Ajker Patrika

বিষণ্ণ চারুকলায় নিভৃতে চলছে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
বিষণ্ণ চারুকলায় নিভৃতে চলছে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি

আসছে বৈশাখ। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই বাংলা নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে শুরু হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি। করোনা মহামারির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। তাই শিক্ষক–শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর চারুকলার চেনা দৃশ্যটি নেই। চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারি–১–এর ভেতরে অনেকটা নিভৃতেই চলছে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন। বাইরে দেয়ালচিত্রের জন্য গেলবারের চিত্রকর্ম মুছে প্রস্তুত করা হলেও এখনও রঙের কোনো আঁচড় পড়েনি।

চরুকলার গেট দিয়ে ঢোকার সময়ই চোখ চলে গেল বাইরের সাদা দেয়ালের দিকে। লোক মোটিফে রাঙানো এই চেনা দেয়ালই যেন পরিবর্তিত পরিস্থিতির কথা স্মরণ করিয়ে দিল। প্রতিবারই বৈশাখের আগে আগে আগেরবারের দেয়ালচিত্র মুছে নতুন দেয়ালচিত্রের জন্য একে প্রস্তুত করা হয়। কিন্তু এই অবস্থাটি থাকে খুবই অল্প সময়ের জন্য। এবার আরও আগেই আগের চিত্র মোছা হলেও এখনো পড়েনি সেখানে কোনো তুলির আঁচড়। চারুকলা অনুষদের এককালের প্রশস্ত সড়কের উপর দৃষ্টি আটকে দেওয়া মেট্রোরেলের কাঠামোগুলো যখন সঙ্গত হলো, তখন তা সত্যিকার অর্থেই বিষাদের আবহ তৈরি করে।

একদিকে করোনা পরিস্থিতি, অন্যদিকে উন্নয়নের দেয়াল। এ দুইয়ের মাঝেই যেন আটকে পড়েছে তাবৎ মঙ্গলাকাঙ্ক্ষা। সে যাই হোক, করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার মঙ্গল শোভাযাত্রা হবে সীমিত পরিসরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ও অংশগ্রহণ এবার নেই বললেই চলে। আয়োজনের প্রথম দিন গতকাল মঙ্গলবার দেয়ালচিত্রের কোনো কাজ না হলেও মুখোশ তৈরির কাজ করেছেন অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকেরা। আজ বুধবারও জয়নুল গ্যালারির ভেতরে বেশ কয়েকজন শিক্ষককে দেখা গেল মুখোশ তৈরির কাজ করতে।

কাগজের বদলে এবার মুখোশ তৈরি করা হচ্ছে ফেসশিল্ড তৈরির সরঞ্জাম প্লাস্টিক শিটের উপর। ছবি: আজকের পত্রিকাগ্যালারির ভেতরে কাজে ব্যস্ত শিক্ষকদের সঙ্গে কথা হলো। সিরামিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. রবিউল ইসলাম বললেন, ‘এবার শোভাযাত্রা পরিভ্রমণ করবে না। স্থির থাকবে। মঙ্গল শোভাযাত্রাকে অব্যাহত রাখা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে সীমিত পরিসরেই এ শোভাযাত্রা করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ হিসেবে একশটি মুখোশ তৈরি করা হচ্ছে। শিক্ষক–শিক্ষার্থী মিলিয়ে শতজন শত মুখোশ পরে চারুকলার ভেতরেই অবস্থান করবেন। এবার বড় কোনো কাঠামো হচ্ছে না। এই মুখোশগুলো থাকবে।’

এবার অবশ্য প্রচলিত উপাদানগুলোর বদলে নতুন উপাদান দিয়ে মুখোশ তৈরি করা হচ্ছে। গত বছর করোনা পরিস্থিতিতে দেশে যখন জরুরি সুরক্ষা সরঞ্জাম ফেসশিল্ডের অভাব দেখা দিল, তখন চারুকলার শিক্ষকেরা চাঁদা তুলে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কিনে ফেসশিল্ড তৈরি করে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসকদের মধ্যে তা বিতরণ করেছেন। সেই ফেসশিল্ড তৈরির সরঞ্জাম স্বচ্ছ প্লাস্টিকের উপরই এবার মুখোশ আঁকার কাজ করছেন শিক্ষকেরা। সঙ্গে থাকছে গেলবারের প্রচলিত পন্থায় তৈরি বড় মুখোশগুলোও। থাকছে কাগজের তৈরি কাঠামো ও মুকুট।

মুখোশ তৈরির উপাদান হিসেবে ফেসশিল্ডের উপাদানকে বেছে নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে প্রাচ্যকলা অনুষদের সহকারী অধ্যাপক দীপ্তি দত্ত বললেন, ‘গেলবার সুরক্ষা উপাদান হিসেবে ফেসশিল্ড তৈরির জন্য এগুলো আনা হয়েছিল। এবার এই একই উপাদানকে মুখোশ তৈরির কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে একটি বার্তা থাকবে যে, করোনার এই সময়ে এই সুরক্ষানীতি যেন আমরা সবাই মেনে চলি।’

শোভাযাত্রায় থাকছে আগের তৈরি মুখোশগুলোও। ছবি: আজকের পত্রিকামুখোশসহ প্রয়োজনীয় অন্য উপাদানগুলো তৈরিতে ব্যস্ত শিক্ষকদের মধ্যেই হঠাৎ করে গ্যালারিতে এসে ঢুকলেন ড্রয়িং অ্যান্ড পেইন্টিং বিভাগের অধ্যাপক শিশির ভট্টাচার্য। এসেই সবাইকে তাগাদা দিতে শুরু করলেন। স্মরণ করিয়ে দিতে থাকলেন, সময় একেবারেই নেই। কে কী করেছে বা করছে তারও খোঁজ নিতে থাকলেন। গ্যালারির দেয়ালের সঙ্গে হেলান দিয়ে রাখা গেলবারের মুখোশগুলো দেখিয়ে সেগুলো সাজিয়ে রাখার জন্য নির্দেশ দিলেন এক ছাত্রকে।

এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন অনেকগুলো দিক থেকেই অন্যবারের চেয়ে আলাদা। এবারই প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রার পোস্টার নির্বাচন করা হয়েছে কর্মশালার মাধ্যমে। এই কর্মশালাও আবার হয়েছে চারুকলার বাইরে। এশিয়াটিক সোসাইটিতে হওয়া সেই কর্মশালায় অংশ নিয়েছিলেন ২৫ জন। ১৯৮৯ সালে ঢাকায় প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রার পোস্টার ডিজাইনার শিল্পী তরুণ ঘোষের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই কর্মশালা থেকে শিল্পী মো. আনিসুজ্জামান সোহেলের করা পোস্টার চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়। সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠেয় এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার স্লোগান ঠিক করা হয়েছে—‘কাল ভয়ঙ্করের বেশে এবার ঐ আসে সুন্দর।’ এই সুন্দরকে বরণের জন্য আগের জমকালো আয়োজন নেই। বিশেষত শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতি এক ভীষণ শূন্যতার আবহ তৈরি করে রেখেছে।

রবিউল ইসলাম জানালেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ বলে শিক্ষার্থীদের ডাকছি না এখনো। এখানে এখন পর্যন্ত দুজন শিক্ষার্থী যুক্ত হয়েছে। দেয়ালের কাজে আরও কয়েকজন থাকবে। আপাতত কাউকে ডাকছি না। তবে প্রয়োজন হলে পরে ডাকা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালের পাড় থেকে ৪৫০ বস্তা আলু জব্দ

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ২৬
জব্দ করা আলু। ছবি: আজকের পত্রিকা
জব্দ করা আলু। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা ৪৫০ বস্তা আলু জব্দ করেছে পুলিশ।

আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার মগড় ইউনিয়নের খাওখীর গ্রামের উত্তর পাশে কালিজিরা খালের পাড়ে মনির তালুকদারের জমি থেকে মালিকানাবিহীন এসব আলু জব্দ করা হয়। পরে জব্দ করা আলুগুলো মগড় ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. জামাল হোসেনের জিম্মায় রাখা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে এলাকাবাসী জানায়, গত বুধবার রাতে কয়েকজন অপরিচিত ব্যক্তি আলুভর্তি একটি বড় ট্রলার খাওখীর গ্রামের কালিজিরা খালের পাড়ে নিয়ে আসে। পরে ট্রলার থেকে আলুর বস্তাগুলো খালের পাশের মনির তালুকদারের জমিতে নামিয়ে রেখে খালি ট্রলারটি চলে যায়। প্রথমে এলাকাবাসী ধারণা করেছিল, আলুগুলো হয়তো কেউ কিনে রেখেছে এবং পরে নিয়ে যাবে। কিন্তু বুধবার রাত থেকে শনিবার দিন পর্যন্ত কেউ আলুগুলো নিতে না আসায় সেগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে।

পরে বিষয়টি মগড় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মিন্টু খানকে জানানো হলে তিনি নলছিটি থানা-পুলিশকে অবহিত করেন।

মিন্টু খান জানান, আলুর মালিককে খুঁজে না পেয়ে আজ পুলিশে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আলুগুলো জব্দ করে।

মগড় ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. জামাল হোসেন বলেন, ‘পুলিশ জব্দ করা আলুর বস্তাগুলো আপাতত আমার জিম্মায় রেখেছে।’

নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ৪৫০ বস্তা আলু জব্দ করা হয়েছে। আলুর কোনো বৈধ মালিক এখনো শনাক্ত করা যায়নি। আলুর বস্তাগুলো আপাতত স্থানীয় চেয়ারম্যানের জিম্মায় রাখা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

রাবি প্রতিনিধি 
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ২০
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য, প্রক্টর ও জনসংযোগ দপ্তর প্রশাসকের সভা। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য, প্রক্টর ও জনসংযোগ দপ্তর প্রশাসকের সভা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আওয়ামীপন্থী ছয়জন ডিন পদত্যাগ করেছেন। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) রাত ৮টায় এক সভায় তাঁরা দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করেন বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার।

আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থী ও ডিনদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। সেখানে ডিনরা তাঁদের দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করেন।’

এদিকে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এস এম একরাম উল্ল্যাহ বলেন, ‘আজ কী হয়েছে, সেটা জানি না। তবে আমরা জানিয়েছি, আমরা দায়িত্ব পালন করতে ইচ্ছুক না।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই একটি সমস্যার মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছিলাম, যার একটি সুরাহা হতে চলেছে। আগামীকাল (সোমবার) অফিশিয়ালি আমরা জানাব।’

এর আগে আওয়ামীপন্থী ছয়জন ডিনের পদত্যাগ দাবিতে আজ সকাল ১০টার দিকে ডিনস কমপ্লেক্সে যান শিক্ষার্থীরা। পরে ডিনস কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ভবনে অবস্থিত এই ডিনদের চেম্বারে তালা দেন তাঁরা। ডিনদের কেউ আজ নিজেদের বিভাগে ক্লাসে যাননি।

পরে বেলা আড়াইটার দিকে শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রার দপ্তরে এসে তাঁদের দাবি জানান। এ সময় শাখা শিবিরের সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদ ফয়সাল দাবি আদায়ের আগে রেজিস্ট্রার ভবন ত্যাগ না করার ঘোষণা দেন। পরে শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রার দপ্তরসহ সহ-উপাচার্য ও প্রক্টর দপ্তরেও তালা ঝুলিয়ে দেন। প্রায় আধা ঘণ্টা তালাবদ্ধ রাখার পর খুলে দেওয়া হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য, প্রক্টর ও জনসংযোগ দপ্তর প্রশাসক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সভায় বসেন। সেখানে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই রাতে আরেকটি সভা ডাকা হবে বলে ওই সভা সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর শিক্ষক সমিতি, ডিন, সিন্ডিকেট, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটি এবং শিক্ষা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ১২টি অনুষদের ডিন নির্বাচনে আওয়ামীপন্থী হলুদ প্যানেল থেকে ছয়জন প্রার্থী নির্বাচিত হন। গত বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে ডিনদের নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবে উপাচার্য ১১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী এসব ডিনকে নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত স্বপদে থাকার নির্দেশ দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিরাপত্তা শঙ্কায় রাবি শিক্ষকের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন

রাবি প্রতিনিধি  
সহকারী অধ্যাপক কাজী জাহিদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সহকারী অধ্যাপক কাজী জাহিদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নিরাপত্তা শঙ্কার কারণে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী জাহিদ। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে এক পোস্টে কাজী জাহিদ এ ঘোষণা দেন। পোস্টে তিনি নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

পোস্টে রাবির সহকারী অধ্যাপক কাজী জাহিদ লেখেন, ‘নিরাপত্তা না থাকায় ক্লাস-পরীক্ষা নেয়া ও অন্যান্য একডেমিক কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে দুঃখিত। আমার নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব রয়েছে আমার জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করে দেয়া এবং প্রয়োজনে আমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে আটশত শিক্ষকের প্রতি ক্লাসরুমে প্রবেশ করলে তাদেরকে কলার ধরে টেনে প্রশাসন ভবনের সামনে এনে বেঁধে রাখার অব্যাহত হুমকি দেয়া হলেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই সকল শিক্ষকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।’

কাজী জাহিদ আরও লেখেন, ‘যেই মুহূর্ত থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, সেই মুহূর্ত থেকেই আমার উপরে ন্যস্ত দায়িত্ব আমি যথাযথভাবে পালন করবো ইনশাল্লাহ।’

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কাজী জাহিদ বলেন, ‘এভাবে জেনারেল নোটিশের মতো সংখ্যা উল্লেখ করে হুমকি দেওয়ার পর আমরা কোনোভাবেই নিরাপদ অনুভব করছি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী সাত শতাধিক শিক্ষক যদি ফ্যাসিস্ট হয়, তাহলে সেখানে তো আমারও নাম আছে!’ তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল শিক্ষকই তো রাজনীতি করে। বর্তমান প্রশাসনে থাকা প্রত্যেকেই কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। সেভাবেই আমাদেরও নাম আছে।’ নিরাপত্তা শঙ্কার কথা জানানোর পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি বলেও জানান কাজী জহিদ।

এর আগে গত শুক্রবার ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পক্ষে যারা নমনীয়তা উৎপাদন করবে, আমরা তাদের জুতা খুলে মুখে মারব ইনশা আল্লাহ। রাবিতে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের মদদপুষ্ট কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী যদি চাকরি করে, তাদের আগামী রোববার থেকে কলার ধরে টেনে টেনে প্রশাসনিক ভবনের সামনে বেঁধে রাখব।’

এ ছাড়া গতকাল শনিবার আম্মার এক পোস্টে আওয়ামীপন্থী ডিনদের পদত্যাগ ও ফ্যাসিজমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের অপসারণের দাবিতে ‘অপারেশন জিরো টলারেন্স ফর ফ্যাসিজম’ শীর্ষক কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শিক্ষকেরা যদি এভাবে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে, তাহলে সমস্যা সৃষ্টি হবে। অনেক শিক্ষকই এভাবে নিরাপত্তা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিষ মাখানো সরিষার বীজ খেয়ে শতাধিক কবুতর ও ঘুঘুর মৃত্যু, ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা

তালা (সাতক্ষীরা)  প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৩৪
কবুতর। ছবি: সংগৃহীত
কবুতর। ছবি: সংগৃহীত

সাতক্ষীরার তালায় ফসল রক্ষার নামে বিষ মাখানো সরিষার বীজ ছিটিয়ে পাখিনিধনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বিষ মাখানো বীজ খেয়ে শতাধিক কবুতর ও ঘুঘু পাখি মারা গেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

গতকাল শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেল থেকে উপজেলার হরিশ্চন্দ্রকাঠি গ্রামে একের পর এক কবুতর ও ঘুঘু পাখি মরে পড়ে থাকতে দেখা যায়। খবর ছড়িয়ে পড়লে আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন খুলনা বন বিভাগের ওয়াইল্ডলাইফ অ্যান্ড বায়োডাইভারসিটি কনজারভেশন অফিসার তন্ময় আচার্য্য।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তন্ময় আচার্য্য সাংবাদিকদের জানান, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও অপরাধমূলক ঘটনা। বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে বন্য প্রাণিনিধন আইনত দণ্ডনীয়। তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ১৯ ডিসেম্বর হরিশ্চন্দ্রকাঠি বিলে সরিষা চাষের জন্য বীজ বপন করেন তালা মহিলা কলেজের প্রদর্শক আবদুল বারী। পাখির আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষার উদ্দেশ্যে বীজে বিষ মাখানো হয়। পরদিন ওই ক্ষেতে কবুতর ও ঘুঘু পাখির ব্যাপক বিচরণ লক্ষ করা যায়। এর পর থেকে একে একে পাখিগুলো অসুস্থ হয়ে মারা যেতে থাকে। এ পর্যন্ত ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকা থেকে ১০০টির বেশি কবুতর এবং একটি ঘুঘু পাখির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

হরিশ্চন্দ্রকাঠি গ্রামের বাসিন্দা জিন্নাত খাঁ ও হায়দার আলী বলেন, ‘আমাদের অনেক কবুতর মারা গেছে। এগুলো আমাদের শখ আর জীবিকার অংশ। এমন ক্ষতি আগে কখনো হয়নি।’

রহিমাবাদ গ্রামের আজিজ সরদার বলেন, ‘এক দিনেই আমার ২৪টি কবুতর মারা গেছে। পাখিরা তো জানে না বীজে বিষ মাখানো আছে। এ ক্ষতির বিচার চাই।’ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, ক্ষতিপূরণ এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

তালা মহিলা কলেজের প্রদর্শক আব্দুল বারী মোবাইল ফোনে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। আমার জমিতে কোনো ধরনের বিষ প্রয়োগ করা হয়নি।’

তাঁর ভাই অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য আবদুল মজিদ বলেন, ‘কাজটি ঠিক হয়নি।’

তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাটির বিষয়ে আমি শুনেছি। এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ দিলে মামলা নেওয়া হবে। পাশাপাশি যেন এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত