Ajker Patrika

শিশুকন্যাকে মায়ের কোল থেকে কেড়ে নিয়ে দেড় লাখে বিক্রি করলেন বাবা

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ মে ২০২৫, ১৭: ৪০
মা-বাবা ও কন্যাশিশু। ছবি: সংগৃহীত
মা-বাবা ও কন্যাশিশু। ছবি: সংগৃহীত

পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে নির্যাতন করে মৌখিকভাবে ডিভোর্স দেওয়ার পর আট মাস বয়সী শিশুকন্যাকে ছিনিয়ে নিয়ে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে। ঘটনার পর মা পপি বেগম থানা-পুলিশ থেকে শুরু করে আদালতে গিয়েছেন বাচ্চাকে ফিরে পেতে। আদালত প্রতিবেদন ও শিশুটিকে খুঁজে পেতে থানা-পুলিশকে নির্দেশ করলেও খুঁজে পাচ্ছেন না পুলিশ জানিয়েছেন।

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ফুলসুতি ইউনিয়নের রামপাশা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ফরিদপুর বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন শিশুর মা পপি বেগম। ওই মামলায় স্বামী কাইয়ুম বিশ্বাস (৪০), তাঁর তিন বোন মিতা আক্তার, বুলি বেগম, সাগরী আক্তারসহ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করেছেন।

জানা গেছে, তিন বছর আগে মুকসুদপুর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের হান্নান সরদারের মেয়ে পপি বেগমের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী নগরকান্দা উপজেলার ফুলসুতি ইউনিয়নের রামপাশা গ্রামের মানিক বিশ্বাসের ছেলে কাইয়ুম বিশ্বাসের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত। এর মাঝে তাঁদের একটি মেয়েশিশুর জন্ম হয়। পরবর্তীকালে গত পাঁচ মাস আগে কলহের জের ধরে তালাক হয়।

ভুক্তভোগী পপি বেগম জানান, তালাকের সময় জোর করে তাঁর শিশু তানহাকে রেখে দেয়। পরে তাঁর স্বামী ওই শিশুকে একই উপজেলার শাখরাইল গ্রামের কুবাদ শেখের মেয়ে কোহিনুর বেগমের কাছে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করেন। আর এই বিক্রির মধ্যস্থতা করেন নগরকান্দার দলিল লেখক আলমগীর তালুকদার।

পপি বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার বাঁচ্চাডারে দেখবার জন্য রাতে ঘুম হয় না, খাবার পারি না। আমার কলিজাডা শুকায় গেছে। যার কাছে বাঁচ্চা বিক্রি করা হয়েছে তাঁর মায়ের পা পর্যন্ত জড়ায় ধরছি, তবুও দেখতে দেন নাই। ওরা বলছে—আমরা দেড় লাখ টাকা দিয়ে কিনেছি, যে বিক্রি করছে তার কাছে যাও।’

ঘটনাটি নিয়ে কাইয়ুম বিশ্বাসের বোন মিতা আক্তারের মোবাইলে কল করলে অপর একজন রিসিভ করে মিতার স্বামী পরিচয় দেন এবং ব্যস্ত আছেন বলে কেটে দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ সফর আলী বলেন, ‘আদালত আমাদের কাছে প্রতিবেদন চেয়েছে, সে অনুযায়ী কাজ চলছে। কিন্তু অভিযোগে বাচ্চাটি বিক্রির যে ঠিকানা দেওয়া হয়েছে, সেখানে খুঁজে পাওয়া যায়নি। শিশুটিকে খুঁজে পেলে আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মা অথবা বাবার কাছে পাঠিয়ে দেবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...