আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
পদ্মা সেতু চালুর পর সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ঘাটের চিত্র। দেশের অন্যতম ব্যস্ত এই নৌঘাট এখন রীতিমতো পরিত্যক্ত। ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঘাটকেন্দ্রিক শতাধিক হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ অসংখ্য দোকানপাট মুখ থুবড়ে পড়েছে। কর্মসংস্থান হারিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন হাজারো মানুষ।
২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরপরই শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী রুটে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ২০২৩ সালের ২০ এপ্রিল সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল চালু হলে ঘাট কার্যত পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। একসময় এই ঘাটে প্রতিদিন লাখো মানুষ যাতায়াত করত। সেই যাত্রাপথেই গড়ে উঠেছিল হোটেল, কনফেকশনারি, চায়ের দোকান, ফলের দোকান, মুদি দোকানসহ নানা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।
গত বুধবার (২ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে শিমুলিয়া লঞ্চঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, একসময়ের জমজমাট এই ঘাট এখন প্রায় নিস্তব্ধ। নেই লঞ্চের হর্ন, স্পিডবোটের গর্জন কিংবা যাত্রীদের হাঁকডাক। ঘাটসংলগ্ন যে স্থানে একসময় মানুষ গিজগিজ করত, সেখানে এখন খোলা জায়গায় বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন কিছু দোকানি ও হোটেল কর্মচারী। চারপাশে যেন বিষণ্নতা ছড়িয়ে আছে।
লঞ্চঘাটের প্রবেশপথে আগে যেখানে সারি সারি হোটেল-রেস্তোরাঁয় ইলিশ ভাজা, ভর্তা ও ভাতের ঘ্রাণে ম ম করত পরিবেশ, আজ সেখানে কেবল জনশূন্যতা। অন্তত ১৫-২০টি হোটেল ফাঁকা। বেশির ভাগ হোটেলের টেবিল-চেয়ারে ধুলো পড়ে আছে। কোথাও কোথাও দেখা গেল কিছু কর্মচারী নিঃশব্দে বসে আছেন, কেউ আবার জানালার পাশে চেয়ে আছেন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে।
মায়ের দোয়া হোটেলের পুরোনো কর্মচারী রাসেল মিয়া। বয়স ৩৫। গত আট বছর ধরে শিমুলিয়া ঘাটেই কাজ করছেন। আগে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত দৌড়াতে হতো—একটানা ভাত বেড়ে দেওয়া, ভর্তা পরিবেশন, পানির গ্লাস ধোয়ার ফাঁকে নতুন খদ্দেরকে জায়গা দেখানো। এখন সারা দিনেও ২০ জন খদ্দের হয় না।
রাসেল বলেন, `আগে এত খাটুনি ছিল যে মাঝেমাঝে পা ফুলে যেত, কিন্তু মন ভরে থাকত। এখন সারা দিন বসে থাকি, তবু মনটা খালি। আগে বিকেল হলেই খদ্দের আসত দলে দলে। চিৎকার করে বলতে হতো, এই ভাই, একটু অপেক্ষা করেন, টেবিল ফাঁকা হচ্ছে। আর এখন? আমরা চারজন কর্মচারী বসে থাকি, কারো সঙ্গে কথা বলারও মানুষ নাই।’
তিনি আরো বলেন, সরকার যদি ঘাটটাকে একটু ঘষেমেজে আবার দাঁড় করায়, পর্যটনের ব্যবস্থা করে, তাহলে মানুষ আবার আসবে। আমরাও আবার কাজ পাব, ঘরে চাল-ডাল যাবে। শুধু চাই, কেউ আমাদের কথা একটু ভাবুক।
নিউ মোল্লা হোটেলের কর্মচারী আকতার হোসেন বলেন, আগে ১৫-২০ রকম ভর্তা, মাছ ও ভাজি রান্না করতাম। এখন অর্ধেক আইটেমও করি না। মানুষই তো আসে না।
নিউ মায়ের দোয়া হোটেলের মালিক মোহাম্মদ শাহিন শেখ বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর ভেবেছিলাম পর্যটক বাড়বে, বিক্রি বাড়বে। কিন্তু সব উল্টো হয়ে গেছে। আগে প্রতিদিন ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা বিক্রি করতাম। এখন ২০-২৫ হাজার টাকাও হয় না।
বিসমিল্লাহ হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের মালিক সুমন হাসান বলেন, প্রতিদিন দোকান খোলা মানেই ১০ হাজার টাকা খরচ, ভাড়া, বিদ্যুৎ, কর্মচারীর মজুরি মিলিয়ে। অথচ এখন সে পরিমাণ বিক্রিও হচ্ছে না।
নিরালা হোটেল অ্যান্ড রেস্তোরাঁর ম্যানেজার মো. সুমন বলেন, আগে দিনে ১ লাখ পর্যন্ত বিক্রি হতো, শুক্র ও শনিবারে আরও বেশি। এখন ৪০-৫০ হাজার টাকায় আটকে যায়। অথচ মাসে ২০ জন কর্মচারীর বেতনসহ ৩ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়। টিকে থাকাই কঠিন হয়ে গেছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা জানান, পদ্মা সেতু দেশের গর্ব হলেও শিমুলিয়া ঘাট পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে হাজারো মানুষের জীবিকা ঝুঁকির মুখে পড়বে। সরকার যদি পরিকল্পিতভাবে ঘাট সংরক্ষণ করে পর্যটন ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র গড়ে তোলে, তাহলে আবারও লোকজন আসবে, ব্যবসা ফিরে আসবে, জীবন ফিরে আসবে।
এদিকে শিমুলিয়া ঘাট ঘিরে নতুনভাবে ভাবছে সরকার। সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পাঁচ উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঘাট এলাকা পরিদর্শন ও আলোচনা সভা করেন।
সভা শেষে নৌপরিবহন ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম শাখাওয়াত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের বিআইডব্লিউটিএর জায়গায় আন্তর্জাতিক মানের ইকো কনটেইনার পোর্ট নির্মাণের পরিকল্পনা আছে। পাশাপাশি থাকবে রিভার মিউজিয়াম, ইকো রিসোর্ট, ফেরিঘাট পুনঃস্থাপন, কিডস জোন, সুইমিং পুলসহ পর্যটন সুবিধা।’
পদ্মা সেতু চালুর পর সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ঘাটের চিত্র। দেশের অন্যতম ব্যস্ত এই নৌঘাট এখন রীতিমতো পরিত্যক্ত। ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঘাটকেন্দ্রিক শতাধিক হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ অসংখ্য দোকানপাট মুখ থুবড়ে পড়েছে। কর্মসংস্থান হারিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন হাজারো মানুষ।
২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরপরই শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী রুটে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ২০২৩ সালের ২০ এপ্রিল সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল চালু হলে ঘাট কার্যত পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। একসময় এই ঘাটে প্রতিদিন লাখো মানুষ যাতায়াত করত। সেই যাত্রাপথেই গড়ে উঠেছিল হোটেল, কনফেকশনারি, চায়ের দোকান, ফলের দোকান, মুদি দোকানসহ নানা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।
গত বুধবার (২ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে শিমুলিয়া লঞ্চঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, একসময়ের জমজমাট এই ঘাট এখন প্রায় নিস্তব্ধ। নেই লঞ্চের হর্ন, স্পিডবোটের গর্জন কিংবা যাত্রীদের হাঁকডাক। ঘাটসংলগ্ন যে স্থানে একসময় মানুষ গিজগিজ করত, সেখানে এখন খোলা জায়গায় বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন কিছু দোকানি ও হোটেল কর্মচারী। চারপাশে যেন বিষণ্নতা ছড়িয়ে আছে।
লঞ্চঘাটের প্রবেশপথে আগে যেখানে সারি সারি হোটেল-রেস্তোরাঁয় ইলিশ ভাজা, ভর্তা ও ভাতের ঘ্রাণে ম ম করত পরিবেশ, আজ সেখানে কেবল জনশূন্যতা। অন্তত ১৫-২০টি হোটেল ফাঁকা। বেশির ভাগ হোটেলের টেবিল-চেয়ারে ধুলো পড়ে আছে। কোথাও কোথাও দেখা গেল কিছু কর্মচারী নিঃশব্দে বসে আছেন, কেউ আবার জানালার পাশে চেয়ে আছেন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে।
মায়ের দোয়া হোটেলের পুরোনো কর্মচারী রাসেল মিয়া। বয়স ৩৫। গত আট বছর ধরে শিমুলিয়া ঘাটেই কাজ করছেন। আগে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত দৌড়াতে হতো—একটানা ভাত বেড়ে দেওয়া, ভর্তা পরিবেশন, পানির গ্লাস ধোয়ার ফাঁকে নতুন খদ্দেরকে জায়গা দেখানো। এখন সারা দিনেও ২০ জন খদ্দের হয় না।
রাসেল বলেন, `আগে এত খাটুনি ছিল যে মাঝেমাঝে পা ফুলে যেত, কিন্তু মন ভরে থাকত। এখন সারা দিন বসে থাকি, তবু মনটা খালি। আগে বিকেল হলেই খদ্দের আসত দলে দলে। চিৎকার করে বলতে হতো, এই ভাই, একটু অপেক্ষা করেন, টেবিল ফাঁকা হচ্ছে। আর এখন? আমরা চারজন কর্মচারী বসে থাকি, কারো সঙ্গে কথা বলারও মানুষ নাই।’
তিনি আরো বলেন, সরকার যদি ঘাটটাকে একটু ঘষেমেজে আবার দাঁড় করায়, পর্যটনের ব্যবস্থা করে, তাহলে মানুষ আবার আসবে। আমরাও আবার কাজ পাব, ঘরে চাল-ডাল যাবে। শুধু চাই, কেউ আমাদের কথা একটু ভাবুক।
নিউ মোল্লা হোটেলের কর্মচারী আকতার হোসেন বলেন, আগে ১৫-২০ রকম ভর্তা, মাছ ও ভাজি রান্না করতাম। এখন অর্ধেক আইটেমও করি না। মানুষই তো আসে না।
নিউ মায়ের দোয়া হোটেলের মালিক মোহাম্মদ শাহিন শেখ বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর ভেবেছিলাম পর্যটক বাড়বে, বিক্রি বাড়বে। কিন্তু সব উল্টো হয়ে গেছে। আগে প্রতিদিন ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা বিক্রি করতাম। এখন ২০-২৫ হাজার টাকাও হয় না।
বিসমিল্লাহ হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের মালিক সুমন হাসান বলেন, প্রতিদিন দোকান খোলা মানেই ১০ হাজার টাকা খরচ, ভাড়া, বিদ্যুৎ, কর্মচারীর মজুরি মিলিয়ে। অথচ এখন সে পরিমাণ বিক্রিও হচ্ছে না।
নিরালা হোটেল অ্যান্ড রেস্তোরাঁর ম্যানেজার মো. সুমন বলেন, আগে দিনে ১ লাখ পর্যন্ত বিক্রি হতো, শুক্র ও শনিবারে আরও বেশি। এখন ৪০-৫০ হাজার টাকায় আটকে যায়। অথচ মাসে ২০ জন কর্মচারীর বেতনসহ ৩ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়। টিকে থাকাই কঠিন হয়ে গেছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা জানান, পদ্মা সেতু দেশের গর্ব হলেও শিমুলিয়া ঘাট পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে হাজারো মানুষের জীবিকা ঝুঁকির মুখে পড়বে। সরকার যদি পরিকল্পিতভাবে ঘাট সংরক্ষণ করে পর্যটন ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র গড়ে তোলে, তাহলে আবারও লোকজন আসবে, ব্যবসা ফিরে আসবে, জীবন ফিরে আসবে।
এদিকে শিমুলিয়া ঘাট ঘিরে নতুনভাবে ভাবছে সরকার। সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পাঁচ উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঘাট এলাকা পরিদর্শন ও আলোচনা সভা করেন।
সভা শেষে নৌপরিবহন ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম শাখাওয়াত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের বিআইডব্লিউটিএর জায়গায় আন্তর্জাতিক মানের ইকো কনটেইনার পোর্ট নির্মাণের পরিকল্পনা আছে। পাশাপাশি থাকবে রিভার মিউজিয়াম, ইকো রিসোর্ট, ফেরিঘাট পুনঃস্থাপন, কিডস জোন, সুইমিং পুলসহ পর্যটন সুবিধা।’
গেল কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সড়কে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে করে পথচারী ও চালকদের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। বিশেষ করে রাতের বেলা দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে গেছে। স্থানীয়রা সতর্কতার জন্য লাঠির মাথায় লাল কাপড় বেঁধে ভাঙা অংশ চিহ্নিত করছেন।
৭ মিনিট আগেএই ঘটনার পর থেকেই ইসলামপুরের আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীরা ফেসবুকে এনসিপি বিরোধী নানা পোস্ট দিচ্ছেন। এসব পোস্টে কেউ এনসিপিকে ’পাকিস্তানি দালাল’ আখ্যা দিচ্ছেন, কেউ বা ১৬ জুলাইকে ‘গোপালগঞ্জ গণহত্যা দিবস’ হিসেবে চিহ্নিত করছেন।
১৩ মিনিট আগেকলমাকান্দা উপজেলায় প্রধান শিক্ষকের ১৭২টি পদের মধ্যে ১৩৩টি, দুর্গাপুর ১২৬টির মধ্যে ৩৬টি, আটপাড়া ১০৩টির মধ্যে ৫৯টি, কেন্দুয়া ১৮২টির মধ্যে ৫৮টি, সদরে ২০১টির মধ্যে ৫৭টি, বারহাট্টায় ১০৯টির মধ্যে ৫০টি, পূর্বধলায় ১৭৫টির মধ্যে ৯৮টি, মদনে ৯৩টির মধ্যে ৩৮, মোহনগঞ্জ ৮৯টির মধ্যে ৪১টি এবং খালিয়াজুরিতে ৬৩টির মধ্যে
১ ঘণ্টা আগেগাজীপুরের কালীগঞ্জে একসময়কার খরস্রোতা একটি গুরুত্বপূর্ণ খাল এখন দখল ও দূষণে মৃতপ্রায়। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমলে খনন হওয়া এই খালটি বর্তমানে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। শীতলক্ষ্যা নদী থেকে শুরু হয়ে দক্ষিণ ভাদার্ত্তি ও তুমলিয়া মিশনের পাশ ঘেঁষে বক্তারপুরের রাঙ্গামাটিয়া হয়ে বিল বেলাই পর্যন্ত বিস্তৃত খালটি
১ ঘণ্টা আগে