Ajker Patrika

তৃতীয় দিনের মতো অনশনে ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের কর্মীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
চার দফা দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো আমরণ অনশনে তথ্য আপারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
চার দফা দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো আমরণ অনশনে তথ্য আপারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

চার দফা দাবি নিয়ে তৃতীয় দিনের মতো আমরণ অনশনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের কর্মীরা। অনশনে থাকা কয়েকজন কর্মী আজ শুক্রবার (৩০ মে) সকালে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কর্মরত জনবলকে সমগ্রেডে পদ সৃজনসহ রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের দাবি জানিয়ে গত বুধবার (২৮ মে) সকাল থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করে আসছেন তাঁরা। গতকাল বৃহস্পতিবার দিনভর বৃষ্টির মধ্যেও তাঁরা সেখানে অবস্থান করছিলেন।

অনশন কর্মসূচিতে আসা তথ্য আপা প্রকল্প (দ্বিতীয় পর্যায়) কর্মীরা বলেন, নারীর ক্ষমতায়নের জন্য আমরা মাঠ পর্যায়ে সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করে যাচ্ছি। আর এক মাস পরে আমাদের প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা প্রায় দুই হাজার নারী একযোগে বেকার হয়ে যাব। যারা নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করে এই প্রকল্পের অর্জন ৯০ শতাংশ করেছে তারাই আজকে ক্ষমতাহীন হওয়ার পথে। যে বৈষম্য বিলুপ্ত করার জন্য আমাদের ছেলেরা আন্দোলন করেছে আজ সেই বৈষম্য আমাদের সাথে করা হচ্ছে। আমরা তো কোনো রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করি না, আমরা সরকারের হয়ে কাজ করি। তাহলে কেন আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়া হবে না।

ফেনীর ফুলগাজী তথ্যসেবা কর্মকর্তা সুমাইয়া আক্তার বলেন, আমরা অন্যান্য সরকারি চাকরির মতো পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে ২০১৮ সালের নভেম্বরে যোগ দিয়েছিলাম। ৪৯২টি উপজেলায় তথ্যকেন্দ্রে একজন করে তথ্যসেবা কর্মকর্তা (১০ম গ্রেড), দুজন তথ্যসেবা সহকারী (১৬ তম গ্রেড) ও একজন করে অফিস সহায়ক (২০ তম গ্রেড) মিলিয়ে মোট ১ হাজার ৯৬৮ জন মাঠ পর্যায়ে কর্মরত রয়েছি। আমরা তৃণমূল নারীদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, আইন, জেন্ডার, ব্যবসা, পরিবার পরিকল্পনা এবং সাইবার সিকিউরিটি এই ৮টি বিষয়ে জরুরি তথ্য সরবরাহ ও সহায়তা দিয়ে আসছি। তাহলে কেন আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হচ্ছে না।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘নিয়োগপত্র অনুযায়ী বেতন না দিয়ে প্রকল্পের সাবেক পরিচালক মিনা পারভীন বেতন কমিয়ে দিয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের কোনো লিখিতভাবে জানানো হয়নি।’

সিলেট থেকে আসা রাশেদা আক্তার বলেন, ‘আমাদের গ্রেডের সাথে চরম বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছে। রাজস্বের আশ্বাস দিয়েও কোনো প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করা করেনি। আমাদের প্রকল্পের লক্ষ্যমাত্রা শতভাগ অর্জিত হয়েছে। এরপরও আমাদের দাবি নিয়ে আমরণ অনশনে যেতে হচ্ছে। আমরা মেয়েরা রাতেও অবস্থান নিয়েছি। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের কোনো খোঁজ খবর পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। আমাদের চার দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এই কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে চাই।’

আমরণ অনশনে তথ্য আপারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আমরণ অনশনে তথ্য আপারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

তিনি বলেন, ‘গত বছর আগস্টে প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি এবং রাজস্বকরণের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে বিক্ষোভ করেছিলাম আমরা। আমাদের প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বৃদ্ধি করে প্রশিক্ষণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। সেই প্রশিক্ষণ আমরা পাইনি। প্রকল্পের মেয়াদও এখন শেষের পথে। অফিস ছাড়ার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।’

তথ্য আপাদের চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—প্রকল্পে কর্মরত সব জনবলকে সমগ্রেডে পদ সৃজন করে রাজস্ব খাতে স্থানান্তর, যেহেতু রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের জন্য সময়ের প্রয়োজন তাই প্রয়োজনীয় সময় ৩-৫ বছর প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি, পদ সৃজন করে রাজস্ব খাতে স্থানান্তর সম্ভব না হলে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের শূন্যপদের ভিত্তিতে সম গ্রেডে আত্তীকরণ এবং কর্তন করা বেতন ও ভাতা দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চায়ের দোকানে চলে একটি বাতি-ফ্যান, বিদ্যুৎ বিল এল সাড়ে ৫৫ হাজার টাকা

টঙ্গিবাড়ী (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি 
বিদ্যুৎ বিলের কাগজ হাতে লিটুখান বাজারের দুই দোকানদার। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিদ্যুৎ বিলের কাগজ হাতে লিটুখান বাজারের দুই দোকানদার। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাজারে ছোট একটি চায়ের দোকান চালান বাদশা ব্যাপারী। দোকানে কেবল একটি বাতি ও একটি ফ্যান চালানো হয়। সাধারণত তাঁর মাসিক বিল ২০০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে আসে। কিন্তু চলতি মাসে তাঁর হাতে এসেছে ৫৫ হাজার ৫৫০ টাকার বিদ্যুৎ বিল। বিল হাতে পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।

মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার দিঘিরপাড় ইউনিয়নের লিটুখান বাজারের দোকানদার বাদশা ব্যাপারী। বিদ্যুৎ বিলের ব্যাপারে বাদশা বলেন, ‘এটা অসম্ভব। আমার দোকানে এত বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগই নেই। বিলের নম্বরে ফোন করলে শুধু অফিসে যেতে বলে।’

এমন ‘ভুতুড়ে’ বিদ্যুৎ বিল পেয়েছেন লিটুখান বাজারের আরেক দোকানদার শহীদ খান। বাজারে খাবারের দোকান রয়েছে তাঁর। দোকানে দুটি বাতি, একটি ফ্যান ও একটি ছোট ফ্রিজ ব্যবহার করা হয়। প্রতি মাসে যেখানে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা বিল দিতেন, সেখানে এবার বিল এসেছে ২৪ হাজার ২১৬ টাকা। শহীদ বলেন, ‘বিলটা দেখে দাঁড়াতেই পারছিলাম না। এমন বিল হলে দোকান চালানোই কঠিন হয়ে যাবে।’

বাজারের অন্য ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, কয়েক মাস ধরে এলাকায় এমন অস্বাভাবিক বিল আসছে। তাঁদের ধারণা, মিটার রিডিং অথবা বিলিং পদ্ধতিতে গুরুতর ত্রুটি রয়েছে। দ্রুত তদন্ত করে সঠিক হিসাব ঠিক করার পাশাপাশি দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

বিল প্রস্তুতকারী কর্মী সুমি রানী দাস বলেন, সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের অফিসে যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘তারা অফিসে এলে আমরা সরেজমিন যাচাই করে বিল পুনরায় বিবেচনা করব।’

টঙ্গিবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. আব্দুস ছালাম বলেন, ‘মিটার রিডিং বা বিলিং সিস্টেমে ত্রুটি থাকতে পারে। আমরা সরেজমিন যাচাই করে দ্রুত সমাধানের পদক্ষেপ নেব। ভোক্তাদের অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাসার বাথরুমে পড়ে ছিল নারী প্রভাষকের লাশ, মাথায় আঘাতের চিহ্ন

বগুড়া প্রতিনিধি
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার এক বাসা থেকে ফাবিয়া তাসনিম সিধি (২৯) নামের এক প্রভাষকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

মৃত ফাবিয়া বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক। বছর দেড়েক আগে তিনি কলেজটিতে যোগদান করেন।

এই তথ্য নিশ্চিত করে বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান জানান, ফাবিয়া অবিবাহিত। তিনি বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ডা. রাশেদুল হাসানের বাড়ির তিনতলায় ভাড়া বাসায় তাঁর মায়ের সঙ্গে থাকতেন। কয়েক দিন আগে তাঁর মা গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে যান। গতকাল দুপুরের পর থেকে মেয়েকে ফোনে না পাওয়ায় তাঁর মা রাত ১০টার দিকে বগুড়া আসেন। অনেক ডাকাডাকি করে দরজা না খোলায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে বাসার বাথরুমে ফাবিয়ার লাশ দেখতে পায়।

পুলিশ জানায়, মৃত ব্যক্তির নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিল এবং মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন ছাড়াও জিবে দাঁত দিয়ে কামড় দেওয়া ছিল। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অটোরিকশাকে চাপা দিল বাস, প্রাণ গেল তিনজনের

ফরিদপুর প্রতিনিধি
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাসের চাপায় একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় শিশুসহ আরও চারজন আহত হয়। আজ শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল মিয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন নারী ও একজন পুরুষ। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালান। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।  

হাইওয়ে থানার এসআই সোহেল মিয়া বলেন, অটোরিকশাটি ভাঙ্গা থেকে টেকেরহাটের উদ্দেশে যাচ্ছিল। কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা নিউ মডার্ন পরিবহনের একটি বাস অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এই ঘটনায় বাসটি আটক করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় ৫৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চর এলাকার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছে কোস্ট গার্ড। এ সময় একটি নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আটক কয়েকজন মাঝিমাল্লার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোস্ট গার্ড হাতিয়ার একটি দল এই অভিযান চালায়। জব্দ করা জাটকাগুলোর মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকা।

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. আবুল কাশেম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোস্ট গার্ড। অভিযানে মেঘনা নদীর জাগলার চর এলাকায় একটি কাঠের নৌকায় তল্লাশি করা হয়। ওই নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। এ সময় মাঝিদের মুচলেকা নিয়ে নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ মাছগুলো মৎস্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এতিমখানা ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত