Ajker Patrika

উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা: কুষ্টিয়ায় এক পত্রের পরীক্ষায় আরেক পত্রের প্রশ্ন, থানায় জিডি

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ জুলাই ২০২৫, ০০: ২৭
কুষ্টিয়া আদর্শ ডিগ্রি মহাবিদ্যালয় কেন্দ্র। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুষ্টিয়া আদর্শ ডিগ্রি মহাবিদ্যালয় কেন্দ্র। ছবি: আজকের পত্রিকা

যশোর বোর্ডের অধীনে কুষ্টিয়ায় একটি কেন্দ্রে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ভুল প্রশ্নপত্র বিতরণ করার ঘটনা ঘটেছে। এরপর তড়িঘড়ি করে সেই প্রশ্ন প্রত্যাহার করে নির্ধারিত প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়া হয়। এ ব্যাপারে ওই কেন্দ্রের সচিব কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকালে জেলা শহরের মিলপাড়া এলাকায় অবস্থিত কুষ্টিয়া আদর্শ ডিগ্রি মহাবিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনা জানার পর সেখানে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারাও কেন্দ্রটি পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হচ্ছে।

যোগাযোগ করা হলে ওই কেন্দ্রের সচিব ও আদর্শ ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) সালাহ্ উদ্দিন আজকের পত্রিকার কাছে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

আদর্শ ডিগ্রি মহাবিদ্যালয় অফিস সূত্রে জানা গেছে, আজ এই কেন্দ্রে মানবিক বিভাগের যুক্তিবিদ্যা বিষয়ের প্রথম পত্রের পরীক্ষা ছিল। সৃজনশীল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ৩০ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষার প্রশ্ন বিতরণ করা হয়। সেখানে কয়েকটি কলেজের মানবিক বিভাগের ১২৬ জন পরীক্ষার্থী ছিল। দুটি কক্ষে ৫২ জনের মধ্যে যুক্তিবিদ্যার প্রথম পত্রের ‘গ’ সেট ১২১ কোডের নৈর্ব্যক্তিক (এমসিকিউ) প্রশ্নের পরিবর্তে দ্বিতীয় পত্রের ‘গ’ সেট ১২২ কোডের প্রশ্ন বিতরণ করা হয়।

শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্ন দেখার পর বিষয়টি বুঝতে পেরে শিক্ষকদের জানায়। এ সময় শিক্ষকেরা দ্রুত প্রশ্নগুলো প্রত্যাহার করে নেন। তবে একটি প্রশ্ন খুঁজে পাননি। পুরো বিষয়টি কেন্দ্রসচিব জানার পর যুক্তিবিদ্যা প্রথম পত্রের নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন বিতরণ করেন এবং পরীক্ষা যথাসময়ে শেষ করেন।

একজন শিক্ষক জানান, ঘটনা জেলা প্রশাসনকে জানানো হলে একজন ম্যাজিস্ট্রেট কেন্দ্রে আসেন। পরে বিতরণ করা কক্ষের ভেতর পড়ে থাকা যুক্তিবিদ্যা দ্বিতীয় পত্রের নৈর্ব্যক্তিক একটি প্রশ্ন উদ্ধার করা হয়। এই প্রশ্নের কোনো ছবি বা কপি বাইরে চলে গেছে কি না, তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছে না।

আরেকজন শিক্ষক জানান, ভুল প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলে কেন্দ্রের প্রতিটি কক্ষে পাঠানো হয়েছিল। পরে বিষয়টি বুঝতে পেরে আবার সঠিক প্রশ্নপত্র নিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়।

একজন পরীক্ষার্থী জানায়, ‘বিতরণ করা নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নপত্রের বিষয় কোডের সঙ্গে আমাদের আজকের (বৃহস্পতিবার) বিষয় কোড না মেলায় কক্ষে থাকা শিক্ষককে জানানো হয়। পরে দ্রুত প্রশ্নগুলো তুলে নেওয়া হয়। কিছুটা দেরিতে পরীক্ষা নেওয়া হয়।’

কেন্দ্রসচিব ও আদর্শ ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) সালাহ্ উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একটা ঘটনা ঘটে গেছে। এটা ট্রেজারিতে প্রশ্ন প্যাকেটবন্দী করার সময় ভুলবশত হয়েছিল। প্যাকেট খোলার সময় হয়তো কেউ খেয়াল করেনি। এর দায় কেন্দ্রসচিব হিসেবে এড়াতে পারি না। দায় থেকেই যায়।’

জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে ম্যাজিস্ট্রেট পাঠানো হয়েছিল। ট্রেজারিতে প্রশ্ন প্যাকেটবন্দীর দায়িত্বে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা ভুল করেছিলেন। এমনকি পরীক্ষায় বিতরণ করার আগে সঠিক কোডের প্রশ্ন আছে কি না, সেটাও দেখার কথা ছিল। তার কিছুই করা হয়নি। এটা সম্পূর্ণ দায়িত্বহীনতা ও অসচেতন কর্মকাণ্ড।’

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ‘এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে। বোর্ড থেকেও কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলে জেনেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

কর্মী নেবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, নেই বয়সসীমা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘আলেম-ওলামাদের গ্রেপ্তার করলে ডিসি-এসপিদের খোলা মাঠে বিচার করা হবে’

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
বাংলাদেশ হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির আবদুল হামিদ।  ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির আবদুল হামিদ। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘আলেম ওলামাদের গ্রেপ্তার করলে ডিসি, এসপিদের খোলা মাঠে বিচার করা হবে।’

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে মানিকগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের খেলার মাঠে বাংলাদেশ হেফাজতে ইসলাম মানিকগঞ্জ জেলা শাখা কর্তৃক আয়োজিত শানে তাওহীদ মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আবদুল হামিদ বলেন, ‘১৭ অক্টোবর ড. ইউনূস সরকার ঘোষিত লালন তিরোধান দিবস বাতিল করতে হবে। দেশে এখন লালনের মূর্তি তৈরি করা হয়েছে। এখন তার পূজা করা হয়। বাউলদের ইসলামবিরোধী কার্যকলাপ বন্ধ না করলে ৬৪ জেলায় একসঙ্গে আন্দোলন ও সমাবেশ করা হবে।’

মানিকগঞ্জ জেলা হেফাজতে ইসলামের সভাপতি মাওলানা সাঈদ নূরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই মহাসমাবেশে বক্তব্য দেন খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাদ্দিস শেখ সালাহউদ্দিনসহ হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

কর্মী নেবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, নেই বয়সসীমা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গভীর রাতে কম্বল নিয়ে ছিন্নমূলদের পাশে জীবননগরের ইউএনও

চুয়াডাঙ্গা (জীবননগর) প্রতিনিধি 
গভীর রাতে কম্বল নিয়ে ছিন্নমূল শীতার্তদের পাশে ইউএনও। ছবি: আজকের পত্রিকা
গভীর রাতে কম্বল নিয়ে ছিন্নমূল শীতার্তদের পাশে ইউএনও। ছবি: আজকের পত্রিকা

চুয়াডাঙ্গায় এবার শীত শুরু হয়েছে আগেভাগেই। কনকনে শীতে কাঁপছে জেলার মানুষ। এই শীতের রাতে জবুথবু হয়ে ঘুমিয়ে থাকেন ছিন্নমূল মানুষ। কেউ চাদর, আবার কেউ গামছা-লুঙ্গি কিংবা ছেঁড়া কাঁথা গায়ে জড়িয়ে ঘুমান। শীতের তীব্রতা বাড়ায় এসব ছিন্নমূল মানুষের কথা চিন্তা করে কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই পথে পথে ঘুরে কম্বল বিতরণ করছেন চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল আমীন।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাত ১০টার থেকে জীবননগর পৌর শহরসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে ছিন্নমূল হতদরিদ্র মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন তিনি।

ইউএনও আল আমীন বলেন, ‘ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো কম্বল বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব কম্বল ছিন্নমূল দুস্থ ও অসহায় মানুষ খুঁজে খুঁজে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছি।’

ইউএনও আরও বলেন, ‘আমরা যাঁরা আর্থিকভাবে সচ্ছল, তাঁরা শীত নিবারণের জন্য অনেক কিছুই কিনতে পারি। আমরা যখন বাসাবাড়িতে দামি কম্বল মুড়িয়ে আরামে ঘুমাতে যাই, তখনো অনেক মানুষ কনকনে শীতে বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশনে শুয়ে-বসে রাত কাটায়। এসব অসহায় মানুষের শীতবস্ত্র দিয়ে তাদের মুখে হাসি ফোটাতে পেরে বেশ ভালো লাগছে।’

আল আমীন বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেকের উচিত এসব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো। আমি চাই, সমাজের সকল বিত্তবান মানুষ এই শীতে সবার পাশে যেন দাঁড়ায়।’

রাতে ছিন্নমূল শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন জীবননগর উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার সৈয়দ আব্দুল জব্বার ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মুশফিকুর রহমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

কর্মী নেবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, নেই বয়সসীমা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বগুড়ায় ঘরের দরজা ভেঙে বিছানায় পড়ে থাকা নারীর লাশ উদ্ধার

বগুড়া প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বগুড়ায় ঘরের দরজা ভেঙে বিছানায় পড়ে থাকা এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার রাত ১১টার দিকে বগুড়া শহরের জামিলনগর এলাকা থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

ওই নারীর নাম সাবিকুন নাহার (৪৩)। তিনি চট্টগ্রাম পোর্ট এলাকার হোন্দালপাড়া এলাকার গোলাম সবানীর মেয়ে। ৯ মাস আগে জামিলনগর এলাকায় শাজাহানের বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বাড়িমালিক শাজাহান মিয়া জানান, বিকেলের পর থেকে সাবিকুন নাহার বাড়িতে অবস্থান করলেও ফোন রিসিভ করেননি। রাত ৯টার দিকে বাড়ির দরজায় ডাকাডাকি করে কোনো সাড়া না পেয়ে জানালা দিয়ে বিছানায় লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।

শাজাহান মিয়া জানান, ৯ মাস আগে সাবিকুন নাহার এক ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে এসে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে দুই হাজার টাকায় দুই কক্ষের বাড়িটি ভাড়া নেন। স্বামী পরিচয় দেওয়া ব্যক্তির বাড়ি বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার রানীরহাট এলাকায়। তবে তাঁর নাম জানেন না তিনি। মাঝেমধ্যে জামিলনগর বাসায় ওই নারীর সঙ্গে রাত যাপন করতেন। সপ্তাহখানেক আগে তাঁদের মধ্যে তালাক হয় বলে ওই নারী বাড়িমালিককে জানান।

শনিবার রাত ৯টার পর ওই নারীর স্বামীকে বাড়িমালিক ফোন করে তাঁর স্ত্রীর মৃত্যুর সংবাদ দিলে তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

সরেজমিন দেখা যায়, ঘরের দরজা খোলা। বিছানায় ওই নারীর লাশ পড়ে আছে। মাক্স দিয়ে মুখ ঢাকা। বিছানায় দুই প্যাকেট খাবার এবং কিছু ওষুধ ছড়ানো-ছিটানো রয়েছে। ঘরের অন্যান্য মালামাল স্বাভাবিক রয়েছে।

পুলিশ পরিদর্শক মাহফুজার রহমান বলেন, ওই নারীর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। বিছানায় ডায়াবেটিসের কিছু ওষুধ পাওয়া গেছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

কর্মী নেবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, নেই বয়সসীমা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৬ একর জমি নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর ও জেলা প্রশাসনের বিরোধ, বরাদ্দ পেল সিটি করপোরেশন

আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম 
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ১৮
বিরোধপূর্ণ জমিতে স্থাপনা পরিকল্পনার নকশা। ছবি: সংগৃহীত
বিরোধপূর্ণ জমিতে স্থাপনা পরিকল্পনার নকশা। ছবি: সংগৃহীত

কর্ণফুলী নদীর তীরঘেঁষে ফিরিঙ্গী বাজার মৌজার ৬ একর জায়গা নিয়ে বিরোধ চলছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসনের। এ নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে সেই জায়গা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে এক বছরের জন্য বরাদ্দ দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

মামলার নথি ও বন্দর সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৮ নভেম্বর চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জায়গাটি ইজারার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। মামলা চলা অবস্থায় ইজারা দেওয়ার উদ্যোগকে বেআইনি উল্লেখ করে বন্দর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন হাইকোর্ট। গত বছরের ১২ ডিসেম্বর এই রুল জারি করা হয়।

এ অবস্থায় ইজারা দেওয়া থেকে পিছু হটে বন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে রুল জারির দেড় মাসের মাথায় গত ২০ জানুয়ারি সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন জায়গাটি বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামানের কাছে বরাদ্দ চান। ৬ একরের ওই জায়গায় খেলার মাঠ ও পার্ক নির্মাণের কথা বলেন মেয়র।

বন্দরের বোর্ড সভার ১৯৩৯৯ নম্বর সিদ্ধান্ত মোতাবেক চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে একসনা (এক বছর) বরাদ্দ দেওয়া হয় জায়গাটি। ৮ ডিসেম্বর সেটি করপোরেশনকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য চিঠি ইস্যু করা হয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে।

জায়গার মাশুল বাবদ ৮৩ লাখ টাকা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের অনুকূলে জমা দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যে। জায়গাটি বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ আইন উপদেষ্টা বা আইন কর্মকর্তার কোনো মতামত গ্রহণ করেনি বলে জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ভূমি শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক (স্টেট-২) মোহাম্মদ রায়হান উদ্দিন বলেন, ফিরিঙ্গী বাজার মৌজার ৬ একর জমি খেলার মাঠ ও পার্ক নির্মাণের জন্য সিটি করপোরেশনের অনুকূলে একসনা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই জমি নিয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের একটি মামলা চলছে।

এই অবস্থায় জায়গা বরাদ্দের বিষেয় জানতে চাইলে মোহাম্মদ রায়হান উদ্দিন বলেন, ‘সরকারি দপ্তরের ক্ষেত্রে আদালত অবমাননা হয় না।’

জেলা প্রশাসন ও বন্দর সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১২ জুলাই সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী এবং চট্টগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ওই এলাকা পরিদর্শন করেন এবং নিজেদের মালিকানার সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেন। এ ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের বক্তব্য ছিল জায়গাটি ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত।

জমি বরাদ্দ পাওয়ার বিষয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ভূমি শাখার প্রধান মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আমরা পার্ক করার জন্য জায়গাটি বন্দরের কাছ থেকে নিয়েছি। টাকা জমা দিয়েছি। বরাদ্দপত্রটা নেওয়ার পর ৮ ডিসেম্বর জায়গাটা বুঝে নেব।’

এই জায়গা নিয়ে মামলার বিষয়টি জানতে চাইলে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘বন্দর আমাদের লিজ দিচ্ছে। মামলা মোকদ্দমার বিষয়টি আমাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়।’

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ভূমি শাখার তথ্যমতে, ১৮৮৫ সালে তৎকালীন সরকার বিরোধপূর্ণ জমিটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করে। পরে ভুলবশত বিএস রেকর্ড বন্দরের নামে হয়নি। বিষয়টি নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রামের যুগ্ম জজ আদালত-১ একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।

এই বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের মহাসচিব অ্যাডভোকেট জিয়া হাবিব আহসান বলেন, ‘মামলা চলা অবস্থায় এই ধরনের লিজ আদালত অবমাননার শামিল। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সতর্ক থাকা উচিত।’

কর্ণফুলী নদীর তীরঘেঁষে শিশুপার্ক ও খেলার মাঠ নির্মাণকে কেন্দ্র করে এই জমি নিয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন ও বন্দর কর্তৃপক্ষের বিরোধ মীমাংসায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি হয়েছিল। ২০২৩ সালের ২৩ আগস্ট নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের চট্টগ্রাম বন্দর অধিশাখার উপসচিব মো. লুৎফর রহমান স্বাক্ষরিত আদেশে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তিন সদস্যের এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মুন্সী মনিরুজ্জামানকে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন মোংলা বন্দরের উপসচিব মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান ও উপসচিব টি এ মোহাম্মদ আমিনুর রহমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

কর্মী নেবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, নেই বয়সসীমা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত