Ajker Patrika

হাজারীবাগ: ট্যানারি উঠে গেলেও দুর্গন্ধ–দূষণ থেকে মুক্তি মেলেনি

  • রাসায়নিকের উৎকট গন্ধ আর ট্যানারি বর্জ্যে অতিষ্ঠ জনজীবন
  • হাজারীবাগ খাল হয়ে বুড়িগঙ্গায় গিয়ে মিশছে এসব বর্জ্য
  • ২৫০টি কারখানার মধ্যে হেমায়েতপুরে ১৬২টিকে প্লট দেওয়া হয়েছে
সাইফুল মাসুম, ঢাকা
রাজধানীর হাজারীবাগের গজমহল এলাকার বালুর মাঠে গরু-ছাগলের চামড়া শুকানোর কাজে ব্যস্ত কয়েকজন (বাঁয়ে)। হাজারীবাগে গড়ে ওঠা বিভিন্ন ট্যানারি থেকে নিঃসৃত বর্জ্য হাজারীবাগ খালে মিশছে। এতে খালের পানি কুচকুচে কালো রং ধারণ করেছে। ছবি দুটি সম্প্রতি তোলা। আজকের পত্রিকা
রাজধানীর হাজারীবাগের গজমহল এলাকার বালুর মাঠে গরু-ছাগলের চামড়া শুকানোর কাজে ব্যস্ত কয়েকজন (বাঁয়ে)। হাজারীবাগে গড়ে ওঠা বিভিন্ন ট্যানারি থেকে নিঃসৃত বর্জ্য হাজারীবাগ খালে মিশছে। এতে খালের পানি কুচকুচে কালো রং ধারণ করেছে। ছবি দুটি সম্প্রতি তোলা। আজকের পত্রিকা

রাজধানীর হাজারীবাগের ট্যানারিগুলোকে সাভারের হেমায়েতপুরের চামড়া শিল্পনগরে স্থানান্তর করা হয়েছে প্রায় সাত বছর আগে। কিন্তু ট্যানারির দূষণ এখনো রয়ে গেছে হাজারীবাগে। ওই এলাকায় চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে ব্যবহৃত রাসায়নিকের উৎকট গন্ধ আর খালে প্রবাহিত ট্যানারি বর্জ্য জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে।

তবে ট্যানারিসংশ্লিষ্টদের দাবি, কাঁচা চামড়ার সব কাজ হেমায়েতপুরে হয়, বাকি ফিনিশিং হয় হাজারীবাগে। ফলে দূষণ হয় খুবই সামান্য।

৫ নভেম্বর হাজারীবাগের গজমহল এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, সেখানে চামড়াসংশ্লিষ্ট কয়েক শ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। ওই এলাকার বালুর মাঠ নামক স্থানে শুকানো হচ্ছে গরু ও ছাগলের চামড়া। কিছু চামড়ায় রাসায়নিক স্প্রে করা হচ্ছে। ‘জিয়া লেদার্স’ নামের পাশের একটি কারখানায় ঘূর্ণমান একটি বড় ড্রামে কেমিক্যালের পানিতে চামড়া প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছিল। সেই ড্রাম ছুঁয়ে কালো পানি পড়ছে ড্রেনে।

তবে কথা হলে জিয়া লেদার্সের প্রতিনিধি সেলিম আহমেদ বলেন, ‘এখানে শুকনো কাম, ভেজা কাম হয় না।’ ড্রামের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ড্রামে চামড়া নরম করে পরে রোদে শুকাই।’

বালুর মাঠে গরুর শুকনো চামড়ায় রং লাগাচ্ছিলেন ট্যানারিশ্রমিক মোহাম্মদ সাইদ। তিনি বলেন, ‘চামড়ার মূল প্রসেসিং হেমায়েতপুরে হয়। এখানে শুধু ফিনিশিং করে। কাজ শেষে বংশাল-সিদ্দিকবাজারে বিক্রি হয়।’

৩০ বছর ধরে চামড়া ব্যবসার সঙ্গে জড়িত মোখলেসুর রহমান। তিনি বলেন, ‘হাজারীবাগে এখন শুকনো চামড়ার কাজ হয়। তবে জরুরি দরকার হলে কিছু ট্যানারি হালকা (কাঁচা চামড়া) কাজ করে। এতে সামান্য বর্জ্য হতে পারে।’

সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্জ্য হাজারীবাগ খাল হয়ে রায়েরবাজার বেড়িবাঁধসংলগ্ন স্লুইসগেট দিয়ে বুড়িগঙ্গায় পড়ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাজারীবাগে চামড়াশিল্পের যাত্রা শুরু হয় ১৯৬০ সালে। সেখানে ২৫ হেক্টর জায়গাজুড়ে ২৫০ থেকে ২৬০টি ছোট-বড় ট্যানারি গড়ে উঠেছিল। এসব কারখানার বড় অংশ গড়ে ওঠে অপরিকল্পিতভাবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কারখানাগুলোতে বিজ্ঞানসম্মত কোনো ব্যবস্থা ছিল না। ফলে ভয়াবহ পরিবেশদূষণের কবলে পড়ে হাজারীবাগ এলাকাসহ পাশের বুড়িগঙ্গা নদী। পরে ২০০১ সালে দেওয়া আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, ২০০৩ সালে সাভারের হেমায়েতপুরে ১৯৯ একর জমির ওপর চামড়া শিল্পনগর প্রকল্প গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৮ এপ্রিল হাজারীবাগের ট্যানারিপল্লিকে হেমায়েতপুরে স্থানান্তর করা হয়।

পরিবেশবাদী সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরার (ধরা) সদস্যসচিব শরীফ জামিল আজকের পত্রিকাকে বলেন, হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি সরানোর পরিকল্পনার প্রায় ১৪ বছর পর স্থানান্তর করা হয়েছে। ২৫০টি ট্যানারির মধ্যে হেমায়েতপুরে ১৬২টিকে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সব ট্যানারির জায়গা সেখানে হয়নি। ফলে হাজারীবাগে ট্যানারিসংশ্লিষ্ট অনেক কার্যক্রম এখনো হয়, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। শরীফ জামিল আরও বলেন, পরিবেশদূষণ বন্ধ করতে ট্যানারি নিয়ে রোডম্যাপ করতে হবে। সমন্বিতভাবে চামড়াজাত সব শিল্পকে একটি জায়গায় সরিয়ে নিতে হবে।

হাজারীবাগ এলাকায় নিয়মিত যাতায়াত রয়েছে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা মো. মানিকের। তিনি জানান, যখন সব ট্যানারি ছিল, তখন দুর্গন্ধে ওই এলাকায় যাওয়া যেত না। এখনো ওই এলাকায় উৎকট দুর্গন্ধ রয়েছে।

তবে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, ‘হাজারীবাগে এখন কাঁচা চামড়ার কোনো কার্যক্রম নেই। চামড়াজাত শিল্পের কিছু কারখানা রয়েছে।’ কেমিক্যাল দিয়ে চামড়া প্রক্রিয়াজাত করার কোনো কার্যক্রমের বিষয়ে তাঁর জানা নেই বলে দাবি করেন।

হাজারীবাগের ট্যানারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের আওতায় পড়েছে। জানতে চাইলে ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাছিম আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ট্যানারি এলাকার বর্জ্য অপসারণের দায়িত্ব শিল্প মন্ত্রণালয়ের। আমরা শুধু কোরবানির সময় চামড়ার বর্জ্য অপসারণ করি। হাজারীবাগে শুকনো চামড়ার কাজ হয়, তা জানা ছিল না। এমন হয়ে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়কে অবহিত করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার

নরসিংদী প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীর বেলাব উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে আব্দুর রশিদ (৪০) নামের এক অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর তীর থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

আব্দুর রশিদ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের দক্ষিণ লোহাজুরী গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি ছিলেন অটোরিকশাচালক; তবে নিয়মিত আড়িয়াল খাঁ নদে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করা ছিল তাঁর নেশা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৬টার দিকে ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর পাড়ে রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। লাশের পাশেই মোবাইল ফোন ও অটোরিকশাটি ছিল। পরে স্বজনেরা এসে লাশ শনাক্ত করেন। আব্দুর রশিদের মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, তিনি দুষ্কৃতকারীর হামলার শিকার হয়েছেন।

নিহত ব্যক্তির ভাই কাজল মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১১-১২টা পর্যন্ত অটোরিকশা চালিয়ে তারপর নদীর পাড়ে বসে মাছ শিকার করে বাড়ি ফিরত ভাই। কিন্তু গতকাল রাতে আর বাড়ি ফেরেনি। সকালে খবর পেয়ে নদীর পাড়ে এসে ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পাই।’

নিহত ব্যক্তির ছেলে হৃদয় বলেন, ‘রাতে বাড়ি না ফেরায় কল দিলে ফোন বন্ধ পাই। সকালে খবর শুনে নদীর পাড়ে এসে বাবার মরদেহ, মোবাইল ও অটোরিকশা পড়ে থাকতে দেখি।’

বেলাব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাসির উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়টি পিবিআইকে জানানো হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৬৭ বছর পর রামেক হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

অবশেষে ৬৮ বছরে পা দিতে চলা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ মনোরোগ ওয়ার্ড চালু হলো। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানসিক রোগী চিকিৎসা নিতে এলেও ভর্তির সুযোগ ছিল না। গুরুতর রোগীদের কিছু ক্ষেত্রে মেডিসিন বিভাগে রাখা হলেও, পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ডের অভাবে এতদিন অনেককেই ফিরিয়ে দিতে হতো।

হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ৬৭ বছর পর এই প্রথম ২৫ শয্যার একটি সুসজ্জিত মনোরোগ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটির পুরাতন আইসিইউ ভবনে এই নতুন ওয়ার্ডটি গড়ে তোলা হয়েছে।

এই ওয়ার্ডে রোগী ভর্তির জন্য নির্দিষ্ট বিন্যাস রাখা হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষদের জন্য ১০টি, নারীদের জন্য ৭ টি, শিশু-কিশোরদের জন্য ৫টি এবং উচ্চ পর্যবেক্ষণের জন্য ৩টি শয্যা সংরক্ষিত রয়েছে। এ ছাড়া রোগীদের চিকিৎসার সুবিধার জন্য থেরাপি ও কাউন্সেলিং রুমসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওয়ার্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মোস্তফা আলী।

এই ওয়ার্ডটি চালুর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ ছিল কলেজের স্বীকৃতি বজায় রাখা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী মার্চ মাসেই ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন (ডব্লিউএফএমই) থেকে একটি প্রতিনিধি দল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনে আসবে। পরিদর্শনকালে মনোরোগ বিভাগের ওয়ার্ড না পেলে কলেজের পয়েন্ট কমে যাওয়ার এবং অ্যাক্রিডিটেশনে বড় ধরনের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এতে করে এই কলেজের শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা বা পড়াশোনা করার সুযোগ কমে যেত। এ ছাড়া এফসিপিএস এবং ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্যও এমন একটি ওয়ার্ড জরুরি ছিল।

কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুরোধ শুনে সদ্যবিদায়ী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ দ্রুত এই ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নেন এবং গত বুধবার এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের সময় তাঁর সঙ্গে নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামসহ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় এই হাসপাতালে যে ৬৭ বছরেও মানসিক রোগীদের জন্য ওয়ার্ড চালু হয়নি, এটি সত্যিই অবাক হওয়ার মতো বিষয়। আমরা প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চালু করেছি। এখন থেকে এ অঞ্চলের মানসিক রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি থেকেও উন্নত চিকিৎসা নিতে পারবেন।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি রামেক হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর উদ্যোগেগত ২৩ অক্টোবর শুধু সাপে কাটা রোগীদের জন্য বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করা হয়।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে একজনও সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু হয়নি, যেখানে আগে প্রায় প্রতিদিনই এই রোগে মৃত্যুর ঘটনা ঘটতো। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজমিস্ত্রির বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাঁদপুরে নতুন ভোটারদের নিয়ে ‘নির্বাচনী অলিম্পিয়াড’

চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে নির্বাচনী অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে নির্বাচনী অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘গণতন্ত্র শক্তিশালীকরণ’ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে চাঁদপুরে শতাধিক নতুন ভোটারের অংশগ্রহণে ‘নির্বাচনী অলিম্পিয়াড’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের আয়োজনে এবং সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চাঁদপুর জেলা কমিটির সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি হয়।

আজ সকাল সাড়ে ৯টায় চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও বেলুন উড়িয়ে নির্বাচনী অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান মিয়া। নতুন ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এই অংশগ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচনী আচরণবিধি, গণতন্ত্রের মূল্যবোধ, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, সুশাসন ইত্যাদি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ হয়েছে। সুজনের সহযোগিতায় এই আয়োজন অবশ্যই অংশগ্রহণকারীদের অনেক সমৃদ্ধ করবে এবং সচেতন নাগরিক তৈরি হবে।’

পরে কলেজের অডিটরিয়ামে ৫০টি এমসিকিউ পদ্ধতির প্রশ্নের মাধ্যমে ৩০ মিনিটের পরীক্ষা হয়। অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত ১০ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তাঁদের মধ্য থেকে প্রথম থেকে তৃতীয় স্থান অর্জনকারী তিনজন জাতীয় নির্বাচনী অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাবেন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের সনদ দেওয়া হয়।

পরীক্ষা শেষে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য ও বিজয়ীদের হাতে সনদ তুলে দেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. নাজমুল ইসলাম সরকার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সুজন চাঁদপুরের সভাপতি অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন। সঞ্চালনায় ছিলেন সুজনের আঞ্চলিক সমন্বয়ক নাছির উদ্দিন।

সুজন চাঁদপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রহিব বাদশা, শিক্ষক ওমর ফারুক, সংগঠক সালাউদ্দিন, কর আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল ফারুক, সাংবাদিক আলম পলাশ, জাকির হোসেন, শোভন আল-ইমরান, মোরশেদ আলম রোকন, মো. মাসুদ আলম, শরীফুল ইসলামসহ সুজন জেলা কমিটির সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত