Ajker Patrika

আসামিদের জবানিতে ২১ আগস্ট

আশরাফ-উল-আলম, ঢাকা
আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২১, ১৪: ৫৭
আসামিদের জবানিতে ২১ আগস্ট

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সমাবেশে নজিরবিহীন গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত হয়। তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে করা এই হামলার তদন্ত নিয়ে অনেক জলঘোলা শেষে হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নানসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আদালতে তাঁদের দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উঠে আসে এই হামলার পরিকল্পনাসহ ভয়াবহ সব তথ্য।

হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নান (ফাঁসি কার্যকর) আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, ২০০৪ সালের ১৯ আগস্ট সন্ধ্যার দিকে রাজধানীর পশ্চিম বাড্ডায় একটি বাসায় সংগঠনের সদস্য আহসান উল্লাহ কাজল (যশোর), আবু জান্দাল, ফরিদপুরের মুরসালিন ও মুত্তাকিন, খুলনার মাহমুদ ও লিটনসহ বৈঠক করেন। বৈঠকে কাজল একটি পত্রিকার খবর দেখিয়ে বলেন, ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশ হবে। সেখানে হামলা করা যায়। কাজলের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে মুফতি হান্নান তখনই টেলিফোনে এই বিষয়ে ফরিদপুরের কামাল উদ্দিন শাকের, আবদুর রহমান, যশোরের মাওলানা মনিরুল ইসলাম মদিনা, মাওলানা রুস্তম আহমেদ ও মুফতি আরিফ বিল্লাহকে (ঝিনাইদহ) জানান এবং তাঁদের ঢাকায় আসতে বলেন। অবশ্য তাঁরা ঢাকায় আসেননি। খবর পেয়ে মাওলানা আবু সাইদ ওরফে ডা. জাফর সন্ধ্যার পর এসে ওই বৈঠকে যোগ দেন। পরিকল্পনার কথা শুনে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের হামলার জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত লোক দরকার। কিন্তু এ মুহূর্তে আমার কাছে লোক নেই।’ তখন কাজল জানান, ‘লোক পাওয়া যাবে। এ জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনের একজনের সঙ্গে কথা বলব।’ পরে কাজল টেলিফোনে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন এবং এই কাজে (হামলায়) তাঁর সহযোগিতা চান। তাঁকে তাঁর মোহাম্মদপুরের বাসায় যেতে বলেন। পরদিন কাজল ওই বাসায় গিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ওই লোকের সঙ্গে কথা বলেন।

মুফতি হান্নান জানান, হামলার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে পরদিন ২০ আগস্ট সকালে একই বাসায় তিনি নিজে, আবু সাইদ, লিটন, কাজল ও আবু বকর (যশোর) আবার বৈঠকে বসেন। কারা কারা হামলায় অংশ নেবে, কাজল তাঁদের তালিকা তৈরি করে বৈঠকে দেখান। বৈঠকে হামলার জন্য অস্ত্র ও টাকা-পয়সার ব্যবস্থা আছে কি না জানতে চাইলে কাজল জানান, গ্রেনেড আছে। টাকার ব্যবস্থাও হবে। ওইদিনই (২০ আগস্ট) কাজল ও আবু জান্দাল বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে গিয়ে এলাকা পর্যবেক্ষণ (রেকি) করে আসেন। ২১ আগস্ট সকালে একই বাসায় উল্লিখিত সবাই এবং হামলায় অংশ নেওয়ার জন্য নির্বাচিতরা একত্রিত হয়। সিদ্ধান্ত হয়, মোট ১২ জন হামলায় অংশ নেবে। এতে কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে কাজল ও আবু জান্দাল। এর পর বাড্ডার ওই বাসায় তাঁরা সবাই একসঙ্গে জোহরের নামাজ পড়ে দুপুরের খাবার খান। তারপর ঘরের ভেতর সবাই বসেন। সেখানে মাওলানা সাইদ জিহাদ বিষয়ক বয়ান করেন। তারপর মুফতি হান্নান হামলার জন্য ১২ জনের হাতে ১৫টি গ্রেনেড দেন। ওই ১২ জনের মধ্যে মুফতি হান্নানের ভাই অভি ছিলেন। জঙ্গি বিপুলও ছিলেন।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২১ আগস্ট আছরের নামাজের সময় সবাই যার যার মতো গিয়ে গোলাপ শাহ মাজারের কাছে মসজিদে একত্র হয়। সেখান থেকে তারা সমাবেশে মঞ্চ হিসেবে ব্যবহৃত ট্রাকটির চারপাশে অবস্থান নেয়। শেখ হাসিনার বক্তব্য শেষ হওয়ার পরপর আবু জান্দাল প্রথম গ্রেনেড ছোড়ে, তারপর অন্যরা একে একে গ্রেনেড ছুড়ে যার যার মতো চলে যায় বলে মুফতি হান্নান বলেছেন।

এ ছাড়া হুজির আরেক নেতা শরিফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুলও (ফাঁসি কার্যকর) স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা সংক্রান্ত তথ্য দেন। বিপুলের ভাষ্যমতে, তিনি ২০০৪ সালের ১৯ আগস্ট ঢাকায় মুফতি হান্নানের বাড্ডার বাসায় গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে তখন হান্নানের ভাই মফিজুর রহমান ওরফে অভি এবং রফিক নামে একজন ছিলেন। তাঁরা ২১ আগস্টের হামলার বিষয়ে পরিকল্পনা করেন। মাগরিবের নামাজের পর দেড় ঘণ্টা আলোচনা হয়। এর পর রাতের ট্রেনেই বিপুল সিলেট চলে আসেন। পরদিন ২০ আগস্ট সকালে অভি ফোনে বিপুলকে বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে হালকা নাশতা করাতে হবে।’ হামলার ঘটনার কয়েক দিন পর বিপুল ঢাকায় এলে অভি তাঁর কাছে হামলার কথা স্বীকার করেন।

মামলার আসামি জাহাঙ্গীর আলম আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, ২১ আগস্ট জোহরের নামাজ ও খাওয়ার পর বাড্ডার একটি বাসা থেকে মুফতি হান্নান তাঁর দলের জঙ্গিদের ডেকে গ্রেনেড দেখান। গ্রেনেড নিক্ষেপের কৌশলও বুঝিয়ে দেন। সেখানে জঙ্গি জাহাঙ্গীর, আহসান উল্লাহ কাজল, আবু জাফর, লিটন, মাসুদ, সবুজ, খলিল, রতন, মুত্তাকিন, মুরসালিনসহ অন্যরা ছিল। মোট ১৫টি গ্রেনেড তাদের দেওয়া হয়। তারা দুজন দুজন করে ভাগ হয়ে জনসভাস্থলে যান। মাসুদ ও জাহাঙ্গীর শেখ হাসিনার বক্তব্য মঞ্চ ট্রাকের সামনে অবস্থান নেন। শেখ হাসিনা বক্তব্য শুরু করলে মাসুদ ট্রাকের পেছনে যান। প্রথম একটি গ্রেনেড বিস্ফোরিত হয়। এর পর জাহাঙ্গীর একটি গ্রেনেড মারেন। অন্যটি ফেলে পালিয়ে যান।

আসামি আবুল কালাম বুলবুলের জবানবন্দি থেকে জানা যায়, প্রথম গ্রেনেডটি আবু জান্দাল মেরেছিল। এর পর সবাই একযোগে গ্রেনেড ছুড়ে মারে। আসামিদের জবানবন্দি থেকে জানা যায়, গ্রেনেড হামলায় প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ হয়। সমাবেশে থাকা মানুষগুলো মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। অনেকে আহত নিহত হয়। আর হামলার পর তারা সমাবেশে উপস্থিত লোকজনের সঙ্গে মিশে গিয়ে পালিয়ে যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি 
নিহত শিশু শামীম। ছবি: সংগৃহীত
নিহত শিশু শামীম। ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া শিশু শামীম (১০) মারা গেছে। উদ্ধারের তিন দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। আজ শুক্রবার সকালে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

নিহত ব্যক্তির মামা সাব্বির হোসেন ও সখীপুর থানা-পুলিশ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত শামীম উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের শাহিন আলমের ছেলে ও স্থানীয় কীর্তনখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

নিহত শিশুর পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার দুপুর ১২টার দিকে শামীম বাড়ি থেকে বের হয়। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। একপর্যায়ে তাঁরা বাড়ির আশপাশের বনাঞ্চলে অনুসন্ধান চালান। পরে রাত ৮টার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে একটি বন থেকে শামীমকে রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। রাত ৯টার দিকে তাকে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার ধানমন্ডিতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।

নিহত শামীমের মামা সাব্বির হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছিলাম শিয়ালের আক্রমণে এমন হয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা জানান, এটি শেয়াল-কুকুরের আক্রমণের চিহ্ন নয়, শিশুটির মাথা ও শরীরের আঘাত করা হয়েছে।’

সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, নিহত শামীমের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুমকীতে অটো-টমটম সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ২

দুমকী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
দুমড়েমুচড়ে যাওয়া গাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুমড়েমুচড়ে যাওয়া গাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা

পটুয়াখালীর দুমকীতে অটোরিকশা ও সিমেন্টবাহী টমটমের সংঘর্ষে দুজন নিহত ও দুজন আহত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে লেবুখালী-বাউফল মহাসড়কের রাজাখালী (স্থানীয় নাম পিছাখালী ব্রিজ) এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বগা থেকে আসা যাত্রীবাহী অটোরিকশা বিপরীত দিক থেকে আসা সিমেন্টবাহী টমটমের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে ছয় বছরের রবিউল নিহত হন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে ৬০ বছর বয়সী ইব্রাহিম খানকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত সুমন সরদার (২৫) ও আব্দুল কাদেরকে (৫০) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আহত আব্দুল কাদেরের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সুমনের একটি হাত সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে। নিহত ও আহত ব্যক্তিদের বাড়ি বাউফল উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।

দুমকী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম উদ্দীন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দুর্ঘটনাকবলিত অটোরিকশা ও টমটমটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিবার অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দৌলতপুর সীমান্তে ভারতীয় নাগরিক পুশ ইনের চেষ্টা: ব্যর্থ হয়ে ১৪ জনকে ফেরত নিল বিএসএফ

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি 
১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুশ ইনের চেষ্টা করে বিএসএফ। শূন্য লাইন থেকে গতকাল দুপুরে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুশ ইনের চেষ্টা করে বিএসএফ। শূন্য লাইন থেকে গতকাল দুপুরে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সারা দেশে যখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি চলছে, ঠিক সেই সময় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্ত দিয়ে ১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুশ ইনের চেষ্টা চালিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) তৎপরতায় ওই চেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ১৪ ভারতীয় নাগরিককে জিরো লাইন থেকে ফেরত নিয়ে যায় বিএসএফ।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দিবাগত গভীর রাতে দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর বিওপির সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে প্রবেশ করানোর চেষ্টা করা হয়।

বিজিবি সূত্র জানায়, বিএসএফের আহ্বানে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে একটি পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের (৪৭ বিজিবি) অধীন মহিষকুন্ডি বিওপিতে কর্মরত সুবেদার আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের বিজিবি প্রতিনিধিদল এবং ১৪৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের নিউ উদয় কোম্পানি কমান্ডার এসি অনিল কুমারের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের বিএসএফ প্রতিনিধিদল বৈঠকে অংশ নেয়।

বৃহস্পতিবার বেলা ১টা ৪০ মিনিট থেকে ২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত সীমান্তের মেইন পিলার ১৫৪/০৭ এস-সংলগ্ন ভারতের অভ্যন্তরে চাইডোবা মাঠে এই পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিবির পক্ষ থেকে বাংলাদেশে ভারতীয় নাগরিক পুশ ইনের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয় এবং অবিলম্বে তাদের ফেরত নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

পরে শূন্য লাইনে অবস্থানরত ব্যক্তিদের পরিচয় ও ঠিকানা যাচাই করে তারা সবাই ভারতের ওডিশা প্রদেশের জগতসিংপুর সদর উপজেলার তারিকুন্ডা এলাকার বাসিন্দা বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। যাচাই শেষে বিএসএফ তাদেরকে ভারতের অভ্যন্তরে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।

পুশ ইনের চেষ্টা করা ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন মৃত হারুন শেখের ছেলে শেখ জব্বার (৭০), তাঁর চার ছেলে শেখ হাকিম (৪৫), শেখ ওকিল (৪০), শেখ রাজা (৩০) ও শেখ বান্টি (২৮); শেখ ওকিলের স্ত্রী শাবেরা বিবি (৩০); শেখ হাকিমের স্ত্রী শমশেরি বিবি (৪০); শেখ রাজার স্ত্রী মাইনু বিবি (২৫); শেখ জব্বারের স্ত্রী আলকনি বিবি (৬০); মৃত শেখ হোসেনের স্ত্রী গুলশান বিবি (৯০); শিশুদের মধ্যে রয়েছে শাকিলা খাতুন (১১), নাছরিন আক্তার (১২), শেখ তাওহিদ (১১) ও আড়াই বছর বয়সী শেখ রহিত।

এই ঘটনায় সীমান্তবাসীর মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। নির্বাচনকালীন স্পর্শকাতর সময়ে ভারতের এমন পুশ ইন চেষ্টাকে কেন্দ্র করে সীমান্ত এলাকায় নানা আলোচনা ও প্রশ্ন উঠেছে।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাশেদ কামাল রনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে কোনোভাবেই অবৈধ অনুপ্রবেশ বা পুশ ইন মেনে নেওয়া হবে না। সীমান্ত নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিজিবি সব সময় কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিরাজগঞ্জে দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ, আহত ২

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা তালতলা এলাকায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা তালতলা এলাকায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় মালবাহী দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক ট্রাকের চালক ও হেলপার গুরুতর আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

শুক্রবার সকালে উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা তালতলা এলাকায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন আজকের পত্রিকাকে জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা গবাদিপশুর খাবার (ভুসি) বহনকারী একটি ট্রাকের সঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা পাথরবোঝাই আরেকটি ট্রাকের সংঘর্ষ হয়। এতে একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে এবং অপরটি মহাসড়কের ওপর দাঁড়িয়ে যায়।

দুর্ঘটনার পর রেকার দিয়ে ট্রাক সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আহত চালক ও হেলপারের পরিচয় এখনো জানা যায়নি বলে জানান ওসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত