Ajker Patrika

নিবু নিবু দশায় শিশু-কিশোরদের সংগঠন

  • শিশুদের নিয়ে ভাবার মানুষ ও প্রতিষ্ঠান—দুটোই কমেছে
  • অর্থের মোহ ও ডিজিটাল জীবনে ব্যস্ত অভিভাবক
  • সরকার ও প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতা কমে গেছে
  • সাংস্কৃতিক কার্যক্রমবিরোধী পরিবেশও বাধা
শরীফ নাসরুল্লাহ, ঢাকা
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ১৮
‘কঁচি-কাঁচার মেলা’র চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত খুদে আঁকিয়েরা। ছবি: সংগৃহীত
‘কঁচি-কাঁচার মেলা’র চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত খুদে আঁকিয়েরা। ছবি: সংগৃহীত

খেলার মাঠ উধাও। কার্যত বিলুপ্ত পাড়াভিত্তিক পাঠাগার সংস্কৃতি। স্কুলের সীমিত পরিসর ছাড়া সাংস্কৃতিক আয়োজনও তেমন নেই। এই পরিবেশে মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে চোখ রেখে বেড়ে উঠছে শহুরে নতুন প্রজন্ম। শহরতলি বা গ্রামের পরিবেশও সে পথের দিকেই ছুটছে।

কয়েক দশক ধরে শিশু-কিশোরদের মানস গঠনে বড় ভূমিকা রেখে এসেছিল বিভিন্ন সংগঠন। সংস্কৃতির পাশাপাশি খেলাধুলার চর্চার মধ্য দিয়ে সুস্থ শরীর ও মন তৈরির কার্যক্রম ছিল তাদের। এগুলোর বেশির ভাগ এখন চলছে ধুঁকে ধুঁকে। পর্যবেক্ষকেরা বলেন, সংগঠনগুলোর কার্যক্রমের কথা দূরে থাক, তাদের নামও এ প্রজন্মের কয়জন অভিভাবকের জানা আছে, তা গবেষণার বিষয় হতে পারে। পর্যবেক্ষকদের মতে, সমাজের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাবও প্রতিনিয়ত প্রকাশ পাচ্ছে নানাভাবে।

শিশু-কিশোরদের নিয়ে কাজ করা সংগঠকেরা এই পরিস্থিতির নানা কারণ উল্লেখ করেছেন। তাঁদের মতে, শিশুদের নিয়ে ভাববার মানুষ ও প্রতিষ্ঠান—দুই-ই কমছে। পরিবার থেকে সন্তানের মানস গঠন ও সামাজিকীকরণের কাজ যথাযথভাবে হচ্ছে না। জীবনযাপনের চাপ, স্মার্টফোনসহ ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রভাব এর জন্য অনেকটা দায়ী।

দেশের অন্যতম প্রধান শিশু-কিশোর সংগঠন কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলার সভাপতি ও সাবেক সচিব খোন্দকার মো. আসাদুজ্জামানের সঙ্গে আলাপচারিতা হয় এ নিয়ে। আলাপে উঠে আসে শিশু সংগঠনগুলোর বর্তমান অবস্থা এবং সমাজজীবনের রূঢ় বাস্তবতা। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তি ছিল আশীর্বাদ। কিন্তু তার অপব্যবহার সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। কয়জন বাবা-মা আলাদা করে শিশুদের সময় দেন? বেশির ভাগ পেশা-সংসারের কাজের বাইরে যতটুকু সময় পান, তা মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কাটান। সন্তানের মানস গঠনে সংগঠন চর্চা কিংবা পাঠ্যবইয়ের বাইরের কার্যক্রমের গুরুত্ব কতটা, তা অনেক বাবা-মা জানেন না।’

কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলার যাত্রা শুরু হয় ১৯৫৬ সালে। উদ্যোক্তাদের মধ্যে ছিলেন কবি সুফিয়া কামাল, বিজ্ঞানী, লেখক আবদুল্লাহ আল-মুতী শরফুদ্দীনসহ তখনকার বিশিষ্টজনেরা। দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় এর বছর দেড়েক আগে চালু হয়েছিল ছোটদের বিভাগ ‘কচি-কাঁচার আসর’। এই শিশুদের পাতাকে কেন্দ্র করে সংগঠনটির জন্ম হয়। প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির দায়িত্ব পান সাংবাদিক ছড়াকার রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই। ‘কচি-কাঁচার আসর’ পাতার সম্পাদক ছিলেন তিনিই। ধীরে ধীরে এই সংগঠন মহিরুহে পরিণত হয়। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, কবি জসীমউদ্‌দীন, অধ্যাপক অজিত কুমার গুহ, শিল্পী কামরুল হাসান, সওগাত সম্পাদক মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন, ড. কুদরাত-এ-খুদাসহ সমাজের নিজ নিজ ক্ষেত্রের খ্যাতিমান মানুষেরা যুক্ত হন এই সংগঠনের সঙ্গে। দাদাভাই নিজে একবার লিখেছিলেন, সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল, ‘এর সদস্যদের এই সংগঠনের মাধ্যমে প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনা ও দেশাত্মবোধে উদ্ধুদ্ধ করা।’

এর কয়েক বছর আগে দৈনিক সংবাদের শিশুদের পাতা ‘খেলাঘর’ থেকে জন্ম হয়েছিল আরেকটি বড় ও সফল শিশু সংগঠনের। কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর নামে সংগঠনটির যাত্রা শুরু ১৯৫২ সালে। এর পরিকল্পনাকারীরা ছিলেন শহীদুল্লা কায়সার, সত্যেন সেন, রণেশ দাসগুপ্ত, জহির রায়হানদের মতো স্বনামধন্য ব্যক্তিত্ব।

ক্রমে দেশজুড়ে শাখা ও কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়ে শিশু সংগঠন দুটির। দেশের শিশু-কিশোরদের মেধা ও মনন গঠনে বিশাল অবদান রাখেন এদের সঙ্গে যুক্ত বিশিষ্টজনেরা। কিন্তু সাত দশকের পথচলার পর সংগঠনগুলোর সেই কার্যক্রম এখন অনেকটাই ম্রিয়মাণ। বদলে যাওয়া সামাজিক প্রেক্ষাপট, অর্থনৈতিক সক্ষমতার ঘাটতি এবং রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে কেন্দ্রীয় কঁচি-কাচার মেলা, খেলাঘরসহ সব সংগঠনই কমবেশি সংকটে। এসব সংগঠনে সবাই স্বেচ্ছাসেবী। কেউ কোনো আর্থিক সুবিধা নেন না। কিন্তু বিনা লাভে দেশজাতির সেবা করার মানুষ এ সমাজে কমে এসেছে। খোন্দকার মো. আসাদুজ্জামানের ভাষায়, ‘এখন কেউ যেকোনো কাজ করতে গেলে আগে ভাবে, এখান থেকে তার প্রাপ্তি কী? নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মানুষ কই?’

কেন্দ্রীয় কঁচি-কাচার মেলার গৌরবের দিনে এর প্রায় ৪০০টি শাখা ছিল। সেখান থেকে বর্তমানে শ খানেকে নেমে এসেছে। তবু আশাবাদী কচি-কাঁচার মেলার সংগঠকেরা। সহসভাপতি আলপনা চৌধুরী বললেন, ‘অন্ধকারের মধ্যেও আমরা আশার আলো দেখি। এখনো অনেক অভিভাবক আছেন, যাঁরা চান, তাঁদের সন্তানেরা মনন, শিল্প-সংস্কৃতির মধ্যে থেকে বেড়ে উঠুক। তাই আশার আলো জ্বালিয়ে রাখতে চাই আমরা।’

ইস্কাটনের গাউসনগরে খেলাঘরের কার্যালয়ে কথা হলো সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রণয় সাহার সঙ্গে। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনিও আঁকলেন নিরাশার ছবি। বললেন, ‘ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়ে আসছে শিশুসংগঠনগুলোর কার্যক্রম। শিশুদের নিয়ে ভাবার যেন কেউ নেই। এখন পড়ালেখার বাইরে শিক্ষার্থীদের যেন আর কিছুই করার নেই! এ কেমন সমাজের দিকে এগোচ্ছে বাংলাদেশ?’

প্রণয় সাহা আক্ষেপ করে আরও বললেন, ‘তরুণদের সামনে এখন লক্ষ্য—কীভাবে অনেক অর্থসম্পদের মালিক হওয়া যায়। স্কুল-কলেজের কথা আর কী বলব। কোচিং, নিয়মিত ক্লাস—এগুলো করতেই সময় শেষ। বাচ্চারাই প্রাণ, তারা না এলে সংগঠন টিকবে কীভাবে!’

প্রসঙ্গক্রমে খেলাঘরের সাধারণ সম্পাদক বললেন সাম্প্রতিককালে দেশে সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের চর্চা সংকুচিত হওয়ার কথাও। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের পরে অরাজনৈতিক কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের এমন কিছু সংগঠনের অনুষ্ঠানও ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ ট্যাগ দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

নৃত্য পরিচালক আতিকুর রহমান উজ্জ্বলের ঢাকায় তিনটি সংগঠন রয়েছে। পলাশীতে ভোরের পাখি নৃত্যকলা কেন্দ্র, কাটাবনে নৃত্যাঙ্গন এবং কল্যাণপুরে নৃত্যময়। তাঁর মতে, ‘শিশু সংগঠনগুলোর সেই সুদিন নেই। এখন সব বাবা-মা কোচিং সেন্টারে দৌড়াচ্ছেন। কোচিং ক্লাস শুক্র ও শনিবার বন্ধ থাকলেই কেবল খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমগুলোতে বাচ্চারা আসতে পারবে।’

পঞ্চাশের দশকের আরেক নামী শিশু সংগঠন কেন্দ্রীয় মুকুল ফৌজ। রাজধানীর কেন্দ্রীয় মিরপুর শাখার বাইরে ময়মনসিংহ, সিরাজগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, মুক্তাগাছা, বিরিশিরি, বরিশাল, গাজীপুর, টাঙ্গাইলসহ কয়েকটি শাখার কার্যক্রম এখনো চলছে। কেন্দ্রীয় মুকুল ফৌজের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. আশিকুর রহমান ভুলু বলেন, ‘শিশু সংগঠকেরা হারিয়ে যাচ্ছেন। রাষ্ট্র-সমাজ এসব সংগঠনকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। পাগলামি ও ভালো লাগা আছে বলেই আমরা এখনো জড়িয়ে আছি।’

বর্তমান সময়ের সংকট নিয়ে আশিকুর রহমান ভুলু আরও বলেন, ‘এখন অভিভাবকেরা মনে করেন, পাঠ্যপুস্তকে সেরা নম্বর পেলেই তার সন্তান সেরা। কিন্তু একজন ভালো মানুষ হতে হলে পাঠ্যপুস্তক ছাড়াও সৃজনশীল বই পড়তে হয়, মানুষের সঙ্গে মিশতে হয়, দেশ ও জাতিকে জানতে হয়, সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে থাকতে হয়। অভিভাবকেরা বুঝতে পারছেন না, তাঁদের সন্তানেরা মানবিক হচ্ছে না, সামাজিক হচ্ছে না, দেশপ্রেমিক হচ্ছে না। এ কারণেই সমাজে এত অবক্ষয়।’

বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদের (বাশিকপ) আওতায় কাজ করে কেন্দ্রীয় মুকুল ফৌজ, কেন্দ্রীয় চাঁদের হাঁট, কিশোর মেলা, ফুলকুঁড়ি আসর, নবীন গোষ্ঠী, চাঁদের কণা, শিশু নিকেতন, বকুল ফুলের মেলাসহ ৪০টি শিশু সংগঠন। বাশিকপের সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুল আলম বলেন, ‘আমি ১৯৭৫-৭৬ সালে শিশু থাকা অবস্থায় সংগঠন করেছি। তখন শিশু সংগঠন নিয়ে সরকারের নীতিমালা ও পৃষ্ঠপোষকতা ছিল বেশ উৎসাহব্যঞ্জক। আশির দশকের শেষের দিকে যখন নেতৃত্ব দিতে আসি, তখনো সরকার বিশেষ নজর দিত। এখন তা বেশ কমে গেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সোনারগাঁয়ে লরি বিকল: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার যানজট

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
যানজটে স্থবির ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। আজ দুপুরে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
যানজটে স্থবির ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। আজ দুপুরে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ অংশে প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে একটি মালবাহী লরি বিকল হয়ে পড়ায় যান চলাচল ধীরগতির হয়। এর জেরে বুধবার দুপুর পর্যন্ত যানজট অব্যাহত আছে।

বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে যানজট দেখা গেছে। মেঘনা ঘাট থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত বিভিন্ন অংশে যানবাহন ধীরগতিতে চলাচল করছে। কোথাও কোথাও যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে রয়েছে।

এতে যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। বিশেষ করে রোগী ও শিশুদের নিয়ে চলাচলকারীরা বিপাকে পড়েছেন।

চাঁদপুরগামী যাত্রী শামশুল আলম বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১০টায় রওনা হয়ে এখন পর্যন্ত মদনপুর পর্যন্ত আসতে পেরেছি। যেখানে দুই ঘণ্টায় পৌঁছানোর কথা, সেখানে পাঁচ ঘণ্টাতেও গন্তব্যে পৌঁছাতে পারব কি না, জানি না।’

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদির জিলানী বলেন, ‘গত রাতে মদনপুর এলাকায় একটি বড় লরি বিকল হয়ে পড়েছিল। কিছুক্ষণ আগে সেটি মহাসড়ক থেকে সরানো হয়েছে। লরি বিকলের কারণেই যানবাহন চলাচল ধীর হয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। বর্তমানে যানজট ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মুন্সিগঞ্জে সেনাবাহিনীর অভিযানে ককটেল-বিয়ারসহ ৩ জন আটক

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
আটক করা তিনজন। ছবি: সংগৃহীত
আটক করা তিনজন। ছবি: সংগৃহীত

মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাকান্দিতে সহিংসতা ও নাশকতামূলক কার্যকলাপে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ককটেল, বিয়ার, দেশীয় অস্ত্রসহ তিনজনকে আটক করেছে সেনাবাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে আজ বুধবার ভোর পর্যন্ত মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের নতুন আমঘাটা গ্রামে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। আটক ব্যক্তিরা হলেন আবুল কালাম দেওয়ান (৫৮), মামুন দেওয়ান (৪৮) ও রিয়াদ হোসাইন (২৫)।

অভিযানকালে তাঁদের কাছ থেকে দুটি ককটেল, একটি বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, দুটি গ্যাস মাস্ক, একটি চায়নিজ কুড়াল, চারটি দেশীয় ধারালো অস্ত্র এবং চার ক্যান বিয়ার উদ্ধার করা হয়।

মুন্সিগঞ্জ সদর আর্মি ক্যাম্পের কমান্ডার ক্যাপ্টেন মো. তানজিমুল হাসান হাউলিদারের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সদর দপ্তর ৯৯ কম্পোজিট ব্রিগেডের অধীন মুন্সিগঞ্জ সদর আর্মি ক্যাম্পের নেতৃত্বে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টা থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত নতুন আমঘাটা গ্রামে তল্লাশি চালানো হয়।

সেনাবাহিনী জানায়, আটক মামুন দেওয়ান মোল্লাকান্দিতে সংঘটিত একটি হত্যা মামলার পলাতক আসামি। এ ছাড়া আটক ব্যক্তিরা শীর্ষ সন্ত্রাসী আতিক মল্লিক গ্রুপের সদস্য এবং এলাকায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।

পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আটক ব্যক্তিদের এবং উদ্ধার করা আলামত মুন্সিগঞ্জ সদর থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বগুড়াজুড়ে শোক, বন্ধ মার্কেট ও দোকানপাট

বগুড়া প্রতিনিধি
বগুড়া শহরের অনেক মার্কেটের প্রধান ফটকে আজ তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বগুড়া শহরের অনেক মার্কেটের প্রধান ফটকে আজ তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বগুড়াজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শোক প্রকাশের অংশ হিসেবে বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন মার্কেট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে।

সকালে শহরের কালীতলা, থানা রোড, কবি নজরুল ইসলাম সড়ক ও কাঁঠালতলা এলাকার নিউমার্কেট, ছহির উদ্দিন মার্কেট, পুকুরপাড় নিউমার্কেট, বিআরটিসি শপিং কমপ্লেক্সসহ অধিকাংশ মার্কেট বন্ধ থাকতে দেখা যায়। শহরের প্রধান কাঁচাবাজার রাজাবাজার ও ফতেহ আলী বাজারেও দোকানপাট বন্ধ ছিল। অনেক মার্কেটের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বগুড়া বিআরটিসি শপিং কমপ্লেক্সের সভাপতি আসাদুল হক কাজল জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশের অংশ হিসেবে এই মার্কেটের তিন শতাধিক দোকান বুধবার সারা দিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

একই চিত্র দেখা গেছে শহরতলির ছোট-বড় মার্কেটগুলোতে। বিভিন্ন মার্কেটের প্রবেশমুখে কালো পতাকা ও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। ব্যবসায়ী নেতারা জানান, খালেদা জিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁরা স্বেচ্ছায় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছেন।

এদিকে সরকারিভাবে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় সরকারি-বেসরকারি অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ রয়েছে। এ কারণে শহরের রাস্তাঘাটে জনসমাগম তুলনামূলক কম দেখা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

থানা কমপ্লেক্সের ভেতরে গরু চরাতে নিষেধ করায় পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে জখম

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৪৪
আটক করা অভিযুক্ত যুবক বাহাদুর হোসেন বাদল। ছবি: আজকের পত্রিকা
আটক করা অভিযুক্ত যুবক বাহাদুর হোসেন বাদল। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম মডেল থানা কমপ্লেক্সের ভেতরে গরু চরাতে বাধা দেওয়ায় এক পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে যুবকের বিরুদ্ধে।

এই অভিযোগে অভিযুক্ত যুবককে আটক করা হয়েছে। অভিযুক্ত যুবক বাহাদুর হোসেন বাদল পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের লক্ষ্মীপুর গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে। আহত পুলিশ সদস্যের নাম শরীফুল ইসলাম। গতকাল মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে থানা কমপ্লেক্সের ভেতরে এই ঘটনা ঘটে।

থানা সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত বাদলের বাড়ি থানা কমপ্লেক্সের পাশেই। তিনি প্রায়ই গৃহপালিত গরু নিয়ে থানা কমপ্লেক্সের ভেতরে প্রবেশ করে ঘাস খাওয়াতেন। এতে থানার ভেতরের ফুলবাগান ও ফলদ গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। বিষয়টি নজরে এলে পুলিশ সদস্য শরীফুল ইসলাম তাঁকে একাধিকবার নিষেধ করেন।

মঙ্গলবার দুপুরে নিষেধ অমান্য করে বাদল আবারও গরু নিয়ে থানা কমপ্লেক্সে ঢুকলে শরীফুল ইসলাম বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বাদল দা দিয়ে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করেন। পুলিশ সদস্যের চিৎকার শুনে অন্য পুলিশ সদস্যরা এগিয়ে এসে তাঁকে উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

চৌদ্দগ্রাম মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গুলজার আলম বলেন, অভিযুক্ত যুবক দীর্ঘদিন ধরে থানার ভেতরে গরু চরাতেন। আগেও তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে সতর্ক করা হয়েছিল। মঙ্গলবার ফের একই ঘটনা ঘটালে বাধা দেওয়ায় তিনি হামলা করেন। আহত পুলিশ সদস্য শরীফুল ইসলাম বাদী হয়ে অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে আজ বুধবার সকালে মামলা করেছেন। তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত