Ajker Patrika

আমিনবাজারে ৬ খুন মামলার রায় ২ ডিসেম্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২২ নভেম্বর ২০২১, ১৫: ৩২
আমিনবাজারে ৬ খুন মামলার রায় ২ ডিসেম্বর

সাভারের আমিনবাজারে বড়দেশী গ্রামে ছয় ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আগামী ২ ডিসেম্বর। আজ সোমবার ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ইসমত জাহান এই তারিখ ধার্য করেন।

ওই আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) শাকিলা জিয়াছমিন (মিতু) আজকের পত্রিকাকে বলেন, আজ সোমবার মামলার যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আদালত রায়ের তারিখ ধার্য করেছেন।

রায়ের তারিখ ধার্য করার সঙ্গে সঙ্গে এই মামলায় জামিনে থাকা ৫১ আসামির জামিন বাতিল করেন আদালত। তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রায়ের তারিখে প্রত্যেককে আদালতে হাজির করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

২০১১ সালের ১৭ জুলাই শবে বরাতের রাতে সাভারের আমিনবাজারের বড়দেশী গ্রামের কেবলার চরে ডাকাত সন্দেহে ছয় ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নিহতরা হলেন ধানমন্ডির ম্যাপললিফের এ লেভেলের ছাত্র শামস রহিম, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শ্রেণির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ইব্রাহিম খলিল, একই কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তৌহিদুর রহমান পলাশ, তেজগাঁও কলেজের ব্যবস্থাপনা প্রথম বর্ষের ছাত্র টিপু সুলতান, মিরপুরের বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সিতাব জাবীর মুনিব এবং বাঙলা কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র কামরুজ্জামান কান্ত। ওই ঘটনায় নিহতদের বন্ধু আল-আমিন গুরুতর আহত হলেও বেঁচে যান। 

ঘটনার পর ডাকাতির অভিযোগে আল-আমিনসহ নিহতদের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় ডাকাতি মামলা করেন স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী আবদুল মালেক। ওই সময় পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা গ্রামবাসীকে আসামি করে সাভার মডেল থানায় আরেকটি মামলা করে। 

পুলিশ, সিআইডির হাত ঘুরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে চাঞ্চল্যকর এ মামলার তদন্তভার র্যাবের হাতে দেওয়া হয়। তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারি র্যাবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ উদ্দিন আহমেদ ৬০ জনকে অভিযুক্ত করে হত্যা মামলায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
 
চার্জশিটে বলা হয়, আসামিরা নিরীহ ছাত্রদের হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে জখম করে। পরবর্তীকালে হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিতে মসজিদের মাইকে সবাইকে ডাকাত আসার ঘোষণা দেয় এবং থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করে। বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দ্বারা আঘাত করে তাদের হত্যা করা হয়।

২০১৩ সালের ৮ জুলাই আদালত ৬০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের মাধ্যমে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু করেন। ঘটনায় বেঁচে যাওয়া একমাত্র ভিকটিম আল আমিনকে একই ঘটনায় করা ডাকাতি মামলা থেকে সেদিন (চার্জ গঠনের সময়) অব্যাহতি দেওয়া হয়। 

বিচার চলাকালে মামলায় ৫৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। ঘটনার পর এ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ১৪ আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন। 

চার্জশিটভুক্ত ৬০ আসামি হলেন, ডাকাতি মামলার বাদী আব্দুল মালেক, সাঈদ মেম্বর, আব্দুর রশিদ, ইসমাইল হোসেন রেফু, নিহর ওরফে জমশের আলী, মীর হোসেন, মজিবর রহমান, কবির হোসেন, আনোয়ার হোসেন, রজুর আলী সোহাগ, আলম, রানা, আ. হালিম, আসলাম মিয়া, শাহীন আহমেদ, ফরিদ খান, রাজীব হোসেন, হাতকাটা রহিম, মো. ওয়াসিম, সেলিম মোল্লা, সানোয়ার হোসেন, শামসুল হক ওরফে শামচু মেম্বার, রাশেদ, সাইফুল, সাত্তার, সেলিম, মনির, ছাব্বির আহম্মেদ, আলমগীর, আনোয়ার হোসেন আনু, মোবারক হোসেন, অখিল খন্দকার, বশির, রুবেল, নূর ইসলাম, আনিস, সালেহ আহমেদ, শাহাদাত হোসেন রুবেল, টুটুল, অখিল, মাসুদ, নিজামউদ্দিন, মোখলেছ, কালাম, আফজাল, বাদশা মিয়া, তোতন, সাইফুল, রহিম, শাহজাহান, সুলতান, সোহাগ, লেমন, সায়মন, এনায়েত, হয়দার, খালেদ, ইমান আলী, দুলাল ও আলম। 

এদের মধ্যে রাশেদুল ইসলাম ও কবির হোসেন মারা গেছেন।

এদিকে মামলায় সাত আসামি পলাতক রয়েছেন। এরা হলেন মনির, আফজাল, আলম, সাইফুল, মাসুদ, মোবারক ও সাত্তার। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রামেকে মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথমবারের মতো মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথমবারের মতো মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রথমবারের মতো মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানসিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। অনেকের ক্ষেত্রে ভর্তি রাখার প্রয়োজন থাকলেও সেটি সম্ভব হতো না। কিছু কিছু রোগী রাখা হতো মেডিসিন বিভাগেই।

এবার প্রতিষ্ঠার ৬৭ বছর পর হাসপাতালটিতে পূর্ণাঙ্গ মনোরোগ ওয়ার্ড চালু হলো। এ ওয়ার্ডে ২৫টি শয্যা আছে। এর মধ্যে পুরুষদের জন্য ১০টি, নারীদের জন্য সাতটি, শিশু-কিশোরদের জন্য পাঁচটি এবং উচ্চ পর্যবেক্ষণের জন্য তিনটি শয্যা সংরক্ষিত। এ ছাড়া রোগীদের থেরাপি ও কাউন্সেলিং রুমসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার সৃষ্টি করা হয়েছে এ ওয়ার্ডে।

রামেক হাসপাতালের সদ্যবিদায়ী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদের উদ্যোগে হাসপাতালের পুরাতন আইসিইউ ভবনে এই ওয়ার্ড করা হয়েছে। গত বুধবার তিনি এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামসহ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী মার্চেই ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন (ডব্লিউএফএমই) থেকে একটি প্রতিনিধিদল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনে আসবে। তারা মনোরোগ বিভাগের ওয়ার্ড না পেলে কলেজের পয়েন্ট কমবে। এ ছাড়া মেডিকেল কলেজের অ্যাক্রেডিটেশনেও সমস্যা হতে পারে। তখন এ কলেজের শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে পড়াশোনা করতে যাওয়ার সুযোগ কমবে। এ ছাড়া এফসিপিএস এবং ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্যও এই ওয়ার্ডটি জরুরি ছিল।

তাই রাজশাহী মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে এই ওয়ার্ড চালু করার জন্য হাসপাতাল পরিচালকের কাছে অনুরোধ করা হয়। সবকিছু শুনে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ এই ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নেন। ওয়ার্ডে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও নার্স দেওয়া হয়েছে। ওয়ার্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মোস্তফা আলী।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় এ হাসপাতালে যে ৬৭ বছরেও মানসিক রোগীদের জন্য ওয়ার্ড চালু হয়নি, এটিই অবাক করার বিষয়। প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চালু করেছি। এখন থেকে এ অঞ্চলের মানসিক রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি থেকেও চিকিৎসা নিতে পারবে।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহাম্মদ রামেক হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি। এরপর তিনি হাসপাতাল ও রোগীদের কল্যাণে নতুন অনেক উদ্যোগ নিয়ে বাস্তবায়ন করেছেন। হাসপাতালকে করে তুলেছেন রোগীবান্ধব। বাড়িয়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসাসেবার মান। বৃহস্পতিবার তিনি নতুন পরিচালক পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।

মানসিক রোগীদের জন্য নতুন ওয়ার্ড চালুর আগে গেল ২৩ অক্টোবর শুধু সাপে কাটা রোগীদের জন্য হাসপাতালে বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করেন শামীম আহাম্মদ। এরপর এখন পর্যন্ত হাসপাতালে একজন সাপে কাটা রোগীরও মৃত্যু হয়নি। আগে প্রায় প্রতিদিনই সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু হতো এ হাসপাতালে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মান্নাকে ৩৮ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ পরিশোধে ‘কলব্যাক নোটিশ’

শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ২০
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। ফাইল ছবি
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। ফাইল ছবি

আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার বিরুদ্ধে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা খেলাপি ঋণ পরিশোধে ‘কলব্যাক নোটিশ’ জারি করেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, বগুড়া শাখা। গত বুধবার ইসলামী ব্যাংক, বগুড়া শাখার প্রধান মো. তৌহিদ রেজার স্বাক্ষরে এ নোটিশ ইস্যু করা হয়।

নোটিশে বলা হয়েছে, ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না করা হলে ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে। ব্যাংকের নোটিশ অনুযায়ী, ২০১০ সালে ২২ কোটি টাকার বিনিয়োগ অনুমোদন করা হলেও মুনাফা, চার্জ ও জরিমানা পরিশোধ না করায় বর্তমানে মোট বকেয়া দাঁড়িয়েছে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। নোটিশে বলা হয়, আফাকু কোল্ড স্টোরেজ একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও মান্না ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণ পরিশোধ করেননি। বারবার নোটিশ দেওয়া হলেও টাকা পরিশোধের কোনো চেষ্টাও করেননি তিনি।

গত বুধবার ইসলামী ব্যাংক, বগুড়া শাখার প্রধান মো. তৌহিদ রেজার স্বাক্ষরে এই নোটিশ ইস্যু করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
গত বুধবার ইসলামী ব্যাংক, বগুড়া শাখার প্রধান মো. তৌহিদ রেজার স্বাক্ষরে এই নোটিশ ইস্যু করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়া শাখাপ্রধান তৌহিদ রেজা স্বাক্ষরিত নোটিশে আরও বলা হয়, ‘মঞ্জুরিপত্রের নিয়মানুযায়ী প্রতিটি ডিলে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে কিস্তির টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও আপনাকে/আপনাদেরকে মৌখিকভাবে, ব্যক্তিগতভাবে ও মোবাইল ফোনে বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও আপনি/আপনারা তা পরিশোধ করেননি। ইতিপূর্বে আপনাকে লিখিতভাবে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে, তবুও বিনিয়োগের দায় পরিশোধ করেননি। আপনার/আপনাদের লেনদেনের পরিস্থিতি দেখে আমাদের কাছে অনুমিত হচ্ছে যে, আপনার/আপনাদের সঙ্গে আমাদের আর ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অতএব, আগামী ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বিনিয়োগের সমুদয় দায় ৩৮৪.৭৬ মিলিয়ন টাকা পরিশোধ করে হিসাবসমূহ নিষ্পত্তি করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য থাকবে।’

এদিকে, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসন থেকে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। কিন্তু গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) তৃতীয় অধ্যায় (নির্বাচন) ১২(১)(ঠ) ধারা অনুসারে কোনো ঋণগ্রহীতা খেলাপি হলে তিনি নির্বাচনে অযোগ্য বিবেচিত হবেন।

এ বিষয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ আছে, এটা সঠিক। তবে চিঠির বিষয়ে এখনো কিছু জানি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফরিদপুরে পাইলিংয়ের সময় ধসে পড়ল পাশের ভবন

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ১০
একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা
একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরে একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়েছে। এতে ভবনটিসহ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভবনে অবস্থিত আরএফএল কোম্পানির বেস্ট বাই শোরুম। তবে প্রাণে বেঁচে গেছেন সেখানে কর্মরতরা। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনমালিকের অভিযোগ, নিরাপত্তাব্যবস্থার জন্য নির্মাণাধীন ভবনমালিকদের বলা হলেও কর্ণপাত না করে নিয়মবহির্ভূতভাবে কাজ করে যাচ্ছিলেন। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট পৌর কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা।

আজ শুক্রবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শহরের প্রাণকেন্দ্র নিলটুলি স্বর্ণকারপট্টির মুজিব সড়ক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের একাধিক টিম।

সরেজমিন দেখা গেছে, একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ চলছিল। নির্মাণাধীন এই ভবনের মালিক স্থানীয় সঞ্জয় কর্মকার, অজয় কর্মকার ও সেলিম নামে আরেক ব্যক্তি। পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পার্শ্ববর্তী ভবনসংলগ্ন কোনো নিরাপত্তাব্যবস্থা বা প্যারাসাইলিং ব্যবস্থা ছিল না। এই অবস্থায় পাইলিংয়ের (নিচের অংশ) কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন নির্মাণশ্রমিকেরা। হঠাৎ করেই ভবনটির একাংশ ধসে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে সেখান থেকে দৌড়ে সরে পড়েন নির্মাণশ্রমিক ও শোরুমটির কর্মচারীরা।

বেস্ট বাইয়ের কর্মীরা জানান, তারা সকালে এসে ফ্লোরের টাইলসে ফাটল দেখতে পান। ফাটল ধীরে ধীরে বড় হতে থাকলে ক্যাশ কাউন্টার টেবিলটা সরিয়ে ফেলেন, এর মধ্যেই ধসে পড়ে ভবনের এক পাশ।

ধসে পড়া ভবন ও বেস্ট বাই ফ্রাঞ্চাইজের মালিক মনিরা খাতুনের দাবি, এ ঘটনায় তাঁর ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে এবং তিনি এর বিচার দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘বারবার নির্মাণাধীন ভবনমালিকদের সতর্ক করা হয়েছে এবং নিয়ম মেনে কাজ করতে বলেছি। কিন্তু তাঁরা রাতের আঁধারে আমার ভবনের নিচের মাটি সরিয়ে ফেলেছে, যার কারণে আজকের এই দুর্ঘটনা। পৌরসভার নিয়ম অনুযায়ী ৩ ফুট দূরত্ব রেখে কাজ করার কথা থাকলেও নিয়মের তোয়াক্কা না করেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। আজ সকালে উল্টো আমার কর্মচারীদের হুমকি-ধমকিও দেওয়া হয়।’

একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা
একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঘটনাস্থলে ছুটে আসা শহরের বাসিন্দা ও জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মোজাফফর আলী মুসা পৌরসভা কর্তৃপক্ষের গাফিলতি রয়েছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘ভবন নির্মাণ করতে হলে পৌরসভার অনুমোদনের প্রয়োজন হয় এবং তা সঠিকভাবে তদারকির দায়িত্ব তাদের। যদি সঠিকভাবে তদারকি হতো তাহলে এমন দুর্ঘটনা না-ও ঘটতে পারত।’

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ভবনমালিকদের একজন সঞ্জয় সাহার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ঘটনাস্থলে আসা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক মাসুদ আলম জানান, খবর পেয়ে তাঁরা এখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। তবে কোনো অভিযোগ পায়নি পুলিশ। অভিযোগ পেলে সেটা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে পৌরসভার প্রশাসক ও ফরিদপুর স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. সোহরাব হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনাটি আমার জানা নেই, খোঁজ নিয়ে বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাবিতে শেখ পরিবারের নামে থাকা ৪ হলের নাম পরিবর্তন

জাবি প্রতিনিধি 
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শেখ হাসিনা ও তাঁর স্বজনদের নামে থাকা চারটি আবাসিক হলের নাম পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আজ শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এ বি এম আজিজুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আজিজুর রহমান বলেন, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় শেখ পরিবারের নামে থাকা চারটি হলের নাম পরিবর্তন করে নতুন নামকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

এসব হলের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে রাখ হয়েছে ‘শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক হল’, শেখ রাসেল হলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে ‘নবাব সলিমুল্লাহ হল’। এ ছাড়া শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন করে ‘জুলাই চব্বিশ জাগরণী হল’ এবং বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম পরিবর্তন করে ‘শহীদ ফেলানী খাতুন হল’ নাম রাখা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত