্দ পেয়ে দোকান থেকে বের হয়ে খামারের দিকে যাই। ডাকাতদের গরু লুট করে নিয়ে যেতে দেখে বাধা দিতে গেলে আমাকে মারধর করে রাস্তার পাশের একটি পুকুরে ফেলে দেয় ডাকাতরা।’

সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আলমগীর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গভীর রাতে বাঁশবাড়িয়া এলাকার একটি খামার থেকে ১২টি গরু লুটের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। লুট হওয়া গরু উদ্ধারে ও জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নরসিংদীতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ছাত্রদল কর্মীকে হত্যা

নরসিংদী সংবাদদাতা
জাহিদুল ইসলাম পলাশ। ছবি: সংগৃহীত
জাহিদুল ইসলাম পলাশ। ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদীর মাধবদীতে জাহিদুল ইসলাম পলাশ (২৫) নামে এক ছাত্রদল নেতাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার রাতে সদর উপজেলার নোয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত জাহিদুল উপজেলার জিনারদী ইউনিয়নের গয়েশপুরের মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে। তিনি ওই ইউনিয়নের ছাত্রদলের কর্মী ছিলেন। তিনি সেখেরচর হাটে ব্যবসা করতেন।

পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, কেউ জাহিদুলকে রাতে ফোন দিয়ে মাধবদীর নোয়াপাড়ায় ডেকে নেয়। সেখানে আগে থেকে ওত পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা তাঁকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা তাঁকে দ্রুত নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নরসিংদী জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ এন এম মিজানুর রহমান বলেন, ‘তার বুকে ছুরির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।’

মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং দায়ীদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। নিহতের পরিবার জানাজা ও দাফন শেষে থানায় মামলা করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফেনীর গর্ব খালেদার মৃত্যুতে শোকে আচ্ছন্ন জনপদ

ফেনী প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৩৪
ফুলগাজীর দৌলতপুরে খালেদা জিয়ার পৈতৃক বাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা
ফুলগাজীর দৌলতপুরে খালেদা জিয়ার পৈতৃক বাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে তাঁর পৈতৃক জেলা ফেনীতে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকেই ফুলগাজীর দৌলতপুরে তাঁর পৈতৃক বাড়িতে ভিড় করেন স্বজন, শুভাকাঙ্ক্ষী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। সেখানে বিএনপি চেয়ারপারসনের আত্মার মাগফিরাত কামনায় কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

ফেনী জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে এ পর্যায়ে আর কেউ পৌঁছাতে পারেননি। বেগম খালেদা জিয়া প্রথম কর্মসূচিতে ফেনীতে এসে আমাদের বাড়িতে অবস্থান করেছিলেন। এরপরও বহুবার এসেছেন। এই শোক ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা ঐক্যবদ্ধ থেকে দেশনেত্রীর অসমাপ্ত কাজগুলো এগিয়ে নিতে চাই।’

বিএনপি নেতা মোশাররফ চৌধুরী বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে আমরা ফেনীবাসী সব সময় গর্ব করেছি। “ফেনীর মেয়ে খালেদা, গর্ব মোদের আলাদা” এই স্লোগানটি রাজনৈতিক অঙ্গনে অনন্য মাত্রা দিয়েছিল। তার চলে যাওয়ায় আজ সবকিছু শেষ হয়ে গেল।’

খালেদা জিয়ার চাচাতো ভাই শামীম মজুমদার বলেন, ‘এই বাড়ির সঙ্গে তাঁর অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। আমরা আশা করছিলাম, সুস্থ হয়ে আবারও তিনি এখানে ফিরবেন। কিন্তু আজকে তাঁর মৃত্যুর সংবাদ সবকিছু চিরদিনের জন্য ম্লান করে দিয়েছে।’

উল্লেখ্য, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ফেনী-১ আসন থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও একই আসনে তাঁর পক্ষে গতকাল নেতা-কর্মীরা জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাবিতে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরামের কালো ব্যাজ ধারণ

জাবি প্রতিনিধি 
আজ বেলা সাড়ে ১১টায় জাবিতে কালো ব্যাজ ধারণ করে গভীর শোক প্রকাশ করে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরাম। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ বেলা সাড়ে ১১টায় জাবিতে কালো ব্যাজ ধারণ করে গভীর শোক প্রকাশ করে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরাম। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরামের উদ্যোগে কালো ব্যাজ ধারণ করে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে সংগঠনটির শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জামাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় বক্তারা বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া শুধু একটি দলেরই নয়, বরং তিনি গোটা দেশের অভিভাবকে পরিণত হয়েছেন। তিনি যেভাবে আপসহীন নেতৃত্বের পরিচয় দিয়েছেন, সেটা তাঁকে এই দেশের মানুষের হৃদয়ে স্মরণীয় করে রাখবে।

কর্মসূচি চলাকালে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক মো. শামছুল আলম বলেন, ‘আমাদের জাতির অভিভাবক হিসেবে তিনি ছিলেন মৃদুভাষী, সহনশীল ও মানবিক একজন মানুষ। গত ১৬ বছরে তাঁর ওপর বহু নির্যাতন ও অবিচার হলেও তিনি কখনো কারও প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেননি।’

শামছুল আলম আরও বলেন, ‘তিনি তাঁর প্রিয় বাসা থেকে উৎখাত হয়েও দেশ ছাড়ার কথা ভাবেননি; দেশকেই তিনি ভালোবেসেছেন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আজীবন সংগ্রাম করে তিনি বহুবার কারাবরণ করেছেন এবং আপসহীন নেতৃত্বের মাধ্যমে গণতন্ত্রের প্রতীক হয়ে উঠেছেন। আল্লাহ যেন তাঁকে জান্নাতবাসী করেন।’

এ সময় সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।’

ড. মাহফুজুর রহমান আরও বলেন, ‘দুঃসংবাদ পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সকল পরীক্ষা ও ক্লাস স্থগিত করেছে এবং কালো ব্যাজ ধারণের মাধ্যমে শোক পালন করছে। বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে আমরা মরহুমার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’

কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আব্দুর রব, প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম রাশিদুল আলম, জাতীয়তাবাদী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরামের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মাফরুহী সাত্তারসহ আরও অনেকে।

এর আগে মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত