Ajker Patrika

একই অফিসে পাশাপাশি বসেন স্বামী-স্ত্রী, আর্থিক অনিয়মের শত অভিযোগ

পরশুরাম (ফেনী) প্রতিনিধি
একই অফিসে পাশাপাশি বসেন স্বামী-স্ত্রী, আর্থিক অনিয়মের শত অভিযোগ

ফেনীর পরশুরাম উপজেলা সমাজসেবা অফিসে পাশাপাশি চেয়ারে বসেন মাহবুবুর রহমান মোল্লা ও তাঁর স্ত্রী সায়েরা খাতুন। সম্প্রতি উপজেলা সমাজসেবা অফিসে আর্থিক অনিয়মের বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। এসবের সঙ্গে একজন অফিস সহায়কসহ এই দম্পতির জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে তাঁরা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে।

মাহবুবুর রহমান মোল্লা ইউনিয়ন সমাজকর্মী আর সায়েরা খাতুন কারিগরি প্রশিক্ষক। লোকবল সংকটের অজুহাতে তাঁদের অফিসে একসঙ্গে বসার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া সায়েরা খাতুন নিজেকে আওয়ামী লীগের নেত্রী পরিচয় দিয়েও অনেক সুবিধা আদায় করে নিচ্ছেন। তিনি আগামী কমিটিতে জেলায় গুরুত্বপূর্ণ পদ পাবেন বলে এই প্রতিবেদকের কাছে দাবি করেন। তবে এখন তিনি কোনো কমিটিতে নেই। অনিয়মের সঙ্গে অফিস সহায়ক মো. নবী হোসেনও জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পৌর এলাকার অনন্তপুরের বৃদ্ধ কাজল আক্তারকে ফোন দিয়ে ১ হাজার টাকা নিয়ে পরশুরাম উপজেলা সমাজসেবা অফিসে আসতে বলা হয়। কাজল আক্তার অসুস্থ থাকায় আসতে না পেরে নিকটাত্মীয় কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাঈন উদ্দিন মানিককে বিষয়টি জানান। মানিক মোবাইল অ্যাপসের সহযোগিতায় নম্বর যাচাই করে দেখেন ওই নম্বরের মালিক মাহবুবুর রহমান মোল্লা। সেখানে ভেসে ওঠা টাই পরা মোল্লা উপজেলা সমাজসেবা অফিসের ইউনিয়ন সমাজকর্মী। পরশুরাম সমাজসেবা অফিসের বিরুদ্ধে প্রতারণার এমন অসংখ্য অভিযোগ উঠেছে।

অফিসে পাশাপাশি বসেন স্বামী-স্ত্রী, আর্থিক অনিয়মের শত অভিযোগ।উপজেলা সমাজসেবা অফিসে অনিয়ম, দুর্নীতি, কারসাজি করে ভাতা আত্মসাৎ; টাকার বিনিময়ে নকল কাগজপত্র দিয়ে হতদরিদ্রদের বঞ্চিত করে স্বাবলম্বীদের ভাতাভোগী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা; বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধীদের মোবাইল নম্বর পাল্টে নিজেদের নম্বর দিয়ে দিনের পর দিন ভাতা আত্মসাৎসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। উপজেলা সমাজসেবা অফিসে কর্মরত স্বামী-স্ত্রী ও পিয়ন মিলে দীর্ঘদিন ধরে এসব অনিয়ম-দুর্নীতি করে আসছেন বলে অভিযোগ।

ভুক্তভোগী এক ব্যক্তি বলেন, গত শুক্রবার উপজেলার গুথুমার এক ব্যক্তিকে মোবাইলে ফোন দিয়ে ৫ হাজার টাকা নিয়ে গেলে ভাতার কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে সমাজসেবা অফিসে যেতে বলা হয়। হতদরিদ্র ভাতাভোগী বিষয়টি স্থানীয় মসজিদের ইমামকে অবহিত করেন। ইমাম সাহেব উপজেলায় কর্মরত একজনকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেন। সরকারি কর্মচারী ওই নম্বরে কল দিলে জানতে পারেন, তিনি সমাজসেবা অফিসের লোক।

এ বিষয়ে মির্জানগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. সাখাওয়াত হোসেন রুবেল অভিযোগ করেন, তাঁর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছালেহ আহাম্মদের স্ত্রী আমেনা আক্তার বাক্প্রতিবন্ধী হওয়ায় গত বছরের শুরুতে ভাতার জন্য আবেদন করে তালিকাভুক্ত হন। কিন্তু গত এক বছর তিনি কোনো ভাতা পাননি। এ বিষয়ে জানতে আবেদনকারী ও স্থানীয় ইউপি সদস্য রুবেল বেশ কয়েকবার অফিসে মোল্লার কাছে যান। কিন্তু মোল্লা নানা অজুহাত দেখিয়ে আমেনার নাম তালিকাভুক্ত হয়নি বলে জানান।

চলতি মাসে ভাতার জন্য আবেদন শুরু হলে আবার ইউপি সদস্য ওই আমেনা খাতুনের নামে প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য আবেদন করতে গেলে সফটওয়্যার তাঁর আবেদন গ্রহণ করেনি। বিষয়টি ইউপি সদস্য রুবেল উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কাছে গেলে তিনি অনুসন্ধান করে দেখেন, আমেনার নামে এক বছর ধরে ভাতা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাঠানো হচ্ছে। তথ্য যাচাই করে দেখেন, আমেনার নামে ভাতা বরাদ্দ হলেও ভাতা চলে যাচ্ছে অন্য নম্বরে।

ইউপি সদস্য সাখাওয়াত হোসেন রুবেল আরও অভিযোগ করেন, তিনি ১৩টি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডের জন্য আবেদন করেছেন। প্রতিটি কার্ডের জন্য মোল্লা ৫০০ টাকা করে সাড়ে ৬ হাজার টাকা তাঁর কাছ থেকে নিয়েছেন।

তিনি এই প্রতিবেদকের কাছে আরও অভিযোগ করেন, গত ৩০ আগস্ট সুবার বাজারের এক ভাতাভোগী ওয়াসিমের কাছে মোবাইলে ফোন দিয়ে স্মার্টকার্ড দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন ধরনের তথ্য ও টাকা দাবি করেন। একইভাবে মির্জানগর ইউনিয়নের ডিএম সাহেবনগর গ্রামের মনির আহাম্মদের কাছে ফোন দিয়ে তথ্য ও টাকা দাবি করা হয়।

উপজেলা সমাজসেবা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় বয়স্ক ভাতাভোগী ৪,৬৯৪ জন, বিধবা ভাতাভোগী ১,৪৪৭ জন, প্রতিবন্ধী ভাতাভোগী রয়েছেন ২,০১৯ জন। এ ছাড়া প্রতিবন্ধী উপবৃত্তি পান ৩২ জন, অনগ্রসর জনগোষ্ঠী ভাতাভোগী ৫৩ জন, অনগ্রসর জনগোষ্ঠী উপবৃত্তি পাচ্ছেন ৩১ জন।

উপজেলার তিনটি ইউপি চেয়ারম্যান ও পৌরসভার কাউন্সিলররা মৌখিকভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ করেন, ভাতাভোগীদের ভাতা তালিকাভুক্ত হলেও অফিসে মোল্লার নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট ভাতাভোগীর বিভিন্ন কৌশলে নিজেরা ভাতা তুলে আত্মসাৎ করছেন।

মির্জানগর ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুরুজ্জামান ভুট্টো অভিযোগ করেন, নম্বর পাল্টে মোল্লা কৌশলে এসব ভাতা আত্মসাৎ করছেন। ভাতাভোগীদের নম্বর, নাম-ঠিকানাসহ বিভিন্ন তথ্য একাধিকবার যাচাই করা হয়। তাই নম্বর ভুল হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

উপজেলার চিথলিয়া ইউপির চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন বলেন, মাহবুবুর রহমান মোল্লা তাঁর স্ত্রী সায়েরা খাতুন ও অফিস সহায়ক নবী হোসেনের সহযোগিতায় ভাগাভোগীদের মোবাইল নম্বর পাল্টে তাঁদের ভাতা নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁরা তিনজন মিলে অফিসে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে অফিস সহায়ক মো. নবী হোসেন বলেন, ‘ভাতাভোগীদের সব তথ্য উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কাছে থাকে। এ বিষয়ে আমাদের কিছু করার সুযোগ থাকে না। অনিয়ম করলে সেটা কর্মকর্তা করতে পারেন। আমি একসময় সমাজসেবা প্রধান কার্যালয়ে ছিলাম। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তকালীন আমি অনেক সহযোগিতা করেছি।’

কারিগরি প্রশিক্ষক সায়েরা খাতুন বলেন, ‘অফিসে জনবল সংকটের কারণে কর্মকর্তার নির্দেশে উপজেলা অফিসে কাজ করছি। কারও কাজ থেকে কোনো টাকাপয়সা নেইনি। ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানরা লোক পাঠালে আমি তো তাঁদের সহযোগিতা করি। কিন্তু কখনো টাকা চাইনি। কিন্তু কেন তারা আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন সেটা বুঝতেছি না।’

কাজল আক্তারের কাছে টাকা চাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মাহবুবুর রহমান মোল্লা এই প্রতিবেদককে বলেন, কোনো প্রতারক চক্র তাঁর ছবি ব্যবহার করে তাঁর নামে মোবাইল সিম কিনে লোকজনের কাছে টাকা দাবি করছেন। তিনি কাজল আক্তারের কাছে টাকা দাবি করেননি। একইভাবে ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানদের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বলেন, তাঁর অফিসে লোকবলের সংকট রয়েছে। তবে মোল্লা, সায়েরা ও অফিস সহায়ক নবীর বিরুদ্ধে শত শত অভিযোগ রয়েছে। বিষয়গুলো তিনি জেলা কর্মকর্তাকে অবহিত করেছেন। তা ছাড়া সতর্ক করার পরও ভাতাভোগীরা মোল্লার সঙ্গে টাকাপয়সা লেনদেন করেন। তিনি জানতে চাইলে অস্বীকার করেন। তারপরও টাকাপয়সা নেওয়ার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফরোজা হাবিব শাপলা আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগের বিষয়টি তিনি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে দেখবেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ত্রিশালের এমপি হতে চান ভিক্ষুক আবুল মুনসুর, জমা দিলেন মনোনয়নপত্র

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন আবুল মুনসুর ফকির। ছবি: আজকের পত্রিকা
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন আবুল মুনসুর ফকির। ছবি: আজকের পত্রিকা

জীবন কেটেছে অভাব-অনটনে। নেই কোনো ঘরবাড়ি। পথেঘাটে ভিক্ষা করে দুমুঠো ভাতের জোগান দেন তিনি। তবুও স্বপ্ন দেখেন, জনপ্রতিনিধি হয়ে একদিন জাতীয় সংসদে যাবেন। সেখানে বড় বড় নেতাদের সামনে তাঁর মতো দুঃখী-দরিদ্র মানুষের কষ্টের কথা তুলে ধরবেন তিনি। এই স্বপ্নপূরণের আশায় আজ সোমবার ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসন থেকে এমপি প্রার্থী হতে মনোনয়ন দাখিল করেছেন তিনি।

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার বৈলর ইউনিয়নের মঠবাড়ী গ্রামের এই ভিক্ষুক হলেন আবুল মুনসুর ফকির। আসন্ন ২০২৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। ভিক্ষুক হয়েও তাঁর সংসদ সদস্য হওয়ার প্রচেষ্টা স্থানীয়ভাবে ব্যাপক কৌতূহল, আলোচনা ও মিশ্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে।

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ত্রিশাল উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিনে আজ আবুল মুনসুর ফকির স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তাঁর মনোনয়নপত্র জমা দেন।

স্থানীয়রা জানায়, আবুল মুনসুরের জনপ্রতিনিধি হওয়ার চেষ্টা নতুন নয়। এর আগেও তিনি বিভিন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করেছেন। এবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে পেয়েছিলেন ৩৭৭ ভোট। সেই ভোটকে তখন অনেকেই জনপ্রতিনিধিদের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ভোট হিসেবে ব্যাখ্যা করেছিলেন। সেই নির্বাচনে ভিক্ষুক আবুল মুনসুর ফকিরের প্রচারণার ধরন ছিল একেবারেই আলাদা। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত একাই পাড়া-মহল্লা ও হাট-বাজারে ঘুরে পোস্টার সাঁটানো, মানুষের কাছে গিয়ে সরাসরি ভোট চাওয়া—সবকিছুই করতেন নিজেই। কোনো দল, টাকা কিংবা প্রভাবশালী মহলের আশীর্বাদ না থাকলেও দমে যাননি তিনি। একাই করে গেছেন স্বপ্নপূরণের লড়াই।

অনেকেই আবুল মুনসুর ফকিরের মতো একজন ভিক্ষুকের জনপ্রতিনিধি হতে চাওয়ার চেষ্টাকে পাগলামি হিসেবে দেখেন। আবার অনেকেই এটিকে নির্বাচনে টাকার ছড়াছড়ি, কালো টাকা ও দুর্নীতির রাজনীতির বিরুদ্ধে এক ধরনের নীরব প্রতিবাদ বলে মনে করেন।

বৈলর গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব আলম বলেন, ‘কতজনকে যোগ্য মনে করে ভোট দিলাম। কিন্তু এলাকার বা সাধারণ মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন দেখিনি। অন্তত এই মানুষটা গরিবের কষ্ট জানে। এবার এই ফকিরকেই ভোট দিতে মন চায়।’

আরেকজন স্থানীয় ব্যবসায়ী বাদল শেখ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সে এমপি হবেন কিনা জানি না, কিন্তু তাঁর দাঁড়ানোটা অনেক রাজনীতিবিদের জন্য লজ্জার।’

আবুল মুনসুর ফকির বলেন, ‘আমি গরিব, আমি ভিক্ষা করি। কিন্তু দেশের নাগরিক হিসেবে আমারও ভোট দেওয়ার অধিকার আছে, নির্বাচনে দাঁড়ানোর অধিকার আছে। সংসদে গেলে গরিব মানুষের কথা বলব—এইটাই আমার স্বপ্ন।’

ত্রিশাল উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. তাজুল রায়হান বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী সব প্রার্থীর মনোনয়ন গ্রহণ করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মনোনয়ন দাখিলের মধ্য দিয়ে ত্রিশালে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক তৎপরতা ও নির্বাচনী আমেজ জোরালো হয়ে উঠেছে। তবে তাবড় তাবড় প্রার্থীদের ভিড়ে ভিক্ষুক আবুল মুনসুর ফকিরের উপস্থিতি নির্বাচনী মাঠে এনেছে এক ভিন্ন মাত্রা, যা অনেকের কাছে গণতন্ত্রের প্রকৃত সৌন্দর্যের প্রতীক হয়ে উঠেছে। এলাকাবাসী মনে করে, সময়ই বলে দেবে, ব্যালটের রায়ে আবুল মুনসুরের স্বপ্ন কত দূর এগোয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক প্রতিমন্ত্রী বাবরের আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেন তাঁর স্ত্রী

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
তাহমিনা জামান। ছবি: সংগৃহীত
তাহমিনা জামান। ছবি: সংগৃহীত

নেত্রকোনা-৪ (মদন, মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরী) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। একই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাঁর স্ত্রী তাহমিনা জামান শ্রাবণী।

আজ সোমবার বিকেলে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন লুৎফুজ্জামান বাবর। এরপর তাহমিনা জামান শ্রাবণীর পক্ষে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন বাবরের ব্যক্তিগত সহকারী মির্জা হায়দার আলী।

নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক মো. সাইফুর রহমান এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

শ্রাবণী এর আগে ২০১৮ সালে এই আসনে নির্বাচন করেন। তবে এই আসনে এবার তিনজন নারী প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। অন্য দুজন হলেন সিপিবির জলি তালুকদার ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির চম্পা রানী সরকার।

অন্য প্রার্থীরা হলেন জামায়াতে ইসলামীর মো. আল হেলাল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির জলি তালুকদার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির চম্পা রানী সরকার ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মোখলেছুর রহমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পটুয়াখালী-৩ আসনে নুর ও হাসান মামুনের মনোনয়নপত্র দাখিল

দশমিনা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি 
নুরুল হক নুর-হাসান মামুন। ফাইল ছবি
নুরুল হক নুর-হাসান মামুন। ফাইল ছবি

পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে হাসান মামুনসহ আরও দুজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

আজ সোমবার দশমিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

জানা গেছে, যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দল হিসেবে দলীয় প্রার্থী না দিয়ে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে আসনটি ছেড়ে দিয়েছে বিএনপি। তবে এই আসনটিতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা নিয়ে শক্ত অবস্থানে ছিল বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন।

গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে আসন সমঝোতা হলেও গলাচিপা-দশমিনা আসনটি ছাড়তে নারাজ বিএনপির নেতা-কর্মীরা। ২৪ ডিসেম্বর হাসান মামুনের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন গলাচিপা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান।

জানতে চাইলে হাসান মামুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, এখানের স্থানীয় বিএনপি ও সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। দল যে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবে। সেই সাংগঠনিক ব্যবস্থা আমি গ্রহণ করেই এসেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গণঅধিকার পরিষদ কোনো দলের সঙ্গে বিলীন হয়নি: নুর

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নুরুল হক নুর। ছবি: আজকের পত্রিকা
গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নুরুল হক নুর। ছবি: আজকের পত্রিকা

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, এনসিপি জামায়াতে বিলীন হয়ে যায়নি এবং গণঅধিকার পরিষদও কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিলীন হয়নি। গণঅধিকার পরিষদ একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বতন্ত্র অবস্থানেই রয়েছে।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

নুরুল হক নুর বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী যে সরকার গঠিত হবে, তা হবে একটি ঐতিহাসিক সরকার। এই সরকারই জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি আরও বলেন, ‘আমরা প্রকৃত অর্থেই নবীন ও তরুণ রাজনৈতিক শক্তি। অত্যন্ত প্রতিকূল সময়ের মধ্যে রাজনীতি করেছি। সে কারণে প্রত্যাশিতভাবে সারা দেশে সংগঠিত হতে পারিনি। এনসিপি আমাদের চেয়েও নবীন; তারাও সে অর্থে এখনো পূর্ণাঙ্গভাবে সংগঠিত হতে পারেনি।’

বিএনপির প্রসঙ্গ টেনে ভিপি নুর বলেন, ‘বিএনপির মতো একটি দল ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থেকেও টিকে ছিল এবং ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সময় ধরে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়েছে। দীর্ঘ এই লড়াইয়ের পর দলটি আবার ক্ষমতায় আসছে।’

রাজনীতিতে শর্টকাট কোনো পথ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা নিজেদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, দেশকে স্থিতিশীল রাখা এবং এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে বিএনপির বিকল্প কোনো রাজনৈতিক শক্তি নেই। বিএনপি ছাড়া অন্য কেউ ক্ষমতায় এলে রাষ্ট্র পরিচালনা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা কঠিন হবে। এতে দেশ আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মুখে পড়ে বিপর্যয়ের দিকে যেতে পারে।’

নুর আরও বলেন, ‘এ কারণেই আমাদের দলীয় কিছু ক্ষতি হলেও জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিএনপির সঙ্গে অ্যালায়েন্স করে তাদের ক্ষমতায় আনতে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা মাঠে কাজ করছি।’

এ সময় পটুয়াখালী জেলা যুবদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শিপলু খান, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ইখতিয়ার রহমান কবিরসহ গণঅধিকার পরিষদের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত