Ajker Patrika

প্রধানমন্ত্রী দেখে যান আপনার এলাকায় বেনজীর কীভাবে সংখ্যালঘুদের জমি দখল করেছেন: গোপালগঞ্জে রানা দাশগুপ্ত

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ জুন ২০২৪, ১৯: ১২
প্রধানমন্ত্রী দেখে যান আপনার এলাকায় বেনজীর কীভাবে সংখ্যালঘুদের জমি দখল করেছেন: গোপালগঞ্জে রানা দাশগুপ্ত

র‍্যাবের মহাপরিচালক ও পুলিশের মহাপরিদর্শক হিসেবে ড. বেনজীরের যে ভূমিকা ছিল সেটি শুধু সরকারের ভাবমূর্তিকেই ক্ষুণ্ন করেনি, গোটা রাষ্ট্রের ভাবমূর্তিকেই ক্ষুণ্ন করেছে। আমাদের আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় যেসব বাহিনী রয়েছে তাদের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন করেছে। দেশের জনগণ আজ উপলব্ধি করতে পারছে যে বেনজীরের মতো কয়েকজন যারা রাষ্ট্রীয় কর্ণধারের দায়িত্ব পালন করছেন তাদের অপকর্মের কারণে আজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞা। 

শুক্রবার (৭ জুন) সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত। এর আগে সদর উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের বৈরাগীটোল গ্রামে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্ক এলাকা পরিদর্শন ও ভুক্তভোগী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। 

রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘এই নিষেধাজ্ঞাগুলো আজকের দিনে এসে মনে হয় বেনজীর ও জেনারেল আজিজের মতো লোকের কারণেই হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার সময় হয়তো আমরা বিষয়গুলো উপলব্ধি করতে পারিনি বলেই অনেক সময় মনে করেছি, একটি রাজনৈতিক কারণে, উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ বিরোধী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।’ 

রানা দাশগুপ্ত আরও বলেন, ‘পুলিশের মহাপরিদর্শক হিসেবে বেনজীর আহমেদ যে অন্যায়, অবিচার ও কুকর্মগুলো করেছেন এবং যেটি ইতিমধ্যে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ হয়েছে। এ বিষয়গুলো জানার পরে আমরাও ভাবলাম, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ আইনজীবী ঐক্য পরিষদ আমরা সেখানে যাই এবং পুরো বিষয়টা দেখি। আমাদের তথ্য অনুসন্ধানের যে কমিটি হয়েছে, এই কমিটি ইতিমধ্যে রিপোর্ট নেওয়া শুরু করেছে। রিপোর্টগুলো পাওয়ার পরে জাতীয় পর্যায়ে দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানিয়ে তাদের সামনে বিষয়টিকে উত্থাপন করা হবে। সাংবাদিক বন্ধুরা আপনারা যে বিশাল কাজটি করছেন আমরা আপনাদের সহযোগিতা ও সহায়তা করতে চাই।’ 

ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টের কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা ভাবি, বাংলাদেশের ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘুদের জায়গা জমি দখলের বিষয়গুলো এখন নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে। জায়গা জমি দখলের ক্ষেত্রে প্রায় সব স্থানেই দেখা যাচ্ছে যারা এই বিষয়গুলোর সঙ্গে জড়িত তারা রাষ্ট্রের প্রভাশালী কোনো না কোনো ব্যক্তি। তারা এই ক্ষমতাকে অপব্যবহার করে সাধারণ নিরীহ ও শান্তিপূর্ণ নাগরিকের জীবনে যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে, এই মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো যেটা ঘটছে, বেনজীর সেখানে একজন প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ 

সাবেক সেনা প্রধান জেনারেল আজিজের কথা উল্লেখ করে রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘যদিও জেনারেল আজিজের বিরুদ্ধে এখনো পর্যন্ত সংখ্যালঘুদের জায়গা-জমি দখল বা বেদখলের বিষয়ে কোনো অভিযোগ আমাদের জানা নেই। কিন্তু র‍্যাবের মহাপরিচালক ও পুলিশের মহাপরিদর্শক হিসেবে বেনজীর যে ভূমিকাটা পালন করছেন, এটা শুধু সরকারের ভাবমূর্তিকেই ক্ষুণ্ন করে নাই, এটা গোটা রাষ্ট্রের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করেছে। আমাদের যে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষ তাদের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন করেছে।’ 

প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘এই এলাকাটি শতভাগ হিন্দু প্রধান এলাকা। যাদের শত শত বিঘা জমি জোর করে, হুমকি দিয়ে, নানা চক্রান্তমূলকভাবে বেনজীর দখল করে নিয়েছে। শুধু দখলই করে নাই, আমরা লক্ষ্য করেছি, কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে এমনভাবে চারদিকে বেষ্টনী করা হয়েছে, যাতে অন্য কেউ ওই জায়গায় প্রবেশ করতে না পারে। ওই দিকে (পার্কের ভেতরে) এলাকার সংখ্যালঘুদের জায়গা জমি আছে, ওগুলো তারা আর দেখাশোনা করতে পারছে না। অথচ, এখানকার লোকজনের প্রধান জীবিকার উৎস কৃষি। আজকে এই জীবিকার উৎস থেকে তারা বঞ্চিত হওয়ার ফলে তাদের দৈনন্দিন জীবনে একটি বিশাল অর্থনৈতিক সংকট নেমে এসেছে। আমি আজকে এখানে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি আবেদন করতে চাই, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এলাকাটি আপনারই। আপনি একবার এলাকায় আসুন, আপনি দেখে যান, কীভাবে এখানকার সংখ্যালঘুদের জায়গা জমি জবর দখল করেছেন বেনজীর আহমেদ। আমরা দাবি, জানাই এবং আবেদনও জানাই, যাদের সম্পত্তিগুলো দখল করা হয়েছে, তাদের সম্পত্তিগুলো তাদের ফেরত দেওয়া হোক। এখন এই সিদ্ধান্তটি গ্রহণ করার দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীকেই নিতে হবে। একই সঙ্গে বলতে চাই, এই এলাকার সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমও আসুক, জনগণ জানতে চায় তাদের এ অবস্থা কেন হলো।’ 
 
রানা দাশগুপ্ত আরও বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছি। তথ্য সংগ্রহ করার পরে আমরা অতি অল্প সময়ের মধ্যে দেশি ও বিদেশি সাংবাদিক যারা আছেন, তাদের নিয়ে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে সম্যক পরিস্থিতি জাতির সামনে তুলে ধরতে চাই। আমরা আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরতে চাই, আমরা মানবাধিকার সংগঠনগুলোর কাছেও তুলে ধরতে চাই। এই অর্থে কীভাবে বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। অন্তত সবাই একবার এসে দেখে যাক। আমরা প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও এখানে যারা বিদেশি রাষ্ট্রদূত রয়েছেন, তাদের কাছেও আবেদন করি আপনার আসুন, আপনারা দেখে যান, এ এলাকার সংখ্যালঘুরা কোন পরিস্থিতিতে আছেন।’ 

বেনজীরের বিদেশ যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা শুনেছি বেনজীর ৮০ কোটি টাকা তুলে নিয়ে গেছেন। আমরা দেখছি, এই জাতীয় যারা রাষ্ট্রের কোনো না কোনো একটি সময় এটি ব্যাংকে হোক, ব্যাংক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে হোক, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের ক্ষেত্রেই হোক, এমনকি আমাদের সেনাপ্রধান আজকে গণমাধ্যমের বদৌলতে আমরা শুনতে পাচ্ছি কেউ আর দেশে নেই। অতএব আমরা মনে করি, এই যে তাঁরা মামলা বা এ আলোচনা শুরু হওয়ার পরে দেশে থেকে চলে গেলেন এবং দেশ ত্যাগ করতে পারলেন, এ ব্যাপারে সরকারেরও জবাবদিহি প্রয়োজন আছে। আমরা এ ব্যাপারেও সরকারের কাছে সুস্পষ্ট জবাবদিহি চাই।’ 

আজিজ ও বেনজীর আওয়ামী লীগের কেউ নন, দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বেনজীর ও আজিজ যা করেছেন সেটা ওনাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। এখানে রাষ্ট্রের কোনো বিষয় না। এ বিষয়গুলোকে ব্যক্তিগত বিষয় হিসেবে চেপে রাখার কোনো বাস্তবতা নাই। অতএব আজকে তাঁদেরও উচিত, তাঁরা বলুক এই মামলা বিদ্যমান থাকা অবস্থায় কী করে তাঁরা এ দেশ থেকে চলে গেলেন এবং বিচার এড়ানোর তাঁরা চেষ্টা করছেন।’ 

এ সময় হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার পাল ও মনিন্দ্র কুমার নাথ, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান আইনজীবী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অনুপ কুমার সাহা, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের গোপালগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি প্রদীপ কুমার বিশ্বাস, সহসভাপতি শিপ্রা বিশ্বাস, সদস্য ডেভিড বৈদ্য প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হবিগঞ্জে রত্না বেইলি সেতু ভেঙে ট্রাক আটকা, দুর্ভোগে যাত্রীরা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
আজ সকাল ৯টার দিকে রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকাল ৯টার দিকে রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

হবিগঞ্জ-বানিয়াচং আঞ্চলিক সড়কের রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে ওই পথে সব ধরনের যান চলাচল। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে শতাধিক যাত্রী ও ওই পথে চলাচলকারীরা। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, জাফলং থেকে ছেড়ে আসা বানিয়াচংগামী পাথরবোঝাই একটি ট্রাক ব্রিজের ওপর ওঠামাত্রই ব্রিজের দুটি পাটাতন ভেঙে যায়। মুহূর্তেই ট্রাকের পেছনের দুটি চাকা ধসে পড়ে এবং পুরো ট্রাকটি ব্রিজে আটকে যায়।

এতে দীর্ঘ লাইনে আটকা পড়ে যাত্রীবাহী বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, টমটম, প্রাইভেট কারসহ অসংখ্য যানবাহন। বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, রোগী এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ব্যবসায়ীরা।

দুর্ঘটনার পর ব্রিজের একপাশ থেকে অন্যপাশে যাওয়ার জন্য যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে হেঁটে ভাঙা অংশ অতিক্রম করছে। এতে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে স্থানীয় এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘ট্রাকটি ব্রিজে উঠতেই জোরে শব্দ হয়। একটু পরই দেখি পাটাতন নিচে ধসে গেছে। ভাগ্য ভালো যে ট্রাকটি পুরোপুরি নিচে পড়ে যায়নি। তবে এখন তো ও পথে চলাচলকারীরা আটকা পড়ে আছে।’

যাত্রীরা জানান, রত্না বেইলি ব্রিজটি বহুদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভারী যানবাহনের অতিরিক্ত চাপের কারণে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে—এমন আশঙ্কা দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। এদিকে যাত্রীদের দাবি, এখানে যেন বেইলি ব্রিজের পরিবর্তে দ্রুত স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হয়, যাতে প্রতিদিনের এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে হবিগঞ্জ সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, ‘ব্রিজটি দ্রুত মেরামত করার কাজ চলছে। পাথরবোঝাই ট্রাকটিতে বেশি লোড থাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার

নরসিংদী প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীর বেলাব উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে আব্দুর রশিদ (৪০) নামের এক অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর তীর থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

আব্দুর রশিদ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের দক্ষিণ লোহাজুরী গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি ছিলেন অটোরিকশাচালক; তবে নিয়মিত আড়িয়াল খাঁ নদে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করা ছিল তাঁর নেশা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৬টার দিকে ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর পাড়ে রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। লাশের পাশেই মোবাইল ফোন ও অটোরিকশাটি ছিল। পরে স্বজনেরা এসে লাশ শনাক্ত করেন। আব্দুর রশিদের মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, তিনি দুষ্কৃতকারীর হামলার শিকার হয়েছেন।

নিহত ব্যক্তির ভাই কাজল মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১১-১২টা পর্যন্ত অটোরিকশা চালিয়ে তারপর নদীর পাড়ে বসে মাছ শিকার করে বাড়ি ফিরত ভাই। কিন্তু গতকাল রাতে আর বাড়ি ফেরেনি। সকালে খবর পেয়ে নদীর পাড়ে এসে ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পাই।’

নিহত ব্যক্তির ছেলে হৃদয় বলেন, ‘রাতে বাড়ি না ফেরায় কল দিলে ফোন বন্ধ পাই। সকালে খবর শুনে নদীর পাড়ে এসে বাবার মরদেহ, মোবাইল ও অটোরিকশা পড়ে থাকতে দেখি।’

বেলাব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাসির উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়টি পিবিআইকে জানানো হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৬৭ বছর পর রামেক হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

অবশেষে ৬৮ বছরে পা দিতে চলা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ মনোরোগ ওয়ার্ড চালু হলো। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানসিক রোগী চিকিৎসা নিতে এলেও ভর্তির সুযোগ ছিল না। গুরুতর রোগীদের কিছু ক্ষেত্রে মেডিসিন বিভাগে রাখা হলেও, পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ডের অভাবে এতদিন অনেককেই ফিরিয়ে দিতে হতো।

হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ৬৭ বছর পর এই প্রথম ২৫ শয্যার একটি সুসজ্জিত মনোরোগ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটির পুরাতন আইসিইউ ভবনে এই নতুন ওয়ার্ডটি গড়ে তোলা হয়েছে।

এই ওয়ার্ডে রোগী ভর্তির জন্য নির্দিষ্ট বিন্যাস রাখা হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষদের জন্য ১০টি, নারীদের জন্য ৭ টি, শিশু-কিশোরদের জন্য ৫টি এবং উচ্চ পর্যবেক্ষণের জন্য ৩টি শয্যা সংরক্ষিত রয়েছে। এ ছাড়া রোগীদের চিকিৎসার সুবিধার জন্য থেরাপি ও কাউন্সেলিং রুমসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওয়ার্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মোস্তফা আলী।

এই ওয়ার্ডটি চালুর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ ছিল কলেজের স্বীকৃতি বজায় রাখা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী মার্চ মাসেই ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন (ডব্লিউএফএমই) থেকে একটি প্রতিনিধি দল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনে আসবে। পরিদর্শনকালে মনোরোগ বিভাগের ওয়ার্ড না পেলে কলেজের পয়েন্ট কমে যাওয়ার এবং অ্যাক্রিডিটেশনে বড় ধরনের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এতে করে এই কলেজের শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা বা পড়াশোনা করার সুযোগ কমে যেত। এ ছাড়া এফসিপিএস এবং ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্যও এমন একটি ওয়ার্ড জরুরি ছিল।

কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুরোধ শুনে সদ্যবিদায়ী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ দ্রুত এই ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নেন এবং গত বুধবার এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের সময় তাঁর সঙ্গে নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামসহ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় এই হাসপাতালে যে ৬৭ বছরেও মানসিক রোগীদের জন্য ওয়ার্ড চালু হয়নি, এটি সত্যিই অবাক হওয়ার মতো বিষয়। আমরা প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চালু করেছি। এখন থেকে এ অঞ্চলের মানসিক রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি থেকেও উন্নত চিকিৎসা নিতে পারবেন।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি রামেক হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর উদ্যোগেগত ২৩ অক্টোবর শুধু সাপে কাটা রোগীদের জন্য বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করা হয়।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে একজনও সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু হয়নি, যেখানে আগে প্রায় প্রতিদিনই এই রোগে মৃত্যুর ঘটনা ঘটতো। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজমিস্ত্রির বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত