Ajker Patrika

নৌকার শাজাহান খানের সঙ্গে গোপন বৈঠক, ৩৭ শিক্ষককে অব্যাহতি

মাদারীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ২১: ৫২
নৌকার শাজাহান খানের সঙ্গে গোপন বৈঠক, ৩৭ শিক্ষককে অব্যাহতি

মাদারীপুর-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপকে জয়ী করতে শিক্ষকদের নিয়ে গোপন বৈঠক করেছেন পার্শ্ববর্তী আসনের (মাদারীপুর-২) বর্তমান এমপি শাজাহান খান। বৈঠকের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক) ছড়িয়ে পড়েছে। 

গত সোমবার তিনি নিজ বাসভবনে ওই আসনে দায়িত্বপ্রাপ্ত ৩৭ জন শিক্ষককের সঙ্গে বৈঠক করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে জয়ী করতে তাঁদের সহযোগিতা করতে অনুরোধ করেন। 

বৈঠকে এমপি শাজাহান খানের ভাই সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ওবায়দুর রহমান খানসহ কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যানরাও উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে। 

এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার মাদারীপুর-৩ (কালকিনি-ডাসার ও সদরের একাংশ) আসনে ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পাওয়া ওই ৩৭ শিক্ষককে নির্বাচনে সব ধরনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা জানায় জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়। 

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান বিষয়টি নিশ্চিত করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আচরণবিধি লঙ্ঘনের এমন একটি ভিডিও নজরে আসার পরেই তদন্ত করতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ৩৭ জন শিক্ষককে নির্বাচনী সকল কর্মকাণ্ড থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’ 

৩ মিনিট ৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা গেছে, মাদারীপুর-৩ আসনে ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পাওয়া শিক্ষকদের উদ্দেশে শাজাহান খানের ছোট ভাই অ্যাডভোকেট ওবায়দুর রহমান খান বক্তব্য দিচ্ছেন। পাশে বসা ছিলেন শাজাহান খান এমপি। 

এ সময় অ্যাডভোকেট ওবায়দুর রহমান খানকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনারা ভোটারদের উপস্থিতি, আপনার নিকটতম আত্মীয়স্বজন ভোটারদের উপস্থিতি, আপনারা যথাযথভাবে পালন করবেন। আপনারা তিন আসনের (মাদারীপুর-৩) যাঁরা আছেন এবং তিন আসনের বাইরে আছেন, তাঁদেরও নিকটতম অনেক আত্মীয়স্বজন তিনের মধ্যে আছেন। 

কারণ, তিনের (মাদারীপুর-৩) নির্বাচনটির বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সে কারণে আপনাদের ভূমিকাটা গুরুত্বপূর্ণ। আর তিনের নির্বাচনের আরেকটা গুরুত্ব হলো, আপনাদের প্রার্থী শাজাহান খান এই তিনের ব্যাপারে আমাদের প্রধানমন্ত্রী দ্বারা নির্দেশিত হয়েছেন, আমাদের তিনের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার জন্য। তিন এর প্রচার চালানোর জন্য। এ জন্য আমাদের সকলেই তিনের ওপর গুরুত্ব বেশি দিতে হবে। 

মাদারীপুর-৩ এর দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষককের সঙ্গে এমপি শাজাহান খানের বৈঠক। ছবি ভিডিও থেকে নেওয়াআপনাদেরও গুরুত্ব বেশি দিতে হবে। আপনারা সেভাবেই তিনের দায়িত্ব পালন করবেন। এর বাইরে আপনাদের সাংগঠনিক কথা বলব, রাজনৈতিক কথা, আপনারা আমার নির্বাচনের কথাটি বুঝে নিয়েছেন, আমি যা বোঝাতে চেয়েছি। তিনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আবদুস সোবহান গোলাপকে যদি নির্বাচিত করতে পারি, তাহলে দাদাই (শাজাহান খান) ও গোলাপ ভাই মিলে জেলায় রাজনৈতিকভাবে দীর্ঘদিনের জন্য একটি স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়ন করতে পারবেন। 

তিনি আরও বলেন, আল্লাহ না করুন, স্বতন্ত্র প্রার্থী যদি নির্বাচনে (বিজয়ী) হন, তাহলে তাঁর কাছে যেতেও পারব না, কিছু চাইতেও পারব না। প্রধানমন্ত্রীর কাছে বলার জন্য শাজাহান খান ও গোলাপ ভাই যেভাবে বলতে পারবেন, ওই স্বতন্ত্র প্রার্থী কি পারবেন? তাহলে সেই কাজটি আপনারা মনোযোগসহকারে করবেন। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাজাহান খান এমপির ছোট ভাই অ্যাডভোকেট ওবায়দুর রহমান খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মাদারীপুরে শিক্ষকেরা তিনটি গ্রুপে ভাগ হয়ে আছে। তাঁরা অনেক দিন ধরেই আমাকে বলছিলেন এই তিন গ্রুপকে এক করে দেওয়ার জন্য। আমি তাদের বলেছিলাম, নির্বাচন সামনে, তাই পরে করে দিই। তাঁরা এখনই এক হতে চাইলে আমি তাঁদের আসতে বলেছিলাম। পরে ওরা (শিক্ষক) আসেন।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘তারপর প্রসঙ্গক্রমে নির্বাচনের কথা উঠছে। মূলত সাংগঠনিক আলোচনাই হয়েছে। আর নির্বাচনের ব্যাপারেও কাউকে নৌকার পক্ষে ভোট চাইতে বলা হয়নি। আত্মীয়স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের ৩ আসনের (মাদারীপুর–৩) প্রতি একটু বেশি গুরুত্ব দিয়ে চাইতে বলা হয়েছে। এটা কোনো নির্বাচনী প্রচারণা না। তা ছাড়া আমি বলেছি, ১-২ আসন সহজ আছে ৩ একটু কঠিন, আপনাদের (শিক্ষক) আত্মীয়স্বজন যারা আছে, তাদের বলে দিন।’ 

এ বিষয়ে মাদারীপুর-৩ আসনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোছা. তাহমিনা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভোটারদের সঙ্গে না পেরে এবার নির্বাচনী দায়িত্ব পাওয়া শিক্ষকদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। মাদারীপুর-২ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাজাহান খান তাঁর নির্বাচনী এলাকার পছন্দের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রিসাইডিং ও পোলিং এজেন্ট করার অপচেষ্টা করছেন। যেহেতু সদর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন আমাদের মাদারীপুর-৩ আসনের মধ্যে পড়েছে। তাই সে সেখানে নিজের প্রভাব বিস্তার করে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভ্যাপ ও ই-সিগারেটে লুকানো নতুন মাদক, চক্রসহ বড় চালান জব্দ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ভয়ংকর নতুন মাদক এমডিএমবি বিক্রি চক্রের মূল হোতাসহ সব সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভয়ংকর নতুন মাদক এমডিএমবি বিক্রি চক্রের মূল হোতাসহ সব সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। ছবি: আজকের পত্রিকা

মালয়েশিয়া থেকে সংগ্রহ করে ভ্যাপ ও ই-সিগারেটের মাধ্যমে দেশে ভয়ংকর নতুন মাদক এমডিএমবি বিক্রি করছিল একটি চক্র। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) চক্রটির মূল হোতাসহ সব সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে।

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ডিএনসির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দেশে প্রথমবারের মতো এমডিএমবি’র বড় চালান জব্দের বিষয়টি তুলে ধরেন মহাপরিচালক মো. হাসান মারুফ। তিনি জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গ্রুপ খুলে গোপনে ক্রেতাদের হাতে এই মাদক পৌঁছে দেওয়া হতো।

এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন—বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র খন্দকার তৌকিরুল কবির তামিম (২৬), মেহেদী হাসান রাকিব (২৬), বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং কর্মকর্তা মো. মাসুম মাসফিকুর রহমান ওরফে সাহস (২৭) এবং সম্প্রতি ভারত থেকে পড়াশোনা শেষে দেশে ব্যবসা শুরু করা মো. আশরাফুল ইসলাম (২৫)।

সংবাদ সম্মেলনে ডিএনসির মহাপরিচালক বলেন, বিশ্বজুড়ে ই-সিগারেট ও ভ্যাপের ব্যবহার তরুণদের মধ্যে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। একসময় এসব ডিভাইসে নিকোটিন বা টোব্যাকো ব্যবহৃত হলেও এখন এর ভেতর মেশানো হচ্ছে নিউ সাইকোঅ্যাকটিভ সাবস্ট্যান্সেস (এনপিএস) ও বিভিন্ন অপিওডস।

এ ধরনের নতুন বিপজ্জনক মাদকদ্রব্যের বিস্তার ঠেকাতে আইএনসিবি ‘অপারেশন ই-ভেপোর-এইট’ নামে বৈশ্বিক নজরদারি কর্মসূচি চালু করে। এর অংশ হিসেবে ডিএনসির গোয়েন্দা দল দেশে এমডিএমবি ছড়িয়ে পড়ার সত্যতা উদ্ঘাটন করে।

তিনি জানান, ডার্ক ওয়েব, সোশ্যাল মিডিয়া ও অনলাইন মার্কেটপ্লেসে নজরদারি চালিয়ে প্রথমে এমডিএমবির অস্তিত্ব শনাক্ত করা হয়। খুচরা বিক্রেতা হিসেবে চিহ্নিত তামিমকে নজরদারির পর গত বুধবার (১০ ডিসেম্বর) মিরপুর পল্লবী থেকে ২০ মিলিলিটার এমডিএমবিসহ গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট বিশ্লেষণ করে মেহেদী হাসান রাকিবকে মিরপুর থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়।

রাকিবের জবানবন্দিতে মালয়েশিয়া থেকে মাদক আনার হোতা আশরাফ ও তার সহযোগী সাহসের নাম উঠে আসে। পরে অভিযানে চক্রের এই দুই প্রধানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ৩১০ মিলিলিটারের পাঁচটি কন্টেইনারে এমডিএমবি পিনাকা উদ্ধার করা হয়।

ডিএনসির মহাপরিচালক জানান, আশরাফ দীর্ঘদিন ধরে সমাজের একটি নির্দিষ্ট শ্রেণির মধ্যে এই মাদক সরবরাহ করছিল। ই-সিগারেট ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে ‘গোপন বাজার’ তৈরি করেছিল তারা। ফেসবুকের ক্লোজড গ্রুপ, রিভিউ পেজ ও ভুয়া অ্যাকাউন্টে সংকেতভিত্তিক পোস্টের মাধ্যমে ক্রেতা সংগ্রহ করা হতো। আগ্রহী ক্রেতাকে নিয়ে যাওয়া হতো হোয়াটসঅ্যাপের এনক্রিপটেড চ্যাটে। যেখানে কোডওয়ার্ডে দাম ঠিক করা হতো। ইমোজি, লোকেশন শেয়ার ও লাইভ ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে সরবরাহ সম্পন্ন হতো। সোশ্যাল মিডিয়ার আড়ালে তারা পুরো লেনদেনকে ‘নিরাপদ, দ্রুত ও অদৃশ্য’ রাখত।

এমডিএমবির ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, ভ্যাপ ও ই-সিগারেট কার্টিজে মেশানো এই তরল সিনথেটিক মাদক কয়েক ফোটাই মানুষের স্নায়ুতন্ত্র বিপর্যস্ত করতে পারে। এটি দ্রুত নেশায় আচ্ছন্ন করে, হ্যালুসিনেশন (মতিভ্রম), আক্রমণাত্মক আচরণ, হৃৎস্পন্দন অস্বাভাবিক হওয়া এবং অন্যান্য মারাত্মক শারীরিক ঝুঁকি তৈরি করে।

অভিযানে মোট ৩৪০ মিলিলিটার এমডিএমবি, গাঁজার চকলেট, এমডিএমবি গ্রহণে ব্যবহৃত ভ্যাপ ডিভাইস, ই-লিকুইড এবং বিক্রির জন্য প্রস্তুত খালি ক্যানিস্টার উদ্ধার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আদালত থেকে পালানো আসামি গ্রেপ্তার, ৭ পুলিশ প্রত্যাহার

বগুড়া প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ২৩
গ্রেপ্তার শাহীন। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার শাহীন। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ায় আদালত থেকে পালিয়ে যাওয়া আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ ঘটনায় আদালতে দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগে সাত পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। আজ শুক্রবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদালত পুলিশের পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজতখানা থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রিজন ভ্যানে ওঠানোর সময় কৌশলে হাতকড়া খুলে পালিয়ে যান শাহীন ওরফে মিরপুর (১৯) নামের এক আসামি। তিনি বগুড়া শহরতলির সাবগ্রাম (চানপুর) গ্রামের নুর আলমের ছেলে।

পুলিশ জানায়, গত বুধবার রাত ৮টার দিকে শহরের থানা রোডে পকেট মারার সময় লোকজন শাহীনকে আটকে মারধর করেন। খবর পেয়ে সদর থানার পুলিশ তাঁকে হেফাজতে নেয়। ভুক্তভোগীদের কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ না দেওয়ায় সদর থানা-পুলিশ গতকাল শাহীনকে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর শাহীনকে আদালত হাজতখানায় রাখা হয়। সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে হাজতখানা থেকে প্রিজন ভ্যানে ওঠানোর সময় কৌশলে হাতকড়া খুলে পুলিশের সামনেই দৌড়ে পালিয়ে যান শাহীন।

এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে আদালতে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে হাজতখানার দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) ইব্রাহীম হোসেন, সহকারী টাউন উপপরিদর্শক (এটিএসআই) মাসুদ রানা, জাহাঙ্গীর আলম, জাহাঙ্গীর হোসেন, কনস্টেবল আব্দুল জলিল, শহীন মিয়া ও গোলাম মোস্তফাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ইনচার্জ ইকবাল বাহার জানান, গতকাল রাত ১১টার দিকে শহরতলির সাবগ্রাম এলাকা থেকে শাহীনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভুট্টাখেতে অটোরিকশাচালকের গলাকাটা লাশ

হোমনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
নিহত ব্যক্তির স্বজনদের আহাজারি। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিহত ব্যক্তির স্বজনদের আহাজারি। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লার হোমনায় শান্ত দাস (২২) নামের এক অটোরিকশাচালকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার সকালে হোমনা পৌর এলাকার কারারকান্দি-বাহেরখোলা সড়কের পাশের একটি ভুট্টাখেত থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত শান্ত দাস হোমনা উপজেলার বিজয়নগর গ্রামের অরুণ চন্দ্র দাসের ছেলে।

নিহত শান্তর বাবা অরুণ চন্দ্র দাস জানান, শান্ত দাস গতকাল বৃহস্পতিবার অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। রাতে তিনি বাড়ি যাননি। আজ সকালে ভুট্টাখেতে তাঁর লাশ দেখতে পেয়ে লোকজন খবর দেন। তাঁর ধারণা, ছেলের অটোরিকশা ছিনতাই করতে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।

হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশেদুল আলম চৌধুরী বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কালিয়াকৈরে যুবককে গাছে বেঁধে হাতুড়িপেটা, আটক ১

কালিয়াকৈর (গাজীপুর) সংবাদদাতা
যুবককে গাছে বেঁধে মারধর। ছবি: সংগৃহীত
যুবককে গাছে বেঁধে মারধর। ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের কালিয়াকৈরের ট্রাকস্ট্যান্ড এলাকায় এক যুবককে গাছের সঙ্গে বেঁধে হাতুড়ি দিয়ে বর্বরোচিত নির্যাতনের ঘটনায় কুরবান আলী নামের এক মোটর মেকানিককে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় টান কালিয়াকৈর এলাকা থেকে তাঁকে আটক করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে আটক ব্যক্তিকে আজ শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে গাজীপুর জেলহাজতে পাঠানো হবে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, দিনদুপুরে ওই যুবককে হাতুড়ি দিয়ে পেটানো হচ্ছে। তবে হাতুড়িপেটার শিকার ওই যুবকের নাম-ঠিকানা জানা যায়নি।

অভিযুক্ত ব্যক্তি দিনাজপুর সদর উপজেলার বিশ্বনাথপুর এলাকার আব্দুল মালেকের ছেলে কুরবান আলী (৩২)। প্রায় ১৫ বছর আগে তিনি কালিয়াকৈরের চাপাইর এলাকায় বিয়ে করে বসবাস শুরু করেন। তিনি একটি বাসের মালিক বলেও জানা গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাতে জানা গেছে, গত বুধবার ট্রাকস্ট্যান্ড এলাকায় একটি নারকেলগাছের সঙ্গে যুবকটিকে ‘চোর’ বলে বেঁধে রাখা হয়। এরপর হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় ২৫ থেকে ৩৫ মিনিট তাঁকে একইভাবে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। এ সময় আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকা অসংখ্য মানুষ মোবাইলে ছবি ও ভিডিও তুললেও কেউ তাঁকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেনি। পরে আহত যুবককে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়, কিন্তু এর পর থেকে তাঁকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার নাসির উদ্দিন বলেন, হাতুড়িপেটার ঘটনায় আহত যুবকের পরিচয় পাওয়া যায়নি। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। তাঁকে আদালতের মাধ্যমে আজ গাজীপুর জেলহাজতে পাঠানো হবে।

কুরবান আলীর কাছ থেকে পাওয়া প্রাথমিক তথ্যের বরাতে ওসি বলেন, কুরবান আলীর একটি বাস রাজধানী পরিবহন কোম্পানির অধীনে চলাচল করে। গাড়িটির মূল চালক কিছুদিন আগে হাতুড়িপেটার শিকার ওই যুবককে বদলি হিসেবে চালাতে দিয়েছিলেন। এই সুযোগে তিনি ঢাকার মিরপুরে নিয়ে বাসটি বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে মূল চালক সেটি উদ্ধার করে মালিককে বুঝিয়ে দেন। বদলি চালক গতকাল এলাকায় গেলে তাঁকে বেঁধে হাতুড়ি দিয়ে পেটান কুরবান আলী। মারধরের শিকার যুবকের বাড়ি উত্তরবঙ্গে। তবে মূল ভুক্তভোগীকে পেলে এর সত্যতা জানা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত