Ajker Patrika

অর্ধেক শিক্ষার্থী ক্লাসে নেই

শহীদুল ইসলাম, ঢাকা
আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২১, ০৮: ০৭
অর্ধেক শিক্ষার্থী ক্লাসে নেই

এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের উপস্থিতি দিন দিন কমছেএসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে সরকার করোনার সংক্রমণ পাঁচ শতাংশের নিচে নামার আগেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়েছে।

তবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাসে শিক্ষার্থী কিছুটা বাড়লেও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী ক্লাসে আসে না। যাদের কথা মাথায় রেখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছে, সেই এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের উপস্থিতি দিন দিন কমছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এখনো করোনার ভয়, এসএসসি ও এইচএসসিতে মাত্র তিন বিষয়ে পরীক্ষা, বন্ধের সময় বাল্যবিবাহ, পরিবারের সঙ্গে আয়-রোজগারের কাজে যোগ দেওয়াসহ নানা কারণে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে পদক্ষেপ নিতে হবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, গত ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর ক্লাসে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়লেও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের ক্লাসে উপস্থিতি দিন দিন কমছে। এ অবস্থায় দুর্গাপূজার ছুটি শেষে এসএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষা শুরুর পর এইচএসসির ক্লাস বন্ধ করার চিন্তা করছে সরকার।

রাজধানীর মণিপুর উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক সায়েদা নার্গিস বলেন, ‘আমাদের সব শিক্ষার্থী স্কুলে আসছেন। তবে এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার আগে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি সব সময় কিছুটা কম থাকে। এটি স্বাভাবিক।’

ডেমরার সামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. মাহবুবুর রহমান মোল্লা বলেন, ‘আধা ঘণ্টার দুটি ক্লাসে অংশ নিতে অনেক শিক্ষার্থীই এখনো ক্লাসে আসছে না। দীর্ঘ দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থী গ্রামে চলে গেছে। অনেকে এখনো ঢাকায় ফেরেনি। এ ছাড়া বার্ষিক পরীক্ষা হবে কি হবে না, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না থাকায় অনেকে ক্লাসে নিয়মিত আসছে না।’

মাহবুবুর রহমানের মতো মনে করেন ঢাকা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সংগঠন অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু। তিনি বলেন, অল্প সময়ের জন্য দুয়েকটি বিষয়ের ক্লাসে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ কম। করোনার সংক্রমণ কমলেও অভিভাবকেরা এখনো সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন।

ঢাকার বাইরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও রয়েছে মিশ্র অবস্থা। প্রাথমিকে উপস্থিতি বাড়লেও মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকে উপস্থিতি এখনো কম। চট্টগ্রাম নগরের সাউথ এশিয়ান কলেজের প্রধান নির্বাহী তানভীরুল ইসলাম বলছেন, কলেজে ৬০ শতাংশের মতো শিক্ষার্থী আসছে, তাও অনিয়মিত। কেউ কেউ পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছে।

প্রতিদিন ক্লাস হয় না বলে অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে আসছে না। আবার দীর্ঘ দেড় বছর পর স্কুল খোলায় অনেকের মধ্যে পড়ালেখা নিয়ে আগ্রহ কম। এমনটি মনে করেন বরিশাল সদর উপজেলার আ. মজিদ খান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা। তাঁর স্কুলে ৭৫ ভাগ ছাত্র-ছাত্রী আসছে। 
ঠিক উল্টো চিত্র বরিশাল ইসলামিয়া কলেজে। এই কলেজের সহকারী অধ্যাপক আমিনুর রহমান ঝান্ডা বলেন, উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ শিক্ষার্থী ক্লাসে আসছে।

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল নগরীর চহুতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঞ্চয় কুমার খান মনে করেন, করোনায় অনেক পরিবার পেশা বদল করে এলাকা ছেড়ে গেছে। আবার কোনো কোনো ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গেছে।

নীলফামারী জলঢাকা উপজেলার আলহাজ মোবারক হোসেন অনির্বাণ বিদ্যাতীর্থ উচ্চবিদ্যালয়ে মোট ৭৯০ শিক্ষার্থী। স্কুল চালুর পর গড়ে ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী আসছে না। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রোকনুজ্জামান শাহিন বলেন, সপ্তম থেকে দশম শ্রেণির প্রায় ৩০ ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গেছে।

ময়মনসিংহ নগরীর গুহাইলকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপস্থিতি প্রায় ৮০ শতাংশ বলে জানান সহকারী শিক্ষক শারমিন সুলতানা। নগরীর বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়েও প্রতিটি ক্লাসে গড়ে প্রায় ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্লাসে আসছে। স্কুলের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক আনোয়ার কাদের বলেন, সর্দি জ্বর থাকলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ক্লাসে আসতে বারণ করা হয়।

শিক্ষাসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, যারা এখনো ক্লাসে আসছে না, তাদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এখন ৫২ শতাংশ এসএসসি এবং ৪১ শতাংশ এইচএসসি পরীক্ষার্থী ক্লাস করছে। এ ছাড়া দশম শ্রেণির ৫৩ শতাংশ, একাদশের ৪৯ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্লাস করছে। যেসব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি রয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠানে পঞ্চম শ্রেণির ৭১ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্লাস করছে। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত একেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একেক দিন একেক শ্রেণির ক্লাস হওয়ায় এসব শ্রেণির শিক্ষার্থী উপস্থিতির কোনো হিসাব হয়নি। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ৬০ শতাংশের কিছু বেশি শিক্ষার্থী ক্লাসে আসছে। 

এবার এসএসসি ও সমমান এবং এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের গ্রুপভিত্তিক তিনটি করে নৈর্বাচনিক বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। পরীক্ষার নম্বর কমিয়ে দেড় ঘণ্টা করে একেকটি পরীক্ষা নেওয়া হবে। ১৪ নভেম্বর থেকে এসএসসি ও ২ ডিসেম্বর থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে।

অধিদপ্তরের পরিচালক (মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন) অধ্যাপক মো. আমির হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মাত্র তিনটি করে বিষয়ে পরীক্ষা হবে।

সিলেবাসও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ কারণে অনেকে বাসায় পড়াশোনা করছে। করোনার ভয়েও অনেক অভিভাবক সন্তানদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাতে চাচ্ছেন না। তা ছাড়া দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনেকে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কাজে যোগ দিয়েছে। বন্ধের মধ্যে কোনো কোনো ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গেছে। এসব বিষয় মাথায় রেখে আমরা ধারণা করছি, ৭ শতাংশ শিক্ষার্থী আর পড়াশোনার মধ্যে নেই।’

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পলিসি এবং অপারেশন) মনীষ চাকমা বলেন, ‘বিদ্যালয় খোলার পর প্রথম দিকে প্রাথমিকে প্রায় ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্লাসে এলেও এখন প্রায় ৮০ শতাংশ আসছে। প্রাথমিকে উপস্থিতি দিন দিন বাড়ছে।’

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি পেতে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ জন্য অনেকে ক্লাসে আসছে। করোনার সংক্রমণ কমে আসায় অভিভাবকেরাও সন্তানদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন। এরপরও ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী কেন স্কুলে আসছে না, তাদের বিষয়ে খোঁজ নিতে শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষককের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক এমপি সুকুমার রঞ্জন ঘোষ মারা গেছেন

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
সুকুমার রঞ্জন ঘোষ। ছবি: সংগৃহীত
সুকুমার রঞ্জন ঘোষ। ছবি: সংগৃহীত

মুন্সিগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সুকুমার রঞ্জন ঘোষ (৭০) মারা গেছেন। আজ সোমবার ভোরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, দুই মেয়েসহ বহু আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

পরিবারসূত্রে জানা যায়, সুকুমার রঞ্জন ঘোষ দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর ধরে পারকিনসন রোগে ভুগছিলেন। তিনি ধানমন্ডির বাসায় থাকতেন। গত কয়েক দিন ধরে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।

সুকুমার রঞ্জন ঘোষ শ্রীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ শ্রীনগর উপজেলা সদরে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর পর থেকে অসুস্থ ছিলেন।

উল্লেখ্য, সুকুমার রঞ্জন ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী (কুলা প্রতীক) ও সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনকে (ধানের শীষ) পরাজিত করে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে চমক সৃষ্টি করেন। এরপর ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে নিহত দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক, স্ত্রীকে চাকরির আশ্বাস

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ১০
ময়মনসিংহে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক। ছবি: আজকের পত্রিকা
ময়মনসিংহে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহের ভালুকায় গণপিটুনিতে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসের বাড়িতে শোকের মাতম এখনো থামেনি। একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষটিকে হারিয়ে পুরো পরিবার যেন শোকে কাতর।

প্রতিদিনই বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থার পক্ষ থেকে দিপুর পরিবারের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। দেওয়া হচ্ছে আর্থিক সহায়তাসহ নানা আশ্বাস। এ ছাড়া দিপুর পরিবারের জন্য বাড়িতে সার্বক্ষণিকভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।

আজ সোমবার ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক সাইফুর রহমান নিহত দিপু দাসের বাড়ি পরিদর্শন করেছেন। তাঁর সঙ্গে তারাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলামসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা দিপুর পরিবারের খোঁজখবর নেন এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ ২৫ হাজার টাকা, শীতবস্ত্র, শুকনো খাবার ও একটি সেলাই মেশিন পরিবারটিকে দেওয়া হয়। পাশাপাশি দিপুর স্ত্রীকে চাকরি দেওয়ার ঘোষণাও দেন জেলা প্রশাসক।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক সাইফুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিহতের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে তাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। সহযোগিতাসহ সব সময় তাদের পাশে থাকার কথা জানিয়েছি।’

উল্লেখ্য, ১৮ ডিসেম্বর রাতে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে পোশাকশ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করে উত্তেজিত জনতা। পরে তাঁর মরদেহ গাছে ঝুলিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।

ময়মনসিংহে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক। ছবি: আজকের পত্রিকা
ময়মনসিংহে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক। ছবি: আজকের পত্রিকা

এ ঘটনায় নিহতে দিপুর ছোট ভাই অপু দাস ১৯ ডিসেম্বর বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকে আসামি করে ভালুকা থানায় একটি মামলা করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডে জড়িত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

প্রতিবাদ সমাবেশ

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে ভালুকায় দিপু দাস হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ময়মনসিংহ নগরী ও তারাকান্দায় মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছে। আজ সচেতন ময়মনসিংহবাসীর ব্যানারে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে বক্তব্য দেন দিপু দাসের ছোট ভাই অপু দাস, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতা আল নুর মো. আয়াস, হৃদয় খান, সাংবাদিক মোজাম্মেল খোকন, কাজী মোহাম্মদ মোস্তফা প্রমুখ।

একই দাবিতে দিপু দাসের নিজ উপজেলা তারাকান্দায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ফ্রন্ট ও দিপু দাসের পরিবার। আজ সকালে তারাকান্দা বাজারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এতে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের তারাকান্দা উপজেলা সভাপতি বিজন কুমার ভৌমিক রতন, সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত শর্মা সরকার কাঞ্চনসহ দিপুর পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য দেন।

মানববন্ধনে বক্তারা কারখানার মালিকসহ প্রকৃত দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন এবং দিপু দাসের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দাবি জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ শিক্ষার্থীদের, যানজটে ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় আট দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন রহমতপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার বেলা ১১টা থেকে শিক্ষার্থীরা রহমতপুর এলাকায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেন। ঘণ্টা তিনেক ধরে চলা অবরোধে মহাসড়কের উভয় পাশে যানজট তৈরি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন চালক ও যাত্রীরা।

ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের পাবলিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গত সপ্তাহ থেকে ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়েছেন তাঁরা।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষাকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) থেকে পৃথক করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান করা, সব কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে সহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদ শুধু ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের জন্য সংরক্ষণ, ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের বেসরকারি চাকরিতে ন্যূনতম দশম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ এবং উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের চাকরিতে যোগদানের পর ছয় মাসের বনিয়াদি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘৯ মাস আগে আট দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তখন শুধু আশ্বাস দিয়েছিল, বাস্তব কোনো উদ্যোগ নেয়নি।’ আন্দোলনকারীরা বলেন, ‘যত দিন পর্যন্ত আমাদের দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মেনে না নেবে, তত দিন ক্যাম্পাস লকডাউন, প্রশাসনিক ভবন বন্ধসহ এই আন্দোলন চলবে।’

এ বিষয়ে রহমতপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ কিশোর কুমার মজুমদার বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা তাঁদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন। তবে এসব দাবি বাস্তবায়নের বিষয়টি আমাদের এখতিয়ারভুক্ত নয়। এ বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তিতাসে শাশুড়িকে চুবিয়ে হত্যায় জামাতা গ্রেপ্তার

হোমনা (কুমিল্লা) সংবাদদাতা
মো. জামাল সিকদার। ছবি: সংগৃহীত
মো. জামাল সিকদার। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় শাশুড়িকে খালে চুবিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি জামাতা মো. জামাল সিকদারকে (৫০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গতকাল রোববার রাতে ঢাকার সাভারে আশুলিয়া থানা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনী। আজ সোমবার সকালে তাঁকে তিতাস থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরে তিতাস থানা-পুলিশ দুপুরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠায়।

গত ১০ অক্টোবর উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে সুফিয়া খাতুন নামে (৭০) এক বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করা হয়। পারিবারিক কলহের জেরে তাঁর জামাতা জামাল তাঁকে বসতবাড়ির কাছে খালে চুবিয়ে হত্যা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। খবর পেয়ে তিতাস থানা-পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার পর থেকে পালিয়ে ছিলেন জামাল।

জানা গেছে, জামাল সুফিয়া বেগমের ভাই দিলু সিকদারের ছেলে। তাঁর সঙ্গে সুফিয়ার মেয়ে রহিমা বেগমের বিয়ে হয়। শ্বশুরবাড়ির পাশেই জামালের বাড়ি।

তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালিদ সাইফুল্লাহ জানান, শাশুড়িকে চুবিয়ে হত্যার প্রধান আসামি জামাল উদ্দিন শিকদারকে যৌথ বাহিনীর সহায়তায় গ্রেপ্তার করে আজ সকালে থানায় আনা হয়। পরে দুপুরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত