Ajker Patrika

এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ওয়াশ খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর সুপারিশ 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩০ মে ২০২২, ১৫: ২৭
এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ওয়াশ খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর সুপারিশ 

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে ওয়াশ খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর সুপারিশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। আজ সোমবার বেলা ১২টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ওয়াটারএইড আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এ আহ্বান জানান। বক্তারা ওয়াটারএইডের সহযোগিতায় পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) ওয়াশ খাতে বাজেট বরাদ্দ বিশ্লেষণের তথ্যের আলোকে বক্তারা এ আহ্বান জানান।

এসডিজির ৬ নম্বর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ওয়াশ খাতে বরাদ্দের ব্যবধান হ্রাসের প্রয়োজনীয়তা এবং সুষ্ঠু ও ন্যায্য বরাদ্দের দাবি করে বক্তারা বলেন, ২০০০ সাল থেকে ২০১৫ সাল এমডিজি বাস্তবায়ন ভালোভাবে হয়েছে। সেখানে খাবার পানি এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থা শতভাগ কাভার হয়েছে। এখন ২০১৬ থেকে ২০৩০ পর্যন্ত এসডিজি বাস্তবায়নে কাজ করছে সরকার। এ সময় শুধু পানি ও স্যানিটেশন নিয়ে কাজ করলেই হবে না, নিরাপদ পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশনও নিশ্চিত করতে হবে।

ওয়াটারএইড বাংলাদেশ, পিপিআরসি, ইউনিসেফ বাংলাদেশ, ফানসা-বিডি, এফএসএম নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ ওয়াটার ইনটিগ্রিটি নেটওয়ার্ক (বাউইন), স্যানিটেশন অ্যান্ড ওয়াটার ফর অল, অ্যান্ড ওয়াটার পভার্টি, এমএইচএম প্ল্যাটফর্ম, ইউনিসেফ এবং ওয়াশ অ্যালায়েন্স ইন্টারন্যাশনাল আয়োজিত বাজেট পূর্ব এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সঠিক এডিপি প্রকল্প নির্বাচনে মনোযোগী হওয়া এবং গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে ওয়াশ বিষয়ে বরাদ্দের ব্যবধান কমানোর প্রয়োজনীয়তাকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা।

ওয়াটারএইডের সহযোগিতায় পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) একটি বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, এডিপির মোট বরাদ্দের (২৬৬,৭৯৩ কোটি টাকা) হিসেবে ২০২১-২২ অর্থবছরের বরাদ্দে ওয়াশ খাতে বরাদ্দ ছিল ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ (১৪,৫১৭ কোটি টাকা)। বিশ্লেষণে আরও উঠে এসেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে অত্যন্ত প্রত্যন্ত অঞ্চলে ওয়াশ খাতে বরাদ্দ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এসব এলাকায় বরাদ্দ ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৫ বছর আগের তুলনায় ৭২ শতাংশ কমেছে। 

বক্তারা জানান, বিশ্লেষণে ওয়াশ খাতে বরাদ্দের ক্ষেত্রে ভৌগোলিক বৈষম্যের বিষয়টি প্রতীয়মান হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে প্রত্যন্ত এলাকা, চর, পাহাড়ি ও উপকূলীয় অঞ্চলের তুলনায় শহরাঞ্চলে সর্বোচ্চ পরিমাণ তহবিল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অথচ অনুন্নত এসব এলাকায় বরাদ্দের প্রয়োজন শহরাঞ্চলের চেয়ে বেশি। তাই, আসন্ন বাজেটে প্রান্তিক এলাকাগুলোর প্রয়োজন বিবেচনা করা উচিত। 

ওয়াশ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক ও উন্নয়ন কর্মীদের নিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পিপিআরসি’র চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, ওয়াটারএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান, পিপিআরসির সিনিয়র ফেলো মোহাম্মদ আবদুল ওয়াজেদ বক্তব্য রাখেন। 

ড. হোসেন জিল্লুর বলেন, ‘আমাদের স্যানিটেশন সেইফলি ম্যানেজ করতে হবে। সরকারের হিসেবে, আমরা ৫৯ শতাংশ নিরাপদ পানি নিশ্চিত করেছি। আর ৩৯ শতাংশ স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। এসডিজি বাস্তবায়নে আমাদের আর মাত্র ৮ বছর হাতে রয়েছে। এখানে নীতি সহায়তা এবং অর্থায়ন ও বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে ওয়াসাসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা নিশ্চিত করতে হবে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ওয়াশ খাতে বরাদ্দ ছিল ৫.৪৪ শতাংশ, সেটি আরও বাড়াতে হবে।’ 

ড. হোসেন জিল্লুর আরও বলেন, ‘বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। এখন শহরাঞ্চলকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, সেটি এখন প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে দিতে হবে। আরবানাইজ ভিলেজ বাস্তবায়নে আলাদা কাস্টমাইজ পলিসি নিতে হবে। সেখানে অপরিকল্পিত হাউজিং গড়ে উঠছে। কিন্তু তার সুপেয় পানি, নিরাপদ স্যানিটেশনের যথাযথ ব্যবস্থা থাকছে না। বৃষ্টির সময় সেখানে জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে।’ 

আলোচনায় ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের জন্য বেশি কিছু সুপারিশ উত্থাপন করা হয়। সুপারিশগুলো হলো—

 ১. এসডিজি ৬.১. ১ এবং এসডিজি ৬.২. ১ অর্জন নিশ্চিতে বরাদ্দ বাস্তবায়নে মানসিকতার পরিবর্তন এবং কার্যকর এডিপি প্রকল্প নির্বাচনকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা। 

 ২. প্রত্যন্ত এলাকায় বরাদ্দ বাড়ানো ও আন্তঃশহর বরাদ্দের ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করাকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিবেচনা করা। 

 ৩. ওয়াশ খাতে এডিপি বরাদ্দের আরও কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জের সমাধান করা। 

 ৪. হাইজিনের ক্ষেত্রে লক্ষ্য শুধু বৈশ্বিক মহামারি নিয়ন্ত্রণেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে না; পাশাপাশি, কোভিড পরবর্তী বাস্তবতায় নগরে স্বাস্থ্য, স্কুলে স্বাস্থ্য ও নারীদের স্বাস্থ্য রক্ষার্থে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

৫. যেসব এলাকা জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে পড়বে সেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য ওয়াশের সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে অ্যাকসেস বাড়ানো। 

 ৬. শহরাঞ্চলে স্বাস্থ্যবিধি এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ বাজেট বৃদ্ধিতে বিনিয়োগ করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ত্রিশালের এমপি হতে চান ভিক্ষুক আবুল মুনসুর, জমা দিলেন মনোনয়নপত্র

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন আবুল মুনসুর ফকির। ছবি: আজকের পত্রিকা
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন আবুল মুনসুর ফকির। ছবি: আজকের পত্রিকা

জীবন কেটেছে অভাব-অনটনে। নেই কোনো ঘরবাড়ি। পথেঘাটে ভিক্ষা করে দুমুঠো ভাতের জোগান দেন তিনি। তবুও স্বপ্ন দেখেন, জনপ্রতিনিধি হয়ে একদিন জাতীয় সংসদে যাবেন। সেখানে বড় বড় নেতাদের সামনে তাঁর মতো দুঃখী-দরিদ্র মানুষের কষ্টের কথা তুলে ধরবেন তিনি। এই স্বপ্নপূরণের আশায় আজ সোমবার ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসন থেকে এমপি প্রার্থী হতে মনোনয়ন দাখিল করেছেন তিনি।

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার বৈলর ইউনিয়নের মঠবাড়ী গ্রামের এই ভিক্ষুক হলেন আবুল মুনসুর ফকির। আসন্ন ২০২৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। ভিক্ষুক হয়েও তাঁর সংসদ সদস্য হওয়ার প্রচেষ্টা স্থানীয়ভাবে ব্যাপক কৌতূহল, আলোচনা ও মিশ্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে।

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ত্রিশাল উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিনে আজ আবুল মুনসুর ফকির স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তাঁর মনোনয়নপত্র জমা দেন।

স্থানীয়রা জানায়, আবুল মুনসুরের জনপ্রতিনিধি হওয়ার চেষ্টা নতুন নয়। এর আগেও তিনি বিভিন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করেছেন। এবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে পেয়েছিলেন ৩৭৭ ভোট। সেই ভোটকে তখন অনেকেই জনপ্রতিনিধিদের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ভোট হিসেবে ব্যাখ্যা করেছিলেন। সেই নির্বাচনে ভিক্ষুক আবুল মুনসুর ফকিরের প্রচারণার ধরন ছিল একেবারেই আলাদা। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত একাই পাড়া-মহল্লা ও হাট-বাজারে ঘুরে পোস্টার সাঁটানো, মানুষের কাছে গিয়ে সরাসরি ভোট চাওয়া—সবকিছুই করতেন নিজেই। কোনো দল, টাকা কিংবা প্রভাবশালী মহলের আশীর্বাদ না থাকলেও দমে যাননি তিনি। একাই করে গেছেন স্বপ্নপূরণের লড়াই।

অনেকেই আবুল মুনসুর ফকিরের মতো একজন ভিক্ষুকের জনপ্রতিনিধি হতে চাওয়ার চেষ্টাকে পাগলামি হিসেবে দেখেন। আবার অনেকেই এটিকে নির্বাচনে টাকার ছড়াছড়ি, কালো টাকা ও দুর্নীতির রাজনীতির বিরুদ্ধে এক ধরনের নীরব প্রতিবাদ বলে মনে করেন।

বৈলর গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব আলম বলেন, ‘কতজনকে যোগ্য মনে করে ভোট দিলাম। কিন্তু এলাকার বা সাধারণ মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন দেখিনি। অন্তত এই মানুষটা গরিবের কষ্ট জানে। এবার এই ফকিরকেই ভোট দিতে মন চায়।’

আরেকজন স্থানীয় ব্যবসায়ী বাদল শেখ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সে এমপি হবেন কিনা জানি না, কিন্তু তাঁর দাঁড়ানোটা অনেক রাজনীতিবিদের জন্য লজ্জার।’

আবুল মুনসুর ফকির বলেন, ‘আমি গরিব, আমি ভিক্ষা করি। কিন্তু দেশের নাগরিক হিসেবে আমারও ভোট দেওয়ার অধিকার আছে, নির্বাচনে দাঁড়ানোর অধিকার আছে। সংসদে গেলে গরিব মানুষের কথা বলব—এইটাই আমার স্বপ্ন।’

ত্রিশাল উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. তাজুল রায়হান বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী সব প্রার্থীর মনোনয়ন গ্রহণ করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মনোনয়ন দাখিলের মধ্য দিয়ে ত্রিশালে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক তৎপরতা ও নির্বাচনী আমেজ জোরালো হয়ে উঠেছে। তবে তাবড় তাবড় প্রার্থীদের ভিড়ে ভিক্ষুক আবুল মুনসুর ফকিরের উপস্থিতি নির্বাচনী মাঠে এনেছে এক ভিন্ন মাত্রা, যা অনেকের কাছে গণতন্ত্রের প্রকৃত সৌন্দর্যের প্রতীক হয়ে উঠেছে। এলাকাবাসী মনে করে, সময়ই বলে দেবে, ব্যালটের রায়ে আবুল মুনসুরের স্বপ্ন কত দূর এগোয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক প্রতিমন্ত্রী বাবরের আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেন তাঁর স্ত্রী

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
তাহমিনা জামান। ছবি: সংগৃহীত
তাহমিনা জামান। ছবি: সংগৃহীত

নেত্রকোনা-৪ (মদন, মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরী) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। একই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাঁর স্ত্রী তাহমিনা জামান শ্রাবণী।

আজ সোমবার বিকেলে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন লুৎফুজ্জামান বাবর। এরপর তাহমিনা জামান শ্রাবণীর পক্ষে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন বাবরের ব্যক্তিগত সহকারী মির্জা হায়দার আলী।

নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক মো. সাইফুর রহমান এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

শ্রাবণী এর আগে ২০১৮ সালে এই আসনে নির্বাচন করেন। তবে এই আসনে এবার তিনজন নারী প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। অন্য দুজন হলেন সিপিবির জলি তালুকদার ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির চম্পা রানী সরকার।

অন্য প্রার্থীরা হলেন জামায়াতে ইসলামীর মো. আল হেলাল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির জলি তালুকদার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির চম্পা রানী সরকার ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মোখলেছুর রহমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পটুয়াখালী-৩ আসনে নুর ও হাসান মামুনের মনোনয়নপত্র দাখিল

দশমিনা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি 
নুরুল হক নুর-হাসান মামুন। ফাইল ছবি
নুরুল হক নুর-হাসান মামুন। ফাইল ছবি

পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে হাসান মামুনসহ আরও দুজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

আজ সোমবার দশমিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

জানা গেছে, যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দল হিসেবে দলীয় প্রার্থী না দিয়ে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে আসনটি ছেড়ে দিয়েছে বিএনপি। তবে এই আসনটিতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা নিয়ে শক্ত অবস্থানে ছিল বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন।

গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে আসন সমঝোতা হলেও গলাচিপা-দশমিনা আসনটি ছাড়তে নারাজ বিএনপির নেতা-কর্মীরা। ২৪ ডিসেম্বর হাসান মামুনের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন গলাচিপা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান।

জানতে চাইলে হাসান মামুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, এখানের স্থানীয় বিএনপি ও সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। দল যে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবে। সেই সাংগঠনিক ব্যবস্থা আমি গ্রহণ করেই এসেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গণঅধিকার পরিষদ কোনো দলের সঙ্গে বিলীন হয়নি: নুর

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নুরুল হক নুর। ছবি: আজকের পত্রিকা
গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নুরুল হক নুর। ছবি: আজকের পত্রিকা

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, এনসিপি জামায়াতে বিলীন হয়ে যায়নি এবং গণঅধিকার পরিষদও কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিলীন হয়নি। গণঅধিকার পরিষদ একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বতন্ত্র অবস্থানেই রয়েছে।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

নুরুল হক নুর বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী যে সরকার গঠিত হবে, তা হবে একটি ঐতিহাসিক সরকার। এই সরকারই জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি আরও বলেন, ‘আমরা প্রকৃত অর্থেই নবীন ও তরুণ রাজনৈতিক শক্তি। অত্যন্ত প্রতিকূল সময়ের মধ্যে রাজনীতি করেছি। সে কারণে প্রত্যাশিতভাবে সারা দেশে সংগঠিত হতে পারিনি। এনসিপি আমাদের চেয়েও নবীন; তারাও সে অর্থে এখনো পূর্ণাঙ্গভাবে সংগঠিত হতে পারেনি।’

বিএনপির প্রসঙ্গ টেনে ভিপি নুর বলেন, ‘বিএনপির মতো একটি দল ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থেকেও টিকে ছিল এবং ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সময় ধরে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়েছে। দীর্ঘ এই লড়াইয়ের পর দলটি আবার ক্ষমতায় আসছে।’

রাজনীতিতে শর্টকাট কোনো পথ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা নিজেদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, দেশকে স্থিতিশীল রাখা এবং এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে বিএনপির বিকল্প কোনো রাজনৈতিক শক্তি নেই। বিএনপি ছাড়া অন্য কেউ ক্ষমতায় এলে রাষ্ট্র পরিচালনা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা কঠিন হবে। এতে দেশ আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মুখে পড়ে বিপর্যয়ের দিকে যেতে পারে।’

নুর আরও বলেন, ‘এ কারণেই আমাদের দলীয় কিছু ক্ষতি হলেও জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিএনপির সঙ্গে অ্যালায়েন্স করে তাদের ক্ষমতায় আনতে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা মাঠে কাজ করছি।’

এ সময় পটুয়াখালী জেলা যুবদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শিপলু খান, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ইখতিয়ার রহমান কবিরসহ গণঅধিকার পরিষদের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত