Ajker Patrika

টাঙ্গাইলে আ. লীগ নেতা ফারুক হত্যা: সাবেক এমপি রানাসহ ৪ ভাই খালাস

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি 
আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৭: ১০
আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক। ছবি: সংগৃহীত
আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক। ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল–৩ আসনের সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানা ও তাঁর তিন ভাইসহ ১০ আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া এই মামলায় কবির উদ্দিন এবং মোহাম্মদ আলী নামের দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আমানুর রহমানের তিন ভাই হলেন— সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ছোট ভাই জাহিদুর রহমান খান কাকন ও সানিয়াত রহমান খান বাপ্পা।

এই মামলায় মোট আসামি ছিলেন ১৪ জন। এর মধ্যে দুজন আসামি বিচার চলাকালীন মারা গেছেন।

রায় ঘোষণার সময় সহিদুর রহমান খান মুক্তি উপস্থিত থাকলেও তাঁর ভাইসহ বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছেন।

আজ রোববার দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. মাহমুদুল হাসান এই রায় ঘোষণা করেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী নাসির উদ্দিন খান বলেন, এই মামলায় ২৭ জনের সাক্ষী রাষ্ট্রপক্ষ উপস্থাপন করেছিল। আসামিদের এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকা কোনো প্রমাণ কেউ দিতে পারেনি। যখন ঘটনা ঘটেছে তখন সহিদুর রহমান খান মুক্তি সস্ত্রীক ভারতে ছিলেন চিকিৎসার জন্য, তাঁর ভাই কাকন মালয়েশিয়াতে ছিলেন, আর সাবেক এমপি রানা ঘাটাইলে একটি অনুষ্ঠানে ছিলেন এবং তাঁর ছোট ভাই বাপ্পা ঢাকায় ছাত্রলীগের কার্যালয়ে ছিলেন।

এই আইনজীবী আরও বলেন, রাজনৈতিকভাবে তাঁদের মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছিল। এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার পেয়েছি।

টাঙ্গাইলের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি এপিপি সাইদুর রহমান স্বপন বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হত্যা মামলায় দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এই মামলার আসামি সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানা ও তাঁর তিন ভাইসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁদের খালাস দিয়েছেন আদালত।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ তাঁর কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিন দিন পর তাঁর স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ২০১৪ সালের আগস্টে এই হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আনিসুল ইসলাম রাজা ও মোহাম্মদ আলী নামক দুজনকে গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তাঁরা আদালতে জবানবন্দি দেন। তাঁদের জবানবন্দিতে আওয়ামী দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, তাঁর ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার নাম আসে।

সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানা ও তাঁর তিন ভাই। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানা ও তাঁর তিন ভাই। ছবি: সংগৃহীত

এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ওয়াহেদ, আবদুল খালেক ও সনি আদালতে জবানবন্দি দেন। এরপর আমানুর রহমানসহ চার ভাই আত্মগোপনে চলে যান। পরে আমানুর রাহমান রানা আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তিন বছর জেলহাজতে থাকার পর জামিন পান। গত বছরের ৫ আগস্টের পর তিনি আবার আত্মগোপনে চলে যান। অপর দুই ভাই ২০১৪ সাল থেকে বিদেশে অবস্থান করছেন বলে তাঁদের ঘনিষ্ঠজনেরা জানিয়েছেন।

গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম মাহফিজুর রহমান ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি চার ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ২০১৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এই মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। বিচার চলাকালে দুই আসামি আনিছুর রহমান ওরফে রাজা ও মোহাম্মদ সমির কারাগারে মারা যান। গত ২৬ জানুয়ারি ফারুক হত্যা মামলার যুক্তিতর্ক শেষ হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিবিসি বাংলার সমালোচনার পর দুঃখপ্রকাশ করলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

ছুটি না দেওয়ায় চার সহকর্মীকে ছুরিকাঘাত করে সদর্পে হাঁটা দিলেন সরকারি কর্মকর্তা

ভারতকে যুদ্ধের হুমকি পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের

হাসিনার বক্তব্যে ‘ভারতের দায় নেই’, বাংলাদেশের দূতকে পাল্টা তলব

বেনজীর আহমেদের বক্তব্যে সব পুলিশ সদস্য ক্ষুব্ধ: পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত