Ajker Patrika

সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তের পরে কোটা সংস্কারের ইঙ্গিত দিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তের পরে কোটা সংস্কারের ইঙ্গিত দিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী

সর্বোচ্চ আদালতের মামলা শেষ হলে সরকার কোটা সংস্কারের উদ্যোগ নেবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। বিচারাধীন থাকায় সরকার এ বিষয়ে কোনো ঘোষণা বা সিদ্ধান্ত দিতে পারে না, দিলে তা সংবিধান বিরোধী হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে ষড়যন্ত্রকারীরা ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা করছে বলেও আশঙ্কা করেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী। 

আজ শনিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মোহাম্মদ আলী আরাফাত। সরকারের পক্ষ থেকে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে বলে জানান তিনি। 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি যেহেতু আদালতের প্রক্রিয়ায় ঢুকে গেছে। তাই এটি শেষ করতে হবে। প্রক্রিয়া শেষের পরে আপনি কোনো ঘোষণা বা উদ্যোগ নিতে পারেন। এটাই সংবিধানসম্মত। আমরা সেখানেই আছি।’ 

আদালতের প্রক্রিয়া শেষ হলে সরকার কী তাহলে কোটা সংস্কার করবে এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আদালতে গিয়ে যে স্থিতাবস্থা আনলাম, পরিপত্রটা আবার বহাল হলো। এটা আমাদের আইনি লড়াইয়ের ফলে। এটি আমাদের প্রাথমিক জয়। আমরা চাচ্ছি এটি সুন্দর সমাধান হোক। অবশ্যই বৈষম্য নিরসন, মেধার মূল্যায়ন হোক। এটাকে সামনে রেখে কোটা বিষয়ে, পিছিয়ে থাকা মানুষের অধিকার সংরক্ষণ করেই এটার সমাধান হবে। বঙ্গবন্ধু কন্যা সরকার প্রধান। তিনি দেশের ১৭ কোটি মানুষ নিয়ে ভাবেন।’ 

মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, হাইকোর্টের রায়ের পরে রাগে ক্ষোভে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছিল। এতে জনভোগান্তি তৈরি হয়েছিল, তারপরও এটার যৌক্তিকতা ছিল। কিন্তু যখন সরকার পক্ষ তাঁদের দাবির পক্ষে আইনি লড়াই করছে, তাঁদের আইনজীবীরাও সরকারের আইনজীবীদের সঙ্গে দাঁড়িয়েছে, আন্দোলনকারী ও সরকারের অবস্থানের কোনো পার্থক্য নেই, তখন এ ধরনের অসাংবিধানিক দাবি ঘোষণা দিতে হবে ও কমিশন গঠন করতে হবে—এটার সুযোগ নেই। আইনি প্রক্রিয়া শেষ না করলে এটি আপনি পারবেন না। এখন আন্দোলনের জনভোগান্তি অযৌক্তিক। আন্দোলনের যৌক্তিকতা থাকলে অসুবিধা হলে জনগণও মেনে নেয়। কিন্তু এখন কোনো যৌক্তিকতা ছাড়া রাস্তা আটকিয়ে রাখা হচ্ছে। যৌক্তিকতা, সততা ছাড়া কোনো আন্দোলনের সফলতা পাওয়া যায় না। 

একটা সময় পর কোটা ব্যবস্থা যুগোপযোগী করা যেতে পারে বলেও মনে করেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকের চিন্তা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারের সিদ্ধান্তের সঙ্গে শিক্ষকদের দাবি বৈপরীত্য আছে। শিক্ষককের চাওয়া ও সরকারের পলিসির মধ্যে পার্থক্য আছে। পার্থক্য থাকলে বসার বিষয় থাকে। কিন্তু ছাত্রদের দাবি পূরণ হয়ে গেছে, তাই বসার যৌক্তিকতা নেই। আর এখনতো আলোচনার কোনো সুযোগ নেই। যত দিন না সর্বোচ্চ আদালতের প্রক্রিয়া শেষ হবে। শেষ হওয়ার পরে দেখেন সরকার কি করে। যদি পছন্দ না হয় আলোচনা। এখন আন্দোলনের বাস্তবতা ও আলোচনার প্রয়োজন দেখি না। 

কোটা আন্দোলনে জনদুর্ভোগ হলে সরকার কী পদক্ষেপ নেবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সরকারের দায়িত্ব আছে যারা জনদুর্ভোগে পড়বে তাদের সেফটি ও সিকিউরিটি দেওয়া। সরকার আইন অনুযায়ী কাজ করবে। সাংবিধানিকভাবে যে পদক্ষেপ নেওয়ার তা নেবে। কোটা আন্দোলনকারী এখন পর্যন্ত যেসব কর্মসূচি নিয়েছে আমরা সহযোগিতা করছি। কিন্তু আমরা বলছি আন্দোলনকারীদের দাবি ও আমাদের অবস্থানের কোনো পার্থক্য নেই। এটি সঠিক দিকে আগাচ্ছে। শুধু এই মুহূর্তে আমাদের নির্বাহী বিভাগের হাত বাধা আছে। বিষয়টি বিচারাধীন থাকায় আমরা এ মুহূর্তে ঘোষণা দিতে পারব না। বিচারাধীন বিষয় নিয়ে আলাপ, কথা বলা যায়। এটাও ঠিক না। কিন্তু আমরা করি। কিন্তু আপনি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা চাচ্ছেন সরকারের। এটা হয় না। এটা অসাংবিধানিক। অন্যায্য দাবি, গায়ের জোরে পাহাড় ঠেলা, এগুলো করতে গেলে যৌক্তিকতা হারিয়ে ফেলে। তখন আইনিভাবে সরকারের ব্যবস্থা নিতে হয়।’ 

সরকারে অবস্থানের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দাবি একই জায়গায় মিলে গেছে। কিছু মানুষ সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আবেগ পুঁজি করে বিভ্রান্ত সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। এর আগেও অনেকেই যৌক্তিক আন্দোলনগুলোতে অনেকেই অনেক দেশবিরোধী অপশক্তি চেষ্টা করেছে। যা সরকারের চিন্তার বিষয় বলে জানান তথ্য প্রতিমন্ত্রী। 

তিনি বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীরা মেধার মূল্যায়ন চান। তাঁদের যে স্পিরিট, সেটার সঙ্গে আমি একমত। মেধার মূল্যায়ন না হলে দেশ ও জাতি এগিয়ে যেতে পারে না। মেধার মূল্যায়ন করতে গিয়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে না দেন, যারা বঞ্চনার শিকার হয়েছেন, বিশেষ করে মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়ে যারা এ দেশ তৈরি করেছেন পরিবারের বিষয়ে যেভাবে তাচ্ছিল্যের সঙ্গে কথা বলেন, সেটাতো বলতে পারেন না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নরসিংদীতে তিন চোখ ও দুই মুখের বাছুরের জন্ম, এলাকায় চাঞ্চল্য

নরসিংদী প্রতিনিধি
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীতে অদ্ভুত আকৃতির বাছুরের জন্ম হয়েছে। বাছুরটির রয়েছে দুটি মুখ, দুটি জিহ্বা, দুটি কান ও তিনটি চোখ। এর মধ্যে একটি চোখ বাছুরের কপালের মাঝখানে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

২৩ ডিসেম্বর রাতে শিবপুর উপজেলার চক্রধা ইউনিয়নের পুবেরগাঁও গ্রামে স্থানীয় ইউপি সদস্য কাশেম খানের খামারে বাছুরটির জন্ম।

খামারমালিক কাশেম খান বলেন, বাছুরটি জন্মের পর থেকেই অসুস্থ। স্বাভাবিকভাবে দুধ পান করতে না পারায় ফিডারের মাধ্যমে দুধ খাওয়াতে হচ্ছে।

তিনি জানান, তাঁর খামারের একটি গাভি বাছুরটির জন্ম দিয়েছে। তিনি বলেন, এর আগেও গাভিটির বাছুর হয়েছে। কিন্তু এবারের মতো এমন অদ্ভুদ বাছুর আগে কখনো হয়নি।

ঘটনাটি জানাজানির পর থেকেই বাছুরটিকে একনজর দেখতে আশপাশের কৌতূহলী মানুষ খামারে আসছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল জলিল বলেন, ‘আমরা ছোটবেলা থেকে গরু-ছাগল দেখছি। কিন্তু তিন চোখ আর দুই মুখের বাছুর এই প্রথম দেখলাম। খবর পেয়ে দূর থেকে এসেছি।’

আরেক স্থানীয় নারী জরিনা বেগম বলেন, ‘বাছুরটা দেখতে অদ্ভুত লাগলেও মায়া হচ্ছে। বাছুরটির স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। অনেকেই দ্রুত প্রাণিসম্পদ বিভাগের চিকিৎসকের পরামর্শ ও চিকিৎসা নিশ্চিত করার পরামর্শ দিচ্ছেন।’

এর আগে এ ধরনের বাছুর জন্মের বিষয়ে প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সাধারণত জেনেটিকস ডিফেক্টের কারণে গাভির এমন ত্রুটিপূর্ণ বাচ্চার জন্ম হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজীপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে নানি-নাতনিসহ নিহত ৩

গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গাজীপুরের কালীগঞ্জে রেললাইন দিয়ে হাঁটার সময় ট্রেনে কাটা পড়ে নানি-নাতনিসহ তিন নারী নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে টঙ্গী-ভৈরব রেলপথের আড়িখোলা রেলস্টেশনসংলগ্ন টেকপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত নারীরা হলেন কালীগঞ্জ পৌরসভার দেওয়ালেরটেক গ্রামের মোবারক হোসেনের স্ত্রী সাদিয়া বেগম (২৪), একই এলাকার বাবু মিয়ার মেয়ে অনাদি আক্তার (১৩) এবং নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার মরজাল এলাকার বাসিন্দা কমলা বেগম (৫৫)। নিহত কমলা বেগম ও অনাদি আক্তার সম্পর্কে নানি-নাতনি এবং সাদিয়া বেগম তাঁদের প্রতিবেশী ছিলেন।

স্থানীয়রা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আড়িখোলা রেলব্রিজ এলাকায় রেললাইনের ওপর দিয়ে তিনজন হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নোয়াখালীগামী ‘উপকূল এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি চলে আসে। এ সময় তাঁরা রেলব্রিজের ওপর থাকায় সেখান থেকে দ্রুত সরে যাওয়ার সুযোগ পাননি। পরে ট্রেনটি তাঁদের ওপর দিয়ে চলে যায়। এতে ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই কমলা বেগম ও সাদিয়া বেগমের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় অনাদি আক্তারকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জিয়াউর রহমান জানান, অনাদি আক্তারকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওবায়দুল হক জানান, এটি রেলওয়ের আওতাধীন দুর্ঘটনা হওয়ায় রেলওয়ে পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।

রেলওয়ে নরসিংদী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) দিলীপ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল সম্পন্ন করেছি। নিহত নারীদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বিনা ময়নাতদন্তে লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আরাকান আর্মিদের জন্য নেওয়া হচ্ছিল ১৫০০ মশারি, আটক ৫

থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি  
মশারিসহ জব্দ করা মালপত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা
মশারিসহ জব্দ করা মালপত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা

বান্দরবানের থানচি উপজেলায় দুটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা তল্লাশি করে ১ হাজার ৫০০টি মশারি, ১২০টি নৌকার ইঞ্জিনের পাখা উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে তিন্দুমুখ বিজিবি চেকপোস্ট পার হওয়ার সময় নৌকাগুলো তল্লাশি করে এসব জিনিস জব্দ করে বিজিবি। এসব মশারি ও ইঞ্জিনের পাখা বান্দরবানের থানচির বড় মদক সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির জন্য নেওয়া হচ্ছিল বলে জানিয়েছে বিজিবি। এ ঘটনায় নৌকা দুটি থেকে পাঁচজনকে আটক করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার তাঁদের থানচি থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় আটক ব্যক্তিরা হলেন থোয়াই হ্লা চিং মারমা, উমং সাইং মারমা, হ্লাচিংথোয়াই মারমা, উক্যছাইন মারমা ও মো. ইউনুস।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে বিজিবি বলিপাড়া ৩৮ ব্যাটালিয়ানের সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেনের জানান, নিজস্ব গোয়েন্দা সূত্রে তাঁরা জেনেছেন, দীর্ঘদিন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ওষুধ, কাপড়, জুতা, মোজা, মশারি, নৌকা ইঞ্জিনের পাখা ও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ মিয়ানমারের আরাকান আর্মির কাছে সরবরাহ করছে একটি সিন্ডিকেট চক্র। পাচারকারীদের ধরতে সীমান্তের বিজিবি চৌকিগুলোতে বিজিবি সদস্যরা সতর্ক রয়েছেন।

জাকির হোসেন বলেন, গতকাল বুধবার তিন্দুমুখ বিজিবি চেকপোস্ট অতিক্রম করার সময় মালবাহী তিনটি ইঞ্জিন নৌকা দেখে বিজিবির সদস্যদের সন্দেহ হয়। এ সময় নৌকা থামাতে বললে একটি নৌকা দ্রুত চলে যায়। বাকি দুটি নৌকা তল্লাশি করে ১ হাজার ৫০০টি মশারি, ১২০টি ইঞ্জিন বোটসহ অন্যান্য পণ্য পাওয়া যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নলছিটি লঞ্চঘাট ওসমান হাদির নামে নামকরণ

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
নলছিটি লঞ্চঘাট ।  ছবি: আজকের পত্রিকা
নলছিটি লঞ্চঘাট । ছবি: আজকের পত্রিকা

নলছিটি উপজেলার লঞ্চঘাট এখন থেকে শহীদ শরিফ ওসমান হাদির নামে পরিচিত হবে। জন্মস্থান ও শৈশবের স্মৃতিতে গাথা এই লঞ্চঘাট তাঁর নামের সঙ্গে চিরস্থায়ীভাবে যুক্ত হলো।

বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় (২৫ ডিসেম্বর) জানান, শহীদ ওসমান হাদির জন্মস্থান নলছিটি। শৈশব, বেড়ে ওঠা এবং জীবনসংগ্রামের সঙ্গে লঞ্চঘাট এলাকার নিবিড় সম্পর্ক থাকার কারণে এটি তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছে। বর্তমানে টার্মিনালের সংস্কার ও রঙের কাজ চলমান রয়েছে।

আগামী শনিবার নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন ঘাটটি পরিদর্শন করবেন বলেও জানান তিনি।

নলছিটি লঞ্চঘাট শহীদ ওসমান হাদির জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। ঘাট থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে তার পৈতৃক বাড়ি। নদীর ধারে দাঁড়িয়ে মানুষের আসা-যাওয়া দেখা এবং লঞ্চের ভিড়ে সময় কাটানো—এই ঘাট ছিল তার বেড়ে ওঠার নীরব সাক্ষী।

ঘাট এলাকার ব্যবসায়ী রব হাওলাদার বলেন, ‘আমরা চাইছিলাম হাদির স্মরণে এমন কিছু হোক, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম মনে রাখবে। তার শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত লঞ্চঘাটের নাম তার নামে হওয়া নিঃসন্দেহে স্মরণীয় সিদ্ধান্ত।’

ব্যবসায়ী শাহাদত আলম ফকির যোগ করেন, ‘এই ঘাটে আমরা হাদিকে ছোটবেলা থেকে দেখেছি। সে এখানকারই ছেলে ছিল। আজ তার নামে ঘাটের নামকরণ হওয়ায় আমরা গর্বিত।’

ওসমান হাদির প্রতিবেশী বেলায়েত হোসেন নান্নু বলেন, ‘হাদি এই এলাকার সন্তান। এই ঘাট, এই নদী, এই মানুষ—সবকিছুতেই তার স্মৃতি ছড়িয়ে আছে। লঞ্চঘাটের নাম তার নামে হওয়া মানে, সে এখানেই চিরদিন বেঁচে থাকবে।’

উল্লেখ্য, ১২ ডিসেম্বর হত্যার উদ্দেশ্যে ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। তাঁকে প্রথমে ঢাকায় ভর্তি করা হয় এবং পরে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর মারা যান ওসমান হাদি। পরবর্তীকালে তাঁর মরদেহ দেশে আনা হয় এবং সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে (জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে) সমাহিত করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত